মুহাম্মাদ আজিজুল্লাহ - জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম
Question
প্রশ্ন : ৩. আমি জামাতে চাহারমের ছাত্র। শিক্ষা-পরামর্শে হুজুরের মাশওয়ারা মতো আরবী হাশিয়া ও শরাহগুলো পড়তে চেষ্ট করি। আলহামদুলিল্লাহ, প্রায়ই বুঝি। কিন্তু মাঝে মধ্যে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হই। ভেবেছি, এখন থেকে যে সব বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন বেশি হই এগুলোর জন্য হুজুরের শিক্ষা-পরামর্শের সাহায্যে নেব। সেই হিসাবে আজ একটি সমস্যার কথা উল্লেখ করছি। আশা করি, সমাধান দিয়ে উপকৃত করবেন। সমস্যাটা হল, কোনো শব্দের তাহকীক করতে গিয়ে বিভিন্ন শরাহ বা হাশিয়ার মধ্যে المعجمة، المهملة، الموحدة، المثناة، المثلثة، التحتانية، الفوقانية ইত্যাদি শব্দ লেখা থাকে। এ শব্দগুলির অর্থ কী? এগুলো কেন লেখা হয়?
Answer
মাশাআল্লাহ, আপনার মেহনতের কথা শুনে খুশি হলাম। আপনি মেহনত চালিয়ে যান। অবিরাম মেহনতের মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ একদিন ‘রুসূখ ফিল ইলম ও তাফাক্কুহ ফিদ্দীন’ অর্জন করতে পারবেন। আল্লাহ তাওফীক দিন। আমীন। আপনি প্রশ্নে যেসব শব্দ উল্লেখ করেছেন এই পরিভাষাগুলো সাধারণত আরবী শব্দের ‘জবতে’র ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আরবী ভাষার লেখারূপের সূচনালগ্নে আরবী আর আযমীদের জন্য এই নূকতা বলেই হয়তো এই সব নূকতাওয়ালা বর্ণের নাম দেওয়া হয় ‘আলমু’জামাহ’ আর কিছু বর্ণ রাখা হয় নূকতাবিহীন। এর নাম রাখা হয় ‘আলমুহমালা’। সে যাই হোক, কোনো কোনো মাক্ষী নবীশের কবলে পড়ে বা অন্য কোনো কারণে এই নুকতার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি থেকে রক্ষার জন্য ‘জবতটাকে আরো স্পষ্ট করার জন্য বলে দেওয়া হয় নুকতাটা বর্ণের উপরে হবে না নিচে। উপরে হলে ‘আলফাওকিয়্যহ’ বা ‘আলফাওকানিয়া’ বা ‘ফাওকা’ আর নিচে হলে ‘আত-তাহতিয়্যাহ’ বা ‘আত-তাওতানিয়া’ বা ‘তাহতা’ বলা হয়। এরপর আবার নুকতা কয়টি হবে। একটি হলে ‘আলমুওয়াহহাদা’। আর দুটি হলে ‘আলমুছান্নাহ’ আর তিনটি হলে ‘আলমুছাললাছাহ’ বলে জবত করা হয়। যেমন আরবী বর্ণমালার নিচে এক নুকতাওয়ালা ‘বা’ কে ‘মুওয়াহহাদা’ আর উপরে দু নুকতা ওয়ালা ‘তা’ ‘মুছান্নাহ-ফাওকা’ আর নিচে দু নুকতা ওয়ালা ‘ইয়া’ কে ‘মুছান্না তাহতা’ অথবা ‘মুছান্নাত তাহতিয়্যাহ’ আর তিন নুকতাওয়ালা ‘সা’ কে ‘মুছাল্লাছাহ’ আর নুকতাওয়ালা ‘খা’ ‘জাল’ ‘সীন’ ‘যাদ’ ‘গাইন’ ইত্যাদি বর্ণকে ‘আলমুহমালাহ’ বলে। এমনিভাবে রায়ে মুহমালাকে যায়ে মুজামা থেকে পার্থক্য করণের জন্য প্রথমটিকে ‘হামযা বা’দা আলিফ’ আর দ্বিতীয়টি যায়ে মু’জামাকে ‘মুছান্নাহ তাহতা বা’দা হামযাহ’ বলা হয়ে থাকে। (দেখা যেতে পারে আলমুগনী পৃ. ২) উপরোক্ত কথাটি মাথায় রেখে শরাহ-হাশিয়ার জবতগুলোতে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিন। বিষয়টি সহজ হয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।