উবাইদুল্লাহ - জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, ঢাকা
Question
(ক) আমরা তো চারই মাযহাবকে হক বলে স্বীকার করি। তাহলে হিদায়ার মধ্যে অন্যান্য মাযহাবের মাসআলাগুলো খন্ডন করা হয় কেন? শুধু আমাদের মাযহাবটা সাব্যস্ত করলেই তো চলে। হক কথাকে খন্ডন করার কী প্রয়োজন?
(খ) হিদায়ার হাদীসের তাখরীজসমূহের মধ্যে ইবনে হাজার রাহ.-এর তাখরীজে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। আর نصب الراية দীর্ঘ হওয়ার কারণে প্রতিটি হাদীস সেখানে দেখা সম্ভব হয় না। তাই আমি জানতে চাই, হিদায়ার এমন কোনো সংক্ষিপ্ত তাখরীজ আছে কি না যাতে হাদীসের তাখরীজ করা হয়েছে হানাফী মুহাদ্দিসগণের কিতাব থেকে। প্রতিটি হাদীস বর্ণনা করার সাথে সাথে হানাফীদের পরিভাষা অনুযায়ী তা خبر واحد না مشهورনা متواتر তা বর্ণিত থাকবে।
Answer
(খ) ‘আদদিরায়া ফী মুনতাখাবি তাখরীজি আহাদিসিল হিদায়া’ নামে হাফেজ ইবনু হাজার রাহ. হেদায়ার হাদীসের তাখরীজ লিখেছেন। এটি তাঁর নিজের স্বতন্ত্র ও মৌলিক তাসনীফ নয়। বরং ‘নসবুর রায়া’-এরই একটি উত্তম খোলাসা ও সারসংক্ষেপ। সুতরাং ‘নাসবুর রায়া’ গ্রন্থের অনেক বৈশিষ্ট্য স্বত্ত্বেও হেদায়ার হাদীসের তাখরীজের ক্ষেত্রে যে কয়েকটি বিষয়ের অভাব ও শুন্যতা রয়েছে তা এর খোলাসা ‘আদদিরায়া’তেও রয়েছে। তবে পার্থক্য হল, ‘নসবুর রায়া’য় অনেক হাদীস ও রেওয়ায়েতেরই শুধু তাখরীজ করা হয়েছে, হুকুম ও মান উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু ‘আদদিরায়া’য় সংক্ষেপে প্রায় সকল রেওয়ায়েতের হুকুমও বয়ান করা হয়েছে। তবে হেদায়া কিতাবের হাদীস ও রেওয়ায়েতের তাখরীজ এবং সেগুলোর আসল মান ও অবস্থান জানার জন্য এবং সংশ্লিষ্ট মাসআলার দলীলযোগ্য অন্যান্য হাদীস ও আছার জানার জন্য এ কিতাবটি কোনক্রমেই যথেষ্ট নয়। এর জন্য এ বিষয়ে ‘আহাদীসুল আহকাম’ এবং হানাফী মুহাদ্দিস ও ফকীহদের সংকলিত হাদীস ও ফিকহে মুদাল্লাল-এর কিতাবের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। আপনি আপাতত সহজ ও সংক্ষেপে হাদীসসমূহের তাখরীজ-উৎস-উদ্ধৃতি জানার জন্য ‘আদদিরায়া’ দেখতে পারেন। কোনো সময় তাফসীল প্রয়োজন হলে নসবুর রায়াতেও হাদীসটির তাখরীজ দেখে নিবেন। আর হাদীসের হুকুম ও মান জানার জন্য এবং দলীলযোগ্য অন্যান্য রেওয়ায়েত জানার জন্য ‘ফতহুল কাদীর’ মুতালাআয় রাখতে পারেন। কারণ এ কিতাবটি মৌলিকভাবে হেদায়ার ফিকহী শর্হ হওয়ার পাশাপাশি হেদায়ার হাদীস ও আছারের মাঝারি কলেবরের তাখরীজও বটে। তাখরীজের ক্ষেত্রে এর মূল উৎসই হচ্ছে ‘নসবুর রায়া’। এ কিতাবের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল যে, এতে হাদীসের তাসহীহ তাযঈফের ক্ষেত্রে মানহাজুল মুহাদ্দিসীন ও মানহাজুল ফুকাহা-এর সমন্বয় ঘটেছে। বেশ কিছু হাদীসের ক্ষেত্রে হাফেয যাইলাঈ রাহ. হাফেয ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. উভয়েই বলেছেন যে, এই হাদীস আমরা পাইনি বা হাদিসটি আমরা এই শব্দে পাইনি। এধরনের ক্ষেত্রে ‘ফতহুল কাদীর’-এর সাথে সাথে কাসেম ইবনে কুতলুবুগা রাহ.-এর منية الألمعي فيما فات من تخريج أحاديث الهداية للزيلعي