মুহাম্মাদ ইলয়াস - শরহে বেকায়া মাদানীনগর মাদরাসা
Question
উসূলে ফিকহের কিতাব তো পড়েছি, পড়ছি। তবে এখনো জানি না, উসূলুশ শাশী, নূরুল আনওয়ার ইত্যাদি কিতাবগুলো কোন স্তরের? বর্তমানে এ ফন দ্বারা কীভাবে উপকৃত হওয়া সম্ভব? যেভাবে পড়ছি এবং যে কিতাবগুলো পড়ছি বাস্তবতার দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো কী পরিমাণ উপকারী? আর এ ফনে দক্ষতা অর্জনের জন্য কীভাবে অগ্রসর হওয়া দরকার? মেহেরবানী করে জানিয়ে বাধিত করবেন। জাযাকুমুল্লাহ।
Answer
উসূলুল ফিকহ হল দেরায়াতের মানদন্ড। এর অন্যতম আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, ফাহমে নুসূস ও তাফসীরে নূসুরের উসূল ও কাওয়াইদ এবং নুসূস দ্বারা
ইস্তিদলালের সঠিক ও ভুল পন্থার বিবরণ পেশ করা। ফিকহে মুদাল্লাল ও ফিকহে মুকারান-এর সফল অধ্যয়নের জন্য উসূলে ফিকহের ইলম অপরিহার্য। কারণ দালায়েল ও তালীল, উজূহে ইস্তিদলাল এবং দালায়েলের নকদ ও তাবসেরা যথাযথ বুঝার জন্য এবং ফন্নীভাবে বুঝার জন্য উসূলে ফিকহের কাওয়াইদ ও নীতিমালা জানা থাকতে হয়।
আর উসূলে ফিকহের ‘কিতাবুস সুন্নাহ’ অধ্যায়ে তো হাদীসের সহীহ-যয়ীফ নির্ণয়ের এবং রাবীর জরহ-তাদীল সংক্রান্ত ফুকাহায়ে কেরামের উসূল ও কাওয়ায়েদ উল্লেখিত হয়েছে। এ অধ্যায়ে উসূলে হাদীস সংক্রান্ত এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনাও রয়েছে, যা উসূলে হাদীসের কিতাবে উল্লেখ নেই বা থাকলেও তা নেওয়া হয়েছে উসূলে ফিকহের কিতাব থেকে।
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আশা করি ইলমু উসূলিল ফিকহের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতার বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। বাকি থাকল উসূলুশ শাশী, নূরুল আনওয়ার প্রসঙ্গ। তো এ দুটি হচ্ছে মুতাআখখিরীন আহলে ইলমের রচিত এ ফনের মাঝারি মানের কিতাব। প্রথমটির উসলূব বেশ কঠিন। আর এ জন্য হেদায়ার ফন্নী শরাহ ‘ফাতহুল কাদীর’-এর সহযোগিতা নেওয়া যায়। আর দ্বিতীয়টি তুলনামূলক সহজ। উভয় কিতাব সম্পর্কে কিছু প্রশ্নের উত্তর ইতোপূর্বে একাধিকবার লেখা হয়েছে, যা আপনি ‘তালেবানে ইলম : পথ ও পাথেয়’ কিতাবে পেয়ে যাবেন।
কিতাব দুটি যদি দরসে ভালোভাবে বুঝেশুনে পড়া হয় এবং পঠিত উসূলগুলো পরবর্তীতে হেদায়া পড়ার সময় যত্নের সাথে ‘ইজরা’ করা হয় তবে ইনশাআল্লাহ উসূলে ফিকহের সাথে এক ধরনের মুমারাসাত ও সম্পর্ক সৃষ্টি হবে।
এরপর বাকি থাকবে উসূলে ফিকহের আরো বিস্তারিত ইলম, তাহকীক-তানকীহ এবং তুলনামূলক মুতালাআর পর্যায়। সে জন্য তো সামনে সুযোগ রয়েছে। তখন এ বিষয়ে আবার পরামর্শ করতে পারবেন।