শাবিবর আহমাদ - জালালাইন জামাত, জামিআ মাহমুদিয়া মাদরাসা নবাবগঞ্জ
Question
আমি জালালাইন জামাতের ছাত্র। আমার কতগুলো মানসিক সমস্যা থাকার কারণে চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছি। সমস্যাগুলো হল-
ক) আমি একজন সাধারণ ছাত্র। কিতাবাদি মোটামুটি বুঝি। কিন্তু তারকীব ও কিতাবের ইবারত ভালোভাবে পড়তে পারি না। কীভাবে তারকীব ও ইবারত সহীহ পড়তে পারব জানালে কৃতজ্ঞ হব।
খ) আরবী ভাষা শেখা ও আরবীতে কথা বলার খুব আগ্রহ। তবে ছাত্র কম থাকায় মুনাসিব কোনো সাথী পাচ্ছি না, যার সাথে সর্বদা আরবীতে কথোপকথন করব। আরবী ভাষা কীভাবে তাড়াতাড়ি আয়ত্ত্ব করতে পারব দয়া করে জানাবেন।
গ) দরসের কিতাবগুলো সবকের পর আর পড়া হয় না। হুজুর চাপ দিলেও কখনো ধরা হয়, না হলে পরীক্ষার সময় ধরা হয়। তাই কিতাবগুলো কিভাবে পড়লে হল করতে পারব দয়া করে জানাবেন।
ঘ) কখনো কোনো বাধা-বিপত্তি এলে মনমানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়। যেমন, ছাত্রদের মাঝে কোনো সমস্যা হল কিংবা মাদরাসা বা বাড়ির কোনো সমস্যা ইত্যাদি। তখন পড়ালেখায় একেবারে মন বসে না। হতাশ হয়ে যাই। তাই নির্ঝঞ্ঝাট পড়ালেখা করার কোনো পদ্ধতি জানালে কৃতজ্ঞ হব।
Answer
ক) এ মুহূর্তে আপনার প্রধান কাজ হল সবকের আগে মুতালাআ করা, সবকে হাজির থাকা ও মনোযোগ দিয়ে উস্তাদজীর আলোচনা শোনা। এরপর তাকরার করা। এই তিন কাজ করার পর সম্ভবহলে নিযামুল আওকাত থেকে ১৫-২০ মিনিট সময় বের করুন এবং অল্প অল্প করে প্রতিদিন ‘আততরীক ইলাল আরাবিয়্যাহ’ পড়তে থাকুন। এটি শেষ হলে ‘আততরীক ইলাল কুরআনিল কারীম’শুরু করুন। ইনশাআল্লাহ এটি সহীহ-শুদ্ধ ইবারত পাঠ ও তারকীব বুঝার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
খ) এটি কোনো বড় কাজ নয়। আবার কোনো কঠিন কাজও নয়। আপনি এখন শুধু দরসী কিতাবগুলোর প্রতি মনোযোগ দিন। আর ইযাফী মুতালাআ হিসেবে (যদি সুযোগ পাওয়া যায়) উপরোক্তকিতাব দুটি মুতালাআ করুন। এ দুটি কিতাব আত্মস্থ হয়ে গেলে আরবীতে কথা বলার যোগ্যতা তৈরি হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
গ) এ তো শুনেছি বাচ্চাদের স্বভাব। তাদের পিছনে লেগে না থাকলে হয় না। আপনি তো মাশাআল্লাহ বড় মানুষ। জালালাইন জামাতের তালিবে ইলম। আপনার তো নিজ আগ্রহেই পড়া উচিত।ইলমের সাথে মহববত হয়ে গেলে এই অভিযোগ থাকবে না।
ঘ) দুনিয়া তো সমস্যারই নাম। এখানে কাজ করার পদ্ধতিই হল সব সমস্যা থেকে চোখ ফিরিয়ে নিজের কাজে লেগে থাকা। যারা কাজ করেছেন সবাই এভাবেই করেছেন।
إذا كان يؤذيك حر المصيف *
ويبس الخريف وبرد الشتاء
ويلهيك حسن زمان الربيع *
فأخذك للعلم قل لي متى.
শরতের শুষ্কতা এবং শীত-গ্রীষ্মের ঠান্ডা-গরম যদি তোমাকে বিচলিত করে/আর বসন্তের রূপ-সৌন্দর্য তোমাকে উদাসী করে রাখে তাহলে বল, কখন তুমি ইলম অর্জন করবে?
আর আপনি যে সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন তা তো কোনো সমস্যাই নয়। তালিবে ইলমের জন্য এসব জিনিসকে নিজের সমস্যা মনে করা একেবারেই নির্বুদ্ধিতা।
من حسن إسلام المرء تركه ما لا يعنيه
‘ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হল অনর্থক কাজ পরিহার করা।’
এই হাদীসের উপর আমল করুন। তাহলে কোনো দুশ্চিন্তা হবে না।
আমার উদ্দেশ্য এই নয় যে, কোনো সাথী অসুস্থ হলে তার সেবা ও খেদমত করবেন না। অবশ্যই খেদমত করবেন। এতে আপনার ইলমে বরকত হবে। তবে এটাকে কোনো সমস্যা মনে করবেন না।