Rabiul Auwal-Rabiul Akhir 1434 || February 2013

মুহাম্মাদ নাজমুল হক - জালালাইন জামাত ফরিদাবাদ মাদরাসা

Question

) ইমাম আবু  হানীফা রাহ.-এর মানাকিব ফাযাইল বর্ণনার জন্যআলইমামুল আযমউপাধিটিই যথেষ্ট। কিন্তু জানার বিষয় হল, এই উপাধিটি কে কখন নির্ধারণ করেছেন? আশা করি দলিল-প্রমাণসহ জানাবেন।

) স্বপ্নের তাবীর সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য কিতাব আছে কি? খাবনামা কিতাবটিকে ইবনে সীরিন রাহ.-এর দিকে সম্বন্ধ করা হয়। এটি কি তাঁর নিজের লেখা কিতাব, না অন্য কারো? দয়া করে জানাবেন।

 

Answer

) ‘আলইমামুল আযম’ উপাধিটি ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর জন্য সর্বপ্রথম কে ব্যবহার করেছেন-তা আমার জানা নেই। আর তা এখন খুঁজে দেখারও ফুরসত নেই।

আবু সাআদ সামআনী (৫৬২ হি.)-এর ‘আলআনসাব’ (ইমাম শাফেয়ী রাহ.-এর জীবনীর আলোচনায়), ইবনুল আছীর ইযযুদ্দীন (৬৩০ হি.)-এর ‘আলকামিল’ এবং শামসুদ্দীন যাহাবী (৭৪৮হি.)-এর ‘তাযকিরাতুল হুফফায’ কিতাবেও এই উপাধিটি আছে। তাঁদের আগেও অনেক আলিম এই উপাধি ব্যবহার করেছেন। ইমাম আবু ইউসুফ রাহ. (১৮৩ হি.) ‘কিতাবুল খারাজে’ হযরতইমামকে ‘আলফকীহুল মুকাদ্দাম’ উপাধিতে উল্লেখ করেছেনযা  শব্দেরই সমার্থক।

অবশ্য ‘আলইমামুল আযম’ উপাধি অন্যান্য ইমামের জন্যও ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সম্ভবত এটি ইমাম ছাহেবের বৈশিষ্ট্য যেসকল মাযহাবের অনেক আলিমই তাঁর জন্য এই উপাধি অধিকহারেব্যবহার করেছেন। অনেক আহলে হাদীস  সালাফী আলিমও ব্যবহার করেছেন। অতি সম্প্রতি আরবের একজন বড় সালাফী আলিম শায়খ সালমান আলউওদাহ-এর ‘মাআল আইম্মাহ’ কিতাবটিহাতে এসেছে। তাতে তিনি ইমাম রাহ.-এর আলোচনা ‘আলইমামুল আযম’ শিরোনামেই করেছেন।

একটি কথা মনে রাখতে হবে যেবাহ্যত এটি কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত কোনো উপাধি নয়। আল্লাহর কোনো বান্দার কলম কিংবা মুখ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা এটিকে প্রসিদ্ধি দানকরেছেন এবং সর্বজনস্বীকৃত বানিয়েছেন। তবে এর অর্থ এই নয় যেএই উপাধির উপর নির্ভর করে আমরা ইমাম রাহ.-এর সীরাত  মানাকিব (জীবনচরিতবিস্তারিত  নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকেঅধ্যয়ন করা থেকে বিরত থাকব কিংবা ফিকহে হানাফীর মাসআলাসমূহ দলিল-প্রমাণের আলোকে মুতালাআ করা অপ্রয়োজনীয় মনে করব। আবার এটাও উদ্দেশ্য নয় যেকেউ অন্য ইমামের জন্যআলইমামুল আযম’ উপাধি ব্যবহার করলে তাতে আপত্তি করব। কেননা একই উপাধির বিভিন্ন দিক থাকে। ফলে এমনটি হওয়া খুবই সম্ভব যেএকটি উপাধি একদিক থেকে একজনের জন্যপ্রযোজ্য আবার অন্য দিক থেকে অন্য কারো জন্য। সুতরাং উপাধিকে পরস্পর গর্ব-অহংকার কিংবা দ্বন্দ্ব-কলহের মাধ্যম বানানো উচিত নয়।

ان اكرمكم عند الله اتقاكم

এই মূলনীতিটি সব সময় স্মরণ রাখা উচিত। আর এই নীতি অনুসারে কে ‘আকরাম’ আর কে ‘আযম’ তা তো কেবল আল্লাহ তাআলাই জানেন।

আমার জানা মতেপ্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন রাহ.-এর সাথে এর নিসবত/সম্বন্ধ প্রমাণিত নয়।তবে এটি কার রচনা তা আমার জানা নেই। আর এই মুহূর্তে আমার পক্ষে তাহকীক করারও সুযোগ নেই। আপনি নিজেইধীরে ধীরে এসব বিষয়ের তাহকীক শুরু করতে পারেন। তবে শরীয়তের দৃষ্টিতে এখনই জরুরি নয়-এমন কাজে লিপ্ত হয়েজরুরি কাজে ব্যাঘাত ঘটানো উচিত নয়।

Read more advices provided in this issue