উর্দু ভাষার প্রসিদ্ধ অভিধান ‘ফিরুযুল লুগাত’ ছাড়া উর্দূ থেকে উর্দূ নিভরযোগ্য আর কী কী অভিধান রয়েছে-জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উর্দু ভাষার প্রসিদ্ধ অভিধান ‘ফিরুযুল লুগাত’ ছাড়া উর্দূ থেকে উর্দূ নিভরযোগ্য আর কী কী অভিধান রয়েছে-জানালে কৃতজ্ঞ হব।
উর্দু থেকে উর্দু নির্ভরযোগ্য আরো বেশ কয়েকটি অভিধান রয়েছে। কয়েকটির নাম নিম্নে উল্লেখ করছি :
1ـ جامع اللغات ـ خواجه عبد المجيد
2ـ علمى اردو لغات ـ وارث سرهندى
3ـ فرهنك أصفيه ـ مولوى سيد أحمد دهلوهى
4ـ نسيم اللغات ـ نسيم امروهى.
পাকিস্তান ‘উর্দু তারাক্কী বোর্ড’-এর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে বড় বড় সংকলন প্রস্ত্তত হচ্ছে।
Sharable Link
মিশকাত শরীফের হাদীসের ব্যাখ্যা দেখার জন্য মোল্লা আলী কারী রাহ. রচিত ‘মিরকাত’ মুতালাআ করে থাকি। অনেক জায়গায় দেখেছি যে, ইবনে হাজার রাহ.-এর বরাতে বিভিন্ন আলোচনা নকল করা হয়েছে এরপর সেগুলো খ ন করা হয়েছে। আমার প্রশ্ন হল, এই ইবনে হাজার কি সহীহ বুখারীর ভাষ্যগ্রন্থের লেখক ইবনে হাজার আসকালানী? মিশকাত শরীফের উপর তাঁর কি কোনো শরাহ রয়েছে?
সম্ভবত এ ধরনের একটি প্রশ্নের উত্তর আলকাউসারের পেছনের কোনো সংখ্যায় দিয়েছি। মোল্লা আলী কারী রাহ. মিরকাত গ্রন্থে মাঝেমধ্যে নবম শতকের প্রখ্যাত হাফেযে হাদীস, ‘ফাতহুল বারী’র মুসান্নিফ ইবনে হাজার আসকালানী রাহ.-এর কথা উদ্ধৃতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি সাধারণত তাঁর নাম শায়খুল ইসলাম বা হাফেযসহ কিংবা আসকালানী নিসবতসহ উল্লেখ করেন। মিশকাতের উপর তাঁর রচিত আলাদা কোনো শরহের কথা আমার জানা নেই।
আর শুধু ইবনে হাজার নামের একজনের থেকেও তিনি বহু বিষয় নকল করেছেন এবং অধিকাংশ জায়গায় সেগুলো খন্ডন করেছেন। এই ইবনে হাজার হলেন দশম শতকের শাফিয়ী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফকীহ ও মুহাদ্দিস ইবনে হাজার হায়তামী আলমক্কী রাহ. (মৃত্যু : ৯৭৩ হি.)। মিশকাত শরীফের উপর ‘ফাতহুল ইলাহ ফী শরহিল মিশকাত’ নামে তাঁর একটি শরহ রয়েছে, যাতে তিনি প্রায় অর্ধেক কিতাবের শরহ করতে পেরেছেন। কিতাবটি সম্পূর্ণ করার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। দেখুন : আলবিজায়াতুল মুযজাত-মুকাদ্দিমায়ে মিরকাত, আবদুল হালীম চিশতী পৃ. ৬৪; শাজারাতুয যাহাব ৮/৩৭০-৩৭১; আলআ’লাম, যিরিকলী ১/২৩৪
Sharable Link
আমি বিবাহের আগে তালীমুল ইসলাম, বেহেশতী যেওর, মীযান-মুনশাইব, নাহবেমীর, বাকুরাতুল আদব ও এসো আরবী শিখি কিতাবগুলো পড়েছি। হেদায়াতুন নাহু ও কুদূরী পড়া শুরু করেছিলাম, কিন্তু কোনো কারণে প্রায় তিন বছর আমার লেখাপড়া বন্ধ থাকে। এরপর চলতি বছর বিবাহও হয়ে যায়। আমার স্বামী যেহেতু আলিম তাই আমি বাসায় আমার স্বামীর কাছে আবার পড়াশোনা করতে আগ্রহী এবং শুরুও করেছি। আমার জানার বিষয় হল, যেহেতু পিছনের পড়া অনেকটা কাঁচা হয়ে গেছে তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে কীভাবে মেহনত করলে সহজে আরবী ভাষা শিখতে পারব এবং দ্বীনী ইলম হাসিল করতে পারব?
বড় খুশির কথা। আল্লাহ তাআলা আপনার আগ্রহ ও হিম্মত আরো বাড়িয়ে দিন। আপনি আবার বুঝে বুঝে ‘এসো আরবী শিখি’ কিতাবটির তিনটি খন্ডই পড়ুন এবং সাথে ‘আততামরীনুল কিতাবী’ কিতাবটিও আপনার স্বামীর কাছে পড়ুন এবং তামরীনের কাজগুলো নিয়মিত করতে থাকুন। এরপর নাহবের কায়েদা-কানুন জানার জন্য ‘হেদায়াতুন নাহব’ কিতাবটি পড়ুন। এসব পড়া শেষ হওয়ার পর যোগাযোগ করলে সামনের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া যাবে। আর সাধারণ দ্বীনী ইলম হাসিল করার জন্য সহজ উর্দু ভাষায় রচিত দ্বীনী কিতাবগুলো নিয়মিত পাঠ করুন। যেমন -
১. বেহেশতী যেওর (সব কটি খন্ড)
২. ‘ইসলাহী নেসাব’। এটি হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রাহ.-এর ছোট ছোট দশ কিতাবের সমষ্টি।
৩. ইসলাহুর রুসুম, থানভী রাহ. কৃত
৪. দ্বীন ও শরীয়ত।
৫. ইসলাম ক্যায়া হ্যায়।
৬. কুরআন আপ সে ক্যায়া কাহতা হ্যায়।
এ তিনটি কিতাবের লেখক হলেন মাওলানা মনযূর নুমানী রাহ.।
এছাড়া তাফসীরে তাওযীহুল কুরআন (হযরত মাওলানা তাকী উসমানী দা.বা. কৃত) উর্দু বা বাংলা এবং মাআরিফুল হাদীস (মাওলানা মানযুর নূমানী রাহ. কৃত) উর্দু বা বাংলাও সবকে সবকে পড়ার চেষ্টা করুন।
Sharable Link
ক) আমি দরসে নিযামীতে ইফতা সমাপ্ত করে একটি মাদরাসায় কয়েক বছর ধরে তাদরীসে আছি। আরবী ভাষার প্রতি আমার আন্তরিক টান আছে তবে ‘মাহারত’ যাকে বলে তা নেই। আমি মনে করি, একজন আলিম যদি যে কোনো আরবী বই-পুস্তক বা সাহিত্য পত্রিকা অনায়াসে বুঝতে না পারে তবে তার ছাত্রজীবন ব্যর্থ, যার একটি জীবন্ত নমুনা আমি অধম। নাহবের কায়দা-কানুন ও আরবী তারকীব জানা আছে। তবে ছাত্রজীবনে আদাবে আরবী বিষয়ে তামরীন হয়নি বলে হয়ত আমার এই দুর্বলতা। আমার এই ‘নাকস’ দূর করার জন্য আমি কি কোনো আরবী সাহিত্য কোর্সে ভর্তি হব নাকি অন্য কোনো পদ্ধতি আছে, যার দ্বারা আমি উপকৃত হতে পারব? দয়া করে জানাবেন।
খ) আমি অন্তরের কয়েকটি ব্যধিতে ভুগছি, যা একমাত্র আল্লাহ রাববুল আলামীনই জানেন। এজন্য আত্মশুদ্ধির প্রয়োজন অনুভব করছি। তবে এই মহৎ কাজের জন্য কোথায় ও কোন ধরনের মানুষ নির্বাচন করব তা বুঝে ওঠতে পারছি না। তাই আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।
গ) আমি ইফতা পড়েছি কিন্তু ফিকহের বিষয়ে আক্ষরিক অর্থে আমি কাঁচা, যা পড়েছি তাও দিন দিন ভুলে যেতে বসেছি। কিভাবে ফিকহের বিষয়টি আয়ত্তে আনতে পারি এ বিষয়ে পরামর্শ কামনা করছি।
আপনার প্রথম ও তৃতীয় সমস্যা সম্পর্কে ভালো পরামর্শ তো আপনার তালীমী মুরববীই দিতে পারেন। কারণ তিনিই আপনার হালত সম্পর্কে সম্যক অবগত। তাঁর পরামর্শক্রমে আপনি আদাবে আরবী ও ইফতা-এই দুই বিষয়ের মধ্যে যে কোনো একটিকে আপনার ‘মাশগালা’ হিসেবে বেছে নিন এবং জীবনের লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করুন। বুলন্দ হিম্মত ও অবিরাম মেহনতের মাধ্যমে সম্ভব সব উপায়-উপকরণ অবলম্বন করে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকুন। যেহেতু ইফতার দ্বারা কিছু না কিছু ফায়েদা হয়েই থাকে আর আপনিও কিছুদিন এ বিষয়ে তামরীন করেছেন সে হিসেবে আপনি এটাকে আপনার মাশগালা হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
আপনি যখন কোনো বিষয়কে নিজের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন তখন নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে অভিজ্ঞ কোনো আহলে ফনের কাছে সময় দিতে পারলে খুব ভালো। আপনি যে মাদরাসায় তাদরীসে আছেন সেখানে যদি এমন কোনো উস্তায থেকে থাকেন তাহলে তাঁর নেগরানিতে তাদরীসি খেদমতের পাশাপাশি আপনার মেহনত জারি রাখতে পারেন।
তাছাড়া আপনি প্রাথমিক মেহনত এভাবেও শুরু করতে পারেন যে, ঐ ফনের কোনো কিতাব যদি আপনার তাদরীসের যিম্মাদারিতে থাকে, তাহলে তাকে কেন্দ্র করে ব্যক্তিগতভাবে বাড়তি মেহনত করুন। এভাবে ধীরে ধীরে ইনশাআল্লাহ মানযিলের দিকে অগ্রসর হতে পারবেন।
আপনি চিঠিতে যে বলেছেন, একজন আলিম যদি যে কোনো আরবী সাহিত্য পত্রিকা বা এই মানের বই-পুস্তক বুঝতে না পারে তাহলে তার ছাত্রজীবন ব্যর্থ-এই ধারণাটা অনেক সময় হীনম্মন্যতার কারণেও হয়ে থাকে। কারণ মৌলিক কিতাবী ইস্তিদাদ তৈরি করা দরসে নিযামীর একটি মৌলিক লক্ষ্য। এটি যদি কারো অর্জিত হয় তাহলে সে কুরআন, হাদীস ও ফিকহসহ উলূমে ইসলামিয়্যাহ সংক্রান্ত যে কোনো কিতাব সহজেই বুঝতে পারবে। তার সাথে সে যদি ব্যবহারিক আরবী ও আধুনিক পত্র-পত্রিকা বুঝতে পারে তাহলে ভালো। কিন্তু এই বাড়তি অর্জনটা না হলে তার ছাত্রজীবনকে ব্যর্থ মনে করা সঠিক নয়। কারণ এর জন্য আলাদা মেহনত দরকার। কিছুদিন মেহনত করলে ঐ সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সলীম খান সংকলিত ‘আলমুখতারাতুল আরাবিয়্যাহ’ জাতীয় কোনো কিতাবের সহযোগিতাও নেওয়া যেতে পারে।
ইসলাহী মুরববী সম্পর্কে আপনার অনুভূতি মোবারকবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এটাও সত্য যে, এটা কেউ কাউকে নির্ধারণ করে দেওয়ার বিষয় নয়। বরং প্রত্যেকেই নিজের রুচি, চাহিদা ও
ইস্তেফাদা করার সুযোগ-সুবিধা, সর্বোপরি নিজের হাল হিসেবে একজন মুরববী বেছে নিবে। এক্ষেত্রে একটি উসূল মনে রাখা দরকার, যা আমরা অনেকেই খেয়াল করি না। তা হল, আমরা নিজের ইসলাহের জন্য ‘ফিরিশতা সিফাত’ অথবা কমপক্ষে ত্রুটি-বিচ্যুতিমুক্ত মুসলিহ তালাশ করি। অথচ নিজের অবস্থার কথা ভেবে দেখি না। এই মনোভাব সঠিক নয়। আরবীতে একটি প্রবাদ আছে-
من لم ير مفلحا لن يفلح أبداً
অতএব যত দ্রুত সম্ভব কোনো মুসলিহ মুরববীর হাতে নিজেকে সোপর্দ করে ইসলাহী সফর শুরু করুন। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন।
Sharable Link
মুহতারাম! আমি আপনাকে আল্লাহর জন্য মুহাববত করি। বিভিন্ন সমস্যায় আপনার কাছে লিখতে ইচ্ছে হলেও সুযোগ হয় না। আজ বিকেলে সুযোগ পেয়ে লিখছি। আমি কাফিয়া জামাতে পড়ি। এ জামাতে আমাদের পাঠ্য কিতাবগুলো হচ্ছে, তরজমাতুল কুরআন (১১-২০ পারা), কুদূরী, উসূলুশ শাশী, দুরুসুল বালাগাহ, কাফিয়া ও মিরকাত। এগুলোর মধ্যে কাফিয়ার লম্বা তাকরীর মুখস্থ করতে ভালো লাগে না। তেমনি মিরকাত কিতাবটিও সবকের সময় ছাড়া অন্য সময় পড়তে ইচ্ছে হয় না। কারণ এগুলোর পিছনে সময় দিলে গুরুত্বপূর্ণ কিতাবের শরাহ মুতালাআ করা যায় না। এখন আমার করণীয় কী?
আপনি যে মাদরাসায় পড়াশোনা করেন সেখানকার নেসাব-নেযামের অনুগত থাকা আপনার কর্তব্য। মাদরাসার সবকিছুকে সম্মান ও গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করুন। তবে একথা সত্য যে, কাফিয়ার শরাহসমূহের অপ্রয়োজনীয় ও দূর সম্পর্কীয় ‘কিলা-কুলনা’র পেছনে সময় ব্যয় করা উচিত নয়। এ বিষয়ে উস্তাযে মুহতারাম হযরত তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম ও দেওবন্দের শায়খ সাঈদ আহমদ পালনপুরী দামাত বারাকাতুহুমের পরামর্শ অনুসরণ করতে পারেন।
তাঁদের পরামর্শ যদিও পাঠদান-পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত, তবে একজন বুদ্ধিমান তালিবে ইলম তা থেকে নিজের কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে পারেন।
তাঁদের উভয়ের আলোচনার সারমর্ম হল, কাফিয়া ইলমে নাহবের একটি মশহূর মতন। এর ইবারত সহজ। ফনের জরুরি সব মাসআলা এতে সন্নিবেশিত হয়েছে। এর দ্বারা প্রয়োজন পূর্ণ হয়ে যায়।
ফিকহের ক্ষেত্রে মুখতাসারুল কুদূরী যেমন নাহবের ক্ষেত্রে কাফিয়া তেমনই। অর্থাৎ এতে শুধু নাহবের মাসআলা বয়ান করা হয়েছে। বিস্তারিত দলিলের জন্য রয়েছে শরহে জামী, যেমন ফিকহের ক্ষেত্রে আছে হিদায়া। কিন্তু মূল কাফিয়ার মাসআলার পিছনে সময় ব্যয় না করে কায়েদার দলিল ও নুকতা এবং যুক্তি ও রহস্য বর্ণনার পেছনে প্রচুর সময় ব্যয় করা হয়। এই ধারার প্রচলন করেছেন খোরাসানী ও আফগানী কিছু আলিম। এভাবে প্রশ্নোত্তর, হাকীকত-মারিফত এবং ‘নুকতা দর নুকতা’র সিলসিলা শুরু হয়ে গেল আর ধীরে ধীরে মূল মাসআলাগুলোই গুরুত্বহীন হয়ে যেতে থাকল।
অতএব কাফিয়ার তালিবে ইলমের প্রথম দায়িত্ব হল, মূল মাসআলা খুব ভালোভাবে বুঝা ও তা আত্মস্থ করে নেওয়া। কারণ এই কিতাবের মাকসাদই হল, প্রয়োজনীয় প্রাথমিক জ্ঞানলাভের পর নাহবের বিস্তারিত মাসআলাগুলোর মাধ্যমে ফনের সাথে তালিবে ইলমের মুনাসাবাত তৈরি করা এবং বিভিন্ন উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত দ্বারা নাহবের মাসআলা ইস্তেম্বাত করার যোগ্যতা পয়দা করা।
তবে বুঝার স্তর ‘হিদায়াতুন নাহু’ থেকে এটুকু উঁচু হতে পারে যে, ইবারতের ফাওয়ায়েদ-কুয়ূদ ও শব্দ-বাক্যের প্রেক্ষাপট স্পষ্ট হয়ে যায় এবং গ্রন্থকার যে সকল আলোচনা অতি সংক্ষেপে করেছেন তা পরিষ্কারভাবে অনুধাবন করা যায়।
এর বাইরে নাহবের সাথে সম্পর্কহীন আকলী মুনাকাশা ও শাব্দিক মারপ্যাঁচ সম্পূর্ণ পরিহার করা উচিত।
২. কাফিয়ার সর্বোত্তম শরহ হল শরহে রযী। এছাড়া শরহে জামী ও হাশিয়ায়ে ঈসামেও এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা কিতাব বোঝার জন্য জরুরি কিংবা ইলমে নাহবের সাথে প্রাসঙ্গিক। কিন্তু ‘তাহরীরে সম্বট’ জাতীয় যে সকল শরহে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা রয়েছে কোনো অবস্থাতেই তালিবে ইলমদেরকে এই সব শরহ দেখার অনুমতি দেওয়া যায় না।
উদাহরণস্বরূপ,
لكلمة لفظ وضع لمعنى مفرد
এর পিছনে যেভাবে দিনের পর দিন ব্যয় করা হয়, এর কোনো প্রয়োজন নেই। বরং এই বাক্যের মূল অর্থের বাইরে শুধু আলিফ-লামের প্রকারভেদ, মুফরাদের অর্থ এবং এর ইবারতগত ও অর্থগত পার্থক্যগুলো বুঝে নেওয়াই যথেষ্ট। তবে আলিফ-লামের প্রকারাদির জন্য এই পরিমাণ উদাহরণ বের করা চাই, যাতে প্রত্যেক প্রকারের পূর্ণ পরিচয় যেহেনে বসে যায়।
৩. অনর্থক আলোচনা পরিহার করার ফলে যে সময় পাওয়া যাবে তা নাহবের প্রায়োগিক যোগ্যতা তৈরির পিছনে ব্যয় করা উচিত। কিতাবে বর্ণিত মাসআলাগুলোর মিছাল ছাড়াও আরো মিছাল, কুরআন-হাদীস ও আরবী সাহিত্য থেকে দৃষ্টান্ত বের করা, এই ধরনের আরো নতুন নতুন বাক্য তৈরি করা; যাতে পঠিত কায়দার উপর ভালোভাবে তামরীন হয়ে যায়।
এই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য কাফিয়ার তালিবে ইলম ‘আননাহবুল ওয়াফী’ মুতালাআয় রাখতে পারে। এই কিতাবে কাফিয়া স্তরের উপযোগী মাসআলা কুরআন-হাদীস ও আরবী সাহিত্যের বিভিন্ন উদাহরণসহকারে পেশ করা হয়েছে। এর বাইরে এই কিতাবে আলাদা তামরীন অংশও রয়েছে। এতে করে একদিকে কাফিয়ার মাসায়েলের ইজরা হবে, অন্যদিকে ধীরে ধীরে আরবী ভাষা ও সাহিত্যের রুচি তৈরি হবে।
এক্ষেত্রেও মূল কথা হল, কাফিয়ার তালিবে ইলমদের উচিত, সাহিত্য-রুচি ও নাহবী যওক আছে এমন উস্তাদদের সহযোগিতা নেওয়া। আর প্রত্যেক
উস্তাযেরও কর্তব্য, আদবী যওক উন্নত করার চেষ্টা করা এবং নাহব ও আরবী সাহিত্যের মৌলিক ও মানোত্তীর্ণ গ্রন্থসমূহ নিজেদের সাধারণ মুতালাআয় রাখা। (পালনপুরী দা.বা. কৃত হা-দিয়া শরহে কাফিয়া, দরসে নিযামী কি কিতাবে ক্যায়সে পড়হেঁ আওর পড়হায়েঁ ২৬-২৯)
আর মিরকাত পর্যন্ত মানতিক তো খুব বেশি নয়। তাই মিরকাত বা এই জাতীয় কোনো সহজ কিতাব থেকে মানতিকের ইস্তিলাহগুলো মোটামুটিভাবে আত্মস্থ করে নেওয়াই ভালো।
তাছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফনের যে কিতাবগুলো নেসাবে আছে, সে ক্ষেত্রে নিয়ম হল, প্রথমে মূল মতন ভালোভাবে হল করতে চেষ্টা করুন। সাথে সাথে এসব কিতাবের আরবী শরহ-হাশিয়াগুলোর সাথে পরিচিত হোন। মাঝে মাঝে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বহস কিংবা কোনো ইবারত জটিল মনে হলে এসব আরবী শরহের সহযোগিতা নিন। নেযামুল আওকাতে তারপরও সময় থাকলে নির্দিষ্ট কোনো শরহ নিয়মিত মুতালাআ করতে পারলে তো নূরুন আলা নূর। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে আমলের তাওফীক দান করুন। আমীন।
Sharable Link