Jumadal Akhirah 1433 || May 2012

মুহাম্মাদ খাদেমুল ইসলাম - ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকা

২৫৯০. Question

 

সূরা বনী ইসরাইলের ২৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, পিতামাতাকে উফ শব্দটি বলা যাবে না। আর বাহ্যত এমনই বোঝা যায়। কিন্তু একজন আলেম বলেছেন, উফ শব্দ বলা যাবে না-এর অর্থ হল পিতামাতাকে এমন কোনো কথা বলা যাবে না, যার কষ্টের কারণে তারা উফ শব্দ বলেন। এ বিষয়ে দলিল-প্রমাণসহ সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।


 

Answer

সূরা বনী ইসরাইলের উক্ত আয়াতের তরজমা এবং সঠিক তাফসীর নিম্নে পেশ করা হল।

তরজমা : পিতামাতার কোনো একজন কিংবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয় তবে তাদেরকে (উফ) পর্যন্ত বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো।-সূরা বনী ইসরাইল : ২৩

 

আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসীর

ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, পিতামাতা উভয় থেকে কিংবা কোনো একজন থেকে কষ্টদায়ক কোনো কিছু দেখলে বিরক্ত হয়ে উফ বলো না।-তাফসীরে তবারী ৮/৫৯

অর্থাৎ আলোচ্য আয়াতে পিতামাতা বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের কোনো আচরণে কষ্ট পেয়ে সন্তানের জন্য উফ বলতে এবং বিরক্তি প্রকাশমূলক কোনো আচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। এখানে সন্তানকে উফ বলতে নিষেধ করা হয়েছে। আর উফ শব্দ বলে এমন আচরণ বোঝানো হয়েছে, যদ্দারা বিরক্তি প্রকাশ পায়। তাফসীরবিদগণ বলেন, এক্ষেত্রে পিতামাতার কথায় বা কাজে বিরক্ত হয়ে তাদেরকে শুনিয়ে দীর্ঘ শ্বাস নেয়াও এই নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত।-তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ৫/৪৬৬

হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পীড়াদানের ক্ষেত্রে উফ বলার চেয়ে যদি আরো হালকা কোনো শব্দ থাকত তবে তাও উল্লেখ করা হত। (অর্থাৎ উফ শব্দটি তৎকালীন আরবে সর্বনিম্ন স্তরের পীড়াদায়ক শব্দ বলে বিবেচিত হত।)-আলজামিউ লি আহকামিল কুরআন ১০/১৫৯

মোটকথা সন্তানের যে কথা বা কাজে পিতা-মাতা উভয়ে কিংবা কোনো একজন সামান্যতমও কষ্ট পান, সে কথা বা কাজ উক্ত আয়াতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যাখ্যা সঠিক নয়।

-তাফসীরে তাবারী ৮/৫৯; আলজামিউ লিআহকামিল কুরআন ১০/১৫৯; রুহুল মাআনী ১৫/৫৫; মাআরিফুল কুরআন ৫/৪৬৬; আহকামুল কুরআন, ইবনুল আরাবী ৩/১১৯৮

Read more Question/Answer of this issue