Muharram 1433 || December 2011

মুহাম্মাদ সাঈদ বিন আবদুল জলীল - সদর মোমেনশাহী

২৩৬৬. Question

আমাদের এলাকায় জমি বন্ধকের দুটি প্রচলন রয়েছে : এক. বন্ধকদাতা বন্ধক গ্রহীতার নিকট থেকে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা গ্রহণ করে আর বন্ধকগ্রহীতা জমি ভোগ করতে থাকে। যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন জমি

হস্তান্তর করে।

দুই. এটিও উপরের মতোই। তবে পার্থক্য হল, এক্ষেত্রে যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন বছর হিসাব করে বন্ধকগ্রহীতা কিছু টাকা কম নেয়। যেমন-কেউ এক কাঠা জমি বন্ধক নিল দশ হাজার টাকায় এবং সে দু বছর এ জমি ভোগ করে। দু বছর পর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় পাঁচশ টাকা করে এক হাজার টাকা কম নেয়। এ সুরতগুলো সহীহ কি না? উত্তম পন্থা কোনটি জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

ঋণদাতার জন্য বন্ধকি জমি ভোগ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি মূলত ঋণ প্রদান করে বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত প্রথম পদ্ধতিটি নাজায়েয হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট। আর দ্বিতীয় পদ্ধতিটি মূলত ঋণ প্রদান করে বন্ধকি জমি ভোগ করার একটি অবৈধ ছুতা। কারণ এক্ষেত্রে আলাদাভাবে ইজারা চুক্তি করা হয় না; বরং জমি ভোগ করার শর্তেই ঋণ দেওয়া হয় এবং ঋণের সুবিধা পাওয়ার কারণেই জমির মালিক নামমাত্র মূল্যে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত দুটি কারবারই নাজায়েয।

প্রকাশ থাকে যে, উক্ত কারবার বৈধভাবে করতে চাইলে শুরু থেকেই বন্ধকি চুক্তি না করে ভাড়া বা লীজ চুক্তি করবে। যার বিবরণ হল, জমির মালিক জমি ভাড়া দিবে। তার যত টাকা প্রয়োজন সেজন্য যত বছর ভাড়া দিতে হয় একত্রে তত বছরের জন্য ভাড়া দিবে। যেমন-এক বিঘা জমির বার্ষিক ভাড়া ৫ হাজার টাকা। মালিকের ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাহলে সে ৪ বছরের জন্য জমি ভাড়া দিবে। এক্ষেত্রে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে নিবে। এক্ষেত্রে জমির ভাড়া স্থানীয় ভাড়া থেকে সামান্য কম বেশিও হতে পারে। এরপর ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলে অর্থ দাতা জমি ফেরত দিবে, কিন্তু প্রদেয় টাকা ফেরত পাবে না। অবশ্য সময়ের আগে ফেরত দিলে যে কয়দিন ভাড়ায় ছিল সে পরিমাণ ভাড়া কর্তন করে অবশিষ্ট টাকা ভাড়াটিয়া ফেরত পাবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৪-২৪৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ৩/১৯৬-১৯৭; ইলাউস সুনান ১৮/৬৪

Read more Question/Answer of this issue