মুহাম্মাদ আরেফীন সিদ্দীক - পোস্তগোলা, ঢাকা
২২৯৫. Question
হাজী মুহাম্মাদ ইয়াছীন সাহেব ১৩৩৮ সালে মসজিদের জন্য নিজ বাড়িতে ১০ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে গেছেন। এরপর ১৩৪৪ সালে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রায় আধা মাইল দূরে জামুর মৌজায় ২২৩ শতাংশ ফসলী জমি ওয়াকফ করেন। ওয়াকফনামায় তিনি লিখেছেন, মুতাওয়াল্লীর ওয়াকফকৃত সম্পত্তি হস্তান্তর বা রূপান্তর করিবার কোনো ক্ষমতা রহিল না। বর্তমানে মসজিদের ৫ তলা ইমারত নির্মাণের জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন। আবার ঐ এলাকায় দাওয়াত-তাবলীগের শবগুজারির জন্য একটি মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের তাকাযা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ওয়াকফকৃত ২২৩ শতাংশ জমির ১০০ শতাংশ জমিতে যদি তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয় এবং এর বিনিময়ে ২ কোটি টাকা গ্রহণ করা হয় তবে তা বৈধ হবে কি? মুতাওয়াল্লী এ ধরনের হস্তান্তর বা রূপান্তর করতে পারবে কি?
Answer
ওয়াকফের ভবন নির্মাণ বা অন্য কোনো দ্বীনী প্রতিষ্ঠান নির্মাণের লক্ষ্যেও ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা, এওয়াজ-বদল করা জায়েয নয়। বিশেষত ওয়াকফকারী যদি বিক্রি না করার কথা উল্লেখ করেন তখন তা বিক্রি করার কোনো সুযোগ থাকে না। হাদীস শরীফে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, উমর রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমি একটি উত্তম সম্পদের মালিক হয়েছি (একটি খেজুর বাগান)। আমি তা সদকা (ওয়াকফ) করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি মূল সম্পত্তিটি এভাবে সদকা (ওয়াকফ) কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, কাউকে দান করা যাবে না এবং এতে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। এর থেকে উৎপন্ন ফলফলাদি (নির্ধারিত খাতে) ব্যয় হবে। এরপর উমর রা. তা ঐভাবে সদকা (ওয়াকফ) করলেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৭২৪)
অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ওয়াকফকারী ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর বা রূপান্তর করতে নিষেধ করেছেন তাই মসজিদ-ভবন নির্মাণ কিংবা তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের উদ্দেশ্যে তা বিক্রি করা জায়েয হবে না; বরং যে উদ্দেশ্যে জমিটি ওয়াকফ করা হয়েছে সেজন্যই তা ব্যবহার করতে হবে। আর মসজিদের ইমারত নির্মাণ কিংবা তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরির প্রয়োজন দেখা দিলে মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত অনুদান থেকে তা করতে হবে।খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৫; মুখতাসারুল কুদুরী ২৮৭; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩২; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫২; আলইনসাফ ৭/১০০; আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা ৪/৩৪২; আলবায়ান ৮/৫৯, ৭৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৫