আবু হুরায়রা - চৌমুহনী, নোয়াখালী
৬৫৮৭. Question
আমি একটি দ্বীনী মাহফিলে শুনেছি যে, মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে খাদ্য-জাতীয় জিনিস মজুদ করে রাখা না জায়েয ও লানতযোগ্য অপরাধ। কিন্তু আমাদের এলাকার অনেক লোক বৈশাখ মাসে (ধানের মৌসুমে) নিজেদের ধান বিক্রি না করে আশ্বিন বা কার্তিক মাসের দিকে এসে বিক্রি করে। কারণ তখন ধানের মূল্য একটু বেশি পাওয়া যায়। তবে এর কারণে বাজারে প্রভাব পড়ে না এবং সংকটও তৈরি হয় না। কারণ আশপাশের এলাকার ধান দ্বারা বাজারের চাহিদা পূর্ণ হয়ে যায়।
এখন আমি জানতে চাই, এধরনের মজুতকরণও কি শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ মজুতকরণের অন্তর্ভুক্ত হবে?
Answer
কাক্সিক্ষত মুনাফা লাভের আশায় নিজের খেতের ফসল বিক্রি না করে মূল্য বৃদ্ধির অপেক্ষায় রেখে দেওয়া নাজায়েয নয়। তা শরীয়ত নিষিদ্ধ احتكار (ইহতিকার)-এর অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ ইহতিকার হল, বিপুল পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য কিনে নিয়ে অধিক মুনাফাখোরির উদ্দেশ্যে তা মজুদ করে বাজারে পণ্যসংকট তৈরি করা এবং ক্রেতা সাধারণকে কষ্টে ফেলা। বর্তমানে যেটিকে মনোপলি বা সিন্ডিকেট বলা হয়ে থাকে। দেখা যায়, মুষ্টিমেয় কতক ব্যবসায়ীর হাতেই খাদ্য-পণ্যের মূল কারবারগুলো থাকে এবং অনেক সময় তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে থাকে। কিন্তু নিজেরই উৎপন্ন ফসল বিক্রি না করে জমা করে রাখা ইহতিকারের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অবশ্য কেউ যদি অনেক জমির মালিক হয় এবং তার গোডাউনে অনেক বেশি পরিমাণে খাদ্যশস্য জমা করে রাখে, অন্যদিকে বাজারে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে তার ফসলগুলো বিক্রি করে দিয়ে বাজারের খাদ্য সংকট দূর করা এবং গণমানুষের কষ্ট লাঘব করা তার জন্য আবশ্যক হবে।
Ñআলহাবিল কুদসী ২/৩২৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩০৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৯৯