Shaban-Ramadan 1432 || July-August 2011

মুহাম্মাদ এনামুল হাসান - বাগেরহাট, খুলনা

২২৬১. Question

 

আমার এক মুরববী অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু কোনো চিকিৎসা নিতে চান না। তাঁর কথা হল, চিকিৎসা নেওয়া তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী। অথচ তার রোগের উন্নত ও শরীয়তসম্মত চিকিৎসা রয়েছে। জানতে চাই, শরীয়তে চিকিৎসা গ্রহণের বিধান কী? চিকিৎসা গ্রহণ করা কি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী?

 


 

Answer

 

অসুস্থ হলে চিকিৎসা নেওয়া জায়েয। এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়। কারণ তাওয়াক্কুল হল, এই বিশ্বাস রাখা যে, উপায়-উপকরণ আল্লাহরই সৃষ্টি এবং তা আল্লাহর আদেশেই কাজ করে। তাই ফলাফলের জন্য আল্লাহর উপরই ভরসা করতে হবে। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তাহলে সুস্থতা আসবে অন্যথায় নয়। হাদীসে আছে, প্রতিটি রোগের চিকিৎসা রয়েছে। যখন রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তখন আল্লাহ তাআলার হুকুমে আরোগ্য লাভ হয়।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৬৯৭ 

আর স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং অন্যদেরকেও চিকিৎসা গ্রহণ করতে বলেছেন সেখানে একে তাওয়াক্কুলের পরিপন্থি মনে করা আদৌ ঠিক নয়। এ সম্পর্কিত কিছু হাদীস-আছার নিম্নে পেশ করা হল। 

হযরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলাই রোগ ও ঔষধ সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক রোগের চিকিৎসাও তিনি সৃষ্টি করেছেন। অতএব তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৬৪

হযরত উসামা ইবনে শুরাইক বলেন, কতিপয় মরুবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা  কি অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর বান্দারা! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো।-জামে তিরমিযী

এক আনসারী সাহাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আহত ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন। দেখে বললেন, তার জন্য অমুক গোত্রের চিকিৎসককে ডেকে আন।-মুসনাদে আহমদ ৫/৩৭১

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিঙা লাগিয়েছেন এবং নাকে বিশেষ ঔষধ দিয়েছেন যেন হাঁচির মাধ্যমে রোগ সেরে যায়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৬৯১

এছাড়া আরো অনেক হাদীস রয়েছে। এসব হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, চিকিৎসা গ্রহণ করা জায়েয এবং এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়।

 

-আসসিয়ারুল কাবীর ১/৯২; শরহুন নববী ২/২২৫; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ১৮/১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৮০; আযযাখীরাহ ১২/৩০৭; আহকামুল আদবিয়্যিহ ৩৫; বাসায়িরে হাকীমুল উম্মত ৩৭১; আলমাওসূআতুল ফিকহিয়্যা ১১/১১৬

Read more Question/Answer of this issue