মাওলানা আমীর হামযা - নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জ
৬৩১৬. Question
যথা-বিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে, আমাদের এলাকার ইউকে প্রবাসী এক দানবীর পরিবারের বড় দুই ভাই দেশে এসে পরিবারের সবার সম্মতিতে সকলের পক্ষ থেকে প্রায় সমস্ত এলাকাবাসীর সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদগাহ নির্মাণের জন্য ৪০ শতক জায়গা মৌখিকভাবে ওয়াক্ফ করে দেন। পরিবারের সবাই একসাথে দেশে আসা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় লিখিত রেজিস্ট্রি করে ওয়াক্ফ করে দিতে পারেননি। এলাকার কতিপয় মুরব্বী উক্ত জায়গা রেজিস্ট্রিকৃত ওয়াকফ না হওয়ার কারণে তাতে ঈদগাহের সংস্কারমূলক কাজ ও ঈদের জামাত আদায় করতে অনিচ্ছুক। এভাবে প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। এদিকে সংস্কারমূলক কাজ ও ঈদের জামাত আদায় না হওয়ার কারণে উক্ত দাতা পরিবার একজন আলেমের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঈদগাহের জন্য ওয়াক্ফকৃত জায়গাটি এখন মাদরাসা নির্মাণের জন্য দিয়ে দিতে চায়।
উল্লেখ্য, উক্ত এলাকায় একটি ঈদগাহের প্রয়োজন রয়েছে, বর্তমানে এলাকাসী তাদের মসজিদের মাঠে ঈদের নামায আদায় করে আসছে। অতএব, হযরত মুফতী সাহেবের কাছে জানার বিষয় হল-
ক. ঈদগাহের জন্য ওয়াক্ফকৃত জায়গা মাদরাসার জন্য দেওয়া যাবে কি না?
খ. ঈদগাহের জন্য ওয়াক্ফকৃত জায়গায় ঈদগাহ নির্মাণের পাশাপাশি স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে কোনো মাদরাসা নির্মাণ করা যাবে কি না?
উক্ত বিষয়গুলোর বিস্তারিত শরয়ী সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ পাক আপনাকে বরকতময় হায়াত দান করুন।
Answer
শরীয়তের দৃষ্টিতে ওয়াক্ফ সহীহ হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রি করা আবশ্যক নয়। রেজিস্ট্রি একটি ব্যবস্থাপনা ও আইনগত বিষয়। তাই প্রশ্নোক্ত জমিটি মৌখিকভাবে ওয়াক্ফ করার দ্বারাই তা ঈদগাহের জন্য ওয়াক্ফ হয়ে গেছে। এখন তা ঈদগাহের জমি। যেহেতু এটি এখন ঈদগাহের জমি, তাই এখন আর এই ওয়াক্ফ পরিবর্তন করে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে তা মাদরাসার নামে করে দেওয়া বা অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করার সুযোগ নেই। আর উক্ত জমিটি যেহেতু ঈদগাহ হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব এবং এর প্রয়োজনও আছে, তাই এখন থেকেই এটিকে সংস্কার করে এলাকার ঈদগাহ হিসাবে ব্যবহার শুরু করা উচিত। রেজিস্ট্রি না করার কারণে তাতে সংস্কারমূলক কাজ না করা এবং ঈদের নামায আদায় করা থেকে বিরত থাকা ঠিক হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ওয়াক্ফকারীগণের দায়িত্ব হল, যত শীঘ্র সম্ভব জমিটি ঈদগাহের নামে রেজিস্ট্রি দলীল করে দেওয়া। যেন ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত বিতর্ক ও ঝামেলা এড়ানো যায়।
-আহকামুল আওকাফ, খাস্সাফ, পৃ. ১৭; ফাতহুল কাদীর ৫/৪২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৯০, ৩৬২; আলফাতাওয়াল কামিলিয়া, পৃ. ৫৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৪৯