Safar 1445 || September 2023

রায়হান - ঢাকা

৬২৬৬. Question

দুই বছর হল আমি বিদেশে চাকরি করি। কিছুদিন আগে আমি বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার বিবাহ ঠিক হয়। বিবাহ ঠিক হওয়ার পর মেয়ে পক্ষের তাড়াহুড়ার কারণে আমি দেশে আসার দুই মাস আগেই দুই পক্ষের উকীলের মাধ্যমে আমার বিবাহ হয়ে যায়। বিবাহের পর আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতাম। কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে আমি আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি যে, আমার স্ত্রীর আরেকটি ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। এটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার স্ত্রীকে ফোন করে বলি, ‘তুমি এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক। এটা বলেই আমি ফোন কেটে দেই। এরপর আমার স্ত্রী বারবার ফোন করলেও আমি ফোন ধরি না। কিন্তু দেশে আসার পর মেয়ে পক্ষ এবং এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানতে পারি যে, আমার কাছে ভুল তথ্য পৌঁছেছিল। আসলে আমার স্ত্রীর কোনো ছেলের সাথে সম্পর্ক নেই। এখন উভয় পক্ষই চাচ্ছে, আবার নতুন করে বিবাহ হয়ে যাক। মুহতারাম মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, এখন আমরা দুইজন কি আবার নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারব? আশা করি সঠিক উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর উপর শুধু এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছে। কারণ, বিয়ের আগ থেকেই আপনি বিদেশে থাকায় তালাক দেওয়ার আগ পর্যন্ত আপনাদের সরাসরি দেখা-সাক্ষাৎই হয়নি। আর নির্জন বাসের আগে কেউ যদি স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়, কিন্তু তা এক শব্দে তিন তালাক না বলে- এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক- এভাবে পৃথক শব্দে প্রদান করে, তাহলে এক্ষেত্রে শুধু প্রথম এক তালাক কার্যকর হয় এবং এর দ্বারাই তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর পরবর্তী দুই তালাক আর পতিত হয় না।

অতএব এক্ষেত্রে যেহেতু শুধু এক তালাকে বায়েনই পতিত হয়েছে। তাই আপনারা উভয়ে সুষ্ঠুভাবে দাম্পত্য জীবন গড়তে চাইলে আবার মহর ধার্য করে দুইজন সাক্ষীর সামনে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, তার সাথে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। ভবিষ্যতে কখনো যদি দুই তালাক দিয়ে দেন, তাহলে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং তালাক প্রয়োগের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, তালাক বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা একেবারে জটিল হয়ে পড়লে এবং সমস্যা নিরসনের আর কোনো পথ না থাকলে তা থেকে নিষ্কৃতির পথমাত্র। তালাকের ব্যাপারে ভেবেচিন্তে বিজ্ঞজনের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।

বিনা কারণে কিংবা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া, কথায় কথায় তালাক দেওয়া- সবই অন্যায় ও গুনাহের কাজ। ক্ষেত্রবিশেষে তা স্ত্রীর ওপর জুলুমও হয়ে থাকে। তাই ভবিষ্যতে এভাবে তালাক দেওয়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

-কিতাবুল আছল ৪/৪৬৭; আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৮৯; আলহাবিল কুদসী ১/৪৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৫

Read more Question/Answer of this issue