Safar 1428 || March 2007

শে, মু, আব্দুর রহীম - ২৪৭/১, বছিলা রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

৯১১. Question

আমি এক ব্যক্তিকে ব্যবসার জন্যে মূলধন প্রদান করেছি। তিনি নিজস্ব শ্রম দিয়ে এবং কর্মচারী রেখে কাপড়ের ব্যবসা চালাচ্ছেন। ব্যবসায় তার কোনো মূলধন নেই। ব্যবসায় তার ও আমার লভ্যাংশ যথাক্রমে ৬৫ ও ৩৫ শতাংশ। শর্ত অনুযায়ী প্রতি মাসে নিজস্ব খরচের জন্যে তিনি দোকান থেকে কোনো অর্থ গ্রহণ করলে আমার অংশ হিসাবে আমাকেও টাকা প্রদান করবেন এবং বছর শেষে লাভ-ক্ষতির হিসাব অনুযায়ী উভয়ের গৃহীত টাকা সমন্বয় করা হবে। তবে তিনি ক্ষতির অংশীদার হবেন না। আমার আপত্তি সত্ত্বেও তিনি প্রায়শ দোকান থেকে টাকা নিলেও আমাকে কিছু প্রদান করেন না। হিসাবের সময় তিনি দোকান থেকে টাকা কর্জ নিয়েছেন বলে জানান। বছরান্তে হিসাবে দেখা যায় তিনি কর্জের নাম করে তার প্রাপ্য লভ্যাংশ থেকে অনেক বেশি গ্রহণ করেছেন কিন্তু আমাকে কিছুই দেননি। তিনি নিজের অভাবের কথা বলে তার গৃহীত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে এবং আমার লভ্যাংশ প্রদানে অপারগ বলে জানান। এমনকি মূলধন ফেরত দিতেও অপারগ বলে জানান। আমি এ বিষয়ে আপত্তি করা সত্ত্বেও তিনি তা করে যাচ্ছেন। এভাবে দোকান থেকে তার কর্জ গ্রহণ বা আমাকে টাকা না দিয়ে লভ্যাংশ হিসাবে তার অর্থ গ্রহণ কি বৈধ হয়েছে?

Answer

আপনাদের মধ্যকার লেনদেনকে শরীয়তের পরিভাষায় মুদারাবা বলা হয়। এ লেনদেনের ভিতর শ্রমদাতার নিকট মূল পুঁজি এবং ব্যবসার লাভ সম্পূর্ণ আমানত হিসাবে গণ্য। সুতরাং পুঁজিদাতার স্বতস্ফূর্ত অনুমতি ব্যতীত শ্রমদাতার জন্য ব্যবসা থেকে কোনো টাকা বা অন্য কোনো সম্পদ নেওয়া জায়েয হবে না। এটি সুস্পষ্ট খেয়ানত তথা দুনীর্তি। করজের নিয়তেও বিনা অনুমতিতে নেওয়া জায়েয হবে না।

অবশ্য উভয়ের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী ব্যবসায় কোনো লাভ হলে সেই লাভ থেকে শ্রমদাতা নিজের অংশ নিতে পারবে। তবে অঙ্গীকার অনুযায়ী শ্রমদাতা নিজের লভ্যাংশ নেওয়ার সময় অর্থদাতার লভ্যাংশও তাকে দিয়ে দেওয়া জরুরি। তার প্রাপ্য লভ্যাংশ তাকে না দেওয়া অন্যায় কাজ।

উল্লেখ্য, ব্যবসায় বাস্তবে লাভ না হলে শ্রমদাতার জন্য ওই ব্যবসা থেকে লভ্যাংশের নিয়তে কোনো কিছু নেওয়া জায়েয হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, অর্থদাতা যদি কখনো তার মূলধন ফেরত চায় তবে শ্রমদাতাকে ব্যবসার সকল সম্পদ বিক্রি করে তার মূলধন ফেরত দেওয়া জরুরি। তদদ্রূপ অর্থদাতা ব্যবসার লাভ নিয়ম অনুযায়ী চাইলে তাও তাকে বুঝিয়ে দেওয়া জরুরি। কারণ এগুলো অর্থদাতার হক। এ হক আদায়ে বিলম্ব করা কিংবা গড়িমসি করা মারাত্মক গুনাহ।

অতএব, প্রশ্নের বর্ণনা যদি সঠিক হয়ে থাকে তবে অর্থদাতা ও শ্রমদাতা কোনো দ্বীনদার অভিজ্ঞ লোককে সালিস মেনে ওই কারবার ভেঙ্গে দিয়ে তাদের প্রত্যেকের প্রাপ্য অংশ বুঝে নেওয়াই উচিত হবে।

Read more Question/Answer of this issue