মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম - দোহার, ঢাকা ১৩৩০
৯০৪. Question
বর্তমান মার্কেটে আযান, সালাম, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদির আওয়াজ সম্বলিত ঘড়ি, কলিংবেল ও মোবাইল সেট পাওয়া যায়। এগুলোতে ঘুম থেকে জাগানো, ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থণা এবং রিংটোন হিসাবে আযান, সালাম, তিলাওয়াত ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এখন আমার প্রশ্ন হল, এ ব্যাপারে শরয়ী কোনো বাধা আছে কি না?
Answer
কুরআন তিলাওয়াত, আল্লাহ তাআলার যিকির এবং আযান-এসব কিছুই অত্যন্ত মর্যাদা ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে রাজি খুশি করার উদ্দেশ্যেই যথাযথ আদব রক্ষা করে এগুলোর পঠন ও শ্রবণ এবং এগুলোর উপর আমল করা জরুরি। তবেই এগুলোর মর্যাদা রক্ষা হবে।
আগন্তুকের সংবাদের জন্য কলিংবেলে আল্লাহর যিকিরের ব্যবহার, ঘড়ির ঘণ্টা ও কোনো কাজের জন্য এলার্ম হিসাবে যিকির বা আযানের ব্যবহার এবং মোবাইলের রিংটোন হিসাবে যিকির বা কুরআন তিলাওয়াতের ব্যবহার মূলত আল্লাহ তাআলার যিকির, কুরআন ও আযানকে অপাত্রে ব্যবহারের মাধ্যমে এগুলোর প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের শামিল। দুঃখজনক হল, অনেকে এসব করে থাকেন উল্টো সওয়াব বা নেকী পাওয়ার জন্য। অথচ শরীয়তে আযান, তিলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদিকে ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে বারণ করা হয়েছে। তাই এসব ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহার থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
প্রকাশ থাকে যে, এতে উক্ত খারাবী ছাড়া আরও অনেক খারাবী রয়েছে। যেমন-
ক. ঘড়ির এলার্মের জন্য আযানের প্রথম বাক্য আল্লাহুআকবার বেজে উঠলে যিকিরের প্রতি ভ্রƒক্ষেপ না করেই এলার্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়। চাই তা “আল্লাহু”র ‘আল’ এ হোক বা “আকবার”-এর ‘আক’এ হোক। অথচ এতে যিকিরের অর্থই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একইভাবে মোবাইলে রিংটোন হিসাবে যেই আয়াত সেট করা হয়েছে সে আয়াতের যে কোনো অক্ষরে গিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে আয়াতের অর্থ বিকৃত হলেও সেদিকে ভ্রƒক্ষেপ করা হয় না।
খ. মোবাইলে ইনকামিং কলে আয়াত বেজে উঠলে ফোন রিসিভ করতে ব্যস্ত হয়ে যায়। ফলে কুরআন শোনার আদব রক্ষা করে শোনা হয় না। যা এ সংক্রান্ত হুকুমের সুস্পষ্ট লংঘন।
গ. মোবাইল নিয়ে টয়লেটে গেলে সেখানে কল আসলে অপবিত্র স্থানে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নাম ও কুরআনের আয়াত বেজে উঠে।
মোট কথা, এ ধরনের ব্যবহারের কারণে আল্লাহ তাআলার পবিত্র নাম ও তাঁর কালামে পাকের অসম্মানও করা হয়ে থাকে। অতএব এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া আবশ্যক।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫; আলমুগনী ৪/৪৮২; আততিবইয়ান ফী আদাবি হামালাতিল কুরআন (লিননববী) ৪৬; হককুত তিলাওয়াহ (হুসাইনী শাইখ উসমান) ৪০১; আলাতে জাদীদাহ কী শরয়ী আহকাম ১৭১; রদ্দুল মুহতার ১/৫১৮