মুহাম্মাদ মোস্তফা আল মামুন - বিশ্বেশ্বর, শান্তিনগর, কুড়িগ্রাম
৯৫২. Question
আমাদের গ্রামের একজন যুবক ২০০০ সালে বিবাহ করেছে। কিন্তু কোন কারণে সে তার স্ত্রীকে তালাক দেয় এবং ২০০৩ সালে আরেকটি বিয়ে করে। বিয়ের পর সে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকেও তালাক দিয়েছে। এরপর কাজি ও গ্রামের ইমামকে এনে পুনরায় প্রথম স্ত্রীকে বিয়ে করেছে। কিন্তু তার প্রথম স্ত্রীর অন্য কোথাও বিয়ে হয়নি। এ নিয়ে গ্রামবাসী দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। কেউ বলছে, ওই স্ত্রীকে নিতে হলে তাকে অন্য কারো সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। এরপর সেই স্বামী যদি তাকে তালাক দেয় তবেই তার প্রথম স্বামী তাকে পুনরায় বিয়ে করতে পারবে। আবার কেউ বলছে, যেহেতু যুবকটি অন্য একটি বিয়ে করে সেই স্ত্রীর সঙ্গে দুই বছর ছিল তাই এবিয়ে সহীহ হয়েছে। এই নিয়ে গ্রামে দুই দলের মধ্যে ঝগড়া ফাসাদ লেগেই আছে। দয়া করে দলিলসহ এর সামাধান জানালে গ্রামবাসী সঠিক তথ্য জানতে পারবে।
Answer
লোকটি তার প্রথম স্ত্রীকে কয় তালাক দিয়েছিল এবং কীভাবে কোন শব্দে দিয়েছিল তা কিছুই উল্লেখ করেননি। প্রদত্ত তালাকের সংখ্যা ও বিবরণ জানালে এসম্পর্কে ফয়সালা দেওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
জেনে রাখা দরকার যে, কেউ তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে ওই স্ত্রী তার জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায় এবং ওই স্ত্রীর সাথে তার বিবাহ সহীহ হয় না। কিন্তু যদি মহিলার অন্যত্র বিবাহ হয় এবং দ্বিতীয় স্বামীর সাথে তার সহবাসও হয় এরপর ওই দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু ঘটে কিংবা দ্বিতীয় স্বামী তাকে তালাক দেয় তাহলে ইদ্দত শেষে সে ইচ্ছা করলে প্রথম তালাকদাতা স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।
অতএব প্রশ্নোক্ত লোকটিও যদি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে থাকে তবে ওই মহিলার অন্যত্র বিবাহ এবং সেই স্বামীর সঙ্গে সহবাস হওয়া ছাড়া তালাকদাতার সঙ্গে তার বিবাহ সহীহ হবে না। এক্ষেত্রে তালাকদাতা অন্যত্র বিাবহ করুক বা না করুক এতে কিছুই যায় আসে না। কারণ তালাকদাতা অন্যত্র বিবাহ করল কিন্তু তিন তালাকপ্রাপ্তা মহিলার অন্য কোথাও বিয়ে হল না, তাহলেও তালাকদাতার সাথে ওই মহিলার বিবাহ সহীহ হবে না। এসম্পর্কে কুরআন মজিদের সূরা বাকারার ২২৯ নং আয়াতে সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।
-সুনানে দারাকুতনী ৪/৩১; ফাতহুল কাদীর ৪/৩১; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৪৩