সোহরাব হোসাইন - কাজলা, যাত্রাবাড়ি, ঢাকা
৯৫১. Question
প্রসিদ্ধ আছে যে, تحيةالمسجد الحرام الطواف ‘মসজিদে হারামের তাহিয়্যাহ হল তাওয়াফ।’ এ আলোকে কেউ কেউ বলে থাকে, মসজিদে হারামে তাহিয়্যাতুল মসজিদের দুই রাকাত নামায পড়ার বিধান নেই। এই বিধান অন্যান্য মসজিদের জন্য। গত বছর আল্লাহ তাআলা আমাকে হজ্বে নিয়েছিলেন। সেখানে প্রবেশ করার পর তাহিয়্যাতুল মসজিদের দুই রাকাত নামায পড়তে গেলে আমাদের সাথের এক বাঙ্গালী আমাকে ওই মাসআলা জানালেন এবং বললেন, এখানে তাওয়াফই তাহিয়্যাতুল মসজিদ, নামায নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি যথেষ্ট সন্দিহান ছিলাম। পরে আমার এক দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়, সেখানে উম্মুল কুরা ভার্সিটিতে দাওয়াহ বিভাগে পড়েন, তিনি বিষয়টি শুনে উল্টো মন্তব্য করলেন। বললেন, মসজিদে হারামে প্রবেশকারীর জন্যও দুই রাকাত নামাযই তাহিয়্যাহ। এটি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, মসজিদে হারামে প্রবেশকারী আগে তাহিয়্যাতুল মসজিদের দুই রাকাত নামায পড়বে এরপর তাওয়াফ করতে চাইলে করবে এবং অন্যান্য আমল করবে।
আলকাউসার প্রশ্নোত্তর বিভাগে এ বিষয়ের সমাধান চাই।
Answer
মসজিদে হারামে প্রবেশকারী তাওয়াফের ইচ্ছা করলে তার জন্য তাওয়াফটাই তাহিয়্যাহ হিসেবে গণ্য হবে। এ ব্যক্তির জন্য তাওয়াফের আগে দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ার হুকুম নেই। ফিকাহবিদদের প্রসিদ্ধ উক্তি تحية المسجد الحرام الطواف উদ্দেশ্য এটিই। সহীহ বুখারীতে এসেছে, আম্মাজান হযরত আয়েশা রা. ইরশাদ করেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদে হারামে তাশরীফ আনতেন তখন সর্বপ্রথম অযু করতেন তারপর তাওয়াফ করতেন। -সহীহ বুখারী ১/২১৯
এ হাদীসটি তাওয়াফের আগে তাহিয়্যাতুল মসজিদ না পড়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ বহন করে।
অবশ্য যে প্রবেশকারীর তাওয়াফের ইচ্ছা নেই কিংবা এমন সময় প্রবেশ করেছে, যে সময়টা তাওয়াফের জন্য উপযোগী নয় সে ব্যক্তির তাহিয়্যাতুল মসজিদ হল দুই রাকাত নামায পড়া। অতএব মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে এমন ব্যক্তির জন্য তাহিয়্যাতুল মাসজিদ আদায় করা উত্তম।
সুতরাং তাওয়াফ না করলে তাহিয়্যাতুল মসজিদের দুই রাকাতও পড়তে পারবে না- এধারণা ঠিক নয়। তদ্রূপ তাওয়াফের জন্য প্রস্তুত ব্যক্তিকে তাওয়াফের আগে তাহিয়্যাতুল মসাজিদ আদায় করতে হবে- এ কথাও ঠিক নয়।
-ফয়জুল কাদীর ১/৩৩৭; শরহু মুসলিম, নববী রাহ. ১/২৪৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৯২; আলমুগনী, ইবনে কুদামা রাহ. ৫/২১২; ইলামুস সাজিদ ১০৭; মানাসিক, মোল্লা আলী ক্বারী রাহ. ১২৯