মাওলানা শফিকুল ইসলাম - মাদারীপুর
৫৪১৪. Question
মুহতারাম, মাস খানেক আগে একটি অনলাইন শপ অফার দিয়েছিল যে, একমাস পূর্বে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করলে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের পণ্যে ২০% ডিসকাউন্ট দেবে। আর সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলে আরো ২৪% ডিসকাউন্ট দেবে। সে অনুযায়ী আমি ১৫ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ক্রয় করি। এবং সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪৪% ডিসকাউন্টের পর অগ্রিম ৮ হাজার চারশত টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু ডেলিভারির দুই দিন পূর্বে তারা জানিয়েছে যে, দুঃখিত, আমরা আপনার মোবাইলটি কিনে দিতে পারলাম না। বাকি আপনি যেন মোবাইলটি কিনে নিতে পারেন এজন্য আমরা আপনাকে মোবাইলের মূল্য ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দিচ্ছি। অবশ্য আপনি চাইলে ১৫ হাজার টাকা মূল্যের অন্য কোনো পণ্যও নিতে পারবেন।
আমার জানার বিষয় হল :
ক) এখন মোবাইল না নিয়ে মোবাইলের মূল্য ১৫ হাজার টাকা বা ১৫ হাজার টাকা মূল্যের অন্য কোনো পণ্য নেওয়া আমার জন্য বৈধ হবে কি না?
খ) যদি পুরো টাকা নেওয়া বৈধ না হয় তাহলে সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করার কারণে যে ২৪% ডিসকাউন্ট পেয়েছি, তা নেওয়া বৈধ হবে কি না? যেহেতু এই ডিসকাউন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার কারণে আমি পেয়েছি।
Answer
অগ্রিম মূল্য প্রদান করে পণ্য কেনা জায়েয হওয়ার জন্য আবশ্যকীয় কিছু শর্ত রয়েছে। তার একটি হল, মেয়াদান্তে ক্রেতার জন্য চুক্তিকৃত পণ্যই গ্রহণ করা জরুরি। কখনো যদি বিক্রেতা পণ্য দিতে না পারে তাহলে সে অগ্রিম গ্রহণকৃত টাকা ফেরত দিয়ে দেবে। পণ্যের পরিবর্তে তার মূল্য বা সমমূল্যের অন্য কোনো পণ্য গ্রহণ করা জায়েয নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পণ্যের পরিবর্তে পরিশোধিত মূল্যের অতিরিক্ত নেওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে না। এমনকি ব্যাংকের ছাড়ও নিতে পারবেন না। তাই বিক্রেতা নির্ধারিত পণ্য দিতে না পারলে পূর্বে পরিশোধিত মূল্যই ফিরিয়ে নিতে পারবেন। অতিরিক্ত নিতে পারবেন না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিতÑ
إِذَا سَلّفْتَ فِي شَيْءٍ فَلَا تَأْخُذْ إِلّا رَأْسَ مَالِكَ أَوِ الّذِي سَلّفْتَ فِيهِ.
যদি অগ্রিম মূল্য প্রদানের শর্তে কোনো কিছু ক্রয় কর তাহলে তুমি ঐ বস্তুটি গ্রহণ কর, আর না হয় শুধু তোমার প্রদানকৃত অর্থটুকু ফেরত নাও। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৪১০৬)
Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৬২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৩/১৩৩; আয্যাখীরাতুল বুরহানিয়া ১০/৫১৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৫১; আলহাবিল কুদসী ২/৫৪; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১৯৫