Shawal 1442 || May 2021

রাকিবুল হাসান - মির্জাপুর, টাঙ্গাইল

৫৩৭৫. Question

বর্তমান দেশের বিখ্যাত ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি তাদের ফ্রিজের উপর ক্রেতাদের জন্য একটি বিশেষ অফার দিচ্ছে। যেটাকে তারা নাম দিয়েছে মিলিওনিয়ার অফার। অফারটির ধরন হল-

কেউ শো-রুম থেকে একটি ফ্রিজ কিনলে তাকে একটি স্ক্র্যাচ কার্ড দেওয়া হয়। কার্ড ঘষলে তাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার অংক লেখা পাওয়া যায়, যা ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। স্ক্র্যাচ কার্ডে টাকার যে অংশ লেখা থাকে তা গ্রাহককে তারা নগদ পরিশোধ করে দেয়। অনেকসময় কিছু টাকার পণ্য নিতে বলে, আর বাকি টাকা নগদ প্রদান করে।

আমি জানতে চাচ্ছি যে, অফার চলাকালীন

এই অফারের আওতাধীন পণ্য কিনে স্ক্র্যাচ কার্ডে লিখিত পুরস্কার গ্রহণ করা কি জায়েয আছে? এবং গ্রাহকদের এই ধরনের অফার প্রদান করা কি বৈধ?

Answer

প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে কেউ ঐ ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে চাইলে নিম্নোক্ত শর্তগুলো পালন করলে তার জন্য পণ্য ক্রয় করা এবং প্রাপ্ত পুরস্কার গ্রহণ সবই জায়েয হবে-

১. অফারের কারণে পণ্যের দাম স্বাভাবিক মূল্য থেকে বৃদ্ধি না হতে হবে। এমন যেন না হয় যে, প্রথমে দাম বাড়িয়ে ধরল, এরপর লটারির মাধ্যমে পুরস্কার দিল।

২. পণ্য ক্রয় মূল উদ্দেশ্য হওয়া। শুধু লটারি বা পুরস্কার পাওয়ার উদ্দেশ্যে টাকা না খাটানো।

মোটকথা, অফারটি একতরফা হওয়া। অর্থাৎ শুধু বিক্রেতার পক্ষ থেকে দেওয়ার ঘোষণা থাকবে। ক্রেতার পক্ষ থেকে শর্ত থাকবে না।

উপরোক্ত শর্তাদি পাওয়া গেলে অফারযুক্ত পণ্য ক্রয় করা বা বিক্রেতা কর্তৃক কোনো পণ্যে পুরস্কার দেওয়া হলে তা গ্রহণ করা জায়েয হবে।উল্লেখ্য, পণ্য মার্কেটিং ও বাজারজাতকরণের শরীয়াহ নীতি হল, পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি করার মাধ্যমে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা কিংবা সরাসরি মূল্য ছাড় দেওয়া। কিন্তু তা না করে মূল্যের কিছু অংশ অনিশ্চিত পুরস্কারের সাথে ঝুলিয়ে রাখা এবং লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা অতঃপর অল্প কয়েকজনকে সামান্য পুরস্কার দেওয়াটা সম্পূর্ণ ধোঁকা। শরীয়াহ নীতির সাথে এই পদ্ধতি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে শিবহুল গারার (شبه الغرر) তথা এক প্রকার প্রতীকী প্রতারণা পাওয়া যায়। এভাবে বাজারকে প্রভাবিত করা ইসলামের বাণিজ্যনীতি পরিপন্থি। এসবই পুঁজিবাদের বানানো অপকৌশল। পুঁজিবাদীদের আবিষ্কৃত এসব কার্যকলাপ অনেকসময় বাজারকে অসৎ উপায়ে পরিচালিত করে এবং বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করে। মুসলমানদের এহেন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।

-মাআলিমুস সুনান ৩/৪০০আলমুগনী  ১৩/৪০৮মাজমূআতুল ফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১১/১৭১; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআসিরাহ ২/১৫৮

Read more Question/Answer of this issue