আবদুল্লাহ - গফরগাঁও, মোমেনশাহী
৪৬৮১. Question
১. আমাদের এলাকায় ‘হলুদ’ এভাবে ক্রয়-বিক্রয় হয় যে, ক্রেতা হলুদ ক্ষেতের এক-দু জায়গায় খনন করে দেখে যে, কী রকম ফলন হয়েছে তারপর ক্রেতা অনুমান করে বলে, এক কাঠায় পাঁচ হাজার টাকা দিব। এভাবে মাটির নিচে লুকায়িত জিনিস বিক্রি করা জায়েয আছে কি?
২. আমাদের এলাকায় এভাবে গরু-ছাগল বর্গা দেওয়া হয় যে, বর্গা দেওয়ার সময় পশুর যে মূল্য থাকে সে মূল্যের পর থেকে বছর শেষে যতটুকু মূল্য বাড়বে তা দু’ভাগে ভাগ করা হবে। এ সূরত জায়েয আছে কি?
৩. আমার আনারস বাগানের আনারস যখন ছোট ছিল তখন দশ টাকা মূল্যে সমগ্র আনারস বিক্রি করেছি। তবে ক্রেতা শর্ত করে যে, আনারস পাকা পর্যন্ত আমার বাগানে রাখবে। এভাবে বিক্রয় জায়েয আছে কি? দলীল প্রমাণসহ জানালে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
Answer
১. হাঁ, হলুদের প্রশ্নোক্ত ক্রয়-বিক্রয় সহীহ। কেননা জমিনের কিছু অংশের ফলন প্রত্যক্ষ করার পর অভিজ্ঞ ক্রেতা-বিক্রেতাগণ পুরো জমিনের হলুদের মোটামুটি একটি পরিমাণ বুঝে নিতে পারে। বিষয়টি তাদের কাছে তেমন অস্পষ্ট থাকে না। এবং এ কারণে ঝগড়া-বিবাদও হতে দেখা যায় না। সুতরাং এ লেনদেন জায়েয। -মাজমাউল আনহুর ৩/৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১৯০; তানকীহুল ফাতাওয়াল হামিদিয়্যাহ ১/২৫১; ফাতাওয়া কারিইল হিদায়াহ পৃ. ১১৭
২. গরু বর্গার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি শরীয়তসম্মত নয়। এক্ষেত্রে সহীহ পদ্ধিত হল, গরুর মালিক লালন-পালনকারীর সাথে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তি করবে। সেক্ষেত্রে গরু থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় আয় গরুর মালিক পাবে আর লালন-পালনকারী খাবারের খরচ ও নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবে। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৯৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৪৫; ফাতাওয়া তাতারখনিয়া ৭/৫০৫
৩. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হয়নি। অপরিপক্ক ফল পাকা পর্যন্ত বাগানে রাখার শর্ত করে বিক্রি করা জায়েয নয়। একারণে ক্রয় চুক্তি ফাসেদ হয়ে যায়। তাই কখনো অপরিপক্ক ফল বিক্রি করতে হলে তা কোনো প্রকার শর্ত করা ছাড়া ক্রয়-বিক্রয় করতে হবে। এরপর বাগানের মালিক যদি তা কিছুদিন রাখার অনুমতি দেয় তবে সেক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। -মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/২৮০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ৩/১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/৩০২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১০৬