Rabiul Auwal 1432 || February 2011

মুহাম্মাদ আক্তার ফারূক - দোহার, ঢাকা

২১২০. Question

১৯৭৭ সালে আমেনা নামক এক ভদ্রমহিলা তার শরিকদের সাথে এজমালি সম্পত্তি হতে তার নিজ অংশ ১০ শং মাদরাসায় ও ২.৫ শং মসজিদে ওয়াকফ দলিল মূলে রেজি. করে দেয়। উক্ত দলিল সম্পাদকের বরাবরে রয়েছে। কাউকে মুতাওয়াল্লি করা হয়নি। দাতার ছেলে ঐ জমিতে কৃষি কাজ করত এবং মাদরাসার ফসল মাদরাসাকে বুঝিয়ে দিত। সে কৃষি কাজ ছেড়ে দিলে এক শরিক ঐ জমির পাশে তার নিজ অংশে বাড়ি করে। কিন্তু পুকুর কাটার সময় তার অংশের সাথে ওয়াকফকৃত জমিসহ পুরোটা পুকুর কেটে ফেলে। পুকুর কাটার পর সে এই জমির প্রাক্তন মালিকের নিকট যায় এবং বলে যে, আমি জমিতে বাড়ি করেছি এবং আপনার জমিসহ পুকুর কেটে ফেলেছি। এই জমিটা আমার কাছে বিক্রি করে দিন। তখন ঐ মালিক বলে আমি ঐ জমি মাদরাসা ও মসজিদে ওয়াকফ করে দিয়েছি। এই কথা শুনে সে চুপ করে থাকে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বর্তমান পুকুর কাটা মালিকের সাথে যোগাযোগ করলে সে বলে যে, আপনারা এতদিন কোথায় ছিলেন? তখন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ইউ.পি চেয়ারম্যান সাহেবের সহায়তায় তার উপর চাপ সৃষ্টি করলে সে বাৎসরিক হিসেবে চেয়ারম্যান সাহেবের মাধ্যমে মাদরাসায় কিছু টাকা দেয়। উল্লেখ্য যে, বর্তমানে দখলকারী নিজ জমির সাথে মিলিয়ে এতে পুকুর কেটেছে। তাই মাদরাসা কর্তৃপক্ষ উক্ত জমির দখলে যেতে পারছে না। এভাবে যদি জমিটা পড়ে থাকে তাহলে ভবিষ্যতে মাদরাসা ও মসজিদের হাতছাড়া হয়ে যাবে এবং মাদরাসা ও মসজিদের ক্ষতি হবে। এই অবস্থায় জমি বিক্রি করে টাকা দ্বারা মাদরাসা ও মসজিদের নামে অন্য কোনো জমি কিনা অথবা মাদরাসা ও মসজিদের উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করা যাবে কি না? সঠিক সমাধান জানিয়ে কৃতার্থ করবেন।

Answer

প্রশ্নের বিবরণ ও তৎসংযুক্ত ওয়াকফদলিলের বর্ণনা অনুযায়ী এক্ষেত্রে করণীয় হল, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রথমে ওয়াকফের ঐ জমিটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করবে এবং যে ব্যক্তি তা খনন করে পুকুর করেছে তাকে দিয়ে ভরাট করানোরও চেষ্টা করবে। প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিবে। জমিটি কোনোভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হলে তা বিক্রি করা যাবে না।

কিন্তু যদি জমিটি মাদরাসার দখলে আনা সম্ভব না হয় এবং ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ বেদখল হওয়ার আশংকা থাকে তাহলে উক্ত জমি ন্যায্য দামে বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে অন্যত্র ভালো জমি খরিদ করা জায়েয হবে। এক্ষেত্রে নতুন কেনা জমিটি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং তা মাদরাসা-মসজিদের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হবে।

উল্লেখ্য, জমি বিক্রির টাকা শুধু জমি খরিদের কাজেই লাগাতে হবে। উন্নয়নমূলক বা অন্য কোনো কাজে তা ব্যয় করা যাবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩০৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৫; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩৯; আলমুহিতুল বুরহানী ৯/১৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩৮৮; ইমদাদুল আহকাম ৩/১৭৮

Read more Question/Answer of this issue