Rajab 1442 || February 2021

আব্দুল্লাহ - ফেনী

৫৩২২. Question

আমি একদিন আমার স্ত্রীর সাথে ইমোতে কথা বলছিলাম। একপর্যায়ে পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। যার কারণে আমি কল কেটে দিয়ে তার কাছে ইমোতে মেসেজ লিখে এমর্মে তালাক দেই যে, ‘তোকে এক, দুই, তিন তালাক’।

জানার বিষয়, আমার এ তালাক কি স্ত্রীর উপর পতিত হয়েছে? আমি মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করিনি। শুধু উপরোক্ত কথাগুলো লিখে তাকে সেন্ড করেছি। আর স্ত্রীও তা পড়েছে। তাই জানতে চাচ্ছি যে, এই কথাগুলো লিখে পাঠানোর কারণে কি তালাক কার্যকর হবে? যদি হয় তাহলে কয় তালাক হবে?

আমি যদি আমার স্ত্রীকে পুনরায় ফিরে পেতে চাই তাহলে এর কী উপায়?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এভাবে স্ত্রীকে তালাক লিখে পাঠানোর দ্বারা তার উপর তিন তালাক পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে। কেননা তালাক মুখে উচ্চারণ করে দিলে যেমন কার্যকর হয় অনুরূপভাবে লিখিতভাবে দিলেও তা কার্যকর হয়ে যায়। তালাকের পর থেকেই আপনাদের স্বামী-স্ত্রীসূলভ কোনো আচরণ বা পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষেধ। তালাকের দিন থেকে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী (ঋতুমতী হলে পূর্ণ তিনটি ঋতুস্রাব আর অন্তঃসত্তা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত) ইদ্দত পালন করবে। ইদ্দত চলাকালীন তালাকপ্রাপ্তার ভরণ-পোষণ আপনার জিম্মায় থাকবে। তার দেনমোহর অনাদায়ী থাকলে অনতিবিলম্বে তা পরিশোধ করে দিতে হবে।

ইদ্দত পালনের পর ঐ মহিলা চাইলে অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। কিন্তু তিন তালাক হয়ে যাওয়ার কারণে ইদ্দতের ভেতর বা ইদ্দতের পরেও আপনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না। অবশ্য যদি ইদ্দত শেষ হওয়ার পর তার অন্যত্র বিবাহ হয় এবং সেখানে দাম্পত্য সম্পর্ক (স্বামী-স্ত্রী মিলন) হয়, এরপর কখনো যদি ঐ স্বামী মৃত্যুবরণ করে অথবা সে তাকে তালাক দিয়ে দেয় তবে ঐ স্বামীর মৃত্যু বা তালাকের ইদ্দতের পর চাইলে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

উল্লেখ্য, তালাক হচ্ছে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে এবং সমস্যা নিরসনের আর কোনো উপায় না থাকলে তা থেকে নিষ্কৃতির পথমাত্র। তালাকের ব্যাপারে অত্যন্ত ভেবেচিন্তে, বিজ্ঞজনের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। কথায় কথায় তালাক দেওয়া, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া, একত্রে তিন তালাক দেওয়া সবই গুনাহের কাজ। মুসলমানদের এসব থেকে বেঁচে থাকা উচিত।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪৮৪; আলহাবিল কুদসী ১/৪১৮; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া, পৃ. ২২৮; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ২/৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৯১

Read more Question/Answer of this issue