মুহাম্মাদ আলমগীর - মণিরামপুর, যশোর
৫২৮১. Question
কিছুদিন আগে আমাদের বাড়ির পাশে এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়। মসজিদের ইমাম সাহেবকে এ ঘটনা জানানো হলে, তিনি বললেন, তার স্ত্রী তার জন্য চিরতরে হারাম হয়ে গেছে। এখন কোনোভাবে তাদের পরস্পরে বসবাস করার সুয়োগ নেই। স্ত্রী এ কথা শুনে বাপের বাড়িতে চলে যায়। এবং এক মাস পরে ইদ্দতের মধ্যে তার অন্য জায়গায় বিবাহ হয়। দ্বিতীয় স্বামীর সাথে তার স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণও হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় স্বামী যখন জানতে পারে যে, তার স্ত্রী তিন তালাকপ্রাপ্তা, তখন সে তাকে তালাক দিয়ে দেয়। জানার বিষয় হল-
(ক) দ্বিতীয় স্বামীর সাথে তার বিবাহ বৈধ হয়েছে কি না? এবং তার উপর ধার্যকৃত মহর পরিশোধ করা জরুরি কি না? এই মহিলা এখন কয় মাস ইদ্দত পালন করবে?
(খ) জনৈক ব্যক্তি বলেছেন, এই মেয়েকে এখন প্রথম স্বামী বিবাহ করতে পারবে। তার কথা কি ঠিক? ইদ্দত শেষ করার পর প্রথম স্বামীর সাথে ঘর-সংসার করা জায়েয হবে কি না? দয়া করে উক্ত বিষয়গুলোর শরয়ী সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
Answer
ইদ্দত অবস্থায় অন্যত্র বিবাহ করা জায়েয নয়। বিবাহ করলেও তা সহীহ হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যক্তির সাথে উক্ত মহিলার বিবাহ সহীহ হয়নি। অতএব তালাকও সহীহ হয়নি। তাদের একত্রে বসবাস করা হারাম হয়েছে। আর যেহেতু তার সাথে বিবাহ সহীহ হয়নি, তাই ধার্যকৃত মহর যদি ‘মহরে মিছিল’ (অর্থাৎ মহিলার সমপর্যায়ের পিতৃবংশীয় নারীদের মহর)-এর তুলনায় কম হয়, তাহলে ধার্যকৃত মহরই পরিশোধ করতে হবে। আর যদি ‘মহরে মিছিল’ ধার্যকৃত মহরের কম হয় তাহলে মহরে মিছিল পরিমাণ আদায় করতে হবে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ব্যক্তির থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার পর উক্ত মহিলা পূর্ণ ইদ্দত পালন করবেন। এক্ষেত্রে মহিলা অন্তঃসত্ত¡া হলে সন্তান ভ‚মিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত। আর অন্তঃসত্ত¡া না হলে তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়া পর্যন্ত ইদ্দত পালন করবেন। -কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ রাহ., বর্ণনা ৪০৬; কিতাবুল আছল ৪/৪১৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৬/৪১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৭৭, ৫/২৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৩১, ৫১৮
(খ) না, ঐ ব্যক্তির কথা ঠিক নয়। কারণ, দ্বিতীয় ব্যক্তির সাথে যেহেতু তার বিবাহ সহীহ হয়নি, তাই তার থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার পর ইদ্দত শেষ করেও প্রথম স্বামীর সাথে পুনরায় বিবাহ করা জায়েয হবে না। তবে (ইদ্দত শেষ করার পর প্রথম স্বামী ছাড়া) অন্যত্র বিবাহ করতে পারবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৪৯; ফাতহুল কাদীর ৪/৩১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৫৯; মাজমাউল আনহুর ২/৮৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৩০