শরীফ মুহাম্মাদ তোফাজ্জল হোসেন - ঢাকা
৫১৩১. Question
১) নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। প্রশ্ন হল এই সামনের দূরত্ব কতটুকু বা সামনের কতটুকু দূরত্ব দিয়ে নামাযীকে অতিক্রম করা যাবে।
২) নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার সময় সুতরার ব্যবস্থা করে অতিক্রম করা যাবে কি না। যদি সুতরার ব্যবস্থা করে অতিক্রম করা যায়, তবে কোন ধরনের জিনিষ দ্বারা করা যাবে। যেমন কাঠের বা প্লাস্টিকের বিশেষ ধরনের স্ট্যান্ড, চেয়ার, টুল ইত্যাদি।
৩) একজন সামনের কাতারের নামাযী, পিছনের কাতারের মুসল্লির নামায শেষ হওয়ার পূর্বেই উঠে যেতে চাইলে তার করণীয় কী।
উক্ত বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহ্র আলোকে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
Answer
১) নামাযীর সামনে যদি সুতরা না থাকে এবং মসজিদ বেশ বড় ও অনেক প্রশস্ত হয় তাহলে নামাযী ব্যক্তির দুই কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে। তবে বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এভাবে অতিক্রম না করাই উত্তম। -আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৯২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৮৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৯; শরহুল মুনয়া পৃ. ৩৬৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৪
২) নামাযীর সামনে সুতরার ব্যবস্থা করে অতিক্রম করা যাবে। আর এক হাত বা তার চেয়ে দীর্ঘ কোনো বস্তু যেমন, চেয়ার, টুল ও কাঠের স্ট্যান্ড ইত্যাদি সুতরা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নামাযীর সামনে তা দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৯৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৬৮৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৯০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫১০; ফাতহুল কাদীর ১/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৭
৩) প্রয়োজন থাকলে নামাযীর সামনে উপস্থিত ব্যক্তি ডানে বা বামে সরে যেতে পারবে। কেননা সামনে থেকে সরে যাওয়া অতিক্রমের হুকুমে নয়। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. বলেন-
لَقَدْ رَأَيْتُ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يُصَلِّي، وَإِنِّي لَبَيْنَهُ وَبَيْنَ القِبْلَةِ، وَأَنَا مُضْطَجِعَةٌ عَلَى السّرِيرِ، فَتَكُونُ لِي الحَاجَةُ، فَأَكْرَهُ أَنْ أَسْتَقْبِلَهُ، فَأَنْسَلّ انْسِلاَلًا.
আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি নামায আদায় করছেন আর আমি তাঁর ও কিবলার মাঝে খাটে শুয়ে থাকতাম। কোনো কোনো সময় আমার বের হবার দরকার হত। কিন্তু আমি তার সামনে দিয়ে যেতে অপছন্দ করতাম। তাই আমি চুপে চুপে সরে পড়তাম। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১১)
অবশ্য প্রয়োজন না থাকলে এক্ষেত্রে অপেক্ষা করাই উত্তম। বিশেষ করে যখন সরে গেলে অন্য মানুষদের নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করার আশংকা থাকে তখন বিনা প্রয়োজনে না সরাই উচিত। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৪; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৬