Zilhajj 1440 || August 2019

আবু সুহাইব - ফেনী

৪৮৫৪. Question

মাননীয় মুফতী সাহেব, আমার একটি পাঞ্জাবীর কাপড় ও টেইলার্সের দোকান আছে। আমার দোকানে কিছু পাঞ্জাবী পড়ে আছে, যা ক্রেতাদের অর্ডারে সেলাই করা হয়েছে। কিন্তু তারা তা নেয়নি। অপরদিকে আমাদের মেমোতে উল্লেখ রয়েছে, যা ক্রেতার নিকট রয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে কাপড় ডেলিভারী না নিলে তা নষ্ট হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। এমতাবস্থায় ছয় মাস পার হয়ে গেলেও ক্রেতা তার কাপড় না নিলে আমি ঐ কাপড় যাকাত স্বরূপ দিয়ে দেই। যেমন, একটি জুব্বার অর্ডার নিলাম। কাপড় বাবদ ৬০০ টাকা, সেলাই বাবদ ৪০০ টাকা মোট ১০০০ টাকা। ক্রেতা জমা দিল ২০০ টাকা বাকি আছে ৮০০ টাকা।

এক্ষেত্রে আমি ক্রেতার নিকট পাওনা ৮০০ টাকা হিসাবে জুব্বাটি যাকাত স্বরূপ দিয়ে দেই। প্রশ্ন হল, এ নিয়মে শরীয়তসম্মত যাকাত আদায় হবে কি না? যদি না হয় তাহলে সহীহ পন্থা কী হবে দলীলসহ জানাবেন।

Answer

আমাদের দেশে টেইলার্সগুলোতে পাঞ্জাবী-জুব্বা ইত্যাদি বানানোর জন্য দুই পদ্ধতিতে অর্ডার দেওয়া হয়। একটি হল, অর্ডারদাতার পক্ষ থেকে কাপড় দিয়ে টেইলার্সে শুধু বানানোর জন্য দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পদ্ধতি হল, যদি টেইলার্সে কাপড় পাওয়া যায় তাহলে কখনো কখনো অর্ডারদাতা সেখানের কোনো কাপড় পছন্দ করে পাঞ্জাবী বা জুব্বা বানানোর অর্ডার দিয়ে যায়।

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী বাস্তবেই যদি কোনো অর্ডারদাতা দ্বিতীয় পদ্ধতিতে আপনার দোকানে পাঞ্জাবী বা জুব্বা বানানোর জন্য দিয়ে যায়। কিন্তু এরপর সে তা নিতে না আসে বা চেষ্টা করেও অর্ডারদাতার সন্ধান পাওয়া না যায় তাহলে আপনি এ ধরনের পাঞ্জাবী বা জুব্বা যাকাত হিসাবে আদায় করে দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে এ ধরনের একটি তৈরি জুব্বার বাজারমূল্য যাকাত হিসাবে আদায় হবে। আর অর্ডারদাতা অগ্রিম টাকা জমা রেখে গেলে তা আপনার কাছে জমা রেখে দিতে হবে। পরবর্তীতে সে আসলে তাকে এ টাকা দিয়ে দিবেন। আর যদি কোনোভাবেই তার সন্ধান পাওয়া না যায় তবে ঐ টাকা তার নামে সদকা করে দিবেন। আর ভবিষ্যতে এ সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য অর্ডারদাতার নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার লিখে রাখবেন।

আর যদি কেউ প্রথম পদ্ধতিতে পোশাক তৈরীর অর্ডার দেয় অর্থাৎ কাপড় যদি অর্ডারদাতার হয় তাহলে ডেলিভারির নির্ধারিত মেয়াদ শেষেও তা যাকাত হিসাবে আদায় করা যাবে না। বরং তা আপনার কাছে হেফাযত করে রাখতে হবে। তবে যদি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর অর্ডারদাতা আসার কোনো সম্ভাবনা না থাকে এবং কোনোভাবেই তার সন্ধান পাওয়া না যায় তাহলে সেক্ষেত্রে তা বিক্রি করে আপনার মজুরী রেখে অবশিষ্ট টাকা লোকটির নামে সদকা করে দিবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৯৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭১, ৫/১৫৩; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/৩; রদ্দুল মুহতার ৬/১৫১

Read more Question/Answer of this issue