নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - মিরপুর, ঢাকা
৪৮০১ ও ৪৮০২. Question
১. হামদ ও নাতে বাজনা বাজানো এবং আল্লাহ্ আল্লাহ্ শব্দের জিকির বাজনা স্বরূপ ব্যবহার করা- যেমনটি বর্তমান সময়ে কিছু ইসলামী সংগীতে করা হয়, শরীয়তের দৃষ্টিতে এর হুকুম কী?
২. শরীয়তের দৃষ্টিতে মহিলাদের কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত শ্রবণ করার বিধান কী?
Answer
১. বাদ্য বাজানো নাজায়েয। আর আল্লাহর জিকির বা হামদ-নাতের সাথে বাদ্য যন্ত্র বাজানো আরো গর্হিত ও নাজায়েয। এতে বাদ্যের গুনাহের পাশাপাশি আল্লাহ তাআলার নামের অসম্মানীর গুনাহও হবে। আর আল্লাহ্ আল্লাহ্ জিকিরকে বাদ্য হিসাবে ব্যবহার করাও অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং এটিও বেয়াদবীর শামিল। এ ধরনের বাদ্য-বাজনা সম্বলিত হামদ-নাত শোনা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
২. পুরুষের জন্য গাইরে মাহরাম মহিলার কণ্ঠে ইসলামী সঙ্গীত শোনা বৈধ নয়। পুরুষের জন্য গাইরে মাহরাম মহিলার কথা প্রয়োজনে শ্রবণ করা বৈধ হলেও এক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল, নারীরা কোমলতা পরিহার করে কথা বলবে। নরম সুরে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলা থেকে পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। (দেখুন, সূরা আহযাব, আয়াত ৩২)
বর্তমানে যে কোনো সঙ্গীতই আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে এবং এগুলো শ্রবণ করা প্রয়োজনীয় কোনো বিষয়ও নয়। তাই গাইরে মাহরাম মহিলাদের কণ্ঠে এধরনের সঙ্গীত শোনা থেকে বিরত থাকতে হবে। অবশ্য ফেতনার আশঙ্কা না হলে ছোট ছোট মেয়ে শিশুদের কণ্ঠে শোনা নাজায়েয নয়।
ফেতনার আশঙ্কা হলে প্রাপ্তবয়স্ক বা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কাছাকাছি এমন গাইরে মাহরাম মেয়ের কণ্ঠে কুরআন শোনাও বৈধ হবে না। তবে মাহরামগণ তা শ্রবণ করতে পারবে। ফকীহগণ পরপুরুষের কানে কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ পৌঁছতে পারে এজন্য নামাযের মধ্যেও আস্তে আস্তে তিলাওয়াত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি কোনো কোনো ফকীহ উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করলে নামায ফাসেদ হওয়ার কথাও বলেছেন।
উল্লেখ্য যে, মহিলাদের জন্য আযান দেওয়া, উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়া এজন্যই নিষেধ করা হয়েছে, যাতে পরপুরুষের কানে তাদের আওয়াজ না পৌঁছে।
মোটকথা, কুরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রেও ফেতনার আশঙ্কা হলে পরপুরুষের কানে এর আওয়াজ পৌঁছে- এভাবে পড়া থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
প্রকাশ থাকে যে, প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে বা মহিলাদের কণ্ঠে ধারণকৃত অডিও, ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার যে রেওয়াজ এখন চালু হয়েছে তা কোনোক্রমেই বৈধ নয়। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৩২; আলজামে লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ১৪/১১৬; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ৩/৩১৯; ফাতহুল কাদীর ১/২২৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/১১০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৬; মিরকাতুল মাফাতীহ ৯/৫১; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৭৫