মিহাদ নাবীহ - লালবাগ, ঢাকা
৪৫৫৮. Question
আসসালামু আলাইকুম, কোনো ভূমিকা ছাড়াই মূল বিষয় তুলে ধরছি। আমরা আমাদের বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদরাসার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কুরআনের আয়াত ও হাদীস লিখিত ওয়ালমেট, ক্যালেন্ডার, শোপিছ ও বিভিন্ন আসবাবপত্র ব্যবহার করে থাকি। এগুলোর কোনোটির মধ্যে সরাসরি আরবী লেখা থাকে, কোনোটির মধ্যে তরজমা, কোনোটির মধ্যে কেলিওগ্রাফির মাধ্যমে আয়াত বা হাদীস লেখা থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এগুলো ব্যবহার কি জায়েয, না নাজায়েয? এগুলোর হুকুম কী? এ ধরনের ক্যালেন্ডার দিয়ে দরসি গায়রে দরসি কিতাব বাঁধাই করার, পড়ার টেবিলে বিছিয়ে ব্যবহার করার এবং বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে লাগানোর হুকুম কী?
বিষয়টি ছোট করে না দেখে উপযুক্ত দলিলসহকারে বিস্তারিত সমাধান পেশ করার জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি। বারাকাল্লাহু ফীকুম, ওয়াসসালামু আলাইকুম।
Answer
ওয়া আলাইকুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। কুরআন মাজীদ আল্লাহ তাআলার কালাম। এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়। তাই শুধু প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কুরআন-হাদীস লিখিত বা ক্যালিওগ্রাফি করা ওয়ালমেট বা শোপিছ ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ হবে, এতে লিখিত বাণীর হেদায়েত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে তাহলে শর্ত সাপেক্ষে তা করা যেতে পারে। সে শর্তগুলো হল, আয়াত ও হাদীসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা, যেন তা নিচে পড়ে না যায় বা নাপাক কিছুর সাথে স্পর্শ না হয়, আর ধুলাবালি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।
কুরআন-হাদীস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কুরআন-হাদীসের মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাতাসে যাতে উড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থাও করতে হবে। তবে ক্যালেন্ডারে কুরআনের আয়াত বা হাদীস না লেখাই উচিত; কারণ মানুষ এটিকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা হেফাযত করে না; যেখানে সেখানে তা ফেলে দেয়।
কুরআন-হাদীস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরূহ। এটা কুরআন-হাদীসের মর্যাদা পরিপন্থী। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে হেফাজত করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দিবে।
-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৬৭, ৬৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৯, ৫/৩২২; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১৩০