রওশন রেযা - মুগদা, ঢাকা
৪৪৫৬. Question
আমার বাবার এক বন্ধু বেশ টাকা-পয়সার মালিক। দ্বীনদার মানুষ। বিবাহ করেননি। বয়স ৫৬/৫৭। বাবা-মা দুজনই মারা গিয়েছেন। ভাইবোন কেউ নেই। আত্মীয় বলতে আছে শুধু দুই চাচা, এক ফুফু এবং এক মামা ও এক খালা।
তার নিকটাত্মীয় কেউ নেই বিধায় তিনি অসিয়ত করেছেন যে, তার মৃত্যুর পর তার সব সম্পত্তি তার গ্রামের মাদরাসার জন্য ওয়াক্ফ হয়ে যাবে।
এখন তিনি জানতে চাচ্ছেন, যে তার অসিয়ত কি সহীহ হয়েছে? কেউ কেউ বলছেন, এক তৃতীয়াংশের বেশি অসিয়ত করা জায়েয নেই। বিষয়টি জানানোর অনুরোধ রইল।
Answer
অসিয়তের ব্যাপারে শরীয়তের একটি মূলনীতি হল, অসিয়তকারীর যদি কোনো ওয়ারিশ থাকে তাহলে সে তার মালিকানাধীন এক তৃতীয়াংশ সম্পদের মধ্যে অসিয়ত সীমিত রাখবে। এর বেশি অসিয়ত করবে না।
সাহাবী সা‘দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রা. বলেন-
مَرِضْتُ، فَعَادَنِي النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، ادْعُ اللهَ أَنْ لاَ يَرُدّنِي عَلَى عَقِبِي، قَالَ: لَعَلّ اللهَ يَرْفَعُكَ وَيَنْفَعُ بِكَ نَاسًا، قُلْتُ: أُرِيدُ أَنْ أُوصِيَ، وَإِنّمَا لِي ابْنَةٌ، قُلْتُ: أُوصِي بِالنِّصْفِ؟ قَالَ: النِّصْفُ كَثِيرٌ، قُلْتُ: فَالثّلُثِ؟ قَالَ: الثّلُثُ، وَالثّلُثُ كَثِيرٌ أَوْ كَبِيرٌ، قَالَ: فَأَوْصَى النّاسُ بِالثّلُثِ، وَجَازَ ذَلِكَ لَهُمْ.
একবার আমি অসুস্থ হলাম তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! ...আমি অসিয়ত করে যেতে চাচ্ছি! আমার আছে শুধু একমাত্র মেয়ে। সুতরাং আমি কি আমার অর্ধেক সম্পদের অসিয়ত করতে পারব? আল্লাহ্র রাসূল বললেন, অর্ধেক তো অনেক! আমি তখন বললাম, তাহলে এক তৃতীয়াংশ? আল্লাহর রাসূল বললেন এক তৃতীয়াংশ হতে পারে, তবে এক তৃতীয়াংশও কম না! তিনি বলেন, এরপর মানুষ এক তৃতীয়াংশ অসিয়ত করতে লাগল, আর তা বৈধ হল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৪৪
প্রকাশ থাকে যে, ওয়ারিশ বলতে শুধু মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে স্ত্রী- এরাই নয়; বরং চাচা-ফুফু, মামা-খালাগণও ক্ষেত্রবিশেষে ওয়ারিশ হয়ে থাকেন। তাই এই প্রকারের কোনো ওয়ারিশ জীবীত থাকা অবস্থায়ও এক তৃতীয়াংশের বেশি অসিয়ত করলে তার অনুমোদন ছাড়া সেটা কার্যকর হবে না।
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিশ হিসেবে যারা জীবিত থাকবে তাদের অনুমোদন ছাড়া তার সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের অতিরিক্তের ক্ষেত্রে অসিয়ত কার্যকর হবে না।
-কিতাবুল আছল ৫/৪২৯; উমদাতুল কারী ১৪/৩৫; ফাতহুর কাদীর ৭/৩৫২; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৯৮; ইলাউস সুনান ১৮/৩১২