Shawal 1436 || August 2015

আমাতুল্লাহ - খুলনা

৩৪৩০. Question

আমি একজন গৃহিণী। আমার প্রায় বারো ভরি স্বর্ণ আছে। যা আমার বিবাহের মোহরানা ও পিতামাতার কাছ থেকে উপহার স্বরূপ পাওয়া। আর আমার স্বামীর আয় খুবই সীমিত। যা দিয়ে সংসারের খরচাদি ও অন্যান্য প্রয়োজন পূর্ণ করার পরে আয়ের টাকা থেকে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। আর আমাকে হাত খরচ হিসেবে যা দেওয়া হয় তাও প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়। এদিকে আমার স্বামীর উপর বর্তমানে অনেক ঋণ আছে। ইত্যাদি কারণে আমি আমার উল্লেখিত স্বর্ণের যাকাত আদায় করতে অক্ষম।

উল্লেখ্য, এই বারো ভরি স্বর্ণ যার বিবরণ উপরে উল্লেখিত হল তা আমি আমার সন্তানদের মালিক বানিয়ে দেওয়ার নিয়ত করেছি। সন্তানরা এখনো নাবালেগ রয়েছে। তাই প্রশ্ন হল, ৭.৫ ভরি স্বর্ণ আমি নিজের জন্য রেখে বাকি স্বর্ণগুলোকে এই নাবালেগ সন্তানদের মালিক বানিয়ে দিলে যাকাতের হিসাবটা আমি কীভাবে করব? বিস্তারিতভাবে জানালে উপকৃত হব।

 

Answer

যাকাত ইসলামের অন্যতম রোকন। পাঁচ স্তম্ভের একটি। এবং যাকাত সম্পদের হক। কারো কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকার পরও যাকাত আদায় না করা বা আদায় না করার জন্য হীলা-বাহানা খোঁজ করা অথবা আদায় করতে গড়িমসি করা সবটাই অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আপনি যাকাত আদায়ে অসামর্থ্যরে কথা লিখেছেন। কিন্তু শরীয়ত তো সম্পদের অংশ বিশেষ দ্বারাই যাকাত দিতে বলেছে। যেমন আপনার কাছে স্বর্ণ আছেআপনি তার ২.৫০% যাকাত হিসেবে আদায় করবেন। অন্য কোনো সম্পদ বা টাকা তো আদায় করতে হবে না। হাঁআপনি চাইলে সোনার বদলে সমমূল্যের টাকাও দিতে পারেন।

তাই নিজের কাছে ১২ ভরি সোনা থাকার পরও অসামর্থ্যরে প্রশ্ন আসে না।

উল্লেখ্য যেনাবালেগ সন্তানদের কিছু স্বর্ণ দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বাস্তবেই যদি তাদেরকে ঐ পরিমাণ একেবারেই দিয়ে দেন এবং এরপর আপনার কাছে যদি ৭.৫ তোলা স্বর্ণ থাকে তবে তখনও আপনার উপর যাকাত ফরয হবে। তবে যদি ৭.৫ তোলার কম স্বর্ণ থাকে এবং অন্য কোনো যাকাতযোগ্য সম্পদ না থাকে (যার দ্বারা আপনার যাকাতের নেসাব পূর্ণ হতে পারে) তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি নেসাবের মালিক না থাকার কারণে আপনার উপর যাকাত ফরয হবে না।

কিন্তু যাকাত থেকে বাঁচার জন্য বাহানা হিসেবে এমনটি করা যাবে না। সন্তানদেরকে বাস্তবেই মালিক বানিয়ে দিলে তারা মালিক হয়ে যাবে। তখন আর তাতে আপনার কোনো অধিকার থাকবে না। কিন্তু শুধু যাকাতের ভয়ে নামেমাত্র মালিকানা দিলে যাকাত মাফ হবে না।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫৬৭; কিতাবুল আছল ২/৯১; শরহুল মাজাল্লাহ, মাদ্দাহ : ৮৫১

Read more Question/Answer of this issue