Rabiul Auwal 1431 || March 2010

মুহাম্মাদ আবদুর রহমান - নরসিংদী

১৮৭৩, ১৮৭৪, ১৮৭৫. Question

১৮৭৩. প্রশ্ন : ক) যদি কোনো ব্যক্তি ঈদের নামায নিজে আদায় করার পর ঈদের নামাযের দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করেন তাহলে তার উক্ত ইমামতি বৈধ হবে কি না? ১৮৭৪. প্রশ্ন : খ) যারা তার পিছনে ইক্তেদা করে ঈদের নামায আদায় করবেন তাদের নামায সহীহ হবে কি না? ১৮৭৫. প্রশ্ন : গ) ঈদের নামাযের প্রথম জামাতের মুক্তাদি দ্বিতীয় জামাতের ইমামতি করতে পারবে কি না-প্রশ্ন করা হলে এক আলেম সাহেব বৈধ বলে ফতোয়া প্রদান করেন। এ ফতোয়া সঠিক কি না? শরীয়তের দৃষ্টিতে ফতোয়ার নির্ভরযোগ্য কিতাবাদির উদ্ধৃতি সহকারে উত্তর দিলে কৃতজ্ঞ হব।

Answer

উত্তর : ক ও খ) যে ব্যক্তি একবার নামায আদায় করেছে তার জন্য দ্বিতীয় জামাতের ইমাম হওয়ার সুযোগ নেই। শরীয়তে ঈদের নামায একবার, দুইবার নয়। যে ব্যক্তি একবার নামায পড়েছে তার জন্য দ্বিতীয় নামায ঈদের নামায নয়; বরং তা নফল নামায হবে। আর নফল আদায়কারী ইমামের পিছনে, ঈদের নামায আদায়কারী মুসল্লির ইক্তেদা করা বৈধ নয়। উক্ত মাসআলায় যদিও বিভিন্ন ফিকহী মাযহাবে মতভেদ রয়েছে, কিন্তু দলীলের বিচারে উল্লেখিত সিদ্ধান্তই অগ্রগণ্য এবং অধিকাংশ ফকীহ এই সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। সহীহ বুখারীর এক হাদীসে আছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইমাম বানানো হয় তাঁর অনুসরণের জন্য অতএব তোমরা ভিন্নতা অবলম্বন করবে না।’-সহীহ বুখারী ১/১০ জানা কথা, ঈদের নামাযের মুক্তাদীগণ নফল আদায়কারী ইমামের ইক্তেদা করলে ইমামের অনুসরণ হয় না; বরং ইমাম মুক্তাদীর নামায ভিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত কাতাদাহ রাহ. থেকে বর্ণিত, হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়াব ও হাসান বসরী রাহ. বলেন, যে ব্যক্তি যোহরের জামাত মনে করে আসরের নামায আদায়রত জামাতে শরীক হল এবং নামাযের পর সে জানতে পারল, তারা আসর আদায় করেছে, উক্ত ব্যক্তি আসর ও যোহর উভয় নামায পুনরায় পড়বে।’-মুসন্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪ আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় এই যে, ইমাম যখন ঈদের নামায পড়বেন, তিনি অতিরিক্ত তাকবীরের সাথে পড়াবেন। অথচ বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো নফল নামাযে ঈদের নামাযের মতো অতিরিক্ত তাকবীর নেই। বিশেষ করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ণ জীবনে কখনো আদায়কৃত ঈদের নামায পুনরায় পড়াননি। কোনো সাহাবীকে এমন করতে আদেশও করেননি বা কোনো সাহাবী এমন করেছেন তার প্রমাণ নেই; বরং হাদীস শরীফে এক নামায একাধিকবার পড়তে নিষেধ করা হয়েছে। বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো নামায একদিনে একাধিকবার পড়ো না।-আবু দাউদ ১/৮৫ উত্তর : গ) সম্ভবত তিনি অন্য কোনো মাযহাব অনুযায়ী ফতোয়া দিয়েছেন। এটা ঠিক হয়নি। এর প্রথম কারণ হল, যে মত অনুযায়ী তিনি ফতোয়া দিয়েছেন তা দলীলের বিচারে দুর্বল। দ্বিতীয় কারণ হল এতদাঞ্চলে ফিকহে হানাফী অনুযায়ী কুরআন ও হাদীসের উপর আমল করা হয়। তাই শরীয়তসম্মত প্রয়োজন ছাড়া বিপরীত ফতোয়া দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলা দ্বীনী মাসলাহাতের পরিপন্থী।-আততামহীদ ২৪/৩৬৭; আলমাজমূ’ ৪/১৬৯; ফাতহুল বারী ২/২২৬; কিতাবুল উম্ম ১/২০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৯৬; যাখীরা ২/২৪২; আলমুনতাকা, ইবনে তায়মিয়া ১/৬৩২; তাসহীলুল মাসালিক ২/৪৯৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪

আততামহীদ ২৪/৩৬৭; আলমাজমূ’ ৪/১৬৯; ফাতহুল বারী ২/২২৬; কিতাবুল উম্ম ১/২০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৯৬; যাখীরা ২/২৪২; আলমুনতাকা, ইবনে তায়মিয়া ১/৬৩২; তাসহীলুল মাসালিক ২/৪৯৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/৫২৪

Read more Question/Answer of this issue