Muharram 1431 || January 2010

ড. মোতাহার হুসাইন -

১৮৪০. Question

আমাদের এলাকার মসজিদে কয়েকদিন আগে একটি মাহফিল হয়েছিল। আসর বাদ মোয়াযযিন সাহেব ঘোষণা দিলেন, আজ ইশার জামাত রাত সাড়ে আটটায় পড়া হবে। রাত আটটা বিশ মিনিটে জনৈক ওয়ায়েজ বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যমানায় ঘড়ি ছিল না। দায়েমী মুসল্লীগণ যখন হাজির হয়ে যেতেন তখন ইকামত দেওয়া হত। আজ এই মাহফিল উপলক্ষে এ সুন্নতকে যিন্দা করার জন্য আমরা এখন জামাত শুরু করে দিব। যেহেতু মসজিদ পূর্ণ হয়ে গেছে তাই ৮ টা ২০ মিনিটে ইকামত হয়ে গেল। মসজিদের দোতলা, তিন তলা তখনও খালি ছিল। জামাত ৮টা ৩০ মিনিটে হবে এ ঘোষণার কারণে যারা নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয়েছে তারা অনেকে জামাত পায়নি। অনেকে মাসবুক হয়েছে। এখন জানতে চাই, দশ মিনিট আগে ইকামত দেওয়ায় সুন্নতে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিন্দা হল, নাকি ৮ টা ৩০ মিনিটে জামাত শুরু হওয়া উচিত ছিল? যদি ঘড়ির সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় জামাত শুরু করা বেদআত হয়ে থাকে তাহলে প্রত্যেক মসজিদে নামাযের সময়সুচি ঝুলিয়ে রেখে ঘড়ির সময় হিসাবে জামাত শুরু করা কি উচিত হচ্ছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইশার জামাত পূর্ব ঘোষিত সময়েই শুরু করা উচিত ছিল। কেননা, একে তো পূর্ব ঘোষিত সময়ের আগে জামাত শুরু করার কারণে অনেকেই জামাতে শরিক হতে পারেনি। আর নির্ধারিত সময়ে নামায শুরুর ঘোষণা একটি ওয়াদা। আর বিনা ওযরে ওয়াদা লঙ্ঘন করা গুনাহ। উল্লেখ্য, নামাযের নির্ধারিত সময়সুচি অনুযায়ী নামায পড়া উচিত। ওয়াজ নসীহতের কারণে সময়সুচি হঠাৎ করে পরিবর্তন করা ঠিক নয়। কেননা এতে অনেক নিয়মিত মুসল্লীর জামাত ছুটে যাওয়ার বা কষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম-এর যুগে ঘড়ি ছিল না এ যুক্তি দেখিয়ে তখন জামাতের জন্য সময় নির্ধারিত ছিল না-এ কথা বলা ঠিক নয়। কেননা তখনও বিভিন্ন আলমত লক্ষ্য করে জামাতের সময় নির্ধারণ করা এবং সে অনুযায়ী আযান ও জামাত শুরু হওয়ার বিবরণ বহু হাদীসে রয়েছে। তাই ঘড়ির সময় অনুযায়ী নামাযের সময়সূচি নির্ধারণ করা সুন্নত পরিপন্থী বা বিদআত বলা যায় না।

ফাতহুল বারী ২/৫১; উমদাতুল কারী ৫/৬২; ফয়যুল বারী ২/১২৯; বুলুগুল আমানী ১/২৯১; মাআরিফুস সুনান ১/৭৫; আউনুল মা’বুদ ২/১৭৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৯২; ফাতাওয়া উসমানী ১/৩৯৬

Read more Question/Answer of this issue