জুনায়েদ আহমাদ - নেত্রকোণা

৫৯৯৪. Question

কিছুদিন আগে আমি ইউরিন টেস্টের নাপাকীভর্তি শিশি ভুলক্রমে পকেটে রেখেই যোহরের নামায পড়ে ফেলি। আমার উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে?

Answer

আবদ্ধ শিশি, কৌটা ইত্যাদির ভেতরে নাপাকি থাকলেও তা সাথে নিয়ে নামায সহীহ হয় না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পেশাবের শিশিটি আপনার পকেটে থাকার কারণে উক্ত নামায সহীহ হয়নি। তা আবার পড়ে নেওয়া আবশ্যক।

-আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ৯৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৭৭; খিযানাতুল আকমাল ১/১৯৬; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/২৫৯; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৫৬০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৩

Sharable Link

খালেদ মাহমুদ - রংপুর

৫৯৯৫. Question

গতকাল আমি দুপুরের খাবার খেয়ে খিলাল করতে করতে মসজিদে যাই। ওযু শেষে থুথু ফেললে দেখি, রক্তে থুথু লাল হয়ে গেছে। আমি কুলি করে নামাযে দাঁড়িয়ে যাই। নামায শেষে ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আপনার নামায হয়নি; ওযু করে পুনরায় নামায পড়তে হবে। জানার বিষয় হল, ইমাম সাহেবের কথা কি ঠিক? জানালে উপকৃত হব।

Answer

হাঁ, ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। আপনার উক্ত নামায হয়নি। কারণ থুথুর সাথে রক্ত বের হলে রক্তের পরিমাণ যদি সমান বা বেশি হয়, অর্থাৎ থুথু যদি লাল হয়ে যায় তাহলে ওযু ভেঙে যায়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু আপনার থুথু রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল তাই আপনার ওযু ভেঙে গেছে। সুতরাং উক্ত নামাযটি পুনরায় আদায় করে নেয়া জরুরি।

-কিতাবুল আছল ১/৪৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৭৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২০৯; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৪৮; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩৮

Sharable Link

আয়মান হাফিজ - নেত্রকোণা

৫৯৯৬. Question

কিছুদিন আগে গরু জবাই করার সময় আমার সাদা পাঞ্জাবীর হাতা রক্তে ভিজে যায়। নামাযের সময় কাছাকাছি হলে আমি হাতার ঐ অংশটি পানি দিয়ে ভালোভাবে ধৌত করি। বারবার ধোয়ার পরও সেখান থেকে রক্তের দাগ দূর হয়নি। এর মধ্যেই নামাযের ইকামত শুরু হয়ে যায়। তাই আমি এভাবেই জামাতে শারীক হই। আমার উক্ত পাঞ্জাবী কি পবিত্র হয়েছে? সে পাঞ্জাবী পরে আদায়কৃত নামায কি সহীহ হয়েছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ভালোভাবে ধোয়ার পরও যেহেতু রক্তের দাগ ওঠেনি তাই উক্ত পাঞ্জাবী পবিত্র গণ্য হবে। তা পরিধান করে  আদায়কৃত নামায সহীহ হয়েছে। কেননা দৃশ্যমান নাপাকী দূর করার পর তার দাগ যদি সহজে দূর করা না যায় তাহলে এমন দাগ দূর না হলেও কাপড় পবিত্র গণ্য হবে।

-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮৯৩৯; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৪৯; আয্যাখীরাতুল বুরহানিয়া ১/৪৪৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২০৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩২৯

Sharable Link

মুআয - কুমিল্লা

৫৯৯৭. Question

আমাদের মসজিদে একটি হাউজ আছে। হাউজটি পাঁচ হাত চওড়া, বাইশ হাত লম্বা এবং এক হাত গভীর। গতকাল জুমার নামাযের সময় একটি ছেলে টয়লেট খোলা না পেয়ে হাউজটিতে পেশাব করে দেয়। বিষয়টি কয়েকজন মুসল্লী দেখতে পায়। কিন্তু পানিতে পেশাবের দুর্গন্ধ ইত্যাদি কিছুই বোঝা যায় না। মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, হাউজটি পাক করার পদ্ধতি কী? উল্লেখ্য, পেশাবের কারণে হাউজের পানিতে কোনো প্রকার পরিবর্তন আসেনি।

Answer

কোনো হাউজ যদি অন্তত একশ বর্গহাত বা এর চেয়ে বড় হয় এবং এ পরিমাণ গভীর হয় যে, অঞ্জলি ভরে পানি নিলে জমিনে হাত ঠেকে না, তাহলে তা মায়ে কাছীরঅর্থাৎ বেশি পানির হুকুমে। আর বেশি পানিতে নাপাকি পড়ার কারণে পানির রং স্বাদ ও গন্ধের কোনো পরিবর্তন না হলে তা পাক আছে বলে ধর্তব্য হয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হাউজটি যেহেতু একশ বর্গহাতের চেয়ে বড় এবং তা যথেষ্ট গভীরও আছে। আর পেশাবের দুর্গন্ধ বা কোনো প্রভাব পানিতে নেই, তাই হাউজটি নাপাক  হয়নি। অতএব, উক্ত হাউজ থেকে ওযু করা যাবে।

-আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ১১; বাদায়েউস সানায়ে ১/২১৯; আলমুহীতুর রিযাবী ১/১২০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৯৭; রদ্দুল মুহতার ১/১৯১

Sharable Link

মাহদী হাসান - নোয়াখালী

৫৯৯৮. Question

গত ঈদের দিন ঈদের নামাযের উদ্দেশ্যে ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলাম। গিয়ে দেখি নামায প্রায় শেষের দিকে। হঠাৎ আমার ওযুরও প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন আমার খুব বেশি আশংকা হয় যে, ওযু করতে গেলে জামাত ছুটে যাবে। তাই তাড়াতাড়ি তায়াম্মুম করে জামাতে শরীক হই। প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় তায়াম্মুম করে নামায পড়াটা সহীহ হয়েছে কি?

Answer

হাঁ, ওযু করতে গেলে ঈদের নামায ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলে তায়াম্মুম করে ঈদের নামায আদায় করা সহীহ। সুতরাং আপনার উক্ত ঈদের নামায সহীহ হয়েছে।

-মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ১/১৪৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩১৭; আলইখতিয়ার ১/৮৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৫৮; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/১২৯

Sharable Link

সুলতান মাহমূদ - কুষ্টিয়া

৫৯৯৯. Question

গোসল ফরয অবস্থায় শরীর থেকে বের হওয়া ঘাম কি নাপাক? এ ঘাম কাপড়ে বা বিছানায় লাগলে করণীয় কী?

Answer

না, গোসল ফরয অবস্থায়ও শরীর থেকে বের হওয়া ঘাম নাপাক নয়। তাই তা কাপড়ে বা বিছানায় লাগলে তা নাপাক হবে না। সুতরাং উক্ত ঘামযুক্ত কাপড় পরে নামায পড়তে কিংবা বিছানার উপর নামায পড়তে কোনো অসুবিধা নেই।

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

لَا بَأْسَ أَنْ يُصَلَّى فِي الثَّوْبِ الَّذِي يَعْرَقُ فِيهِ الْجُنُبُ.

গোসল ফরয হয়েছে এমন ব্যক্তির ঘর্মাক্ত কাপড়ে নামায পড়তে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৪৩০)

-কিতাবুল আছল ১/৩৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৭০; খিযানাতুল আকমাল ১/৩২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ১/২৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/২২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আয়মান - কক্সবাজার

৬০০০. Question

আমার বাসা থেকে মসজিদ কাছে হওয়ায় ইমামের কেরাত স্পষ্টভাবে শোনা যায়। একদিন ওযরের কারণে ঘরেই নামায পড়ি। তারপর বসে বসে ইমামের কেরাত শুনছিলাম। কিছুক্ষণ পর একটি সিজদার আয়াতও শুনতে পাই। প্রশ্ন হল, সিজদার আয়াত শোনার দ্বারা আমার ওপর কি সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়েছে?

Answer

হাঁ, আপনার ওপরও সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়েছে। কেননা ইমামের তিলাওয়াতকৃত সিজদার আয়াত বাইরের কেউ শুনলে তার ওপরও সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়।

-কিতাবুল আছল ১/২৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৫; আলহাবিল কুদসী ১/২৩৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০২; আলজাওহারাতুন নায়্যিরা ১/১০৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১০

Sharable Link

মুযাক্কির হুসাইন - নেত্রকোণা

৬০০১. Question

আমি একজন মুআযযিন। সবসময় ওযুসহ আযান দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে  কোনো দিন ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেলে ওযু ছাড়াই আযান দিয়ে দেই। আমি জানতে চাচ্ছি, ওযু ছাড়া আযান দিলে কি কোনো অসুবিধা আছে?

Answer

ওযুসহ আযান দেওয়া উত্তম। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

لَا يُنَادِي بِالصَّلَاةِ إِلَّا مُتَوَضِّئٌ.

ওযুকারী ব্যক্তিই যেন আযান দেয়। (জামে তিরমিযী, বর্ণনা ২০১)

তাবেয়ী আতা রাহ. থেকে বর্ণিত-

عن عطاء، أَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يُؤَذِّنَ الرَّجُلُ، وَهُوَ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ.

তিনি ওযু ছাড়া আযান দেওয়াকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২২০৯)

অবশ্য ওযু ছাড়া আযান দিলেও আযান হয়ে যাবে; ওযু করে পুনরায় আযান দিতে হবে না। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

لاَ بَأْسَ أَنْ يُؤَذِّنَ عَلَى غَيْرِ وُضُوءٍ.

ওযু ছাড়া আযান দিতে অসুবিধা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২২০২)

-কিতাবুল আছল ১/১১০; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৩১; শরহুল জামিইস সাগীর, সাদরুশ শহীদ পৃ. ১৪২; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৮; আলগায়া শরহুল হেদায়াহ, সারুজী ২/২৪২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলআমীন - গেণ্ডারিয়া, ঢাকা

৬০০২. Question

আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। যথাসম্ভব জামাতে নামায পড়ার চেষ্টা করি। তবে কখনো কখনো ব্যস্ততার কারণে যোহরের নামায অফিসে একা পড়তে হয়। আমি অফিসে যেখানে দাঁড়িয়ে নামায পড়ি তার বরাবর ডান দিকে বড় দুটি (মানুষের) ছবি ঝুলানো আছে। মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, এর কারণে কি আমার নামাযের কোনো সমস্যা হবে?

Answer

যে ঘরে প্রাণীর ছবি ঝুলানো থাকে তাতে নামায পড়া মাকরূহ। তাই ঐ ঘরে আপনার নামায পড়াটা মাকরূহ হয়েছে। তবে তা আদায় হয়ে গেছে। পুনরায় তা পড়তে হবে না। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

لاَ تُصَلِّ فِي بَيْتٍ فِيهِ تَمَاثِيلُ.

যে ঘরে ছবি আছে তাতে নামায পড়ো না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৬১৬)

সুতরাং আপনার কর্তব্য হল, নামাযের জন্য ছবিমুক্ত কোনো জায়গা নির্বাচন করা অথবা অন্তত নামাযের সময় উক্ত ছবিগুলো ঢেকে রাখা।

প্রকাশ থাকে যে, প্রাণীর ছবি অঙ্কন করা, ছবি প্রদর্শন করা, ঘর-বাড়িতে ছবি টাঙিয়ে রাখা সবই নাজায়েয ও গুনাহের কাজ। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ القِيَامَةِ المُصَوِّرُونَ.

কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি বানায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৫০)

অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لاَ تَدْخُلُ المَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ تَصَاوِيرُ.

ফেরেশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর থাকে এবং ঐ ঘরেও না, যে ঘরে ছবি থাকে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৪৯)

-আলজামেউস সাগীর, পৃ. ৮৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২১১; খিযানাতুল আকমাল ১/১০৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৭

Sharable Link

মাহমূদ হাসান - ঢাকা

৬০০৩. Question

মাঝে মাঝে একাকী নামায পড়ার সময় আমার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। কিন্তু ভুলে সাহু সিজদা না করেই সালাম ফিরিয়ে ফেলি। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?

Answer

সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার পর আদায় না করে ভুলে সালাম ফিরিয়ে ফেললে তখন যদি নামায পরিপন্থী অন্য কোনো কাজ (যেমন কথা বলা, মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া ইত্যাদি) না করে থাকে, তাহলে স্মরণ হওয়ামাত্র সাহু সিজদা আদায় করে নেবে। এ অবস্থায় সাহু সিজদা করে নিলেও নামায সহীহ হয়ে যাবে। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

هُمَا عَلَيْهِ حَتَّى يَخْرُجَ، أَوْ يَتَكَلَّمَ.

অর্থাৎ সাহু সিজদা করে নেবে, যতক্ষণ মসজিদ থেকে বের না হয় এবং কথা না বলে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৫১৪)

কিন্তু যদি সালামের পর নামায ভঙ্গ হওয়ার মত কোনো কাজ করে ফেলে, সেক্ষেত্রে সাহু সিজদা আদায়ের সুযোগ থাকবে না। তখন ঐ নামায পুনরায় পড়ে  নিতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/২০০; শরহু মুখতাসারিত তহাবী, ইসবিজাবী ১/৩৫২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৯; আযযিয়াউল মানবী ২/৩৮৩; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯১

Sharable Link

আহমাদ মারযূক - নেত্রকোণা

৬০০৪. Question

আমি একদিন চার রাকাতবিশিষ্ট সুন্নত নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার পর অন্য সূরা মিলাতে ভুলে যাই। একই নামাযের প্রথম বৈঠকে ভুলে তাশাহহুদের পর দরূদ শরীফ পড়ে ফেলি। এরপর নামাযের শেষে একটি সাহু সিজদা আদায় করি। আমি জানতে চাচ্ছি, আমার উক্ত দুটি ভুলের জন্য একটি সাহু সিজদা আদায় করা কি যথেষ্ট হয়েছে, নাকি দুটি আদায় করা আবশ্যক ছিল?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা একটি করে ঠিকই করেছেন। কেননা সাহু সিজদা ওয়াজিব হওয়ার মতো একাধিক ভুল হলেও একটি সাহু সিজদাই সবগুলোর জন্য যথেষ্ট। এক নামাযে একাধিক সাহু সিজদা করার বিধান নেই। তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

عَنْ إبْرَاهِيمَ؛ فِي الرَّجُلِ يَسْهُو مِرَارًا فِي صَلاَتِهِ، قَالَ : تُجْزِئهِ سَجْدَتَانِ لِجَمِيعِ سَهْوِهِ.

নামাযে একাধিক ভুলের জন্য দুটি সিজদাই (অর্থাৎ একবার সাহু সিজদা) যথেষ্ট। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা বর্ণনা ৪৫৯১)

-কিতাবুল আছল ১/১৯৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২২৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২২; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৮; রদ্দুল মুহতার ২/৮০

Sharable Link

রুহুল্লাহ - চট্টগ্রাম

৬০০৫. Question

কিছুদিন আগে বাস থেকে তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে পড়ে যাই এবং পড়ে গিয়ে আমার ডান পা মচকে যায়। এখন আমি দাঁড়িয়ে নামায পড়লে বা মাটিতে সিজদা করলে পায়ে প্রচ- ব্যথা লাগে। মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, আমার কি বসে নামায পড়ার সুযোগ আছে?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী দাঁড়িয়ে নামায পড়লে বা স্বাভাবিক নিয়মে মাটিতে সিজদা করলে যেহেতু আপনার পায়ে প্রচ- ব্যথা অনুভব হচ্ছে, তাই এ অবস্থায় আপনি যেভাবে বসা সহজ হয় সেভাবে বসে, ইশারায়, রুকু সিজদা করে নামায পড়তে পারবেন। তবে জমিনে বসতে পারলে চেয়ারে বসা জায়েয হবে না। আর ইশারায় সিজদা করলে সিজদার সময় রুকুর চেয়ে একটু বেশি ঝুঁকতে হবে। ইমরান বিন হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ.

আমি অর্শরোগে ভুগছিলাম। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কীভাবে নামায পড়ব- এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দাঁড়িয়ে নামায পড়, না পারলে বসে নামায পড়। তাও না পারলে কাত হয়ে শুয়ে নামায পড়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১১৭)

-কিতাবুল আছল ১/১৮৭; তুহফাতুল ফুকাহা ১/১৮৯ আলহাবিল কুদসী ১/২২৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৮৭; ফাতহুল কাদীর ১/৪৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৫

Sharable Link

মামুন - মোমেনশাহী

৬০০৬. Question

শহরের মসজিদগুলোতে অনেক সময় দেখা যায়, বিশেষত জুমা ও ঈদে, মসজিদে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় মুসল্লীরা দুই সিঁড়ির মধ্যবর্তী সমতল জায়গায় নামায পড়েন। সেখানেও জায়গা না থাকলে রাস্তায় নামায পড়েন। জানার বিষয় হল, মসজিদ সংলগ্ন সিঁড়ি যদি মসজিদের অন্তর্ভুক্ত না হয় তাহলে দুই সিঁড়ির মধ্যবর্তী সমতল জায়গা বা রাস্তায় নামায পড়লে কি নামায হবে?

Answer

মসজিদের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলে মসজিদ সংলগ্ন সিঁড়ির সমতল জায়গায় এবং এর পরবর্তী রাস্তা ইত্যাদিতে নামাযে দাঁড়াতে পারবে। তবে মসজিদের কাতার অপূর্ণ রেখে এসব স্থানে দাঁড়ানো যাবে না। আর মসজিদের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলেও বাইরে রাস্তা ইত্যাদিতে দাঁড়ানোর জন্য শর্ত হল, মসজিদের বাইরের কাতার ও মসজিদের মাঝে যানবাহন চলাচল করতে পারে- এ পরিমাণ ফাঁকা না থাকা। কেননা মসজিদের বাইরে এমন ফাঁকা রেখে দাঁড়ালে কাতারের সংযোগ না থাকার কারণে তাদের নামায সহীহ হবে না।

-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ২/৭২; তুহফাতুল ফুকাহা ১/৫৩১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৫১; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৯৬; জামেউল মুযমারাত ১/৩৯৬; রদ্দুল মুহতার ১/৫৮৫

Sharable Link

সাখাওয়াত - ফরিদপুর

৬০০৭. Question

আমি কখনো কখনো বাসায় খাটের উপর দাঁড়িয়ে নামায আদায় করি। খাটের উপর আমার নামায পড়া অবস্থায় কেউ কি খাটের সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে পারবে?

Answer

না, খাটের উপর নামায পড়া অবস্থায় খাটের সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয হবে না। কেননা এক্ষেত্রে নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা হয়। আর হাদীসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। অতএব এক্ষেত্রেও অতিক্রম করতে হলে নামাযীর সামনে অবশ্যই সুতরা ব্যবহার করতে হবে।

-আলগায়া শরহুল হেদায়া, সারুজী ৪/১১৫; আলকিফায়া ১/৩৫৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭; মাজমাউল আনহুর ১/১৮৩; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৩৬৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬২৪

Sharable Link

আদনান - গাজীপুর

৬০০৮. Question

অসুস্থতার কারণে আমি নামাযে রুকু-সিজদা করতে পারি না। তবে দাঁড়াতে পারি এবং বসতেও পারি। মুহতারামের কাছে জানতে চাই, উক্ত অবস্থায় আমার জন্য কি দাঁড়িয়ে নামায পড়া আবশ্যক, নাকি বসে পড়ারও সুযোগ রয়েছে?

Answer

নামাযের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোকনগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে কিয়াম। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে নামায পড়ার সক্ষমতা থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়াম ছাড়া যাবে না। কেননা বসে নামায পড়ার জন্য শর্ত হল, দাঁড়ানোর সক্ষমতা না থাকা। হাদীস শরীফে এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন রা. বলেন-

كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ عَنِ الصَّلاَةِ، فَقَالَ: صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ.

অর্থাৎ আমার অর্শরোগ ছিল, তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম- আমি কীভাবে নামায আদায় করব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবে। দাঁড়িয়ে আদায় করতে সক্ষম না হলে বসে বসে পড়বে। বসেও সক্ষম না হলে শুয়ে আদায় করবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১১৭)

এই হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, কিয়াম তথা দাঁড়াতে অক্ষম হলে বসে নামায পড়বে। অতএব নামাযে কিয়ামের সামর্থ্য থাকলে দাঁড়িয়েই সূরা-কিরাত পড়বে। এরপর রুকু- সিজদার সময় বসে যাবে এবং ইশারায় রুকু-সিজদা আদায় করবে।

-মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ১/৩২৪; আততামহীদ, ইবনে আবদুল বার ৪/২৯১; ফাতহুল কাদীর ১/৪৬০; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৩৬; ইলাউস সুনান ৭/২১০

Sharable Link

ইমন আলী - আমিনবাজার, ঢাকা

৬০০৯. Question

আমি বাসায় আমার ভাগিনাদেরকে কুরআন শরীফ পড়াই। পড়ানোর সময় প্রায়ই তারা সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে। জানার বিষয় হল, তারা তো নাবালেগ। তাদের থেকে সিজদার আয়াত শুনলে কি সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে?

Answer

নাবালেগ থেকে সিজদার আয়াত শুনলেও সিজদা ওয়াজিব হয়। তাই আপনার উক্ত নাবালেগ ভাগিনাদের থেকে সিজদার আয়াত শুনলেও আপনার উপর সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৬৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০০; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৯

Sharable Link

ইরফান - নওগাঁ

৬০১০. Question

মাঝে মাঝে আমার এমন হয়, মাসবুক হওয়ার পর নামায শেষে আমি যখন বাকি নামায আদায়ের জন্য দাঁড়াই তখন ইমামের সাথে কত রাকাত পেয়েছি- এ বিষয়ে সন্দেহে পড়ে যাই। তখন আমার পাশের ব্যক্তির (যে আমার সাথেই নামাযে শরীক হয়েছে) নামায লক্ষ করে নামায শেষ করি। আমার জানার বিষয় হল, এভাবে পাশের ব্যক্তির নামায লক্ষ করে নামায সম্পন্ন করার দ্বারা আমার নামায সহীহ হয়েছে কি?

Answer

হাঁ, এক্ষেত্রে পাশের ব্যক্তির নামাযের প্রতি খেয়াল করে নিজের ছুটে যাওয়া নামাযের কথা স্মরণ করা এবং সে অনুযায়ী ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করা জায়েয আছে। তাই আপনার উক্ত নামায আদায় হয়েছে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; ফাতহুল কাদীর ১/৩৩৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯৭

Sharable Link

আহমাদুল্লাহ - বরিশাল

৬০১১. Question

আমাদের এলাকার একটি প্রচলন আছে। মায়্যেতের দাফন শেষে উপস্থিত লোকদেরকে নিয়ে দুআ করা হয়। আমি আমাদের ইমাম সাহেবকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এতে অসুবিধার কিছু নেই। আমি জানতে চাচ্ছি, ইমাম সাহেবের উত্তরটি কি সঠিক?

Answer

হাঁ, ইমাম সাহেব ঠিক বলেছেন। কেননা দাফন শেষে কিবলামুখী হয়ে দুআ করার কথা হাদীসে এসেছে। উসমান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ، فَقَالَ: اسْتَغْفِرُوا لِأَخِيكُمْ، وَسَلُوا لَهُ بِالتَّثْبِيتِ، فَإِنَّهُ الْآنَ يُسْأَلُ.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মায়্যেতের দাফন থেকে ফারেগ হতেন তখন তিনি বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং দৃঢ়তার জন্য দুআ কর। এখনি তাকে প্রশ্ন করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৩)

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি আবদুল্লাহ যুল বিজাদাইন রা.-এর দাফনের ক্ষেত্রে বলেন-

فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ دَفْنِهِ اسْتَقْبَلَ الْقِبْلَةَ رَافِعًا يَدَيْهِ يَقُولُ: اللهُمَّ إِنِّي أَمْسَيْتُ عَنْهُ رَاضِيًا فَارْضَ عَنْهُ.

অতঃপর যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দাফন থেকে ফারেগ হলেন, তখন কেবলামুখী হয়ে হাত উঠিয়ে বললেন, হে আল্লাহ! আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট আপনিও তার উপর রাজি হয়ে যান। (হিলইয়াতুল আউলিয়া ১/১২২)

সুতরাং এসব হাদীসের আলোকে ফকীহগণ বলেছেন, দাফনের পর কবরকে সামনে না রেখে কেবলামুখী হয়ে দুআ করা উত্তম। তাই এক্ষেত্রে লক্ষণীয় হল, কবর সামনে নিয়ে দুআ মুনাজাত করা যাবে না।

-আলজাওহারাতুন নায়্যিরা ১/১৪১; আলবিনায়া ৩/২৬২; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬, ৫/৩৫০

Sharable Link

হাম্মাদ - ফরিদপুর

৬০১২. Question

আমার এক আত্মীয় আমার থেকে দুই বছরের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছে। মুহতারামের কাছে জানতে চাই, ঋণের উক্ত টাকার যাকাত কে দেবে? আমি, নাকি ঋণগ্রহীতা? আমার ওপর তো এই টাকার যাকাত আসার কথা নয়। কারণ এ দুই বছরে তো ঋণগ্রহীতা একচ্ছত্রভাবে এ টাকা ব্যবহার করবে। তাই এর যাকাত তো তার ওপরই আসার কথা। বিষয়টি স্পষ্ট করার আশা করছি।

Answer

বিগত দুই বছর ঋণের এ টাকা আপনার কাছে না থাকলেও এর মালিক আপনিই। যার কারণে যে কোনো সময় তা তলব করার অধিকার আপনার ছিল। সম্পদের যাকাত মালিকের ওপরই আবশ্যক হয়। তাই ওই টাকার যাকাত আপনাকেই দিতে হবে। অবশ্য তা হস্তগত হওয়ার পরেও পেছনের বছরসহ একত্রে দুই বছরের যাকাত আদায় করে দিতে পারবেন।

-আততাজরীদ, কুদুরী ৩/১৩৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২২৮; ফাতহুল কাদীর ২/১২৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৭

Sharable Link

আবদুল্লাহ জাবিদ - ফেনী

৬০১৩. Question

কোনো ব্যক্তি যদি রমযানের আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করে দেয়, তাহলে কি তার ফিতরা আদায় হয়ে যাবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

রমযানের আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করলেও কোনো কোনো ফকীহের মতে তা আদায় হয়ে যাবে। তবে রমযানের আগে আদায়ের ব্যাপারে যেহেতু ফকীহদের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে এবং হাদীসে ঈদুল ফিতরের আগে আদায়ের তাকীদ এসেছে, তাই ইচ্ছাকৃত রমযানের আগে আদায় না করা উচিত।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১১০; আলমুহীতুর রিযাবী ১/৫৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২০৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৩১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৬৭

Sharable Link

আবদুল্লাহ আলকাফি - সাভার, ঢাকা

৬০১৪. Question

আমার বাবা সরিষা চাষ করেন। গত বছর আমাদের ক্ষেতে উৎপাদিত চল্লিশ মন সরিষার সাথে আরো পঁচিশ মন সরিষা কিনে একটি গুদামে স্টক করে রাখেন। উদ্দেশ্যে হল, পরবর্তীতে দাম বৃদ্ধি পেলে তা বিক্রি করবেন। এখন সেই সরিষার উপর এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। তাই হুজুরের নিকট জানার বিষয় হল, ব্যবসার জন্য মজুদকৃত উক্ত সরিষার উপর যাকাত ফরয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষেতে উৎপাদিত চল্লিশ মন সরিষা ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে গণ্য হবে না। তাই বছর অতিবাহিত হলেও তার উপর যাকাত ফরয হবে না। তবে ব্যবসার উদ্দেশ্যে যে পঁচিশ মন সরিষা ক্রয় করেছিলেন তা ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে গণ্য হবে এবং তার মূল্য নেসাব পরিমাণ হলে অথবা যাকাতযোগ্য অন্য সম্পদের সাথে মিলে নেসাব পরিমাণ হলে বছর শেষে উক্ত সরিষার মূল্যের উপর যাকাত দিতে হবে।

-শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৩৩৬; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫১; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৯; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৮

Sharable Link

রাশেদ হাসান - সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

৬০১৫. Question

আমি একজন ফিড ব্যবসায়ী। গত কয়েক বছর আগে ফিস ফিড ও লেয়ার ফিডের নিজস্ব কারখানা তৈরির পরিকল্পনা করি এবং এক একর জায়গা কিনে সেখানে ভবন নির্মাণ করি। তারপর প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ ও কাঁচামাল কিনে কারখানা চালু করি। এখন হুজুরের নিকট জানার বিষয় হল, আমার কারখানার জায়গা, ভবন ও মেশিনারিজের যাকাত দিতে হবে কি না? এবং কারখানায় পণ্য উৎপাদনের জন্য মজুদকৃত কাঁচামালের উপর যাকাত ফরয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার কারখানার জায়গা, ভবন ও মেশিনারিজের যাকাত দিতে হবে না। তবে কারখানায় উৎপাদিত পণ্য এবং পণ্য উৎপাদনের জন্য মজুদকৃত কাঁচামাল যাকাতযোগ্য সম্পদ। অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে বছর শেষে এগুলোরও যাকাত দিতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৬৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৮২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৯২

Sharable Link

জাবেদ আলী - বুড়ীমারি, কুড়িগ্রাম

৬০১৬. Question

আমি প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে যাকাত আদায় করে থাকি। ব্যাংকে আমার ছয় লক্ষ টাকা আছে এবং নভেম্বর মাসে আমাদের বাড়ির চারটি গরু বিক্রি করে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা হাতে আসে। এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল যে, নভেম্বর মাসে আমার হাতে আসা এই টাকা আমার যাকাতযোগ্য অন্যান্য সম্পদের সাথে মিলে চলতি বছরেই পুরো টাকার উপর যাকাত আসবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নভেম্বর মাসে আপনার হাতে আসা সাড়ে তিন লক্ষ টাকা থেকে যা থাকবে তা পূর্বের ছয় লক্ষ টাকার সাথে মিলে পুরো টাকার যাকাত দিতে হবে। কেননা যাকাতের নেসাব পূর্ণ হওয়ার পর যাকাতবর্ষের মাঝে যাকাতযোগ্য সম্পদ যা হস্তগত হয়, বছর শেষে পুরো টাকার উপরই যাকাত ফরয হয়। এক্ষেত্রে বছরের মাঝে বা শেষে অর্জিত সম্পদের উপর পৃথকভাবে বছর অতিবাহিত হওয়া আবশ্যক নয়।

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৬৪; আলইখতিয়ার ১/৩৩৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়লিজিয়া ১/১৯১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৫

Sharable Link

আবদুল্লাহ সালমান - শিবচর, মাদারীপুর

৬০১৭. Question

রাশেদ একটি মাদরাসায় সীমিত বেতনে চাকরি করেন এবং ছোট একটি দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করে কিছু বেতন পান। রাশেদের সংসারে তাঁর মা, স্ত্রী ও ছোট ভাই ছাড়া কেউ নেই এবং তাঁদের থাকার কোনো বাড়িও নেই। তাঁরা অস্থায়ীভাবে তাদের খালার বাসায় থাকেন। কয়েক বছর ধরে রাশেদ ও তাঁর ভাই বাড়ি করার জন্য তিন লক্ষাধিক টাকা জমা করেছেন এবং এখানে তাঁদের টাকার অংশ প্রায় সমান সমান। তাই মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, তাদের জমাকৃত টাকার উপর যাকাত আসবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদের জমাকৃত টাকার উপর যাকাত ফরয। কেননা নেসাব পরিমাণ টাকার উপর বছর অতিবাহিত হলেই যাকাত দিতে হয়। চাই তা ভবিষ্যতের যে উদ্দেশ্যেই রাখা হোক না কেন। কেননা বিগত বছরে তার এই টাকা সকল প্রয়োজনের অতিরিক্ত ছিল।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৯২; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৬; গুনইয়াতু যাবিল আহকাম (আশশুরুমবুলালিয়া) ১/১৭২; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৮৯; রদ্দুল মুহতার ২/২৬২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/২৯

Sharable Link

শফীকুর রহমান - তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ

৬০১৮. Question

আলহামদু লিল্লাহ, আমি প্রতি বছর যাকাত আদায় করি। কোনো বছর যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত মানুষদের মাঝে যাকাতের টাকা বণ্টন করে দেই, আবার কোনো বছর যাকাতের টাকা দিয়ে কাপড় কিনে তাদের মাঝে বিলি করে দেই। এবছর আমি যাকাতের টাকা দিয়ে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত মানুষদেরকে বাড়ীতে দাওয়াত দিয়ে খাবার খাওয়াতে চাচ্ছি।

মুহতারাম মুফতী সাহেবের নিকট আমার জানার বিষয় হল, এভাবে তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে এনে খাবার খাওয়ানোর দ্বারা আমার যাকাত আদায় হবে কি? বিষয়টি সঠিক সমাধান জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

Answer

গরীবদেরকে দাওয়াত করে খাবার খাওয়ানোর দ্বারা যাকাত আদায় হবে না। কেননা যাকাত আদায়ের অন্যতম শর্ত হল, যাকাত গ্রহীতাকে যাকাতের টাকা অথবা বস্তুর পূর্ণ মালিক বানিয়ে দেওয়া। আর খাবার খাওয়ানোর দ্বারা উক্ত খাবারে তাদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত মানুষদেরকে খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে যাকাত আদায় করতে চাইলে তাদেরকে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা যেতে পারে। যেন তারা ইচ্ছা করলে ওই খাবার নিয়েও যেতে পারে।

উল্লেখ্য, যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তিদেরকে খাবার সরবরাহ করার দ্বারা যদিও যাকাত আদায় হয়ে যায়, কিন্তু খাবার, কাপড় কিংবা অন্য কোনো বস্তু না দিয়ে নগদ টাকা দেওয়াই ভালো। যেন তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী খরচ করতে পারে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২১৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২০১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৫৭

Sharable Link

সালাহউদ্দিন - বরিশাল

৬০১৯. Question

আলহামদু লিল্লাহ, গত বছর প্রথম হজ্বে যাওয়ার সুযোগ হয়। খুব সতর্কতার সাথেই হজ্বের কাজগুলো সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটি বিষয়ে একটু বেখেয়ালী হয়ে গেছে। মাসআলা জানা না থাকার কারণে খুব পেরেশানী হচ্ছে। বিষয়টি হল, ইহরাম অবস্থায় কয়েকবার বিরিয়ানী খেয়েছিলাম; যা সুগন্ধিযুক্ত ছিল।

প্রশ্ন হল, এই কারণে কি আমার হজ্বের কোনো সমস্যা হয়েছে? এবং আমার উপর কি কোনো জরিমানা ওয়াজিব হয়েছে? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

ইহরাম অবস্থায় বিরিয়ানী বা সুগন্ধিযুক্ত রান্না খাবার খেতে কোনো অসুবিধা নেই। তদ্রূপ সুগন্ধি ফল খাওয়াও জায়েয। সুতরাং বিরিয়ানী খাওয়ার কারণে আপনার উপর কোনো জরিমানা আসেনি। উল্লেখ থাকে যে, যেসব খাবারে রান্নার পর পৃথকভাবে জাফরান বা অন্য কোনো সুগন্ধি দেওয়া হয়, সেসব খাবার ইহরাম অবস্থায় খাওয়া যাবে না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪১৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৯; ফাতহুল কাদীর ২/৪৪১; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪১

Sharable Link

আশফাকুর রহমান - দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

৬০২০. Question

আমার একটি মুদি দোকান আছে। আমি আগে ওই দোকানের ব্যবসার টাকা সুদে লাগাতাম। এভাবে আমি বেশ টাকা-পয়সার মালিক হয়ে যাই। তখন আমি ওই টাকা দ্বারা হজ্ব করি। আলহামদু লিল্লাহ, এখন আমি সুদের কারবার ছেড়ে দিয়েছি। এখন আমি দ্বীনের ওপর চলার এবং হালালভাবে উপার্জনের চেষ্টা করছি।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, পূর্বে হারাম টাকা দ্বারা যেই হজ্ব করেছি আমার সেই হজ্ব কি আদায় হয়েছে, নাকি এখন আমাকে আবার হজ্ব আদায় করতে হবে?

Answer

হজ্ব ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর ভেতর দৈহিক এবং আর্থিক ইবাদত উভয়টি রয়েছে। তাই হজ্বের টাকা অবশ্যই হালাল হতে হবে। হারাম টাকা দ্বারা হজ্ব করলে যদিও হজ্ব হয়ে যাবে, কিন্তু আল্লাহ তাআলার দরবারে তা কবুল হবে না। কেননা, হারাম অপবিত্র। আর হাদীসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা পবিত্র। তিনি পবিত্র ব্যতীত গ্রহণ করেন না।

সুতরাং হালাল অর্থ থাকলে হজ্বে খরচকৃত ঐ পরিমাণ টাকা সদকা করে দিতে পারেন। এছাড়া কবুল হজ্বের আশায় পুনরায় হালাল টাকা দ্বারা হজ্ব আদায় করতে পারেন।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০১৫; ফাতহুল কাদীর ২/৩১৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৯; গুনয়াতুন নাসিক, পৃ. ২১; ফতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২০; রদ্দুল মুহতার ২/৪৫৬

Sharable Link

হাফসা জান্নাত - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬০২১. Question

প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগে আমার বিবাহ হয়। একবার আমি এবং আমার স্বামী আমার বাপের বাড়িতে বেড়াতে আসি। তখন আমার স্বামীর সাথে একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমার স্বামী আমাকে তুই তালাক, তোর মা তালাক বলে বাড়ি থেকে চলে যান। পরে আমি তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কয়েক সপ্তাহ পর আমরা শুনতে পারি যে, অন্য আরেকটি মেয়ের সাথে তার খারাপ সম্পর্ক ছিল, ঐ মেয়ে এবং সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে একে-অপরকে বিবাহ করে  ফেলেছে। এই খবর শুনে আমার বাবা তার সাথে যোগাযোগ করে। তখন সে বলে, আমি আপনার মেয়েকে তালাক দিয়ে দিয়েছি এবং অন্য আরেকটি বিবাহ করেছি। আমার সাথে আর যোগাযোগ করবেন না।

এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হয়। আমার তালাকের ঐ ইদ্দত শেষ হওয়ার কয়েক দিন আগে হঠাৎ জানতে পারি, আমার ঐ স্বামী ব্রেইনস্ট্রোক করে মারা গেছে।

এখন জানার বিষয় হল, আমার ঐ স্বামীর মৃত্যুর কারণে কী আমাকে নতুন করে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে, নাকি তালাকের ঐ বাকি ইদ্দত পুরো করলেই চলবে? জানিয়ে উপকৃত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্বামী যেহেতু আপনাকে তালাকে রাজয়ী দিয়েছে, তাই এই ইদ্দতের ভেতর স্বামীর ইন্তেকালের কারণে আপনাকে নতুন করে স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত, অর্থাৎ পূর্ণ চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে।

عَنِ الزُّهْرِيِّ، وَقَتَادَةَ، قَالَا: إِذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ الْمَرْأَةَ وَاحِدَةً، أَوِ اثْنَتَيْنِ، ثُمَّ تُوَفِّي عَنْهَا قَبْلَ انْقَضَاءِ عِدَّتِهَا، اعْتَدَّتْ عِدَّةَ الْمُتَوَفَّى عَنْهَا مِنْ يَوْمِ يَمُوتُ وَوَرِثَتْهُ.

যুহরী রাহ. ও কাতাদাহ রাহ. থেকে বর্ণিত, তাঁরা বলেন, যদি স্বামী তার স্ত্রীকে এক অথবা দুই তালাক দেওয়ার পর ঐ মহিলার ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বেই মারা যায় তাহলে ঐ মহিলা তার স্বামীর মৃত্যুর দিন থেকে নিয়ে স্বামীর মৃত্যুর ইদ্দত পুরো করবে এবং সে মীরাছ পাবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১১৭০৯)

-কিতাবুল আছল ৪/৪১২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩১৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১১৭; ফাতহুল কাদীর ৪/১৪৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৪২; রদ্দুল মুহতার ৩/৫১৩

Sharable Link

আমির হামজা - কচুয়া, চাঁদপুর

৬০২২. Question

আমার জানার বিষয় হল, অনেক জায়গায় দেখা যায়, মানুষের মৃত্যুর পর তার মৃত্যুর খবর মসজিদের মাইক দিয়ে প্রচার করা হয়। এখন মসজিদের মাইক দিয়ে তা প্রচার করা জায়েয কি না?

এব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কী? দয়া করে জানিয়ে উপকৃত করবেন।

 

Answer

আমাদের দেশে বর্তমানে যেহেতু ব্যাপকভাবে মসজিদের মাইকে মৃত্যুসংবাদ প্রচার করা হয় এবং মাইক ও অর্থদাতাগণও তা জেনেই মসিজেদ দান করে থাকেন, তাই এই ওরফ তথা (সামাজিক প্রচলনের কারণে) মসজিদের মাইক দিয়ে মৃত্যুসংবাদ প্রচার করা জায়েয হবে। আর জানাযার এলান করা তো এমনিতেই শরীয়ত স্বীকৃত বিষয়। তাই শুধু মৃত্যুর খবর না দিয়ে সাথে জানাযার সময় বলে দিলে সেটা আর দূষণীয় হবে না।

-আলইসতিযকার, ইবনে আব্দুল বার ২/৫৫১; আলমাজমূ শরহুল মুহায্যাব ৫/১৭৪; তুহফাতুল ফুকাহা ১/২৩৯; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৬৯; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫০; রদ্দুল মুহতার ৪/৪৪৫

Sharable Link

শাফিন - বরিশাল

৬০২৩. Question

অনেক বছর আগে মামা একদিন দই কেনার জন্য আমাকে বাজারে পাঠিয়েছিলেন। দোকানদার ছিল আমার বন্ধুর বাবা। তাই আমার থেকে দধির মূল্য রাখেনি। পরবর্তীতে আমি আর মামাকে ঐ টাকা ফেরত দেইনি। তা খরচ করে ফেলেছি। তবে ঐ টাকা মামাকে ফিরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল। একদিন গল্পের ফাঁকে ইমাম সাহেব হুজুর বললেন, ঐ টাকা আপনার মামাকে ফেরত দিতে হবে না; তা আপনার।

এখন মুহতারাম মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই, ইমাম সাহেবের উক্ত কথা কি ঠিক? আসলেই কি মামাকে ঐ টাকা ফেরত দিতে হবে না?

 

Answer

ইমাম সাহেব সঠিক বলেছেন। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার মামাকে উক্ত টাকা ফেরত দেওয়া জরুরি নয়। কেননা, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দোকানদার দধিটি মূলত আপনাকে হাদিয়া দিয়েছেন। আর পরবর্তীতে আপনার হাদিয়ার বস্তুটিই যখন মামাকে দিয়েছেন সুতরাং তা আপনার পক্ষ থেকে বিক্রি বলে গণ্য হবে। অতএব, ঐ টাকা খরচ করা আপনার জন্য বৈধ হয়েছে।

-কিতাবুল আছল ১১/২৮৮; আলমুহীতুর রিযাবী ৮/১৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ১৫/৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৬; আলবাহরুর রায়েক ৭/১৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫১৬

Sharable Link