আহরার আহমাদ - নরসিংদী

৪৬২৩. Question

আমাদের নামায-ঘরটি নদীর খুব নিকটে। আমরা মূলত চরে বসবাস করি। নামায-ঘরে প্রায়ই পানির ব্যাঙ ঢুকে জায়নামাযে পেশাব করে দেয়। জানতে চাই, একারণে জায়নামায কি নাপাক হয়ে যাবে?

Answer

না, পানির ব্যাঙের পেশাব নাপাক নয়। তাই বাস্তবেই যদি সেটি পানির ব্যাঙ হয়ে থাকে তাহলে এর কারণে জায়নামায নাপাক হবে না।

অবশ্য আপনাদেরকে যাচাই করে দেখতে হবে, যেসব ব্যাঙ সেখানে যাতায়াত করে সেগুলো পানির ব্যাঙ কি না। কেননা স্থলের ব্যাঙের পেশাব নাপাক।

-আলবাহরুর রায়েক ১/৮৮; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া পৃ. ২৮; শরহুল মুনয়া পৃ. ১৪৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৭৫

Sharable Link

হাফসা - মতলব, চাঁদপুর

৪৬২৪. Question

ঋতুস্রাব চলাকালীন মহিলারা শেখানোর উদ্দেশ্যে কুরআন শরীফের এক আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করতে পারবে কি? আমি একজন থেকে শুনেছি, শেখানোর উদ্দেশ্যে এক আয়াত এক আয়াত করে তিলাওয়াত করা জায়েয হবে। কিন্তু একজন আলেম বললেন, শেখানোর উদ্দেশ্যেও এক আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা জায়েয হবে না।

হযরতের কাছে সঠিক মাসআলাটি জানতে চাচ্ছি। দলীলসহ বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

ঋতুস্রাব অবস্থায় মহিলাদের জন্য অন্যকে শেখানোর উদ্দেশ্যেও কুরআন মাজীদ পড়া জায়েয হবে না। এমনকি এক আয়াত এক আয়াত করেও পড়া যাবে না।

এক বর্ণনায় এসেছে, হযরত হাসান বসরী রাহ. ও হযরত কাতাদা রাহ. বলেন, ঋতুমতি নারী ও যার উপর গোসল ফরয হয়েছে সে কুরআনের কোনো অংশই পড়বে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ১৩০২

এছাড়াও হযরত ওমর রা., হযরত জাবের রা. ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা., ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. প্রমুখ সাহাবা ও তাবেয়ীন থেকেও এ ব্যাপারে বহু হাদীস ও আসার বর্ণিত হয়েছে। এসব দলীলের আলোকে ফকীহগণ বলেন, ঋতুমতি নারীদের জন্য এক আয়াত পরিমাণও পড়া জায়েয নয়। এমনকি শেখানোর উদ্দেশ্যেও জায়েয নয়।

সুতরাং কুরআন মাজীদ শেখা-শেখানোর সাথে সম্পৃক্ত মহিলাগণও ওজরের দিনগুলোতে কুরআন তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকবেন। অবশ্য একান্ত প্রয়োজন হলে পূর্ণ আয়াত তিলাওয়াত না করে এক-দুই শব্দ করে বলে দিতে পারবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৮০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৯

Sharable Link

আবদুস সাত্তার - নড়িয়া, শরীয়তপুর

৪৬২৫. Question

আমি শুক্রবার সকালে চামড়ার মোজা পরিধান করি এবং ঐ মোজার উপর মাসাহ করে জুমার নামায আদায় করি। এরপর সফরে বের হই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমি কত দিন পর্যন্ত এই মোজার উপর মাসাহ করতে পারব?

Answer

আপনি তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করতে পারবেন। কারণ মুকিম ব্যক্তি চামড়ার মোজা পরিধানের পর মাসাহের সময় শেষ হওয়ার পূর্বেই সফরে বের হলে মোট তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত মাসাহ করতে পারবে।

উল্লেখ্য, তিন দিনের হিসাব শুরু হবে মোজা পরিধানের পর সর্বপ্রথম অযু ভেঙ্গে যাওয়ার সময় থেকে।

-কিতাবুল আছল ১/৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/৮০; আলইখতিয়ার ১/৯৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪১৬; রদ্দুল মুহতার ১/২৭৮

Sharable Link

মিসবাহ উদ্দীন - চট্টগ্রাম

৪৬২৬. Question

আমার বাবার দাঁত কিছুটা দুর্বল। পেয়ারা, আপেল ইত্যাদি শক্ত কিছু কামড়ে খাওয়ার সময় তাতে রক্তের হালকা ছাপ পড়ে।

হুজুরের কাছে আমার জানার বিষয় হল, এমন অবস্থায় কি নতুন করে অযু করতে হবে? নাকি পূর্বের অযু দ্বারাই তিলাওয়াত, নামায ইত্যাদি আদায় করতে পারবেন?

Answer

আপনার বাবা ফল কামড়ে খেলে তাতে যেহেতু খুব সামান্য রক্তের ছাপ দেখা যায়, তাই এর দ্বারা তার অযু ভঙ্গ হবে না। এক্ষেত্রে নতুন অযু করার প্রয়োজন নেই। পূর্ববর্তী অজু দ্বারাই তিনি তিলাওয়াত, নামায ইত্যাদি আদায় করতে পারবেন।

প্রকাশ থাকে যে, অযু ভাঙ্গার জন্য গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত শরীর থেকে বের হওয়া আবশ্যক। সামান্য রক্ত দৃশ্যমান হলে অযু নষ্ট হয় না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৮; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/১৪৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/১২৫; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৩৭৭; শরহুল মুনয়াহ, পৃ. ১৩২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুর রহিম - বরিশাল

৪৬২৭. Question

একদিন আমি আসরের পরে মসজিদে কাযা নামায পড়ছিলাম। আমার এক প্রতিবেশী বললেন, আছরের পরে নামায পড়া মাকরূহ। তাই আসরের পরে কাযা নামায পড়া যাবে না। হুযুরের কাছে আমার জানার বিষয় হল, আসলেই কি আসরের পরে কাযা নামায পড়া নিষেধ? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

আসরের পর সূর্য হলুদ বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কাযা নামায পড়া জায়েয। এ সময় কাযা নামায পড়া মাকরূহ নয়। হাঁ, এ সময় কোনো নফল নামায পড়া মাকরূহ। তবে এ সময় মসজিদে কাযা নামায পড়বে না। কারণ এতে অন্য কেউ ভুল বুঝতে পারে। তাই আসরের পর কাযা আদায় করতে চাইলে তা ঘরে পড়াই ভাল হবে। আর সূর্য হলুদ বা নিস্তেজ হয়ে গেলে কাযা নামায বা যে কোনো নফল পড়া নাজায়েয।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ১/৫৪৩; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৬৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১০; আলবাহরুর রায়েক ২/২৫১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৫

Sharable Link

আমাতুর রহমান - শরীয়তপুর

৪৬২৮. Question

আমার আম্মু যোহরের নামায পড়ছিলেন। নামাযের মধ্যে কয়েকটি চুল ওড়নার পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। আমার বোন দেখে বললেন, আম্মু! আপনার নামায হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমার বোনের কথা কি ঠিক? আম্মুর নামায কি হয়নি? এতটুকু চুল বের হওয়ার দ্বারা কি নামায ভেঙ্গে যাবে?

Answer

আপনার আম্মুর উক্ত নামায নষ্ট হয়নি। তা আদায় হয়ে গেছে। কারণ মাথার এক চতুর্থাংশের চুল বেরিয়ে পড়লে এবং তা তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় খোলা থাকলে কেবল তখনই নামায নষ্ট হয়। পক্ষান্তরে যদি এক চতুর্থাংশের কম চুল বের হয় (যেমন, পাঁচ-দশটি চুল বের হয়) তবে নামায নষ্ট হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, না  জেনে দ্বীনী বিষয়ে মন্তব্য করা অন্যায়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

-আলজামেউস সাগীর পৃ. ৮২; আলবাহরুর রায়েক ১/২৭০; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৪৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪০৮

Sharable Link

যোবায়ের আমীন - বসিলা, মুহাম্মাদপুর

৪৬২৯. Question

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব ভুলে একদিন অযু ছাড়া নামায পড়ান। সালাম ফেরানোর সঙ্গে সঙ্গে স্মরণ হয়। তখনই তিনি তার ছোট ভাইকে বলেন, তুমি আবার নামায পড়িয়ে দাও। তার ছোট ভাই নামায পড়ালেন। কিন্তু পুনরায় ইকামত দেওয়া হয়নি। এটা কি ঠিক হয়েছে?

 

Answer

হাঁ,  এক্ষেত্রে ইকামত না দেওয়াটা ঠিকই হয়েছে। কেননা ইকামত দেওয়ার পর কোনো নামায ফাসেদ হয়ে গেলে বিলম্ব না করে এবং অন্য কাজে লিপ্ত না হয়ে যদি উক্ত নামায পুনরায় পড়া হয় তাহলে দ্বিতীয়বার ইকামত দেওয়া লাগে না। পূর্বের ইকামত দ্বারাই নামায পড়া যায়।

-আলবাহরুর রায়েক ১/২৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৫; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯০

Sharable Link

আব্দুল্লাহ আকরাম - পাহাড়তলি, চিটাগাং

৪৬৩০. Question

আমি একদিন জানাযার নামাযে শরীক হই। কিন্তু নামাযে উপস্থিত হতে বিলম্ব হওয়ায় তিনটি তাকবীর ছুটে যায়। এখন আমার প্রশ্ন হল, নামায শেষে আমার ছুটে যাওয়া তাকবীর আদায়ের সময় দুআ পড়া লাগবে? না শুধু তাকবীর বললে হবে?

Answer

কোনো মুসল্লীর জানাযার নামাযের তাকবীর ছুটে গেলে করণীয় হল,  ইমাম  সালাম ফেরানোর পর খাটিয়া উঠানোর আগে মাসবুক তার ছুটে যাওয়া তাকবীরগুলো বলে নামায শেষ করবে। এক্ষেত্রে দুআ পড়া আবশ্যক নয়। অবশ্য যদি মৃতের খাটিয়া উঠানোর আগে আগে দুআ ও তাকবীর উভয়টি পড়ার সময় পাওয়া যাবে বলে মনে হয় তাহলে পড়বে। আর খাটিয়া উঠিয়ে ফেলার আশংকা থাকলে দুআ পড়বে না; বরং শুধু তাকবীরগুলো বলে নিবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫১; হাশিয়াতুশ শুরুমবুলালী আলাদ্দুরার ১/১৬৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩; মাজমাউল আনহুর ১/২৭৩

Sharable Link

সাইফুল ইসলাম - মত্তপাড়া, যশোর

৪৬৩১. Question

আমি যোহরের নামাযে প্রথম বৈঠকে ভুলে পুরা দরূদ শরীফ পড়ে ফেলি। কিন্তু সিজদায়ে সাহু করতে ভুলে যাই। দ্বিতীয় সালামের পরই সিজদায়ে সাহুর কথা মনে পড়ে। এরপর আমি নামায পুনরায় পড়ে নেই। এখন জানার বিষয় হচ্ছে, দ্বিতীয় সালামের পরপরই বা এক সালামের পর যদি সিজদায়ে সাহুর কথা স্মরণ হয় তাহলে এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী?

Answer

দুই দিকে সালাম ফেরানোর পর নামায পরিপন্থী কোনো কাজ না হলে তখনও সিজাদায়ে সাহু  করা যায়। তাই আপনার জন্য দুই দিকে সালাম ফেরানোর পরও সিজদায়ে সাহু করার সুযোগ ছিল। পুরো নামায পুনরায় পড়ার  প্রয়োজন ছিল না। তবে আপনি যেহেতু সাহু সিজদা করেননি তাই দ্বিতীয়বার নামায পড়ে নেওয়া আপনার জন্য ঠিকই হয়েছে।

-কিতাবুল আছল ১/২০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩২৭; ফাতাওয়া কাযীখান ১/১২৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৯

Sharable Link

আলমগীর হোসেন - পটুয়াখালী, বরিশাল

৪৬৩২. Question

আমার আম্মা যোহরের নামায পড়ছিলেন। নামাযের মধ্যে তার দাঁতের পাশে লেগে থাকা একটু গোস্ত গলার ভিতরে চলে যায়। এখন জানার বিষয় হল এর দ্বারা কি আম্মার নামায নষ্ট হয়ে গেছে?

Answer

দাঁতের ভিতরে লেগে থাকা গোস্তের উক্ত টুকরাটি যদি একটি চানা বুটের দানা থেকে ছোট হয় তাহলে তা গিলে ফেলার দ্বারা নামায নষ্ট হয়নি; বরং তা আদায় হয়ে  গেছে। আর যদি চানা বুটের সমান বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে তা গিলে নেওয়ার দ্বারা উক্ত নামায নষ্ট হয়ে গেছে। ঐ নামায পুনরায় পড়ে নিবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৬৪; আলবাহরুর রায়েক ১/২৭৫

Sharable Link

আবদুর রহমান - কোনাপাড়া, ঢাকা

৪৬৩৩. Question

আমি এ বছর আইয়ামে তাশরীকে একদিন আসর নামাযে মাসবুক হই। নামায শেষে হালকা আওয়াজে তাকবীরে তাশরীক বলি। তখন আমার পাশের এক ভাই বললেন, মাসবুকের তো তাকবীরে তাশরীক বলতে হয় না।

এখন আমার জানার বিষয় হল, ঐ ভাইয়ের কথাটি কি ঠিক? সঠিক মাসআলাটি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

লোকটির কথা ঠিক নয়। মাসবুকেরও তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। তাই আপনি ঐ সময় তাকবীরে তাশরীক বলে ঠিকই করেছেন।

-কিতাবুল আছল ১/৩২৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৫৬; মাজমাউল আনহুর ১/২৬০

Sharable Link

মুহাম্মাদ শরীফ - আশুলিয়া, ঢাকা

৪৬৩৪. Question

কিছুদিন আগে এক তা‘লিমী হালকায় এক ভাই নামাযের মাসায়েলের আলোচনা করতে গিয়ে বললেন- ‘ভুলবশত ফরয নামাযের তৃতীয়-চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সঙ্গে সূরা মিলিয়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু করা আবশ্যক হয় না।’ জানার বিষয় হল, তার এই কথা কি ঠিক?

Answer

হাঁ, তার কথা ঠিক। ফরয নামাযের তৃতীয়-চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু আবশ্যক হয় না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১০; ফাতাওয়া সিরাজিয়্যাহ পৃ. ১৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৭৬; মুখাতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৫৩

Sharable Link

সুলতান আহমাদ - চাটখিল, নোয়াখালী

৪৬৩৫. Question

আমার এক আত্মীয় অসুস্থ হওয়ার কারণে হাসপাতালে তার সাথে সারাক্ষণ থাকতে হচ্ছিল। তাই একদিন জুমার নামাযের সময় হয়ে যাওয়ার পরও জুমাতে শরীক হতে পারিনি। যোহর আদায় করতে হয়েছে। কারণ, অন্য কাউকে তখন রোগীর কাছে রেখে যাওয়ার মতো পাইনি।

এখন মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, ঐদিন জুমার নামাযে শরীক না হওয়াটা কি অন্যায় হয়েছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা যদি বাস্তবেই এত খারাপ হয়ে থাকে যে, সার্বক্ষণিক তার তত্ত্বাবধানে আপনার থাকাটা অপরিহার্য ছিল, তাকে রেখে জুমায় যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছিল, তাহলে জুমার নামাযে অংশগ্রহণ না করে যোহর পড়া দূষণীয় হয়নি। তবে এমন ক্ষেত্রে জুমা ফরয নয় এমন কাউকে রাখা সম্ভব হলে, সেই ব্যবস্থা করা আবশ্যক। যথাযথ ওজর ছাড়া জুমা ত্যাগ করা গুনাহ।

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৫২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৩; শরহুল মুনয়াহ পৃ. ৫৪৯; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৬১

Sharable Link

ইসমাঈল হুসাইন - নওয়াপাড়া, যশোর

৪৬৩৬. Question

আমার দাদাবাড়ি মাদারীপুর। আমরা ঢাকাতে থাকি। এখানেই আমার বাবা বাড়ি করেছেন। গ্রামে আমার বাবার ঘর-বাড়ি কিছুই নেই। বছরে এক-দুইবার আমার বাবা সেখানে চাচাদের বাড়িতে বেড়াতে যান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আমার বাবা সেখানে গিয়ে কি নামায কসর করবেন, না পূর্ণ নামায পড়বেন?

Answer

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা অনুযায়ী  আপনার বাবা যেহেতু নিজ পিত্রালয় একেবারে ছেড়ে এসেছেন এবং সেখানে তার বসবাসের নিজস্ব কোনো ব্যবস্থা নেই, আর এখন ঢাকাতেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন তাই আপনারা মাদারীপুরে আপনাদের চাচাদের বাড়িতে মুসাফির গণ্য হবেন এবং নামায কসর করবেন। তবে পনেরো দিন বা এর চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত থাকলে  পূর্ণ নামায পড়বেন।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২; রদ্দুল মুহতার ২/১৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৯৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ রবিউল কারীম - নাটোর

৪৬৩৭. Question

আমার এক নিকটাত্মীয় হাসপাতালে দু’দিন বেহুঁশ থাকার পর মৃত্যুবরণ করেন। এই সময়ে তার যে নামাযগুলো ছুটে গিয়েছে সেগুলোর জন্য কি ফিদয়া দেওয়া লাগবে?

Answer

না, আপনার আত্মীয়ের উক্ত দুই দিনের নামাযের ফিদয়া দিতে হবে না। কেননা তিনি মৃত্যুর পূর্বে দু’দিন বেহুঁশ ছিলেন। আর মৃত্যুর পূর্বে চব্বিশ ঘণ্টার  চেয়ে বেশি সময় বেহুঁশ থাকলে ঐ সময়ের ছুটে যাওয়া নামায মাফ হয়ে যায়। তার কাযা বা কাফফারা কিছুই দিতে হয় না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, বর্ণনা ৬৬৫৪; কিতাবুল আছল ১/১৯০; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩১; শরহুল মুনয়া পৃ. ২৬৩

Sharable Link

আবুল ফাইয়াজ - উত্তরা, ঢাকা

৪৬৩৮. Question

আমি গত বছরের শেষ দিকে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছি। সিকিউরিটি এডভান্স হিসেবে এক লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। এ এক লক্ষ টাকা বাসা ছেড়ে দেওয়ার সময় শেষ তিন মাসের ভাড়া হিসেবে কর্তন করা হবে।

প্রতি বছর আমি আমার যাকাতযোগ্য সকল সম্পদ হিসাব করে তা থেকে দেনা বাদ দিয়ে বাকি সম্পদের ২.৫% যাকাত দিয়ে থাকি।

এখন আমি জানতে চাচ্ছি, সিকিউরিটি এডভান্স হিসেবে দেওয়া এই এক লক্ষ টাকার যাকাত আমাকে দিতে হবে কি না? দেওয়া লাগলে কত দিন দিয়ে যেতে হবে? বিষয়টি বিস্তারিত জানানোর বিনীত অনুরোধ রইল।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এডভান্স হিসেবে দেওয়া এক লক্ষ টাকা যেহেতু শেষ তিন মাসের ভাড়া হিসেবে ধর্তব্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাই তা অগ্রিম ভাড়া হিসাবেই গণ্য হবে। এক্ষেত্রে এ টাকার মালিক হবে বাড়ির মালিক। এ কারণে এ টাকার যাকাত তাকেই আদায় করতে হবে। আপনাকে (ভাড়াটিয়াকে) সে টাকার যাকাত দিতে হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩৯; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৮৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৪৮

Sharable Link

আবূ সাঈদ - জামালপুর (ওয়েব থেকে প্রাপ্ত)

৪৬৩৯. Question

এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে দুই তালাক প্রদান করে। এরপর তার স্ত্রীর সাথে চার মাস বার দিন কোনো যোগাযোগ বা অন্য কোনো সম্পর্ক রাখেনি। ইতিমধ্যে তার স্ত্রীর ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যায়। এরপর তাকে মৌখিক ও লিখিতভাবে কাজী ও উকিলের মাধ্যমে তিন তালাক প্রদান করে। এখন প্রশ্ন হল-

ক. ইদ্দত অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর যে তিন তালাক প্রদান করা হয়েছে তা কার্যকর হয়েছে কি?

খ. যদি তিন তালাক কার্যকর না হয় তাহলে তারা কীভাবে আবার বৈবাহিক সম্পর্কে ফিরে আসতে পারবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারের দেওয়া তিন তালাক কার্যকর হয়নি। কারণ এর পূর্বেই মহিলার ইদ্দত শেষ হয়ে যাওয়ার দ্বারা পূর্বের দেওয়া তালাক দুটি বায়েনে পরিণত হয়েছে এবং তালাকদাতার সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। সুতরাং ঐ ব্যক্তি পুনরায় এ মহিলাকে বিবাহ করতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করে দুইজন সাক্ষীর সামনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩০৬; বাদায়েউস সানায়ে ৩/২৯৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৩০৫

Sharable Link

মাসুম আহমাদ - হবিগঞ্জ, সিলেট

৪৬৪০. Question

আমাদের এলাকায় জামে মসজিদে বেশ কিছুদিন যাবৎ দেখে আসছি, শুক্রবার জুমার নামাযের সময় ইমাম সাহেব বয়ান করেন। বয়ানের পর চার রাকাত কাবলাল জুমা পড়তে বলেন। তারপর ইমাম সাহেব মিম্বারে বসা অবস্থায় সানি আযানের পূর্বমুহূর্তে মসজিদে দান বাবদ আসা মুরগী, ডিম, নারিকেল ইত্যাদি নিলামে তোলা হয়।

ঐ ধরনের কর্ম মসজিদের ভিতরে করা যাবে কি না? জানালে উপকৃত হব।

Answer

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১০৭৯)

অন্য হাদীসে হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ.

অর্থাৎ তোমরা মসজিদে কাউকে বেচা-কেনা করতে দেখলে তাকে বল, আল্লাহ তোমার ব্যবসাকে অলাভজনক করুন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২১)

ইমাম মালেক রাহ. সূত্রে বর্ণিত যে, আতা ইবনুল ইয়াসার রাহ.-এর পাশ দিয়ে মসজিদে ক্রয়-বিক্রয়কারী কোনো ব্যক্তি অতিক্রম করলে তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতেন, তোমার সাথে কী আছে এবং তোমার উদ্দেশ্য কি? সে ব্যবসার উদ্দেশ্য প্রকাশ করলে তিনি তাকে বলতেন-

عَلَيْكَ بِسُوقِ الدُّنْيَا. فَإِنَّمَا هذَا سُوقُ الآخِرَةِ.

অর্থাৎ তুমি দুনিয়ার বাজারে যাও; কেননা মসজিদ তো কেবল আখেরাতের বাজার। (মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ৬০১)

উপরোক্ত হাদীস-আসারের আলোকে ফকীহগণ পণ্য নিয়ে এসে মসজিদে বেচা-কেনা করতে বারণ করেছেন। আর মসজিদে দানকৃত পণ্য বা মসজিদের মালিকানাধীন বস্তুর হুকুম একই। এছাড়া মসজিদের ভিতর মুরগী নিয়ে আসলে মসজিদ অপবিত্র হওয়ার আশংকা থাকে।

আর নামাযের পূর্বের সময়টি যিকির-আযকার এবং নামাযের জন্য বাহ্যিক ও আত্মিক প্রস্তুতির সময়। এ সময় নিলাম কাজে ব্যস্ত হওয়া খুবই অন্যায়। বিশেষত জুমার আযানের পর কেনা-বেচা করতে কুরআন মাজীদে নিষেধ করা হয়েছে। সে হুকুমেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا نُوْدِیَ لِلصَّلٰوةِ مِنْ یَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا اِلٰی ذِكْرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الْبَیْعَ  ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ.

হে মুমিনগণ!  যখন জুমার দিনে (জুমার) নামাযের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটা তোমাদের জন্য অধিক উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। [সূরা জুমুআ (৬২) : ০৯]

অতএব, আপনাদের মসজিদ কর্তৃপক্ষের এবং মুসল্লীদের জন্য জরুরি হল, মসজিদে উক্ত নিলাম বিক্রি থেকে বিরত থাকা। মসজিদের মালিকানাধীন বা দানকৃত কোনো কিছু বিক্রি করতে চাইলে জুমার পর মসজিদের বাইরে মসজিদের উঠান ইত্যাদিতে বিক্রি করবে। -তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/৩১২

হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১০৭৯)

অন্য হাদীসে হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ.

অর্থাৎ তোমরা মসজিদে কাউকে বেচা-কেনা করতে দেখলে তাকে বল, আল্লাহ তোমার ব্যবসাকে অলাভজনক করুন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২১)

ইমাম মালেক রাহ. সূত্রে বর্ণিত যে, আতা ইবনুল ইয়াসার রাহ.-এর পাশ দিয়ে মসজিদে ক্রয়-বিক্রয়কারী কোনো ব্যক্তি অতিক্রম করলে তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতেন, তোমার সাথে কী আছে এবং তোমার উদ্দেশ্য কি? সে ব্যবসার উদ্দেশ্য প্রকাশ করলে তিনি তাকে বলতেন-

عَلَيْكَ بِسُوقِ الدُّنْيَا. فَإِنَّمَا هذَا سُوقُ الآخِرَةِ.

অর্থাৎ তুমি দুনিয়ার বাজারে যাও; কেননা মসজিদ তো কেবল আখেরাতের বাজার। (মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ৬০১)

উপরোক্ত হাদীস-আসারের আলোকে ফকীহগণ পণ্য নিয়ে এসে মসজিদে বেচা-কেনা করতে বারণ করেছেন। আর মসজিদে দানকৃত পণ্য বা মসজিদের মালিকানাধীন বস্তুর হুকুম একই। এছাড়া মসজিদের ভিতর মুরগী নিয়ে আসলে মসজিদ অপবিত্র হওয়ার আশংকা থাকে।

আর নামাযের পূর্বের সময়টি যিকির-আযকার এবং নামাযের জন্য বাহ্যিক ও আত্মিক প্রস্তুতির সময়। এ সময় নিলাম কাজে ব্যস্ত হওয়া খুবই অন্যায়। বিশেষত জুমার আযানের পর কেনা-বেচা করতে কুরআন মাজীদে নিষেধ করা হয়েছে। সে হুকুমেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِذَا نُوْدِیَ لِلصَّلٰوةِ مِنْ یَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا اِلٰی ذِكْرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الْبَیْعَ  ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ.

হে মুমিনগণ!  যখন জুমার দিনে (জুমার) নামাযের জন্য আযান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর। এটা তোমাদের জন্য অধিক উত্তম, যদি তোমরা উপলব্ধি কর। [সূরা জুমুআ (৬২) : ০৯]

অতএব, আপনাদের মসজিদ কর্তৃপক্ষের এবং মুসল্লীদের জন্য জরুরি হল, মসজিদে উক্ত নিলাম বিক্রি থেকে বিরত থাকা। মসজিদের মালিকানাধীন বা দানকৃত কোনো কিছু বিক্রি করতে চাইলে জুমার পর মসজিদের বাইরে মসজিদের উঠান ইত্যাদিতে বিক্রি করবে। -তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; রদ্দুল মুহতার ২/৩১২

Sharable Link

গোলাম রব্বানী - ময়নামতি, কুমিল্লা

৪৬৪১. Question

আমাদের গ্রামে ঈদগাহ সংলগ্ন সরকারি জায়গার উপর প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয় এবং এতে দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর যাবৎ জামাতের সাথে নামায পড়া হচ্ছে এবং জুমার নামাযসহ মসজিদ কেন্দ্রিক সব ধরনের কার্যক্রমও পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু ইদানিং একটি মহল (নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে) একথা প্রচার করছে যে, ঐ জায়গাটি যেহেতু সরকারি তাই এটা মসজিদ হিসাবে গণ্য হবে না এবং এতে ইতেকাফ ও অন্যান্য আহকাম (যা মসজিদে করা জরুরি) এতে সহীহ হবে না। কারণ হিসাবে তারা বলছে, মসজিদ হওয়ার জন্য তার জায়গা ওয়াকফ করা জরুরি। আর এ জায়গা ওয়াকফ করা হয়নি।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে আমাদের জানার বিষয় হল, এ সকল লোকদের কথা কি ঠিক? এবং মসিজদ হওয়ার জন্য ওয়াকফ করা জরুরি কি না? সর্বোপরি আমাদের মসজিদটি ‘শরয়ী মসজিদ’ কি না? বরাতসহ জানালে উপকৃত হব। আল্লাহ তাআলা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মসজিদটি যদি সরকারি কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাহলে তা ‘শরয়ী মসজিদ’ হওয়ার ব্যাপারে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। আর যদি সরকারি কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া মসজিদটি নির্মাণ করা হয়ে থাকে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়ার পরও নির্মাণাধীন সময়ে বা নির্মাণ পরবর্তী এ দীর্ঘ ১৪-১৫ বছরের মধ্যে কোনো বাধা প্রদান না করে থাকে, তাহলে এ দীর্ঘ সময় তাদের চুপ থাকা ও বাধা না দেওয়া মৌনসম্মতি ও অনুমোদন বলে ধর্তব্য হবে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের মসজিদে নিয়মিত জামাতের সাথে নামায পড়া হতে থাকলে তাও ‘শরয়ী মসজিদ’ বলে গণ্য হয়। এবং তাতে ইতিকাফসহ মসজিদ সংক্রান্ত সব ধরনের বিধি-বিধান কার্যকর হবে।

তবে লক্ষণীয় যে, সরকারী কর্তৃপক্ষ থেকে যথাসম্ভব লিখিতভাবে মসজিদের স্থায়ী অনুমোদন নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা কর্তব্য। যেন ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়। কিংবা অন্য কোনো মহল কোনো সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯০; ফাতহুল কাদীর ২/৪৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮; ইসলাম কা নেযামে আরাযী, মুফতী মুহাম্মাদ শাফী রাহ. পৃ. ১৫৮

Sharable Link

হাফেজ জুবাইর আহমদ - চাটখিল, নোয়াখালী

৪৬৪২. Question

আমাদের গ্রামের মসজিদে কিছু মুসল্লী গরমের মৌসুমে যোহরের নামায পড়ে মসজিদে ঘুমিয়ে পড়েন। কারণ এ সময়ে গ্রামের মানুষ সাধারণত কাজকর্ম থেকে এসে নামায পড়ে। তাই শারীরিকভাবে খুব ক্লান্ত থাকে। তাদেরকে নিষেধও করা যায় না।

এখন মুহতারামের কাছে জানতে চাই, এভাবে মসজিদে শুয়ে পড়ার অবকাশ আছে কি?

Answer

মুসল্লীদের নামায পড়তে এসে ক্লান্তির কারণে মসজিদে শোয়া নাজায়েয নয়। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনো নামাযী বা ইবাদতকারীর অসুবিধা না হয়। এছাড়া মসজিদ ইবাদতের জায়গা, ঘুমানোর জায়গা নয়। তাই মসজিদকে নিয়মিত শোওয়ার স্থান বানানো যাবে না।

-জামে তিরমিযী, হাদীস ৩২১; উমদাতুল কারী ৪/১৯৮; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৩৬৯; শরহুল মুনয়া পৃ. ৬১২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬২

Sharable Link

মুয়াজ নূর - মোমেনশাহী

৪৬৪৩. Question

শহরে বাসা-বাড়ি পরিবর্তন করার জন্য বিশেষ লেবার পাওয়া যায়। যারা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আসবাপত্র স্থানান্তর করে  দেয়। তাদের হাতে কোনো জিনিস ভেঙে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাদের থেকে কি তার ক্ষতিপূরণ নেওয়া যাবে?

 

Answer

তারা ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো বস্তু নষ্ট করলে কিংবা তাদের কোনো অবহেলা বা ত্রুটির কারণে নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ নেওয়া বৈধ হবে। কিন্তু আসবাবপত্র নষ্ট হওয়ার পিছনে যদি তাদের কোনো ত্রুটি বা অবহেলা না থাকে; বরং স্বাভাবিক নিয়মে সতর্ক হয়ে কাজ করার পরও যদি কোনো কিছু নষ্ট হয়ে যায় তবে তাদের থেকে এর ক্ষতিপূরণ নেওয়া জায়েয হবে না।

-আলইখতিয়ার ২/১৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/২৮২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৫০০; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দা ৬১০

Sharable Link

আবু তালহা - সদর, যশোর

৪৬৪৪. Question

আমি কয়েকটি কবুতর পুষি। মাঝেমধ্যে অচেনা কবুতর এসে আমার কবুতরের সাথে জোড়া বাঁধে এবং ডিম দেয়। সে ডিম থেকে বাচ্চা হয়। এখন ঐ অচেনা কবুতর এবং ডিম ও বাচ্চার হুকুম কী হবে?

Answer

অন্য কারো কবুতর চলে আসলে কবুতরটিকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়ার যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে। আর যদি মালিকের সন্ধান পাওয়া না যায় এবং কবুতরটি আপনার খাঁচায় ডিম পাড়ে ও তা থেকে বাচ্চা হয় সেক্ষেত্রে এই ডিম ও বাচ্চার মালিক কবুতরের উক্ত মালিকই হবে। তাই মালিকের সন্ধান পাওয়া গেলে ডিম ও বাচ্চাসহ কবুতরটি তাকে দিয়ে দিতে হবে। আর সন্ধান পাওয়া না গেলে সদকা করে দিবেন। অবশ্য এক্ষেত্রে আপনি যদি গরীব হন তাহলে আপনি নিজেও তা ভোগ করতে পারবেন।

-আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪২০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৪৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৪

Sharable Link

লাবীব আবদুল্লাহ - সাভার, ঢাকা

৪৬৪৫. Question

আমার ফুফাতো ভাই একটি দোকান দিয়েছে। সে এতে ৬ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। কিছুদিন পর তার টাকার প্রয়োজন হলে সে আমার কাছে ঋণ চায়। আমি তাকে ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে আলোচনাক্রমে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ করি। বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমাণ ছিল ৪ লক্ষ। এক্ষেত্রে আমাদের মাঝে এভাবে চুক্তি হয় যে, ব্যবসা সে দেখাশোনা করবে। আর দোকানের সব খরচ বাদ দিয়ে যা লাভ হবে তা দু’জনের মাঝে অর্ধার্ধি হারে বণ্টন হবে। আর লোকসান হলে উভয়ে মূলধন অনুপাতে বহন করবে।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, আমাদের উক্ত চুক্তিটি শরীয়তসম্মত হয়েছে কি না? দয়া করে জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পুঁজি কম। যে ব্যবসা পরিচালনা করবে এবং শ্রম দিবে তার পুঁজি বেশি। এক্ষেত্রে অর্ধার্ধি হারে লাভ বণ্টনের চুক্তি সহীহ নয়। কোনো ব্যবসায় শ্রম না দিয়ে কেবল মূলধন বিনিয়োগ করে মূলধনের আনুপাতিক হারের চেয়ে বেশি লভ্যাংশ নেওয়া জায়েয নয়।

অতএব, আপনার জন্য বিনিয়োগকৃত মূলধনের আনুপাতিক হারে সর্বোচ্চ ৪০% লভ্যাংশ গ্রহণ করা বৈধ হবে। এর অতিরিক্ত নেওয়া যাবে না। তাই বৈধভাবে কারবার করতে চাইলে চুক্তিটি সংশোধন করে নিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, কোনো কারবার শুরু করার আগে কারবারের সাথে সংশ্লিষ্ট জায়েয-নাজায়েয বিষয়ক অনেক মাসআলা রয়েছে। তাই এ ধরনের কারবার শুরু করার পূর্বে বিষয়গুলো বিজ্ঞ কোনো আলেম থেকে জেনে নেওয়া কর্তব্য।

-কিতাবুল আছল ৪/৫২; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৫৮; আলইনায়াহ ৫/৩৯৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৫; দুরারুল হুক্কাম ৩/৩৯২

Sharable Link

ওমর ফারুক - মধ্যবাড্ডা, ঢাকা

৪৬৪৬. Question

আমার কাকা বিদেশ থাকেন। তিনি টাকা-পয়সা আমার ব্যাংক একাউন্টে পাঠান। তিনি এ টাকা আমার একাউন্টে আমানত হিসাবে রাখেন। ঐ টাকা আমার একাউন্টে দীর্ঘদিন থেকে যায়। ফলে আমি কাকার অনুমতি নিয়ে ঐ টাকা থেকে দুই লক্ষ টাকা আমার ব্যবসায় খরচ করি। এতে আমার কিছু লাভও হয়। কিন্তু প্রায় দুই মাস আগে আমার ব্যবসায় বিপুল পরিমাণে লস হলে মূলধনেরও অনেক ক্ষতি হয়। যার ফলে অনেকদিন ব্যবসা বন্ধ থাকে।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, আমার কাকা যেহেতু ঐ টাকা আমার একাউন্টে আমানত হিসাবে রেখেছেন এবং আমি তার অনুমতি নিয়েই তা ব্যবসায় খরচ করেছি। আমাকে কি ঐ টাকা কাকাকে ফিরিয়ে দিতে হবে? জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাকার পূর্ণ টাকা তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। কেননা আপনার কাকার ঐ টাকা প্রথমে আমানত হিসাবে থাকলেও পরবর্তীতে যেহেতু তার অনুমতিক্রমে আপনি তা নিজ ব্যবসায় লাগিয়েছেন, তাই ঐ টাকা আপনার জিম্মায় করজ হয়ে গেছে। ফলে ব্যবসায় লাভ-লোকসান যাই হোক, আপনাকে তার টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৬/৫৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৮৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যা ৩/১৩; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৭৭; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/১৪৪

Sharable Link

মাওলানা আবদুল জাব্বার - দেবিদ্বার, কুমিল্লা

৪৬৪৭. Question

আমার এক আত্মীয় কিছুদিন আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল যে, হুযুর আমি ব্যাংকে ৫ লক্ষ টাকা রেখেছি। এখন তা বেড়ে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হয়েছে। আমি এখন এইসব টাকা কীভাবে উঠাতে পারি? উদ্দেশ্য ছিল বৈধ কোনো পথ বলে দেওয়া। উত্তরে সে আলেম তাকে বললেন, আপনি ব্যাংক থেকে ৪ লক্ষ টাকা উঠাবেন। আর বাকি ১ লক্ষ টাকার পরিবর্তে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার যে ডলার হয় তা উঠাবেন তাহলে জায়েয হয়ে যাবে। অতপর সে আলেম তার কথার পক্ষে দলিল হিসেবে বললেন, টাকা এবং ডলারের মাঝে কমবেশ করা জায়েয। যেমন সোনা-রূপার মাঝে কমবেশ করা জায়েয।

এখন আমার প্রশ্ন হল, উক্ত আলেমের কথা ঠিক কি না? এবং এভাবে টাকার পরিবর্তে ডলার উঠালে বৈধ হবে কি না?

Answer

প্রশ্নের বিবরণ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, উক্ত পদ্ধতিটি অবলম্বন করা হয়েছে জমা টাকার উপর অতিরিক্ত যে ৮০ হাজার টাকা সুদ এসেছে তা বৈধ হিসাবে গ্রহণ করার জন্য। এক্ষেত্রে ডলারদাতা এবং গ্রহীতা উভয়ে ভালো করেই জানে যে, প্রদত্ত ডলার ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার পরিবর্তে। শুধু ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নয়। সুতরাং যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটেও থাকে, তবে ১ লক্ষ টাকার  সমপরিমাণ ডলার আপনার আত্মীয়ের জন্য হালাল আর ৮০ হাজার টাকার সমপরিমাণ ডলার হারাম। জমা টাকার অতিরিক্ত গ্রহণ করাই সুদ। চাই অতিরিক্ত অংশের টাকা সরাসরি গ্রহণ করা হোক বা ডলারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হোক।

প্রকাশ থাকে যে, ‘সুদ’ হল নিকৃষ্টতম হারাম। আর এর চেয়ে আরো মারাত্মক ও জঘন্যতম অপরাধ হল, হীলাবাহানা ও ছুতার মাধ্যমে এ নিকৃষ্টতম হারামকে বৈধ মনে করে গ্রহণ করা। অতএব সুদকে হারাম জেনে সর্বাবস্থায় তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

উল্লেখ্য যে, প্রশ্নের বর্ণনায় মনে হচ্ছে ঐ মাসআলাদাতা ব্যক্তির সাধারণ জ্ঞানও নাই। কারণ সাধারণত ব্যাংকগুলোতে এভাবে নিজ একাউন্টের টাকার বদলে ডলার গ্রহণ করার নিয়ম নেই।

-ইলাউস সুনান ১৪/৫১২; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৭

Sharable Link

ডা. মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ময়মনসিংহ

৪৬৪৮. Question

কোনো ব্যক্তি ব্যাংকে তার জমাকৃত টাকার উপর বছরে ২০০০ টাকা সুদ/মুনাফা পেল। ব্যাংক তার বিভিন্ন চার্জ বাবদ বছরে ১০০০ টাকা কেটে রাখল। এখন গরীবদেরকে দেওয়ার সময় মোট ২০০০ টাকা দিতে হবে নাকি ১০০০ টাকা দিতে হবে।

Answer

ব্যাংকে যে সুদ/মুনাফা জমা হয় সে টাকা থেকে তৎক্ষণাৎ ১০% বা ১৫% সরকারি কর হিসাবে কেটে নেওয়া হয়। কর কেটে নেওয়ার পর যে নীট সুদ/মুনাফা একাউন্ট হোল্ডারদের একাউন্টে জমা থাকবে তার সবটুকুই সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের দিয়ে দিতে হবে। অন্যান্য চার্জ বাবদ ব্যাংক যে টাকা কেটে রাখে অথবা সরকার এক্সেস ডিউটি বাবদ আলাদাভাবে যে টাকা একাউন্ট থেকে নিয়ে থাকে তা সুদের টাকা দ্বারা আদায় করা যাবে না; বরং তা একাউন্ট হোল্ডারদের জমাকৃত মূল টাকা থেকেই নেওয়া হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। কেননা ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডারদেরকে বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের বিনিময় হিসাবেই বিভিন্ন চার্জ নিয়ে থাকে। তাই সুদ থেকে ব্যাংকের চার্জ  আদায় করা সুদ দ্বারা ফায়দা গ্রহণেরই অন্তর্ভুক্ত। তাই তা জায়েয হবে না।

-সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৫/৩৫০; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৮

Sharable Link

ফয়সাল আহমাদ - কানাইঘাট, সিলেট

৪৬৪৯. Question

আমি বিদেশ থাকা অবস্থায় আমার ভাগিনাকে মুযারাবা ব্যবসা করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। চুক্তি হয়েছিল যে ৬০% আমি ও ৪০% লভ্যাংশ সে পাবে। কিছুদিন পর ব্যবসায় আরো ১ লক্ষ টাকার প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু আমি টাকা দিতে পারছিলাম না। সে আমার সাথে পরামর্শ করে নিজের পক্ষ থেকে একলক্ষ টাকা ব্যবসায় লাগায়। জানার বিষয় হল, এখন আমাদের হিসাবের পদ্ধতিটা কী হবে? তার বিনিয়োগকৃত টাকার জন্য কি তাকে অতিরিক্ত মুনাফা দিতে হবে? নাকি পূর্ব নির্ধারিত হারেই লভ্যাংশ বণ্টন করা যাবে।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাগিনা নিজ থেকে যে পরিমাণ টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে সে টাকার লাভ এককভাবে সে পাবে। আর আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থের লভ্যাংশ দু’জনের পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত হারে বণ্টন করে  নিবেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/১৩৬; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ ১৪১৭; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/৩৪৯

Sharable Link

আহমদ শাহজাদ - সিলেট

৪৬৫০. Question

আমার মামার বড় একটি লাইব্রেরী রয়েছে। কিছুদিন আগে তিনি বিদেশ চলে যান। যাওয়ার সময় আমাকে লাইব্রেরীর দায়িত্বশীল বানিয়ে যান। তার সাথে আমার এভাবে চুক্তি হয় যে, লাইব্রেরী দিয়ে মুযারাবার ভিত্তিতে আমি স্বাধীনভাবে ব্যবসা করব। অর্জিত লভ্যাংশের ৪০% আমি ও ৬০% তিনি পাবেন। বিষয়টি শুনে আমার এক পরিচিত আলেম বললেন, চলমান  ব্যবসা দিয়ে এভাবে কারবার করা সহীহ নয়। মুহতারামের কাছে আমার জানার বিষয় হল, তার এ কথাটি কি ঠিক? বাস্তবে এমন হলে এখন আমাদের করণীয় কী?

Answer

মুযারাবা ব্যবসা নগদ টাকা-পয়সা দ্বারা করাই নিয়ম। পণ্য সামগ্রী বা চলমান ব্যবসা দ্বারা মুযারাবা চুক্তি করা ঠিক নয়। অবশ্য বিশেষ প্রয়োজনে কেউ এমনটি করতে চাইলে কোনো কোনো ফকীহের মতে তা সহীহ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে দোকানে যা মালামাল রয়েছে তার যথাযথ হিসাব করে এর পাইকারী ন্যায্যমূল্য ঠিক করতে হবে। এরপর সে পরিমাণ টাকা ব্যবসার মূলধন হিসাবে গণ্য করবে।

-কিতাবুল আছল ৪/১৩৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২২/৩৩; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৭/১২৩; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৪৯৫

Sharable Link

আলহাজ্ব কাফিলুদ্দিন - চান্দিনা, কুমিল্লা

৪৬৫১. Question

মুহতারাম, আমি আমার দুই তলা বাড়ীর ছাদে সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য একটি খুঁটি তৈরি করি। কিছুদিন পূর্বে একটি কোম্পানির সাথে তাতে সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য দুই বছরের ভাড়া চুক্তি হয়। এরপর প্রায় দেড় বছর কেটে গেছে। এরি মাঝে এ মাসের শুরুতে প্রচন্ড বাতাসে সেটি ভেঙে যায়। এখন কোম্পানি আমাকে বলছে এটি নতুন করে তৈরি করে দিতে। কিন্তু আমি চাচ্ছি,  তাদেরকে বাকি কয়েক মাসের টাকা ফেরত দিয়ে খুঁটিটি এখন  আর তৈরি না করতে। এখন আমার কী করণীয়? আমি কি খুঁটিটি তৈরি করে দিতে বাধ্য।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু উক্ত কোম্পানির সাথে দুই বছর চুক্তি করেছেন, তাই আপনার জন্য খুঁটিটি নতুন করে নির্মাণ করে দিয়ে চুক্তি পূর্ণ করা উত্তম হবে। অবশ্য কোনো ওজরের কারণে যদি আপনি তা নির্মাণ করতে না চান, সেক্ষেত্রে ভাড়াগ্রহীতা আপনাকে তা নির্মাণে বাধ্য করতে পারবে না; বরং আপনি চাইলে ভাড়া চুক্তিটি বাতিল করে দিয়ে বাকি মাসের ভাড়া (অগ্রিম নিয়ে থাকলে) ফেরত দিতে পারবেন।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৬৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৫

Sharable Link

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - উত্তরা, ঢাকা

৪৬৫২. Question

আমি একটি কোম্পানিতে ১৫ বছর যাবৎ চাকরি করি। কয়েক মাস পূর্বে কোম্পানির একটা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য আমি একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বড় অংকের ঘুষ নিয়ে প্রজেক্টটি তাদেরকে দেই। এখন আমি ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত। আমি এ গুনাহ থেকে মুক্ত হতে চাচ্ছি। আমার সম্পদকে হারাম থেকে পবিত্র করতে চাচ্ছি। কিন্তু কোম্পানিকে এ টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এতে আইনি জটিলতাসহ চাকরি নিয়ে সমস্যার আশংকা আছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকেও ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

বিষয়টি নিয়ে আমি খুব পেরেশানিতে আছি। আমার সম্পদকে কীভাবে হারাম থেকে পবিত্র করতে পারি? দ্রুত সমাধান জানানোর অনুরোধ রইল।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি ঘুষ নিয়েছেন সে প্রতিষ্ঠানকেই টাকাগুলো ফেরত দিতে হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি তাদের নিকট ফেরত দেওয়া সম্ভব না হলে ভিন্ন কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন ঐ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা করে দিতে পারেন, বা প্রেরকের নাম উল্লেখ না করে খামে ভরে মালিক পক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিতে পারেন কিংবা অন্য কোনো পদ্ধতিও অবলম্বন করা যেতে পারে। কেননা মালিক জানা থাকলে তাকেই দিতে হবে। এক্ষেত্রে সদকা করা যথেষ্ট নয়।

-আলবাহরুর রায়েক ৬/২৬২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪২৩

Sharable Link