হাজেরা খাতুন - লাকসাম, কুমিল্লা

২৩৪৬. Question

আমরা জানি, নামাযে মহিলাদের হাতের তালু ও পিঠ কোনোটিই সতরের অন্তর্ভুক্ত নয়। এজন্য অনেক সময় হাত অনাবৃত রেখেও নামায পড়তাম। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে আমাদের গ্রামের এক মহিলা বলল যে, হাতের পিঠ নাকি সতর। তার কথা কি ঠিক? এব্যাপারে সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী মহিলাদের হাতের তালু ও পিঠ নামাযে ঢেকে রাখা জরুরি নয়। বরং খোলা রাখার অবকাশ আছে। সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত মহিলার কথাটি সঠিক নয়।

-আসসিআয়াহ ২/৭২; শরহুল মুনইয়া ২১১; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৯-২৭০; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ১৩১; মিনহাতুল খালেক ১/২৬৯-২৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৫-৪০৬

Sharable Link

আবদুল গাফফার - নড়িয়া, শরীয়তপুর

২৩৪৭. Question

কোনো মাসবুক যদি ইমাম সাহেবকে রুকুতে পায় অতপর মাসবুক ইমামের সাথে মাত্র একবার রুকুর তাসবীহ পড়তে পেরেছে, দ্বিতীয় তাসবীহ শেষ করার আগেই ইমাম সাহেব দাঁড়িয়ে গেছেন তাহলে মাসবুকের নামাযের হুকুম কি?


Answer

ইমামকে স্বল্প সময়ের জন্য রুকুতে পেলেই রাকাত পেয়েছে বলে ধর্তব্য হয়। ইমামের সাথে রুকুর তাসবীহ পড়া জরুরি নয়; তবে এক্ষেত্রে ইমামকে রুকু অবস্থায় পাওয়ার পর ইমাম উঠে গেলেও সে একবার তাসবীহ পড়ে উঠবে। কেননা রুকুতে এক তাসবীহ পরিমাণ বিলম্ব করা ওয়াজিব। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি ঐ রাকাত পেয়েছে এবং তার নামায সহীহভাবেই আদায় হয়েছে।

হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, যে ব্যক্তি ইমামকে রুকু অবস্থায় পেয়ে ইমাম (রুকু থেকে) মাথা উঠানোর পূর্বে রুকুতে শামিল হল সে (ঐ) রাকাত পেয়ে গেল।

-সুনানে কুবরা, বায়হাকী ২/৯০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২০; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/২৭৯; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ২৪৭; রদ্দুল মুহতার ২/৬১

Sharable Link

মুহাম্মাদ হামীদুল্লাহ - মাধবপুর, হবিগঞ্জ

২৩৪৮. Question

 

ঈদের খুতবার সময় কথাবার্তা বলা কি জায়েয আছে? না এক্ষেত্রে চুপ থেকে খুতবা শ্রবণ করা জরুরি?


 

Answer

ঈদের খুতবাও চুপ থেকে শ্রবণ করা ওয়াজিব। এ সময় কোনো কথাবার্তা বলা নাজায়েয। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, চার ক্ষেত্রে চুপ থাকা ওয়াজিব : জুমআ, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা ও সালাতুল ইসতিসকার (খুতবার) সময়।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/২৮২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৪/২১১; ইলাউস সুনান ৮/১৪৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৫৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ২৮২

Sharable Link

মুহাম্মাদ জুনায়েদ - শরীফপুর, শহীদ বাড়িয়া

২৩৪৯. Question

আমার চাচা ঢাকায় চাকরি করতেন। কিছুদিন পূর্বে তিনি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। ফলে সেখানে একবার জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নামাযে চাচার ছেলেরা উপস্থিত ছিল। গ্রামের বাড়িতে লাশ আনার পর তার অন্যান্য আত্মীয়রা দ্বিতীয়বার জানাযার নামায আদায় করে। জানার বিষয় হল, তাদের জন্য দ্বিতীয়বার জানাযা আদায় করা জায়েয হয়েছে কি?


Answer

যে কোনো মাইয়েতের জন্য একবার জানাযা পড়াই শরীয়তের হুকুম। একাধিকবার জানাযা আদায় করা শরীয়তসম্মত নয়। অবশ্য কখনো যদি মৃতের অভিভাবকদের অনুপস্থিতিতে তাদের অনুমতি ছাড়া জানাযা হয়ে যায় তাহলে তাদের জন্য দ্বিতীয়বার জানাযা পড়ার অনুমতি আছে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রেও প্রথম জামাতে যেহেতু মৃতের ছেলেরা শরিক ছিল তাই আত্মীয়দের জন্য দ্বিতীয়বার জানাযার নামায পড়া ঠিক হয়নি। সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীদের বক্তব্য ও আমল দ্বারা বিষয়টি প্রমানিত। নাফে রা. থেকে বর্ণিত, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. যদি জানাযার নামায হয়ে যাওয়ার পর উপস্থিত হতেন তাহলে (মৃতের জন্য) দুআ করেই চলে আসতেন। দ্বিতীয়বার জানাযা পড়তেন না। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/৫১৯)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবরাহীম রাহ. বলেন, এক মৃত ব্যক্তির দুবার জানাযা পড়া যায় না। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৭/৪২০)

অপর বর্ণনায় এসেছে, বিখ্যাত তাবেয়ী  হাসান বসরী রাহ. যদি কখনো জানাযার নামায না পেতেন তাহলে মৃতের জন্য কেবল ইস্তিগফার করতেন। (প্রাগুক্ত)

 সুতরাং যে কোনো মাইয়্যেতের জানাযা কেবল একবারই পড়া যাবে। আর যারা জানাযা পায়নি তারা সাহাবায়ে কেরামের নিয়ম অনুযায়ী মৃতের জন্য দুআ ও ইস্তিগফার করবে। এটিই শরীয়তের শিক্ষা।

-ইলাউস সুনান ৮/২৮৮; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/২১৮; আযযখীরা ২/৪৭২; কিতাবুল উম্ম ১/৩১৪; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩; রদ্দুল মুহতার ২/২২৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ সজিব মিয়া - আহরন্দ, শহীদ বাড়িয়া

২৩৫০. Question

আমাদের এলাকায় একটি প্রচলন আছে, মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আযান দেওয়া হয়। অনেকে এর পিছনে এই যুক্তি পেশ করে যে, আযান শুনলে শয়তান পলায়ন করে তাই মুনকার-নাকিরের প্রশ্নের সময় শয়তান যাতে মৃত ব্যক্তিকে কুমন্ত্রণা না দিতে পারে সেজন্য আযান দিয়ে শয়তানকে বিতাড়িত করা হয়। জানার বিষয় হল, এই প্রচলনটি কি শরীয়তসম্মত? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

দাফনের পর কবরে আযান দেওয়ার প্রচলনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীন কারো থেকেই এ ধরনের আমল বা বক্তব্য প্রমাণিত নয়। সুতরাং এ  কাজটি কু-রসম ও বিদআত। এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এই দ্বীনের মাঝে কোনো নতুন বিষয় আবিষ্কার করবে, যা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয়- তা প্রত্যাখ্যাত। (সহীহ বুখারী ১/৩৭১)

উল্লেখ্য যে, কোনো আমলের জন্য মনগড়া যুক্তি পেশ করা তা বৈধ হওয়া প্রমাণ করে না; বরং কোনো আমল প্রমাণের জন্য শরীয়তের যথাযথ দলীল-প্রমাণ থাকা জরুরি।

-সহীহ বুখারী ১/৩৭১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৮৫, ২/২৩৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু রায়হান - বগুড়া

২৩৫১. Question

মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার পর চার কোণে চার জন খেজুর গাছের ডাল বা অন্য গাছের ডাল গেড়ে দেওয়া শরীয়তসম্মত কি না?


Answer

কবরে খেজুর গাছের ডাল পুঁতে দেওয়া রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমল দ্বারা প্রমাণিত। বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরে আযাব হচ্ছে জানতে পেরে একটি খেজুর গাছের ডালকে দুই টুকরা করে কবর দুটিতে গেড়ে দেন। (সহীহ বুখারী ১/১৮২)

অন্য বর্ণনায় আছে, সাহাবী বুরাইদা আসলামী রা. মৃত্যুর পূর্বে অসিয়ত করে যান, যেন তার কবরে খেজুর গাছের দুটি ডাল গেড়ে দেওয়া হয়। (সহীহ বুখারী ১/১৮১)

এসব বর্ণনা দ্বারা কবরে খেজুর বা অন্য কোনো গাছের ডাল গেড়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। তাই কেউ চাইলে মৃত ব্যক্তিকে মাটি দেওয়ার পর কবরের উপর এক দুটি ডাল গেড়ে দিতে পারে। কিন্তু কবরের চার কোণায় ডাল দেওয়া আবার চারজন ব্যক্তি দ্বারা একাজ করানো দলীলবিহীন অতিরঞ্জিত কাজ। সুতরাং এ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।

প্রকাশ থাকে যে, হাদীস ও আছারে কবরে যা কিছু করার কথা বলা হয়েছে তাই করা যাবে। নিজ থেকে এর অতিরঞ্জণ কোনো কিছু করাই বিদআতের শামিল।

-সহীহ বুখারী ১/১৮১; ইলাউস সুনান ৮/৩৪৪; তুহফাতুল মুহতাজ ৪/১৯০; ফাতহুল কাদীর ২/১০২; উমদাতুল কারী ৩/১২১; হাশিয়াতুস সারী ১/৩১১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৪; রদ্দুল মুহতার ২/২৪৫

Sharable Link

ড. মুহাম্মাদ আবুল বাশার - খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

২৩৫২. Question

কোনো মহিলা উমরার ইহরাম বেঁধে মক্কায় গিয়ে এখনো তাওয়াফ করেনি। ইতিমধ্যে খাওয়ার পর হাতের তেল পরিষ্কার করার জন্য এবং প্লেট ইত্যাদি ধোয়ার জন্য একবার সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করেছে। এখন  তার জন্য কি দম দিতে হবে?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধিযুক্ত সাবান দ্বারা হাত ধোয়ার কারণে ঐ মহিলার উপর সদকা ওয়াজিব হয়েছে, দম নয়। আর এ সদকার পরিমাণ হল একটি সদকাতুল ফিতর সমপরিমাণ মূল্য।

-মানাসিক, মোল্লা আলী ৪৫০, ৪৫৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৫২; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪০; যুবদাতুল মানাসিক ৩৫৭; মুয়াল্লিমুল হুজ্জাজ ২৩১

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাঈদুর রহমান - হবিগঞ্জ, সিলেট

২৩৫৩. Question

এক ব্যক্তি তামাত্তু হজ্বের ইহরাম করে। সে উমরা করে ফেলেছে, এখন সে হজ্ব আদায় করবে। তার ইচ্ছা হল, শুরুতেই একটি নফল তাওয়াফ করে হজ্বের সাঈ আদায় করে নিবে। এখন জানার বিষয় হল, সায়ীটি আদায় করার পূর্বে কি হজ্বের ইহরাম করতে হবে, না হজ্বের ইহরাম করার পূর্বেই সাঈটি আদায় করে নিতে পারবে? জানালে উপকৃত হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজ্বের ইহরামের পরেই সায়ী করতে হবে। কেননা, তামাত্তু হজ্বকারী আরাফায় অবস্থানের আগে হজ্বের সাঈ করতে চাইলে শর্ত হল, প্রথমে হজ্বের ইহরাম করে নিতে হবে। অতপর নফল তাওয়াফ করে সাঈ করবে। হজ্বের ইহরাম না করে সাঈ করলে তা আদায় হবে না।

-আলবাহরু রায়েক ২/৩৬৩; গুনইয়াতুন নাসিক ১৩২; মানাসিক ১৭৪; যুবদাতুল মানাসিক ১৪৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবছি - কিশোরগঞ্জ

২৩৫৪. Question

 

জনৈক ব্যক্তি আইয়ামে নহরের শেস দিন তাওয়াফে যিয়ারতের ছয় চক্কর করার পর সূর্য অস্তমিত হয়ে যাওয়ায় সপ্তম চক্করটি সে সূর্যাস্তের পর সম্পন্ন করে। জানার বিষয় হল, এ কারণে তাকে দম দিতে হবে কি না?


 

Answer

 

না। দম দিতে হবে না। তবে তার উপর একটি সদকা ওয়াজিব। অর্থাৎ একটি সদকাতুল ফিতরের সমপরিমাণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। 

প্রকাশ থাকে যে, এ সদকা হারামের বাইরের এলাকায় যেমন এদেশের মিসকীনদেরও দেওয়া যাবে। তবে হারামের মিসকীনদেরকে দেওয়া উত্তম।

 

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৩; মানাসিক ৩৯১; আলমাসালেক ১/৮৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬০৮; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ হামীদুল্লাহ - মিরপুর, ঢাকা

২৩৫৫. Question

জনৈকা মহিলা ঋতুস্রাব অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত ও সাঈ করে ফেলে। অতপর আইয়ামে নহরের ভিতরে তিনি ঋতুস্রাব থেকে পবিত্র হন। জানার বিষয় হল, এখন তাকে তাওয়াফে যিয়ারত ও সাঈ উভয়টি পুনরায় করতে হবে না শুধু তাওয়াফে যিয়ারত করলেই যথেষ্ট হবে?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলাকে শুধু তাওয়াফে যিয়ারত করতে হবে। সাঈ পুনরায় করা জরুরি নয়। তবে এ বিষয়ে যেহেতু মতানৈক্য আছে তাই সম্ভব হলে সাঈও পুনরায় করে নেওয়া ভালো।

-গুনইয়াতুন নাসিক ২৭৩; যুবদাতুল মানাসিক ৩৭১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫১; আলবাহরুল আমীক ২/১১২৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম - বগুড়া

২৩৫৬. Question

জনৈক ব্যক্তি তাওয়াফের মধ্যবর্তী এক চক্করে ইসতিলাম করা ছেড়ে দেয়। জানার বিষয় হল, তার তাওয়াফ সহীহ হয়েছে কি না? সহীহ হলেও তার উপর কোনো দম বা সদকা ওয়াজিব হয়েছে কি?


Answer

ওই ব্যক্তির তাওয়াফ আদায় হয়ে গেছে। দম বা সদকা কিছুই ওয়াজিব হয়নি। কারণ তাওয়াফের শুরু এবং শেষে ইসতিলাম করা সুন্নত। আর মধ্যবর্তী চক্করসমূহের শুরুতে ইসতিলাম মুস্তাহাব। মুস্তাহাব ছেড়ে দেওয়ার কারণে দম বা সদকা কোনো কিছু ওয়াজিব হয় না।

-গুনইয়াতুন নাসিক ১১৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৯৬; মানাসিক ১৬৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবু নোমান - খিলপাড়া, চৌয়ারা, কুমিল্লা

২৩৫৭. Question

এ বছর আমরা একটি গরু কুরবানী করেছি। যবাইয়ের জন্য যখন শোয়ানো হল তখন যবাইয়ের পূর্ব মুহূর্তে গরুটি লাফিয়ে উঠে। ফলে ছুরির আঘাতে গরুটির একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। উক্ত অবস্থায় আমরা গরুটি যবাই করেছি। জানতে চাই, এর দ্বারা আমাদের কুরবানী আদায় হয়েছে কি?


Answer

হ্যাঁ, গরুটি দ্বারা আপনাদের কুরবানী আদায় হয়ে গেছে। কারণ যবাইয়ের সময় ছুরির আঘাত বা অন্য কোনোভাবে পশুর অঙ্গহানি হলেও তাতে কুরবানীর কোনো ক্ষতি হয় না। বরং এ পশু দ্বারা কুরবানী যথাযথভাবে আদায় হয়ে যায়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৪৮৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩২; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাকিবুল ইসলাম - রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

২৩৫৮. Question

জনাব আবদুল করীম সাহেবের উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। কিন্তু তিনি এ বছর কোনো ব্যস্ততার কারণে কুরবানীর পশু ক্রয় করতে পারেননি। এমনকি কুরবানীর তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। আমার জানার বিষয় হল, এখন তার করণীয় কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগল বা তার মূল্য সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪২৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাকিবুল ইসলাম - রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

২৩৫৯. Question

জনৈক গরিব ব্যক্তি মান্নত করেছে যে, আমি একটি পশু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী করব এবং সে কুরবানী করার জন্য একটি গাভী ক্রয় করে। কিন্তু কোনো কারণে সে তা ঐ বছর কুরবানী করতে পারেনি; বরং তা তার কাছেই রয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তা থেকে কয়েকটি বাচ্চা হয় এবং সেগুলো বড় হয়ে যায়। আমার প্রশ্ন হল, উল্লেখিত অবস্থায় তার করণীয় কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির উপর ক্রয়কৃত ঐ গাভিটি এবং তার বাচ্চাগুলো জীবিত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৭/৩৪২; হেদায়া, ফাতহুল কাদীর ৮/৪৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২২

Sharable Link

মুহাম্মাদ সালমান - গাবতলী, ঢাকা

২৩৬০. Question

রমযান মাসে মহিলারা হায়েয-নেফাস অবস্থায় পানাহার ত্যাগ করে রোযাদারের মতো না খেয়ে থাকবে কি? কেউ কেউ বলেন, এভাবে রোযাদারের সাদৃশ্য অবলম্বন করলে নাকি গুনাহ হবে। এ ব্যাপারে সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

রমযান মাসে হায়েয-নেফাস অবস্থায় মহিলারা পানাহার থেকে বিরত থাকবে না। তবে লোকচক্ষুর আড়ালে পানাহার করবে। রোযাদারের সাদৃশ্য অবলম্বন করবে না। রোযাদারের মতো পানাহার বর্জন করাকে শরীয়তের বিধান মনে করলে গুনাহ হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২০৫; আলকিফায়া ২/২৯০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আসআদ - সিলেট

২৩৬১. Question

মেহরাব কি মসজিদের অন্তর্ভুক্ত? এক ব্যক্তি বলছেন, মেহরাব মসজিদের অংশ নয়। তাই এতেকাফকারী এখানে যেতে পারবে না। গেলে এতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। সঠিক বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

মেহরাব মসজিদের অন্তর্ভুক্ত। মসজিদের অংশ না হওয়ার কথা ঠিক নয়। এটা যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা তা ফিকহের নির্ভরযোগ্য কিতাবে উল্লেখ হয়েছে। সুতরাং এতেকাফকারী মেহরাবেও যেতে পারবে। এ কারণে তার এতেকাফ নষ্ট হবে না।

-শরহুল মুনইয়া ৩৬১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৬; রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৬; জামিউর রুমূয ১/১৯৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবছি - কিশোরগঞ্জ

২৩৬২. Question

আমাদের এলাকায় বেশ কয়েকটি হিন্দু পরিবার রয়েছে, যাদের অধিকাংশই নিম্নবিত্তের। তাই অভাব-অনটনের কারণে তারা অনেক সময় মানুষের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয়। জানার বিষয় হল, তাদেরকে যাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে কি?


Answer

যাকাত কোনো অমুসলিমকে দেওয়া জায়েয নয়। তবে নফল সদকা অমুসলিমকেও দেওয়া যায়। সুতরাং উল্লেখিত হিন্দুদেরকে আপনারা নফল সদকার অর্থ প্রদান করতে পারেন।

বিখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, তাদেরকে (অমুসলিমদেরকে) যাকাত প্রদান করো না, নফল সদকা প্রদান কর।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৫১৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪২

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফয়সাল - লালবাগ

২৩৬৩. Question

আমার ছেলে সৌদী আরব চাকুরি করে। সে মোটা অংকের টাকা পাঠিয়েছে। তা অনেক দিন যাবত আমার কাছে পড়ে আছে। তা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার মতো আমার শারীরিক অবস্থা নেই। আমার চাচাতো ভাই চাকুরি করত। হঠাৎ কোনো কারণে তার চাকুরি চলে গেলে সে আমাকে বলল, ভাই, তোমার জমা টাকা দিয়ে আমি কাপড়ের ব্যবসা করি। যা লাভ হবে তোমার অর্ধেক আমার অর্ধেক।

প্রশ্ন হল, তার প্রস্তাবিত চুক্তিটি কি শরীয়তসম্মত?


Answer

যদি আপনার ছেলের অনুমতি থাকে অথবা ঐ টাকার মালিকানা আপনার হয়ে থাকে তবে আপনার চাচাতো ভাইয়ের প্রস্তাবমতো আপনি ব্যবসা করতে পারবেন। এক পক্ষের শুধু পুঁজি, আর অপর পক্ষের শ্রম এ ধরনের কারবারকে শরীয়তের ভাষায় মুযারাবা কারবার বলা হয়।

মুযারাবা কারবারের মৌলিক নিয়ম-কানুন নিম্নে উল্লেখ করা হল:

১) পুঁজিদাতা এবং ব্যবসা পরিচালনাকারী প্রত্যেকের লাভ শতকরা হারে সুনির্ধারিত হতে হবে। যেমন প্রশ্নে আপনারা অর্ধাঅর্ধি হারে ঠিক করেছেন। উভয়ের সন্তুষ্টিতে কম-বেশিও করা যায়। যেমন, এক পক্ষের ৬০%, অপর পক্ষের ৪০% ইত্যাদি। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৫১৩২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫১৪; হাশিয়াতুশ শীলবী ৫/৫১৮)

২) পুঁজিদাতা এবং ব্যবসা পরিচালনাকারী কারো জন্য লাভ বণ্টনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট (যেমন ১০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার টাকা) অংকের টাকা নির্ধারণ করা যাবে না। এমনিভাবে লাভ হোক বা না হোক সর্বাবস্থায় লাভ দিতে হবে এমন চুক্তিও করা যাবে না।-তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫১৫

৩) ব্যবসায় লোকসান হলে তা প্রথমে লাভ থেকে এরপর পুঁজি থেকে আদায় করা হবে। ব্যবসায়ী পুঁজির দায়ভার গ্রহন করবে না।

প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত কাতাদাহ রাহ. বলেন, মুযারাবা কারবারের লাভ্যাংশ চুক্তি অনুযায়ী বণ্টিত হবে এবং (লাভ না হলে) অথবা লাভের তুলনায় খরচ বেশি হলে) লোকসান পুঁজি থেকে ধর্তব্য হবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১৫০৮১)

৪) তবে ব্যবসা পরিচালনাকারীর অবহেলা বা ত্রুটির কারণে ব্যবসা  লোকসান হলে এর দায় ব্যবসায়ীর একার উপর বর্তাবে। এক্ষেত্রে পুঁজিদাতা কিছু দিতে বাধ্য না।

হযরত হাকীম ইবনে হিযাম রা. থেকে বর্ণিত। তিনি এক ব্যক্তিকে মুযারাবার ভিত্তিতে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে পুঁজি প্রদান করেন। এবং তার উপর কিছু শর্তারোপ করেন। .. এবং তাকে বলেন যে, এই শর্তগুলো অমান্য করলে এর দায় তুমি বহন করবে। (সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস : ৬/১১১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫৩৪

উল্লেখ্য, উপরে শুধু লাভ বণ্টন এবং লোকসান সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা আলোচনা করা হল। মুযারাবা ব্যবসা পরিচালনার জন্য আরো বহু মাসআলা রয়েছে সেগুলো কোনো বিজ্ঞ আলিম থেকে জেনে নিবেন।

-সুনানে কুবরা, বায়হাকী ৬/১১১; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১০, ১৬১, ১৫২; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৫৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫১৪-৫১৮; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৬৩-২৬৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফাহিম - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

২৩৬৪. Question

আমি সায়েমের কাছে কিছু টাকা-পয়সা আমানত রাখার জন্য তার বাড়িতে গেলাম। গিয়ে দেখি, সে বাড়ির সামনে গাছের নিচে বসে আছে। আমি টাকার থলেটি তাকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসি। কিছুক্ষণ পর সে ফোন করে বলল, আমি তো তোমার টাকার থলেটি আমার পাশের চেয়ারে রেখেছিলাম কিন্তু ভুলে সেখানেই ফেলে রেখে চলে এসেছি। পরবর্তীতে তালাশ করে তা আর পাইনি। আমি জানতে চাই, উল্লেখিত অবস্থায় এ টাকাগুলোর হুকুম কী? আমি কি তার থেকে জরিমানা নিতে পারব? জানালে কৃতজ্ঞ হব।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমানত গ্রহীতা অর্থাৎ সায়েমের পক্ষ থেকে যেহেতু আমানত সংরক্ষণের ব্যাপারে ত্রুটি হয়েছে তাই সে উক্ত টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করতে বাধ্য। অতএব আপনি চাইলে ঐ টাকাগুলো আদায় করে নিতে পারবেন।

-রদ্দুল মুহতার ৫/৬৭৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২৯৩; মাজাল্লাতলু আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ : ৭৮২

Sharable Link

মুহাম্মাদ জামাল চৌধুরী - আহরন্দ, শহীদ বাড়িয়া

২৩৬৫. Question

আমাদের একটি সমিতি আছে। কিছুদিন পূর্বে এক লোক একটি গরু ক্রয়ের জন্য আমাদের সমিতির কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ঋণ চাইলে সমিতির পরিচালক সাহেব তাকে বলেন যে, আমরা আপনাকে ঋণ দিতে পারব না। তবে আপনার সাথে শরীকানায় গরুটি কিনতে পারি। পরে আমাদের অংশটা আপনার কাছে বাকিতে বিক্রি করে দিব। তবে এখনই বিক্রির চুক্তি নয় কেবল ওয়াদা করছি। এতে ঐ লোক রাজি হয়ে গেল। ফলে গরুটি শরীকানায় ক্রয় করে কিছুদিন পর আমাদের অংশটা কিছু লাভে ঐ লোকের কাছে বিক্রি করে দেই। জানার বিষয় হল, উল্লেখিত অবস্থায় আমাদের কারবারটি সহীহ হয়েছে কি?


Answer

হ্যাঁ, প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনাদের ঐ কারবারটি বৈধ হয়েছে। কেননা, যৌথভাবে কোনো পশু/বস্ত্ত ক্রয় করে হস্তগত হওয়ার পর তা শরীকের কাছে বিক্রি করা জায়েয আছে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/৭৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৬৬; বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা ১/২৫১; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৪৫৮; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৭৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাঈদ বিন আবদুল জলীল - সদর মোমেনশাহী

২৩৬৬. Question

আমাদের এলাকায় জমি বন্ধকের দুটি প্রচলন রয়েছে : এক. বন্ধকদাতা বন্ধক গ্রহীতার নিকট থেকে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা গ্রহণ করে আর বন্ধকগ্রহীতা জমি ভোগ করতে থাকে। যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন জমি

হস্তান্তর করে।

দুই. এটিও উপরের মতোই। তবে পার্থক্য হল, এক্ষেত্রে যখন টাকা ফিরিয়ে দেয় তখন বছর হিসাব করে বন্ধকগ্রহীতা কিছু টাকা কম নেয়। যেমন-কেউ এক কাঠা জমি বন্ধক নিল দশ হাজার টাকায় এবং সে দু বছর এ জমি ভোগ করে। দু বছর পর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় পাঁচশ টাকা করে এক হাজার টাকা কম নেয়। এ সুরতগুলো সহীহ কি না? উত্তম পন্থা কোনটি জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

ঋণদাতার জন্য বন্ধকি জমি ভোগ করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। এটি মূলত ঋণ প্রদান করে বিনিময়ে সুদ গ্রহণেরই একটি প্রকার। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত প্রথম পদ্ধতিটি নাজায়েয হওয়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট। আর দ্বিতীয় পদ্ধতিটি মূলত ঋণ প্রদান করে বন্ধকি জমি ভোগ করার একটি অবৈধ ছুতা। কারণ এক্ষেত্রে আলাদাভাবে ইজারা চুক্তি করা হয় না; বরং জমি ভোগ করার শর্তেই ঋণ দেওয়া হয় এবং ঋণের সুবিধা পাওয়ার কারণেই জমির মালিক নামমাত্র মূল্যে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করে থাকে। সুতরাং প্রশ্নোল্লেখিত দুটি কারবারই নাজায়েয।

প্রকাশ থাকে যে, উক্ত কারবার বৈধভাবে করতে চাইলে শুরু থেকেই বন্ধকি চুক্তি না করে ভাড়া বা লীজ চুক্তি করবে। যার বিবরণ হল, জমির মালিক জমি ভাড়া দিবে। তার যত টাকা প্রয়োজন সেজন্য যত বছর ভাড়া দিতে হয় একত্রে তত বছরের জন্য ভাড়া দিবে। যেমন-এক বিঘা জমির বার্ষিক ভাড়া ৫ হাজার টাকা। মালিকের ২০ হাজার টাকা প্রয়োজন। তাহলে সে ৪ বছরের জন্য জমি ভাড়া দিবে। এক্ষেত্রে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিয়ে নিবে। এক্ষেত্রে জমির ভাড়া স্থানীয় ভাড়া থেকে সামান্য কম বেশিও হতে পারে। এরপর ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলে অর্থ দাতা জমি ফেরত দিবে, কিন্তু প্রদেয় টাকা ফেরত পাবে না। অবশ্য সময়ের আগে ফেরত দিলে যে কয়দিন ভাড়ায় ছিল সে পরিমাণ ভাড়া কর্তন করে অবশিষ্ট টাকা ভাড়াটিয়া ফেরত পাবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/২৪৪-২৪৫; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ৩/১৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; শরহুল মাজাল্লা, খালেদ আতাসী ৩/১৯৬-১৯৭; ইলাউস সুনান ১৮/৬৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবছি - কিশোরগঞ্জ

২৩৬৭. Question

আমাদের মহল্লার মসজিদটি ছোট। জুমআর দিন মুসল্লিদের জায়গা সংকুলান হয় না। আর মসজিদের উত্তর পাশে মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত একটি পুকুর আছে। এখন কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঐ পুকুর ভরাট করে মসজিদ ঐ দিকে সম্প্রসারিত করে তিন তলা বিশিষ্ট করে নির্মাণ করবে। তবে সম্প্রসারিত অংশে নিচ তলার কিছু জায়গায় ইমাম সাহেবের জন্য ফ্যামিলি কোয়ার্টার বানাবে। আর উপর তলাগুলোর শতভাগই নামাযের জন্য নির্ধারিত থাকবে। জানার বিষয় হল, মসজিদের বর্ণিত অংশে ইমাম সাহেবের জন্য ফ্যামিলি কোয়ার্টার বানানো বৈধ হবে কি?


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যে অংশে পুকুর রয়েছে সেটা সেহেতু এখনো মসজিদ হিসেবে ব্যবহার হয়নি; বরং নতুনভাবে তাতে মসজিদ সম্প্রসারিত হচ্ছে তাই এ অংশের নিচ তলায় ইমাম সাহেবের জন্য ফ্যামিলি কোয়ার্টার বানানো জায়েয হবে।

-রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ ৭২

Sharable Link

মুহাম্মাদ শুআইব - গাইবান্ধা

২৩৬৮. Question

আমার পিতাকে তার এক ঘনিষ্ট বন্ধু কিছু জমি হেবা (দান) করেছিল। রেজিস্ট্রিও সম্পন্ন হয়েছে এবং জমির দখলও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন পর ঐ লোক (হেবাকারী) মারা যাওয়ার পর তার ওয়ারিসরা ঐ জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করছে। জানতে চাই, তাদের এ দাবি শরীয়তসম্মত কি না? আমাদের জন্য কি তা ফিরিয়ে দেওয়া জরুরি?


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু জমিটির হেবা সম্পন্ন হয়েছে এবং দাতা জমিটি আপনার পিতাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন সুতরাং দাতার ওয়ারিসদের জন্য এখন তা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করা বৈধ নয় এবং তাদের দাবি অনুযায়ী তা ফিরিয়ে দেওয়া আপনাদের উপর জরুরি নয়। কেননা, যেসব ক্ষেত্রে হেবা সম্পন্ন হওয়ার পর তা ফিরিয়ে নেওযা যায় না। তন্মধ্যে একটি হল, হেবা সম্পন্ন হওয়ার পর হেবাকারী বা হেবাগ্রহীতার ইন্তেকাল  হওয়া।

খলিফাতুল মুসলিমীন উমর রা. বলেন, মাহরাম আত্মীয় ছাড়া অন্য কাউকে হেবা করলে সে হেবা ফিরিয়ে  নেওয়া যায় যদি হেবার বিনিময় গ্রহণ না করে থাকে কিংবা দুজনের কারো ইন্তেকাল না হয়ে থাকে।

-শরহু মাআনিল আছার ২/২২৩; ইলাউস সুনান ১৬/১২২; রদ্দুল মুহতার ৫/৭০১

Sharable Link

খলীলুর রহমান - নরসিংদী

২৩৬৯. Question

আমার এক আত্মীয়ের এক পালকপুত্র আছে। গ্রামের এক গরীব নারীর সন্তানকে নিয়ে পালকপুত্র বানিয়েছে। আমি জানতে চাই, পিতার ঔরসজাত সন্তানের মতো পালকপুত্রও কি পিতার মীরাস পাবে? শরীয়তের বিধান কী?


Answer

পালকপুত্র ঔরসজাত সন্তানের মতো নয়। সে মীরাসের হকদার নয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৬২

Sharable Link

আবদুল কাদের - কেরানীগঞ্জ, ঢাকা

২৩৭০. Question

আমার পিতা তার এক দরিদ্র বন্ধুর জন্য কিছু সম্পদের অসিয়ত করেছিলেন। ঘটনাক্রমে ঐ বন্ধু পিতার পূর্বেই মারা যান। কিছুদিন পর পিতাও মারা যান। এখন ঐ বন্ধুর ওয়ারিসগণ অসিয়তের সম্পত্তি দাবি করছে। শরীয়তের দৃষ্টিতে তাদের দাবি কি সহীহ ?


Answer

অসিয়ত কার্যকর হওয়ার জন্য অসিয়তকারীর ইন্তেকালের সময় যার জন্য অসিয়ত করা হয়েছে সে জীবিত থাকা শর্ত। যদি অসিয়তকারীর আগে তার ইন্তেকাল হয়ে যায় তাহলে কৃত অসিয়ত বাতিল হয়ে যায়।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার (অসিয়তকারীর) পূর্বেই যেহেতু ঐ বন্ধু (যার জন্য অসিয়ত করা হয়েছিল)

ইন্তেকাল করেছে তাই অসিয়তটি বাতিল হয়ে গেছে। সুতরাং তার ওয়ারিসদের জন্য অসিয়তের সম্পত্তি দাবি করা বৈধ নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৫; আলবাহরুর রায়েক ৮/৪৫৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪১৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন - আলামপুর, সদর কুমিল্লা

২৩৭১. Question

এক ব্যক্তির মদ পানের পুরনো নেশা আছে। অনেকবার প্রতিজ্ঞা করেও তা ছাড়তে পারেনি। একপর্যায়ে সে শপথ করে বলল, আর কখনোও মদ পান করব না। তার এই কথা কি কসম হয়েছে?


Answer

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত কথা দ্বারা কসম সংগঠিত হয়েছে। প্রখ্যাত তাবেয়ী হযরত ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. (মৃত : ৯৬ হি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শপথ করছি এবং আমি আল্লাহর নামে শপথ করছি উভয়টা দ্বারাই কসম সংগঠিত হয়। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৪৭২)

সুতরাং ঐ ব্যক্তি উক্ত কসমের পর মদ পান করলে মদপানের গুনাহ তো হবেই সাথে সাথে কসম ভঙ্গেরও গুনাহ হবে এবং তাকে কাফফারাও আদায় করতে হবে। তাই এখন তার জন্য অপরিহার্য কর্তব্য হল ভবিষ্যতে আর কখনোও মদ পান না করা এবং স্বীয় শপথের উপর অবিচল ও অনড় থাকা।

-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫২

Sharable Link