রবিউল ইসলাম - হাজারীবাগ, ঢাকা

৬৫৯০. Question

কিছুদিন আগে আমি ফ্রিজ থেকে গরুর গোশত নামিয়ে বালতিতে ভিজিয়ে রাখি। গোশতের রক্ত দ্বারা বালতির পানি লাল হয়ে যায়। গোশত ধোয়ার সময় এ পানি আমার জামায় লাগে। এ জামা পরেই আমি ঐ দিনের মাগরিবের নামায আদায় করি।

মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, এ পানি লাগার কারণে কি আমার জামা নাপাক হয়ে গিয়েছিল? এ জামা পরে আমি যে নামায পড়েছি তা কি আদায় হয়েছে?

Answer

না, গোশতের রক্তমিশ্রিত ঐ পানি লাগার কারণে আপনার জামা নাপাক হয়নি। সে জামাটি পরে আপনি যে নামায পড়েছেন তা আদায় হয়ে গেছে।

প্রকাশ থাকে যে, রক্ত দুই প্রকারের :

১. প্রবাহিত রক্ত, যা পশুপাখি জবাইয়ের সময় নির্গত হয় কিংবা মানুষ বা জীবিত পশুপাখির শরীরের কোনো অংশ কেটে যাওয়ার কারণে বের হয় এবং তা গড়িয়ে পড়া পরিমাণ হয়। এ প্রকারের রক্ত হারাম ও নাপাক।

২. মানুষ বা পশুপাখির শরীর থেকে নির্গত সামান্য রক্ত, যা গড়িয়ে পড়া পরিমাণ নয় এবং পশুপাখি জবাইয়ের পর এর গোশত ও শিরায় বিদ্যমান রক্ত। এগুলো প্রবাহিত রক্ত নয়। তাই তা হারাম ও নাপাক নয়। আর মাছের রক্ত প্রবাহিত হলেও তা হারাম ও নাপাক নয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রক্তটি দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।

উল্লেখ্য, নামাযে পবিত্রতার সঙ্গে পরিচ্ছন্নতাও কাম্য। অতএব প্রশ্নোক্ত পানি নাপাক না হলেও তা যেহেতু ময়লা পানি, তাই যথাসম্ভব তা ধুয়ে পরিষ্কার করে নামায পড়াই ভালো ছিল।

* >شرح مختصر الكرخي< للقدوري ১/১৮০-১৮১: فأما دم السمك فطاهر في قول أبي حنيفة ومحمد، ... وقالوا فيما يبقى في العروق واللحم من الدم إنه طاهر، وإن أصاب الثوب منه أكثر من قدر الدرهم جازت الصلاة معه، لأنه ليس بدم مسفوح، كدم البق، ولأنه أبيح أكله به.

তাফসীরে তাবারী ৫/৩৭৯; আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ৩১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২২৯; রদ্দুল মুহতার ১/৩১৯

Sharable Link

মুহিউদ্দীন আহমাদ - বিজয়নগর, চট্টগ্রাম

৬৫৯১. Question

আমার স্ত্রী সাধারণত মাসে ছয় দিন ঋতুমতী থাকে। গত পিরিয়ডে তার ব্যতিক্রম হয়। ছয় দিনে স্রাব বন্ধ না হয়ে তেরোতম দিন পর্যন্ত দেখা যায়। এর পরে স্রাব বন্ধ হয়। দশম দিন পর্যন্ত সে নামায পড়া বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু যখন দশম দিনও পার হয়ে যায় তখন এর পর থেকে প্রতি ওয়াক্তে ওযু করে নামায আদায় করে। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন থেকে যায়, সপ্তম দিন থেকে দশম দিন পর্যন্ত যে সে নামায পড়েনি, তা কি ঠিক ছিল? এই চার দিনের নামায কি তাকে কাযা আদায় করতে হবে? দয়া করে সঠিক মাসআলা জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর মাসিকের সাধারণ নিয়ম ছয় দিনের পরও যেহেতু স্রাব চালু ছিল, তাই এক্ষেত্রে সপ্তম দিন থেকে দশম দিন পর্যন্ত নামায না পড়া ঠিক ছিল। কেননা দশম দিনের ভেতর স্রাব বন্ধ হয়ে গেলে পুরো দশ দিনই হায়েয গণ্য হয়।

কিন্তু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তা যেহেতু দশ দিন অতিক্রম করে গেছে, তাই তার পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী এক্ষেত্রে ছয় দিন হায়েয এবং এর পর থেকে তেরোতম দিন পর্যন্ত ইস্তেহাযা গণ্য হবে। সুতরাং এখন আপনার স্ত্রীর জন্য সপ্তম থেকে দশম এই চার দিনের নামায কাযা করা জরুরি।

* >المبسوط< للسرخسي ২/১৬ : وإذا كان حيضها خمسة أيام، فزاد الدم عليها، فالزيادة دم حيض معها إلى تمام العشرة، ... فإذا زاد على العشرة كان حيضها هي الخمسة، والزيادة استحاضة.

কিতাবুল আছল ১/২৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৪৩৪; আলগায়া, সারুজী ১/৬৫১; ফাতহুল কাদীর ১/১৫৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২১২

Sharable Link

তাবাসসুম - নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা

৬৫৯২. Question

গতকাল মাগরিবের পর নফল নামায পড়ছিলাম। নামাযে থাকা অবস্থায়ই আমার হায়েয শুরু হয়ে যায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে নামায ছেড়ে দেই। জানার বিষয় হল, পবিত্র হওয়ার পর কি এ নামাযটি কাযা করতে হবে?

Answer

হাঁ, পবিত্র হওয়ার পর উক্ত নফল নামাযটি আপনার কাযা করে নেওয়া জরুরি। কেননা, নফল নামায পড়া অবস্থায় হায়েয শুরু হয়ে গেলে পবিত্র হওয়ার পর এর কাযা করা আবশ্যক। তবে ফরয নামাযের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। ফরয নামায শুরু করার পর হায়েয শুরু হয়ে গেলে পরবর্তীতে এর কাযা করা জরুরি নয়।

* >فتح القدير< ১/১৫২ : ومتى طرأ الحيض في أثناء الوقت سقطت تلك الصلاة، ولو بعد ما افتتحت الفرض، بخلاف ما لو طرأ وهي في التطوع، حيث يلزمها قضاء تلك الصلاة، هذا مذهب علمائنا.

আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩২; আলবাহরুর রায়েক ১/২০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯১

Sharable Link

সাজেদা - মিরপুর, ঢাকা

৬৫৯৩. Question

সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের ক্ষেত্রে দাঁড়ানো থেকে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা থেকে উঠে পুনরায় দাঁড়ানো কি জরুরি?

একসঙ্গে একাধিক সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করলেও কি প্রতিবার দাঁড়াতে হবে?

Answer

সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের ক্ষেত্রে দাঁড়ানো থেকে সিজদায় যাওয়া এবং সিজদা থেকে উঠে পুনরায় দাঁড়ানো মুস্তাহাব; জরুরি নয়। অতএব একসঙ্গে একাধিক সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করলে মুস্তাহাব হল, প্রতিবার উঠে দাঁড়িয়ে আরেক সিজদা করা। তবে প্রতিবারের জন্য না দাঁড়িয়ে বসা থেকে সিজদা করলেও সিজদায়ে তিলাওয়াতগুলো আদায় হয়ে যাবে।

* >المبسوط< للسرخسي ২/১০: واستحسن أيضا أن يقوم فيسجد؛ لأن الخرور سقوط من القيام، والقرآن ورد به، فإن لم يفعل لم يضره.

 বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৯১; জামেউল মুযমারাত ২/৭৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭

Sharable Link

তাসফিন আহমেদ - শ্রীমঙ্গল, সিলেট

৬৫৯৪. Question

একদিন আমি আর আমার চাচাতো ভাই বাসায় জামাত করি। নামাযে আমি ইমামতি করি। আর সে আমার পাশে দাঁড়ায়। সে আমার থেকে কিছুটা লম্বা। যার ফলে পাশাপাশি দাঁড়ালেও সিজদায় তার মাথা আমার মাথার আগে চলে যায়। তবে তার পায়ের গোড়ালি আমার বরাবরই থাকে। হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এর কারণে কি তার নামাযে কোনো সমস্যা হয়েছে?

Answer

না, উক্ত কারণে তার নামাযে কোনো সমস্যা হয়নি। তা আদায় হয়ে গেছে। কেননা, মুক্তাদির পায়ের গোড়ালি যদি ইমামের পায়ের গোড়ালি বরাবর বা এর পেছনে থাকে তাহলে সিজদায় মুক্তাদির মাথা ইমামের আগে চলে গেলেও মুক্তাদির নামায আদায় হয়ে যায়।

* >غنية المتملي< ص ৫২০ : والمعتبر موضع القدم، حتى لو كان المقتدي أطول من إمامه بحيث يقع سجوده قدام الإمام، لكن قدمه غير مقدم عليه تجوز.

বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৯১; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩১৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫২; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৩৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৬৬

Sharable Link

আনাস আবদুল্লাহ - রেইসকোর্স, কুমিল্লা

৬৫৯৫. Question

কয়েকদিন আগে এক মসজিদে মাগরিবের নামায পড়ি। মাগরিবের দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেবের সূরা নির্ধারণে দেরি হয়ে যায়। তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় তিনি চুপ ছিলেন। এভাবে যথারীতি তিনি নামায পড়িয়ে ফেলেন। নামায শেষ হওয়া মাত্র একজন দাঁড়িয়ে বলেন, সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছিল। যেহেতু সাহু সিজদা করেননি, তাই নামায দোহরাতে হবে। জানার বিষয় হল, ওই ব্যক্তির কথা কি ঠিক?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম যদি সূরা ফাতেহার পর আমীন এবং কেরাতের শুরুতে بسم الله الرحمن الرحيم বলে থাকেন, আর এগুলো পড়ার সময় বাদ দিয়ে মধ্যবর্তী সময়ে তিন তাসবীহ (তিনবার سبحان ربي العظيم বা سبحان ربي الأعلى) বলা পরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি সময় চুপ থাকেন, তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।

কিন্তু যদি আমীন ও বিসমিল্লাহ পড়ার সময়সহ তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় ইমামের শব্দ শোনা না যায়, সেক্ষেত্রে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। কেননা, মুক্তাদির নিকট এক্ষেত্রে তিন তাসবীহ পরিমাণ চুপ থাকা মনে হলেও বাস্তবে তা তিন তাসবীহের চেয়ে কম।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমামের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত না করে এমন ঘোষণা দেওয়া ঠিক হয়নি। এ ধরনের অনুচিত কাজ অনেক সময় ফেতনা সৃষ্টির কারণ হয় এবং মুসল্লি-সাধারণের মাঝে এর দ্বারা ইমামের প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হয়। যা মোটেও কাম্য নয়।

* >حاشية الطحطاوي على مراقي الفلاح< ص ২৫৮ : قوله: (وجب عليه سجود السهو) إذا شغله التفكر عن أداء واجب بقدر ركن ... وهو مقدر بثلاث تسبيحات، ثم إن محل وجوب سجود السهو إذا لم يشتغل حالة الشك بقراءة ولا تسبيح، أما إذا اشتغل بهما فلا سهو عليه.

কিতাবুল আছল ১/১৯৮; আলআজনাস, নাতিফী ১/১১৪; ফাতহুল কাদীর ১/৪৩৮; মারাকীল ফালাহ. পৃ. ২৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৩

Sharable Link

সাদ আবদুল্লাহ - বনানী, ঢাকা

৬৫৯৬. Question

অনেক সময় দেখা যায়, আযান হচ্ছে আর আমি হয়তো কোনো কাজে ব্যস্ত। ফলে আযানের জবাব দিতে ভুলে যাই। পরক্ষণে আযান শেষ হওয়ার পর আমি কি তার জবাব দিতে পারব?

Answer

আযানের সাথে সাথে জবাব না দেওয়া হলে আযান শেষ হওয়ার পর পরই বেশি বিলম্ব না করে তখনো আযানের জবাব দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আযানের জবাবে যে বাক্যগুলো বলা হয়, তখন সেগুলো নিজে নিজে বলে নেবে। আর যদি আযান শেষ হওয়ার পর বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে আর জবাব দেওয়ার নিয়ম নেই।

উল্লেখ্য, কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় আযান শুরু হলেও যথাসম্ভব কাজে বিরতি দিয়ে তখনই আযানের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কেননা, আযানের জবাব দেওয়ার মূল সময় তখনই যখন মুআযযিন আযানের শব্দগুলো বলে। হাদীস শরীফে আযানের সময় মুআযযিনের সাথে সাথেই আযানের জবাব প্রদানের ব্যাপারে অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত ওমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

إِذَا قَالَ الْمُؤَذِّنُ: اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، فَقَالَ أَحَدُكُمْ: اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، قَالَ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، ثُمَّ قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُولُ اللهِ قَالَ: أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُولُ اللهِ، ثُمَّ قَالَ: حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ، قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ، ثُمَّ قَالَ: حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ، قَالَ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ، ثُمَّ قَالَ: اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، قَالَ: اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ، ثُمَّ قَالَ: لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، قَالَ: لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مِنْ قَلْبِهِ دَخَلَ الْجَنَّةَ.

অর্থাৎ মুআযযিন যখন বলে, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ তখন যদি তোমাদের কেউ বলে, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ

অতঃপর মুআযযিন যখন বলে, أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ সে বলে, أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ

এরপর মুআযযিন যখন বলে, أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُولُ اللهِ সে বলে, أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُولُ اللهِ

তারপর মুআযযিন যখন বলে, حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ সে বলে, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ

এরপর মুআযযিন যখন বলে, حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ সে বলে, لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ

তারপর মুআযযিন যখন বলে, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ সে বলে, اللهُ أَكْبَرُ اللهُ أَكْبَرُ

এরপর মুআযযিন যখন বলে, لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ সেও বলে, لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُএ বাক্যগুলো যদি সে দিল থেকে বলে, তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৫

তাই সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও নিজের অসতর্কতার কারণে যেন এমন ফযীলতপূর্ণ আমলটি ছুটে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখা উচিত।

* >البحر الرائق< ১/২৬০ : ولم أر حكم ما إذا فرغ المؤذن ولم يتابعه السامع، هل يجيب بعد فراغه؟ وينبغي أنه إن طال الفصل لا يجيب، وإلا يجيب.

হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/১৮৮; তুহফাতুল মুহতাজ ২/১১০; মিনহাতুল খালিক ১/২৬০; রদ্দুল মুহতার ১/৩৯৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম - অষ্টগ্রাম, কিশোরগঞ্জ

৬৫৯৭. Question

আমাদের গ্রামে মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর মৃত ব্যক্তির কবরের ওপরে মাথা ও পায়ের দিকে দুজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে একজন নিম্নোক্ত তিনটি প্রশ্ন

من ربك؟ من نبيك؟ ما دينك؟

করে, অপরজন উত্তর দেয়। তাদেরকে এই প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বলে, এটা নাকি মৃত ব্যক্তির জন্য তালকীন।

জানার বিষয় হল, শরীয়তে কি এ তালকীনের কোনো ভিত্তি আছে? আর যদি না থাকে, তাহলে তা করা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন?

Answer

দাফনের পর কবরে অবস্থান করে প্রশ্নোক্ত পদ্ধতির তালকীন করা শরীয়তসম্মত নয়। কোনো সহীহ হাদীস দ্বারা এভাবে তালকীন করা প্রমাণিত নয়। অনেক ফকীহ পরিষ্কার ভাষায় দাফনের পর এ ধরনের তালকীন করা থেকে বিরত থাকার কথা বলেছেন। এক্ষেত্রে দাফনের পর কবরে অবস্থান করে হাদীস-আছার দ্বারা যতটুকু প্রমাণিত শুধু তা-ই করবে। এ ছাড়া অন্য কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

হাদীস শরীফে দাফনের পর কবরে অবস্থান করে যে সব আমল করার কথা বর্ণিত হয়েছে সেগুলো হল

এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, মায়্যিতকে দাফন করার পর সেখানে কিছু সময় অবস্থান করে মায়্যিতের জন্য মাগফিরাতের দুআ করবে এবং কবরে প্রশ্নের জবাবে সে যেন সুদৃঢ় থাকতে পারে সেজন্য আল্লাহর কাছে তার জন্য দুআ করবে।

উসমান রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذَا فَرَغَ مِنْ دَفْنِ الْمَيِّتِ وَقَفَ عَلَيْهِ، فَقَالَ: اسْتَغْفِرُوا لِأَخِيكُمْ، وَسَلُوا لَهُ بِالتَّثْبِيتِ، فَإِنَّهُ الْآنَ يُسْأَلُ.

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করতেন তখন তিনি কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য মাগফিরাতের দুআ কর এবং সে যেন (প্রশ্নের জবাবে) সুদৃঢ় থাকতে পারে সে দুআ কর। কেননা এখনই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২১৩)

আরেক হাদীসে এসেছে, আমর ইবনুল আস রা. বলেন

فَإِذَا أَنَا مُتُّ فَلَا تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ، وَلَا نَارٌ، فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ شَنًّا، ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا، حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ، وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي.

আমি যখন মৃত্যুবরণ করব তখন যেন কোনো বিলাপকারী অথবা আগুন আমার জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আস্তে আস্তে মাটি ঢালবে এবং দাফন সেরে একটি উট জবাই করে তার গোশত বণ্টন করা পরিমাণ সময় আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে। যেন তোমাদের উপস্থিতিতে আমি আতঙ্কমুক্ত অবস্থায় আমার প্রতিপালকের ফেরেশতাদেরকে ভেবে চিন্তে জবাব দিতে পারি। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২১)

আরেক হাদীসে দাফনের পর মায়্যিতের মাথার দিকে দাঁড়িয়ে সূরা বাকারার শুরু এবং শেষের আয়াতগুলো পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। আবদুর রহমান ইবনুল আলা রাহ. বলেন

قَالَ لِي أَبِي: يَا بُنَيَّ إِذَا أَنَا مُتُّ فَأَلْحِدْنِي، فَإِذَا وَضَعْتَنِي فِي لَحْدِي فَقُلْ: بِسْمِ اللهِ وَعَلٰى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ، ثُمَّ سُنَّ عَلَيَّ الثَّرَى سَنًّا، ثُمَّ اقْرَأْ عِنْدَ رَأْسِي بِفَاتِحَةِ الْبَقَرَةِ وَخَاتِمَتِهَا، فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ذَلِكَ.

আমার পিতা আলা ইবনুল লাজলাজ রা. আমাকে বলেন, হে আমার প্রিয় পুত্র, যখন আমি মৃত্যুবরণ করব তখন আমার জন্য লাহদ (বুগলি কবর) খনন করবে। আমাকে কবরে রাখার সময় বলবে

بِسْمِ اللهِ وَعَلٰى مِلَّةِ رَسُولِ اللهِ.

অতঃপর আমার কবরে আস্তে আস্তে মাটি ঢালবে। এরপর আমার মাথার পাশে সূরা বাকারার শুরু ও শেষ অংশ পড়বে। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমনই বলতে শুনেছি। (আল মুজামুল কাবীর, তবারানী ১৯/২২০)

সুতরাং প্রশ্নোক্ত প্রথাটি পরিহার করে দাফনের পর কবরের পাশে অবস্থান করে শুধু সুন্নাহসম্মত আমলগুলোই করবে।

* >معراج الدراية< ২/৪২০ : وأما التلقين بعد الموت فلا يلقن عندنا في ظاهر الرواية.

* >مجمع البحرين وملتقى النيرين< ص ১৭২ : يوجه المحتضر يمينا، ونلقنه الآن، لا بعد التلحيد.

* >مجمع الزوائد< ৩/১৬৩ (৪২৪৮) : عن سعيد بن عبد الله الأودي قال: شهدت أبا أمامة، ... فقال: إذا مات أحد من إخوانكم فسويتم التراب على قبره، فليقم أحدكم على رأس قبره، ثم ليقل: يا فلان بن فلانة. ... فإنه يقول: أرشدنا رحمك الله، ولكن لا تشعرون، فليقل: اذكر ما خرجت عليه من الدنيا شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا عبده ورسوله، وأنك رضيت بالله ربا، وبالإسلام دينا، وبمحمد نبيا، وبالقرآن إماما... .

رواه الطبراني في الكبير، وفي إسناده جماعة لم أعرفهم.

* >نتائج الأفكار< لابن حجر ৪/৪২৮ : وسند الحديث من الطريقين ضعيف جداً.

* >زاد المعاد< لابن القيم ১/৫২২ : ﻭﻛﺎﻥ ﺇﺫا ﻓﺮﻍ ﻣﻦ ﺩﻓﻦ اﻟﻤﻴﺖ ﻗﺎﻡ ﻋﻠﻰ ﻗﺒﺮﻩ ﻫﻮ ﻭﺃﺻﺤﺎﺑﻪ، ﻭﺳﺄﻝ ﻟﻪ اﻟﺘﺜﺒﻴﺖ، ﻭﺃﻣﺮﻫﻢ ﺃﻥ ﻳﺴﺄﻟﻮا ﻟﻪ اﻟﺘﺜﺒﻴﺖ. ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺠﻠﺲ ﻳﻘﺮﺃ ﻋﻨﺪ اﻟﻘﺒﺮ، ﻭﻻ ﻳﻠﻘﻦ اﻟﻤﻴﺖ ﻛﻤﺎ ﻳﻔﻌﻠﻪ اﻟﻨﺎﺱ اﻟﻴﻮﻡ، ﻭﺃﻣﺎ اﻟﺤﺪﻳﺚ اﻟﺬﻱ ﺭﻭاﻩ اﻟﻄﺒﺮاﻧﻲ ﻓﻲ ﻣﻌﺠﻤﻪ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺚ ﺃﺑﻲ ﺃﻣﺎﻣﺔ، ﻋﻦ اﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ: >ﺇﺫا ﻣﺎﺕ ﺃﺣﺪ ﻣﻦ ﺇﺧﻮاﻧﻜﻢ ﻓﺴﻮﻳﺘﻢ اﻟﺘﺮاﺏ ﻋﻠﻰ ﻗﺒﺮﻩ، ﻓﻠﻴﻘﻢ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻋﻠﻰ ﺭﺃﺱ ﻗﺒﺮﻩ ﺛﻢ ﻟﻴﻘﻞ: ﻳﺎ ﻓﻼﻥ ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺴﻤﻌﻪ ﻭﻻ ﻳﺠﻴﺐ ...<، ﻓﻬﺬا ﺣﺪﻳﺚ ﻳﺼﺢ ﺭﻓﻌﻪ.

ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৪; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া, কিরমানী, পৃ. ১২৩; শরহুল বেকায়াহ, ইবনে মালাক ১/৫০৩; জামেউর রুমূয ১/২৭৮; মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/৭৪; ইমদাদুল আহকাম ১/২০৯

Sharable Link

সিরাজুল ইসলাম - উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ

৬৫৯৮. Question

আমার সৎ মা কয়েকদিন ধরে অনেক অসুস্থ। আমিই তার চিকিৎসার খরচ বহন করে আসছি। গত কয়েক সপ্তাহ যাবৎ চিকিৎসার খরচ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমি তার চিকিৎসার পেছনে আমার যাকাতের টাকা থেকেও কিছু খরচ করতে চাচ্ছি।

মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হল, আমি কি এক্ষেত্রে তার চিকিৎসার পেছনে আমার যাকাতের টাকা ব্যয় করতে পারব? এতে কি আমার যাকাত আদায় হবে?

Answer

হাঁ, সৎ মাকে যাকাত দেওয়া জায়েয আছে। তাই আপনার সৎ মা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে আপনার যাকাতের টাকা তার চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করতে পারবেন। এতে আপনার যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

* >الفتاوى التاتارخانية< ৩/২১১: وفي تجنيس خواهرزاده : ويجوز أن يعطي امرأة أبيه وابنه.

আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১১; রদ্দুল মুহতার ২/৩৪৬

Sharable Link

আবু হানযালা - চট্টগ্রাম

৬৫৯৯. Question

আমরা দুই ভাই বাবার মীরাছের জমি ভাগ করতে গিয়ে ভাগের সুবিধার্থে জমির একপাশের কিছু অংশ বড় ভাই বেশি নিয়েছেন। যার মূল্য তিনি ছোট ভাইকে পরিশোধ করে দেবেন; কিন্তু এখনো করেননি।

প্রশ্ন হল, এখানে ছোট ভাইয়ের কাছে বড় ভাইয়ের যে পাওনা আছে, তার যাকাত কার ওপর আসবে? বড় ভাইয়ের ওপর, নাকি ছোট ভাইয়ের ওপর?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছোট ভাই উক্ত জমির মূল্য বুঝে পাওয়ার আগে তার ওপর সে টাকার যাকাত আসবে না। আর বড় ভাইয়ের ওপর কতটুকু যাকাত আসবে তা তার সম্পদের অবস্থার ওপর নির্ভর করে।

* >المبسوط< للسرخسي ২/১৯৫ : ودين وسط وهو أن يكون بدلا عن مال لا زكاة فيه لو بقي في ملكه، ... وفي الدين المتوسط لا يلزمه الأداء ما لم يقبض مائة درهم فحينئذ يؤدي خمسة دراهم.

শরহু মুখতাসারিল কারখী ২/২০১; গায়াতুল বায়ান ২/৬১৮; রদ্দুল মুহতার ২/৩০৫

Sharable Link

লিটন - বাঘারপাড়া, যশোর

৬৬০০. Question

আমার মায়ের ইন্তেকালের পর আমার বাবা আরেকটি বিবাহ করেন। বর্তমানে আমার বাবা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন এবং তার কোনো ইনকাম সোর্সও নেই। বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে এখন তার অন্যের খেদমতের প্রয়োজন হয়। চাকরির সুবাদে শহরে থাকার কারণে আমার পক্ষে গ্রামে থেকে তার খেদমত করাও সম্ভবপর নয়। সৎ মা-ই তার খেদমত করেন। বাবার খেদমতের জন্য আমি প্রতি মাসে কিছু টাকা পাঠাই। কিন্তু তিনি এ মাসে আমাকে বলেছেন, তুমি যে খরচ পাঠাও, তাতে একজনের খরচ হয়। তোমার মায়ের জন্যও খরচ পাঠাবে। জানার বিষয় হল, বাবার এ স্ত্রীর খরচাদি দেওয়াও কি আমার ওপর জরুরি?

Answer

সৎ মায়ের খরচাদি দেওয়া আবশ্যক নয়। সন্তানের দায়িত্ব হল, নিজ পিতা-মাতার খরচাদি দেওয়া। অসুস্থ বা বার্ধক্যের কারণে পিতা-মাতার খেদমতের প্রয়োজন হলে সেই ব্যবস্থাও সন্তানকে করতে হবে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বৃদ্ধ বাবার যেহেতু অন্যের খেদমতের প্রয়োজন, আর আপনি নিজে কিংবা অন্য কাউকে তার খেদমতের জন্য নিযুক্ত করেননি; বরং আপনার সৎ মা-ই তার খেদমত আঞ্জাম দিচ্ছে। তাই সৎ মা হিসেবে তাকে ভরণ-পোষণ দেওয়া জরুরি না হলেও এক্ষেত্রে সে আপনার বাবার খেদমতকারী হিসেবে তার খরচাদি দেওয়া আপনার ওপর আবশ্যক।

* >بدائع الصنائع< ৩/৪৪৩ : ولا تجب على الابن نفقة منكوحة أبيه؛ لأنها أجنبية عنه، إلا أن يكون الأب محتاجا إلى من يخدمه، فحينئذ يجب عليه نفقة امرأته؛ لأنه يؤمر بخدمة الأب بنفسه أو بالأجير.

শরহু কিতাবিন নাফাকাত, সদরুশ শাহীদ, পৃ. ৮৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৫১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৬৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/২০৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৬১৬

Sharable Link

আবু বকর - ফেনী

৬৬০১. Question

জনৈক মহিলার তালাক হওয়ার ৪৭ দিন পর অর্থাৎ ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে অন্যত্র বিবাহ হয় এবং সেখানে তার ঘর-সংসারও হয়। পরবর্তীতে উক্ত মহিলা একজন আলেমের কাছে সঠিক মাসআলা জানতে পেরে ঐ ব্যক্তি (দ্বিতীয় স্বামী) থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং নতুন করে ইদ্দত পালন শুরু করে। এখন জানার বিষয় হল, মহিলাটি কি এই ইদ্দতকালীন ঐ ব্যক্তি (দ্বিতীয় স্বামী) কর্তৃক ভরণ-পোষণের হকদার হবে?

Answer

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মহিলাটি এই ইদ্দত চলাকালে ঐ ব্যক্তি (দ্বিতীয় স্বামী) থেকে ভরণ-পোষণ পাবে না। কেননা দ্বিতীয় বিবাহটি তালাকের ইদ্দত শেষ হওয়ার আগে হওয়ার কারণে 'নিকাহে ফাসেদ' হয়েছে। আর নিকাহে ফাসেদে উভয়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর যে ইদ্দত জরুরি, তাতে মহিলা ঐ পুরুষ থেকে বাসস্থান, ভরণ-পোষণের হকদার হয় না।

* >مختصر الطحاوي< ص ২২৬ : وكل عدة وجبت من نكاح فاسد: فلا سكنى لها ولا نفقة.

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ৫/৩১৫; শরহু মুখতাসারিল কারখী, কুদূরী ৪/২২৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৪০৮; রদ্দুল মুহতার ৩/৫৭৫

Sharable Link

সাইফুল ইসলাম - যশোর

৬৬০২. Question

আমার ছেলে অসুস্থ হলে আমি মান্নত করেছিলাম, সে সুস্থ হলে একটি গরু জবাই করে খাওয়াব। ছেলে সুস্থ হওয়ার পর আমি মান্নত আদায়ের উদ্দেশ্যে গরু জবাই করে এলাকার এতীমখানার শিশু ও গরীব লোকদের দাওয়াত করি। তাদের সাথে আমি ও আমার সন্তানেরাও ঐ গোশত খাই। এবং আমার সম্পদশালী দুই ভাইকেও দাওয়াত করে আনি।

জানার বিষয় হল, মান্নতের গোশত খাওয়া কি আমাদের জন্য বৈধ হয়েছে? বৈধ না হয়ে থাকলে এখন কী করণীয়?

Answer

মান্নতের গোশত আপনার নিজের ও সন্তানদের খাওয়া এবং ধনীদেরকে খাওয়ানো বৈধ হয়নি। কেননা মান্নতের পশুর গোশত পুরোটাই গরীবদের হক।

এখন আপনার করণীয় হল, যে পরিমাণ গোশত আপনি, আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও ধনীরা খেয়েছে এর মূল্য গরীবদের সদকা করে দেওয়া।

* >الأجناس< للناطفي ১/১৭৭: وفي المناسك إملاء رواية بشر بن غياث: لو نذر فقال: لله علي أن أذبح شاة للمساكين، ليس للناذر أن يأكل منه، ولو أكل، عليه قيمة ما أكل.

* >تبيين الحقائق< ৬/৪৮৬ : وإن وجبت بالنذر فليس لصاحبها أن يأكل منها شيئا، ولا أن يطعم غيره من الأغنياء سواء كان الناذر غنيا أو فقيرا.

وفيه أيضا ২/১২২: لا يجوز الدفع إلى أصوله ... ولا إلى فروعه ... وكذا جميع الصدقات، كالكفارات وصدقة الفطر والنذور، لا يجوز دفعها لهؤلاء.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৩৩৬৬; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৭

Sharable Link

রুহুল আমিন - কেরানীগঞ্জ

৬৬০৩. Question

এলাকার একজন তার জরুরি কাজের জন্য আমার থেকে শাবল নিয়েছে। আমি তাকে বলেছি, পরের দিন ফেরত দিতে হবে। কিন্তু সে পরের দিন ফেরত দেয়নি। বরং আমাকে না জানিয়ে তার কাছে তিন দিন রেখে দিয়েছে। তিন দিন পর এসে আমাকে জানায়, ভাই, আমার আরো কিছু কাজ করার জন্য আপনার শাবলটি রেখে দিয়েছিলাম। কাজও প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু গত রাতে আমার সামানা রাখার ঘর থেকে আপনার শাবলসহ আমার কিছু সামানা চুরি হয়ে গেছে।

এখন হুজুরের কাছে আমি জানতে চাচ্ছি, তার থেকে আমার শাবলটি যে হারিয়ে গেল, শরীয়তের দৃষ্টিতে আমি কি তার থেকে ওই শাবলের জরিমানা নিতে পারব?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শাবলটি পরের দিন ফেরত দেওয়ার শর্তে নেওয়ার পর আপনার অনুমতি ছাড়া ঐ দিনের পরও তা নিজের কাছে রেখে দেওয়া এবং ব্যবহার করা লোকটির জন্য ঠিক হয়নি। তাই এরপর সেটি তার কোনো অবহেলা ছাড়া হারিয়ে গেলেও তার থেকে আপনি শাবলটির বাজার-মূল্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিতে পারবেন।

* >بدائع الصنائع< ৫/৩২২ :  لكنه يتقيد بالزمان، حتى لو مضى اليوم، ولم يردها على المالك، حتى هلكت يضمن.

কিতাবুল আছল ৮/৪৫০; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৩৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৩১; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/২১; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৮৩

Sharable Link

আনোয়ার হোসাইন - চৌমুহনী, নোয়াখালী

৬৬০৪. Question

আমার ছোট চাচার লেয়ার মুরগির খামার আছে। এর মাধ্যমে তিনি ডিম উৎপাদন করে ডিমের ব্যবসা করে থাকেন। একবার এক অজ্ঞাত কারণে তার খামারের অনেকগুলো মুরগি মরে যায়। পরে সেখানে কর্মরত এক কর্মচারী চাচার অজান্তেই ঐ মরা মুরগিগুলোর পেট থেকে যে ডিমগুলো খোসাসহ পূর্ণ ডিম হয়েছে, তা বের করে রেখে দেয় এবং জীবিত মুরগির ডিমের সাথে মরা মুরগির ডিম একত্র করে বিক্রি করে দেয়।

এখন আমাদের জানার বিষয় হল, মরা মুরগিগুলোর ডিমের ক্রয়-বিক্রয় সহীহ হয়েছে কি? সহীহ না হলে এখন করণীয় কী?

Answer

মরা মুরগির ভেতর থেকে পাওয়া খোসাযুক্ত ভালো ডিমের ক্রয়-বিক্রয় সহীহ আছে। কেননা তা জীবিত মুরগির ডিমের মতোই হালাল। মুরগি মরে যাওয়ার কারণে এর ভেতরে বিদ্যমান এ ধরনের ডিম হারাম হয়ে যায় না। সুতরাং তা খাওয়া এবং বিক্রি করা জায়েয আছে।

* >مختصر الطحاوي< ص ২৯৯ : ومن ماتت له دجاجة، فخرجت منها بيضة: فلا بأس عليه بأكلها.

আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ১/১১৯; আলফাতাওয়াস সুগরা, সদরুশ শাহীদ ২/৪১৬; আলমাবসূত, সারাখসী ২৪/২৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৬০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৯৩

Sharable Link

আবু হুরায়রা - কুমিল্লা

৬৬০৫. Question

আমি এক ছাতা ব্যবসায়ী থেকে ২৭৫ টাকা করে ৫০ পিস ছাতা খরিদ করি। তার সাথে আমার এভাবে চুক্তি হয়েছিল যে, প্রতি পিছ ছাতায় সে তার কেনা মূল্য ও খরচের ওপর ২০ টাকা করে লাভ নেবে। এই চুক্তির পর বিক্রেতা আমাকে ছাতাগুলো বুঝিয়ে দিয়ে মূল্য পরিশোধের জন্য এক সপ্তাহ সময় দেয়। এরই মধ্যে আমি বিভিন্নভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিতভাবে জানতে পারি যে, বাস্তবে বিক্রেতার কেনা মূল্য প্রতি পিস ছাতা ২৩২ টাকা। আনুষঙ্গিক খরচসহ (বিক্রেতার কথা অনুযায়ী ৭ টাকা) যার মূল্য মোট ২৩৯ টাকা হয়। কিন্তু বিক্রেতা বিক্রয় চুক্তির সময় তার কেনা মূল্য আমাকে ২৪৮ টাকা করে বলেছে। আর আনুষঙ্গিক খরচ ৭ টাকা ধরে ২৫৫ টাকা হিসাব করেছে। অর্থাৎ সে তার কেনা মূল্য ও খরচের ওপর আমাকে ১৬ টাকা করে বাড়িয়ে বলেছে, ফলে ২০ টাকার পরিবর্তে প্রতি পিস ছাতায় সে ৩৬ টাকা করে লাভ ধরেছে।

এখন আমি জানতে চাই, যেহেতু ২০ টাকা করে লাভ নেওয়ার শর্তে বিক্রয় চুক্তিটি হয়েছিল, তাই এখন আমি কি বিক্রেতাকে ছাতাগুলোর মূল্য ৩৬ টাকা লাভে পরিশোধ না করে ২০ টাকা লাভে পরিশোধ করতে পারব?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্রয়-বিক্রয়ে যেহেতু বিক্রেতা তার পূর্ব কেনা মূল্যের ওপর নির্ধারিত অংকের লাভ গ্রহণ করবে এই শর্তের ভিত্তিতে আপনি তার সাথে চুক্তি করেছেন, তাই এটি বাইয়ে মুরাবাহার অন্তর্ভুক্ত। অতএব এক্ষেত্রে বিক্রেতা ক্রয় মূল্য বলার ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়ার কারণে আপনার জন্য দুটি সুযোগ রয়েছে।

একটি হল, আপনি ক্রয়কৃত ছাতা নিতে চাইলে প্রতি পিসের মূল্য বাবদ ২৭৫ টাকাই পরিশোধ করতে হবে; ২৫৯ টাকা করে নয়।

অবশ্য বিক্রেতার নৈতিক কর্তব্য হল, যেভাবে আপনার সাথে তার চুক্তি হয়েছে সেভাবেই মূল্য নেওয়া; বাড়িয়ে না নেওয়া।

দ্বিতীয়টি হল, আপনি যদি এই দামে ছাতাগুলো নিতে না চান, তাহলে চুক্তি বাতিল করে ছাতাগুলো ফেরতও দিতে পারবেন। তবে ছাতাগুলো ফেরত না দিতে চাইলে বিক্রেতার সম্মতি ছাড়া ২০ টাকা লাভ ধরে ২৫৯ টাকা করে মূল্য প্রদানের সুযোগ নেই।

তবে উল্লেখ্য যে, বাইয়ে মুরাবাহা হোক বা সাধারণ ক্রয়-বিক্রয়, সকল ক্ষেত্রেই ক্রেতাকে পণ্যের মূল্য বা গুণগত মান বলার ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা যে কবীরা গুনাহ, এর মাধ্যমে যে ব্যবসার বরকত কমে যায়, তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

ক্রেতা-বিক্রেতা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا، وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا.

যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত দেওয়া হবে, আর যদি দোষ-ত্রুটি গোপন করে এবং মিথ্যা বলে, তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত নষ্ট করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২০৭৯)

তাই মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে সততা ও সত্যবাদিতার সাথে ব্যবসা করা জরুরি।

* كتاب >الأصل< ২/৪৮২: وإذا باع الرجل متاعاً مرابحة، فخانه في المرابحة ودلس له، فإن المشتري بالخيار إذا اطلع على ذلك: إن شاء رد المتاع، وإن شاء أخذه بالثمن الذي اشتراه به، لا ينقص منه شيئاً.

আলমুহীতুর রাযাবী ২/৬৩১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৬৯; আলইখতিয়ার ২/৬৯; দুরারুর হুক্কাম শরহু মাজাল্লাতিল আহকাম ১/৩৭৩, ৩৬৯

Sharable Link

আবু হুরায়রা - চৌমুহনী, নোয়াখালী

৬৬০৬. Question

গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক বাড়ির মালিকের সাথে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে আমার চুক্তি হয় যে, আগামী মার্চ মাস থেকে পরিবারসহ আমি তার বাড়িতে বসবাস করব। চুক্তি অনুযায়ী বাড়ির মালিক মার্চ মাস শুরু হওয়ার আগে বাড়িটি খালি করে দিয়ে আমাকে এর তালা-চাবি বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু পারিবারিক এক জটিলতার কারণে এক মাস পর এপ্রিল মাসে আমি সেই বাড়িতে উঠি। বাড়ির মালিক এখন আমার কাছে মার্চের ভাড়াও চাচ্ছেন।

প্রশ্ন হল, মার্চ মাসে আমি তো সেই বাড়িতে থাকিনি। এমতাবস্থায় এখন আমাকে কি এই মাসের ভাড়াও পরিশোধ করতে হবে?

Answer

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে মার্চ মাসের পূর্ণ ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। কেননা বাড়িওয়ালার সাথে মার্চ থেকে যেহেতু আপনি ভাড়া নেওয়ার চুক্তি করেছেন এবং বাড়ির মালিকও তখন থেকেই বাড়িটি খালি করে দিয়ে বসবাস উপযোগী করে আপনাকে বুঝিয়ে দিয়েছে, তাই এরপর আপনি তাতে বসবাস না করলেও নির্ধারিত মাস থেকে এর ভাড়া পরিশোধ করা আপনার ওপর আবশ্যক।

* >المحيط البرهاني< ১১/২২৫ : وكما يجب الأجر باستيفاء المنافع، يجب بالتمكن من استيفاء المنافع، إذا كانت الإجارة صحيحة، حتى إن من استأجر داراً أو حانوتا مدة معلومة، ولم يسكن فيها في تلك المدة مع تمكنه من ذلك، يجب الأجر.

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ৩/৩৯৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৮০; রদ্দুল মুহতার ৬/১১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ ৪৭০

Sharable Link

মীযানুর রহমান - যশোর

৬৬০৭. Question

আমি দোকান থেকে এক কেজি মিষ্টি কিনেছি। বাসায় আনার পর দেখলাম সেগুলো বাসি। স্বাদও পরিবর্তন হয়ে গেছে। তবে একেবারে খাওয়ার অযোগ্য ছিল না। সেখান থেকে আমরা কয়েকটা খেয়েছি। আর বাকিগুলো কাজের বুয়াকে দিয়ে দিয়েছি। প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে কি বিক্রেতা থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করার সুযোগ আছে?

Answer

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মিষ্টিগুলো বাসি এবং স্বাদ পরিবর্তনের বিষয়টি জানা সত্ত্বেও যেহেতু আপনারা তা খেয়েছেন এবং অন্যকেও দিয়েছেন, তাই এখন আর বিক্রেতা থেকে এর ক্ষতিপূরণ দাবি করার সুযোগ নেই। মিষ্টিগুলো ফেরত দিতে চাইলে বাসি হয়ে গেছে বোঝার পর তা না খেয়ে ফেরত দেওয়ার সুযোগ ছিল। যেহেতু তা করা হয়নি, তাই বিক্রেতা থেকে এর ক্ষতিপূরণ নেওয়ার অধিকার বাতিল হয়ে গেছে।

* >البحر الرائق< ৬/৫৫ : ولا بد أيضا من أن لا يتناول منه شيئا بعد العلم بعيبه؛ لأنه لو كسره فذاقه ثم تناول منه شيئا، لم يرجع بنقصانه.

কিতাবুল আছল ২/৪৯১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৫৭০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৩৪৭; ফাতহুল কাদীর ৬/১৮; রদ্দুল মুহতার ৫/২৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী

৬৬০৮. Question

কয়েকদিন আগে আমাদের মাদরাসার পুকুর পাড়ে একটি গরু জবাই করা হয়। জবাই করার সময় গরুটিকে ধরার মতো অনেক লোক থাকায় এর পা হালকা করে বাঁধা হয়। তাই জবাইয়ের পর গরুটি নড়াচড়া করতে করতে পায়ের রশি খুলে পুকুরে পড়ে যায় এবং পানিতে ডুবেই এর মৃত্যু হয়। পরে তা খাওয়াও হয়।

এখন আমার জানার বিষয় হল, জবাইয়ের পর পানিতে ডুবে গরুটির মৃত্যু হওয়াতে কোনো অসুবিধা হয়েছে কি? এবং এর গোশত খাওয়া জায়েয হয়েছে কি?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু গরুটির জবাই যথাযথভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরই এটি পানিতে পড়েছে, তাই এর গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই। যথাযথভাবে জবাই সম্পন্ন হওয়ার পর সেটি পানিতে পড়ে গেলেও পানিতে পড়ার কারণে মারা গেছে বলে ধর্তব্য হবে না; বরং এটির মৃত্যু শরীয়তসম্মত পন্থায় জবাই দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে বলেই ধর্তব্য হবে। তাই এর গোশত সম্পূর্ণ হালাল।

* >المبسوط< للسرخسي ১২/৩ : قال: (وإن ذبح الشاة فاضطربت فوقعت في ماء، أو تردت في موضع لم يضرها شيء)؛ لأن فعل الذكاة قد استقر فيها، فإنما انزهق حياتها به، ولا معتبر باضطرابها بعد استقرار الذكاة، فهذا لحم وقع في ماء، أو سقط من موضع.

কিতাবুল আছল ৫/৩৯৮; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/৪৮; যাদুল ফুকাহা ২/২৯২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯০; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৬৯

Sharable Link

সাহাবুদ্দীন - ঢাকা

৬৬০৯. Question

আমার ছেলে বিদেশ থেকে আসার সময় একটি রূপার তাসবীহ এনেছে। হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এ তাসবীহ আমি বা আমার স্ত্রী ব্যবহার করতে পারব কি?

Answer

না, রূপার তাসবীহটি আপনি বা আপনার স্ত্রী কারো জন্য ব্যবহার করা জায়েয হবে না। কেননা সোনা-রূপার তাসবীহ ব্যবহার করা নারী-পুরুষ কারো জন্যই জায়েয নয়।

* >الدر المختار< مع >رد المحتار< ৬/৩৪১ : (وكذا) يكره (الأكل بملعقة الفضة والذهب والاكتحال بميلهما) وما أشبه ذلك من الاستعمال، كمكحلة ومرآة وقلم ودواة ونحوها.

>رد المحتار< : (قوله وما أشبه ذلك إلخ) ومنه الخوان من الذهب والفضة، والوضوء من طست أو إبريق منهما، والاستجمار بمجمرة منهما، والجلوس على كرسي منهما، والرجل والمرأة في ذلك سواء.

আলআজনাস, নাতিফী ২/৪০১; আলমুহীতুর রাযাবী ৫/১৪-১৫; আলইখতিয়ার ৪/১২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩৪ 

Sharable Link