যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিন বার ভিজিয়ে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি না? এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কী?
যদি কোনো ব্যক্তি ফরয গোসলে নাকের ভেতরে পানি প্রবেশ না করিয়ে শুধু আঙ্গুল ভিজিয়ে নাকের ভিতরটা তিন বার ভিজিয়ে নেয় তাহলে তার গোসল হবে কি না? এবং নাকের ভিতরে পানি প্রবেশ করানো ও তা পরিষ্কার করার পদ্ধতি কী?
ফরয গোসলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো ফরয। শুধু আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা ভিজিয়ে নেওয়া যথেষ্ট নয়। এর দ্বারা নাকে পানি পৌঁছানোর ফরয আদায় হবে না। আর নাকে প্রথমে পানি পৌঁছাবে, এরপর বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল দ্বারা নাকের ভিতরটা পরিষ্কার করে নিবে। যেন কোনো অংশ শুকনা না থেকে যায়। এভাবে তিনবার নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি প্রবেশ করাবে।
Sharable Link-সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২২২, ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫১, ১১৫
আমি একজন মাজুর ব্যক্তি। বয়স আশির ঊর্ধ্বে। ৫০ বছরের উপর ডায়াবেটিস রোগসহ বহুমুখী রোগে আক্রান্ত। যেমম, কোমর ব্যথা, হাঁটু ব্যথা, পায়ের তলা ব্যথা ও বোধহীন অবস্থা। ডাক্তার দেখালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা গেছে, কোমরের হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে। হাঁটুর ক্যালসিয়াম শুকিয়ে গেছে ইত্যাদি। ডাক্তারের নির্দেশ হল, হাঁটু ভাজ করা যাবে না। সিঁড়ি বাওয়া যাবে না। উপুর হওয়া যাবে না। ভারি কোনো জিনিস বহন করা যাবে না। চেয়ারে বসে নামায পড়তে হবে। হাই কমোড ব্যবহার করতে হবে ইত্যাদি। হাঁটতে খুব কষ্ট হয়। কোমর ধরে ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
বর্তমানে চেয়ারে বসে নামায পড়ি। কিন্তু চেয়ারে নামায পড়ার কারণে কপাল মাটিতে লাগে না বিধায় মনে খুব কষ্ট যে, আল্লাহ তাআলাকে সিজদা করতে পারছি না। নিয়মিত জামাতে নামায আদায় করতে পারছি না- হাঁটা-চলার কষ্টে। কখনো কখনো রাস্তা-ঘাটে বা বাসায় হাই কমোড না পাওয়ার কারণে দাঁড়িয়ে পেশাব করতে হয়। এ ব্যাপারে শরীয়ত কী বলে? বয়সের কারণে নামাযের মধ্যে ভুল হয়ে যায়। এজন্য কী হুকুম? বেশির ভাগ ঘরেই নামায আদায় করি। সিজদা করার জন্য সিজদার জায়গায় একটি টেবিল বা উঁচু কাঠের কিছু যদি বানিয়ে নিই। এ ব্যাপারে কী হুকুম?
আর আশির ঊর্ধ্বে বয়সের কারণে ও ডায়াবেটিস থাকায় যৌন শক্তি না থাকলে তার জন্য পর্দার হুকুম কী? কুরআন-হাদীস মোতাবেক এর ফয়সালা চাই।
প্রশ্নে কয়েকটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে।
ক. চেয়ারে বসে নামায আদায় করা এবং সামনে টেবিল বা কোনো কিছু রেখে তাতে সিজদা করা।
খ. অসুস্থতার কারণে মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ না করা।
গ. নামাযে ভুল হওয়া।
ঘ. দাঁড়িয়ে পেশাব করা।
ঙ. বয়স্ক ব্যক্তির জন্য পর্দার বিধান।
উত্তর (ক) : প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী শারীরিক দুর্বলতা, হাঁটু-কোমরের ব্যথার কারণে আপনি যদি দাঁড়ানো থেকে স্বাভাবিক নিয়মে রুকু করতে এবং সমতলে সিজদা করতে সক্ষম না হন অথবা তা করা বেশ কষ্টসাধ্য হয় আর আপনার অসুস্থতাও এমন পর্যায়ের হয় যে, শুরু থেকে সমতলে বসেও নামায আদায় করা কষ্টকর হয় তাহলে এ অবস্থায় আপনার জন্য চেয়ারে বসে ইশারায় রুকু সিজদা করে নামায আদায় করা ঠিক আছে।
এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল, আপনি যদি দাঁড়িয়ে নামায শুরু করতে সক্ষম হন এবং নামায অবস্থায় দাঁড়ানো থেকে রুকু-সিজদার জন্য চেয়ারে বসতে অসুবিধা না হয় তাহলে বিশুদ্ধ মতানুযায়ী নামাযের কিয়াম আপনাকে দাঁড়িয়েই আদায় করতে হবে। অতপর রুকু-সিজদা এবং বৈঠক চেয়ারে বসে আদায় করবেন।
ইশারায় সিজদা আদায় করার ক্ষেত্রে সামনে টেবিল, কাঠ ইত্যাদি উঁচু বস্তু রাখবে না। কেননা সিজদার জন্য সামনে টেবিল বা উঁচু বস্তু রাখা দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়; বরং কোনো কোনো সাহাবী-তাবেয়ী এমনটি করতে নিষেধ করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৮২৮-২৮৪১)
আর অসুস্থতার কারণে জমিনে সিজদা না করতে পারার যে আক্ষেপের কথা আপনি উল্লেখ করেছেন, একজন মুমিনের এ আক্ষেপ থাকাই স্বাভাবিক। আল্লাহ তাআলার জন্য সিজদায় মাটিতে লুটিয়ে পড়া একজন মুমিনের পরম পাওয়া ও সৌভাগ্যের বিষয়।
তবে এটাও ঠিক যে, সুস্থতা অসুস্থতা আল্লাহ তাআলারই দান। অসুস্থ অবস্থার ইবাদত-বন্দেগী, রুকু-সিজদা আল্লাহ তাআলার নিকট সুস্থ অবস্থার মতই গ্রহণযোগ্য ও প্রিয়।
হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
إِذَا مَرِضَ العَبْدُ أَوْ سَافَرَ كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا.
বান্দা যখন অসুস্থ হয় বা সফরে বের হয় তখন মুকীম ও সুস্থ অবস্থায় সে যা আমল করত ঐ সাওয়াবই তার জন্য লিখা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৯৯৬)
প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে সামান্য অসুস্থতা, দুর্বলতা, হালকা ব্যথা-বেদনার অযুহাতে চেয়ারে বসে নামায আদায়ের প্রবণতা অনেকের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে। দিন দিন এ প্রবণতা বেড়েই চলছে। ফলে মসজিদে মসজিদে চেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ চেয়ারে বসে নামায আদায়কারীদের মধ্যে এমন লোকও থাকে, যার জন্য সামান্য ঐ অসুস্থতা বা দুর্বলতা নিয়ে ফরয-ওয়াজিব নামায চেয়ারে বসে আদায় করা জায়েযই নয়। এবং এক্ষেত্রে চেয়ারে বসে ইশারায় রুকু সিজদা করে নামায আদায় করার কারণে তার নামাযই শুদ্ধ হয় না। এমন অনেক ব্যক্তিও থাকেন, যারা হাঁটা-চলা, উঠাবসা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবেই করে যাচ্ছেন। কিন্তু নামাযের সময় তারা মাযুর হয়ে চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন। এটি খুবই দুঃখজনক।
এজন্য চেয়ারে বসে নামায আদায়ের জায়েয-নাজায়েয দিকগুলো কোনো নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে জেনে নেওয়া দরকার।
উত্তর (খ) : পুরুষের জন্য ফরয নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ করা যদি কষ্টকর না হয় এবং হাঁটা-চলার কারণে রোগ-ব্যাধি বেড়ে না যায় তাহলে মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে নামায আদায় করার চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু যদি মসজিদে যাতায়াতের কারণে ব্যথা-বেদনা বেড়ে যায় তাহলে মসজিদের জামাতে অংশগ্রহণ না করলে গুনাহ হবে না।
উত্তর (গ) : আপনি নামাযে ভুল হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কী ধরনের ভুল হয় তা উল্লেখ করেননি। তাই ভুলের দিকগুলো নির্দিষ্ট করে প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
উত্তর (ঘ) : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লো কমোডে বা সমতলে পেশাব করা যেহেতু আপনার জন্য কষ্টকর তাই হাই কমোডের ব্যবস্থা না থাকলে দাঁড়িয়ে পেশাব করা যাবে। এতে অসুবিধা নেই। তবে সম্ভব হলে হাই কমোডের ব্যবস্থা করে নেওয়া ভালো।
উত্তর (ঙ) : বৃদ্ধ পুরুষের জন্যও বেগানা নারীর সাথে পর্দা করা ফরয। আশি বা তদোর্ধ্ব বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের থেকে পর্দার বিধান রহিত হয়ে যায় না। তাই এ বয়সেও পরনারীর সাথে পর্দা রক্ষা করে চলতে হবে। পরনারীর সাথে নির্জনবাস, ঘনিষ্ঠতা, তার থেকে শারীরিক খেদমত নেওয়া বা দেখা-সাক্ষাৎ জায়েয হবে না।
হাঁ, কোনো মহিলা যদি আপনার শারীরিক অসুস্থতা বা কোনো বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে আসে তাহলে তার সাথে কুশলাদি বিনিময় করা দূষণীয় হবে না। এমনিভাবে পর্দার আড়ালে থেকে কেউ আপনার খাবার-দাবার ও ঔষধ-পত্রও দিতে পারবে।
Sharable Link-উমদাতুল কারী ৩/১৩৫; তুহফাতুল ফুকাহা ৩/৩৩৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮৪; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২৪৩; মারাকিল ফালাহ পৃ. ৩০; ইলাউস সুনান ৭/২০১
আমার নিজ শহরের যাকাতের হকদারদের চেয়ে অন্য শহরের মুহাজির মুসলিমগণ অধিক নিঃস্ব। তাই এ বছর তাদেরকে যাকাত দেওয়ার ইচ্ছা করেছি। এদিকে নিজ শহরের হকদারগণ বঞ্চিত হয়ে তারাও অসন্তুষ্ট হতে পারে। এখন আমার প্রশ্ন হল, এ অবস্থায় কাদেরকে যাকাত দেয়া উত্তম হবে?
নিজ শহরের চেয়ে অন্য শহরের মুসলমানরা অধিক নিঃস্ব হলে তাদেরকে যাকাত দেওয়া উত্তম হবে।
প্রকাশ থাকে যে, যাকাতের পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী নফল দান-সদকা করা; গরীব আত্মীয়-স্বজন ও দরীদ্র প্রতিবেশী এবং অসহায় মানুষের সহায়তা করাও ইসলামের শিক্ষা। তাই ফরয যাকাত আদায়ের পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী নফল দান-খয়রাতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
Sharable Link-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১০৪১৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৫০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৩১; আলজাওহারাতুন নাইয়িরাহ ১/১৭০; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫৩
দেড় বছর আগে একটি বিশেষ কারণে আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিই। তখন আমাদের একটি ৫ মাসের ছেলে ছিল। ছেলেটি খুব ছোট থাকায় আমি তাকে তার মা’র কাছে রাখি এবং তার যাবতীয় খরচ বহন করি। কিছুদিন হল সে একটি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। এখন আমি ছেলেটিকে আমার কাছে নিয়ে আসতে চাচ্ছি। কিন্তু তার মায়ের পরিবার অর্থাৎ আমার শাশুড়ি বাচ্চাটি কোনোভাবেই ফেরত দিতে চাচ্ছে না। আর এই বিষয়ে তার ছেলেরা তাকে সহায়তা করছে। মুহতারামের নিকট আমার জিজ্ঞাসা হল, এই অবস্থায় যখন মা নেই, তারাই কি সন্তানের ব্যাপারে বেশি হকদার নাকি পিতা হিসাবে আমি?
মায়ের অনুপস্থিতিতে শিশুর লালন-পালনের অধিকার তার নানির উপর বর্তায়। পুত্র সন্তান একা একা নিজের ব্যক্তিগত কাজ (যেমন, পানাহার, পোশাক পরিধান, ইস্তিঞ্জা) করতে পারে এরকম বয়স হওয়া পর্যন্ত নানি তাকে রাখতে পারবে। ফুকাহায়ে কেরাম সাধারণ অভিজ্ঞতার আলোকে এই বয়সসীমা নির্ধারণ করেছেন সাত বছর। এই বয়স পূর্ণ হওয়ার পর পিতা ছেলেকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারবেন। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শিশুর নানি যেহেতু তার লালন-পালনে আগ্রহী, তাই উক্ত বয়সসীমা পূর্ণ হওয়ার আগে আপনি তাকে জোর করে আনতে পারবেন না।
Sharable Link-কিতাবুল আছল ১০/৩৫১; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৫/৩২৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৭২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪৫৭; আননাহরুল ফায়েক ২/৫০০
একবার ভাইয়া-ভাবীর প্রচ- ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে ভাইয়া তাকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘তুমি তালাক, চুপ করো বলছি!’ একথা শুনে অবাক হয়ে আম্মা বললেন, বাবা, তুই কী বললি!? ভাইয়া বলে, বলেছি, ‘ও তালাক’ এরপর আব্বা, ভাইয়ার শ্বশুর এবং অন্যান্যরা ফোন করে আম্মার মতো প্রশ্ন করতে থাকলে ভাইয়া আগের মতই উত্তর দিয়ে যান। জানার বিষয় হল, তালাক দেওয়ার পর বিভিন্নজনের জানতে চাওয়ার প্রেক্ষিতে এভাবে একের পর এক তালাক শব্দ যে উচ্চারণ করা হল, এর দ্বারা আসলে কয় তালাক হয়েছে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কেবল এক তালাকে রাজয়ী হয়েছে। প্রথমবার তালাক দেওয়ার পর অন্যদের প্রশ্নের জবাবে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে যে তালাক শব্দ উচ্চারণ করা হয়েছে তা দ্বারা নতুন করে কোনো তালাক হয়নি। সুতরাং এখন ইদ্দতের ভেতরেই আপনার ভাই যদি তাকে আবার স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করে নেয় তবে সে তার স্ত্রী হয়ে যাবে। নতুন করে বিবাহ করা লাগবে না। কিন্তু ইদ্দতের ভিতরে যদি স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ না করে বা স্বামী-স্ত্রীসুলভ কোনো আচরণও যদি না হয়, তবে তালাকটি বায়েন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে উভয়ে একত্রিত হতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করত সাক্ষীদের সামনে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৮৮; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯৩
আমার এক বন্ধুর দুই ছেলে এক মেয়ে। শালির সাথে কিছুদিন আগে তার অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হয়। বিষয়টি এখনো সবার অজানা এবং সেও বেশ অনুতপ্ত। জানার বিষয় হল, তার বর্তমান বৈবাহিক সম্পর্কের হুকুম কী? তার স্ত্রী কি তার জন্য হারাম হয়ে গিয়েছে?
যে কোনো ব্যভিচারই জঘন্যতম কবীরা গুনাহ। আর স্ত্রীর বোনের সাথে এমনটি করা আরো ভয়াবহ গুনাহ। তাদেরকে অবশ্যই খাঁিট দিলে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে এবং উভয় পক্ষকে সবসময় পর্দার ফরয বিধান মেনে চলতে হবে। তবে একারণে লোকটির জন্য তার স্ত্রী হারাম হয়ে যায়নি। তারা ঘরসংসার চালিয়ে যেতে পারবে।
Sharable Link-মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ১৬৬১৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৭; ফাতহুল কাদীর ৩/১২৩; জামেউর রুমূয ৩/৩১৪; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৯০; রদ্দুল মুহতার ৩/৩৪, ৬/৩৮০
মুহতারাম, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে এক বাড়িতে থাকি, যা আমার বাবা তার জীবদ্দশায় মায়ের নামে লিখে দিয়েছেন। এখানে মায়ের ও আমাদের রুম ভিন্ন এবং ওয়াশরুমও ভিন্ন। বিয়ের পর থেকে আমার স্ত্রী আলাদা বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে। তার যুক্তি হল, ‘তোমার বড় ভাই যদি তোমার ভাবিকে নিয়ে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারে তাহলে তুমি কেন পারবে না।’ কিন্তু একে তো আমার এই পরিমাণ সামর্থ্য নেই যে, আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকব। তাছাড়া আলাদা হয়ে যাবার মতো কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলেও মনে হয় না। অর্থাৎ কারণে অকারণে ঝগড়া-বিবাদ, মনোমালিন্য বা একে অন্যের খুঁত ধরা- এজাতীয় কিছু তাদের মাঝে সাধারণত হয় না। শুধু বড় ভাইয়ের স্ত্রীর প্রতি ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে সে এরকম আলাদা বাসা ভাড়া নেওয়ার আবদার করছে। মুহতারামের নিকট জিজ্ঞাসা হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে তার এই আবদার কি ঠিক আছে?
আপনার স্ত্রীর জন্য যেহেতু আলাদা রুম ও ভিন্ন ওয়াশরুমের ব্যবস্থা আছে এবং আপনার সামর্থ্যও যেহেতু কম। তাই এসব বিবেচনা করে এই পরিস্থিতিতে আপনার স্ত্রীর জন্য আলাদা বাসা ভাড়া নেওয়ার দাবি করা শরীয়তসম্মত নয় এবং আপনার জন্যও তা মানা জরুরি নয়।
Sharable Link-ফাতহুল কাদীর ৪/২০৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৫২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪২৮; আলবাহরুর রায়েক ও মিনহাতুল খালিক ৪/১৯৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৩৯৮
গত জুমাদাল আখিরাহ মাসের ১৫ তারিখে আমার এক প্রতিবেশীর ভগ্নিপতি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আমরা জানি, কারো স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্য চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হয়। সে অনুযায়ী তার বোনও ইদ্দত পালন করছে। এখন জানার বিষয় হল, এখন সে চার মাস দশ দিন কীভাবে হিসাব করবে? তার স্বামী তো মারা গেছে মাস শুরু হওয়ার ১৫ দিন পর। এক্ষেত্রে যদি দিনের হিসাব হয়, তাহলে প্রত্যেক মাসকে ২৯ দিন ধরবে, নাকি ৩০ দিন ধরবে? দয়া করে জানিয়ে উপকৃত করবেন।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার স্বামী যেহেতু মাসের মাঝে মারা গেছেন তাই তাকে প্রত্যেক মাস ৩০ দিন হিসাবে ধরে মোট ১৩০ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩১০; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/২২৭; আলইখতিয়ার ৩/২৫৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫২৭
কয়েকদিন আগে আমাদের এলাকার একটি লোক মারা যান। লোকটি অনেক ধনী ছিলেন। তিনি দুই বিবাহ করেছিলেন। প্রথম স্ত্রী থেকে তার দুই ছেলে তিন মেয়ে আর দ্বিতীয় স্ত্রী থেকে এক ছেলে। লোকটি মারা যাওয়ার পাঁচ মাস পূর্বে স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিলেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে প্রথম স্ত্রীর ঘরেই থাকতেন। তখন প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানেরা তাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরামর্শ দেয়। তাদের কথা অনুযায়ী তিনি কয়েকজন আত্মীয়-স্বজনের সামনে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডেকে বলেন, ‘আজ থেকে তুমি তালাক’। তালাক দেওয়ার দেড় মাস পর তিনি মারা যান। এখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী মিরাসের সম্পত্তি পাবে কি না এ নিয়ে আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কথা চলছে। তাই মুহতারামের নিকট দুটি বিষয়ে সঠিক সমাধান চাচ্ছি :
এক. লোকটির দ্বিতীয় স্ত্রী মিরাসের সম্পত্তি পাবে কি না?
দুই. প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানদের দাবি হল, লোকটি ‘আজ থেকে তুমি তালাক’ এ কথা বলে বায়েন তালাকের নিয়ত করেছিল। তাই সে সম্পত্তি পাবে না। জানার বিষয় হচ্ছে, ‘তুমি তালাক’- বলে বাইন তালাকের নিয়ত করা যায় কি না?
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় স্ত্রীর ইদ্দত এখনো শেষ হয়নি।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটি তার স্ত্রীকে ‘আজ থেকে তুমি তালাক’- একথা বলার দ্বারা তার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রাজয়ী পতিত হয়েছে। এক্ষেত্রে বায়েন তালাকের নিয়ত ধর্তব্য নয়। কারণ বায়েনের জন্য শব্দ জরুরি। শুধু নিয়ত যথেষ্ট নয়। আর তালাকে রাজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীর ইদ্দতের মধ্যে স্বামী মারা গেলে উক্ত স্ত্রী স্বামী থেকে মিরাস পায়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্ত্রীও তার স্বামী থেকে মিরাস পাবে।
উল্লেখ্য, ‘মৃত্যুর আশংকা রয়েছে এমন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে মিরাস থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে বায়েন তালাকও দেয় এবং স্ত্রীর ইদ্দতের মধ্যে স্বামী ঐ রোগেই মারা যায় তাহলে ঐ স্ত্রী মিরাসের অধিকারী হয়।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/৩৯; আলইখতিয়ার ৩/১৫২; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৬৩; ফাতহুল কাদীর ৪/২
আমার মামাতো বোনের তুলনায় ওর স্বামীর বয়স অনেক বেশি ছিল। সে কারণে ওদের মধ্যে কোনো বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলেই আমার মামাতো বোন বলত, তুমি যদি আমাকে তালাক দিয়ে দাও তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই। গত সপ্তাহে আবার ঝগড়া হলে আমার মামাতো বোন কথার একপর্যায়ে বলে উঠে, তাহলে তুমি আমাকে তালাক দিয়ে দাও। তখন ওর স্বামী রাগের মাথায় বলে ফেলেছে, যা দিলাম। মুখে তালাক বা এজাতীয় কোনো শব্দ উল্লেখ করেনি। এখন একথা বলার দ্বারা তালাক হয়েছে কি না? কয়েকজন থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। সঠিক মাসআলাটি মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি। আর যদি তালাক হয়ে যায় তাহলে পুনরায় একত্রে থাকতে চাইলে কী করণীয়?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী স্ত্রীর ‘তুমি তালাক দিয়ে দাও’- এ কথার জবাবে যেহেতু স্বামী বলেছে ‘যা দিলাম’ তাই স্ত্রীর (আপনার মামাতো বোনের) উপর এক তালাকে রাজয়ী পতিত হয়েছে। তার স্বামী চাইলে ইদ্দতের মধ্যে পুনরায় তাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। এক্ষেত্রে শুধু এতটুকু বললেও যথেষ্ট হবে যে, আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম বা স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নিলাম।
উল্লেখ্য, তালাক হল বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে উভয়ের তা থেকে নিষ্কৃতির সর্বশেষ পথ। তাই অত্যন্ত ভেবেচিন্তে ও পরামর্শ সাপেক্ষে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীকে তালাক দিতে বলা এবং সে অনুযায়ী স্বামীরও তালাক দিয়ে দেওয়া অন্যায়। এবং ক্ষেত্রবিশেষ সন্তানদের প্রতি জুলুম হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।
আরো উল্লেখ্য, শরীয়তে তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়, যা ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়, রাগ বা স্বাভাবিক অবস্থায়, এমনকি ঠাট্টাচ্ছলে দিলেও কার্যকর হয়ে যায়।
Sharable Link-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৯৪
আমাদের এক বোনকে কিছু দিন আগে তার স্বামী তালাক দিয়ে দেয় এবং দু’জনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী আমাদের বোন তার ইদ্দত পূর্ণ করে। এরপরই তার বিবাহের নতুন সম্বন্ধ আসতে শুরু করে। এদিকে তাদের পনেরো মাস বয়সের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এই মুহূর্তে সে তার মায়ের কাছেই অর্থাৎ আমাদের বাড়ীতেই আছে। তবে তার বাবার পরিবার থেকে বলা হচ্ছে, মেয়ের মা যদি অন্যত্র বিবাহ করে তাহলে সে বা এ বাড়ীর অন্য কেউ বাচ্চার লালন-পালনের অধিকার ধরে রাখতে পারবে না। বাবার পরিবারই নাকি তখন মেয়ের প্রতিপালনের একমাত্র হকদার। মুহতারামের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, শরীয়তের দৃষ্টিতে বাচ্চার প্রতিপালনের বেশি হকদার কে? মা নাকি বাবা? তাছাড়া বাচ্চার মা অন্যত্র বিবাহ করলে কি সত্যিই সে আর বাচ্চার প্রতিপালনের অধিকার রাখে না? যদি নাও রাখে তথাপি মায়ের পর বাচ্চার প্রতিপালনের বেশি হকদার কে? এবং এর কোনো সময়সীমা আছে কি না? বিস্তারিত জানতে আগ্রহী।
মা-বাবার মাঝে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মা শিশু-সন্তানের লালন-পালনের অধিকার রাখে। তবে যদি মা এ সন্তানের মাহরাম নয় এমন কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তাহলে তার এ অধিকার থাকবে না। মায়ের পর নানী এবং তার অবর্তমানে দাদী পর্যায়ক্রমে এ অধিকার লাভ করবে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنّ أَبَاهُ طَلّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: أَنْتِ أَحَقّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي.
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, জনৈকা নারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার এই পুত্র, আমি তাকে গর্ভে ধারণ করেছি, স্তন্যদান করেছি এবং এখনো আমার কোলেই তার আশ্রয়, অথচ তার বাবা আমাকে তালাক দিয়েছে। আর এখন চাইছে, তাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে! তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমিই তার বেশি হকদার, যতদিন না তুমি বিবাহ করো। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২২৭০; নাসবুর রায়াহ ৩/২৬৫
عَنْ عَبد الرّحْمَنِ بْنُ أَبِي الزِّنَادِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الْفُقَهَاءِ الّذِينَ يُنْتَهَى إِلَى قَوْلِهِمْ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ أَنّهُمْ كَانُوا يَقُولُونَ: قَضَى أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا لِجَدّةِ ابْنِهِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بِحَضَانَتِهِ حَتّى يَبْلُغَ، وَأُمّ عَاصِمٍ يَوْمَئِذٍ حَيّةٌ مُتَزَوِّجَةٌ.
আবদুর রহমান ইবনে আবিয যিনাদ তার বাবার সূত্রে মদীনার শীর্ষস্থানীয় ও সর্বজনমান্য ফকীহদের বরাতে উল্লেখ করেন, আবু বকর সিদ্দীক রা. উমর রা.-এর সন্তান আছেম ইবনে উমরের লালন-পালনের বিষয়ে উমর রা.-এর বিপক্ষে ও আছেমের নানীর অনুকূলে এই মর্মে রায় প্রদান করেন যে, যতদিন না আছেম বালেগ হয় ততদিন সে তার কাছেই থাকবে। সে সময় উম্মে আছেম জীবিত ছিলেন। তার অন্যত্র বিবাহ হয়েছে। -সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৮/৫
সুতরাং আপনার বোনের যদি অন্যত্র বিবাহ হয়ে যায় (এমন পুরুষের সাথে, যে এ শিশুটির মাহরাম নয়) তাহলে তিনি আর শিশুটির লালন-পালনের হকদার হবে না। সেক্ষেত্রে শিশু সন্তানের লালন-পালনের জন্য শরীয়তের পক্ষ থেকে নির্ধারিত অন্যান্য নারীগণ অগ্রাধিকার পাবেন।
Sharable Link-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/৭২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪৫৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৬৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/১৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৬৫
আমার ভগ্নিপতি খুব রাগী মানুষ। সন্তানরা সামান্য কথা মানতে না পারলেই রেগে যায় এমনকি মারধরও শুরু করে দেয়। আমাদের কথাও মানে না। আমরা তাকে একজন আলেমের কাছে নিয়ে যাই। এরপর থেকেই তার মাঝে পরিবর্তন আসতে থাকে। সে সন্তানদেরকে মারধর করা ছেড়ে দেয় আর ভবিষ্যতে না মারার শপথও করে। কিছুদিন আগে পাশের বাড়ির লোকদের সাথে একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে সে তাদেরকে লাঠি নিয়ে মারতে যায়। আমার ভাগিনা ঝগড়া থামাতে গেলে ভুলে তার মাথায় আঘাত পড়ে এবং সে আহত হয়। ভগ্নিপতির তাকে মারার উদ্দেশ্য ছিল না; বরং অন্যরা সরে যাওয়ায় তার মাথায় পড়েছে। জানার বিষয় হল, ভাগিনার গায়ে এভাবে আঘাত লাগার কারণে কি তার পিতার শপথ ভেঙ্গে গেছে? এখন তার করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভগ্নিপতি যেহেতু তার ছেলেকে ইচ্ছাকৃত মারেনি বরং অন্যকে মারতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে ছেলের গায়ে লেগে গেছে। তাই এ কারণে আপনার ভগ্নিপতির কসম ভঙ্গ হয়নি। সুতরাং তাকে কাফফারা দিতে হবে না।
Sharable Link-ফাতাওয়া খানিয়া ২/১১১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২১৬; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/২৭৩; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৫৮
কিছুদিন আগে আমার ছেলের জ¦র হয়। চেকআপ করার পর ডাক্তার টাইফয়েড চিহ্নিত করেন। তখন মান্নত করেছিলাম যে, সে সুস্থ হয়ে গেলে দুই হাজার টাকা সদকা করব। ১৫ দিন পর সে সুস্থ হয়ে যায়। তখন আর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাইনি। ১০ দিন পর সে পুনরায় জ¦রাক্রান্ত হয়ে পড়ে। ডাক্তার বললেন, তার টাইফয়েড এখনো ভাল হয়নি। দ্বিতীয়বার আমার কাছে না এনে ভুল করেছেন। এখন লাগাতার আরো ১০ দিন ওষুধ খাওয়াতে হবে। কয়েকটি ইঞ্জেকশনও দিতে হবে। জানার বিষয় হল, কয়েকদিন বাহ্যিকভাবে সুস্থ থাকার দ্বারাই কি আমার উপর মান্নত পুরা করা ওয়াজিব হয়ে গেছে? সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।
দশ দিন পর ছেলেটি যেহেতু আবার জ¦রাক্রান্ত হয়ে গেছে সুতরাং সে ঐ সময় পুরোপুরি সুস্থ হয়নি- এটাই প্রমাণিত হল। তাই ছেলেটি পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পরই মান্নত পুরা করা ওয়াজিব হবে, এর আগে নয়।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪৫; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৫১; আলইখতিয়ার ৩/৪৪৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪০
মুহাম্মাদ আমীন
মুহতারাম, আমি মান্নত করেছিলাম, এ বছর আমার ফসল ভালো হলে শ্বশুর বাড়ির মাদরাসার গোরাবা ফান্ডে এক মন ধান দান করব। আল্লাহর রহমতে এ বছর আমার ফসল ভালো হয়েছে। কিন্তু বিশেষ কারণে অল্প কিছু ধান ছাড়া সবই বিক্রি করার প্রয়োজন হয়েছে। মুহতারামের নিকট আমার জিজ্ঞাসা হল, আমি কি এক মন ধানের সমমূল্য পরিমাণ টাকা সদকা করতে পারব? অনুরূপভাবে যে মাদরাসায় সদকা করার মান্নত করেছিলাম সেটা ছাড়া অন্য এক মাদরাসা, যা কিছুদিন আগে আমাদের বাড়ির পাশে হয়েছে, সেই মাদরাসার গোরাবা ফান্ডে (উক্ত টাকা) দান করতে পারব?
হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি এক মন ধানের মূল্য সদকা করলেও উক্ত মান্নত আদায় হয়ে যাবে। তদ্রƒপ বাড়ির পাশের নতুন মাদরাসার গোরাবা ফান্ডে অথবা অন্য কোনো গোরাবা ফান্ডে ঐ পরিমাণ ধান বা তার মূল্য দেওয়া যাবে। তবে যে মাদরাসায় সদকা করার মান্নত করেছিলেন সেই মাদরাসায় দেওয়া উত্তম হবে।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৪, ২৩৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/২৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪১
এক ব্যক্তি তার ভাইয়ের সুস্থতার জন্য ছাগল সদকা করার মান্নত করেছে। এই মান্নতী ছাগলের গোশত মান্নতকারী অথবা তার ভাই খেতে পারবে কী?
উল্লেখ্য যে, মান্নতকারী ও তার ভাই উভয় যাকাত গ্রহণের যোগ্য নন।
মান্নতকারী নিজে মান্নতের পশুর গোশত খেতে পারবে না; চাই সে যাকাত গ্রহণের যোগ্য হোক কিংবা না হোক। আর মান্নতকারীর ভাই যেহেতু যাকাত গ্রহণের অনুপযুক্ত তাই সেও মান্নতী ছাগলের গোশত খেতে পারবে না।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৫; রদ্দুল মুহতার ২/৩৩৯, ৩২৭
গ্রামে আমাদের একটি জমি অনেক বছর ধরে এক ব্যক্তি অন্যায়ভাবে ভোগ করে আসছিল। আইনের আশ্রয় নেওয়ার পর কিছুদিন আগে আমাদের পক্ষে রায় আসে। জমিটিতে আমরা ভবন নির্মাণ করে বসবাস করতে চাচ্ছি, কিন্তু তাতে তাদের একটি কবর আছে, যার বয়স প্রায় আট মাস। কবর স্থানান্তর করা না করা নিয়ে গ্রামে সালিশ বসে। তাতে এই সিদ্ধান্ত হয় যে, যেহেতু এটা দ্বীনী বিষয়, তাই এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান যেমন হবে তা উভয় পক্ষ মেনে নিবে। এখন মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি যে, এক্ষেত্রে শরীয়তের সঠিক মাসআলাটি কী?
প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে কবরটি যেহেতু অন্যের জমিতে তার অনুমতি ছাড়া দেওয়া হয়েছে, তাই সেটি স্থানান্তর করা জায়েয হবে। ঐ লোকদের কর্তব্য, কবরটি স্থানান্তর করে জমি-মালিকের বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৯৯; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/২৭৯; শরহুল মুনয়া পৃ. ৬০৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬২৯
কবরের উপর ভবন নির্মাণ প্রসঙ্গে :
জনাব, ২২ বছর আগে আমাদের গ্রামের এক মুরব্বী মসজিদের নামে ৫ শতাংশ জায়গা ওয়াকফ করেন। ওয়াকফকৃত জায়গাটির সীমানার মধ্যে ডান পাশে পুরাতন একটি কবর ছিল। আমাদের জানামতে এটি ওয়াকফকারীর দাদার কবর। সে সময় আবাদী কম থাকায় মসজিদটি নির্মাণকালে আমরা কবরের দিক থেকে প্রায় দুই শতাংশ জায়গা ছেড়ে তা নির্মাণ করি। এখন মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আমরা চাচ্ছি মসজিদটি বড় করে পূর্ণ জায়গার উপর নির্মাণ করতে। এক্ষেত্রে কী আমাদের জন্য কবরের জায়গাটি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে?
উল্লেখ্য, উক্ত জায়গাটি মুরব্বীর মালিকানাধীন সম্পদ ছিল। কবরস্থান বানানোর জন্য ওয়াকফকৃত ছিল না। তৎকালীন গ্রামের প্রচলন অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিটিকে (মুরব্বীর দাদা) কবরস্থানে দাফন না করে উক্ত জায়গায় দাফন করা হয়েছে।
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী যেহেতু উক্ত জায়গাটি মসজিদের জন্যই ওয়াকফকৃত এবং কবরটিও অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছে। আর বর্তমানে মসজিদ সম্প্রসারণও খুব জরুরি। সুতরাং কবরটিকে সমান করে দিয়ে সেখানে মসজিদ সম্প্রসারণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সেখানে কবরের কোনো চিহ্ন রাখা যাবে না।
Sharable Link-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; রামযুল হাকায়েক ১/৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৩৮
আমাদের এলাকার মসজিদের ক্যাশিয়ার সাহেব অত্যন্ত পরিশ্রমী ও বিশ্বস্ত। মসজিদের হিসাব-নিকাশ ও অন্যান্য কাজে অনেক সময় দেন। তিনি সরকারি চাকরি করেন। অর্থনৈতিক কিছু সমস্যার কারণে সম্প্রতি একটি ফার্মেসিতে পার্টটাইম চাকরি নিতে চাচ্ছেন এবং মসজিদের কমিটি থেকে বের হয়ে যেতে যাচ্ছেন। অপরদিকে মসজিদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কাজ শুরু হয়েছে। এসময় তিনি না থাকলে এবং সময় না দিলে নির্মাণকাজে বিঘœ ঘটতে পারে। কারণ, কমিটির অন্য কেউ তার মতো এতো সময় দেয় না। এসব কারণে কমিটির অনেকে বলছেন, তার জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা হোক। এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাচ্ছি, মসজিদের ফান্ড থেকে তার জন্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা কি বৈধ হবে?
মসজিদের ক্যাশিয়ার যদি মসজিদের কাজে উল্লেখযোগ্য সময় ব্যয় করেন তবে মসজিদের ফান্ড থেকে তার জন্য ন্যায্য পারিশ্রমিক নির্ধারণ করা জায়েয হবে। আর পারিশ্রমিক নির্ধারণ করলে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত করে নিতে হবে।
Sharable Link-ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/৯৬; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৫৫; আলইসআফ পৃ. ৫৩, ৫৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৬১; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৭১
আমাদের বাজারের মসজিদের সাথে লাগানো একটি পাটের গুদাম ছিল। গুদামের মালিক এই এলাকা থেকে তার ব্যবসা সরিয়ে নেয়ার সময় গুদামটি মসজিদের কল্যাণে ওয়াকফ করে যায়। এরপর মসজিদ কমিটি সেটিকে এক গম ব্যবসায়ীর নিকট গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেয়। জুমার দিন মুসল্লি বেশি হওয়া শুরু হলে মসজিদ কমিটি ভাড়াটিয়াকে সরিয়ে গুদামটির দেয়াল ভেঙ্গে মসজিদের সাথে মিলিয়ে দেয়। এক থেকে দেড় বছর সেখানেও নামায হয়। এখন মসজিদের মূল জায়গাতেই তিন তলা ভবন করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় মুহতারামের নিকট জানার বিষয় হচ্ছে, এতদিন নামায পড়ার পর এখন ঐ জায়গাটি গুদাম বা দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া যাবে কি না?
প্রশ্নোক্ত বিবরণ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, মসজিদ কমিটি গুদামটি অস্থায়ীভাবে নামাযের জন্য ব্যবহার করছিলেন। জায়গাটি স্থায়ীভাবে মসজিদের অন্তর্ভুক্ত করা উদ্দেশ্য ছিল না। তাই ঐ জায়গাটি মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। অতএব উক্ত স্থানটি পুনরায় গোডাউন বা দোকান হিসাবে ভাড়া দেওয়া জায়েয হবে।
Sharable Link-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬০
আজ থেকে ১৫ বছর আগে আমরা আমাদের এলাকার অভ্যন্তরীণ সাধারণ সড়কের পাশে একটি মসজিদ নির্মাণ করি। মসজিদটি নির্মাণকালে আশেপাশে বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট কম থাকায় রাস্তা প্রশস্ত ছিল। তাই আমরা রাস্তার জন্য দেড় ফিট জায়গা- যা সরকারী আইন অনুযায়ী খালি রাখার দরকার ছিল- তা খালি না রেখেই নিজেদের পূর্ণ জায়গার উপর মসজিদটি নির্মাণ করি। পরবর্তীতে যারা রাস্তার পাশে বাড়ি-ঘর, দোকান-পাট বানিয়েছে, তারাও রাস্তার জন্য দেড় ফিট জায়গা না ছেড়ে ওগুলো বানিয়েছে। ফলে চলাচলের পথ সংকীর্ণ হয়ে মানুষের যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে পৌরসভার পক্ষ থেকে সবার কাছে রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়ার নোটিশ এসেছে। মুহতারামের নিকট জিজ্ঞাসা হল, এই অবস্থায় কি মসজিদের সেই অংশ থেকে রাস্তার জন্য দেড় ফিট জায়গা বের করার অবকাশ আছে, যে অংশটুকু সরকারি আইন অনুযায়ী খালি রাখার দরকার ছিল?
উল্লেখ্য, উক্ত অংশ ভাঙ্গা পড়লে মসজিদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
বিধি অনুযায়ী যতটুকু রাস্তা ছেড়ে দিয়ে মসজিদ ঘর উঠানো উচিত ছিল ততটুকু জায়গা নির্মিত মসজিদ থেকে ছেড়ে দেয়া যাবে। প্রথম থেকেই ঐ জায়গা মসজিদের অন্তুর্ভুক্ত করা উচিত হয়নি।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৫; আলইসআফ ফী আহকামিল আওকাফ পৃ. ৭৩; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৭৪; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯৫
মুহতারাম, আমাদের মসজিদের সিঁড়ির নিচের জায়গা বেশ বড়। মসজিদ কমিটির এক প্রাক্তন সদস্য উক্ত স্থানটি ভাড়া নিয়ে আতর-টুপির দোকান বানাতে চাচ্ছেন। যেহেতু তিনি অনেকদিন পর্যন্ত মসজিদ কমিটির সদস্য ছিলেন, তাই বর্তমান কমিটির অনেকেই তার এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। মুহতারামের নিকট জিজ্ঞাসা হল, মসজিদের উক্ত অংশে কি দোকান বানানো বৈধ হবে?
উল্লেখ্য, মসজিদের সিঁড়িটি মসজিদের বারান্দা হয়ে উপরে উঠেছে। সিঁড়ির নিচে দোকান বানানো হলে বারান্দাটি ব্যবহার হবে। কারণ ক্রেতারা সেখানে দাঁড়ানো ছাড়া কিছু কিনতে পারবে না।
প্রশ্নোক্ত দোকানটি চালাতে গেলে যেহেতু বারান্দাটি ব্যবহার হবে। আর মসজিদের বারান্দা মসজিদেরই অংশ, আর মসজিদের কোনো অংশে বেচা-কেনা করা নাজায়েয। তাই উক্ত সিঁড়িঘরে দোকান বানানো জায়েয হবে না।
প্রকাশ থাকে যে, মসজিদ আল্লাহর ঘর। সম্মানিত স্থান। এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي المَسْجِدِ، فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَكَ.
যখন তোমরা কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখ তখন বল, আল্লাহ যেন তোমার ব্যবসা লাভজনক না করেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩২১
অতএব, দোকান বানানোর প্রস্তাবটি মঞ্জুর করা কর্তৃপক্ষের জন্য জায়েয হবে না।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৩৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৭৪; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৬; আলইসআফ পৃ. ৭৪; মাজমাউল আনহুর ২/৫৯৫
আমাদের মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গার পরিমাণ ছিল চার কাঠা। পুরাতন মসজিদ সেই জায়গার উপরেই ছিল। জুমার দিন দেখা যেত মুসল্লিরা মসজিদের ভিতরে জায়গা না হওয়াতে বাইরে কাতার করত। তাই নতুন করে নির্মাণের সময় মেহরাব ও সামনের কাতারের কিছু অংশ ওয়াকফকৃত জায়গা থেকে সামনের দিকে বাড়িয়ে নেয়। যাতে পূর্ণ এক কাতার বেড়ে যায়। বর্ধিত অংশের জায়গা ছিল মানুষ চলাচলের রাস্তার কিছু অংশ। রাস্তা বড় হওয়াতে মানুষ চলাচলে সমস্যা হয় না। কারণ ঐ গলি দিয়ে গাড়ি চলে না। শুধু মানুষ যাতায়াত করে। এখন মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, ওয়াকফকৃত জায়গা অতিক্রম করে মানুষের চলাচলের জায়গায় মসজিদ বাড়ানো ঠিক হয়েছে কি না? বর্ধিত অংশ মসজিদের হুকুমে কি না? ঐ অংশে দাঁড়িয়ে ইমামতি করলে তা সহীহ হবে কি না?
উল্লেখ্য, রাস্তার জায়গার পরিমাণ ছিল আট ফুট। মেহরাবের মধ্যে চলে আসছে সোয়া তিন ফুট।
প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে যেহেতু মসজিদে মুসল্লিদের সংকুলান হচ্ছিল না, অপরদিকে মানুষ চলাচলের রাস্তার সীমানায় মসজিদের কিছু অংশ বাড়িয়ে নেয়ার দ্বারা চলাচলেও কোনো সমস্যা হচ্ছে না, তাই সাময়িকভাবে এমনটি করা দূষণীয় হয়নি। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে ঐ জায়গাটি মসজিদের জন্য বরাদ্দ হওয়ার আগ পর্যন্ত বর্ধিত অংশটুকু মসজিদের হুকুমে গণ্য হবে না। ইতিকাফকারীগণ সেখানে যেতে পারবে না। অবশ্য ঐ অংশে দাঁড়িয়ে ইমামতি করতে পারবে। একারণে নামাযের ক্ষতি হবে না।
Sharable Link-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯২; জামেউল ফুসূলাইন ১/১৮৮; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৬৮
আমাদের পাশের গ্রামের এক লোকের টাকার প্রয়োজন হলে সে আমার কাছ থেকে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা নেয় এবং তার সাথে থাকা সাইকেলটি বন্ধক রেখে যায়। আমার এক পরিচিত ব্যক্তি সাইকেলটি দেখে বলে, এটা তো আমার সাইকেল, তুমি কোথায় পেলে? আমি বিষয়টি বললে সে বলে, আমি তাকে সাইকেলটি কয়েকদিন ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলাম। তুমি সাইকেলটি আমাকে দিয়ে দাও। ঋণের গ্যারান্টি শেষ হয়ে যাবে বলে তাকে সাইকেলটি দেইনি। জানার বিষয় হল, এভাবে সাইকেলটি বন্ধক রাখা ঠিক হয়েছে কি না? তার মালিক আমার থেকে সাইকেলটি নিয়ে যেতে পারবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
লোকটির জন্য অন্যের সাইকেল বন্ধক রাখা জায়েয হয়নি। কেননা সাইকেলটি তার কাছে আমানত ছিল। আমানতের জিনিস মালিকের অনুমতি ছাড়া বন্ধক রাখা জায়েয নয়। তাই আপনার ঋণগ্রহিতার জন্য অন্যের সাইকেল বন্ধক রাখা বৈধ হয়নি। সুতরাং তার কর্তব্য হল, আপনার থেকে সাইকেলটি নিয়ে তার মালিককে ফেরত দেয়া এবং আমানতের খেয়ানত করার জন্য ঐ ব্যক্তির নিকট ক্ষমা চাওয়া। আল্লাহ তাআলার নিকট তাওবা-ইস্তিগফার করা। আর সাইকেলের মালিক সাইকেলটি নিতে চাইলে যাকে সে দিয়েছিল তার কাছ থেকে নেবে; সরাসরি আপনার থেকে নেবে না।
Sharable Link-আলমাবসূত, সারাখসী ২১/৭৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৫৩; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ৮২৩; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৩/১৭৬; রদ্দুল মুহাতার ৬/৪৯৩
বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি, আর্সিম গেট সংলগ্ন বাজারে আমার একটি মুদি দোকান আছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারাই এখানের সাধারণ ক্রেতা। তারা সারা মাস প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বাকিতে নেয় এবং মাস শেষে বেতন পেয়ে মূল্য পরিশোধ করে। তাদের অন্য কোনো আয় আছে কিনা আমার জানা নেই। শুধু এতটুকু জানি যে, বেতন পাওয়ার পর তারা আমাদের ঋণ আদায় করে। এখন আমার জানার বিষয় হল, তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করা এবং মাস শেষে আমাদের ধারণামতে ব্যাংকের বেতন দিয়ে পণ্যের পরিশোধিত মূল্য গ্রহণ করা বৈধ হবে কি? যদি বৈধ না হয় তাহলে কীভাবে তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করব? সুন্দর সমাধানে আপনাদের সুমর্জি কামনা করছি।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি নিশ্চিত হন যে, ব্যাংক কর্মকর্তারা মাস শেষে ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত বেতন দিয়েই মূল্য পরিশোধ করে থাকে তবে এমন লোকদের সাথে ক্রয়-বিক্রয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শরীয়তের দৃষ্টিতে জেনে শুনে এ ধরনের টাকা মূল্য হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয নয়। তবে যদি একথা নিশ্চিতভাবে জানা না যায় যে, তারা ব্যাংকের টাকা দিয়েই মূল্য পরিশোধ করছে কিংবা তাদের আয়ের অন্য কোনো মাধ্যমও থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে অসুবিধা নেই এবং তাদের দেওয়া পণ্যমূল্য গ্রহণ করতে শরয়ী বাধা নেই।
Sharable Link-শরহুল হামাবী আলাল আশবাহ ১/৩১০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৯২; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪২
আমি একজন ব্যবসায়ী, আমার একটি সমিতি আছে, তার কার্যক্রম নি¤েœ তুলে ধরলাম।
আমার সমিতির ৫০ জন সদস্য আছে। প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে দুই কিস্তিতে ১০০০ টাকা নেই। (যার ফলে প্রতি সপ্তাহে আমার কাছে ৫০,০০০/- টাকা জমা হয়) এবং প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৫০ সদস্যের নাম লটারী করি, যার নাম লটারীতে ওঠে তাকে একসাথে ৫০,০০০/-টাকা দিয়ে দিই। তার পরের সপ্তাহে যে ব্যক্তি টাকা পেয়েছে তার নাম বাদ দিয়ে বাকি ৪৯ জনের নাম লটারী করি। যার নাম লটারীতে ওঠে তাকে ৫০,০০/- টাকা দিয়ে দিই। এইভাবে ৫০ সপ্তাহে ৫০ জনই আগে বা পরে ৫০,০০০/- টাকা পেতে থাকে এবং যারা টাকা পেয়েছে তারাও ৫০ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে এক হাজার করে টাকা দিতে থাকে। এই সমিতি করার উদ্দেশ্য হল, যারা ছোট ব্যবসায়ী তারা একসাথে ৫০,০০০/- টাকা পেয়ে যাতে ব্যবসায় উন্নতি করতে পারে।
উল্লেখ্য, তাদের টাকা আমার কাছে তিন-চার দিন থাকে, তখন আমি ঐ টাকা দ্বারা ব্যবসা করি এবং সকল সদস্য আমার ব্যবসা করার বিষয়টি জানে এবং এ ব্যাপারে তারা আমাকে কিছু বলে না। এখন আমার জানার বিষয় হল, আমার সমিতির কার্যক্রম শরীয়তসম্মত কি না? শরীয়তসম্মত না হলে কী কারণে শরীয়তসম্মত না- অনুগ্রহ করে জানাবেন। ইনশাআল্লাহ, আমি সেই কারণ দূর করব।
আপনাদের সমিতির প্রশ্নোক্ত কার্যক্রমটি জায়েয। এক্ষেত্রে মূলত সকলের সম্মতিতে একজনকে ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং ঋণের কারণে অতিরিক্ত প্রদানের শর্ত করা হয় না। সুতরাং তা জায়েয; শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে সমস্যা নেই।
তবে টাকাগুলো যে দু-চার দিন আপনার নিকট থাকে, ঐসময় যদি তা নিজ কাজে লাগাতে চান তাহলে সদস্যদের অনুমতি নিতে হবে। বিনা অনুমতিতে তা খরচ করা যাবে না। আর একথাও মনে রাখতে হবে যে, যদি এভাবে নিজ কাজে লাগানোর পর টাকার কোনো ক্ষতি হয় তাহলে এর দায়ভার সম্পূর্ণরূপে আপনাকে বহন করতে হবে।
Sharable Link-হাশিয়াতুল ক্বালয়ূবী আলা শরহিল মিনহাজ ২/৩২১; মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যা ২৭/৩৪৯-৩৫০; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩২৫
গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমার ছেলে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন আমি মান্নত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমার ছেলেকে সুস্থ করে দেন তাহলে আমি আগামী কুরবানীর ঈদে একটি কুরবানী করব। আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে এখন সুস্থ। আমার জানার বিষয় হচ্ছে, প্রত্যেক বছর তো আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়। এখন আমার কি দুটো কুরবানী করতে হবে, নাকি একটি করলেই চলবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।
আগামী কুরবানীর দিন আপনি যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন তাহলে আপনাকে দুটো কুরবানী করতে হবে। একটি মান্নতের কুরবানী, অপরটি ঈদুল আযহার কুরবানী।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৫; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৩৭
চার বছর আগে আমার ভাই আমার বিয়ের সময় আমাকে আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার দিয়েছিল- বিয়ের গিফট হিসাবে। কিছুদিন আগে পারিবারিক একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়। তখন থেকে সে আমার কাছে তার দেওয়া স্বর্ণালংকারগুলো ফেরত চাচ্ছে এবং আমাকে চাপ দিচ্ছে। যেহেতু সে অলংকারগুলো আমি আমার স্ত্রীকে দিয়ে দিয়েছি তাই তার থেকে সেগুলো ফেরত নিয়ে ভাইকে দেওয়া কঠিন। মুহতারামের নিকট আমার জিজ্ঞাসা হল, ঐ অলংকারগুলো আমার ভাইকে ফেরত দেওয়া কি আবশ্যক?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ভাইয়ের জন্য অলংকারগুলো ফেরত চাওয়া বৈধ হবে না এবং সে চাইলেও আপনি তা ফেরত দিতেও বাধ্য নন।
Sharable Link-কিতাবুল আছার, ইমাম আবু ইউসুফ, বর্ণনা ৭৪৮; কিতাবুল আছল ৩/৩৫৭, ৩৬৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩৮৭
আমার প্রশ্ন হল, মেয়েদের চুল ছোট করা কি জায়েয? প্রয়োজনে চুলের অগ্রভাগ কাটা বৈধ হবে কি? নাকি চুল কখনোই কাটা যাবে না?
হাঁ, প্রয়োজনে মহিলাদের চুলের অগ্রভাগ কাটতে পারবে। তবে এত বেশি পরিমাণ কাটা যাবে না, যার ফলে পুরুষের বাবরি চুলের মত হয়ে যায়। তদ্রƒপ বিজাতীয় নারীদের মত কোনো ফ্যাশন কাটিংও জায়েয নয়। হাদীসের মধ্যে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
নারীর সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষদের উপর এবং পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারী নারীদের উপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫)
অন্য এক হাদীসে এসেছে- مَنْ تَشَبّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.
যে ব্যক্তি ভিন্ন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪০২৭)
Sharable Link-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২০৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৪০৭; ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৫৪
মুহতারামের নিকট আমার জানার বিষয় হল, পুরুষের জন্য রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো আংটি যেমন ইমিটেশন, তামা ইত্যাদি ব্যবহার বৈধ কি না?
পুরুষগণ রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো বস্তুর আংটি ব্যবহার করতে পারবে না। আর রুপার আংটিও এক মিছকাল তথা সাড়ে চার মাষা, যা গ্রামের ওজনে ৪.৩৭৪ গ্রাম হয়- এর কম হতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন-
أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ رَأَى عَلَى بَعْضِ أَصْحَابِهِ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ، فَأَلْقَاهُ وَاتّخَذَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ، فَقَالَ: هَذَا شَرّ، هَذَا حِلْيَةُ أَهْلِ النّارِ، فَأَلْقَاهُ، فَاتّخَذَ خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ، فَسَكَتَ عَنْهُ.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবীকে স্বর্নের আংটি পরিহিত অবস্থায় দেখে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর তিনি লোহার আংটি বানালেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটা তো আরো মন্দ। এটা তো জাহান্নামীদের অলঙ্কার। অতপর তিনি সেটিও ফেলে দিয়ে রুপার আংটি পরলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরব রইলেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৫১৮
অবশ্য লোহা, তামা ইত্যাদির উপর যদি রুপার প্রলেপ থাকে তাহলে পুরুষগণ সে আংটি পরিধান করতে পারবে।
Sharable Link-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৩৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬০; মাজমাউল আনহুর ৪/১৯৭; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৩৫৩