যায়নুল আবিদীন - হবিগঞ্জ, সিলেট

৪১৮৬. Question

আমার পরিচিত একজন গাড়ি এক্সিডেন্ট করে। সে তখন বাম পায়ের নিচের অংশে আঘাত পায়। ডাক্তার তার পায়ের গোড়ালিসহ এর উপরের কিছু অংশ ব্যান্ডেজ করে দেয়। এই অবস্থায় তার ৬/৭ দিন অতিবাহিত হয়। সে ঐ কয়দিন অযু করার সময় ক্ষতস্থান ছাড়া বাকি অংশ ধুলেও ব্যান্ডেজের উপর মাসেহও করেনি। এভাবে তার অযু কি সহীহ হয়েছে? এবং এই অযু দ্বারা সে যে কয় ওয়াক্ত নামায পড়েছে   তা কি আদায় হয়েছে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পায়ের গোড়ালির যে অংশটুকু ধোয়া সম্ভব হয়নি ভেজা হাত দ্বারা তা মুছে দেওয়া ক্ষতিকর না  হলে অযু করার সময় তা মুছে দেওয়া জরুরি ছিল। সুতরাং মাছেহ করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও যদি তা না করে থাকে তাহলে তার অযু হয়নি। এভাবে সে যে কয়দিন নামায পড়েছে তাও আদায় হয়নি। ঐ নামাযগুলো আবার পড়ে নিতে হবে।

-বাদায়েউস সনায়ে ১/৯০; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৫; রদ্দুল মুহতার ১/২৭৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৫

Sharable Link

মুফতী জুবায়ের হাসান - ওয়েব সাইট থেকে প্রাপ্ত

৪১৮৭. Question

এক ব্যক্তি ট্রেনে সফরের এরাদা করেছে। এশার নামাযের সময় হয় রাত সাতটায়। আর ট্রেন ছাড়ে রাত আটটায়। মুকিম অবস্থায় ঐ ব্যক্তি ইশার নামায আদায় করেনি। পরবর্তীতে ট্রেনে ভিড়ের কারণে নামায পড়তে পারেনি। এখন প্রশ্ন হল, ঐ ব্যক্তি কি কাযা আদায়ের সময় কসর করবে না পূর্ণ নামায পড়বে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি ঐ দিনের ছুটে যাওয়া ইশা দুই রাকাত পড়ে নিবে। চার রাকাত নয়। কেননা, ওয়াক্তের শেষভাগে যেহেতু সে মুসাফির ছিল তাই এ নামাযটা সফরের কাযা হিসেবে ধর্তব্য হবে। আর সফরের কাযা মুকীম অবস্থায় আদায় করলেও কসর হিসেবেই আদায় করতে হয়।

-মাবসূত, সারাখসী ১/২৩৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০৭; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫৪২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১

Sharable Link

আবদুর রাযযাক - বংশাল, ঢাকা

৪১৮৯. Question

কিছু দিন আগে আমার পরিচিত একজন মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিল। তখন তার মাথায় অপারেশন করতে হয়। এবং মাথা ব্যান্ডেজ অবস্থায় ছিল কিছুদিন। প্রথম কয়েক দিন বিছানায় পুরোপুরি শায়িত ছিল। মাথা নাড়ানোও সম্ভব ছিল না। ডাক্তারও কয়েক দিন মাথা একেবারে না নাড়ানোর কথা বলেছিলেন। এখন সে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছে।

প্রশ্ন হল, সে যে কয়দিন পুরো শায়িত ছিল ঐ দিনগুলোর নামাযের কী হুকুম? একজন বলেছে, সে  তখন মাথা নাড়াতে না পারলেও যেহেতু তার জ্ঞান ছিল তাই তার জন্য ঐ কয়দিন চোখের ইশারায় নামায পড়া জরুরি ছিল। তাই তার ঐ কয়েকদিন নামায না পড়া ঠিক হয়নি। তার এ কথা কি ঠিক? ঐ ব্যক্তির তখন কী করণীয় ছিল? এবং এখন কি সে ঐ কয়দিনের নামায কাযা করবে? বিস্তারিত জানতে চাই।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির যেহেতু মাথা দ্বারা ইশারা করার ক্ষমতাও ছিল না তাই ঐ অবস্থার নামাযগুলো মাফ হয়ে গেছে। তা কাযা করা লাগবে না। এ অবস্থায় চোখের ইশারায় নামায আদায় করতে হবে এমন কথা ঠিক নয়। কেননা চোখের ইশারায় নামায আদায় হয় না। নামায আদায়ের জন্য অন্তত মাথা দ্বারা ইশারা করা আবশ্যক। এতটুকু শক্তিও যদি না থাকে, আর এ অবস্থায় একদিন একরাতের বেশি হয়ে যায় তাহলে ঐ সময়ের নামায মাফ হয়ে যায়। আর একদিন-একরাত বা তার কম সময় অতিবাহিত হলে ঐ কয়েক ওয়াক্ত নামায পরবর্তীতে কাযা করে নেয়া জরুরি।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮৭; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৭৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৭; রদ্দুল মুহতার ২/৯৯

Sharable Link

রাফিউল ইসলাম - নোয়াখালী

৪১৯০. Question

নামাযের বৈঠকে সূরা ফাতেহা পড়ে ফেললে কী হুকুম? ১ম বৈঠক ও  ২য় বৈঠকে কোনো পার্থক্য আছে কি?

Answer

ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুআককাদাহ নামাযের প্রথম বৈঠকে তাশাহুদের আগে বা পরে সূরা ফাতেহা পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। আর শেষ বৈঠকে তাশাহুদের আগে সূরা ফাতিহা পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। কিন্তু তাশাহহুদের পর পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। আর যদি নামাযটি হয় নফল তাহলে প্রথম বৈঠকে হোক বা শেষ বৈঠকে, উভয়  ক্ষেত্রেই ভুলে সূরা ফাতেহা পড়লে তা যদি তাশাহহুদের পূর্বে পড়া হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাহু সিজদা দিতে হবে। আর যদি তা তাশাহহুদের পরে পড়া হয়ে থাকে তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।

-হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৪৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ২৫০; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৬

Sharable Link

আলমগীর ভূইয়া - সদর, কুমিল্লা

৪১৯১. Question

আমার স্মরণশক্তি অনেক দুর্বল। কিছু করার পর মনে থাকে না। নামায পড়েছি কি না এটাও মনে থাকে না। তাই মাঝে মাঝেই আমি নামায পড়িনি ভেবে নামাযে দাঁড়িয়ে যাই। এক-দুই রাকাত পর মনে পড়ে আমি তো নামায পড়েছি। তখন সাথে সাথে আমি নামায ছেড়ে দেই।

হুযুরের নিকট জানতে চাই, উক্ত অবস্থায় এভাবে নামায ছেড়ে দেওয়ার কারণে গুনাহ হবে কী? আমাকে এই নামাযের কাযা করতে হবে? এ অবস্থায় আমার করণীয় কী? এ নিয়ে অনেকদিন যাবৎ আমি পেরেশানিতে আছি। দ্রুত জানালে উপকৃত হব।

Answer

কোনো ফরয নামায পড়া হয়নি ভেবে শুরু করার পর যদি স্মরণ হয় যে তা পড়া হয়েছে তাহলে তা ছেড়ে দেয়া জায়েয। এতে গুনাহ হবে না। তবে মাকরূহ ওয়াক্ত না হলে  (যেমন ফযর ও আসর ছাড়া অন্য ওয়াক্তে) নফলের নিয়তে তা পূর্ণ করা (অন্তত দুই রাকাত) উত্তম।

অবশ্য এসব ক্ষেত্রে নামায পূর্ণ না করে ভেঙ্গে দিলে পরবর্তীতে উক্ত নামাযের কাযা

করতে হবে না। কারণ, এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত নতুন নামায শুরু করা হয়নি। বরং ভুলবশত শুরু করা হয়েছে। তাই এটি নফল শুরু করার হুকুমে হবে না।

উল্লেখ্য, পুরুষদের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হল, তারা ফরয নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করবে। তাছাড়া জামাতে নামায পড়লে এভাবে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৮৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩৪৪

Sharable Link

মো: সাইফূল ইসলাম - ঢাকা

৪১৯২. Question

আমি মাঝে মাঝে একটি মসজিদে ইমামতি করি। দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ডান পায়ে ব্যথা। চিকিৎসা করিয়েও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। উক্ত ব্যথার কারণে আমি নামাযে সুন্নত তরীকায় অর্থাৎ এক পা বিছিয়ে আরেক পা দাঁড় করিয়ে বসতে পারি না। তাই উভয় পা  মহিলাদের মত ডান দিকে বের করে দিয়ে মাটিতে বসি।

এখন আমার জানার বিষয় হল, উক্ত পদ্ধতিতে বসার কারণে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে কি না? এবং আমার পেছনে ইকতেদা করা সহীহ হবে কি না?

Answer

পুরুষের জন্য অসুস্থতা বা ওযরের কারণে নামাযের বৈঠকে উভয় পা কোনো এক দিকে বের করে দিয়ে বসলেও নামাযের কোনো ক্ষতি হবে না। এছাড়া মাযূর ব্যক্তি অন্য কোনোভাবে বসলেও কোনো অসুবিধা নেই। মাযূর ব্যক্তি জমিনে বসে সিজদা করে নামায পড়তে পারলেই সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য তার ইক্তিদা করা সহীহ হবে। আবু হুমাইদ রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে এভাবে বসেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৩৫৯৯)

ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, বার্ধক্য ও দুর্বলতার কারণেই কখনো কখনো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বসেছেন।

অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. অসুস্থতার কারণে নামাযে উভয় পা একদিকে বের করে দিয়ে মাটিতে বসতেন। (মুআত্তা মালেক, বর্ণনা ৫৫)

পায়ে ব্যথা বা শরীর ভারী হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ওযরের কারণে ইমামের জন্যও সেভাবে বসার সুযোগ রয়েছে। কোনো ইমাম নামাযে ঐভাবে বসলে তার পিছনে ইকতেদা করতে কোনো সমস্যা নেই।

-হালবাতুল মুজাল্লী ২/১৭১; আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৩; শরহুল মুনয়া পৃ. ৩২৮; মাআরিফুস সুনান ৩/১৬১

Sharable Link

ইবনে মুমতাজ - শহীদবাড়িয়া

৪১৯৩. Question

রমযানের শেষ দশকে মহিলাদের ইতিকাফের কী হুকুম? তাদের কেউ ইতিকাফ শুরু করার পর নির্দিষ্ট স্থান থেকে কোনো প্রয়োজন ব্যতীত বের হতে পারবে কি? বিনা কারণেই তিন-চার ঘন্টা সময় যদি বাহিরে থাকে তাহলে কি তার ইতেকাফ নষ্ট হয়ে যাবে? জানালে উপকৃত হব।

Answer

রমযানের শেষ দশকের ইতিকাফের বিধানটি মূলত পুরুষদের জন্য, যা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত। এ জন্য ফকীহগণ নারীদের ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ বলেন না। তবে কোনো নারী ইতিকাফ করতে চাইলে তার নিয়ম হল, সে তার ঘরের মসজিদে’ (অর্থাৎ নিজ নামাযের জন্য নির্ধারিত কক্ষ বা জায়গায়) ইতিকাফ করবে। যদি আগ থেকে নামাযের জন্য জায়গা নির্ধারিত না থাকে তবে একটি জায়গা নির্ধারণ করে নিবে এবং সেখানে ইতিকাফে বসবে। এক্ষেত্রে সে সুন্নত ইতিকাফের নিয়ত করলে সুন্নাত ইতিকাফের বিধিবিধান তার জন্যও প্রযোজ্য হবে। সেক্ষেত্রে অযু-ইস্তেঞ্জার প্রয়োজন ছাড়া ঐ কক্ষ থেকে বের হতে পারবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৪

Sharable Link

হাফসা - মোহাম্মাদপুর, ঢাকা

৪১৯৪. Question

আমি আমার স্বামীর সাথে হজ্বে যাই। ওখানে পৌঁছার পর উমরার তাওয়াফ করার আগেই আমার মাসিক স্রাব শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তখন তা আমি পুরো বুঝতে পারিনি। তাওয়াফ সায়ী শেষ করার পর পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম যে, তাওয়াফের আগেই আমার মাসিক শুরু হয়েছিল। এরপর আমি আমার মাথার চুল ছোট করে হালাল হয়ে যাই। পরে একজন আলেমকে ব্যাপারটি জানালে তিনি বলেন, এখন পবিত্র অবস্থায় তাওয়াফটি করে নিতে। তাহলে আর কোনো জরিমানা দিতে হবে না। নতুবা একটি দম দিতে হবে। কিন্তু একজন সন্দেহ পোষণ করছেন যে, এখন তো আমি উমরার সব কাজ শেষ করে হালাল হয়ে গেছি। এখনো আমার এ সুযোগ আছে কি না? তাই এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা কী তা জানতে চাই। এখন ওই তাওয়াফ পুনরায় আদায় করলে কি জরিমানা মাফ হয়ে যাবে এবং এক্ষেত্রে সায়ীও কি আবার আদায় করতে হবে? বিস্তারিত জানতে চাই।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উমরার ইহরাম থেকে হালাল হয়ে গেলেও আপনি এখনো যদি উমরার তাওয়াফ ও সায়ী পুনরায় আদায় করে নেন তাহলে অপবিত্র অবস্থায় তাওয়াফটি করার কারণে যে দম ওয়াজিব হয়েছিল তা মওকুফ হয়ে যাবে।

প্রকাশ থাকে যে, এক্ষেত্রে সায়ী পুনরায় আদায় করতে হবে কি না এ ব্যাপারে দুরকম মতই আছে। এক্ষেত্রে পুনরায় সায়ী আদায় না করলে কোনো কোনো ফকীহের মতে দম ওয়াজিব হবে। তাই সায়ী আবার আদায় করে নেওয়াই অধিক সতর্কতা।

-আলজামেউস সগীর, ইমাম মুহাম্মাদ পৃ. ১৬২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৭; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী পৃ. ৩৫৩

Sharable Link

হাসিবুল হাসান - ঢাকা

৪১৯৫. Question

হজ্বে এক ব্যক্তি ১০ যিলহজ্ব বড় জামারায় কংকর নিক্ষেপ করার পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে তাকে ঐ দিনই হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। এ অবস্থায় তিন দিনেরও বেশি তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়। হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ই ১০ তারিখ তার পক্ষ থেকে দমে শোকর আদায় করা হয়। এবং ১১ তারিখ তার চুল ছোট করে দেওয়া হয়। আর ১১ ও ১২ তারিখ তার পক্ষ থেকে একজন কংকর নিক্ষেপ করে। কিন্তু ১৩ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালে থাকার কারণে সে ১২ তারিখের ভেতর তাওয়াফে যিয়ারত করতে পারেনি। এখন তার করণীয় কী? সে কি এখন ঐ তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করে নিবে? এবং এখন আদায় করলে তার উপর কি দম ওয়াজিব হবে? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 

Answer

তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা ফরয। অসুস্থতার কারণে বিলম্ব হলেও তা আদায় করতে হবে। তাই সুস্থ হওয়ার পর

তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করে নিবে। আর অসুস্থতার কারণে যেহেতু সময়মত তাওয়াফে যিয়ারত করতে পারেনি তাই বিলম্বে তাওয়াফের কারণে তাকে দম বা কোনো জরিমানা দিতে হবে না।

-যুবদাতুল মানাসিক পৃ. ২০৫; গুনয়াতুন নাসিক, পৃ. ১৭৮;মানাসিক মোল্লা আলী কারী, পৃ. ২৩৩

Sharable Link

শাহীন ইকবাল - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪১৯৬. Question

আমার পিতা (৫৮) অন্যের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ইদ্দতের মধ্যে বিবাহ করেছে। শরীয়তে এই বিবাহের হুকুম কী? পিতার সাথে আমার কী ধরনের সম্পর্ক রাখা উচিত? প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, আমার বয়স ২৭। এখনো ছাত্র। এখনো বাবার টাকায় আমার খরচ চলে। বাড়ীতে আম্মা ও ছোট ভাই (৭) আছে। আম্মা এই বিবাহ মোটেই মানতে পারছেন না। এই অবস্থায় আমার করণীয় কী এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার আবেদন করছি।

Answer

কারো তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ইদ্দত অবস্থায় বিবাহ করা হারাম। তাই আপনার পিতার উক্ত বিবাহ সহীহ হয়নি। এ অবস্থায় উক্ত মহিলার সাথে তার একত্রে অবস্থান সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ لَا تَعْزِمُوْا عُقْدَةَ النِّكَاحِ حَتّٰی یَبْلُغَ الْكِتٰبُ اَجَلَهٗ

আর যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ইদ্দতের নির্দিষ্ট মেয়াদ পূর্ণ না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিবাহের আকদ পাকা করার ইচ্ছাও করো না। -সূরা বাকারা (২) : ২৩৫

সুতরাং তাদের জন্য এক্ষুনি পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি। ভবিষ্যতে তারা একত্রে থাকতে চাইলে তালাকের ইদ্দত শেষে পুনরায় দুজন সাক্ষীর সামনে মোহর ধার্য করে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

এক্ষেত্রে আপনার দায়িত্ব হল, সুন্দরভাবে পিতাকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলা, যেন তিনি ঐ সম্পর্ক ত্যাগ করেন। কিন্তু এ নিয়ে তার সামনে বিবাদে লিপ্ত হবেন না। আর তার দেয়া টাকা ব্যবহার করা আপনার জন্য জায়েয।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৪৯; আলবাহরুর রায়েক ৪/১২৭; রদ্দুল মুহতার ৩/১৩২

Sharable Link

খায়রুল ইসলাম - ঢাকা

৪১৯৭. Question

কিছুদিন আগে আমি আমার একটা কাজের জন্য মান্নত করেছিলাম যে, কাজটা হলে একটা ছাগল জবাই করে গরীবদেরকে খাওয়াব। এখন আমি জানতে চাচ্ছি, মান্নতের সেই ছাগল রান্না হলে তার গোশত আমি ও আমার পরিবার খেতে পারব কি না? যদি সবার সাথে কিছুটা খেয়ে ফেলি তাহলে কোনো অসুবিধা আছে কি?

Answer

মান্নতের ছাগলের গোশত নিজেরা খেতে পারবেন না। বরং তার পুরোটাই গরীব-মিসকীনদের হক। তাদেরকেই সদকা করে দিতে হবে। যদি নিজেরা এর গোশত খেয়ে ফেলেন তাহলে ঐ পরিমাণ গোশতের মূল্য সদকা করা আবশ্যক হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৬০; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৭

Sharable Link

আফনান কবির - চাকলা, লালমনিরহাট

৪১৯৮. Question

আমাদের বাড়ি একটি নদীর পাশে অবস্থিত। নদীর পানি কমে গেলে নদীর পাশে অবস্থিত খালগুলোতে প্রচুর মাছ আটকা পড়ে। মাছ শিকার করার জন্য এলাকার যুবকরা খালের মালিকদের সাথে বিভিন্নভাবে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। তন্মধ্যে একটি হল, খালের মালিকরা মাছের একটি পরিমাণ নির্ধারণ করে দেয়। খালে মাছ যে পরিমাণই পাওয়া যাক, মালিকের জন্য ঐ পরিমাণ বরাদ্দ থাকবে। আর ঐ পরিমাণ থেকে বেশি যা পাওয়া যাবে তা মাছ শিকারীদের। সাধারণত প্রতি বছরই মালিকদের নির্ধারণ করে দেওয়া পরিমাণ থেকে অনেক বেশি মাছ পাওয়া যায়।

মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি, মালিকদের সাথে এভাবে চুক্তি করে মাছ ধরা কি বৈধ হবে?

 

Answer

না, এভাবে চুক্তি করা বৈধ নয়। কেননা যারা মাছ ধরবে তাদের পাওনা এক্ষেত্রে নির্ধারিত নয়। অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে শ্রমিকদের কাজের পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত ও সুনিশ্চিত হওয়া জরুরি। প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে মাছ শিকার করলে জেলে বা মাছ শিকারীদের পাওনা অনিশ্চিত হয়ে যায়। এছাড়া পুকুরওয়ালাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ দেওয়ার চুক্তিও অবৈধ। কারণ যদি ঐ পরিমাণ মাছ না হয় তাহলে কীভাবে দিবে। অতএব, খালের মালিকদের সাথে মাছ শিকারীদের প্রশ্নোক্ত চুক্তি সম্পূর্ণ নাজায়েয। জায়েয পদ্ধতিতে চুক্তি করতে চাইলে জেলেদের সাথে নির্ধারিত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে যত মাছ পাওয়া যাবে তা খালের মালিকরা পাবে।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা : ৪৬৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৭; রদ্দুল মুহতার ৫/৪৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ শরীফুল হক - চৌহালি, সিরাজগঞ্জ

৪১৯৯. Question

এখন সাধারণত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি দেয়া থাকে যে, এক বছর, দুই বছর বা কম-বেশি বিভিন্ন মেয়াদের ভেতর তা নষ্ট হয়ে গেলে বা তাতে বিশেষ কোনো সমস্যা হলে (যা বিক্রয়ের সময় উল্লেখ থাকে) কোম্পানীর পক্ষ থেকে ফ্রি সার্ভিসিং সেবা প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে দুটি মাসআলা জানতে চাই-

১. এ ধরনের সেবা প্রদানের শর্তে পণ্য ক্রয় করা বৈধ কি না?

২. ক্রয়-বিক্রয়ের সময় নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে এই সেবা প্রদান করা বিক্রেতার জন্য আবশ্যক কি না?

Answer

নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত ফ্রি সাভিসিং সেবা প্রদানের শর্তে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা জায়েয আছে। অতএব কেউ এমন শর্তে পণ্য বিক্রি করলে সেই মেয়াদে উক্ত সেবা প্রদান করা বিক্রেতার জন্য আবশ্যক হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/১৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৮৭; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৬৩৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আইয়ূব খান - চৌহালি, সিরাজগঞ্জ

৪২০০. Question

হুযুর, একটি মাসআলা জানতে চাই। আমার একটি লাইব্রেরী আছে। কয়েকদিন আগে আমার পরিচিত একজন প্রস্তাব দিলেন, তার দুটি কম্পিউটার এবং একটি প্রিন্টার আছে। এগুলো নিয়ে তিনি আমার দোকানে বসবেন। কম্পোজ, প্রিন্ট এবং এজাতীয় কাজ করবেন। সুযোগমত আমিও তার সাথে কাজ করব। আর এ বাবদ যা উপার্জন হবে তা উভয়ে সমানভাবে বা চুক্তি অনুযায়ী কিছুটা কম-বেশি হারে বণ্টন করে নেব। দোকান ভাড়া আমার দায়িত্বেই থাকবে। জানতে চাই, আমাদের এভাবে চুক্তি করা শরীয়তের দৃষ্টিতে সহীহ কি না?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তার কাজে আপনিও যদি সহযোগিতা করেন যেমন, আপনিও কম্পিউটারের কিছু কাজ করলেন বা পরিচালনা করলেন তবে এ থেকে প্রাপ্ত নীট

মুনাফা আপনারা পরস্পর পূর্ব নির্ধারিত হারে বণ্টন করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাদের দুজনের কাজের পরিমাণ সমান না হলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু আপনি যদি তার সাথে কোনো কাজ না করেন; তাকে কেবল দোকানে বসার সুযোগ দিয়ে থাকেন তাহলে তার আয়-ইনকামে আপনি শরীক হবেন না। বরং সে দোকান ব্যবহারের জন্য আপনাকে শুধু ভাড়া পরিশোধ করবে। এ ভাড়ার পরিমাণ উভয়ে আলোচনা করে ঠিক করে নিবেন।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৬২৪; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২২৮; বাদায়েউস সনায়ে ৫/৮৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৮১; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩১৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ হারুন - যশোর

৪২০১. Question

আমাদের প্রতিবেশী এক লোক বিদেশে চাকুরী করে। গত বছর সে বাড়িতে এসে একটা জমি পছন্দ করে এবং আমাকে বলে, এবার বাহিরে গিয়ে সে টাকা পাঠাবে। আমি যেন জমিটা তাকে কিনে দেই। বিদেশে গিয়ে সে আমার একাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে একটা জটিলতার কারণে জমিটি কিনতে দেরি হচ্ছে দেখে ঐ টাকা থেকে প্রায় ৪-৫ লক্ষ টাকা আমার ব্যবসায় লাগিয়ে ফেলি। এখন ঐ জমির মালিক জমিটি বিক্রি করবে না। তাই এই ১৫ লক্ষ টাকা ঐ ব্যক্তিকে ফেরত দিয়ে দিব। এখন পরিচিত একজন বলছেন, তার যে পরিমাণ টাকা আমার ব্যবসায় খাটিয়েছি সে পরিমাণ টাকার লভ্যাংশ আমার জন্য হালাল হবে না।

মুফতী সাহেবের কাছে বিনীত নিবেদন, এ ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা কী তা জানাবেন। যদি তা আমার জন্য বাস্তবেই হালাল না হয় তাহলে আমি তা কী করব? ব্যবসায় তো আমার পরিশ্রম আছে। আমি তাহলে কেন নিতে পারব না? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটির পাঠানো টাকাগুলো আপনার কাছে আমানত হিসেবে ছিল। ঐ ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত টাকাগুলো ব্যবসায় খাটানো জায়েয হয়নি। তাই ঐ টাকাগুলো থেকে অর্জিত মুনাফা আপনার জন্য হালাল হবে না। এই লাভ পুরোটা গরীব-মিসকীনকে সদকা করে দিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, কোনো কাজ বা ব্যবসায় পরিশ্রম থাকলেই পারিশ্রমিক বা লভ্যাংশ বৈধ হয়ে যায় না। বরং  ঐ কাজটি জায়েয হওয়া এবং তা যদি ব্যবসা হয়ে থাকে তবে ব্যবসার চুক্তি ও মূলধন বৈধ হওয়া আবশ্যক। অন্যথায় অর্জিত আয় হালাল হবে না। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার মূলধন খেয়ানতের টাকা থেকে এসেছে। তাই এর লভ্যাংশ নেওয়া জায়েয হবে না। তা সদকা করে দিতে হবে।

-ফাতহুল কাদীর ৬/১০৪; আলবাহরুর রায়েক ৬/৯৭; রদ্দুল মুহতার ৫/৯৭

Sharable Link

শাকির - ঢাকা

৪২০২. Question

আমার আব্বা একজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আমাদের বাগানের জমির কাগজপত্র ঋণদাতার কাছে বন্ধক রাখে। পরবর্তীতে আমরা বাগান থেকে ফল পাড়তে গেলে ঐ ব্যক্তি আমাদের বাধা দেয়। আমরা বললাম, আপনার কাছে তো জমি বন্ধক রেখেছি। ফল নিয়ে তো কোনো কথা হয়নি। সে বলল, ফল নিয়ে কথা হয় নাই ঠিক আছে, কিন্তু তোমরা যেহেতু জমি বন্ধক রেখেছ, তাই জমির সাথে ফল ও ফলের গাছও বন্ধকের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। এই ঘটনার ভিত্তিতে এখন আমরা জানতে চাই ঐ জমির গাছের ফল কি আমরা নিতে পারব? নাকি তা বন্ধক হিসেবে থাকবে? তখন তো এগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।

Answer

উক্ত বাগানের ফল বাগানের মালিকের। বন্ধক গ্রহিতার জন্য তা ভোগ করা বৈধ নয়। তেমনিভাবে মালিক পক্ষকে ফল পাড়তে বাধা দেওয়াও ঠিক নয়। তবে মালিক পক্ষ ফল পাড়ার আগে বন্ধক গ্রহীতাকে অবহিত করবে। মালিক পক্ষ যদি বন্ধকি জমির ফল সময়মত না পাড়ে তবে বন্ধকগ্রহীতা তাদেরকে ফল পাড়ার বিষয়টি জানাবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১১; আলমাবসূত, সারাখসী ২১/১৬৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২

Sharable Link

জারীর - বাসাবো, ঢাকা

৪২০৩. Question

এক ব্যক্তি আমাকে ব্যবসা করার জন্য ২ লক্ষ টাকা দিয়েছে। আর বলেছে, তুমি এই টাকা দিয়ে ব্যবসা কর। আর যা লাভ হবে, সেখান থেকে তুমি তোমার পরিবারের জন্য প্রয়োজনমত খরচ কর। আর তারপর যদি কিছু টাকা বাকি থাকে তাহলে আমাকে দিয়ো, আর যদি বাকি না থাকে তাহলে কিছু দেওয়ার দরকার নাই। এখন আমি জানতে চাচ্ছি, আমাদের এই চুক্তি সহীহ হয়েছে কি না?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি আপনাকে যে পদ্ধতিতে টাকা দিয়েছে তা শরীয়তসম্মত হয়নি। আপনারা চাইলে নিম্নের দুটি পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে চুক্তি করতে পারেন। হয়ত ঐ ব্যক্তি আপনাকে ব্যবসা করার জন্য করযে হাসানা দিবে। আপনি ব্যবসা করে মুনাফা হলে তা নিজে গ্রহণ করবেন এবং সময়মতো তার ঋণ পরিশোধ করবেন। এক্ষেত্রে মুনাফা যাই হোক সে এর ভাগ দাবি করতে পারবে না।

অথবা সেই ব্যক্তি আপনার সাথে মুদারাবা চুক্তি করতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যবসার লভ্যাংশ উভয়ের মধ্যে শতকরা হারে বণ্টনের চুক্তি পূর্ব থেকেই নির্ধারিত হতে হবে। তবে লভ্যাংশ  বণ্টনের পর বিনিয়োগকারী চাইলে নিজের অংশের লাভের পুরোটা অথবা আংশিক আপনাকে দিয়ে দিতে পারে। অথবা চুক্তির সময়েই খুব সামান্য পরিমাণে নিজের জন্য লাভের হার নির্ধারণ করে বাকিটা আপনার জন্য নির্ধারণ করতে পারে। যেমন ঠিক করা হল যে, নীট মুনাফার ৮০% আপনার আর ২০% তার থাকবে। তবে লাভের হার যাই রাখা হোক, চুক্তি সহীহ হওয়ার জন্য লভ্যাংশ শতকরা হারে নির্ধারণ করা আবশ্যক।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ৭/২৬৪; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৪৮

Sharable Link

ইলিয়াস - বরগুনা

৪২০৪. Question

আমি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। চাকরির সুবাদে আমাকে প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তাই কোম্পানি থেকে আমার চলাচলের জন্য একটি মোটর সাইকেল দেওয়া হয়েছে। দুই মাস আগে একদিন আমি অফিসে যাচ্ছিলাম। বৃষ্টির কারণে পথ পিচ্ছিল ছিল। তখন অন্য একটি মোটর সাইকেলের ধাক্কায় আমি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি এবং পথও পিচ্ছিল হওয়ার কারণে বড় রকমের দূর্ঘটনা ঘটে। দুই মাস চিকিৎসার পর এখন আমি আবার অফিসে জয়েন করতে গেলে তারা বলল, তারা আমাকে যে মোটর সাইকেলটি ব্যবহার করতে দিয়েছিল, যা এক্সিডেন্টে নষ্ট হয়েছে, সেটা ঠিক করতে যত টাকা লেগেছে তার ২৫% টাকা যেন

আমি জরিমানাসূলভ তাদেরকে দেই। আমি জানতে চাচ্ছি, এখানে তো আমার কোনো দোষের কারণে এক্সিডেন্ট হয়নি, তবুও কি আমি জরিমানা দিতে বাধ্য?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি মোটর সাইকেলটি নষ্ট হওয়ার পেছনে আপনার দোষ না থাকে তাহলে আপনি জরিমানা হিসেবে কোনো কিছু দিতে বাধ্য নন। এক্ষেত্রে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের জন্যও জরিমানা হিসেবে কোনো টাকা নেওয়া বৈধ হবে না। কিন্তু যদি আপনার ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে কোম্পানির জন্য আপনার থেকে ক্ষতিপূরণ নেওয়া জায়েয হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১২/৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৭৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১৬/১১; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩০

Sharable Link

আরীফ মাহমুদ - নারায়ণগঞ্জ

৪২০৫. Question

মাঝেমধ্যেই আমাদের এমন হয় যে, ঢাকার ভেতর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার জন্য সিটিং বাসে উঠার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের থেকে ভাড়া নিয়ে নেয়। কিন্তু আমাদের গন্তব্যে পৌঁছার আগেই গাড়িটিকে আইনি কোনো কারণে পুলিশ আটকে ফেলে বা অন্য কোনো জটিলতার কারণে গাড়িটি আর সামনে যাবে না। সে সময় আমরা অবশিষ্ট ভাড়া ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ তা আর দিতে চায় না।

জানতে চাই, আমাদের জন্য উপরোক্ত অবস্থায় অবশিষ্ট ভাড়া ফেরত চাওয়া বৈধ কি? যদি বৈধ হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ কি তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য? জানালে উপকৃত হব।

Answer

যাত্রী থেকে নির্ধারিত স্থানের ভাড়া নেয়ার পর পথিমধ্যে গাড়ি নষ্ট হয়ে গেলে অর্থাৎ কোনো কারণে যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো সম্ভব না হলে যে পরিমাণ অতিক্রম করে এসেছে শুধু ততটুকুর ভাড়া রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে বাকি টাকা যাত্রীকে ফেরত দেওয়া বাসওয়ালাদের কর্তব্য। তাই বাকি টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করা ঠিক নয়।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৫/১৭৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২২৩; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা : ৫৩৯; শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬৩৫

Sharable Link

গোলাম সারওয়ার - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৪২০৬. Question

আমি জনৈক ব্যক্তি থেকে একটি জমি বন্ধক রেখে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ দেই। তার সাথে এই চুক্তি হয়েছে প্রায় চার বছর পূর্বে। এই কয়বছর জমিটি এমনিতেই অলস পড়ে আছে। কয়েক মাস হল আমি ইট বালু ও কংক্রিটের একটি ব্যবসা শুরু করেছি। তার বন্ধকি জমিটি এই ব্যবসার জন্য খুবই উপযুক্ত। তাই তাকে বললাম, তোমার জমিটি তো আমার কাছে বন্ধক হিসাবে অলস পড়ে আছে। তুমি চাইলে জমিটা আমার কাছে ভাড়া দিতে পার। আর তোমাকে যে পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়েছি তা থেকে ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটা টাকা কেটে রাখবে। পরে যখন আমার ঋণ পরিশোধ করবে তখন হিসাব করে অবশিষ্ট টাকা আমাকে ফিরিয়ে দিবে। ফলে সে আমার এই প্রস্তাবে রাজী হয়েছে।

মাননীয় মুফতী সাহেবের কাছে প্রশ্ন হল, আমাদের উক্ত চুক্তি শরীয়তসম্মত কি না? আমি কি তার সাথে এভাবে চুক্তি করতে পারবো? জানালে উপকৃত হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ জমিটি ভাড়া নিতে চাইলে পূর্বের বন্ধকী চুক্তি বাতিল করে নতুন করে ভাড়া চুক্তি করতে হবে। আর যেহেতু লোকটির কাছে আপনার টাকা পাওনা রয়েছে তাই জমির ভাড়া ঠিক করতে হবে বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। এত কম ভাড়া ঠিক করা যাবে নাযাতে একথা বুঝা যায় যে ঋণের কারণে ভাড়া কমিয়ে নিচ্ছে। এমনটি হলে তা সুদ গ্রহণের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪৬৫; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা : ৪৬৩; দুরারুল হুক্কাম শরহু মাজাল্লাতিল আহকাম ১/৫২২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫১১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহসানুল্লাহ - তেজগাঁও, ঢাকা

৪২০৭. Question

আমার ভাইয়ের একটা ডেকোরেটরের দোকান আছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য সেখান থেকে সাউন্ডবক্স ও মাইক ইত্যাদি ভাড়া দেওয়া হয়। গানের অনুষ্ঠানের জন্যও এগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। আর অনুষ্ঠান চলাকালীন সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দোকান কর্তৃপক্ষের কাউকে উপস্থিত থাকতে হয়।

এখন আমার জানার বিষয় হল,

(ক) গানের অনুষ্ঠানের জন্য মাইক ও সাউন্ডবক্স ভাড়া দেওয়ার হুকুম কী?

(খ) অনুষ্ঠানে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য দোকানের কারো উপস্থিত থাকার হুকুম কী? এতে কোনো সমস্যা আছে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

গান-বাদ্যের অনুষ্ঠানের জন্য মাইক, সাউন্ডবক্স ইত্যাদি ভাড়া দেওয়া গুনাহের কাজে সরাসরি সহযোগিতা করার অন্তর্ভুক্ত। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-

وَ لَا تَعَاوَنُوْا عَلَی الْاِثْمِ وَ الْعُدْوَانِ

গুনাহ ও জুলুমের কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করো না। -সূরা মায়িদা (৫) : ২

সুতরাং গান-বাদ্যের জন্য মাইক, সাউন্ডবক্স ইত্যাদি ভাড়া দেওয়া, সেখানে মেশিনপত্র পাঠানো, বা তাদের জন্য নিজের কোনো লোক দেওয়া সবই নাজায়েয। যে শ্রমিক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে সে দুভাবে গুনাহগার হবে। গুনাহের কাজে সহযোগিতা করার কারণে এবং গান-বাদ্য শ্রবণের কারণে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৬/৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৪৯; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪৫৩

Sharable Link

হুমায়ূন কবীর - বনানী, ঢাকা

৪২০৮. Question

আমার একটা লেয়ার মুরগির ফার্ম আছে। সেটি লোকালয় থেকে অনেক দূরে। তবে পাশে রাস্তা আছে। সেখানে দুইবার চোর হানা দিয়েছিল। কয়েকজন লোক সবসময় সেখানে থাকে। কিন্তু তারা টের পায়নি। তাই নিরাপত্তার জন্য তিনটা কুকুর রাখতে চাচ্ছি। আমার জন্য কি উক্ত উদ্দেশ্যে কুকুর রাখা জায়েয হবে?

Answer

হাঁ, পাহারার উদ্দেশ্যে কুকুর রাখা জায়েয আছে। তবে লক্ষ রাখতে হবে, কুকুরের কারণে যেন অন্য কারো অসুবিধা না হয়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

مَنِ اقْتَنَى كَلْبًا، لَيْسَ بِكَلْبِ صَيْدٍ، وَلَا مَاشِيَةٍ، وَلَا أَرْضٍ، فَإِنّهُ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِهِ قِيرَاطَانِ كُلّ يَوْمٍ.

যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পালে ঐ ব্যক্তির প্রতিদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৭৫; জামে তিরমিযী, হাদীস ১৪৮৭; মুআত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ৩/৪০৫; কিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনা ১/৭৭৯; ফাতহুল কাদীর ৬/২৪৬; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭৩

Sharable Link

যায়েদ হাসান - জগন্নাথপুর, সিলেট

৪২০৯. Question

আমাদের সমাজে সাধারণত সার্টিফিকেটে বয়স কমিয়ে উল্লেখ করা হয়। সম্ভ্রান্ত-সাধারণ প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষই ব্যাপকভাবে এ কাজটি করে থাকে। প্রয়োজনে করে আবার অপ্রয়োজনেও করে। এটাকে একটা সাধারণ বিষয় মনে করা হয়। কোনো অন্যায়ই মনে করে না।

আমি জানতে চাই, বাস্তবতা গোপন করে এভাবে সার্টিফিকেটে সঠিক বয়স উল্লেখ না করা ইসলামের দৃষ্টিতে কোন্ পর্যায়ের অন্যায়?

Answer

সার্টিফিকেটে বয়স কম উল্লেখ করা সুস্পষ্ট মিথ্যা। আর মিথ্যা বলা ও লেখা কবীরা গুনাহ ও হারাম। বিষয়টি রেওয়ায়েজে পরিণত  হলেও তা জায়েয হয়ে যায়নি। তাই কেউ এমনটি করে থাকলে যথাযথ নিয়মে তা সংশোধন করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা আবশ্যক।

এক হাদীসে এসেছে, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

(তরজমা) নিশ্চয়ই মিথ্যা পাপের পথ  দেখায়। আর পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। মানুষ মিথ্যা বলতে বলতে এক সময় সে আল্লাহর দরবারে মিথ্যাবাদী হিসাবে সাব্যস্ত হয়ে যায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০৯৪ ; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৬০৬)

-আলমাবসূত, সারাখসী ৩০/২১১; মুলতাকাল আবহুর ৪/২২১

Sharable Link

মারুফ সাইফুল্লাহ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪২১০. Question

হুযুর! আমার এক বন্ধু ইউনিভাসির্টির হলে থাকত, হলের ক্যান্টিনে খাবার যেদিন ভাল লাগত না সেদিন ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু টাকা কম দিত। ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করার পর ভার্সিটির হল থেকে চলে আসার সময় সে ক্যান্টিনের মালিকদের থেকে বিদায় নিয়ে এসেছে। আর বলেছে, কোনো পাওনা থাকলে মাফ করে দিতে। ইচ্ছাকৃতভাবে সে কিছু টাকা কম দিয়েছিল এ কথা তার তখন মনে ছিল না। সে ঠিক কত টাকা কম দিয়েছিল তা বলতে পারে না। তবে সে অনুমান করে যে, হয়ত হাজার খানেক টাকা হবে। এখন সে কী করবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বন্ধুর কর্তব্য হল, অন্তত এক হাজার টাকা ক্যান্টিন মালিকদের দিয়ে দেওয়া। বিদায়ের সময় ঐভাবে মাফ চেয়ে নেওয়ার দ্বারা তা মাফ হয়নি।

আর ঐ সময়ের ক্যান্টিন মালিকগণ যদি এখন না থাকে তাহলে তাদের ঠিকানা জোগাড় করে তাদের কাছে টাকাগুলো পৌঁছে দিতে হবে। তারা জীবিত না থাকলে তাদের ওয়ারিশদেরকে দিবে। ক্যান্টিন মালিক বা তার ওয়ারিশ কারো সন্ধান পাওয়া না গেলে ঐ পরিমাণ টাকা তাদের পক্ষ থেকে কোনো গরীব মিসকীনকে সদকা করে দিবে। আর পেছনের এ অন্যায়ের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা-ইস্তিগফার করবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৬/১৩৯; শরহুল মাজাল্লাহ ১/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৮৩

Sharable Link

আব্দুল্লাহ আলী - ওয়েব থেকে পাপ্ত

৪২১১. Question

আমি একটি মেস পরিচালক। অনেক সময় দেখা যায়, অনেকে প্যান্ট, বেডিং, বালিশ ইত্যাদি রেখে চলে যায়। কিন্তু পরে ঐগুলো আর নেয় না। এই জিনিসগুলো আমি কী করব?

Answer

মেসে বসবাসকারী লোকদের রেখে যাওয়া বস্তুগুলো যদি এমন হয়, যা সাধারণত মানুষ নিতে আসে না, সেগুলো গরীবদের দিয়ে দিতে পারবেন। গরীব মেসমেম্বাররাও তা ব্যবহার করতে পারবে। আর যদি এমন বস্তু হয়, যেগুলোর ব্যাপারে মনে হয় যে, তা হয়ত ভুলে ছেড়ে গেছে তাহলে মালিকের সন্ধান করতে চেষ্টা করবেন। যদি সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে তার আসার অপেক্ষা করবেন এবং যতদিন মালিক আসার সম্ভাবনা থাকবে ততদিন অপেক্ষা করার পরও মালিক না আসলে কোনো গরীব লোককে তা দিয়ে দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি দরিদ্র হলে নিজেও তা ব্যবহার করতে পারবেন।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৮৯-২৯১; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৭৯

Sharable Link

তাহমীদ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪২১২. Question

হুযুরের কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চাচ্ছি-

১. আমার পাশের দোকানে এক হিন্দু কর্মচারী থাকে। তার সাথে আমার বেশ খাতির জমে গেছে। সে আমাকে দেখলেই পুরো মুসলিমের মতই সালাম দেয়। এখন তাকে উত্তর কীভাবে দিব? আর মাঝে মাঝে ম্যাসেজে সালাম লেখে, তার উত্তরে কী লিখব?

২. আমার এক সাথীর কাছে শুনেছি, নাভির নিচের পশম ৪০ দিনের বেশি কাটা না হলে নামায মাকরূহ হয়। এ কথা কতটুকু সঠিক? আসলে এক্ষেত্রে কী নিয়ম তা বিস্তারিত জানালে খুশি হব।

Answer

১. অমুসলিমরা সালাম দিলে উত্তরে শুধু ওয়াআলাইকুমবলার কথা হাদীস শরীফে এসেছে।

হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

إِذَا سَلَّمَ عَلَيْكُمْ أَهْلُ الكِتَابِ فَقُولُوا : وَعَلَيْكُمْ.

আহলে কিতাব তোমাদেরকে সালাম দিলে তোমরা ওয়াআলাইকুমবলবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৫৮

অনুরূপভাবে ম্যাসেজে সালাম পাঠালে উত্তরে ওয়াআলাইকুমলিখতে পারেন। -আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২০; রদ্দুল মুহতার ৬/৪১২; কেফায়াতুল মুফতী ১২/২২৫

২. নাভির নিচের পশম প্রতি সপ্তাহে পরিষ্কার করা মুস্তাহাব। আর তা জুমার দিনে করা অতি উত্তম। সপ্তম দিনে সম্ভব না হলে প্রতি ১৫ দিনে একবার। এর চেয়েও বিলম্ব হলে সর্বোচ্চ ৪০ দিন যেন অতিক্রম না হয়। কেননা এর চেয়ে বিলম্ব করা মাকরূহ।

হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেন,

وُقِّتَ لَنَا فِي قَصِّ الشّارِبِ، وَتَقْلِيمِ الْأَظْفَارِ، وَنَتْفِ الْإِبِطِ، وَحَلْقِ الْعَانَةِ، أَنْ لَا نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নখ ও গোঁফ কাটা এবং বগলের চুল উপড়ানো ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কারের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, তা যেন চল্লিশ রাতের অধিক (অপরিষ্কার অবস্থায়) রাখা না হয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮

তাই এসব পরিষ্কারে ৪০ দিনের বেশি বিলম্ব করবে না। তবে এ কারণে নামায মাকরূহ হওয়ার কথা ঠিক নয়। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৭; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ.২৮৬

Sharable Link

ডা. মিজানুর রহমান - আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম

৪২১৩. Question

আমাদের পরিবার একান্নভুক্ত পরিবার। আমরা ৬ ভাই। সাথে মা আছেন। সবাই বিবাহিত। জায়গা-জমির ঝামেলার কারণে গ্রামে পৃথক পৃথক বাড়ী করা সম্ভব হচ্ছে না। সবার জন্য রান্নাঘর একটাই। আমি বিয়ে করেছি বছর দেড়েক হয়েছে। কিন্তু আমার স্ত্রী এখনো আমাদের পরিবারের সাথে মানিয়ে নিতে পারেনি। বিভিন্ন বিষয়ে মাঝেমধ্যে আম্মুর সাথে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। তার এগুলো সহ্য হয় না। আমাকে বাইরে বাসা নেওয়ার জন্য তাগাদা দেয়। এদিকে আমি ঘরে না থাকলে আম্মুর কষ্ট হবে। আম্মুর খেদমতে সমস্যা হবে। এ জন্য বাইরে যেতে চাচ্ছি না। চিন্তা করছি, একদিকে মা কষ্ট পাবে, অন্যদিকে স্ত্রীর অধিকার হরণ হচ্ছে। এখন আমি কী করব। এ ব্যাপারে শরয়ী দিকনির্দেশনা কি তা জানালে খুশি হব।

 

Answer

মাকে সন্তুষ্ট রাখা ও তার সেবা করা সন্তানের গুরুদায়িত্ব। আর নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীকে ভালভাবে রাখা, তার কষ্ট না হয় এদিকে লক্ষ রাখাও স্বামীর দায়িত্ব। একজনের হক আদায় করতে গিয়ে অন্যের হক ক্ষুণ্ন করা যাবে না। বরং বুদ্ধিমত্তার সাথে দুদিকে সমন্বয় করার চেষ্টা করতে হবে।

অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যৌথ পরিবারে থাকার কারণে বাস্তবেই যদি স্ত্রীর হক নষ্ট হয় এবং পরস্পর সুন্দর সহাবস্থান বিঘ্নিত হতে থাকে তাহলে মাকে বুঝিয়ে স্ত্রীকে পৃথক করে দেওয়া ভাল হবে।

বাসা পৃথক করে নিলেও আপনার দায়িত্ব হবে মায়ের সাথে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করা। তাঁর প্রয়োজনাদী পুরা করা এবং তাঁর কোনো খেদমতের দরকার হলে তা আঞ্জাম দেওয়া।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৫৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৫৯৯-৬০১; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৯৪; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৫২৫

Sharable Link