মুহাম্মাদ সালাহুদ্দীন - নারায়ণগঞ্জ

৩৮৩২. Question

এক ব্যক্তির কাপড়ে নাপাকি লেগে শুকিয়ে গেছে। এখন তার মনে নেই- কাপড়ের কোন অংশে নাপাকি লেগেছে। সে এ কাপড় কীভাবে পবিত্র করবে?

 


Answer

এক্ষেত্রে লোকটিকে পুরো কাপড়ই ধুতে হবে। কাপড়ের অংশ বিশেষ ধুয়ে নিলে পবিত্র হবে না। হাঁনাপাকি কোন স্থানে লেগেছে তা জানা থাকলে শুধু ঐ স্থান ধুয়ে নিলেই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। পুরো কাপড় ধুতে হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯০৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৩৬; ফাতহুল কাদীর ১/১৬৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহমাদুল্লাহ - সদর, কুমিল্লা

৩৮৩৩. Question

একবার আমার গোসল ফরয হলে খুব তাড়াহুড়া করে গোসল করি। তখন নাকে পানি দিতে ভুলে যাই। এরপর যোহরের ফরয নামায আদায় করি। পরে যখন মনে পড়েছে তখন পুনরায় গোসল করে আবার নামায আদায় করি।

জানতে চাই, উক্ত অবস্থায় সঠিক নিয়ম কী? এবং আমি যেভাবে করেছি তা কি যথার্থ হয়েছে?

 


Answer

এক্ষেত্রে শুধু নাকে পানি দিয়ে নিলেই গোসল সম্পন্ন হয়ে যেত। পুনরায় গোসল করার দরকার ছিল না। তবে গোসল করে পুনরায় নামায পড়ার দ্বারা তা আদায় হয়ে গেছে।

-কিতাবুল আছার, হাদীস ৫৯; কিতাবুল আছল ১/৩২; মাবসূত, সারাখসী ১/৬২; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ১/৩৩৮; ইলাউস সুনান ১/২০৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ জাবের - পাবনা

৩৮৩৪ . Question

একদিন মসজিদে গিয়ে দেখি জামাত শুরু হয়ে গেছে। তাই দ্রুত অযু করতে শুরু করি। তখন আমার হাতে ২টি আংটি ছিল। তাড়াহুড়োর কারণে সেগুলো খুলতে মনে ছিল না। সেগুলোসহই স্বাভাবিকভাবে অযু করি। পরে মনে হলে সন্দেহে পড়ে যাই যে, আমার অযু হয়েছে কি না। তবে ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়ায় নামায পুনরায় পড়িনি। আমার উক্ত অযু ও নামায হয়েছে কি?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার আংটি দুটি যদি এত ঢিলেঢালা হয় যেখোলা বা নাড়াচাড়া করা ছাড়াই উভয় আংটির স্থান ভিজে যায় তাহলে অযু হয়ে গেছে। আর যদি কোনো এক আংটি বা উভয়টি এত সংকীর্ণ হয় যেনাড়াচাড়া করা ছাড়া পানি ভেতরে যায় না তাহলে অযু হয়নি। এমনটি হয়ে থাকলে আপনাকে ঐ নামায আবার পড়ে নিতে হবে। হযরত আবু তামীম জায়শানী রাহ. থেকে বর্ণিত আছেআবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. যখন অযু করতেন আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামীমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন। 

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১/৩৭১ (৪৫৬); মাবসূত, সারাখসী ১/১০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ৪২৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাশেদ - গোয়ালন্দ, রাজবাড়ি

৩৮৩৫ . Question

রাশেদ একদিন কল ছেড়ে অযু করছিল। অযুর পানিগুলো একটি বালতিতে জমা হচ্ছিল। অযু শেষ হতেই ট্যাংকের পানিও শেষ হয়ে যায়। তার কাপড়ের একটি অংশে নাপাকি লেগে ছিল। এখন কি সে বালতির জমা পানি দিয়ে উক্ত কাপড় পবিত্র করতে পারবে?

 


Answer

হাঁবালতির ঐ জমা পানি দিয়ে কাপড় পবিত্র করা যাবে। কারণ অযুর ব্যবহৃত পানি দ্বারা নাপাকি দূর করা জায়েয। কিন্তু এ পানি দ্বারা অযু-গোসল করা জায়েয নয়। 

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪১; আলবাহরুর রায়েক ১/৯৬; মারাকিল ফালাহ ৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩০৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ বিন ছফী - কোটবাড়ি, কুমিল্লা

৩৮৩৬. Question

গত হজ্বে আমরা কয়েকজন মিলে এক মরুভূমিতে ঘুরতে যাই। এবং সেখানে এক রাত অবস্থানও করি। মরুভূমিটির আশপাশে প্রায় ৩/৪ কিলোমিটারের মধ্যে পানির কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তখন আমাদের এক সাথীর গোসলের জরুরত হয়। আর আমাদের সাথেও এত অল্প পানি ছিল, যা দিয়ে সে শুধু অযু করতে পারবে, গোসল করতে পারবে না। ফলে সে প্রথমে অযু করে এরপর তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নেয়।

প্রশ্ন হল, উল্লেখিত অবস্থায় এভাবে করা কি তার জন্য সঠিক হয়েছে? এবং এরপর আদায়কৃত নামাযের কী হুকুম? জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থানের জায়গা থেকে যেহেতু পানি দূরে ছিল এবং আপনাদের কাছেও পর্যাপ্ত পানি ছিল না তাই এক্ষেত্রে ফরয গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করাই নিয়ম। অযু করার প্রয়োজন ছিল না। তাই তায়াম্মুম করে নামায আদায় করার দ্বারা তা আদায় হয়ে গেছে।

عَنِ الْأَوْزَاعِيِّ، قَالَ: سَأَلْتُ الزُّهْرِيَّ، عَنِ الرَّجُلِ تُصِيبُهُ الْجَنَابَةَ وَمَعَهُ مَاءٌ يَكْفِيهِ لِلْوُضُوءِ قَالَ: يَتَيَمَّمُ .

আওযায়ী রাহ. বলেনআমি যুহরী রাহ. -কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামযার  গোসলের জরুরত হয়েছে এবং তার নিকট শুধু অযু করার পানি আছে। সে তখন কী করবেতিনি বললেনসে শুধু তায়াম্মুম করবে

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৭৮৭; কিতাবুল আছল ১/৮৭; মাবসূত, সারাখসী ১/১১৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩০

Sharable Link

তালেব ফাহীম - মিরসরাই

৩৮৩৭ . Question

এক ব্যক্তি তাড়াহুড়ো করে অযু করে এসে নামাযে দাঁড়িয়ে গেছে। পরক্ষণেই তার মনে হয়েছে সে মাথা মাসাহ করেনি। এখন সে কী করবে? উল্লেখ্য যে, স্মরণ হওয়ার পরও তার হাত-মুখ, দাঁড়ি ইত্যাদি অযুর অঙ্গগুলো ভেজা ছিল। হাতের অবশিষ্ট ভেজা দিয়ে বা অন্য অঙ্গ থেকে হাত ভিজিয়ে মাথা মাসাহ করে নিলে কি সঠিক হত?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটি নামায ছেড়ে দিবে। অতপর নতুন পানি দ্বারা হাত ভিজিয়ে শুধু মাসাহ করে নিবে। এরপর নামাযে শরিক হবে। দাঁড়ি বা অন্য কোনো অঙ্গ ভিজা থাকলেও তা দ্বারা হাত ভিজিয়ে মাসাহ করলে মাসাহ সহীহ হবে না। উল্লেখ্য অযু করতে গিয়ে তাড়াহুড়ো করা সমীচীন নয়। মনোযোগ দিয়ে অযু করা উচিত। যেন কোনো অঙ্গ বাদ না পড়ে।

-কিতাবুল হুজ্জাহ ১/২৯; মাবসূত, সারাখসী ১/৬২; ৬৩ আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৬৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৪; রদ্দুল মুহতার ১/৯৯

Sharable Link

আব্দুল্লাহ মাসুম - বোরহানুদ্দীন, ভোলা

৩৮৩৮. Question

আমাদের গোসলখানাগুলো বেশ সংকীর্ণ। একদিন লক্ষ্য করলাম, গোসলের সময় কিছু পানি শরীর থেকে গড়িয়ে বালতিতে পড়ছে। এর দ্বারা বালতির পানি নাপাক হয়ে যাবে ভেবে একপাশে সরে এসে গোসল শেষ করি। এভাবে গোসলের পানি পড়ার দ্বারা কি বালতির পানি সত্যিই নাপাক হয়ে যায়?

 


Answer

গোসলের সময় শরীর থেকে পানি গড়িয়ে বালতিতে পড়লে বালতির পানি নাপাক হবে না। এক বর্ণনায় এসছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي الرَّجُلِ يَغْتَسِلُ مِنَ الْجَنَابَةِ فَيَنْضَحُ فِي إِنَائِهِ مِنْ غُسْلِهِ، فَقَالَ: لَا بَأْسَ بِهِ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ফরয গোসলের সময় পাত্রে পানির ছিটা পড়া সম্পর্কে বলেনএতে কোনো সমস্যা নেই।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৭৮৯; কিতাবুল আছল ১/২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৮; মাবসূত, সারাখসী ১/৪৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/২১১; আলবাহরুর রায়েক ১/৭০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল আযীয - মোমেনশাহী

৩৮৩৯. Question

একদিন আমি একটি বড় গামলা নিচে রেখে অযু করি। পরে আমার ছোট ভাই এসে সেই গামলার পানি দিয়ে অযু করে। তার সেই অযু সঠিক হয়েছে কি? সেই অযু দ্বারা যে নামায আদায় করেছে তা পুনরায় আদায় করতে হবে কি?

 


Answer

আপনার ভাইয়ের অযু হয়নি। কেননা অযুতে ব্যবহৃত পানি দ্বারা পুনরায় অযু করা যায় না। সুতরাং তার অযু যেহেতু হয়নি তাই ঐ অযু দ্বারা যে নামায পড়েছে তাও আদায় হয়নি। পুনরায় তা পড়ে নিতে হবে। 

-কিতাবুল আছল ১/২০; মাবসূত, সারাখসী ১/৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/২০৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১/২৮১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৮৬

Sharable Link

মামুন - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৮৪০ . Question

মাঝে মাঝে প্রস্রাবের রাস্তায় হালকা পানি দেখা যায়। এটা হয় হঠাৎ করে। বিশেষ করে স্ত্রীর সাথে মোবাইলে কথা বলার পর মাঝেমধ্যে এমন হয়। এ কারণে গোসল করতে হবে, না অযু করলে চলবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত কারণে গোসল ফরয হবে না। বরং অযু করলেই চলবে। আর তা কাপড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।

-বাদায়েউস সানায়ে, ১/১৪৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৩ আদ্দুররুল মুখতার ১/১৬৫, ৩১৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইউসুফ - কাপাসিয়া, গাজিপুর

৩৮৪১ . Question

আমরা শুনেছি, যিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত প্রতি ফরয নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক একবার পড়া ওয়াজিব এবং একের অধিক পড়া সুন্নত। এটা কি সঠিক?


 


Answer

যিলহজ্বের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের সালামের পর কোনো কথা বলার আগেই একবার তাকবীরে তাশরীক বলা ওয়াজিব। পুরুষরা হালকা আওয়াজে পড়বে আর মহিলারা নিম্ন আওয়াজে পড়বে। একের অধিকবার বলা সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। কোনো কোনো কিতাবে তিনবার পড়াকে সুন্নত বলা হলেও বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী তা সহীহ নয়।

উল্লেখ্যএটি হল নামাযের পরে তাকবীরে তাশরীক পড়ার মাসআলা। এমনি তো ঐ দিনগুলোতে যিকিরতাকবীর ও তাহলীল বেশি বেশি পড়া সুন্নত। তবে এটি হল একটি ইনফেরাদি আমল। হাদীস শরীফে আছে,

عَنْ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:  مَا مِنْ أَيَّامٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللهِ وَلَا أَحَبُّ إِلَيْهِ الْعَمَلُ فِيهِنَّ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ الْعَشْرِ، فَأَكْثِرُوا فِيهِنَّ مِنَ التَّهْلِيلِ وَالتَّكْبِيرِ وَالتَّحْمِيدِ.

আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনআল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিক মহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহআল্লাহু আকবার এবং আলহামদু লিল্লাহ পড়।(মুসনাদে আহমদ ২/৫৭হাদীস ৫৪৪৬)

-হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ২৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; মুলতাকাল আবহুর ১/২৬০; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৭, ১৭৮ ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৪৮৪

Sharable Link

শাব্বীর আহমাদ - ভাঙ্গা, ফরিদপুর

৩৮৪২. Question

কেউ যদি যিলহজ্বের ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ অর্থাৎ তাশরীকের দিনসমূহে কাযা নামায পড়ে তা ঐ পাঁচ দিনের কাযা হোক বা পূর্বের হোক তাহলে তাকে কি নামায শেষে তাকবীরে তাশরীক পড়তে হবে?

 


Answer

আইয়ামে তাশরীকের পাঁচ দিনের মধ্যে কোনো নামায কাযা হয়ে গেলে তা যদি এ পাঁচ দিনের মধ্যেই আদায় করা হয় তাহলে এ কাযা নামাযের পর তাকবীরে তাশরীক বলতে হবে। কিন্তু পূর্বের কোনো কাযা নামায আইয়ামে তাশরীকে আদায় করলে তাকবীরে তাশরীক বলবে না। 

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৫১১-৫১৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২; রদ্দুল মুহতার ২/১৭৯

Sharable Link

আবু তাহের - লোচনপুর, রায়পুর

৩৮৪৩. Question

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব একদিন ইশার নামাযে প্রথম বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে যান। মুসল্লিরা লোকমা দিলে তিনি দাঁড়ানো থেকে তাশাহহুদের জন্য বসে যান এবং নামায শেষে সাহু সিজদা দেন। নামায শেষে একজন  মুসল্লি বললেন যে, নামায হয়নি। ইমাম সাহেব তাই পুনরায় নামায দোহরান।

আমার প্রশ্ন হল, ঐ মুসল্লি কি ঠিক বলেছিল? ইমাম সাহেবের নামায দোহরানো কি সঠিক হয়েছে? এ ভুলের ক্ষেত্রে করণীয় কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

উক্ত মুসল্লির কথা ঠিক নয়। নামাযটি দোহরানোর প্রয়োজন ছিল না। কারণ প্রথম বৈঠক না করে ভুলে দাঁড়িয়ে গেলে নিয়ম হলতাশাহহুদের জন্য আর ফিরে না আসা। বরং যথানিয়মে বাকি নামায আদায় করে শেষে সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষ করা। অবশ্য নিয়ম লঙ্ঘন করে কেউ তাশাহহুদের জন্য ফিরে এলে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী তার নামায নষ্ট হবে না। বরং সাহু সিজদার মাধ্যমে নামায শেষ করে নিলেই নামায আদায় হয়ে যাবে। 

-আলবাহরুর রায়েক ২/১০১, ১০২; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ২৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৮৩-৮৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ নূরুদ্দীন - মাইজদী, নোয়াখালী

৩৮৪৪. Question

আমি একটি বইয়ে পড়েছি, বিতরের নামাযে দুআ কুনূতের পর দরূদ শরীফ পড়া মুস্তাহাব এবং ঐ সময়ে দরূদ শরীফ পড়লে শেষ বৈঠকে দরূদ শরীফ পড়তে হবে না। জানতে চাই, ঐ বইয়ের এ কথাটি কি ঠিক?

 


Answer

বিতরের নামাযে দুআ কুনূতের পর দরূদ শরীফ পড়া ভালো। তবে এ সময়ে দরূদ পড়লে শেষ বৈঠকে দরূদ পড়া লাগবে নাএ কথা ঠিক নয়বরং শেষ বৈঠকে দরূদ পড়া পৃথকভাবে সুন্নতে মুআক্কাদা। দুআ কুনূতের পর দরূদ শরীফ পড়া হোক বা না হোক শেষ বৈঠকে দরূদ পড়তেই হবে।

-শরহুল মুনইয়া ৪২২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩৮৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ২০৯

Sharable Link

এইচ এম এস - ঢাকা

৩৮৪৫. Question

তারাবীহ নামাযে ১৭ নং রাকাতে হাফেয সাহেব সিজদার আয়াত না পড়েই সিজদা দেন। সিজদা থেকে উঠে সিজদার আয়াতের পর থেকে শুরু করে যথানিয়মে ১৭ রাকাত ও ১৮ রাকাত শেষ করেন। অর্থাৎ সিজদার আয়াতটুকু পড়া হয় নাই। নামায শেষে সিজদার আয়াত ছুটে গেছে জানানো হলে তিনি ১৯ নং রাকাতে প্রথমে সিজদার আয়াত পড়ে সিজদা দেন। অতপর ১৮ নং রাকাতের কিরাতের পর থেকে কিরাত পড়ে যথানিয়মে ১৯ ও ২০ নং রাকাত শেষ করেন।

এখন প্রশ্ন হল, ১৭ নং রাকাতে সিজদার আয়াত না পড়েই যেহেতু সিজদা দেওয়া হয়েছে তাই ঐ দুই রাকাত নামায সহীহ হয়েছে কি না? সহীহ না হলে আমাদের করণীয় কী?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু সিজদার আয়াত পড়া হয়নি তাই তিলাওয়াতে সিজদাও ওয়াজিব হয়নি। আর ওয়াজিব হওয়া ছাড়াই সিজদা দেওয়ার কারণে সিজদায়ে সাহু করা ওয়াজিব ছিল। ইমাম সাহেব যেহেতু সিজদায়ে সাহু করেননি তাই নামাযটি মাকরূহর সাথে আদায় হয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ রাতেই এ দুই রাকাত নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া উচিত ছিল। অবশ্য এখন আর এ ব্যাপারে কিছু করণীয় নেই। কারণ তারাবীহর নামাযের সময় সংশ্লিষ্ট রাত পর্যন্তই সীমিত। ঐ রাতের পর আর তারাবীহ কাযা করার নিয়ম নেই।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০১; মারাকিল ফালাহ ২৫০, ২২৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪, ৬৪

Sharable Link

আবুল কালাম আজাদ - মংলীপার, সিলেট

৩৮৪৬. Question

 

আমাদের এলাকার বড় মাদরাসার মুহতামিম একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেম। কিছুদিন আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এখনও তিনি আমাদের জামে মসজিদে জুমআ, ঈদ ও তারাবীহর নামায পড়ান। আমি শুনেছি, অন্ধ ব্যক্তির পেছনে নামায মাকরূহ হয়। জানার বিষয় হল, আমাদের উক্ত ইমামের পেছনে নামায মাকরূহ হবে কি?

 


 

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত ইমাম যেহেতু বড় আলেম ও সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তি তাই তার ইমামতি করার সুযোগ আছে। পাক-নাপাকির খেয়াল না রাখতে পারলে কিংবা ইমাম অন্ধ হওয়ার কারণে মুসল্লিরা তার পেছনে নামায পড়তে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে তখন অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি মাকরূহ হয়। সকল অন্ধ ব্যক্তির ইমামতি মাকরূহ নয়।

এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছেআনাস রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের ইমামতির জন্য আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম রা.-কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন। অথচ তিনি ছিলেন দৃষ্টিহীন। -মুসনাদে আহমাদহাদীস ১৩০০০মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৩৮২৮

আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছেইতবান ইবনে মালিক রা. তার সম্প্রদায়ের লোকদের ইমামতি করতেন। অথচ তিনি ছিলেন দৃষ্টিহীন।

-সুনানে বাইহাকী ৩/৮৭; আলইখতিয়ার ১/২০০-২০১; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৮৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৬০

Sharable Link

কোটবাড়ি, কুমিল্লা - আহমাদ বিন ছফী

৩৮৪৭ . Question

আমি নিয়মিত নামায পড়ি। কিছুদিন যাবৎ প্রায়ই নামাযের মধ্যে রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। তিন রাকাত হল না চার রাকাত। এ অবস্থায় আমি কীভাবে নামায আদায় করব? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি প্রবল ধারণার উপর ভিত্তি করে বাকি নামায পূর্ণ করবেন।

আর যদি রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে প্রবল ধারণা না হয় তাহলে কম সংখ্যাটা ধর্তব্য হবে এবং এ হিসেবে বাকি নামায পূর্ণ করবেন। এক্ষেত্রে প্রত্যেক রাকাতের পর বৈঠক করে তাশাহহুদ পড়বেন। আর শেষ বৈঠকে সাহু সিজদা দিবেন। হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

إِذَا سَهَا أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ وَاحِدَةً صَلَّى أَوْ ثِنْتَيْنِ فَلْيَبْنِ عَلَى وَاحِدَةٍ، فَإِنْ لَمْ يَدْرِ ثِنْتَيْنِ صَلَّى أَوْ ثَلاَثًا فَلْيَبْنِ عَلَى ثِنْتَيْنِ، فَإِنْ لَمْ يَدْرِ ثَلاَثًا صَلَّى أَوْ أَرْبَعًا فَلْيَبْنِ عَلَى ثَلاَثٍ، وَلْيَسْجُدْ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ

তোমাদের কারো যদি নামাযের মধ্যে সন্দেহ হয় ফলে সে জানে না যে এক রাকাত পড়ল না কি দুই রাকাত। তাহলে সে যেন এক রাকাত ধরে নিয়ে নামায পড়ে। আর যদি দুই রাকাত পড়ল না তিন রাকাততা না জানে তাহলে যেন দুই রাকাত ধরে নামায পড়ে এবং (এসব ক্ষেত্রে) সালাম ফেরানোর পূর্বে দুটি সিজদা আদায় করে। (অর্থাৎ সাহু সিজদা করে)

-জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৯৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯৩-৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩০; কিতাবুল আছল ১/১৯৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১১১

Sharable Link

মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ - বরিশাল

৩৮৪৮. Question

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব কুরআন শরীফ পুরোপুরি সহীহভাবে পড়তে পারেন না। বিশেষভাবে ع ح এর উচ্চারণ সঠিক হয় না। ع হামযার মতো এবং ح ه ـ এর মতো হয়ে যায়। তবে দায়িত্বশীলগণ চাইলে পুরোপুরি সহীহ পড়েন এমন ইমাম নিযুক্ত করতে পারেন। এ অবস্থায় বর্তমান ইমামের পেছনে আমাদের নামায সহীহ হবে কি না? আর এ ধরনের ব্যক্তিদের ইমামতির হুকুম কী? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

ع , ح সহীহ-শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে না পারলে নামায মাকরূহ হওয়া এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নামায নষ্ট হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। তাই যে এমন ভুল পড়ে তাকে ইমাম হিসেবে রাখা জায়েয হবে না। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ববিশুদ্ধ তিলাওয়াত করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় মাসায়েল জানে এমন কাউকে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত করা।

-শরহুল মুনয়াহ ৪৮২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৬৫; ফাতহুল কাদীর ১/২৮২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৯০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭৯

Sharable Link

ইবনে আবদিস সালাম - লালমনিরহাট

৩৮৪৯ . Question

আমি সাইনোসাইটিস রোগে আক্রান্ত। ডাক্তার শরীরে ঠাণ্ডা লাগাতে নিষেধ করেছেন। আর বাস্তবতা হল, সামান্য ঠাণ্ডা লাগলেই মাথাব্যাথা আরম্ভ হয় এবং সর্দি লেগে যায়। এ অবস্থায় রাতে গোসল ফরয হলে আমি তায়াম্মুম করতে পারব কি না? যদি করা যায় তাহলে গোসলের তায়াম্মুমের নিয়মসহ জানিয়ে বাধিত করবেন।

 


Answer

উল্লেখিত অবস্থায় যদি গরম পানি ব্যবহারের সুযোগ থাকে কিংবা গরমের দিন স্বাভাবিক পানি দ্বারা গোসল করলে যদি তেমন সমস্যা না হয় তাহলে আপনাকে গোসলই করতে হবে। এক্ষেত্রে তায়াম্মুম জায়েয হবে না। তবে গোসল করলে যদি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয় তখন গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করতে পারবেন। তদ্রূপ অসুস্থ অবস্থায় গোসল ফরয হলে তখন গোসল করলে অসুখ যদি আরো বেড়ে যাবে বলে মনে হয় তবেও তায়াম্মুম করা জায়েয। আর গোসলের তায়াম্মুম অযুর তায়াম্মুমের মতোই। উভয় তায়াম্মুম একই নিয়মে করতে হবে। আর ওজরের কারণে তায়াম্মুম করার পর যখন গোসল করার সামর্থ্য ফিরে পাবে তখন তাকে গোসল করতে হবে।

-কিতাবুল আছল ১/৮৬; মাবসূত, সারাখসী ১/১২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭১; আলবাহরুর রায়েক ১/১৪১; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ১/৬২

Sharable Link

ইমতিয়াজ হাবিব - চকরিয়া, কক্সবাজার

৩৮৫০. Question

আমি এক সেনা কর্মকর্তা। কখনো কখনো আমাদেরকে বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চলে ট্রান্সফার করা হয়। ১৪দিন পরপর আমাদের জন্য খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হয়। দেখা যায়, ১০-১২ দিন যেতেই খাওয়ার পানি ছাড়া আমাদের আর কোনো পানি অবশিষ্ট থাকে না। আশেপাশে কোনো জনবসতিও নেই। চতুর্দিকে মাইল দুয়েক খুঁজেও পানির সন্ধান পাই না। এ অবস্থায় আমরা কি তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারব?

 


Answer

হাঁপ্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি পানি দুই হাজার গজ অর্থাৎ প্রায় দুই কিলোমিটারের মতো দূরে থাকে তাহলে আপনারা তায়াম্মুম করে নামায পড়তে পারবেন।

-কিতাবুল আছল ১/৯১; মাবসূত, সাারাখসী ১/১১৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৩৫; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৩/২৪২

Sharable Link

জহির উদ্দীন - নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম

৩৮৫১ . Question

গতবার ঈদের নামাযে আমাদের ইমাম ছাহেব অতিরিক্ত তাকবীর বলার সময় হাত উঠাননি। নামায শেষে অনেক মুসল্লি বলেন, ঈদের তাকবীরে হাত না উঠালে নামায শুদ্ধ হয় না। আবার অনেকে বলেন, সাহু সিজদা করলে নামায শুদ্ধ হয়ে যেত।

জানতে চাই, ঈদের তাকবীরে হাত উঠানোর বিধান কী? না উঠালে কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে? সিজদা না করার কারণে কি আমাদের নামায ভুল হয়েছে?

 


Answer

ঈদের নামাযে অতিরিক্ত তাকবীর বলার সময় হাত উঠানো সুন্নত। ওয়াজিব নয়। তাই কেউ হাত না উঠালেও তার নামায হয়ে যাবে। এ কারণে সাহু সিজদা করতে হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত এমনটি করা ঠিক নয়।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৮৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকি, ১৩৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৭৪

Sharable Link

আদনান - তেজগাঁও

৩৮৫২. Question

 

আমি মাঝে মাঝে ভুলে নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেলি। এখন পরের রাকাতে আমি কোত্থেকে পড়ব? আমার নামায কি এ কারণে নষ্ট হয়ে যাবে?

 


 

Answer

এক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাকাতেও সূরা নাসই পড়া ভালো। আর এ কারণে আপনার নামায নষ্ট হবে না। তবে ইচ্ছাকৃত ফরয নামাযে একই সূরা বারবার পড়া মাকরূহ তানযিহী। অতএব বারবার এমনটি না হওয়া উচিত।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৭; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৮২

Sharable Link

মুহাম্মাদ বিন ছফী - কোটবাড়ি, কুমিল্লা

৩৮৫৩. Question

 

আমি যোহরের নামাযের চতুর্থ রাকাতে ইমামের সাথে শরিক হই। ইমাম সাহেব তার কোনো ভুলের জন্য নামায শেষে সাহু সিজদা আদায় করেন। কিন্তু আমি সাহু সিজদা না দিয়ে বসে থাকি। কারণ আমি এক ব্যক্তির কাছে শুনেছিলাম, মাসবুক সাহু সিজদা না দিয়ে বসে থাকবে। কিন্তু নামাযের পর পাশের এক মুসল্লি বলল, মাসবুক ব্যক্তিও ইমামের সাথে সাহু সিজদায় শরিক হবে। অন্যথায় তার নামায সহীহ হবে না।

এখানে কার কথাটি সঠিক? জানালে উপকৃত হব। 

 


 

Answer

 

মাসবুক ইমামের সাথে সাহু সিজদায় শরিক হবেএটাই সঠিক। তবে সাহু সিজদার পূর্বে ইমাম যখন সালাম ফিরান তখন সে সালাম না ফিরিয়ে চুপ করে বসে থাকবে। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন,

إِذَا انْتَهَى إِلَى الْإِمَامِ وَقَدْ سَهَا قَبْلَ ذَلِكَ فَلْيَسْجُدْ مَعَ الْإِمَامِ، ثُمَّ لِيَقْضِ مَا سَبَقَ بِهِ  .

কেউ যদি ইমামের সাথে নামাযে শরিক হয় এমন অবস্থায় যেইমাম পূর্বে কোনো ভুল করেছেতাহলে মাসবুক যেন ইমামের সাথে সিজদায় শরিক হয়। অতপর তার ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ৪৫৯২

উল্লেখ্যমাসবুক যদি কোনো কারণে ইমামের সাথে সাহু সিজদা না করে তাহলে নিজের ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের পর সাহু সিজদা করলেও নামায হয়ে যাবে। কিন্তু তাও যদি না করে তবে ঐ নামায পুনরায় আদায় করতে হবে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু পরেও সাহু সিজদা করেননি তাই ঐ নামায পুনরায় আদায় করতে হবে।

 

-কিতাবুল আছল ১/২০১, ২০২; মাবসূত, সারাখসী ১/২২৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২১; ৪২২ ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৬৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৮২

Sharable Link

তানভীর - মিরপুর-১২

৩৮৫৪. Question

তলহা নামায পড়ছিল। তখন সে সামনে একটি বোর্ডে কিছু লেখা দেখে নামাযের ভেতরেই মনে মনে সেই লেখাটি পড়ে ফেলে। এভাবে নামাযের ভেতরে কোনো লেখা দেখে সেটা মনে মনে পড়লে কি নামায নষ্ট হয়ে যাবে? তালহার নামায কি নষ্ট হয়ে গেছে? তাকে কি পুনরায় নামায পড়তে হবে?

 


Answer

তালহা যেহেতু বোর্ডের লেখাটি মনে মনে পড়েছে তাই তার নামায নষ্ট হয়নি। তবে মাকরূহ হয়েছে। ভবিষ্যতে এমনটি করা থেকে বিরত থাকবে। অবশ্য তার ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। তা পুনরায় পড়তে হবে না। 

-আলবাহরুর রায়েক ২/১৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২২৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৪

Sharable Link

নাজমুল হক - লালমনিরহাট

৩৮৫৫ . Question

কিছুদিন পূর্বে আমি ফজরের পূর্বের দুই রাকাত সুন্নতের বৈঠকে ভুলবশত সূরা ফাতিহা পড়া শুরু করি। সূরা ফাতিহা পড়ে শেষ করার পর মনে হয় আমি বৈঠকে আছি। তখন তাশাহহুদ পড়ি এবং সাহু সিজদা দেই। এখন আমি জানতে চাই, নামাযের শেষ বৈঠকে ভুলবশত সূরা ফাতিহা পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে কি?

 


Answer

হাঁনামাযের প্রথম বা শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের স্থানে সূরা ফাতিহা পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। তাই আপনার সাহু সিজদা দেওয়া ঠিক হয়েছে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২১; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৪৪; শরহুল মুনইয়াহ ৪৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৭

Sharable Link

আমীনুল ইসলাম - সিলেট

৩৮৫৬. Question

আমাদের এক আত্মীয় মারা যাওয়ার পর তার ঘরের লোকেরা তার  নখ কেটে দেয়। এভাবে তাদের জন্য মৃতব্যক্তির নখ কাটা জায়েয হয়েছে কি? এমনিভাবে মৃতব্যক্তির গোঁফ চুল ইত্যাদি কাটা জায়েয আছে কি?

 


Answer

মৃত ব্যক্তির গোঁফচুলনখ ইত্যাদি কাটা জায়েয নয়। ইবনে সিরীন রাহ. থেকে বর্ণিততিনি বলেন,لَا يُؤْخَذُ مِنْ شَعْرِ الْمَيِّتِ، وَلَا مِنْ أَظْفَارِهِ

মৃতব্যক্তির চুল ও নখ কাটা যাবে না। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ৬২২৮)

তাই মৃত লোকটির নখ টাকা ঠিক হয়নি।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯

Sharable Link

নাঈম রেজা - টাঙ্গাইল

৩৮৫৭. Question

গত বছর রযমানের ঈদের নামাযের শেষ খুতবার আগেই জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করেন। জানার বিষয় হল, খুতবার আগে জানাযা আদায় করা কি ঠিক হয়েছে? নাকি খুতবার পরে জানাযা আদায় করা উচিত?

 


Answer

খুতবা ঈদের নামাযেরই অংশবিশেষ। তাই খুতবার পরেই জানাযার নামায আদায় করা উচিত। হাকীমুল উম্মত থানভী রাহ.যফর আহমাদ উসমানী রাহ. বলেনবিশৃঙ্খলা ও ছত্রভঙ্গের কারণে যেমনিভাবে আগে ঈদ ও জুমআ পড়ে জানাযা পড়ার কথা ফকীহগণ বলেন। একই কারণে ঈদের খুতবার পরেই জানাযা পড়া উচিত। অন্যথায় অনেকেই খুতবা না শুনেই চলে যাবে। এছাড়া খুতবা তো ঈদের সাথেই সংশ্লিষ্ট। তবে খুতবার পূর্বে জানাযার নামায পড়া হলেও তা আদায় হয়ে যাবে।

-ইমদাদুল আহকাম ১/৮৩৩; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৫০৫

Sharable Link

বোরহান আশরাফী - উত্তরা, ঢাকা

৩৮৫৮. Question

জনৈক ইমাম সাহেব জানাযার নামাযে তিন তাকবীর বলে সালাম ফিরিয়েছেন। নামায শেষে এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে ইমাম সাহেব পুনরায় চার তাকবীরের সাথে নামায পড়ান। জানতে চাই, আমাদের প্রথম নামাযই বিশুদ্ধ ছিল কি না? নাকি দ্বিতীয়বার পড়া যথাযথ হয়েছে?

 


Answer

প্রথম জানাযায় তিন তাকবীর বলে সালাম ফিরানোর কারণে তা আদায় হয়নি। সুতরাং পরে আবার আদায় করা যথাযথ হয়েছে। প্রকাশ থাকে যেজানাযা নামাযে চার তাকবীর ফরয। একটি তাকবীর কম হলেও নামায আদায় হবে না। উল্লেখ থাকে যেজানাযা নামাযে তিন তাকবীরের পর ভুলে সালাম ফিরিয়ে নিলে কথাবার্তা না বলে থাকলে চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম ফিরাবে। তাহলে নামায হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পুনরায় তা আদায় করতে হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৮২; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৩২২

Sharable Link

মুহাম্মাদ ফয়েয বিন ছফী - কোটবাড়ি, কুমিল্লা

৩৮৫৯. Question

আমি গত রযমানে সফর অবস্থায় একদিন রোযা রাখি। এরপর কোনো কারণ ছাড়াই আবার তা ভেঙ্গে ফেলি। জানতে চাই, উক্ত কারণে আমাকে এই রোযার কাযা-কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে? নাকি শুধু কাযা করলেই হয়ে যাবে?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ রোযার শুধু কাযা করলেই হবে। কাফফারা আদায় করতে হবে না।

উল্লেখ্য যেসুবহে সাদিকের সময় থেকেই যে ব্যক্তি সফরে থাকেতার জন্য রোযা না রাখার সুযোগ রয়েছে। তবে রোযা শুরু করার পর শরীয়তসম্মত ওজর ব্যতীত তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রোযা রেখে বিনা ওজরে ভেঙ্গে ফেলা ঠিক হয়নি।

-কিতাবুল আছল ২/১৫৩; ফাতহুল কাদীর ২/২৮৪; মাবসূত, সারাখসী ৩/৭৬; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯০; ইলাউস সুনান ৯/১৫২

Sharable Link

আয়েশা খাতুন - বারিধারা, ঢাকা

৩৮৬০. Question

আমার বয়স যখন ১৭ বছর ছিল তখন রমযানের একটি রোযা রেখে ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। রোযা ভাঙ্গার শরীয়তসম্মত কোনো ওজর ছিল না। এখন আমি সে রোযার কাফফারা আদায় করতে চাচ্ছি। কিন্তু সমস্যা হল, আমাদের জন্য তো ধারাবাহিক ষাটটি রোযা রাখা সম্ভব নয়। কারণ প্রতিমাসেই ছয়-সাতদিন ঋতুস্রাব হয়। এখন আমার করণীয় কী?

 


Answer

কাফফারার রোযা আদায়ের ক্ষেত্রে মহিলারা তাদের ঋতুস্রাবের দিনগুলো বাদ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে ষাটটি রোযা পূর্ণ করবে। মাসিকের দিনগুলোতে রোযা না রাখার কারণে ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হবে না। তবে কাফফারার রোযা শুরু করার পর ঋতুস্রাবের দিনগুলো ছাড়া ষাটদিন পূর্ণ হওয়ার আগে কোনো দিন যদি রোযা ছুটে যায় তাহলে কাফফারা আদায় হবে না। সেক্ষেত্রে নতুন করে ধারাবাহিকভাবে আবার ষাটটি রোযা রাখতে হবে।

-কিতাবুল আছার, ইমাম আবু ইউসুফ, হাদীস ৭৯৮; কিতাবুল আছল ২/১৬০; মাবসূত, সারাখসী ৩/৮১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭

Sharable Link

আবদুল্লাহ - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৮৬১. Question

আমি একটি পুকুরে মাছ চাষ করি। পাঁচ-ছয় মাস পরপর মাছ বিক্রি করি। ঐ টাকা দিয়ে সংসার চালাই। এবং ঐ টাকা দিয়েই আবার পোনা কিনে পুকুরে ছাড়ি। যদি কিছু টাকা বেশি হয় তাহলে আরেকটা পুকুর নিই। প্রশ্ন হল, মাছ বিক্রি করার টাকাটা তো এক বছর পূর্ণ হয় না। বছর শেষ হওয়ার আগেই টাকা শেষ হয়ে যায়। তাহলে এই টাকার উপর যাকাত আসবে কীভাবে? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

টাকা যেমন যাকাতযোগ্য সম্পদ তদ্রূপ ব্যবসার মালও যাকাতযোগ্য সম্পদ। আপনার হাতে সারা বছর নেসাব পরিমাণ টাকা জমা না থাকলেও আপনার চাষের মাছ তো থাকে। চাষের মাছও যাকাতযোগ্য সম্পদ। অতএব বছর শেষে পুকুরে কী পরিমাণ মাছ আছে তা অনুমান করে নেসাবের সমমূল্যের হলে যাকাত দিতে হবে।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৭১০৩; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১০১৬৮; কিতাবুল আছল ২/৯৭; কিতাবুল হুজ্জাহ ১/৩০০-৩০১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৮

Sharable Link