মুহাম্মাদ লোকমান - মাঝিকান্দি, শরীয়তপুর

১৭৩৯. Question

আমাদের এলাকায় বড় বড় নৌকা আছে। বর্ষাকালে লোকজন তাদের প্রয়োজনে নৌকা ভাড়ায় দিয়ে থাকে। এভাবে চুক্তি করে যে, চুক্তিগ্রহণকারী নৌকা ভাড়ায় খাটাবে। যা উপার্জন হবে তা নৌকার মালিক ও তাদের মাঝে তিন ভাগে বন্টিত হবে। এক ভাগ নৌকার মালিক পাবে আর দুই ভাগ তারা পাবে। জানতে চাই, তাদের এ চুক্তি শরীয়তসম্মত কি না?

Answer

প্রশ্নোক্ত চুক্তিটি বৈধ হয়নি। এভাবে চুক্তি করে নৌকা চালালে অর্জিত পুরো আয়ের মালিক হবে নৌকার মালিক। আর কর্মচারিগণ তাদের কাজের জন্য মালিক থেকে ন্যায্য পারিশ্রমিক পাবে।

পাবে।-আলবাহরুর রায়েক ৫/১৮৪; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/২৬৬; আননাহরুল ফায়েক ৩/৩০৭; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৬২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৩২৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল আহাদ - বিক্রমপুর

১৭৪০. Question

আমার পিতা একজন কৃষক। তিনি চাষাবাদ করার জন্য তিন বিঘা জমি এক বৎসরের জন্য ২০,০০০/- টাকায় ভাড়া নিয়েছিলেন, কিন' কোনো কারণে এ বছর তার পক্ষে চাষাবাদ করা সম্ভব নয়। এজন্য তিনি উক্ত ভাড়াকৃত জমি তৃতীয় ব্যক্তির কাছে ২৫,০০০/- টাকায় ভাড়া দিয়েছেন এবং এতে মালিকের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। উল্লেখ্য যে, আমার পিতা উক্ত জমিতে কোনো কাজ করেননি। তাই এক্ষেত্রে আমার জানার বিষয় হল, আমার পিতা তৃতীয় ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেওয়ার কারণে যে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা পেয়েছেন তা গ্রহণ করা বৈধ হবে কি না? যদি বৈধ না হয় তাহলে এ টাকার ব্যাপারে তার করণীয় কী?

Answer

জমি-জায়গা ভাড়া নিয়ে অন্যত্র বেশি মূল্যে ভাড়া দেওয়ার জন্য ভাড়াটিয়াকে তাতে সংস্কারমূলক কজ করা শর্ত। প্রশ্নোক্ত অবস'ায় আপনার পিতা যেহেতু ঐ জমিতে সংস্কারমূলক কিছু করেননি তাই তার জন্য ঐ জমির ভাড়া বাবদ বিশ হাজার টাকার অতিরিক্ত গ্রহণ করা বৈধ হবে না। অতিরিক্ত নিলে তা ছদকা করে দিতে হবে।

হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৬৭; শরহুল মাজাল্লাহ ২/৬৮৬; মাজমাউল আনহুর ৩/৫৬৩; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৮/৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৯১

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাশেদুজ্জামান - নোয়াখালি

১৭৪১. Question

আমাদের একটি গরু আছে। আমরা এ বছর কোনো চাষাবাদ করছি না। অন্য এক লোক আমাদের গরুটি নিয়ে তার গরুর সাথে জুড়ে হালচাষ করে। আমরা শর্ত দিয়েছি, আমাদের গরু যতদিন নেওয়া হবে প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা করে দিতে হবে। জানতে চাই, এ টাকা গ্রহণ করা আমাদের জন্য বৈধ হবে কি না?

Answer

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে গরু ভাড়া দেওয়া বৈধ। অতএব এর আয় গ্রহণ করা যাবে

যাবে।-শরহুল মাজাল্লাহ খালেদ আতাসী ২/৬৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৬; মাজমাউল আনহুর ৩/৫২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১১৩; ফাতহুল কাদীর ৮/২৫; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া পৃ. ৩৪৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহফুযুল কারীম - শ্যাওড়া পাড়া, মিরপুর

১৭৪২. Question

আমার এক আত্মীয়ের ছোট বাচ্চা আছে, যার বয়স এক বছর আট মাস। সে এখনো অন্যান্য খাবার মুখে নিতে চায় না। বুকের দুধের উপরই অনেকটা নির্ভরশীল। প্রশ্ন হল, সর্বোচ্চ কতদিন তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে?

Answer

শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর সময়সীমা হল, জন্ম থেকে চান্দ্র মাস হিসাবে দু’বছর। এরপর শিশুকে বুকের দুধ পান করানো জায়েয নয়। কুরআন, হাদীস এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের বর্ণনামতে এটাই প্রমাণিত ও অনুসরণীয়। তাই উক্ত শিশুকেও দু’ বছর পর্যন- বুকের দুধ পান করানো যাবে। এরপর জায়েয হবে না।

না।-সহীহ বুখারী ২/৭৬৪; জামে তিরমিযী ১১৫২; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৯/২৯৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪১৭; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪৩; হিদায়া (ফাতহুল কাদীর) ৩/৪২৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২০৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ যুবাইর - ভৈরব

১৭৪৩. Question

আমাদের এলাকায়া ব্যভিচারের মাধ্যমে এক সন-ান জন্ম লাভ করে। পরবর্তী ওই ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর সে উত্তরাধিকার সূত্রে মালের দাবি করলে মৃতের মূল ওয়ারিছগণ তাকে অংশ দিতে অস্বীকার করে। এখন আমার জানার বিষয় হল, আসলে কি সে ওই ব্যক্তির পরিত্যাক্ত সম্পদ থেকে কিছু পাবে না? যদি না পায় তাহলে কেন? বিস-ারিত জানালে উপকৃত হব।

Answer

অবৈধ সন-ান ব্যভিচারীর পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে কোনো অংশ পাবে না। কেননা শরীয়ত এক্ষেত্রে বংশ সূত্রের স্বীকৃতি দেয় না। আর বংশ সূত্র ছাড়া মিরাসের অধিকারী হয় না। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘অবৈধ সন-ান ব্যভিচারী ব্যক্তি থেকে মিরাস পাবে না এবং ওই ব্যক্তিও ঐ সন-ানের মিরাস পাবে না।’

- জামে তিরমিযী ২/৩৩; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১৬/৩২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৪৫২; মাবসূত সারাখসী ২৯/১৯৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩৬৪; তাকমিলা আলবাহরুর রায়েক ৮/৫০৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ কামালুদ্দীন - সিলোনিয়া, ফেনী

১৭৪৪. Question

এক প্রবাসী আমাকে মুদারাবার ভিত্তিতে ব্যবসা করার জন্য ৫০,০০০/- টাকা দিবে বলেছিলেন। অন্যদিকে তিনি ধান প্রদানের শর্তে কিছু লোককে ঋণ দিয়েছিলেন। এখন তিনি আমাকে বলেছেন যে, ঋণ গ্রহীতাদের নিকট থেকে ধান উসূল করে তা বিক্রি করে ৫০,০০০/- টাকা নেওয়ার জন্য। জানতে চাই, এভাবে মুদারাবার মূলধন নেওয়া বৈধ হবে কি না?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ প্রবাসী আপনাকে দু’টি দায়িত্ব দিয়েছে। মুদারাবার ভিত্তিতে তার ৫০,০০০/- টাকা ব্যবসায় খাটানো এবং ঋণ গ্রহীতাদের নিকট থেকে ঋণ উসূল করে তা বিক্রির মাধ্যমে এই টাকা সংগ্রহ করা। প্রত্যেকটি চুক্তি স্বতন্ত্রভাবে সহীহ। এক্ষেত্রে আপনি যদি ঐভাবে ৫০,০০০/- টাকা সংগ্রহ করতে পারেন তবে সে টাকা দ্বারা মুদারাবা ব্যবসা করতে কোনো সমস্যা নেই। টাকা সংগ্রহ করার আগে মুদারাবা কারবার শুরু হবে না। তাই এ বাবদ কোনো কিছু খরচ হলে তা ঐ প্রবাসীর কাছ থেকে নিয়ে নিতে পারবেন।

পারবেন।-বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৩-১১৪; ফাতহুল কাদীর ৭/৪১৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৪৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ জান্নাতারা - মাগুরা

১৭৪৫. Question

আমার আম্মার দাঁড়িয়ে নামায পড়ার শক্তি নেই। তবে বসে নামায আদায় করতে পারেন। তাঁর জন্য বসে ফরয নামায আদায় করা সহীহ হবে কি?

Answer

হ্যাঁ, দাঁড়িয়ে আদায় করা সম্ভব না হলে ফরয নামাযও বসে আদায় করা জায়েয।

জায়েয।-সহীহ বুখারী ১/১৫০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৬; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/১১২

Sharable Link

মুহাম্মাদ নূরুল করিম - খুলনা

১৭৪৬. Question

জনৈক ব্যক্তি হজ্বের জন্য ইহরাম বাঁধার পর বাড়িতে থাকা অবস'ায় একটি মুরগি যবাই করেছে। তার এক চাচা বলল, তুমি মুহরিম অবস'ায় মুরগি যবাই করার কারণে তোমার দম দেওয়া লাগবে। জানতে চাই, তার চাচার কথা কি সঠিক?

Answer

ঐ ব্যক্তির কথা সঠিক নয়। মুহরিম ব্যক্তির জন্য হাঁস-মুরগি তথা গৃহপালিত পশু-পাখি যবাই করা নাজায়েয নয়। ইহরাম অবস'ায় বন্য পশু-পাখি শিকার করা নিষিদ্ধ।

-আলমাবসুত সারাখসী ৪/৯৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪২৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/৩৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৯০; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/৫৩৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৭১

Sharable Link

মুহাম্মাদ ওয়াসিফুর রহমান -

১৭৪৭. Question

একবার আমি ও আমার এক বন্ধু হজ্ব করার জন্য রওয়ানা হলাম এবং মক্কা শরীফে পৌঁছে হজ্বের সময় হজ্বের কাজ শুরু করলাম। ঘটনাক্রমে একদিন আমার বন্ধু এমন একটি কাজ করল যার ফলে তার উপর দম ওয়াজিব হয়, কিন' আমার বন্ধু চাচ্ছে যে, দমটা অর্থাৎ পশু যবাইটা সেখানে না দিয়ে দেশের বাড়িতে দিবে। এখন আমার জানার বিষয় হল, তার জন্য কি বাড়িতে এসে দম দেওয়া ঠিক হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

দম হরমের ভিতরে দেওয়া জরুরি। হরমের বাইরে দমের নিয়তে পশু যবাই করলে তা দ্বারা দম আদায় হবে না। এখন কারো মাধ্যমে সেখানে দম দেওয়ার ব্যবস'া করলেও চলবে। নিজের যাওয়া জরুরি নয়।

নয়।-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৮/৬৯১; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭৪; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৪০৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৫৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাসনূন আহমদ - হাজারীবাগ, ঢাকা

১৭৪৮. Question

আমি গত বছর হজ্ব করার ইচ্ছা করি এবং ইহরামের কাপড়ও খরিদ করি, কিন' আমার সে বছর হজ্ব করার তাওফীক হয়নি। এই বছর আমার হজ্ব করার তাওফীক হয় এবং আমি ঐ পুরাতন ইহরামের কাপড় দিয়েই হজ্ব আদায় করি। এখন আমার জানার বিষয় এই যে, পুরাতন ইহরামের কাপড় পরে হজ্ব আদায় করার কারণে আমার হজ্বের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

ইহরামের জন্য নতুন কাপড় জরুরি নয়। পুরাতন কাপড়ও যথেষ্ট। তাই ঐ কাপড়ে হজ্ব আদায় করা সহীহ হয়েছে। কোনো ত্রুটি হয়নি।

হয়নি।-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৪; মাবসূত সারাখসী ৪/৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৯৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৮-৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২২০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৮১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৭৪৯. Question

অনেক সময় জানাযার নামায শুরু হয়ে যাওয়ার পরে আসার কারণে এক বা একাধিক তাকবীর ছুটে যায়। পরবর্তীতে ইমাম সাহেবের সাথে শরিক হওয়ার পর দুআ পড়ার ব্যাপারে দ্বিধায় পড়ে যাই। শুরু থেকে পড়ব নাকি ইমামের অনুসরণ করব? কখনো কখনো ইমাম কোন তাকবীরে রয়েছে জানা যায় না। মেহেরবানি করে সঠিক পদ্ধতি জানিয়ে উপকার করবেন।

Answer

জানাযা নামাযের কিছু অংশ ছুটে গেলে জামাতে অংশগ্রহণের পর ইমাম সাহেব কয় তাকবীর দিয়েছেন এবং কোন দুআ পড়ছেন তা জানা গেলে আগন'ক ঐ সময়ের দুআই পড়বে। আর যদি তা জানা না যায় তাহলে শুরু থেকে ধারাবাহিক নিয়মে ছানা অতপর দুরূদ ও দুআ পড়বে। অবশ্য ইমামের সালামের পর জানাযা দ্রুত উঠিয়ে নিতে লাগলে খাটনী জমিনে থাকা অবস'ায় অবশিষ্ট তাকবীরগুলো দুআ ছাড়াই আদায় করে নিবে।

নিবে।-মারাকির ফালাহ পৃ. ৩২৬; শরহুল মুনইয়া পৃ. ৫৮৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৮০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২১৭; আহসানুল ফাতাওয়া ৪/২০০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল হাকিম - ঢাকা

১৭৫০. Question

অনেককে দেখা যায়, অযু শুরু করার পূর্বে প্রথমে পায়ে পানি ঢেলে নেয়। এরপর অযু করে। বিশেষভাবে শীতকালে এমনটি অধিক দেখা যায়। এক্ষেত্রে যুক্তি হল, পা আগে ভিজিয়ে নিয়ে পরবর্তীতে ধোয়ার সময় পায়ের প্রত্যেক স'ানে পানি পৌঁছানো সহজ হয়। আমার জানার বিষয় হল, এর দ্বারা অযুতে তারতীবের সুন্নত বিনষ্ট হবে কি না? তাছাড়া এটা ইসরাফের অন-র্ভুক্ত হবে কি না?

Answer

পায়ের শুষ্কতা, ফাটা ইত্যাদির কারণে অযুর সময় আগে পা ভিজিয়ে নেওয়া কিংবা পায়ে পানি ছিটিয়ে দেওয়া দোষনীয় নয়; বরং উত্তমরূপে পা ধোয়ার জন্য সহায়ক। তাই এতে ইসরাফ হবে না।আর যেহেতু অযুর নিয়তে তা করা হয় না; বরং পরবর্তীতে সাধারণ নিয়মে মাথা মাসেহ করার পর পা ধোয়া হয়ে থাকে তাই পূর্বে পা ভেজানোর কারণে অযুর ধারাবাহিকতাও নষ্ট হবে না।

না।-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/৭২; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৫৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাহমুদ - ঢাকা

১৭৫১. Question

আমার একটি দাঁত নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার দাঁতে ক্যাপ ব্যবহার করতে বলেন। আমার জিজ্ঞাসা হল, আমি দাঁতে সোনার ক্যাপ ব্যবহার করতে পারব কি না?

Answer

হ্যাঁ, দাঁতে স্বর্ণের ক্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। এটি নাজায়েয নয়।

নয়।-মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়েদ হাদীস : ৮৭১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৫১;বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩১৬; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৮৬; আলমাজমূ ৪/৩২৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল কাদের - ঢাকা

১৭৫২. Question

আমি কিছুদিন পূর্বে গুরুতর আহত হয়েছি। এতে হাতসহ বিভিন্ন জায়গা যখম হয়েছে। হাতের যখম সব সময় ব্যান্ডেজ করা থাকে। তাই অযুর সময় ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করি। এক ঘন্টা পর পর ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করতে হয়। জানতে চাই, ব্যান্ডেজ খোলার কারণে কি অযু ভেঙ্গে যায়? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

যখম ভালো হওয়ার আগে ব্যান্ডেজ খুলে গেলে বা খোলা হলে অযু বা মাসাহ কিছুই নষ্ট হয় না। তবে এক্ষেত্রে ব্যান্ডেজ পরিবর্তনের পর পুনরায় মাসাহ করে নেওয়া উত্তম। হ্যাঁ, ক্ষত ভালো হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যান্ডেজ খুলে গেলে বা খোলা হলে পূর্বের মাসাহ বাতিল হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে ক্ষতস'ান ধুয়ে নিলেই পূর্বের অযু বহাল বলে গণ্য হবে।

হবে।-আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫১; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৮৬; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/১৪৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৭৯-২৮০; আলমাজমূ’ শরহুল মুহাযযাব ৪/৩২৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ সালমান - খুলনা

১৭৫৩. Question

জনৈক ব্যক্তি একাকী নামায পড়ার নিয়তে নামায শুরু করার পর এক ব্যক্তি এসে তার পিছনে ইকতিদা করে ও তার সাথে নামায শেষ করে। প্রশ্ন হল, ঐ ব্যক্তি ইমামতির নিয়ত না করলে মুকতাদির নামায সহীহ হবে কি?

Answer

হ্যাঁ, ইমামতির নিয়ত না করলেও ঐ মুকতাদীর নামায সহীহ হয়েছে। কারণ ইকতিদা সহীহ হওয়ার জন্য ইমামতির নিয়ত জরুরি নয়।

নয়।-শরহুল মুনইয়া পৃ. ২৫১; আলবাহরুর রায়েক ১/২৮৩; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ১২১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪২৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আমীমুল এহসান - ঢাকা

১৭৫৪. Question

জনৈক ব্যক্তি যোহরের নামাযের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের স'লে ভুলবশত সূরা ফাতিহা পড়ে ফেলে। পরে মনে হলে তাশাহহুদ, দরূদ ও দুআ পড়ে সাহু সিজদা ছাড়া নামায শেষ করে। তার নামায কি আদায় হয়েছে? নাকি পুনরায় পড়তে হবে?

Answer

উক্ত ভুলের কারণে তার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছে। যেহেতু তা করা হয়নি তাই নামাযটি পুনরায় পড়ে নেওয়া জরুরি।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৩; শরহুল মুনইয়া পৃ. ২৯৭; আলবাহরুর রায়েক ১/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ১/৩০৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম - ময়মনসিংহ

১৭৫৫. Question

হুজুর আমার বড় ভাই হাফেয ও আলেম। আমার আব্বা ও আম্মা ভাইয়ার পিছনে তারাবীর নামায পড়তে চান। বাড়িতে আমার ছোট দুই বোন ও এক ভাই আছে। তারা কি একত্রে জামাত করে তারাবীর নামায পড়তে পারবেন? এক্ষেত্রে জামাতে কীভাবে দাঁড়াবে জানিয়ে বাধিত করবেন। প্রকাশ থাকে যে, জামাতে কোনো গায়রে মাহরাম পুরুষ বা মহিলা থাকে না।

Answer

আপনার ভাই বাবা, মা ও মাহরাম মহিলাদের নিয়ে বাড়িতে জামাতের সাথে তারাবীর নামায পড়তে পারবেন। এক্ষেত্রে ইমামের পিছনে পুরুষদের কাতার হবে। এর পরবর্তী কাতারে মহিলাগণ দাঁড়াবে।

দাঁড়াবে।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৪০৭; সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩/১০৭; আলইসতিযকার ৫/৩৭৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৫২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৭২

Sharable Link

উম্মে আবদুল্লাহ - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

১৭৫৬. Question

আমাদের এলাকায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে বিক্রি হয়। অর্থাৎ এক পাল্লায় ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র রাখা হয় অপর পাল্লায় মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজ রেখে পাল্লার দণ্ডি সমান করা হয়। এভাবে মিষ্টি আলু অথবা পিয়াজের বিনিময়ে ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র বিক্রি করা কতটুকু শরীয়তসম্মত?

Answer

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে ভাঙ্গাচোরার পরিবর্তে আলু বা পিয়াজের লেনদেন বৈধ

হেদায়া ৩/২১

Sharable Link

মুহাম্মাদ আনোয়ার হুসাইন - সাটারিয়া, মানিকগঞ্জ

১৭৫৭. Question

আমাদের মসজিদের খতীব সাহেবের একটি বক্তব্য আমাদের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করেছে। তা হল, আমি নিজ কানে শুনলাম, জুমআর নামাযের আগে ইমাম সাহেব বয়ানে বললেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা যাননি। তিনি এখনও জীবিত আছেন এবং দুনিয়াতে এখনও কাজ করেন। ইমাম সাহেব দলীল হিসাবে বললেন, পাকিস-ানে এক ঈমানদার লোকের সামনে এক লোক হযরত ওমর রা.কে গালমন্দ করল। তখন ঐ লোকটি মনে মনে কষ্ট পেলেন। কিন' কোনো কিছু বলার সাহস পেলেন না। রাতে যখন ঘুমিয়ে পড়লেন তখন হযরত রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট এসে বললেন যে, তুমি মন খারাপ করে আছ কেন? ঐ লোকটি বলল, আমার সামনে হযরত ওমর রা.কে গালমন্দ করেছে এজন্য আমার মন খারাপ। তখন রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ওঠ, যাও। ঐ লোকটিকে হত্যা করে এসো। তখন ঐ লোকটি তার গলা কেটে আসল। কান্নার আওয়াজ শুনে লোকটির ঘুম ভেঙ্গে গেল তারপর লোকটি দেখতে পেল সত্যি সত্যি লোকটির গলা কাটা হয়েছে। এই ঘটনা দলীল হিসাবে আমাদের সামনে পেশ করলেন। জানতে চাই, রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি সত্যিই এখনো জীবিত আছেন এবং এখনো দুনিয়াতে কাজ করছেন? কুরআন-হাদীসের আলোকে বিস-ারিত দলীলপ্রমাণসহ জানাবেন।

Answer

১১ হিজরী রবিউল আওয়াল মাসে নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত হয়েছে এবং মদীনা মুনাওয়ারায় মসজিদে নববীর পাশে রওজা মুবারকে শায়িত আছেন। এটি দিবালোকের ন্যায় বাস-ব এবং অসংখ্য মানুষের বর্ণনা ও বিভিন্ন শরয়ী দলীল দ্বারা প্রমাণিত। কারো পক্ষেই তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তবে আম্বিয়ায়ে কেরামের একটি বৈশিষ্ট্য হল, তাঁদের মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা তাঁদের শরীর মুবারক সম্পূর্ণ পূর্বের অবস'ায় হেফাযত করেন এবং শরীরের সাথে রূহের সম্পর্ক সৃষ্টি করেন। ফলে কবরের মধ্যে তাঁরা এক প্রকার জীবন লাভ করেন, যা শহীদদের জীবন থেকেও অধিক শক্তিশালী। কিন' এটা সম্পূর্ণ পার্থিব জীবনের মতো নয় এবং এর দ্বারা দুনিয়াবী কোনো কাজ-কর্মের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক সৃষ্টি হয় না। প্রশ্নে জনৈক ব্যক্তির উদ্ধৃতিতে যা বলা হয়েছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যু হয়নি তিনি এখনো জীবিত আছেন এবং দুনিয়াবী কাজ করেন। এটা সম্পূর্ণ বাস-ববিরোধী এবং শরীয়ত পরিপন'ী কথা। বেদআতীরা এ জাতীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে হাজারো শিরকের পথ উন্মুক্ত করে থাকে। এ ধরনের কথা বলা অথবা বিশ্বাস রাখা কবীরা গুনাহ। যার দ্বারা তাওহীদের আকীদা ক্ষতিগ্রস- হয়। তাই উক্ত ব্যক্তির এ থেকে তওবা করা জরুরি।

জরুরি।-নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাত সংক্রান- দলীলসমূহ : সূরা যুমার : ৩০; তাফসীরে কুরতুবী ১৫/২৫৪; সহীহ বুখারী ২/৬৩৯; নবী করীম সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হায়াত সংক্রান- দলীলসমূহ : শিফাউস সাকাম ফী যিয়ারাতি খায়রিল আনাম পৃ. ১৯১; ফয়যুল বারী ২/৬৪; ফাতহুল মুলহিম ১/৩২৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ২/২২৩ মৃত্যুবরণকারী দুনিয়াবী কাজ করতে পারে না-এ আকীদা সংক্রান- দলীলসমূহ : আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; মাজমূআ ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ১/১৭৮ ও ১১/৪৯৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ মনসুর আহমদ - উত্তর বাড্ডা

১৭৫৮. Question

ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে গেছে। দু’ এক মসজিদে ফজরের আযান হয়েছে এবং ১০-১৫ মিনিট এ আযান বিভিন্ন মসজিদে চলছে। এ অবস'ায় নামাযের প্রস'তি নিব এবং জরুরত সারব না আযানের জবাব দিব? উল্লেখ্য, আযানের জবাব দিয়ে এসব করতে গেলে জামাত না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

Answer

আযানের জবাব দেওয়া মুস-াহাব। যে কোনো মসজিদের আযানের জবাব দিলেই মুস-াহাব আদায় হয়ে যায়। তবে একই জায়গায় একাধিক মসজিদের আযান শুনা গেলে, প্রথম আযানের উত্তর দিবেন। পরবর্তী আযানগুলোর উত্তর দেওয়া লাগবে না। এমনকি সেটা নিজ মহল্লার মসজিদের আযান হলেও তার উত্তর দেওয়া লাগবে না। আর যদি সব কটি আযান এক সঙ্গে শুরু হয় তাহলে নিজ মহল্লার মসজিদের আযানের উত্তর দিবেন। ইসি-ঞ্জার প্রয়োজন হলে আযানের জবাবের অপেক্ষা না করেও প্রয়োজন পুরা করতে পারবেন। আযানের জবাবের জন্য ইসি-ঞ্জায় যেতে বিলম্ব করার দরকার নেই।

নেই।-ফাতহুল কাদীর ১/২৫৩; শরহুল মুনইয়া পৃ. ৩৭৯;আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯৬; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ১১০

Sharable Link

মুহাম্মাদ মনসুর আহমদ - উত্তর বাড্ডা

১৭৫৯, ১৭৬০, ১৭৬১. Question

খ) অনেক সময় ঘরে সুন্নত দু’ রাকাত পড়ি। এভাবে তাহিয়াতুল অযু দু’ রাকাত ঘরেই পড়ব কি না? গ) সুন্নত পড়ে মসজিদে গিয়ে দু’ রাকাত তাহিয়াতুল মসজিদ পড়ব কি না? জামাতের সময় এখন ৮-১০ মিনিট বাকি আছে। নাকি বসে দুআ, দুরূদ পড়ব? ঘ) মসজিদে ঢুকে যে দু’ রাকাত নামায পড়ার কথা বলা আছে ফজরের সময় তার হুকুম কী?

Answer

ফজরের সময় হওয়ার পর থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন- ফজরের সুন্নত ব্যতিত যে কোনো নফল নামায পড়া মাকরূহ। চাই তা ঘরে পড়া হোক কিংবা মসজিদে। অতএব ফজরের ওয়াক্ত হয়ে যাওয়ার পর তাহিয়াতুল অযু বা দুখুলুল মসজিদ পড়বে না। এ সময় তাসবীহ-তাহলীল, দরূদ শরীফ ইত্যাদি পড়বে।

পড়বে।-সুনানে আবু দাউদ ১/১৮১; হেদায়া (ফাতহুল কাদীর) ১/২৩৮; ফাতহুল কাদীর ১/২৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৩৭৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - শিবচর

১৭৬২. Question

মিরাজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে সরাসরি দেখেছেন না শুধু কথা শুনেছেন? উপযুক্ত প্রমাণসহ জানতে চাই।

Answer

: মেরাজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলাকে স্বচক্ষে দেখেছেন কি না এ বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম থেকে উভয় ধরনের বক্তব্য রয়েছে। তবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহকে এমন বৈশিষ্ট্যের সাথে দেখেছেন, যেভাবে দেখাটা জীবিত অবস'ায় অন্য কোনো ব্যক্তির নসীব হয়নি। কিন' এর ধরন কী ছিল, কীভাবে দেখেছেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা নেই। তাই কোনো একটি মতকে প্রাধান্য না দিয়ে ঐ বিষয়ে মন-ব্য করা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।

শ্রেয়।-ফাতহুল বারী ৮/৪৭৪; সহীহ মুসলিম ১/৯৮-৯৯; মাজমুআহ ফাতাওয়া ইবনে তায়মিয়াহ ৬/৫০৯; তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৩৯১; তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ৮/২০৪; ফাতহুল মুলহিম ১/৩৩৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহসান হাবীব - শ্যামলী, ঢাকা

১৭৬৩. Question

আমি একটি ফার্মেসির মালিক। ফার্মেসিটি হাসপাতালের পাশে হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় রোগীরা রক্ত নিতে আসে। তাদের প্রয়োজন পূরণের জন্য আমি ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ করি। এখন আমার জিজ্ঞাসা হল, রক্ত বিক্রি করে এর কোনো বিনিময় গ্রহণ জায়েয হবে কি না?

Answer

রক্ত বিক্রি করা জায়েয নয়। প্রয়োজনের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে তা আদান-প্রদান করা যেতে পারে। কোনো অবস'ায় একে ব্যবসার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা বৈধ হবে না। অবশ্য রক্ত সংগ্রহ করতে যা খরচ হয় তা গ্রহিতা থেকে নেওয়া যাবে। এর বেশি নেওয়া জায়েয হবে না। কেননা বেশি নিলেই তা রক্তের বিনিময়ে নেওয়া হবে। আর রক্তের বিনিময়ে কোনো কিছু গ্রহণ করা বৈধ নয়।

আহকামুল কুরআন ইবনে আরাবী ১/৫৩; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৩৪৮৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৩৩, প্রয়োজনের সময় রক্ত ক্রয় সংক্রান- : ফাতহুল কাদীর ৬/৬১; বুহুছ ও ফাতাওয়া মুআসিরা ৩/৭৬; আলবুয়ূউয যাররা পৃ. ৪০২; আলমাওসূআ তিব্বিয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ পৃ. ৪৬৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ শামসুদ্দীন - মাদরাসা দারুর রাশাদ

১৭৬৪. Question

ইমাম সাহেব যখন খুতবা দিতে বের হন তখন থেকেই কথা বলা ও নামায পড়া নিষেধ। কিন' বর্তমানে ইমাম অনেক আগেই আসেন এবং খুতবার আগে বয়ান হয়। এ অবস'ায় যখন বয়ান চলে তখন কি কথা বা নফল নামায নাজায়েয হবে? বিস-ারিত দলীলসহ জানালে উপকৃত হব।

Answer

হাদীসে ইমামের বের হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হল, খুতবার জন্য আসা। এজন্য খুতবার হুকুম দ্বিতীয় আযান থেকেই শুরু হবে, এর আগে নয়। তবুও যেহেতু দ্বীনী বয়ানের মাধ্যমে শরীয়তের অনেক বিষয় জানা যায়। তাই বয়ান চলাকালীন ব্যক্তিগত আমলে ব্যস- না থেকে বয়ান শোনার প্রতি মনোযোগ দেওয়া উচিত।

হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ২৮২; আততা’লীকুল মুমাজ্জাদ ১/৬০৩; ফাতহুল কাদীর ২/৩৭; আলকওলুর রাজেহ ১/১৪৪; মাবসূত সারাখসী ২/২৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৯৫; ইমামের বের হওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য : হাশিয়া দুরার আলালগুরার ১/৮৬; আলবাহরুর রায়েক ২/১৫৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৪০৮; মনোযোগের সাথে ওয়াজ শ্রবণ করা : আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৬৩; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৬/১৪৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলমগীর হুসাইন - বড় মসজিদ, মিরপুর, ঢাকা

১৭৬৫. Question

এক কিতাবে দেখতে পেলাম যে, রফে ইয়াদাইনের আমল প্রাথমিক অবস'ায় জারি ছিল। পরে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানসূখ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ রাফে ইয়াদাইন এখন মানসূখ। কিন' প্রশ্ন হল, রাফে ইয়াদাইনের হাদীস লেখার সময় ইমাম বুখারী রাহ. কি ঐ মানসূখ হাদীস জানতেন না? ইমাম শাফেয়ী রাহ. নিজ মাযহাবে এর প্রচলন করে গেছেন। তিনিও কি ঐ মানসূখের খবর জানতেন না? যদি জানতেন তবে রাফে ইয়াদাইন করার কি যুক্তি? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

Answer

নামাযের তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া বাকি কিছু তাকবীরের মধ্যে রাফে ইয়াদাইন করা না করা উভয়টিই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো রাফে ইয়াদাইন করেছেন, কখনো করেননি। সাহাবা, তাবেয়ীন ও পরবর্তীদের মধ্যে উভয় পদ্ধতিরই অনুসারী ছিলেন। এরই সুত্র ধরে শাফেয়ী, হাম্বলী মাযহাবে রাফে ইয়াদাইনের পদ্ধতি এসেছে। অপরদিকে হানাফী, মালেকী মাযহাবে রাফে ইয়াদাইন না করার মতটি গ্রহণ করা হয়েছে। স্ব স্ব স'ানে উভয় মতই শরীয়ত স্বীকৃত। কেননা দুটোরই উৎস সুন্নাহ। তবে বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে ইজতিহাদের আলোকে কোনো ফকীহ কোনো একটিকে উত্তম ও অগ্রগণ্য মনে করেন। আর অন্যটিকে মনে করেন বৈধ ও অনুত্তম। আবার অন্য ফকীহ এর বিপরীত মত পোষণ করেন। বিশুদ্ধ মত হল, এর কোনোটিই মানসূখ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো একটিকে মানসূখ ঘোষণা দেননি। কতক ফকীহ যারা রাফে ইয়াদাইনের আমলকে মানসূখ বলেছেন এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, মুস-াহাব বা উত্তম হওয়াটা রহিত হয়েছে। মূল আমলের বৈধতা রহিত হয়নি। বলাবাহুল্য যে, এটি হল বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে ইজতিহাদের আলোকে একদল ফকীহর মত। অন্যান্য ফকীহদের মতও এরূপ হওয়া জরুরি নয়। অন্যরা একে মানসূখ (পূর্ববর্ণিত অর্থে) মনে নাও করতে পারেন। আর বাস-বে কোনো হাদীস মানসূখ হলে তা হাদীসের কিতাবে আনা যাবে না এ ধারণাও ঠিক নয়। অনেক হাদীসের হুকুম মানসূখ হওয়া সত্ত্বেও হাদীস সংকলকগণ নিজ নিজ সংকলনগ্রনে' তা উল্লেখ করেছেন। এতে অনেক ফায়দা রয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য ফায়দা হল, পূর্ববর্তীরা মানসূখ হাদীসটি উল্লেখ করার কারণেই পরবর্তীদের জন্য জানার সুযোগ হয়েছে যে, এর হুকুম মানসূখ। এ বিষয়ে বিস-ারিত জানতে চাইলে সদ্য প্রকাশিত বই ‘নবীজীর নামাযা’ ড. শায়খ মুহাম্মাদ ফায়সাল কৃত পৃ. ১৮০-১৮৮ পর্যন- পড়-ন

পড়-ন।-মাআরিফুস সুনান ২/৪৫৮; ফয়যুল বারী ২/২৫৮; নাসবুর রায়াহ ১/৩৯২; ফাতহুল মুলহিম ২/১১, ১৪; ইলাউস সুনান ৩/৮০, ৯০

Sharable Link

মুহাম্মাদ শামসুদ্দীন - মাদরাসা দারুর রাশাদ

১৭৬৬. Question

ইমামের পিছনে যদি নামায পড়া সহীহ না হয় (অর্থাৎ তার কেরাত ভুল ও অশুদ্ধ হয়) তবে তাবলীগ জামাতে থাকা অবস'ায় ফেতনার আশঙ্কায় জামাতে নিজের নিজের নিয়তে তার পিছনে নামায পড়তে পারবে? বিস-ারিত দলীল-প্রমাণসহ জানালে উপকৃত হব।

Answer

তাজবীদসম্মত কেরাত হওয়া জরুরি, কিন' কেরাতের যে কোনো প্রকার ভুলের কারণেই নামায নষ্ট হয়ে যায় না; বরং কেরাত অশুদ্ধ পড়ার কারণে যদি তার অর্থের মধ্যে এমন বিকৃতি ঘটে যা কুরআনে বর্ণিত ঘটনা বা তথ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত অথবা ভুলের কারণে যে অর্থ সৃষ্টি হয়েছে তা যদি ঈমান পরিপন'ী কথায় পরিণত হয় তাহলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে।

তাই ইমামের কেরাতের ভুলের ক্ষেত্রে নিজ থেকে কোনো সিদ্ধান- না নিয়ে বিজ্ঞ আলেম বা কোনো মুফতী সাহেবকে ঐ অশুদ্ধ কেরাতের ধরন জানিয়ে এর হুকুম জেনে নেওয়া জরুরি। এতে ভুল সিদ্ধানে- উপনীত হওয়া থেকে বাঁচা যাবে। যদি বাস-বেই প্রমাণিত হয় যে, ইমামের কেরাত এমন অশুদ্ধ, যার দ্বারা নামায নষ্ট হয়ে যায় তাহলে ফিতনার আশঙ্কা থাকলে ঐ ইমামের পিছনে জামাতের সময় নামায পড়ে নিবে। পরে একাকী সেই নামায পুনরায় পড়ে নিবে। কিন' এ অবস'ায় ইমামের পিছনে জামাতে দাঁড়িয়ে একাকি নামায পড়বে না

সহীহ বুখারী ১/৭৬; ফাতহুল বারী ২/১৮; জামে তিরমিযী ১/৪৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৪/১৪৬;শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪৭৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭৯; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩১

Sharable Link