হুজুর! আমি সরকারী চাকুরী করতাম। চাকুরী শেষে আমার পেনশন আমি সরকারের নিকট বিক্রি করে দিয়েছি। অতঃপর সমুদয় টাকা দিয়ে সরকারী সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছি। এর আয় দিয়েই মূলত আমার সংসার চলে। এখন জানতে চাই, এই টাকার উপর যাকাত দিতে হবে কি না?
হুজুর! আমি সরকারী চাকুরী করতাম। চাকুরী শেষে আমার পেনশন আমি সরকারের নিকট বিক্রি করে দিয়েছি। অতঃপর সমুদয় টাকা দিয়ে সরকারী সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছি। এর আয় দিয়েই মূলত আমার সংসার চলে। এখন জানতে চাই, এই টাকার উপর যাকাত দিতে হবে কি না?
হাঁ, সমুদয় সঞ্চয়পত্রের ক্রয়মূল্যের উপর যাকাত ফরয। এর আয়ের উপর আপনার সংসার-খরচ নির্ভরশীল হলেও এর যাকাত দিতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, সরকারী সঞ্চয়পত্র সম্পূর্ণ সুদী চুক্তিপত্র। তাই তা ক্রয় করা নাজায়েয এবং এর আয় হারাম। এ থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
Sharable Link-আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৯
একদিন রাতে আমি ইশার জামাত পাইনি। আমি যখন মসজিদে পৌঁছেছি তখন দেখি তারাবীহ শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি নিয়মিত খতম তারাবীহ পড়ছিলাম। তাই আজ ইশা না পড়েই ইমামের সাথে তারাবীহ পড়ে নিলাম। এরপর ইশার নামায পড়ি। জানতে চাই, আমার এমন করাটা কি ঠিক হয়েছে?
আপনার ঐ দিনের তারাবীহ আদায় হয়নি। এশা আদায়ের আগে তারাবীহ সহীহ হয় না। কারণ তারাবীহর সময় এশার পর শুরু হয়।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৭৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৬৭
হুজুর! আমি মাসআলা জেনেছি যে, রমযান মাসে দিনের বেলায় হায়েয বন্ধ হয়ে গেলে ইফতার পর্যন্ত রোযাদারের মতো অনাহারে কাটাতে হয়। একথা ঠিক কি না? আর জানতে চাই, এক মহিলা রোযা ছিল। এ অবস্থায় হায়েয এসে যায়। এখন সে খানা-পিনা করতে পারবে কি না? নাকি বাকি সময়ের জন্যও পানাহার বর্জন করা জরুরি।
রমযান মাসের দিনের বেলায় হায়েয বন্ধ হয়ে গেলে ইফতার পর্যন্ত অবশিষ্ট সময় রোযাদারের মতো পানাহার ইত্যাদি বর্জন করা জরুরি। কিন্তু যে মহিলার হায়েয রমযানের দিনের বেলা শুরু হয়েছে সে বাকি সময় পানাহার করতে পারবে। তবে প্রকাশ্যে খাবে না।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৯; ফাতহুল কাদীর ২/২৮২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭; আননাহরুল ফায়েক ২/৩৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪০৮; আল জাওহারা ১/১৮৬
আমি এক রাতে গাড়ির জ্যামে পড়ে ইশার জামাত পাইনি। একাকী এশা পড়তে গিয়ে দেখি তারাবীহের চার রাকাত শেষ হয়ে গেছে। ইমামের সাথে তারাবীহের ১৬ রাকাত পড়ে জামাতে বিতরও পড়ে নেই। ছুটে যাওয়া চার রাকাত তারাবীহ কি বিতরের পর আদায় করা যায়? আমি পড়ে নিয়েছি। তা কি আদায় হয়েছে? আর এমনটি করা কি আমার জন্য ঠিক হয়েছে?
হাঁ, বিতরের পরও তারাবীহর নামায পড়া যায়। তাই অবশিষ্ট চার রাকাত বিতরের পর আদায় করা সহীহ হয়েছে। আর এক্ষেত্রে বিতর জামাতে পড়ে নিয়ে তারাবীহের ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো আদায় করা নিয়মসম্মতই হয়েছে।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ২/৬৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৩৫; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪; মারাকিল ফালাহ ২২৫
আমাদের মসজিদে হাফেয সাহেব সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে তৎক্ষণাত সিজদা করেননি; বরং এরপর আরো চার/পাঁচ আয়াত পড়ে রুকু করেছেন এবং সিজদা দিয়ে যথারীতি নামায শেষ করেন। এখন করণীয় কী? সিজদা আদায় হয়েছে কি না? শুনেছি, নামাযের রুকু দ্বারা নাকি সিজদা আদায় হয়ে যায়।
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নামাযের রুকু দ্বারা সিজদা তিলাওয়াত আদায় হয়নি। কারণ আয়াতে সিজদার পর দুই আয়াতের অধিক পড়া হয়েছে। আর ঐ সিজদা নামাযের বাইরে আদায় করা যাবে না। কারণ নামাযের তিলাওয়াতের সিজদা নামাযের বাইরে আদায় করা যায় না। তবে সিজদা ছেড়ে দেওয়ার কারণে নামায ত্রুটিপূর্ণ হলেও নামায আদায় হয়ে গেছে বলে গণ্য হবে।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ২/১২২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৭৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪১; রদ্দুল মুহতার ২/১১১
আমাদের এলাকার মানুষের ধারণা এই যে, ফিতরা আদায়ের ক্ষেত্রে একজন গরীব লোককে পূর্ণ এক ফিতরা দিতে হয়। আর এক ফিতরা কয়েকজনকে ভাগ করে দিলে ফিতরা আদায় হয় না। এখন জানার বিষয় হল, তাদের এই ধারণা কি সঠিক? এবং এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী?
একটি ফিতরা একজন গরীবকে দেওয়া জরুরি নয়; বরং একাধিক ব্যক্তিকেও ভাগ করে দেওয়া জায়েয আছে। তবে উত্তম হল, একজনকে একটি ফিতরার কম না দেওয়া।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ২/২০৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৬৭
আমি একজন বিবাহিতা মহিলা। আমার পিতার বাড়ি শনির আখড়া। আমার বিবাহ হয় নেত্রকোণা। তবে আমার স্বামী ঢাকায় চাকুরীরত থাকার কারণে আমি বিবাহের পর থেকেই স্বামীর সাথে গুলশান এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছি। অবশ্য ভবিষ্যতে আমরা স্থায়ীভাবে ঢাকাতেই থাকার ইচ্ছা রাখি এবং এজন্য আমার স্বামী ঢাকাতে জায়গাও কিনেছে। আর বর্তমানে নেত্রকোণায় থাকার আমাদের আর কোনো ইচ্ছা নেই। তবে নেত্রকোণার সাথে আমাদের নিয়মিত সম্পর্ক ও যোগাযোগ রয়েছে। আমার স্বামী সাধারণত তিন/চার মাস পর পর নেত্রকোণায় বেড়াতে যান। সেখানে তার জমি-জায়গা আছে। নিজের কোনো বাড়ী-ঘর নেই। সেখানে আত্মীয়-স্বজন থাকেন। আমিও এক বছর বা ছয় মাস অন্তর অন্তর স্বামীর সাথে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাই।
এখন প্রশ্ন হল, নেত্রকোণা এখনও আমার স্বামীর মূল বাড়ি বলে গণ্য হবে কি না? আর আমি স্বামীর সাথে বেড়াতে গেলে তার অনুসরণ করে নামায পূর্ণ পড়ব না কি ক্বসর পড়ব? উল্লেখ্য, আমার শাশুড়ি কখনও আমাদের এখানে থাকেন আবার কখনও নেত্রকোণায় অন্যান্য ছেলেদের সাথে থাকেন।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার স্বামীর যেহেতু সেখানে নিজস্ব ঘরবাড়ি নেই এবং তিনি গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণাতে বসবাসের নিয়ত সম্পূর্ণ ত্যাগ করেছেন তাই নেত্রকোণা তার স্থায়ী আবাসস্থল হিসেবে গণ্য হবে না। অতএব তিনি গ্রামের বাড়িতে ১৫ দিনের কম অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম হবেন না; বরং নামায কসর করবেন। আর আপনিও আপনার শ্বশুরবাড়িতে মুসাফির গণ্য হবেন।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০২; আলকেফায়া ২/১৮
অনেকে রমযানে বিতরের পর বসে দু’রাকাত নফল নামায আদায় করেন। জানতে চাই, বসে নামায পড়লে কতটুকু ঝুকে রুকু করতে হবে? কেউ কেউ বলেন, বসে রুকু আদায় করলে এ পরিমাণ ঝুঁকতে হবে যেন নিতম্ব উঁচু হয়ে যায়। একথা কতটুকু সঠিক?
বসে নামায আদায়ের ক্ষেত্রে রুকুর জন্য এ পরিমাণ ঝুকবে যেন কপাল হাটুদ্বয়ের বরাবর হয়ে যায়। এর চেয়ে বেশি ঝুকবে না। তাই রুকু সহীহ হওয়ার জন্য নিতম্ব উঁচু হতে হবে এই কথা ঠিক নয়।
Sharable Link-রদ্দুল মুহতার ১/৪৪৭; তাহতাবী আলাল মারাকী ১২৫
নামাযে মহিলাদের মাথার দু’চারটি চুল বের হয়ে গেলে কোনো অসুবিধা হবে কি? মহিলাদের মাথার চুলের কতটুকু অংশ বের হলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে?
নামাযে মহিলাদের মাথার সমস্ত চুলের এক চতুর্থাংশ বা তার বেশি এক রোকন (অর্থাৎ তিনবার সুবহানা রাবিবআল আযীম বলা) পরিমাণ সময় অনাবৃত থাকলে নামায নষ্ট হয়ে যায়। দু’চারটি চুল বের হয়ে গেলে নামায নষ্ট হয় না। তবে শুরু থেকে এভাবে পূর্ণ মাথা ঢেকে নামাযে দাড়াতে হবে যেন চুলের কোনো অংশই বের না হয়।
Sharable Link-আল মুহীতুল বুরহানী ২/১৫; ফাতহুল কাদীর ১/২২৬-২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪১৪; হিদায়া ১/৯৪
আমি একবার কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করছিলাম। যখন সূরা ফাতহের আয়াতে ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ পড়ার সাথে সাথে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে আবার তেলাওয়াত শুরু করলাম। পাশের সাথী ভাই শুনে এভাবে পড়ার ব্যাপারে আপত্তি করে। তখন আমি বললাম, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম শুনলে দরূদ শরীফ পড়া ওয়াজিব। তিনি বললেন, তেলাওয়াত অবস্থায় পড়া ওয়াজিব নয়। কার কথা সঠিক জানতে চাই।
কুরআনুল কারীমে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম আসলে ঐ আয়াত তিলাওয়াত করার সময় দরূদ পড়া ওয়াজিব নয়; বরং তৎক্ষণাৎ না পড়ে তেলাওয়াতের শেষে দরূদ পড়ে নেওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে রাসূল সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামের পর দরূদ পড়ার জন্য তেলাওয়াতের ধারাবাহিকতা বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। তদ্রূপ দরূদকে এভাবে মিলিয়ে পড়াও ঠিক নয় যে, একেবারে আয়াতের অংশ বুঝা যায়।
Sharable Link-আলমুহীতুল বুরহানী ৭/৫১০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩১৫; রদ্দুল মুহতার ১/৫১৯
দুই সেজদার মধ্যবর্তী বৈঠকে হাদীসে কোনো দুআ বা যিকিরের কথা এসেছে কি না? অনেকে বলে, এ সময় চুপ থাকবে ও কোনো কিছু পড়বে না। বিষয়টা হাদীস ও সুন্নাহর আলোকে জানতে চাই।
হাদীস শরীফে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদ নামাযে দুই সেজদার মধ্যবর্তী বৈঠকে হাদীসে নিম্নোক্ত দুআ পড়তেন-
اَللّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ، وَارْحَمْنِيْ، وَعَافِنِيْ، وَاهْدِنِيْ، وَارْزُقْنِيْ.
-সুনানে আবু দাউদ ১/১২৩, সুনানে তিরমিযী ১/৬৪; সুনানে ইবনে মাজাহ ১/৬৪; সুনানে নাসায়ী ১/১২৮
কোনো কোনো ফকীহ নফল নামাযের মতো ফরয নামাযেও দুআটি পড়াকে মুস্তাহাব বলেছেন। কেননা, নামাযের কোনো রুকন বা কোনো কাজ যিকিরশূন্য রাখা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রীতির বিরোধী কাজ। তবে উপরোক্ত দুআটি সংক্ষিপ্তভাবে এ শব্দেও বর্ণিত হয়েছে-
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ، رَبِّ اغْفِرْ لِيْ
তাই এভাবেও পড়া যায়।
Sharable Link-আসসিআয়া ২/২০৯; ইলাউস সুনান ৩/৪৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১১৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫০৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/১৩২
শুক্রবার জুমআর নামাযের পূর্বে সফরের উদ্দেশ্যে শহর ত্যাগ করা জায়েয আছে কি না? এ অবস্থায় জুমআর নামায ছুটে গেলে কোনো গুনাহ হবে কি?
শুক্রবার জুমআর সময় হওয়ার আগে সফরের উদ্দেশ্যে নিজ এলাকা বা শহর ত্যাগ করা জায়েয। এমনিভাবে শহর থেকে বের হয়ে জুমআর জামাত পাওয়া যাবে বলে নিশ্চিত হলে জুমআর সময় হওয়ার পরও সফর করা জায়েয আছে।
আর বিশেষ ওযর থাকলে যেমন-চিকিৎসার প্রয়োজনে জুমআর সময় হওয়ার পরও সফর করা জায়েয আছে। যদিও জুমআর জামাত পাওয়াটা নিশ্চিত না হয়।
সুতরাং শরীয়তসম্মত কোনো ওযর ছাড়া জুমআর সময় হওয়ার পর সফরের উদ্দেশ্যে শহর থেকে বের হয় এবং রাস্তায় জুমআ পাওয়াটা নিশ্চিত না হয় তাহলে সে গুনাহগার হবে। বলাবাহুল্য যে, জুমআ ছুটে গেলে ওয়াক্তের মধ্যেই অবশ্যই যোহর পড়তে হবে।
Sharable Link-সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩/১৮৭; ইলাউস সুনান ৮/৭৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০৭; আল বাহরুর রায়েক ২/১০২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৬২
জনৈক ইমাম সাহেব বিতর নামাযে ভুলে দুআয়ে কুনূত না পড়ে রুকুতে চলে যান। পরে পিছন থেকে মুক্তাদীগণ আল্লাহু আকবার বলে লোকমা দিলে তিনি রুকু থেকে ফিরে এসে দুআয়ে কুনূত পড়েন। অতঃপর আবার রুকু করেন এবং সাহু সিজদা করেন নামায শেষ করেন। এখন আমার প্রশ্ন হল, এই অবস্থায় নামায সহীহ হয়েছে কি না?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করার দ্বারা নামায সহীহ হয়েছে। তবে রুকু থেকে ফিরে আসা নিয়ম পরিপন্থী হয়েছে। দুআয়ে কুনূত না পড়ে রুকুতে চলে গেলে নিয়ম হল, দুআয়ে কুনূতের জন্য রুকু ছেড়ে ওঠে দাড়াবে না; বরং নামায শেষে সাহু সিজদা করবে। আর যদি নিয়মের খেলাফ করে দুআয়ে কুনূত পড়ার জন্য রুকু থেকে ওঠে দাড়ায় তাহলে দ্বিতীয় বার রুকু করার প্রয়োজন নেই। কেননা তার প্রথম রুকুই বহাল রয়েছে। অবশ্য যদি আবারও রুকু করে তবে নিয়মের খেলাফ হলেও নামায হয়ে যাবে। আর এক্ষেত্রেও সাহু সিজদা দিয়ে নামায শেষ করবে।
Sharable Link-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১১; তাহতাবী আলালদ্দুর ১/১৮২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯
আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব আসরের নামাযে ভুলে সূরা ফাতেহার প্রথম আয়াত জোরে পড়েছেন। এরপর আবার সাহু সিজদাও করেছেন। তার সাহু সিজদা করা কি ঠিক হয়েছে?
প্রশ্নোক্ত ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়নি। প্রয়োজন ছাড়া সাহু সিজদা দেওয়া ঠিক নয়। তবে এর কারণে নামায নষ্ট হবে না। নামায আদায় হয়ে যাবে।
Sharable Link-মিরকাত শরহে মিশকাত ২/২৮৯; ফাতহুল মুলহিম ২/৭৭; ইলাউস সুনান ৭/১৯১; শরহুল মুনিয়্যাহ ৭৫৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৮১
যোহরের সুন্নত শুরু করার পর জামাত দাড়িয়ে গেলে সুন্নত পড়ে জামাতে শরিক হবে? নাকি দু’রাকাত পড়ে জামাতে শরিক হবে?
প্রশ্নোক্ত বিষয়ে ফুকাহায়ে কেরামের দু’ধরনের বক্তব্য রয়েছে। তবে প্রমাণাদির আলোকে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য বক্তব্য হল, দু’রাকাত শেষ করেই জামাতে শরিক হয়ে যাবে। তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়াবে না। তবে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাড়িয়ে গেলে চার রাকাত পূর্ণ করে জামাতে শরিক হবে।
Sharable Link-মাবসূতে সারাখসী ১/১৫৯; শরহুল মুনিয়্যাহ ৩৯৪; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৩৭; রদ্দুল মুহতার ২/১৬
অনেক মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর শোক পালন করা অবস্থায় কান ও গলার অলংকার খুলে ফেলেন। কিন্তু নাকফুল খুলেন না। এ ব্যাপারে তাদের জিজ্ঞাসা করা হলে বলে নাকফুল খুলতে হয় না। আমি জানতে চাই, নাকফুল না খুললে গুনাহ হবে কি না?
স্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত অবস্থায় সর্বপ্রকার অলংকার ব্যবহার করা নাজায়েয। সুতরাং নাকফুল ব্যবহার করাও জায়েয নয়। তাই এ সময় নাকফুলও খুলে রাখতে হবে। অবশ্য ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সব ধরনের অলংকার পরতে পারবে।
Sharable Link-আলবাহরুর রায়েক ৩/১৫০; ফাতহুল কাদীর ৪/১৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৭২
আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার দোকানে বছরের শুরুতে ৭০ হাজার টাকার মাল ছিল। বছরের শেষে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় দাড়িয়েছে। আমার প্রশ্ন হল, আমি কি ৭০ হাজার টাকার যাকাত দিব নাকি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার যাকাত দিতে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকারই যাকাত আদায় করতে হবে। কারণ মূল নেসাবের সাথে বছরের মাঝে যা সংযুক্ত হবে বছরান্তে সেগুলো হিসাব করে পুরো স্থিতির যাকাত দিতে হয়। বছরের মাঝে অর্জিত সম্পদের উপর পৃথকভাবে বছর অতিক্রান্ত হওয়া জরুরি নয়।
Sharable Link-মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৬/৪৮১; ইলাউস সুনান ৭/৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯৬; শরহুন নুকায়া ১/৩৬৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২২২
জনৈক ব্যক্তি মান্নত করল যে, তার অমুক কাজটি পূর্ণ হলে একটি বকরি সদকা করবে। ফলে তার কাংখিত কাজটি পূর্ণ হওয়ার পর সে একটি বকরির বাচ্চা, যার বয়স আনুমানিক তিন/চার মাস হবে, দান করেছে। তার এই মান্নত আদায় হয়েছে কি? আর পশুর মান্নত পুরা হওয়ার জন্য সেগুলো কুরবানীর বয়সোত্তীর্ণ হওয়া জরুরি কি না?
ছাগলের ঐ বাচ্চা দেওয়ার দ্বারা মান্নত আদায় হয়নি। মান্নতের জন্যও অন্তত এক বছর বয়সী ছাগল সদকা করা জরুরি। কারণ মান্নত আদায়ের জন্য কুরবানীযোগ্য পশু হওয়া শর্ত।
Sharable Link-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; তাহতাবী আলালমারাকী ২/৩৪০; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৩৮
নামায হয়ে যায় এ পরিমাণ কেরাত পাঠ করার পর লোকমা দেওয়া বৈধ কি না?
নামায হয়ে যায় এ পরিমাণ কেরাত পাঠ করার পরও প্রয়োজনে লোকমা দেওয়া জায়েয়। এক্ষেত্রে ইমাম সাহেবের জন্য লোকমা গ্রহণ করারও সুযোগ আছে। তবে সুন্নত পরিমাণ কেরাত পড়া হয়ে গেলে লোকমার জন্য অপেক্ষা করবে না। এক্ষেত্রে রুকুতে চলে যাওয়াই ভালো। অবশ্য তারাবীহ-এর বিষয়টি স্বতন্ত্র। কারণ সেখানে খতম করা উদ্দেশ্য থাকে। তাই খতমে তারাবীহতে যে কোনো পরিমাণ পড়ার পরও প্রয়োজনে লোকমা আদান-প্রদান করতে পারবে।
প্রকাশ থাকে যে, মুক্তাদী লোকমা দেওয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়া করবে না। কেননা, প্রয়োজন ছাড়া লোকমা দেওয়া মাকরূহ।
Sharable Link-শরহুল মুনিয়্যাহ ৪৪০; ফাতহুল কাদীর ১/৩৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬২২
তাকবীরে তাহরীমার ক্ষেত্রে হাত উঠিয়ে এরপর তাকবীর বলবে নাকি হাত বেঁধে তারপর তাকবীর বলবে? সহীহ পদ্ধতি কোনটি?
তাকবীরে তাহরীমা বলার নিয়ম হল, প্রথমে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাবে এরপর তাকবীর বলবে। হাত বাঁধার পর তাকবীর বলা নিয়মসম্মত নয়।
Sharable Link-আসসিআয়াহ ২/১৪৯; শরহুল মুনিয়্যাহ ২৯৮; আলবাহরুর রায়েক ১/৩০৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৮৩
জুমআর দিন সূরা কাহাফ তিলাওয়াতের ফযীলত কী? এটি জুমআর নামাযের আগে পড়া উচিত নাকি পরেও পড়া যাবে? বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেও কি পড়া যাবে?
জুমআর দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা উত্তম। হাদীসে এর অনেক ফযীলত এসেছে। যেমন-হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত তার জন্য নূর হয়ে থাকবে। -সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩/৩৪৯
অপর এক বর্ণনায় এসেছে- কেয়ামতের দিন তার জন্য নূর হয়ে থাকবে। -মুসতাদরাকে হাকেম ২/৩৯৯
সূরা কাহাফ জুমআর আগে পরে যে কোনো সময় পড়া যাবে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেও পড়া যাবে।
Sharable Link-সুনানে কুবরা বায়হাকী ৩/৩৪৯; তাহতাবী আলালমারাকী ৩৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৬৪
এক ব্যক্তির যিম্মায় বিশ ওয়াক্ত নামায কাযা ছিল। ধীরে ধীরে সে তা আদায় করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামায বাকি থাকে। জানার বিষয় হল, উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে কি তারতীব রক্ষা করা ওয়াজিব?
না, এক্ষেত্রে তারতীব ওয়াজিব হবে না। তবে কাযা নামায যত দ্রুত সম্ভব আদায় করে নেওয়াই ভালো।
Sharable Link-শরহুল মুনিয়্যাহ ৫৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৭০
নফল নামাযে সিজদা অবস্থায় কোনো ধরনের দুআ করা জায়েয আছে কি না? এক আলেমের মুখে শুনেছি যে, নফল নামাযে সিজদা অবস্থায় বাংলাতেও দুআ করা জায়েয আছে। তার এ কথা কতটুকু সঠিক?
নফল নামাযে সিজদা অবস্থায় কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দুআসমূহ পড়া জায়েয আছে। কিন্তু বাংলা ভাষায় কিংবা অনারবী ভাষায় দুআ করা মাকরূহ।
Sharable Link-আননাহরুল ফায়েক ১/২২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৬; আসসিআয়াহ ২/২৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫২১
আমার এক বন্ধু এই বলে মান্নত করেছে যে, আমি এক রাত মসজিদে ইতেকাফ করব। এভাবে মান্নত করায় তার উপর কি তা পূর্ণ করা জরুরি। একজন আলেম এ কথা শুনে বললেন, শুধু রাতের ইতিকাফের মান্নত করলে মান্নত হয় না। জানতে চাই, উক্ত আলেমের বক্তব্য কি সঠিক?
হাঁ, উক্ত আলেম ঠিক বলেছেন। শুধু রাতের ইতিকাফের নিয়ত করলে তা মান্নত হয় না। তবে কোনো নেক কাজের নিয়ত করলে তা পূরণ করে নেওয়াই ভালো।
Sharable Link-মুস্তাদরাকে হাকেম ১৬৪৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭৬; ফাতহুল কাদীর ২/৩১৫
আমি এক বছর আগে হজ্ব করতে যাই। আমাদের হজ্ব ফ্লাইট মক্কায় পৌঁছল ৭ জিলহজ্ব। আমরা উমরার কাজ সেরেই পরদিন মিনায় পৌঁছলাম। কাজ শেষে সেখানে কুরবানী করি বিধায় আমার পক্ষ থেকে দেশে কুরবানী করা হয়নি। দেশে আসার পর একজন আলেমের কাছে শুনতে পেলাম, সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর উভয় স্থানেই (দেশে ও সৌদি আরবে) কুরবানী করতে হয়।
এখন আমার প্রশ্ন হল, আসলেই কি আমার উপর দুই জায়গায় কুরবানী করা ওয়াজিব ছিল? নাকি এক জায়গায় কুরবানী করার দ্বারাই আমার দায়িত্ব আদায় হয়েছে?
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার একটি শর্ত হল মুকীম হওয়া। প্রশ্নের বিবরণ এবং মৌখিক বক্তব্য অনুযায়ী আপনি যেহেতু কুরবানীর দিনগুলোতে মুসাফির ছিলেন তাই ঐ বছর আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব ছিল না। আপনি সেখানে যে কুরবানী আদায় করেছেন তা হজ্বের কুরবানী যাকে ‘দমে শোকর’ বলা হয়। তামাত্তু ও কিরানকারীর উপর এই কুরবানী ওয়াজিব। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার উপর সেখানে বা দেশে আরেকটি কুরবানী করা ওয়াজিব ছিল না।
Sharable Link-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৮২; সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ২২৬; ইলাউস সুনান ১৭/২১২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩০৯
আমাদের বাড়ি থেকে ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ মাইল। আর কুমিল্লা ২৫ মাইল। আমি বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে পথে মুসাফির থাকব। কিন্তু আমি বাড়ি থেকেই এ নিয়্যত করেছি যে, ঢাকা যাওয়ার সময় কুমিল্লা এসে একদিন অথবা কিছু সময় অবস্থান করব।
প্রশ্ন হল, আমি কুমিল্লায় থাকাবস্থায় মুসাফিরের নামায আদায় করব নাকি মুকীমের নামায?
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে কুমিল্লায় ১ দিন অথবা কিছু সময় (১৫ দিনের কম) অবস্থানের নিয়্যত করলেও সেখানে এবং পথিমধ্যে আপনি মুসাফির থাকবেন। কেননা এখানে অবস্থানও সফরের অংশ।
Sharable Link-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬; শরহুল মুনিয়া পৃ. ৫৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৭০ ও ২৮১; হেদায়া ১/১৬৬
নাবালেগ বাচ্চা তার মাল খরচ করার ব্যাপারে অন্য কাউকে উকিল বানাতে পারবে কি না?
বুঝমান নাবালেগ বাচ্চা যে লেনদেন ও জমা-খরচ সংক্রান্ত ভালো-মন্দের জ্ঞান রাখে সে নিজের প্রয়োজন ও কল্যাণে স্বীয় মাল খরচ করার জন্য অন্যকে উকিল বানাতে পারবে এবং তা কার্যকরও হবে। কিন্তু যে নাবালেগের এমন জ্ঞান নেই তার ওয়াকালাত (প্রতিনিধিত্ব) কার্যকরী হবে না।
Sharable Link-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৩৫২; জামে আহকামুস সিগার ১/২৬৪; ফাতহুল কাদীর ৬/৫৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ১৪/৪৪১
আমার ফুফু মারা যাওয়ার পর তার এক ছেলেকে আমার বাবা আমাদের বাসায় নিয়ে আসেন এবং তাকে লালন-পালন করেন। এই ফুপাত ভাই আমাদের বাসায় থাকা অবস্থায় আমার এক খালা মানে আপন ছোট খালাও কি কাজে আমাদের বাসায় কয়েক মাস ছিলেন। তো তারা উভয়ে আমাদের এখানে থাকার ফলে উভয়ের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয় এবং পরবর্তীতে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। আমি এবং আমার আববা এবং পরিবারের সবাই আমরা জানি যে, তাদের বিবাহটা সহীহ হয়েছে। কারণ আমি ফতোয়ার কিতাব ফাতাওয়ায়ে রাহমানিয়ায় এ সম্পর্কে পড়েছিলাম। কিন্তু আমার আববা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা এবং তার সম্মানহানির কারণে তাদের উভয়ের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করতে চাচ্ছেন। আমার আববার কথা হচ্ছে আমি যাকে শ্বাশুড়ি ডাকি আমার ভাগ্নেও তাকে শ্বাশুড়ি ডাকবে? উল্লেখ্য যে, তাদের সংসারে একটা সন্তানও আছে।
প্রশ্নের বর্ণনামতে তাদের বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে। তারা এখন বৈধ স্বামী-স্ত্রী। সুতরাং প্রশ্নোক্ত কারণে তাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো বা বিচ্ছেদের জন্য চাপ সৃষ্টি করা জায়েয হবে না। কেননা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়টি কোনো কারণই নয়। এটা কেবল ধোঁকা। এখানে লজ্জার কিছুই নেই। সুতরাং এ কারণে উক্ত দম্পতির মাঝে বিচ্ছেদ ঘটালে তাদের উপর জুলুম করা হবে, যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
Sharable Link-সূরা নিসা ২৩-২৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫২৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৯২
আমাদের গ্রামের এক ভাইয়ের তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়। পরে স্ত্রী তার বাপের বাড়ি চলে যায়। স্বামী কাজ থেকে এসে বাড়িতে স্ত্রীকে না পেয়ে স্ত্রীর কাছে ফোন করে এবং ফোনে তিন তালাক দেয়। তালাক দেওয়ার পর স্ত্রী বেহুশ হয়ে যায়। পাশে একজন লোক ছিল তারা তাকে বলল, তালাক দিলে কেন? তখন সে বলল, আমি ওকে রাখব না। তাই তিন তালাক দিলাম। পরে সে ঐ মহিলার সাথে ঘর করতে চায়। এরপর গ্রামের এক মৌলবী সাহেবের কাছ থেকে ঐ লোক তালাকের বিষয় জানতে চেয়ে বলে যে, আমি রাগের মাথায় ফোনে তিন তালাক দিয়েছিলাম। এখন আমি তার সাথে ঘর করতে চাই। তখন তিনি তাদের মাঝে দ্বিতীয় বার বিবাহ পড়িয়ে দেন। এখন তারা ঘর সংসার করছে। এ বিষয়ে কুরআন ও হাদীসের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ দম্পতির একত্রে বসবাস সম্পূর্ণ হারাম ও ব্যভিচার হচ্ছে। রাগবশত তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়। তাই তালাকের পর থেকে তারা একে অপরের জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাদের পুনরায় বিয়ে পড়িয়েও একত্রে থাকা হালাল নয়। তাই তাদের এখনি পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি।
Sharable Link-সূরা বাকারা ২৩০; সহীহ বুখারী ২/৭৯১; সুনানে দারাকুতনী ৪/১৩; রদ্দুল মুহতার ৩/২৪৪
গত বছর এক সময় আমার শরীরে অনেক ফোঁড়া হয়েছিল। প্রায় দু’মাস যাবৎ এই অসুস্থতা ছিল। এ সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে নতুন ফোঁড়া উঠে, আবার কোনো কোনো ফোঁড়া গলে যায়। কখনও কখনও নামাযরত অবস্থায়ও কোনো ফোঁড়া গলেছে। কিন্তু আমি তখন তা টের পাইনি। পরে কাপড়ে রক্ত বা পুঁজের দাগ দেখেছি। আমার সে নামায হয়েছে কি না? না হলে কয় ওয়াক্তের কাযা করতে হবে। জানালে উপকৃত হব।
যেই নামাযের পর কাপড়ে বা শরীরে ফোঁড়ার রক্ত দেখতে পেয়েছেন শুধু সেই নামাযই কাযা করে নিতে হবে। এছাড়া অন্যান্য ওয়াক্তের নামায দোহরাতে হবে না। তা শুদ্ধ হয়েছে বলে গণ্য হবে।
Sharable Link-মাবসূতে সারাখসী ১/৫৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১১; রদ্দুল মুহতার ১/২২০