সাদেক হোসাইন - কুমিল্লা

৩৮০৬. Question

এক ব্যক্তি ঘুমে দেখেছে তার স্বপ্নদোষ হয়েছে, কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে বা কাপড়ে কোনো ভেজা বা নাপাকির চিহ্ন দেখতে পায়নি। এক্ষেত্রে তার কী করণীয়? এ অবস্থায় তার উপর গোসল ফরয হবে কি?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঘুমে স্বপ্নদোষ হয়েছে দেখে থাকলেও ওঠার পর শরীরে বা কাপড়ে যেহেতু সে কোনো ভেজা বা নাপাকির দাগ দেখতে পায়নি তাই তার উপর গোসল ফরয হয়নি। শুধু স্বপ্নের কারণে তাকে গোসল করতে হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫; এমদাদুল ফাতাওয়া ১/২১

Sharable Link

মামুনুর রশিদ - টেকনাফ

৩৮০৭. Question

 

আমার জামায় একদিন কিছু রক্ত লাগে। তখন জামাটি আমি পানি দিয়ে কয়েকবার ভালোভাবে ধুয়েছি। কিন্তু রক্তের লাল দাগ জামা থেকে পুরোপুরি দূর করতে পারিনি। আর তখন আমার সাথে অন্য কোনো জামা না থাকায় ঐ জামা পরেই আমি কয়েক ওয়াক্ত নামায পড়েছি। এখন প্রশ্ন হল, আমি ঐ জামা নিয়ে যে কয়েক ওয়াক্ত নামায পড়েছি তা কি আদায় হয়েছে না তা আবার পড়তে হবে?

 

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু রক্ত লাগার পর কাপড়টি ভালোভাবে ধুয়ে নিয়েছেন এবং রক্ত দূর হয়ে গেছে। তাই এরপর রক্তের দাগ থেকে গেলেও সমস্যা নেই। তা পাক হয়ে গেছে। এ জামা পরে যে নামাযগুলো পড়েছেন তাও আদায় হয়েছে। পুনরায় আদায় করা লাগবে না।

-আলআওসাত, ইবনুল মুনযির ২/২৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪২; আল বাহরুর রায়েক ১/২৩৬

Sharable Link

নোমান - নেত্রকোণা

৩৮০৮. Question

আমরা শুনে আসছি যে, মাথা মাসাহর পদ্ধতি হল প্রথমে তিন আঙ্গুল সামনের দিক থেকে পিছনে নিবে। এরপর হাতের তালু পিছন থেকে সামনের দিকে আনবে। বাকি দুই আঙ্গুল দিয়ে কান মাসাহ করবে। কিন্তু এক আলেম বললেন, মাথা মাসাহর এই পদ্ধতিটি ঠিক নয়। সঠিক পদ্ধতি হল, পূর্ণ হাত সামনের দিক থেকে পিছনে নিবে এবং পুনরায় পিছন থেকে সামনে আনবে। আরেকজন আলেম বললেন, এভাবে করলে মাসাহ দুইবার হয়ে যাবে। তাই উত্তম পদ্ধতি হল, হাতের আঙ্গুলসমূহ সামনে থেকে পিছনে নেওয়া এবং হাতের তালু পিছন থেকে সামনে আনা। এখন মুফতী সাহেবের নিকট আমার প্রশ্ন, মাথা মাসাহর সঠিক এবং উত্তম পদ্ধতি কোনটি?

 

Answer

মাসাহ করার সঠিক পদ্ধতি হলউভয় হাতের আঙ্গুলসমূহ এবং তালু মাথার অগ্রভাগে রেখে মাথার শেষ পর্যন্ত টেনে নেওয়া। এরপর উভয় হাত পুনরায় পেছন থেকে সামনের দিকে টেনে আনা। আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রা. হতে বর্ণিত আছে,

بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ ثم ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمَّ رَدَّهُمَا حتى رجع إلى المَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত মাথার অগ্রভাগ থেকে পিছন দিকে টেনে নিয়েছেন। এরপর উভয় হাত ঐ স্থান পর্যন্ত টেনে নেনযেখান থেকে মাসাহ শুরু করেছিলেন। -জামে তিরমিযীহাদীস ৩২

এভাবে মাসাহ করলে মাসাহ দুই বার হয়ে যায়- এ কথা ঠিক নয়। কারণশরীয়তের দৃষ্টিতে এই উভয় কাজের পরই একবার মাসেহ সম্পন্ন হয়। আর মাসাহর শুরুতে হাতের কিছু অংশ আলাদা করে রাখতে হবে এ কথাও ঠিক নয়। কেননা ফিকহের বিভিন্ন কিতাবে এই পদ্ধতিকে ভুল বলা হয়েছে।

-মুআত্তা মুহাম্মাদ ৪৬-৪৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৫; ফাতহুল কাদীর ১/১৭; আসসিআয়াহ ১/১৩৩; মাআরিফুস সুনান ১/১৭৫; ফয়যুল বারী ১/২৯৪; আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬

Sharable Link

মিল্লাত হোসেন - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮০৯ . Question

আজকাল অনেকে এমনভাবে বাড়ি বানায় যে, বাড়ির নিচে নাপাকির ট্যাংকি থাকে। আমার প্রশ্ন হল, ঐ বাড়ির প্রথম ফ্লোরে নামায পড়া জায়েয হবে কি?

 


Answer

যেহেতু নাপাকির রংগন্ধ ইত্যাদি কোনো আলামতই এক্ষেত্রে প্রকাশ হয় না তাই তার উপর নামায পড়া জায়েয।

-শরহুল মুনইয়াহ ২০২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩২; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬২

Sharable Link

আব্দুল্লাহ মাবরূর - মৌলভী বাজার

৩৮১০. Question

এক ব্যক্তি আসরের নামায ওয়াক্তের ভেতর পড়তে পারেনি। মাগরিবের সময় এক মসজিদে জামাতের সাথে মাগরিবের নামায পড়ে নেয়। তখন তার আসরের নামাযের কথা স্মরণ ছিল। কিন্তু যেহেতু মাগরিবের জামাত দাঁড়িয়ে যায় তাই আসরের কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও সে মাগরিবের জামাতে শরিক হয়ে যায়। আর অতীতেরও তার কোনো নামায কাযা নেই। এখন ঐ ব্যক্তির কী করণীয়? সে কি এখন আসরের কাযা আদায় করে নিবে? বিস্তারিত জানতে চাই।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আসরের কাযা নামাযের কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও ঐ ব্যক্তির মাগরিবের জামাতে শরিক হওয়া এবং তা পড়া সহীহ হয়নি। তাই এখন তার করণীয় হলআসরের কাযা নামাযটি পড়ে উক্ত মাগরিবের নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া। কেননা যার পেছনের কোনো নামায কাযা নেই তার যদি কোনো ওয়াক্ত নামায কাযা হয়ে যায় তবে তার জন্য পরবর্তী ওয়াক্তের নামায পড়ার আগে ঐ কাযা নামায আদায় করা জরুরি। কাযা আদায় করতে গিয়ে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলেও তাকে আগে কাযাই আদায় করতে হবে। কিন্তু সময় স্বল্পতার দরুণ কাযা আদায় করতে গিয়ে যদি পরবর্তী ওয়াক্তের ফরয ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তখন ওয়াক্তের নামায আগে পড়ে নিতে হবে।

হাদীস শরীফে আছেআবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فَذَكَرَهَا مَعَ الْإِمَامِ فَلْيُصَلِّهِ مَعَهُ ثُمَّ لِيُصَلِّ الَّتِي نَسِيَ  ثُمَّ لِيُصَلِّ الْأُخْرَى بَعْدَ ذَلِكَ.

যে ব্যক্তি কোনো ওয়াক্তের নামায (ওয়াক্তের ভেতর) পড়তে ভুলে গেছে অতপর ইমামের পেছনে (পরবর্তী ওয়াক্তের) নামায পড়ার সময় তার ঐ নামাযের কথা স্মরণ হয় সে যেন ইমামের সাথে নামাযটি পড়ে নেয়। এরপর যে নামাযটি পড়তে ভুলে গিয়েছিল তা আদায় করে। অতপর ইমামের সাথে যে নামাযটি পড়েছে তা আবার পড়ে নেয়। -শরহু মাআনিল আসারতহাবীহাদীস ২৬৮৪মুসান্নাফে আবদুর রাযযাকহাদীস ২২৫৪

এ হাদীসটি বর্ণনা করার পর ইমাম তহাবী রাহ. বলেনইমামের সাথে যে নামাযটি পড়েছে তা আমাদের নিকট নফল হিসেবে গণ্য হবে। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৭-৩৫০; আল বাহরুর রায়েক ২/৮০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২২

Sharable Link

মুসলেহ উদ্দীন - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮১১. Question

নিজ বাসস্থান থেকে বের হয়ে কী পরিমাণ রাস্তা অতিক্রম করলে মুসাফির হয়?

 


Answer

সফরসম দূরত্ব (৭৮ কিলোমিটার বা তার বেশি) অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে নিজ এলাকাগ্রাম বা শহর অতিক্রম করার পর থেকে সফরের বিধান আরোপিত হবে।

-শরহুল মুনইয়াহ ৫৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৮; ফাতহুল কাদীর ২/৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

Sharable Link

ফারহান আহমদ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮১২. Question

মুসাফির অবস্থায় নামায পড়ার বিধান কী? অর্থাৎ মুসাফির ফরয ও সুন্নত নামায কীভাবে আদায় করবে? সফর অবস্থায় কোন কোন নামায কসর করতে হয়?

 


Answer

মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় কোনো মুকীমের ইক্তিদা না করলে কসর করা অর্থাৎ চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায দুই রাকাত পড়া জরুরি।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

فَرَضَ اللهُ الصَّلَاةَ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَضَرِ أَرْبَعًا، وَفِي السَّفَرِ رَكْعَتَيْنِ.

আল্লাহ তাআলা তোমাদের নবীর যবানে নামাযকে মুকীম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত ফরয করেছেন। -সহীহ মুসলিমহাদীস ৬৮৭

আর মুকিমের পিছনে ইকতিদা করলে পূর্ণ নামাযই পড়তে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

إِذَا دَخَلَ الْمُسَافِرُ فِي صَلَاةِ الْمُقِيمِينَ صَلَّى بِصَلَاتِهِمْ.

মুসাফির যদি মুকিমদের সাথে নামাযে শরীক হয় তবে সে তাদের মত (চার রাকাত) নামায পড়বে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ৩৮৪৯

আর মাগরিববিতর ও ফজরের নামায পূর্ণই আদায় করতে হবে। এগুলোর কসর নেই। তেমনিভাবে সুন্নত নামাযেরও কসর হয় না। তাই সুন্নত পড়লে পুরোই পড়বে।

প্রকাশ থাকে যেসফর অবস্থায় পথিমধ্যে তাড়াহুড়া ও ব্যস্ততার সময় সুন্নত পড়বে না। আর গন্তব্যে পৌঁছার পর সুন্নত নামায পড়াই উত্তম।

উল্লেখ্য যেবিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সফর অবস্থায় সুন্নতে মুআক্কাদা নামাযগুলো মুকীম অবস্থার ন্যায় আবশ্যক থাকে নাবরং সাধারণ সুন্নতের হুকুমে হয়ে যায়।

-শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১

Sharable Link

উবাইদুল্লাহ - গোপালগঞ্জ

৩৮১৩. Question

আগে কেউ যদি অসিয়ত করে যায় যে, আমার জানাযা অমুক পড়াবে তাহলে কি শুধু অসিয়তের কারণে সে ব্যক্তি জানাযার নামায পড়ানোর বেশি হকদার হয়ে যাবে? দয়া করে উত্তর জানালে কৃতজ্ঞ হব।

 


Answer

জানাযার নামায পড়ানোর হকদার মৃতের ওলিগণ। তারা চাইলে মৃত ব্যক্তি যার ব্যাপারে জানাযা পড়ানোর অসিয়ত করেছে তাকে দিয়েও জানাযা পড়াতে পারবে। কোনো কোনো সাহাবা-তাবেয়ী নিজের জানাযা পড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট কাউকে অসিয়ত করে গেছেন এবং পরবর্তীতে তার ওলিরা তা পূর্ণও করেছেন। তবে ওলিরা চাইলে অসিয়তকৃত ব্যক্তি ছাড়া অন্যকে দিয়ে কিংবা নিজেরাও জানাযা পড়াতে পারবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২২; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৫৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮১; শরহুল মুনইয়াহ ৬০৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৭/২২৯-২৩০

Sharable Link

বেলাল হুসাইন - মিরপুর, ঢাকা

৩৮১৪. Question

মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ানোর ক্ষেত্রে কে বেশি হকদার? মৃতের ওলি না মহল্লার ইমাম? জনৈক আলেম বলেছেন, মসজিদের ইমামই নাকি বেশি হকদার। কথাটা কতটুকু ঠিক? দলীলসহ জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

মৃত ব্যক্তির জানাযার নামাযে মৃতের ওলি এবং মহল্লার ইমাম উভয়ে যদি উপস্থিত থাকেন এবং ইমাম ইলম-আমলে মৃতের ওলিদের থেকে বেশি যোগ্য হন তাহলে ইমামই জানাযা পড়ানোর বেশি হকদার। প্রখ্যাত তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন,

يُصَلِّي عَلَيْهَا أَئِمَّةُ الْمَسَاجِدِ.

জানাযার নামায পড়াবে মসজিদের ইমামগণ। তিনি আরো বলেন,

تَرْضَوْنَ بِهِمْ فِي صَلَاتِكُمُ الْمَكْتُوبَاتِ، وَلَا تَرْضَوْنَ بِهِمْ عَلَى الْمَوْتَى.

তোমরা তাদের পেছনে ফরয নামায পড়তে রাজি। কিন্তু জানাযা পড়তে রাজি না (এটা কেমন কথা)! -কিতাবুল আসারহাদীস ২৩৭

আরেক বর্ণনায় এসেছেতাবেয়ী সালেম রাহ.তাউস রাহ.কায়েস রাহ.মুজাহিদ রাহ. এবং আতা রাহ. তারা সকলেই ইমাম সাহেবকে জানাযা পড়াতে আগে বাড়িয়ে দিতেন।-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ১১৪৩২

অবশ্য মৃতের ওলিরা যদি মহল্লার ইমাম থেকে বেশি যোগ্য ও বড় আলেম হন তাহলে ওলিরাই বেশি হকদার।

-কিতাবুল আছল ১/৩৪৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/২১৯

Sharable Link

ইসহাক - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮১৫ . Question

আমার মামা দুই বছর আগে মারা গেছেন। তার জীবদ্দশায় তিনি বেশ কিছু রোযা রাখেননি। তার মৃত্যুর পর আমার খালারা কি এখন তার অনাদায়ী রোযাগুলো রাখতে পারবে? রাখলে কীভাবে রাখবে? কারণ আমরা জানি, ইচ্ছাকৃত একটি রোযা ভাঙলে একটানা ৬০টি রোযা রাখতে হয়। রোযার কাযা করা অবস্থায় ১দিন ছুটে গেলে তা কি আবার শুরু থেকেই রাখতে হবে? আর রোযা কি ১টির বদলে ৬০টি নাকি ১টি রাখলেই হবে?

 


Answer

আপনার মামার অনাদায়ী রোযাগুলো খালারা বা অন্য কেউ রাখলে আপনার মামার পক্ষ থেকে তা আদায় হবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা.কে অন্যের পক্ষ থেকে রোযা রাখা কিংবা অন্যের পক্ষ থেকে নামায আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলতেন,

لاَ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ، وَلاَ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ.

কেউ অন্যের পক্ষ থেকে রোযা রাখবে না এবং অন্যের পক্ষ থেকে নামায পড়বে না।-মুআত্তা ইমাম মালেকপৃষ্ঠা ৯৪

তাই এক্ষেত্রেআপনার মামার কাযা রোযার জন্য ফিদয়া আদায় করতে পারেন। প্রতিটি রোযার জন্য কোনো দরিদ্রকে দু’ বেলা খাবার বা তার মূল্য দান করতে পারেন। অবশ্য ঈসালে সওয়াবের (সওয়াব পৌঁছানোর) জন্য নফল রোযা রাখার অবকাশ আছে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৫৩, ২/২৬৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬০; ইলাউস সুনান ৯/১৫৯; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৪৪২

Sharable Link

হারেছ ছানী - ফেনী

৩৮১৬ . Question

যাকাতের নেসাব কী? এ বছরের যাকাতের নেসাবের পরিমাণ জানতে চাই। স্বর্ণের যাকাত কি এক বছর পর দিতে হয়? আমার যাকাত এক বছর হওয়ার আগেই আমি কিছু টাকা দিয়ে দিয়েছিলাম তা কি বৈধ হবে? আর কারো উপর নেসাব পরিমাণ স্বর্ণ আছে কিন্তু তা মাত্র দুই মাস হয়েছে এমন ব্যক্তিকে কি যাকাত দেওয়া যাবে? আর আমার একটি স্বর্ণের আংটি ছিল, যা ১ বছর হওয়ার আগেই বিক্রি করেছিলাম। এখন কি সেই আংটিরও যাকাত দিতে হবে?

 


Answer

বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী (ভরি প্রতি প্রায় ৬৫০/- টাকা হিসাবে) রূপার নেসাব হয় ৩৪০০০/- টাকা। তাই কারো নিকট ঐ পরিমাণ টাকা থাকলে বা স্বর্ণ-রূপা কিংবা টাকা ও স্বর্ণ-রূপা এবং ব্যবসায়িক পণ্য মিলে নেসাব পরিমাণ থাকলে তার উপর যাকাত ফরয হবে। তদ্রূপ কারো নিকট শুধু স্বর্ণ থাকলে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা শুধু সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা থাকলে তার উপর যাকাত ফরয হবে। এর কম থাকলে যাকাত ফরয হবে না।

নেসাব পরিমাণ সম্পদের উপর এক বছর অতিবাহিত হলে যাকাত দিতে হবে। তাই বছর পূর্ণ হওয়ার আগে যে আংটি বিক্রি করা হয়েছে তার যাকাত প্রদান করতে হবে না।

আর গরিব-মিসকীনরাই হল যাকাতের প্রকৃত হকদার। তাই কারো নিকট প্রয়োজন অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে ঐ সম্পদের উপর বছর অতিক্রান্ত না হলেও তাকে যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির কাছে নেসাব পরিমাণ স্বর্ণ থাকার কারণে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে না। 

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৯৬৬, ৯৯৪৮, আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৫৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৪৯, ১/২৬৪; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ২/৩০৫, ২/২৬৬, ২/৩৯০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৩, ২/৩৪৮

Sharable Link

মাসরূর হাসান - নাটোর

৩৮১৭. Question

ইহরাম ত্যাগ করার সময় হলক তথা মাথা মুণ্ডানোর আগে নখ-মোচ ইত্যাদি কাটা কি জায়েয? কেউ যদি এমনটি করে তবে কি তার উপর কোনো জরিমানা আসবে?

 


Answer

হজ্ব ও উমরার সকল কাজ আদায় হয়ে গেলেও মাথা মুণ্ডানোর আগে যেহেতু ইহরাম বহাল থাকে তাই মাথা মুণ্ডানোর আগে নখ-মোচ কাটা নিষিদ্ধ। মাথা মুণ্ডিয়ে বা চুল ছোট করে হালাল হয়ে যাওয়ার পর এগুলো করতে পারবে। হালাল হওয়ার আগে এসব কাজ করলে জরিমানা (দম বা সদকা) দিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৭; মানাসিক, মুল্লা আলী কারী পৃ. ২২৮

Sharable Link

মুনযির আহমদ - বাজার রোড, বরিশাল

৩৮১৮. Question

এক মহিলা উমরাহ করতে যায়। কিন্তু উমরার তাওয়াফ করার আগেই ঐ মহিলার মাসিক স্রাব এসে যায়। পাঁচ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখনও স্রাব বন্ধ হয়নি। এদিকে সফরের আর দুই দিন বাকি। দুই দিন পরই তার ফ্লাইট। দেশে চলে আসতে হবে। এখন সে কী করবে? এ অবস্থায়ই কি তাওয়াফ-সায়ী করে উমরা সম্পন্ন করে ফেলবে? মাসআলাটি বিস্তারিত জানতে চাই।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মহিলাটি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। যদি এ সময়ের ভেতরে তার মাসিক বন্ধ হয়ে যায় তাহলে পবিত্র হয়ে তাওয়াফ-সায়ী সম্পন্ন করবে। আর যদি মাসিক বন্ধ না হয় তাহলে সফরের শেষের দিকে ঐ অবস্থাতেই উমরার তাওয়াফ করে নিবে। অতপর উমরার সায়ী করবে এবং চুল কেটে হালাল হয়ে যাবে। আর অপবিত্রতার অবস্থায় উমরার তাওয়াফ করার কারণে তাকে একটি দম দিতে হবে। অর্থাৎ হেরেমের এলাকায় তাকে একটি ছাগল বা দুম্বা যবাই করতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৪৭; মানাসিক, মুল্লা আলি কারী, পৃ. ৩৫২

Sharable Link

তরিকুল ইসলাম - সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

৩৮১৯ . Question

এ বছর আমার হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। শুনেছি, ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা যায় না। জানার বিষয় হল, এমন খাবার যা সুগন্ধিযুক্ত জিনিস দিয়ে রান্না করা হয় তা খাওয়া যাবে কি না? যেমন পোলাও, বিরানী এগুলোতে এলাচ-দারচিনি ইত্যাদি সুগন্ধিযুক্ত জিনিস দেওয়া হয়। তাই তা খাওয়া যাবে কি না?

 


Answer

হাঁইহরাম অবস্থায় পোলাও বিরিয়ানী খাওয়া জায়েয। কেননা খাবার রান্না করার সময় সুগন্ধি মসলা দেওয়া হলে সে খাবার ইহরাম অবস্থায় খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। তবে রান্নার পর খাবারে জাফরান বা কোনো সুঘ্রাণ মেশানো হলে ইহরাম অবস্থায় তা খাওয়া নিষেধ। 

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৯; আলমুবসূত সারাখসী ৪/১২৩; ফাতহুল কাদীর ২/৪৪১; রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৭; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪১

Sharable Link

তাজুল ইসলাম - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮২০. Question

কোনো বাচ্চা যদি তার সৎ মায়ের দুধ পান করে তাহলে কি ঐ বাচ্চার মা তালাক হয়ে যাবে?

 

 

Answer

শিশুর জন্য সৎ মায়ের দুধ পান করা জায়েয। সৎ মায়ের দুধ পান করার সাথে মায়ের তালাক হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের প্রশ্নই অবান্তর।


Sharable Link

নূরুদ্দীন - নেত্রকোণা

৩৮২১ . Question

আমাদের এক আত্মীয়ার বিবাহ হয় গত বছর। মেয়েটির গর্ভে সন্তান আসার পর তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে দেয়। এ দুঃখে ও ক্ষোভে মেয়েটি ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তার গর্ভস্থ সন্তানকে নষ্ট করে দেয়। এখন সে ইদ্দত কীভাবে পালন করবে? এই গর্ভপাতের দ্বারা কি ইদ্দত শেষ হয়ে গেছে? নাকি ঋতুস্রাবের মাধ্যমে ইদ্দত পালন করতে হবে?

 


Answer

গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমনহাত-পানখচুল ইত্যাদি হয়ে থাকলে তা ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ফেলে দিলেও ইদ্দত পূর্ণ হয়ে যায়।

عَنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ قَالَ فِي الْمُطَلَّقَةِ، وَالْمُتَوَفَّى عَنْهَا، إِذَا رَمَتْ بِوَلَدِهَا قَبْلَ أَنْ يَتِمَّ خَلْقُهُ، قَالَ: إِذَا اسْتَبَانَ مِنْهُ شَيْءٌ حَلَّتْ لِلزَّوْجِ.

তালাকপ্রাপ্তা এবং স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে এমন মহিলা যদি তার গর্ভস্থ সন্তানের আকৃতি পূর্ণতা লাভ করার আগে তা ফেলে নষ্ট করে তার সম্পর্কে তাবেয়ী হারেস রাহ. বলেনতার যদি কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে থাকে তাহলে ঐ মহিলা (র ইদ্দত পূর্ণ হয়ে যাবে এবং সে) অন্য স্বামীর জন্য হালাল হয়ে যাবে। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস ১৯৬২৩

আর গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ না হয়ে থাকলে তা ফেলে দেওয়ার দ্বারা ইদ্দত পূর্ণ হবে না। এক্ষেত্রে তাকে নতুন করে তিনটি পূর্ণ ঋতুস্রাবের মাধ্যমে ইদ্দত পালন করতে হবে।

উল্লেখ্য যেগর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হোক বা না হোক মায়ের মৃত্যু বা শারীরিক মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা ছাড়া গর্ভ নষ্ট করে ফেলা নাজায়েয। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হয়ে গেলে এবং রূহ সঞ্চার হওয়ার পর হলে তা নষ্ট কর ফেলা আরো বড় গুনাহ এবং মানুষ হত্যার শামিল। জেনে রাখা দরকার যেতালাক হয়ে যাওয়ার কারণে গর্ভ নষ্ট করা বৈধ হয়ে যায় না।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬১; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৬

Sharable Link

সুহাইল - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮২২. Question

দেখাদেখি ও বিয়ের তারিখ হওয়ার পর কি ছেলে-মেয়ে পরস্পর দেখাসাক্ষাৎ ও কথাবার্তা বলতে পারবে?

 


Answer

বিয়ের দিন-তারিখ ধার্য হলেও বিয়ের আকদ না হওয়া পর্যন্ত ছেলেমেয়ে উভয়ে পূর্বের মতোই গায়রে মাহরাম থাকে। তাই এ সময়ে তাদের পরস্পর দেখাসাক্ষাৎ করা নাজায়েয। আর এ সময়ে তারা বিনা প্রয়োজনে কথা বলা থেকেও বিরত থাকবে। 

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৯; কেফায়াতুল মুফতী ৬/৪৮৩

Sharable Link

আবদুল আযীয - বাসাবো, ঢাকা

৩৮২৩. Question

আমাদের এলাকার মসজিদটি প্রায় ৬০ বছর আগের। মসজিদটি টিনশেড ছিল। মুসল্লিসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় টিনশেড ভেঙ্গে তিন তলা বিশিষ্ট মসজিদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কমিটির কেউ কেউ চাচ্ছে নিচ তলা মার্কেট বানাবে। আর দোতলা থেকে মসজিদ শুরু হবে। যেন নিচ তলার আয় দিয়ে মসজিদের কার্যক্রম চালানো যায়।

আপনাদের নিকট জানতে চাই, নিচ তলাকে কি মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে মার্কেট বানানো যাবে? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মসজিদটি যেহেতু নিচ তলা থেকেই মসজিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে তাই পুণঃনির্মাণের সময় নিচ তলাকে মার্কেট বানানো জায়েয হবে না। এ ধরনের পরিকল্পনা থেকে কর্তৃপক্ষের বিরত থাকা আবশ্যক। কেননা মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জায়গায় নিচতলা থেকে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হলে ঐ স্থানের উপর-নিচ পুরোটা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাই মসজিদ কমিটির কর্তব্য হলমসজিদের নিচতলার অংশসহ উপর নিচ পুরোটাই মসজিদ হিসেবে বহাল রাখা। মসজিদের সার্বিক জরুরত মুসলমানদের সাধারণ দান দ্বারা পূর্ণ করা হবে। মসজিদের নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে মসজিদের যে কোনো প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসা মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলার ঘরে দান-সদকা করতে পারা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার ও অনেক সওয়াবের কাজ। 

-আল মুহীতুল বুরহানী ৯/১২৮, ১৩৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯৩; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৮

Sharable Link

রূহুল আমীন - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮২৪ . Question

 

বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় এক মাসের ভাড়া অগ্রিম নিতে পারবে কি না? যা ভাড়া-গ্রহিতা চলে যাওয়ার সময় শেষ মাসের ভাড়া হিসেবে কর্তিত হবে। আর এ টাকা বাড়িওয়ালা নিজের কাজেও ব্যয় করবে।

 


 

Answer

হাঁভাড়াটিয়া সম্মত হলে এক দুই মাস বা আরো বেশি সময়ের অগ্রিম ভাড়া নেওয়া জায়েয। এবং অগ্রিম ভাড়া নেওয়া হলে তার মালিক বাড়িওয়ালা। তাই এ টাকা সে নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১৩; ফাতহুল কাদীর ৮/১৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১০

Sharable Link

মুহাম্মাদ আরমান - খুলনা

৩৮২৫ . Question

আমরা অনেক সময় দোকানে গিয়ে বলি, ‘ভাই, অমুক মালটা দেন।দোকানদার মাল দেওয়ার পর কখনো মূল্য জিজ্ঞাসা করে পরিশোধ করি। কখনো পরে দেওয়ার কথা বলে চলে আসি। আবার কখনো মূল্য জিজ্ঞাসা না করেই বলি যে, মূল্য পরবর্তীতে আমি দিয়ে যাব বা অমুকে দিয়ে যাবে। তো আমার জানার বিষয় হল, ভাই অমুক মালটা দেন- কথাটা আদেশসূচক হয়েছে। সুতরাং ক্রয়-বিক্রয় শুদ্ধ হবে কি না? না হলে কীভাবে বলব? শেষে মূল্য জিজ্ঞাসা না করেই পরে দেওয়ার কথা বললে মূল্যটা অস্পষ্ট থেকে যায়। তাই এই বিক্রয় শুদ্ধ হবে কি না?

 


Answer

দোকানে গিয়ে কেউ যখন বলেভাই অমুক মালটা দেন এবং বিক্রেতা তা দিয়ে দেয়। ক্রেতাও মূল্য জেনে (তা আদায় করে কিংবা বাকি রেখে) পণ্য নিয়ে নেয় তাহলে এই বেচাকেনা সহীহ। এখানে প্রথম কথাটা বাহ্যত আদেশসূচক হলেও আমাদের সমাজ ও ভাষারীতি অনুযায়ী এটা ইজাব তথা ক্রয়ের প্রস্তাব। অতএব এ নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। এছাড়া ক্রয়ের প্রস্তাব ও গ্রহণের বাক্য ছাড়াও পণ্য গ্রহণ ও মূল্য প্রদানের দ্বারা বেচাকেনা হয়ে যায়। বেচাকেনা সহীহ হওয়ার জন্য মৌখিক ঈজাব-কবুল জরুরি নয়।

পণ্যের মূল্য যদি সুনির্ধারিত হয়- যেমন বাজারে ঐ পণ্যের মূল্য নির্ধারিত আছে কিংবা পূর্ব থেকে নির্ধারিত মূল্যে সে ব্যক্তি দোকানদার থেকে ঐ পণ্যটি ক্রয় করে থাকে। তাহলে বেচাকেনার সময় নতুন করে আবার দাম না জেনে নিলেও সমস্যা নেই। আর যদি মূল্য কোনোভাবেই নির্ধারিত না থাকে তাহলে দাম জেনে নেওয়া ছাড়া বেচাকেনা সহীহ নয়। এ ধরণের ক্ষেত্রে দাম না জেনে পণ্য নিয়ে যাওয়া বৈধ হবে না। 

-ফাতহুল কাদীর ৫/৪৫৮, ৪৬৭; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৫১১, ৫২৯

Sharable Link

মাসীহুল্লাহ হাসান - ১৭৭/সি গ্রিন রোড, ঢাকা

৩৮২৬ . Question

কিছুদিন আগে আমি এক দোকান থেকে হাফ লিটার মিল্কভিটা দুধ কিনেছিলাম। বাসায় এসেই দুধ জ্বাল দেই এবং দুধ নষ্ট পাই। তখন মনে মনে ভাবি যে, পরে গিয়ে দোকানী থেকে আধা লিটার দুধ নিয়ে আসব। আর ঐ নষ্ট দুধ জ্বাল দিয়ে ছানা বানিয়ে খেয়ে ফেলি।

আমার ঐ নষ্ট দুধ ছানা বানিয়ে খাওয়া দেখে এক ভাই বললেন যে, আপনি তো আর দোকানদার থেকে দুধ ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। কারণ আপনি দুধ ছানা বানিয়ে খেয়ে ফেলেছেন।

এখন আমার প্রশ্ন হল, ঐ ভাইয়ের কথা কি ঠিক? আমার জন্য কি দোকানী থেকে দুধ ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না?

 


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ দুধ নষ্ট জানার পরও যেহেতু তা ছানা বানিয়ে খেয়েছেন তাই এক্ষেত্রে আপনার জন্য দোকানী থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করা জায়েয হবে না। আপনার ভাই ঠিকই বলেছেন। 

-শরহুল মাজাল্লা ২/৩০৭, ৩৩৫, মাদ্দা : ৩৪৪, ৩৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৬/৫৫; রদ্দুল মুহতার ৫/২৫

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - চট্টগ্রাম

৩৮২৭. Question

আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে- দুই বছর, চার বছরের জন্য সুপারি বাগান ভাড়া দেওয়া হয়। ভাড়াদাতা নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে গাছের সুপারি ভোগ করে।

আমার জানার বিষয় হল, এভাবে সুপারি বাগান (জমি ও গাছসহ) ভাড়া দেওয়া জায়েয আছে কি?

 


Answer

ফল গ্রহণের উদ্দেশ্যে ফলবাগান ভাড়া দেওয়া-নেওয়া নাজায়েয। সুতরাং সুপারি বাগানের প্রশ্নোক্ত ভাড়া-চুক্তি বৈধ নয়।

বাগানের ফল গ্রহণ করতে চাইলে বিক্রি চুক্তি করতে হবে। অর্থাৎ গাছে যখন ছোট ছোট সুপারি আসবে তখনই পুরো মৌসুমের সুপারি বিক্রি করা যাবে। এরপর ক্রেতা সুবিধামত সময়ে সুপারি পেড়ে নিতে পারবে। এভাবে প্রতি বছর গাছে সুপারি আসার পর তা বিক্রি করতে পারবে। তবে একত্রে কয়েক বছরের জন্য বিক্রি করে দেওয়ার কোনো সহীহ পদ্ধতি আমাদের জানা নেই। কারণ গাছে ফল আসার পূর্বে তা বিক্রি করলে সেটি হবে বাইয়ে মাদূম তথা অস্তিত্ব নেই এমন জিনিস বিক্রি করা। হাদীস শরীফে এ ধরনের বিক্রয় নিষেধ করা হয়েছে। 

-কিতাবুল আছল ৪/১২; দুরারুল হুককাম ১/৪৫২; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৭; ফাতাওয়া খায়রিয়া ২/১৯৮

Sharable Link

মাহমুদুল হাসান - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৮২৮. Question

ক) যদি কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া যায় তবে তার বিধান কি? সেটা খাওয়া যাবে, নাকি ফেলে দিবে?

খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর সময় সাময়িক ঋণগ্রস্ত হয় তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে কি?


 


Answer

ক) কুরবানীর পশুর পেটে মৃত বাচ্চা পাওয়া গেলে বাচ্চার গোশত খাওয়া যাবে না। তা ফেলে দিতে হবে। তবে মূল পশুর গোশত খাওয়া যাবে এবং কুরবানী সহীহ হবে। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৬৭ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৮৭রদ্দুল মুহতার ৩/৬৫৬

প্রকাশ থাকে যেযে পশুর গর্ভ অল্প দিনের ঐ পশু দ্বারা কুরবানী করা অনুত্তম। আর বাচ্চা হওয়ার সময় নিকটবর্তী হলে সে পশু দ্বারা কুরবানী করা মাকরূহ।

খ) নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কুরবানীর দিনগুলোতে সাময়িক ঋণগ্রস্ত থাকে যা পরিশোধ করে দিলে তার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে না তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে না। আর যদি ঋণ আদায় করে দিলেও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২

Sharable Link

মাসুম বিল্লাহ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৩৮২৯ . Question

আমার মা গত ১০ আগস্ট ২০১৫ ট্রেন দুর্ঘটায় ইন্তেকাল করেন। তিনি ওয়ারিশদের জন্য ৬ শতক জমি রেখে গেছেন। তাঁর ওয়ারিশগণ হল- ১. স্বামী ২. এক পুত্র ও ৩. দুই কন্যা। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এর বণ্টন কীভাবে হবে?

 


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের স্থাবর-অস্থাবর সমুদয় সম্পদ থেকে প্রথমে তার কাফন-দাফনের খরচ (প্রয়োজন হলে) পরিশোধ করবে। অতপর তার কোনো ঋণ থাকলে তা আদায় করবে। এরপর তার কোনো বৈধ অসিয়ত থাকলে তা অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে পূর্ণ করবে।

এরপর অবশিষ্ট সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন করতে হবে। এক্ষেত্রে মৃতের স্বামী সমুদয় সম্পদের এক চতুর্থাংশ পাবে। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

وَ لَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ اَزْوَاجُكُمْ اِنْ لَّمْ یَكُنْ لَّهُنَّ وَلَدٌ فَاِنْ كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ مِنْۢ بَعْدِ وَصِیَّةٍ یُّوْصِیْنَ بِهَاۤ اَوْ دَیْنٍ.

তোমাদের স্ত্রীগণ যেসব (সম্পত্তি) রেখে যাবে তার অর্ধেক হল তোমাদের প্রাপ্য। যদি তাদের কোনো সন্তান না থাকে। কিন্তু যদি তাদের কোনো সন্তান বর্তমান থাকে তাহলে তারা যা কিছু ছেড়ে যাবে তার চার ভাগের এক ভাগ তোমাদের প্রাপ্য। অবশ্য যদি তারা অসিয়ত করে গিয়ে থাকে অথবা কোনো ঋণ রেখে গিয়ে থাকে তাহলে তা পরিশোধ করার পর এই ব্যবস্থা। -সূরা নিসা (৪) : ১২

আর স্বামীর অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পদ তার ছেলেমেয়েগণ এক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান’ হিসেবে লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

یُوْصِیْكُمُ اللهُ فِیْۤ اَوْلَادِكُمْ  لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْاُنْثَیَیْنِ.

আল্লাহ তাআলা তোমাদের সন্তান সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন যেএক পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান। -সূরা নিসা (৪) : ১১

সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মৃতের সমুদয় সম্পদ তার ওয়ারিশদের মাঝে নিম্নবর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত হবে-

১। মৃতের স্বামী - শতকরা ২৫ ভাগ

২। মৃতের পুত্র - শতকরা ৩৭.৫ ভাগ

৩। মৃতের বড় মেয়ে - শতকরা ১৮.৭৫ ভাগ

৪। মৃতের ছোট মেয়ে - শতকরা ১৮.৭৫ ভাগ

উল্লেখ্য যেউপরে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনার মায়ের শুধু ৬ শতাংশ সম্পত্তিই বণ্টনযোগ্য থাকে তবে তা থেকে আপনার বাবা অর্থাৎ মরহুমার স্বামী পাবেন ১৫০ অযুতাংশ এবং তার ছেলে পাবে ২২৫ অযুতাংশ। আর মরহুমার উভয় মেয়ের প্রত্যেকে পাবে ১১২.৫ অযুতাংশ করে।

-তাফসীরে কুরতুবী ৫/৫১; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৮০, ২/৮২; তাফসীরে তবারী ৩/৬২৪, ৩/৬১৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/৩০২, ৩০৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/২৬২, ২০/২৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৭৭০, /৭৭৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান - ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত

৩৮৩০. Question

আমাদের মাদরাসায় এমন অনেক সামান আছে, যেগুলো পূর্বের কোনো ছাত্র রেখে চলে গেছে। কিন্তু আর নিতে আসেনি। যেমন, ট্রাংক, লেপ-তোষক, কিতাব ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে কোনোটার মালিক জানা আছে। আবার কোনোটার মালিক জানা নেই। যে সকল সামানার মালিক জানা আছে তাদের সাথে মাদরাসার পক্ষ থেকে তা নিয়ে যাওয়ার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তারা তা নিতে আসছে না। আমার জানার বিষয় হল, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এ সামানাগুলো কী করবে? মালিক জানা থাকা না থাকার বিষয়ে কি কোনো পার্থক্য হবে? দলীলসহ জানালে উপকৃত হব।

 


Answer

যে সমস্ত জিনিসপত্রের মালিক জানা আছেমাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে যোগাযোগ করে তাঁকে নিয়ে যেতে বলবে। যদি তারা নিতে না চায় তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে কোনো গরিবকে দান করে দিবে।

আর যে সমস্ত সামানার মালিক জানা নেই এবং মালিকের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই সেগুলো মাদরাসা কর্তৃপক্ষ গরিব ছাত্রদেরকে দান করে দিতে পারবে।

উল্লেখ্য যেএকজন তালিবুল ইলম যে সময় প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে শুধু সে সময়ই প্রয়োজনীয় মাল-সামানা রাখতে পারবে। মাদরাসা থেকে চলে যাওয়ার পর সেখানে তার সামানা রাখা ঠিক নয়। কেননা এর দ্বারা অন্যদের অসুবিধা হয়।

অবশ্য অল্প সময়ের জন্য রাখলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সযত্নে রাখবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নিজের জিনিসপত্র মাদরাসায় রেখে দেওয়া অন্যায়।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৮৯; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৮৬৩১; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৮৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/২৭৯

Sharable Link

হাসান ফাইয়াজ - সিলেট

৩৮৩১ . Question

এক আলেমের বয়ানে শুনেছি, ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকিদা হল, আলওয়ালা ওয়াল বারা। তিনি এর ব্যাখ্যা করেছেন, বন্ধুত্ব ও হৃদ্যতা হবে শুধু মুসলমানদের সাথে। কাফেরদের সাথে কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা জায়েয নেই। আমার প্রশ্ন হল, কাফেরদের সাথে কি সব ধরনের সম্পর্ক রাখা নিষেধ? স্কুল-কলেজে আমাদের অনেক বিধর্মী বন্ধু-বান্ধব থাকে। তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা, খেলাধূলা করা কি শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম? নাকি সম্পর্কের বিশেষ কোনো প্রকারকে হারাম বলা হবে? উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

 

 

 

Answer

ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলনীতি হলমুমিনের ঘনিষ্ঠতা হবে মুমিনের সাথে। কোনো মুমিনের জন্য অমুসলিমের সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়া নিষিদ্ধ। প্রশ্নের আলওয়ালা ও আলবারা দ্বারা এটাই উদ্দেশ্য। আলওয়ালা অর্থ অন্তরঙ্গতা ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব আর আলবারা অর্থ সম্পর্কচ্ছেদ।

পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে,

وَ الْمُؤْمِنُوْنَ وَ الْمُؤْمِنٰتُ بَعْضُهُمْ اَوْلِیَآءُ بَعْضٍ

আর মুমিন পুরুষরা ও মুমিন নারীরা হচ্ছে একে অন্যের বন্ধু। -সূরা তাওবা (৯) : ৭১

অন্য আয়াতে আল্লাহ মুমিনদেরকে সম্বোধন করে বলেছেন,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الْكٰفِرِیْنَ اَوْلِیَآءَ مِنْ دُوْنِ الْمُؤْمِنِیْنَ .

হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিনদেরকে ছেড়ে কাফেরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। -সূরা নিসা (৪) : ১৪৪

এমনকি ঐ কাফের বা অমুসলিম যদি তার বাবা-পুত্রবা নিকটাত্মীয়ও হয় তারপরও তার সাথে অন্তরঙ্গতার সম্পর্ক রাখা বৈধ হবে না।

কুরআন কারীমে ইরশাদ হয়েছে,

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْۤا اٰبَآءَكُمْ وَ اِخْوَانَكُمْ اَوْلِیَآءَ اِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَی الْاِیْمَانِ  وَ مَنْ یَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ.

হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের পিতা ও ভাইদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো নাযদি তারা ঈমানের মোকাবেলায় কুফরকে প্রিয় মনে করে। তোমাদের মধ্য থেকে যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখবে বস্তুত তারাই বড় নাফরমান। -সূরা তাওবা (৯) : ২৩

সুতরাং কোনো মুসলমানের জন্য অমুসলিমকাফের-মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব গড়া বা হৃদ্যতা ও অন্তরঙ্গতার সম্পর্ক রাখা বৈধ নয়। তবে সহপাঠী হিসেবে বা প্রতিবেশী কিংবা কাজের সাথী হিসেবে সাধারণ ও সৌজন্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখা জায়েয আছে। তদ্রূপ তাদের  সাথে বৈধ খেলাধূলা করাও জায়েয আছে।

তাই কাফেরদের সাথে কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা জায়েয নয়- এত ব্যাপকভাবে বলা ঠিক নয়। তবে তাদের সাথে সাধারণ ও সৌজন্য সম্পর্ক রাখার ক্ষেত্রেও কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি-

ক) সব সময় নিজের ঈমান ও ইসলামের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা রক্ষার প্রতি পূর্ণ যতœবান থাকতে হবে।

খ) তাদের কোনো ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করা যাবে না।

গ) জীবনাচারের ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব বেশভূষা ও কৃষ্টিকালচারের অনুসরণ করা যাবে না।

Sharable Link