আমরা জানি, সুদী ব্যাংকগুলোতে চাকরি করা বৈধ নয়। কিন্তু এসব সুদী ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, যেগুলোতে জমা টাকার উপর নির্দিষ্ট হারে সুদ দেওয়া হয়, যেমন বিকাশ, রকেট, নগদ ও টিক্যাশ ইত্যাদি। এগুলোর এজেন্ট হয়ে ব্যবসা করা বৈধ হবে কি না? এ ধরনের ব্যবসা কি সুদী লেনদেনে সহযোগিতা নয়? জানিয়ে উপকৃত করবেন।
আমাদের দেশে প্রচলিত মোবাইল ব্যাংকিংগুলো মূলত ফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ফি-এর বিনিময়ে মানুষের অর্থ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দেওয়ার কাজেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সাধারণ ব্যাংকগুলোর মতো টাকার ব্যবসা করা এখানে মুখ্য বিষয় থাকে না। টাকা স্থানান্তর ছাড়াও এ কো¤পানিগুলো মোবাইল রিচার্জসহ আরও কিছু সেবা দিয়ে থাকে, যা না জায়েয নয়। তবে শুরুতে না থাকলেও পরবর্তীতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা থাকলে নির্দিষ্ট শর্তে গ্রাহকদের সুদ (যদিও তা খুবই নিম্ন হারে) দেয়া শুরু করেছে। একটি মুসলিম প্রধান দেশে এটি খুবই নিন্দনীয় কাজ। কারণ, এ পক্রিয়ার সাথে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ জনগণও স¤পৃক্ত রয়েছে। যাদের অধিকাংশই ধর্মভক্ত। যারা সুদ দেয়া-নেয়াকে হারাম বিশ্বাস করে সুদ থেকে বিরত থাকে। তাই সরকারের উচিত এসব কার্যক্রমে সুদের প্রক্রিয়া বন্ধ করে; বরং সেবার মূল্য বিশেষত ক্যাশআউট-এর ফি কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।
কিন্তু যেহেতু এখানে সুদ প্রদানের বিষয়টি একতরফা, তাই যে ব্যক্তি শুধু মোবাইল ব্যাংকিং-এর বৈধ সুবিধাগুলো গ্রহণের জন্য (যেমন, টাকা স্থানান্তর) তা করবে তার জন্য সেটি নাজায়েয হবে না। এমনিভাবে এ ধরনের লোকদের সহযোগিতার জন্য ঐ কো¤পানিগুলোর এজেন্ট হওয়াও জায়েয হবে। কারণ, এজেন্টদের মাধ্যমে পৃথক কোনো সুদী চুক্তি হয় না এবং তাকে পৃথকভাবে সুদের টাকা লেনদেনও করতে হয় না।
উল্লেখ্য, মোবাইল ব্যাংকিংগুলোতে জমা টাকার উপর যে সুদ প্রদান করা হয় তা বন্ধ রাখা বা না নেওয়ার সুযোগও রয়েছে। ধর্মপ্রাণ অনেক মুসলমান এ সুযোগ ব্যবহার করে সুদ গ্রহণ থেকে বিরতও থাকছেন। তাই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্টগণ গ্রাহকদের এ বিষয়ে সচেতন করতে পারেন। সম্ভব হলে দোকানে তা লিখেও রাখতে পারেন।