রিফাত - কুমিল্লা

৬২২১. Question

কারো চোখ ওঠার কারণে চোখ দিয়ে যদি পানি পড়ে, তাহলে কি ওযু ভেঙে যাবে? জানালে উপকৃত হব।

Answer

চোখ ওঠা অবস্থায় চোখ দিয়ে যে পানি বের হয় তা নাপাক নয়। কেননা তা চোখের সাধারণ পানির হুকুমে। তাই তা বের হওয়ার কারণে ওযু ভাঙবে না।

অবশ্য চোখের ভেতর থেকে যদি পুঁজ বের হয়, কিংবা চোখের ভেতর ক্ষত হয়ে সেখান থেকে পানি বের হয় এবং তা চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে তাহলে ওযু ভেঙে যাবে।

ফাতহুল কাদীর ১/১৬৪; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৩৭৮; আলবাহরুর রায়েক ১/৩২; রদ্দুল মুহতার ১/১৪৭; ফাতাওয়া রশীদিয়া, পৃ. ২৬৯

Sharable Link

যয়নব বেগম - টঙ্গিবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ

৬২২২. Question

আমার প্রতি মাসে ৩ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত আট দিন হায়েয আসে। কিন্তু এ মাসে আমার ২ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ৮ তারিখ পর্যন্ত হায়েয আসে। ৯ তারিখ রক্ত বন্ধ হওয়ার পর আমি গোসল করে নামায পড়া শুরু করি। কিন্তু দুই দিন পর ১২ তারিখ থেকে আবার রক্ত শুরু হয় এবং ১৫ তারিখ পর্যন্ত রক্ত চালু থাকে। এই সময় আমি আবার নামায পড়া বন্ধ রাখিহুযুরের কাছে জানতে চাই, এই মাসে আমার কতদিন হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ৯ তারিখ স্রাব বন্ধ হওয়ার পর যেহেতু ১২ তারিখ থেকে আবার স্রাব চালু হয়েছে তাই ৯ তারিখ থেকে ১২ তারিখ মাঝের এই তিন দিনও স্রাব চালু থাকার হুকুমে হবে। সুতরাং এখন আপনার পূর্বের অভ্যাস অনুযায়ী তিন তারিখ থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত মোট আট দিন হায়েয ধরা হবে। আর বাকি দিন অর্থাৎ প্রথম যেদিন রক্ত দেখা গেছে সেদিন (দুই তারিখ) এবং ১১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ ইস্তিহাযা গণ্য হবে। অর্থাৎ এ সময়ের নামায পড়তে হবে। সুতরাং ঐ দিনগুলোতে নামায পড়ে না থাকলে তার কাযা করে নিতে হবে।

কিতাবুল আছল ২/১৩; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১৫৪, ৩/১৭৮বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫৮; রদ্দুল মুহতার ১/২৯০

Sharable Link

হারুন - জামালপুর

৬২২৩. Question

আলহামদু লিল্লাহ, বালেগ হওয়ার পর থেকে আমি নামায জামাতেই পড়ার চেষ্টা করছি। বর্তমানে শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ, তবুও নামায জামাতেই পড়ছি। কিন্তু অনেক কষ্ট হয়, প্রথম রাকাত দাঁড়িয়ে পড়ি। পরবর্তী রাকাতগুলো বসে এবং ইশারায় পড়ি। প্রশ্ন হচ্ছে, এমতাবস্থায় নামায নিজ ঘরে পড়ার অনুমতি আছে কি না? আর নিজ ঘরে পড়লে পূর্বের ন্যায় জামাতের সওয়াব পাব কি না?

Answer

পুরুষের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে ফরয নামায আদায় করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিধান। শরয়ী কোনো ওযর ছাড়া মসজিদের জামাত ছাড়া যাবে না। হাদীস শরীফে ওযর ছাড়া মসজিদের জামাত তরক করার ব্যাপারে কঠোর ধমকি এসেছে।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ، فَيُحْطَبَ، ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلاَةِ، فَيُؤَذَّنَ لَهَا، ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ، ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ، فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُهُمْ، أَنَّهُ يَجِدُ عَرْقًا سَمِينًا، أَوْ مِرْمَاتَيْنِ حَسَنَتَيْنِ، لَشَهِدَ العِشَاءَ.

অর্থাৎ যার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, ¦ালানী কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দেই। অতঃপর নামাযের আযান দেয়ার নির্দেশ প্রদান করি। এরপর কোনো ব্যক্তিকে নামায পড়ানোর নির্দেশ করি এবং আমি ঐসকল লোকদের নিকট যাই, (যারা নামাযে শামিল হয়নি) এবং তাদের ঘর জ¦ালিয়ে দেই। সে মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, যদি তাদের কেউ জানত যে, সে সামান্য গোশতসহ একটি মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দুটি খুর পাবে তাহলেও সে (এই তুচ্ছ বস্তু পাওয়ার জন্য) এশার জামাতেও (কষ্ট করে) হাযির হত। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৪)

আরেক হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন

لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ، وَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.

আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল, অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থকে দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে নামাযের জন্য চলে আসত।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সুনানুল হুদা (হেদায়েতের পথ ও পন্থা) শিক্ষা দিয়েছেন। ঐসকল সুনানুল হুদার একটি হল, মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করা, যেখানে আযান দেয়া হয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৫৪)

অবশ্য অসুস্থ লোকদের জন্য মসজিদের জামাতে শরীক হওয়ার ক্ষেত্রে ছাড়ও রয়েছে। অতএব আপনি যদি সহনীয় পর্যায়ের কষ্ট করে মসজিদে যাতায়াত করতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য মসজিদে গিয়ে জামাতে নামায পড়া সমীচীন হবে। তবে যে ওয়াক্তে বেশি কষ্ট অনুভব হবে, ঐ ওয়াক্তে ঘরে নামায পড়ে নিতে পারবেন।

আর যদি মসজিদে যাতায়াতের কষ্ট সহনীয় পর্যায়ের না হয় অথবা মসজিদে যাতায়াত করলে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত ঘরে নামায পড়ার অনুমতি রয়েছে। আর এক্ষেত্রে যদি জামাতে নামায পড়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অসুস্থতার কারণে ঘরে নামায আদায় করা হয় তাহলে আল্লাহর দরবারে পূর্বের ন্যায় জামাতের সওয়াব পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।

আবু মূসা আশয়ারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন

إِذَا مَرِضَ العَبْدُ، أَوْ سَافَرَ، كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا.

অর্থাৎ যখন বান্দা অসুস্থ হয়, কিংবা সফরে থাকে তখন তার জন্য মুকীম ও সুস্থ অবস্থার আমলের মতো নেকী লেখা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ২৯৯৬)

আলমুহীতুল বুরহানী ২/২১০; আলমুহীতুর রাযাবী ১/২৮৮; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৩৩৯; রদ্দুল মুহতার ১/৫৫৪

Sharable Link

আফযাল - ঢাকা

৬২২৪. Question

মুহতারাম মুফতী সাহেবের কাছে ঈদের নামায সংক্রান্ত দুটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাচ্ছি

(ক) কেউ যদি ঈদের নামাযে ইমামকে প্রথম রাকাত বা দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে পায়, তাহলে এক্ষেত্রে তার জন্য করণীয় কী?

(খ) কেউ যদি ঈদের নামাযে এক রাকাত না পায় তাহলে সে বাকি নামায কীভাবে আদায় করবে?

Answer

(ক) ঈদের নামাযে ইমামকে প্রথম রাকাত বা দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে পেলে করণীয় হল, তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করার পর রুকুতে যাবে, অতঃপর রুকুতেই হাত উঠানো ব্যতীত অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। এক্ষেত্রে তিন তাকবীর বলার পর রুকুর তাসবীহ পড়ার সময় পেলে তা পড়ে নেবে। আর তিন তাকবীর পূর্ণ করার আগে কিংবা তাকবীর বলার পর তাসবীহ পড়ার আগে ইমাম রুকু থেকে উঠে গেলে সেও উঠে যাবে। অবশ্য নামাযে শরীক হওয়ার পর যদি প্রবল ধারণা হয় যে, দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলে ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হতে পারবে, তাহলে এক্ষেত্রে তাকবীরে তাহরীমা বলার পর দাঁড়িয়েই অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলে নেবে।

(খ) কেউ যদি ঈদের নামাযে ইমামের সাথে এক রাকাত না পায় তাহলে সে ইমামের সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে প্রথমে কেরাত পড়বে। অতঃপর রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। এরপর বাকি নামায স্বাভাবিক নিয়মে শেষ করবে। -কিতাবুল আছল ১/৩২২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬২২; ফাতহুল কাদীর ২/৪৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৪৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫১; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৫৮২

Sharable Link

মুহাম্মাদ হামিদুল্লাহ - ফেনী

৬২২৫. Question

হুজুর আমি আলহামদু লিল্লাহ বালেগ হওয়ার পর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায নিয়মিত আদায় করার চেষ্টা করছি। কিন্তু মাঝে মাঝে অলসতার কারণে কিছু নামায পড়া হয়নি। এখন সবগুলো নামায কাযা করার ইচ্ছা করেছি। অথচ দিন-তারিখও স্মরণে নেই এবং কত ওয়াক্ত পড়া হয়নি তাও নির্দিষ্টভাবে জানা নেই। অতএব হযরতের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমি কীভাবে নামাযগুলো কাযা করব? জানালে উপকৃত হব।

Answer

ছুটে যাওয়া নামাযগুলোর দিন-তারিখ স্মরণ না থাকলে তা কাযা করার ক্ষেত্রে এভাবে নিয়ত করবেন যে, আমার জীবনের অনাদায়ী প্রথম ফজরের ফরয আদায় করছি। তদ্রƒপ অনাদায়ী প্রথম যোহরের ফরয নামায আদায় করছি। এভাবে অন্যান্য নামাযের ক্ষেত্রে নিয়ত করবেন। যখনি কাযা আদায় করবেন, এভাবে নিয়ত করে নেবেন।

আর কত ওয়াক্ত নামায কাযা হয়েছে এর সংখ্যা যেহেতু এখন নির্দিষ্টভাবে আপনার জানা নেই, তাই এক্ষেত্রে প্রবল ধারণা অনুযায়ী পড়ে নেবেন।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/৮২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪৫২; মাজমাউল আনহুর ৪/৪৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৭৬

Sharable Link

মামুনুর রশীদ - কুষ্টিয়া

৬২২৬. Question

আমার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। আমি ঢাকা গাবতলীতে থাকি। কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে ফোন আসে, বাবার অসুস্থতা খুব বেড়ে গেছে; তাই আমাকে বাড়ি যেতে হবে। আমি বিকাল চারটার দিকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হই। জ্যামের কারণে সাভার পৌঁছতে পৌঁছতে মাগরিবের সময় হয়ে যায়। এর মধ্যে বাড়ি থেকে ফোন আসে, তারা বাবাকে নিয়ে ঢাকায় আসছেন; তাই আমাকে বাড়ি যেতে হবে না। এজন্য আমি গাড়ি থেকে নেমে নামায পড়ার জন্য একটি মসজিদে যাই। গাড়িতে থাকার কারণে আসর নামাযও পড়া হয়নি। এখন আসর নামায কত রাকাত পড়তে হবে এ নিয়ে সংশয়ে পড়ে যাই। তাই তখন ধারণা করে আসরের নামায দুই রাকাত কাযা করে নিই। এরপর মাগরিবের নামায আদায় করি। হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, উক্ত আসরের নামায দুই রাকাত কাযা করা কি সহীহ হয়েছে, নাকি তা চার রাকাত কাযা করতে হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সফরের নিয়ত বাতিল করার আগ পর্যন্ত আপনি মুসাফির ছিলেন। সুতরাং আপনি যেহেতু মাগরিবের সময় সফর বাতিল করার নিয়ত করেছেন তাই আসরের শেষ সময় পর্যন্ত আপনি মুসাফির ছিলেন। অতএব উক্ত আসর নামাযের কাযা দুই রাকাত পড়া আপনার জন্য ঠিক হয়েছে। কেননা সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায কাযা হয়ে গেলে মুকীম অবস্থাতেও দুই রাকাত কাযা পড়তে হয়।

উয়ূনুল মাসায়িল, পৃ. ২৮; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ, পৃ. ২/১৬০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪১৬; রদ্দুল মুহতার ২/১২২

Sharable Link

রাশেদ শাহরিয়ার - জামালপুর

৬২২৭. Question

বিভিন্ন এলাকায় প্রচলন আছে, মৃত ব্যক্তির দাফনের সময় যারা উপস্থিত থাকে, তারা সকলে তিনবার উভয় হাত ভরে মাটি নিয়ে কবরে ঢালে। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, এভাবে কবরে তিনবার মাটি দেওয়ার কাজটি কি শরীয়তসম্মত?

Answer

মৃত ব্যক্তির দাফনের সময় উপস্থিত লোকদের জন্য মৃতের মাথার দিক থেকে কবরে তিনবার উভয় হাত দিয়ে মাটি ঢালা মুস্তাহাব। হাদীস শরীফে এসেছে, আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى عَلَى جِنَازَةٍ، ثُمَّ أَتَى قَبْرَ الْمَيِّتِ، فَحَثَى عَلَيْهِ مِنْ قِبَلِ رَأْسِهِ ثَلَاثًا.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তির জানাযার নামায আদায় করেন। এরপর মৃতের কবরের কাছে আসেন এবং তার মাথার দিক থেকে তিনবার মাটি ঢেলে দেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, বর্ণনা ১৫৬৫)

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১১৮৩৭; আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৩/৪১০; আযযিয়াউল মানাবী ৩/৫০৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬; ইলাউস সুনান ৮/৩১৬

Sharable Link

হুমায়রা জান্নাত - বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ

৬২২৮. Question

আমি গত নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টার ফ্লাইটে ওমরার উদ্দেশ্যে আমার স্বামীর সাথে সৌদি আরব রওনা হই। কিন্তু মক্কা পৌঁছার আগেই আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়। তিন দিন অপেক্ষা করার পর ঔষধ খেয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখি এবং ওমরা আদায় করি। এরপর ২৩ তারিখে পুনরায় ফ্লাইটে আমরা দেশে ফিরি। কিন্তু ঔষধ বন্ধ রাখার কারণে ২৪ তারিখে পুনরায় ব্লাড আসে।

উল্লেখ্য, প্রতিমাসে সাধারণত নয় দিন আমার ঋতুস্রাব হয়।

এখন হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, আমার উক্ত ওমরা সহীহ হয়েছে কি না? এবং এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? বিস্তারিত জানালে খুশি হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ২৪ তারিখে পুনরায় রক্ত আসার কারণে মাঝের যে দিনগুলোতে রক্ত বন্ধ ছিল, সে দিনগুলোও হায়েয হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং আপনার ওমরা হায়েয অবস্থায় আদায় হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। তাই আপনাকে একটি জরিমানা দম দিতে হবে। আর দম আদায়ের পদ্ধতি হল, অন্তত এক বছর বয়সী ছাগল-ভেড়া বা দুম্বা হেরেমের এলাকায় জবাই করা।

প্রকাশ থাকে যে, সেখানে অবস্থান করছে, এমন কারো মাধ্যমেও দমের পশু যবাই করানো যাবে। দম আদায়ের জন্য নিজের উপস্থিতি আবশ্যক নয়।

আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৫৩; ফাতহুল কাদীর ১/১৫৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৯০ ও ২/৫৫১; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী, পৃ. ৩৯২

Sharable Link

নাঈম - ঢাকা

৬২২৯. Question

আমার আব্বা গত বছর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আব্বার ওপর হজ্ব ফরয ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে জীবিত অবস্থায় তিনি হজ্বে যেতে পারেননি। তাই মৃত্যুর আগে তিনি বলে গেছেন, আমার মৃত্যুর পর অবশ্যই আমার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে প্রথমে বদলী হজ্বের ব্যবস্থা করবে। এরপর কিছু বাকি থাকলে তোমরা ভাগ করে নেবে। আব্বার মৃত্যুর পর আমরা হিসাব করে দেখেছি যে, তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির পরিমাণ বিশ লক্ষ টাকা। এখন বাংলাদেশ থেকে কাউকে হজ্বে পাঠালে খরচ হবে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ টাকা। কিন্তু আবার কোনো কোনো ওয়ারিশ বলছেন, এত টাকা খরচ করে কাউকে হজ্বে না পাঠিয়ে (সৌদি আরব অবস্থানরত) তোমার বন্ধু রফীককে বল, তোমার আব্বার পক্ষ থেকে হজ্ব করতে।

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, আমি একজনের কাছে শুনেছি, বদলী হজ্ব বদলী হজ্বের ওসিয়তকারীর নিজ দেশ থেকে করতে হয়। এই কথাটি কি সঠিক? এবং আমার বন্ধু রফীক যদি সৌদি থেকে আমার আব্বার বাদলী হজ্ব করে, তাহলে কি বদলী হজ্ব আদায় হবে? আশা করি সঠিক উত্তর জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

কেউ যদি বদলী হজ্বের ওসিয়ত করে যায় আর তার মীরাস সম্পত্তির একতৃতীয়াংশ দ্বারা তার নিজ দেশ থেকে বদলী হজ্ব করা সম্ভব হয়, তাহলে ওয়ারিশদের ওপর জরুরি হল, ওসিয়তকারীর নিজ দেশ থেকেই কাউকে হজ্বে প্রেরণ করা। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার বদলী হজ্বের জন্য বাংলাদেশ থেকেই কাউকে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে সৌদি থেকে কাউকে দিয়ে বদলী হজ্ব করালে তা দ্বারা আপনার পিতার বদলী হজ্ব আদায় হবে না।

বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭০; আলমুহীতুর রাযাবী ২/২৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬৫৬; আলমাসালিক ফিল মানাসিক ২/৯০৫; রদ্দুল মুহতার ২/৬০৪

Sharable Link

আমানুল ইসলাম - ছাগলনাইয়া, ফেনী

৬২৩০. Question

গত মাসে আমার আব্বা মারা যান। জীবদ্দশায় তার ওপর হজ্ব ফরয হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তিনি তা আদায় করতে পারেননি। তাই মৃত্যুর পূর্বে তিনি তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করার ওসিয়ত করে যান। কিন্তু তার রেখে যাওয়া সমুদয় সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশের দ্বারা হজ্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না; আরো ১ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। তাই আমার বড় ভাই বলল, আমি বাকি টাকা নিজ থেকে দিয়ে আগামী বছর আব্বার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করব।

মুফতী সাহেবের কাছে জানার বিষয় হল, বড় ভাই বাকি টাকা নিজ থেকে দিয়ে আব্বার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করার দ্বারা আব্বার ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাবে কি না?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হজে¦র অধিকাংশ খরচ যেহেতু আপনার পিতার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকেই দেওয়া হচ্ছে, তাই এক্ষেত্রে কিছু টাকা আপনার ভাই দিলেও আপনার পিতার বদলী হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। কেননা বদলী হজ্বের ক্ষেত্রে যার পক্ষ থেকে বদলী করা হচ্ছে অধিকাংশ খরচ তার সম্পদ থেকে হলেই সহীহ হয়ে যায়।

আলমাবসূত, সারখসী ৪/১৪৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬০; আলমুহীতুর রাযাবী ২/২৬৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩১১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০০; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ৩২৩

Sharable Link

আলতাফ হোসাইন - আরশিনগর, কেরানীগঞ্জ

৬২৩১. Question

জনৈক বক্তি তামাত্তু হজ্বের কুরবানী আদায়ের পর হলক করার আগেই হাতপায়ের সবগুলো নখ কেটেছে। এরপর হলক করেছে। প্রশ্ন হল, তার এই কাজের হুকুম কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

Answer

হলক করার আগে নখ কাটার কারণে ঐ ব্যক্তির ওপর একটি জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে। কেননা হজ্বের অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলেও হলক করা বা চুল ছোট করা পর্যন্ত ইহরামের হুকুম বহাল থাকে। যেহেতু ঐ ব্যক্তি হলক করার পূর্বে নখ কেটেছে, তাই ইহরাম অবস্থায় নখ কাটার কারণে তার ওপর জরিমানা দম ওয়াজিব হয়েছে।

এখন তার কর্তব্য হল, হেরেমের এলাকায় একটি দম অর্থাৎ ছাগল বা দুম্বা জবাইয়ের ব্যবস্থা করা।

আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩২৯; আলমুহীতুর রাযাবী ২/১৯৩; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ১৭৪; মানাসিকে মোল্লা আলী আলকারী, পৃ. ২২৮

Sharable Link

শাপলা আক্তার - রাজশাহী

৬২৩২. Question

আমার ছোট ভাইয়ের একটি ফলের বাগান আছে। আমার দুই ছেলে মাঝেমাঝে সেখান থেকে ফল পেড়ে খায়। আমার ভাই ওদেরকে ফল পাড়তে নিষেধ করে। আমিও নিষেধ করি; কিন্তু ওরা আমাদের কথা শোনে না। কিছুদিন আগে আমার ভাই আমার বাসায় বেশ কিছু ফল নিয়ে আসে। তখন সে আমার ছেলেদের ফল পাড়ার বিষয়ে কথা তোলে। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আমাদের মাঝে অনেক বাক-বিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে আমি বলে ফেলি যে, তুই এই ফল নিয়ে যা। আমি তোর গাছের ফল খাব না। তোর এই ফল আমার জন্য হারাম। এই কথা বলার পর সে আমার কাছে মাফ চাইতে শুরু করে এবং খুব অনুনয়-বিনয় করে উক্ত ফলগুলো রেখে যায়। পরবর্তীতে আমিও এই ফল খাই। হুজুরের কাছে জানতে চাই, তোর এই ফল আমার জন্য হারাম’— আমার এই কথা বলার পর উক্ত ফল খাওয়াতে কোনো অসুবিধা হয়েছে? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান জানতে চাই।

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী তোর এই ফল আমার জন্য হারাম’— এই কথা বলার দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত

أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ فِي الْحَرَامِ: يَمِينٌ يُكَفِّرُهَا.

তিনি বলেন, হালাল কিছুকে নিজের ওপর হারাম করা কসমের অন্তর্ভুক্ত। এরপর সেই কাজ করলে কাফফারা দিতে হবে। (সহীহ মুসলিম, বর্ণনা ১৪৭৩)

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ কথা বলার পর উক্ত ফল খাওয়ার কারণে আপনার ওপর একটি কাফফারা আদায় করা ওয়াজিব হয়েছে। আর এক্ষেত্রে কাফফারা হল, দশজন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খাবার খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দেওয়া। আর যদি এগুলোর সামর্থ্য না রাখেন, তাহলে লাগাতার তিন দিন রোযা রাখতে হবে।

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৮৪৯৬; আলমাবসূত, সারাখসী ৮/১৩৪; ফাতহুল কাদীর ৪/৩৭১; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯২; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৫৮

Sharable Link

নজরুল ইসলাম - নাটোর

৬২৩৩. Question

আমাদের গ্রামের মসজিদে নামাযে মুসল্লীদের জায়গার সংকুলান হচ্ছে না। বিশেষ করে জুমার নামাযে মুসল্লীদের খুব কষ্ট হয়। তাই মসজিদ কমিটি মসজিদ সম্প্রসারণের ফিকির করছেন। এজন্য মসজিদের কিছু জমির প্রয়োজন। মসজিদের পাশেই আমাদের দুই ভাইয়ের একটি যৌথ মালিকানাধীন জমি আছে। এখন হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, এই জমি বণ্টনের আগে আমি কি শুধু আমার নিজের অংশ মসজিদের জন্য ওয়াকফ করতে পারব? যদি তা সহীহ না হয়, তাহলে আমরা দুই ভাই যদি উক্ত জমি বণ্টন না করে পরস্পর সম্মতিতে উক্ত পুরো জমি ওয়াকফ করে দিই তা কি বৈধ হবে?

 

Answer

যৌথ মালিকানাধীন জমি বণ্টনের আগে নিজের অংশ ওয়াকফ করা যায় না। তাই প্রশ্নোক্ত জমি বণ্টনের আগে নিজের অংশ ওয়াকফ করা সহীহ হবে না। অবশ্য আপনাদের যৌথ মালিকানাধীন উক্ত জমিটি বণ্টন না করে যদি উভয়ে পুরো জমিই মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দেন, তাহলে ওয়াকফ সহীহ হয়ে যাবে।

আহকামুল আওকাফ, খাস্সাফ, পৃ. ২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪১৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়্যা, পৃ. ৯১; ফাতহুল কাদীর ৫/৪২৬, ৪২৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৪৮

Sharable Link

নূরুল হুদা হাওলাদার - কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ

৬২৩৪. Question

আমাদের গ্রামের ওয়াকফিয়া ঈদগাহটি বেশ বড়। সেখানে ঈদের নামায ও জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। সারা বছর জায়গাটি খালি পড়ে থাকে। গ্রামের কেউ কেউ ধানের মৌসুমে সেখানে ধানের খড় শুকাতে দেয়, আবার কেউ কেউ মাঠের এক পাশে খড়ের পালাও দেয় এবং শীতকালে গ্রামের কিছু ছেলেরা সেখানে ব্যাডমিন্টনের মাঠ বানিয়ে রাতে ব্যাডমিন্টন খেলে।

মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, ঈদগাহে এসকল কাজ করা নাজায়েয হবে কি? আশা করি বিষয়টি জানাবেন।

Answer

ওয়াকফকৃত ঈদগাহকে খেলার মাঠ বানানো যাবে না। শরীয়তের দৃষ্টিতে এ ধরনের ঈদগাহ অনেক ক্ষেত্রে মসজিদের মত সম্মানিত। তাই সেখানে এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যার দ্বারা ঐ স্থানের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। এমনিভাবে ওয়াকফিয়া ঈদগাহে খড় শুকানো, খড়ের পালা দেওয়া এবং এ ধরনের অন্যান্য ব্যক্তিগত ব্যবহার থেকেও বিরত থাকা উচিত।

আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়েখ, পৃ. ৫৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/৩৬৮; আদ্দুররুল মুখতার ৪/৪৩৩

Sharable Link

মুয়াজ - মুলাদী, বরিশাল

৬২৩৫. Question

আমাদের মসজিদে অনেকগুলো মুসহাফ (কুরআনের কপি) আছে, যা বিভিন্ন সময় মানুষ মসজিদের জন্য দান করেছেন। তিলাওয়াতের জন্য বাসায় একটি মুসহাফের খুব প্রয়োজন।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, তিলাওয়াতের জন্য একটি মুসহাফ মসজিদ থেকে বাসায় নিয়ে যেতে পারব কি না? জানালে উপকৃত হব।

Answer

মসজিদে যেসকল মুসহাফ দান করা হয়, তা মসজিদের ওয়াকফিয়া সম্পদের অন্তভুর্ক্ত। সুতরাং তা মসজিদে তিলাওয়াতের জন্য নির্ধারিত থাকবে। মসজিদের বাইরে বাসায় বা অন্যত্র নেওয়া যাবে না।

খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪১৮; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/২৫৯; আননাহরুল ফায়েক ৩/৩১৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ২/৫৩৯; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬৫

Sharable Link

জাহিদ হাওলাদার - বরিশাল

৬২৩৬. Question

আলহামদু লিল্লাহ, আমাদের মসজিদ-মাদরাসা কমপ্লেক্সের ৮ তলা ভবনের কাজ শেষ হয়েছে। জায়গা সংকীর্ণ হওয়ার কারণে নির্মাণের সময়ই মুতাওয়াল্লীসহ আমরা মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত করি যে, ভবনটির দ্বিতীয় তলা স্থায়ীভাবে মসজিদ থাকবে। সে হিসেবে দ্বিতীয় তলা মসজিদের রূপ দিয়েই তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে জুমাসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতে আদায় করা হচ্ছে এবং সকল মুসল্লীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

জানার বিষয় হল, আমাদের উক্ত মসজিদ শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে কি না? এবং সেখানে কেউ ইতিকাফ করলে তার ইতিকাফ শুদ্ধ হবে কি না? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

ভবনটির দ্বিতীয় তলা যেহেতু স্থায়ীভাবে মসজিদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এটি শরয়ী মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে এবং তাতে ইতিকাফ করা সহীহ হবে।

প্রকাশ থাকে যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে মসজিদ নির্মাণের স্বীকৃত পদ্ধতি হল, জমিনসহ ভবনের ওপর-নিচ পুরোটাই মসজিদের জন্য পৃথকভাবে বরাদ্দ থাকা। কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে ভবনের কোনো তলা স্থায়ীভাবে মসজিদের জন্য বরাদ্দ করলে তাও শরয়ী মসজিদের অন্তভুর্ক্ত হয়ে যায় এবং তাতে মসজিদের সকল বিধিবিধানও প্রযোজ্য হয়।

 

আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১২৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৭২; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬১; আলইসআফ, পৃ. ২১৭

Sharable Link

মিন্টু মিয়া - বগুড়া

৬২৩৭. Question

বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে আমার একটি ফার্মেসী আছে। বেচা-কেনা আলহামদু লিল্লাহ ভালোই হয়। আমরা শুধু নগদ বিক্রি করি। বাকি বিক্রি করি না। আমাদের অনেক কাস্টমার আছে, যারা নগদ টাকা দিয়ে ঔষধ কিনে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রুগী সুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে বা অন্য কোনো কারণে কিছু ঔষধ তাদের প্রয়োজন পড়ে না। তারা সেসব ঔষধ আমাদের কাছে নিয়ে আসলে আমরা যে দামে বিক্রি করেছি তার চেয়ে ২০% কম মূল্যে তাদের কাছ থেকে ক্রয় করে থাকি। এক্ষেত্রে আমাদের মাঝে নতুন ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি হয়ে থাকে। এখন হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, আমাদের প্রশ্নোক্ত ক্রয়-বিক্রয় বৈধ হবে কি না? জানালে উপকৃত হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ক্রেতাগণ আপনাদের কাছে ঔষধগুলো মূলত ফেরত দিতে আসেন; বিক্রি করতে নয়, তাই তাদের সাথে নতুন ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি না করে পূর্বের মূল্যে সেগুলো ফেরত নেওয়াই নৈতিক কর্তব্য।

হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

مَنْ أَقَالَ نَادِمًا بَيْعَتَه، أَقَالَ اللهُ عثْرَتَه يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে অনুতপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে যে চুক্তি প্রত্যাহার করল আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন। (সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ৫০৩৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৬০)

পণ্য ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে মূল্য কম দিতে পারবে না। অবশ্য এক্ষেত্রে পণ্যগুলো পুনরায় তার থেকে কিনে নেওয়া জায়েয আছে। তখন পূর্বের বিক্রিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে ক্রয় করাও বৈধ হবে।

আলমুহীতুর রাযাবী ২/৫২২; ফাতহুল কাদীর ৬/৬৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৮২ ও ৬/১০০; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১০৪

Sharable Link

মুহাম্মদ আবু তলহা - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬২৩৮. Question

তৈরি হচ্ছে এমন বিল্ডিং-এ ফ্ল্যাট বুকিং দেওয়াতে সমস্যা আছে কি? আমি একটা ফ্ল্যাট বুকিং দিতে চাচ্ছি, যেটা হবে সাত তলায়। কিন্তু কাজ হয়েছে শুধু প্রথম তলার। ৩০% টাকা এখন, ৪০% টাকা ২৬ মাসে ও ৩০% টাকা শেষে ফ্ল্যাট বুঝে নেওয়ার সময় দিব। এই ধরনের চুক্তিতে শরীয়তের কোনো আপত্তি আছে কি? কারণসহ বিস্তারিত বুঝিয়ে বলার অনুরোধ রইল।

Answer

বিল্ডিং প্রস্তুত হওয়ার আগে ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয়ের এ পদ্ধতি শরীয়তের ইস্তিসনা চুক্তির অন্তভুর্ক্ত। ইস্তিসনা জায়েয হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন এক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের সাইজ, কোন্ তলায় ও কোন্ পাশে হবে, ভেতরের ড্রয়িং কেমন হবে, কী কী মালামাল ও ফিটিংস ব্যবহার হবে এবং এ ধরনের সংশ্লিষ্ট আরও অন্যান্য বিষয়। এই শর্তগুলো কোনো নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে জেনে নিতে হবে এবং বেশি নিরাপদ হবে, যদি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিপত্রটি (সেলডিড) কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমকে দেখিয়ে ঠিক করে নেওয়া হয়।

কিতাবুল আছল ৩/৪৩৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৩৮বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৭; আদ্দুররুল মুখতার ৫/২২৩

Sharable Link

মুহাম্মদ তাশরীফ - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬২৩৯. Question

কিছুদিন আগে আমি আমার এক বন্ধুকে ব্যবসা করার জন্য মুযারাবা হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিই। আমাদের এলাকার নিয়ম অনুযায়ী আমি চাচ্ছি, তার কাছ থেকে ওই পাঁচ লক্ষ টাকার বিপরীতে তার কোনো সম্পদ বা জমির কোনো দলীলপত্র বন্ধক হিসেবে রাখতে।

জানার বিষয় হল, মুযারাবায় মূলধনের বিপরীতে অথবা ওই ব্যবসা নিষ্পত্তির সময় মূলধন বুঝিয়ে দিতে কোনো ধরনের সীমালংঘন বা অবহেলা পাওয়া যাওয়ার আশংকায় কোনো কিছু বন্ধক রাখা যাবে কি?

Answer

মুযারাবা ব্যবসায় মূলধন মুযারিবের কাছে আমানত হিসেবে থাকে। আর আমানতের বিপরীতে কোনো কিছু বন্ধক রাখা জায়েয নয়। সুতরাং মুযারাবার মূলধনের বিপরীতে বন্ধক রাখা যাবে না।

আলমুহীতুর রাযাবী ৮/৩১২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২০৭

Sharable Link

শাফায়াত হোসেন - মোমেনশাহী

৬২৪০. Question

আমার চাচাতো ভাই এক কোম্পানির ডিলার। কোম্পানি তাকে অফার করেছে, পণ্যের মূল্য বাবদ কোম্পানিকে এক লাখ টাকা অগ্রিম দিলে কোম্পানি তাকে ছয় হাজার টাকা কমিশন দেবে। এখন তার কাছে কোম্পানিকে দেওয়ার মতো ৮০ হাজার টাকা আছে। তাই সে আমাকে বলেছে, তুমি আমাকে ২০ হাজার টাকা দাও। যাতে আমি কোম্পানিকে এক লাখ টাকা পুরা করে দিতে পারি। আর এজন্য কোম্পানি আমাকে যে ছয় হাজার টাকা কমিশন দেবে তা থেকে তোমাকে দুই হাজার টাকা দেব। তার কথামতো আমি তাকে ২০ হাজার টাকা দিই। এখন আমার জন্য আমার দেওয়া ২০ হাজার টাকার অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা নেওয়া বৈধ হবে কি না?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনি কোম্পানির ডিলারকে যে চুক্তিতে ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি আসলে ঋণ। তাই এক্ষেত্রে যে পরিমাণ টাকা আপনি তাকে দিয়েছেন শুধু ওই পরিমাণ টাকাই তার থেকে ফেরত নিতে পারবেন। এর অতিরিক্ত কিছু নিলে তা সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে; যা সুস্পষ্ট হারাম। 

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২১০৭৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৫১; ফাতহুল কাদীর ৬/৩৫৫আলবাহরুর রায়েক ৬/১২২; ইলাউস সুনান ১৪/৫১৪

Sharable Link

ফয়সাল - ঢাকা

৬২৪১. Question

আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে একটি ব্যাচেলর মেসে ভাড়া থাকি। আমরা ভাড়া নেওয়ার আগ থেকেই মেসের একটি কাচের জানাল ভাঙা ছিল। এতদিন তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু এখন শীতকাল হওয়ায় ভাঙা জানালাটি দিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা বাতাস আসতে থাকে। জানালাটি মেরামত করার জন্য মালিককে অনেকবার বলার পরও তিনি কোনো ভ্রম্নক্ষেপ করছেন না দেখে আমরা তার অনুমতি ছাড়াই নিজেদের টাকা খরচ করে সেটি মেরামত করে ফেলি। পরবতীর্ মাসের ভাড়া দেওয়ার সময় জানালা মেরামত বাবদ আমাদের যতটাকা খরচ হয়েছে তা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট টাকা মালিককে দিতে গেলে তিনি কোনোভাবেই কম নিতে সম্মত হননি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা পূর্ণ ভাড়া পরিশোধ করি।

মুহতারামের নিকট আমাদের জানার বিষয় হল, জানালাটি মেরামত করার দায়িত্ব কার ছিল? এটি মেরামত বাবদ আমাদের যা খরচ হয়েছে তা কি আমরা মালিক থেকে নিতে পারব?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী জানালাটি যেহেতু আগে থেকেই ভাঙ্গা ছিল তাই তা মেরামত করে দেওয়া বাড়ি মালিকের দায়িত্ব ছিল। তাকে বলার পরও তা মেরামত না করা অন্যায় কাজ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আপনারা নিজ থেকে তা ঠিক করে নিলেও মালিকের নৈতিক দায়িত্ব হল, জানালাটির মেরামত খরচ আপনাদেরকে দিয়ে দেওয়া।

কিন্তু আপনারা যেহেতু মালিকের অনুমতি ছাড়াই জানালাটি মেরামত করেছেন তাই মালিক যদি খরচ দিতে না চায় তাহলে তাকে এজন্য বাধ্য করা যাবে না। 

বাদায়েউস সানায়ে ৪/৭০; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/৫৮৮; আযাযাখিরাতুল বুরহানিয়া ১২/৪; রদ্দুল মুহতার ৬/৮০; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ ৫২৯

Sharable Link

মুহাম্মদ হুমাইদ - ফেনী

৬২৪২. Question

আজ থেকে প্রায় তিন বছর পূর্বে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন এবং দেড় লাখ টাকা মিরাছ রেখে যান। এই টাকাগুলো বণ্টনের ব্যাপারে আমার মায়ের সাথে আলোচনা করার পর তিনি বলেন, তোমার পিতা মৃত্যুর পূর্বে আমাকে বলে গিয়েছেন, এই টাকাগুলো আমার সন্তানদের জন্য ব্যয় করবে। অথচ আমার আব্বুর ওয়ারিশদের মধ্যে আমার দাদা-দাদুও রয়েছেন। অতএব মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমার পিতার এভাবে বলে যাওয়াটা সহীহ হয়েছে কি না? এবং এই টাকা দাদা-দাদুকে না দিয়ে আমাদের ভাই-বোনদের মাঝে বণ্টন করে নেওয়া জায়েয হবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

আপনার বাবার উক্ত দেড় লাখ টাকা সন্তানদের জন্য ব্যয় করার কথাটি একটি ওসিয়ত ছিল। আর ওয়ারিশদের জন্য ওসিয়ত কার্যকর হয় না; যদি না অন্য ওয়ারিশরা তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেন। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবার মৃত্যুর পর ঐ টাকা মিরাসের সম্পদ হয়ে গেছে। তার মালিক এখন আপনার পিতার সকল ওয়ারিশ।

সুতরাং ঐ টাকাগুলো আপনার দাদা, দাদি, মা, ভাই-বোনসহ সকল ওয়ারিশদের মধ্যে যার যার নির্ধারিত হিস্যা অনুযায়ী বণ্টন করে দিতে হবে। অবশ্য যদি আপনার দাদা-দাদি এবং আপনার মা এ সম্পদ গ্রহণ না করে আপনার পিতার কথা অনুযায়ী আপনাদেরকেই দিয়ে দিতে চান তাহলে সেক্ষেত্রে আপনারা তা গ্রহণ করতে পারবেন।

আদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন

لا تجوز الوصية لوارث، إلا أن يشاء الورثة.

অর্থ্যাৎ ওয়ারিশদের জন্য ওসিয়ত কার্যকর নয়। তবে অন্যান্য ওয়ারিশরা যদি অনুমতি দেয় তবে তা বৈধ হবে। (সুনানে দারাকুতনী ৪/৯৭) 

কিতাবুল আছল ৫/৪৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪৩৪; আলবাহরুর রায়েক ৮/৪০৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৩৭৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৫৫

Sharable Link

আবু তাহের - বরিশাল

৬২৪৩. Question

হুজুর! আমি পুলিশ পোস্টে চাকরি করি। কখনো হিন্দুদের পূজায় আমার ডিউটি পড়ে। অনেক সময় সেখানে না যাওয়ার আবেদন করলেও গৃহীত হয় না।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? সেখানে ডিউটি করা বৈধ হবে কি? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

মুসলিম মাত্রই একথা জানা যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হল ইসলাম। ইসলামের সবচেয়ে বড় শিক্ষা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা এবং সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতৃর্ক আল্লাহর পক্ষ থেকে আনীত কুরআন, দ্বীন ও শরীয়ত মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা ও গ্রহণ করা। ইসলাম ধর্মে শিরক হল সকল পাপের বড় পাপ। শিরক মানে আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক করা; আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসনা করা। ইসলাম তার অনুসারীদের ঈমান-আকীদার বিষয়ে দৃঢ়, পরিপক্ব ও অনড় থাকতে নির্দেশ দেয় এবং সব ধরনের কুফর ও শিরক থেকে গুরুত্বের সাথে বেঁচে থাকতে হুকুম করে। তবে এটি ইসলামের উদারতা যে, ইসলাম একমাত্র সত্য ধর্ম হওয়া সত্ত্বেও অন্য ধর্মের অনুসারীদের বিভিন্ন অধিকার স্বীকার করে। তাই ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতেও মৌলিকভাবে দেশের নাগরিক হিসেবে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা প্রদান সরকারের দায়িত্ব। সে হিসেবে দেশের গণমানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কর্তৃক যেসকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছেন, তাদের কোনো সদস্যের যদি পূজা-মণ্ডপে কিংবা বিধর্মীদের কোনো অনুষ্ঠানে ডিউটি পড়ে, তাহলে সেখানের লোকজনের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে ডিউটি করা নিষেধ নয়।

যদি কখনো এধরনের ক্ষেত্রে ডিউটি পড়ে, তাহলে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষ এ ডিউটি করা যাবে :

(ক) বিধর্মীদের ধর্মীয় কোনো কাজে অংশগ্রহণ করা যাবে না।

(খ) পূজা-মণ্ডপে উৎসর্গিত খাবার খাওয়া যাবে না।

(গ) তাদের ধর্মীয় কাজে সহযোগিতার নিয়ত করা যাবে না।

আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৮৪; ফাতাওয়া খানিয়া ২/৩২৪; আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৪৬; রদ্দুল মুহতার ৪/২০৮; কিফায়াতুল মুফতী ১৩/১৬৪ 

Sharable Link