জাওয়াদ হুসাইন - চট্টগ্রাম

৬১৯১. Question

আমার কখনো মেসওয়াক না থাকলে ওযু করার সময় আঙ্গুল দিয়েই দাঁত মাজি। জানার বিষয় হল, এ অবস্থায় আঙ্গুল দিয়ে দাঁত মাজার দ্বারা মেসওয়াকের সওয়াব পাওয়া যাবে কি?

 

Answer

ওযুর সময় কখনও যদি মেসওয়াক সাথে না থাকে সেক্ষেত্রে আঙ্গুল দিয়ে ভালোভাবে দাঁত মাজার দ্বারা মেসওয়াকের সওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে মেসওয়াক যেহেতু মূল সুন্নত, তাই মেসওয়াক ব্যবহারের প্রতি যত্নবান হতে হবে। নিয়মিত আঙ্গুল দ্বারা  দাঁত মাজলে মেসওয়াকের সুন্নত আদায় হবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১/১৭৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৫; ফাতহুল কাদীর ১/২২; আলবাহরুর রায়েক ১/২১; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/১১৫

Sharable Link

মাহমুদা খাতুন - নেত্রকোণা

৬১৯২. Question

আমি নিয়মিত আমার ছেলের কাছ থেকে কুরআন তিলাওয়াত শুনি। একদিন সে একটি সিজদার আয়াত পড়ে। ঘটনাক্রমে আমি সেদিন হায়েয অবস্থায় ছিলাম। জানার বিষয় হল, আমার উপর কি এ কারণে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করা আবশ্যক?

Answer

উত্তর : প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে সিজদায়ে তিলাওয়াত করতে হবে না। কেননা, হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয় না। তাবেয়ী আবুদ্দুহা ও ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

إذَا سَمِعَتِ الْحَائِضُ السَّجْدَةَ فَلاَ تَسْجُدْ، هِيَ تَدَعُ أَوْجَبَ مِنْ ذَلِكَ.

হায়েয অবস্থায় সিজদার আয়াত শুনলে তাকে সিজদা দিতে হবে না। সে তো এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধানও (অর্থাৎ নামায) আদায় করছে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৩৫০)

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪৩৪৭; কিতাবুল আছল ১/২৭২; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ১/৩৬৩; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৪২৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৭

Sharable Link

মুমাজ্জাদ হুসাইন - মুক্তাগাছা, মোমেনশাহী

৬১৯৩. Question

গত ঈদুল আযহার নামাযে আমি মাসবুক হই। ইমামের সাথে নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে শরীক হই। এরপর যখন বাকি এক রাকাত পড়ার জন্য দাঁড়াই তখন কেরাতের আগে অতিরিক্ত তাকবীরগুলো আদায় করি। এরপর কেরাত পড়ে বাকি নামায পূর্ণ করি। আমার পাশে একজন মাদরাসার ছাত্র ছিল। নামাযের পর সে আমাকে বলল, আপনি যে রাকাতটি একা পড়েছেন সে রাকাতের অতিরিক্ত তাকবীরগুলো কেরাতের পর বলা উচিত ছিল। মুহতারামের কাছে জানতে চাচ্ছি, তার কথা কি সঠিক? অথচ আমি যে রাকাতে ইমামকে পেয়েছি সে রাকাতেও কেরাতের পর অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলেছি?

Answer

হাঁ, সে ছাত্র ঠিকই বলেছে। ঈদের নামাযে প্রথম রাকাত না পেলে তা আদায় করার সময় মাসবুকের অতিরিক্ত তাকবীরগুলো কেরাতের পর বলাই নিয়ম। অর্থাৎ মাসবুক ব্যক্তি এ রাকাতেও দ্বিতীয় রাকাতের মতো কেরাতের পর অতিরিক্ত তাকবীরগুলো বলবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাকবীরগুলো কেরাতের আগে বলা নিয়ম সম্মত হয়নি। তবে তা নিয়মসম্মত না হলেও এর দ্বারা ওয়াজিব আদায় হয়ে গেছে এবং নামাযও আদায় হয়ে গেছে।

-কিতাবুল আছল ১/৩২২; আলহাবিল কুদসী ১/২৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬২৩; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৫০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৯১

Sharable Link

ফারহানা ইয়াসমীন - দৌলতকান্দি, নরসিংদী

৬১৯৪. Question

গত শুক্রবার রাতে চার রাকাত নফলের নিয়তে নামায শুরু করি। প্রথম রাকাত পড়ে যখন দ্বিতীয় রাকাতে দাঁড়াই তখন আমার শিশুবাচ্চা কান্না শুরু করে। এজন্য তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় রাকাত শেষ করেই সালাম ফেরাই।

মুহতারামের নিকট প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় আমার উক্ত নামাযের কী হুকুম? তা কি পুনরায় পড়তে হবে?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত নফল নামাযে যেহেতু দুই রাকাত পূর্ণ করে সালাম ফিরিয়েছেন তাই আপনার দুই রাকাত নফল নামায সহীহ হয়েছে। এক্ষেত্রে চার রাকাতের নিয়ত করা হলেও বাকি দুই রাকাত পূর্ণ করা জরুরি নয়।

-মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৪৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২২০; আননাহরুল ফায়েক ১/৩০১; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩৪৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/২৯০

Sharable Link

মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম - কুমারখালী, কুষ্টিয়া

৬১৯৫. Question

পবিত্র রমযান মাসে আমি বিতির নামায জামাত সহকারে আদায় করে থাকি। বিতিরের তৃতীয় রাকাতে কখনো কখনো আমার দুআ কুনূত শেষ হওয়ার আগেই ইমাম সাহেব রুকুতে চলে যান। মুহতারাম হুযুরের নিকট জানতে চাই, দুআ কুনূত শেষ হওয়ার আগেই ইমাম রুকুতে চলে গেলে মুক্তাদীর করণীয় কী?

Answer

মুক্তাদীর দুআ কুনূত শেষ হওয়ার আগেই যদি ইমাম রুকুতে চলে যায় তাহলে মুক্তাদীও ইমামের অনুসরণে রুকুতে চলে যাবে। কেননা দুআয়ে কুনূত পড়া ওয়াজিব হলেও প্রসিদ্ধ দুআয়ে কুনূতনটি শেষ পর্যন্ত পড়া ওয়াজিব নয়। বরং এর আংশিক পড়া হয়ে গেলেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়; তাই প্রশ্নোক্ত  ক্ষেত্রে দুআ কুনূতের কিছু অংশ পড়া হয়ে গেলে যেহেতু ইমাম রুকুতে চলে গেছে তাই সেও রুকুতে চলে যাবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/২৮২; রদ্দুল মুহতার ২/২০

Sharable Link

আবুল কাশেম আকন্দ - লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ

৬১৯৬. Question

আমাদের মহল্লার মসজিদে আযানের ব্যবস্থা মসজিদের ভেতরে রাখা হয়েছে এবং শুরু থেকেই মুআযযিন মসজিদের ভেতর থেকে আযান দিয়ে আসছেন। গতকাল মসজিদে একটি তাবলীগ জামাত আসে। ঐ জামাতের জিম্মাদার আমাদেরকে বললেন, আপনারা আযানের ব্যবস্থাটা মসজিদের বাইরে করলে ভালো হত। কারণ মসজিদের ভেতর থেকে আযান দেওয়া মাকরূহ। আমরা হুজুরের কাছে বিষয়টির সঠিক সমাধান জানতে চাচ্ছি।

Answer

আযানের ক্ষেত্রে সালাফের পদ্ধতি ছিল, মসজিদের বাইরে কোনো উঁচু স্থান বা মিনার থেকে আযান দেওয়া। এ ব্যাপারে অনেক হাদীস ও আসার রয়েছে। যেমন, নাজ্জার গোত্রের এক মহিলা সাহাবীয়া রা. বলেন-

كَانَ بَيْتِي مِنْ أَطْوَلِ بَيْتٍ حَوْلَ الْمَسْجِدِ وَكَانَ بِلَالٌ يُؤَذِّنُ عَلَيْهِ الْفَجْرَ.

মসজিদে নববীর নিকটবর্তী বাড়িগুলোর মধ্যে আমার বাড়ি ছিল সবচেয়ে উঁচু। বেলাল রা. সেখানে উঠে ফজরের আযান দিতেন। (সুনানে আবু দাউদ, বর্ণনা ৫১৯)

আবদুল্লাহ ইবনে শাকীক রাহ. বলেন-

مِنَ السُّنَّةِ الأَذَانُ فِي الْمَنَارَةِ، وَالإِقَامَةُ فِي الْمَسْجِدِ.

সুন্নাহ হচ্ছে আযান মিনার থেকে দেওয়া এবং ইকামত মসজিদের ভেতর দেওয়া। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৩৪৫)

এসব হাদীস-আসারের কারণে ফকীহগণও উঁচু স্থান বা মিনার থেকে আযান দেওয়াকে সুন্নত বলেছেন। এবং মসজিদের ভেতর আযান দেওয়াকে মাকরূহ বলেছেন। অবশ্য ফকীহগণ বলেছেন, মসজিদের ভেতর আযান দেওয়া মাকরূহ হওয়ার মূল কারণ হল, আওয়াজ দূরে না পৌঁছা। কিন্তু বর্তমানে যেহেতু সাধারণত মাইকে আযান দেওয়া হয়। আর এক্ষেত্রে মসজিদের ভেতর থেকে আযান দিলেও আওয়াজ দূর দূরান্তে পৌঁছে যায়। তাই এভাবে মসজিদের ভেতর মাইকে আযান দিলে তা মাকরূহ হবে না। তবে আমলটি যাতে সালাফের তরীকার সাথে সামঞ্জস্যশীল হয় এজন্য মাইকে আযান দিলেও মসজিদের বাইরে থেকে আযান দেওয়াই উত্তম হবে। এবং এটি এভাবেও সম্ভব যে, মাইকের জন্য মসজিদের সঙ্গেই আলাদা কামরা থাকবে। মুআযযিন সেখান থেকে আযান দেবে

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ২৩৪৫; কিতাবুল আছল ১/১১৫, ১১৯; আলগায়া, সারুজী ২/২২৭; রদ্দুল মুহতার ১/৩৮৪; ইলাউস সুনান ২/১৪০, ৮/৮৬; ইমদাদুল মুফতীন ৩/৯৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ এনামুল হক চৌধুরী - কোর্টপাড়া, মেহেরপুর

৬১৯৭. Question

আমি শুনেছি, অসহায় ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধ করলেও যাকাত আদায় হয়। গত মাসে আমার দরিদ্র এক চাচাতো ভাই কিছু ঋণ  রেখে মারা যান। তার সেই ঋণ যদি আমি আমার যাকাতের টাকা দিয়ে পরিশোধ করি, তাহলে কি আমার যাকাত সঠিকভাবে আদায় হবে?

Answer

যাকাতের টাকা দিয়ে জীবিত দরিদ্র ব্যক্তির অনুমতি নিয়ে তার ঋণ আদায় করা যায়। কিন্তু মৃত ব্যক্তির ঋণ যাকাতের টাকা দিয়ে আদায় করলে যাকাত আদায় হয় না।

সুতরাং আপনার মৃত ভাইয়ের ঋণ যাকাতের টাকা দিয়ে পরিশোধ করলে আপনার যাকাত আদায় হবে না; বরং তার ঋণ পরিশোধ করতে চাইলে সাধারণ নফল সদকা থেকে আদায় করতে হবে। অথবা যাকাত গ্রহণের যোগ্য কোনো (দরিদ্র) ব্যক্তি নিজের জন্য যাকাত গ্রহণ করে সেই টাকা দিয়ে সে মৃতের ঋণ পরিশোধ করে দিতে পারে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৬৮; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৫৫২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৩; তাবয়ীনুল  হাকায়েক ২/১২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮

Sharable Link

সাঈদ মাহমুদ - দৌলতপুর, মানিকগঞ্জ

৬১৯৮. Question

আমার বাবা ইন্তেকালের পূর্বে তাঁর ছুটে যাওয়া কিছু নামাযের ফিদইয়ার ওসিয়ত করেছিলেন। এদিকে আমাদের একজন প্রতিবেশী আছেন, যিনি বিধবা এবং অত্যন্ত দরিদ্র। তাই আমার আম্মা উক্ত প্রতিবেশীকে কয়েকটি ফিদইয়ার টাকা একসাথে দেওয়ার কথা বলছেন। মুহতারাম হুযুরের কাছে জানার বিষয় হল, একজনকে কি একাধিক ফিদইয়া দেওয়া জায়েয হবে? বিষয়টি জানালে উকপৃত হব।

 

Answer

হাঁ, একজনকে একাধিক ফিদইয়া একত্রে দেওয়াও জায়েয আছে। সুতরাং উক্ত বিধবা মহিলাকে একাধিক ফিদইয়া একসাথে দেওয়া যাবে।

-আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৫; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৪৮৬

Sharable Link

বেলাল - নেত্রকোণা

৬১৯৯. Question

কিছুদিন আগে আমি চাকরির জন্য একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। তখন আমি মান্নত করেছিলাম, যদি আমি এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই তাহলে বিশ হাজার টাকা গরীব-মিসকীনদেরকে সদকা করব। এরপর আলহামদু লিল্লাহ আমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এদিকে আমার এক প্রতিবেশী আছে, যে খুবই দরিদ্র ও সৎলোক। হঠাৎ সে একটি রোগে আক্রান্ত হয়ে গেছে। এখন তার বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন। তাই আমি চাচ্ছি, মান্নতের বিশ হাজার টাকা পুরোটাই তাকে দিয়ে দেব।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, আমি যদি কেবল এই একজনকেই পুরো টাকাটা দিয়ে দেই তাহলে কি আমার মান্নত পুরা হবে? অন্যথায় কমপক্ষে কতজন গরীব-মিসকিনের মাঝে উক্ত টাকা বিলাতে হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মান্নতের বিশ হাজার টাকা একজন গরীবকে দিয়ে দিলেও মান্নত পুরা হয়ে যাবে। কেননা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা বস্তু একাধিক গরীবকে দেওয়ার মান্নত করলেও ঐ পরিমাণ একজন গরীবকে দিয়ে দিলেও মান্নত আদায় হয়ে যায়।

-উয়ূনুল মাসায়িল, পৃ. ৪৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৩৫; আলমুহীতুর রাযাবী ৪/৫৪০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৬/২৮৫ ও ২৮৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৬; রদ্দুল মুহতার ৩/৭৪১

Sharable Link

মোছাম্মাত তাফরিহা - গাবতলি, ঢাকা

৬২০০. Question

আমার স্বামী দীর্ঘদিন যাবৎ এক রোগে আক্রান্ত ছিল। অনেক চিকিৎসার পরেও সুস্থ হচ্ছিল না। তাই আমি মান্নত করেছিলাম, আমার স্বামী সুস্থ হলে ১০ দিন রোযা রাখব। কিন্তু তার পরেও সুস্থ না হওয়ায় মনে মনে ভাবলাম যে, হয়তোবা মান্নতের রোযাগুলো রাখা শুরু করলে সুস্থ হয়ে যাবে। একপর্যায়ে মান্নতের ১০ টি রোযা সবগুলো রেখে ফেলি। এরপর আমার স্বামী সুস্থ হয়ে যায়।

প্রশ্ন হল, এখন আমাকে ঐ মান্নতের রোযাগুলো কি আবার রাখতে হবে? দয়া করে জানাবেন।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু স্বামী সুস্থ হলে রোযা রাখার মান্নত করেছেন তাই তিনি সুস্থ হওয়ার পরই মান্নতের ১০ টি রোযা রাখতে হবে। সুস্থ হওয়ার আগে যে রোযাগুলো রেখেছেন তা দ্বারা আপনার মান্নতের রোযা আদায় হবে না; বরং তা নফল রোযা হিসেবে গণ্য হবে। তাই মান্নত পূরণার্থে আপনাকে পুনরায় দশটি রোযা রাখতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১০; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৭০৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৮১

Sharable Link

রফিক মজুমদার - গৌরনদী, বরিশাল

৬২০১. Question

আমরা তিন ভাই দুই বোন। আমাদের ১২ বিঘা জমি আছে। আমাদের কোনো জমিই এখনো ভাগ করা হয়নি। সব সম্পত্তিই এজমালি অবস্থায় আছে। কিছুদিন পূর্বে আমি আমাদের একটি ১২ কাঠার জমি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করি। আমার বাকি দুই ভাই বিদেশে থাকায় এবং বোনদের বিবাহ হয়ে যাওয়ায় তখন আর আমি তাদেরকে এ বিষয়ে কিছু জানাইনি। আমার নিয়ত ছিল যে, যখন সম্পত্তি ভাগ হবে তখন আমি ১২ কাঠা জমি কম নেব, তাহলে আর কারো কোনো আপত্তি থাকবে না। এটা ভেবেই আমি ঐ ১২ কাঠা জমি ওয়াকফ করেছি।

আমার জানার বিষয় হল, এজমালি জমি থেকে ১২ কাঠা জমি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা আমার জন্য বৈধ হয়েছে কি? বিষয়টির সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

এজমালি জমি বণ্টনের পূর্বে কোনো শরীকের জন্য তা ওয়াকফ করা সহীহ নয়। ওয়াকফ করলেও তা সম্পন্ন হয় না। সুতরাং শরীকানা জমি বণ্টন হওয়ার আগে তা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা বৈধ হয়নি।

অতএব উক্ত দান যদি বলবৎ রাখতে চান তাহলে ভাই-বোনদের সাথে বণ্টননামা করে নিলে তা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করতে পারবেন।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৩৭; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ৩/২০৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৯১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৬৩; ফাতহুল কাদীর ৫/৪২৬; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৬২

Sharable Link

রফীকুল বারী - মনোহরগঞ্জ, কুমিল্লা

৬২০২. Question

আমাদের মহল্লার মসজিদটি ছিল দীর্ঘদিন পূর্বের একটি টিনের ভবন। কিছুদিন পূর্বে আমরা ওই ভবনটি ভেঙে সেখানে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করি। পুরোনো মসজিদ সংলগ্ন পশ্চিম পাশের জমিটি খরিদ করে নতুন মসজিদটি কিছুটা পশ্চিমদিকে সরিয়ে নির্মাণ করা হয়। এতে পুরোনো মসজিদের কিছু জায়গা এখন খালি পড়ে আছে। আমরা পুরোনো মসজিদের ওই খালি জায়গায় মসজিদের ওযুখানা বানাতে চাচ্ছি।

মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, পুরোনো মসজিদের ওই খালি জায়গায় আমরা ওযুখানা বানাতে পারব কি? এ ব্যাপারে আমরা শরয়ী সমাধান কামনা করছি।

Answer

মসজিদের জন্য নিধার্রিত স্থান মসজিদ হিসেবে ব্যবহার হলে তা স্থায়ীভাবে মসজিদের হুকুমে হয়ে যায়। ফলে ওই স্থান পরবর্তীতে মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যায় না।

অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের জন্য করণীয় ছিল, পুরোনো মসজিদের সম্পূর্ণ জায়গাকে নতুন মসজিদের মধ্যে অন্তভুর্ক্ত করে নেওয়া। কিন্তু যেহেতু আপনারা এমনটি না করে পুরোনো মসজিদের কিছু জায়গা খালি রেখে দিয়েছেন তাই এখন আপনাদের কর্তব্য হল, উক্ত খালি জায়গাটিকে মসজিদের বারান্দা বানিয়ে মসজিদের অন্তভুর্ক্ত করে নেওয়া।

ওই খালি জায়গাটিকে মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা, যেমন ওযুখানা ইত্যাদি বানানো জায়েয হবে না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৪২; আলহাবিল কুদসী ১/৫৪৮; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৩০; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৫৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাজু মিয়া - বনানী, ঢাকা

৬২০৩. Question

মুহতারাম মুফতী ছাহেব! আমাদের কোম্পানির নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আসলে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে এর বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি। জানার বিষয় হল, পণ্যের প্রচারের জন্য সিনেমা অথবা নাটকের মধ্যে বিজ্ঞাপন দিলে কি কোনো অসুবিধা আছে?

উল্লেখ্য, আমাদের বিজ্ঞাপনে কোনো নারী-পুরুষের ছবি থাকবে না। শুধু পণ্যেরই বিভিন্ন দৃশ্য দেখানো হবে। এ বিজ্ঞাপনের বিনিময়ে আমরা সিনেমা ও নাটকের কতৃর্পক্ষকে টাকা দেব। আশা করি বিষয়টি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রচলিত নাটক-সিনেমায় অসংখ্য কবীরা গুনাহ হয়ে থাকে। মুসলিম সমাজে অশ্লীলতা বিস্তার ও চারিত্রিক অধঃপতনের ক্ষেত্রে নাটক-সিনেমার ভূমিকা অনেক। তাই পণ্যের প্রচারের উদ্দেশ্যেও এ ধরনের নাটক-সিনেমায় বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। কেননা সেখানে বিজ্ঞাপন দেওয়ার দ্বারা তাদের কাজে একধরনের সহযোগিতা করা হয়। কারণ তাদের আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে বিজ্ঞাপন। সুতরাং তাতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার অর্থ হল, অন্যায় ও হারাম কাজে সহযোগিতা করা। আর কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَ تَعَاوَنُوْا عَلَی الْبِرِّ وَالتَّقْوٰی وَ لَا تَعَاوَنُوْا عَلَی الْاِثْمِ وَالْعُدْوَانِ .

আর তোমরা নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা কর। গুনাহ ও সীমালঙ্ঘণের কাজে একে-অপরকে সহযোগিতা করো না। [সূরা মায়েদা (৫) : ২]

-আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/৩০৩, ৩/৩০৮; জাওয়াহিরুল ফিকহ ২/৪৫০

Sharable Link

হাসান জামিল - খুলনা

৬২০৪. Question

পরিচিত এক লোককে আমি ব্যবসা করার জন্য চার লক্ষ টাকা দিয়েছি। তার সাথে চুক্তি হয়েছে এভাবে- সে আমাকে উক্ত ব্যবসার লাভের ৪০% দিবে। বাকিটা তার থাকবে। কিন্তু বর্তমানে তো মানুষকে বিশ্বাস করা খুবই কঠিন। টাকা মেরে দেওয়ার ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। তাই এক্ষেত্রে নিশ্চয়তার জন্য আমি যদি তার কাছ থেকে কিছু জিনিস বন্ধক হিসেবে রাখি, তাহলে কি তা আমার জন্য জায়েয হবে? এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, সে যদি কখনো আমার টাকা মেরে দেয়, তখন আমি যাতে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হই। তাই এ বিষয়ে সঠিক সমাধানের অনুরোধ রইল।

 

Answer

একজনের পুঁজি অন্যজনের শ্রমের ভিত্তিতে অংশিদারী কারবারকে মুযারাবা কারবার বলে। মুযারাবা কারবারে পুঁজি বিনিয়োগকারীর জন্য ব্যবসা পরিচালনাকারী (মুযারিব) থেকে পুঁজির বিপরীতে কোনো কিছু বন্ধক গ্রহণ করা জায়েয নয়। কেননা, মুযারাবা ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত টাকা মুযারিবের কাছে আমানত হিসেবে থাকে। আর আমানতের বিপরীতে বন্ধক গ্রহণ বৈধ নয়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত কারবারটিতে আপনি ব্যবসা পরিচালনাকারী থেকে বন্ধক হিসেবে কোনো কিছু গ্রহণ করতে পারবেন না।

উল্লেখ্য, মুযারাবা ব্যবসার টাকা এমন ব্যক্তির কাছেই বিনিয়োগ করা উচিত, যার আমানতদারির ব্যাপারে পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

-আলমুহীতুর রাযাবী ৮/৩১২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৪; আলহাবিল কুদসী ২/৯৮; তাকমিলাতুল বাহরির রায়েক ৮/২৪৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪৯২

Sharable Link

সাআদ - ফেনী

৬২০৫. Question

আমার একটি মুরগির ফার্ম আছে। প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু মুরগি মারা যায়। আমার এক পরিচিত লোক মাগুর মাছ চাষ করে। সে ঐ মুরগিগুলো স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে নিয়ে যায় মাগুর মাছের খাবারের জন্য।

জানতে চাই, ঐ মৃত মুরগিগুলো বিক্রি করাতে কি কোনো অসুবিধা আছে? এবং এর বিক্রিলব্ধ টাকা ভোগ করা বৈধ হবে কি? জানালে উপকৃত হব।

Answer

মৃত মুরগি হারাম। এর বিক্রি নাজায়েযসুতরাং মৃত মুরগির বিক্রিলব্ধ টাকা ভোগ করা জায়েয হবে না। তাই এগুলো ক্রয়-বিক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/৫৯১; ফাতহুল কাদীর ৬/৪৪আলবাহরুর রায়েক ৬/৭০; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫১; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/১০৩

Sharable Link

কাউসার - ফেনী

৬২০৬. Question

সেদিন পরিচিত এক দোকান থেকে ৩৫০ টাকা দিয়ে একটি টিপ ছাতা ক্রয় করি। দুই দিন পর দোকানদারের সাথে দেখা হলে বলে, ভাই ছাতাটার দাম ছিল ৬০০ টাকা। ভুলে আপনাকে ৩৫০ টাকায় দিয়ে দিয়েছি। এটা খুব ভালো মানের ছাতা। আমার ক্রয় করতেই হয়েছে ৫৫০ টাকায়। পুরো ৬০০ টাকা না দিলেও অন্তত আরও দুইশত টাকা দিতে হবে। তখন আমি তাকে আর এক টাকাও দিতে পারব না বলে চলে আসি।

মুহতারাম! এধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে থাকে। তখন কোনো কোনো দোকানদারকে বিশ্বাস হয় আবার কোনো দোকানদারকে একদম বিশ্বাস হয় না।

তো জানতে চাই, আসলে এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? আমি কি তাকে ঐ অতিরিক্ত ২০০ টাকা দিতে বাধ্য? জানালে উপকৃত হব।

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দোকানদারের কথা যদি সত্য বলে মনে হয় এবং বাস্তব বাজারেও ছাতাটার দাম ৫৫০ টাকা হয়ে থাকে তাহলে আপনার নৈতিক দায়িত্ব হবে, দোকানদারকে বাকি ২০০ টাকা দেওয়া; যাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে যেহেতু উভয়ের সম্মতিতেই ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে, তাই অতিরিক্ত ২০০ টাকা ফেরত না দিলেও ছাতাটি ব্যবহার করা আপনার জন্য নাজায়েয হবে না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২৩২৮২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/৩৮৩; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৪২; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ ৩৫৬; দুরারুল হুক্কাম শরহু মাজাল্লাতিল আহকাম ১/৩৬৮

Sharable Link

নেয়ামতুল্লাহ - ফরিদপুর

৬২০৭. Question

সেদিন আমার এক প্রতিবেশী থেকে আমি একটি মুরগি ক্রয় করি। বাড়িতে এনে মুরগিটি জবাই করলে তার পেটের মধ্যে একটি স্বর্ণের নাকফুল পাই।

মুহতারামের কাছে জানতে চাই যে, উক্ত নাকফুলটির কী হুকুম? আমি কি সেটার মালিক হব, না বিক্রেতাকে তা ফিরিয়ে দিতে হবে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মুরগি ক্রয় করার দ্বারা আপনি নাকফুলটির মালিক হবেন না; বরং নাকফুলটি তার মালিকের। এখন তা যদি বিক্রেতার হয় তাহলে তা বিক্রেতাকে দিয়ে দিতে হবে। আর যদি বিক্রেতাও এর প্রকৃত মালিক না হয় তাহলে মূল মালিকের সন্ধান করতে চেষ্টা করবে। যদি অবশেষে মালিকের সন্ধান পাওয়াই না যায় তাহলে কোনো গরীবকে মালিকের পক্ষ থেকে এটি সদকা করে দেবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ২/২৪৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১৭২; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়্যাহ ৩/১৫০; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৫

Sharable Link

ইবরাহীম শিকদার - গৌরিপুর, কুমিল্লা

৬২০৮. Question

আমাদের  দুই ভাইয়ের একটি এজমালী জমি আছে। জমিটির পরিমাণ ২০ কাঠা। আমরা এখনো জমিটি ভাগ করিনি। আমরা ওই জমিটি একসাথে চাষাবাদ করি।  এখন হঠাৎ করে আমার দুই লক্ষ টাকার খুব দরকার হয়েছে। আমি ওই শরীকানা এজমালী জমিটির ১০ কাঠা একজনের কাছে বন্ধক রেখে তার কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে চাচ্ছি

প্রশ্ন  হল, আমাদের উক্ত শরীকানা এজমালী জমিটি থেকে আমি কি ১০ কাঠা জমি কারো কাছে বন্ধক রাখতে পারব? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী?

Answer

এজমালী সম্পত্তি বণ্টনের পূর্বে কারো কাছে বন্ধক রাখা জায়েয নয়। সুতরাং আপনাদের উক্ত শরীকানা জমি এজমালী থাকাবস্থায় আপনার অংশ পরিমাণও বন্ধক রাখতে পারবেন না। বরং  এজমালী জমি বণ্টন পূর্বক নিজের অংশ বুঝে নেওয়ার পর আপনি চাইলে তা বন্ধক রাখতে পারবেন।

-কিতাবুল আছল ৩/১৩৫; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২০০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৫৯৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৪৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ রহিমুল্লাহ - ইসলামপুর

৬২০৯. Question

আমি একজন পাইকারি কাপড় ব্যবসায়ী। ছয় মাস পূর্বে এক খুচরা ব্যবসায়ীর নিকট বাকিতে দুই লক্ষ টাকার কাপড় বিক্রি করেছিলাম। দুই মাসের মধ্যে আমার পাওনা পরিশোধের কথা থাকলেও এখনো তিনি সেই টাকা পরিশোধ করেননি। আমি চাচ্ছি তার কাছ থেকে এই টাকা এখন না নিয়ে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ করব এবং এই টাকা থেকে যা লাভ হবে তা দুজনে অর্ধাঅর্ধি হারে ভাগ করে নেব। এ ব্যাপারে তার সাথে আলোচনা করেছি। সেও রাজি আছে।

জানতে চাই, এভাবে বিনিয়োগ করা কি আমার জন্য জায়েয হবে? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাপড় বিক্রির বকেয়া টাকা তার থেকে পাওয়ার আগে তার কাছে এই টাকা বিনিয়োগ করা যাবে না। কেননা কারো কাছ থেকে পাওনা টাকা উসূল করার আগে তার কাছে সেই টাকা বিনিয়োগ করা সহীহ নয়। তাই আপনাকে আগে তার থেকে পাওনা টাকা হস্তগত করতে হবে। তারপর চাইলে এ টাকা তার কাছে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

-কিতাবুল আছল ৪/১৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৪; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১২২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫১৮; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৪৭; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/৩৩০

Sharable Link

মুহাম্মাদ বেলাল - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬২১০. Question

আমাদের এলাকায় সাধারণত মেশিন দিয়ে ধান ভাঙানোর ক্ষেত্রে এভাবেই চুক্তি করা হয় যে, কৃষক যত মন ইচ্ছা ধান ভাঙাবে, এর বিনিময়ে ঐ ভাঙানো ধান থেকে যত কুড়া বের হবে সব মেশিনওয়ালা নিয়ে যাবে। কৃষকের অতিরিক্ত আর কোনো টাকা দিতে হবে না। দেখা যায়, এই চুক্তির মধ্যে উভয় পক্ষ সন্তুষ্ট থাকে।

জানার বিষয় হল, উক্ত চুক্তি কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

 

Answer

ভাঙানো ধানের কুড়া দেওয়ার শর্তে ধান ভাঙানোর চুক্তি করা বৈধ নয়। কেননাহাদীসে এধরনের লেনদেন করতে নিষেধ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সঠিকভাবে কারবার করতে চাইলে উক্ত ভাঙানো ধানের কুড়া দেওয়ার শর্ত করা যাবে না; বরং নির্দিষ্ট পরিমাণ যে কোনো কুড়া দেওয়ার চুক্তি করবে। পরে কৃষক চাইলে উক্ত ভাঙানো ধানের কুড়াও বিনিময় হিসেবে দিতে পারবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২১৯৭৫; শরহু মুশকিলিল আছার ২/১৭৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১৫/৮৩; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/৫২২; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫৬

Sharable Link

রহমাতুল্লাহ - মোমেনশাহী

৬২১১. Question

আমাদের এলাকার লোকেরা গোবর জমা করে বিক্রি করে। কিন্তু কিছুদিন আগে একজন বললেন, গোবর নাপাক। আর নাপাক বস্তুর বেচাকেনা জায়েয নয়। তাই হুজুরের কাছে জানতে চাই, গোবর বেচাকেনা করা জায়েয কি না?

Answer

গোবর নাপাক হলেও তা বৈধ উপায়ে ব্যবহারযোগ্য। যেমন গোবর জ্বালানি কাজে ও সার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তাই বৈধ উদ্দেশ্যের বিবেচনায় গোবর বেচাকেনা করা জায়েয।

-আলজামিউস সাগীর, পৃ. ২৩৪; উয়ূনুল মাসায়েল, পৃ. ৭৬; শরহুল জামিইস সাগীর, সাদরুশ শাহীদ, পৃ. ৫৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৫৭

Sharable Link

ইমদাদ - বরিশাল

৬২১২. Question

এবার রমযানে হঠাৎ করে বাসায় অনেক মেহমান চলে আসে। রান্না করতে গিয়ে দেখি, ঘরে তেল নেই। তখন পাশের ঘর থেকে দুই কেজি সয়াবিন তেল ধার নিয়েছিলাম। এর কয়েক দিন পরে হঠাৎ করে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। এক কেজির দাম দুই কেজির সমপরিমাণ হয়ে যায়। এদিকে যিনি ধার দিয়েছেন, বর্তমানে তারও তেলের খুব প্রয়োজন।

জানার বিষয় হল, এখন কি আমাকে দাম বেশি হলেও দুই কেজি তেলই পরিশোধ করতে হবে, নাকি পূর্বের মূল্য হিসেবে বর্তমানে যে পরিমাণ তেল হয় তা পরিশোধ করলেই চলবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

কোনো বস্তু ধার নিলে নিয়ম হল, যে বস্তু যেই পরিমাণ ধার নেওয়া হয়েছে, ঠিক সে পরিমাণই ফেরত দেওয়া। এক্ষেত্রে উক্ত বস্তুর মূল্য কমল কি বাড়ল- তা দেখার বিষয় নয়। সুতরাং বর্তমান বাজারে তেলের মূল্য বেশি হলেও আপনাকে সমপরিমাণ তেলই পরিশোধ করতে হবে। পূর্বের মূল্য হিসাবে তেল পরিশোধ করা বা কম দেওয়া জায়েয হবে না।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৪/২৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/৩৯৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৩; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬২; রদ্দুল মুহতার ৫/১৬২

Sharable Link

মুহাম্মাদ হেলাল উদ্দীন - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬২১৩. Question

কয়েক সপ্তাহ আগে আমি একটি চশমার দোকান থেকে আমার চশমার গ্লাস পরিবর্তন করি। পরিবর্তন করার সময় ফটোসান গ্লাস লাগাতে বলি এবং ৩৫০ টাকা দিয়ে গ্লাস পরিবর্তন করি। বাড়িতে এসে পরের দিন দেখি, দোকানদার ফটোসান গ্লাস না দিয়ে সাধারণ একটি কম দামী গ্লাস লাগিয়ে দিয়েছে।

দোকান থেকে আনার সময় রাতের বেলা হওয়ার কারণে আমি দেখেও বুঝতে পারিনি যে এটা ফটোসান গ্লাস নয়।

এখন জানার বিষয় হল, আমি কি ঐ দোকানদারকে এই সাধারণ গ্লাসটি ফেরত দিতে পারব? এবং এর পরিবর্তে ফটোসান গ্লাস লাগিয়ে নিতে পারব?

Answer

আপনি যেহেতু ফটোসান গ্লাস লাগানোর চুক্তির ভিত্তিতে তাকে টাকা দিয়েছেন, তাই চুক্তি অনুযায়ী না হওয়ার কারণে ঐ গ্লাসটি ফেরত দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে দোকানদারের জন্য জরুরি হল, আপনার দেওয়া টাকা ফেরত দেওয়া। কিংবা এক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী ফটোসান গ্লাসও লাগিয়ে দিতে পারে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/১২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/৩১৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/২৪; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/২৫৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইবনে আলী - কুমিল্লা

৬২১৫. Question

আমি একটি প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ভবনের ওযুখানা, গোসলখানা, বারান্দাসহ বিভিন্ন জায়গায় কখনো এক, দুই বা পাঁচ টাকার কয়েন বা পাঁচ-দশ টাকার নোট কয়েক দিন যাবৎ পড়ে থাকে। আমি এগুলো উঠিয়ে এক জায়গায় জমা করেছি। সব মিলে দুই-তিন শত টাকার মত হয়েছে। আমাদের মাদরাসায় একটি দাওয়াতী ফান্ড আছে। ঐ ফান্ডের জমাকৃত টাকা দ্বারা সাধারণত দাওয়াহ বিভাগের পাঠাগারের জন্য কোনো বই কেনা হয় বা ফটোকপি করা হয়। কখনো কখনো ঐ বিভাগের দাঈদেরকে কোথাও দাওয়াতী কাজে পাঠালে তাদের আসা-যাওয়া ও খাবারের খরচ ঐ ফান্ড থেকে দেওয়া হয়। আমি ঐ কুড়ানো টাকাগুলো ঐ ফান্ডে দিতে চাচ্ছি।

মুহতারামের কাছে জানতে চাচ্ছি ঐ টাকাগুলো কি ঐ ফান্ডে দিতে পারব?

Answer

কুড়ানো টাকার মালিক না পাওয়া গেলে নিয়ম হল তা গরীবদেরকে সদকা করে দেওয়া। তাই কুড়ানো টাকাগুলো প্রশ্নোক্ত ফান্ডে দিতে পারবেন না। হাঁ, দাঈদের মধ্যে যাকাত গ্রহণ করতে পারে- এমন গরীব কেউ থাকলে তাকে উক্ত টাকা দিতে পারবেন।

-মুসান্নাফে আব্দুর রায্যযাক, বর্ণনা ১৮৬৩০; কিতাবুল আছল ৯/৫০৫; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৪/৫৫; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২৯৯;  ফাতহুল কাদীর ৫/২৫৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৯১; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৭৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ শাব্বির আহমদ - লক্ষ্মীপুর

৬২১৬. Question

আমি একটি গাড়ী ক্রয় করি এবং ভবিষ্যতে গাড়ীর সমস্যার কথা ভেবে কোম্পানির সাথে ইন্সুরেন্স করি। অর্থাৎ এই মর্মে চুক্তিবদ্ধ হই যে, যদি আমার গাড়ী কোনো এক্সিডেন্ট বা ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাহলে তার ক্ষতিপূরণ কোম্পানি বহন করবে এবং এজন্য আমাকে নির্দিষ্টহারে প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে হবে। যদি গাড়ীর কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আমি জমাকৃত টাকার বিনিময়ে কিছুই ফেরত পাব না।

জানার বিষয় হল, এমন ইন্সুরেন্স সুবিধা গ্রহণ করা জায়েয আছে কি না? দলীলসহ জানালে উপকৃত হতাম।

Answer

প্রচলিত ধারার ইন্সুরেন্স শরীয়তের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। কেননা রিবা, কিমার ও গরার- এ তিনটিই ইন্সুরেন্সে রয়েছে। যার প্রত্যেকটি ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ ، فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ.

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং যা কিছু সুদ কারো কাছে বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও; যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তা না কর তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা জেনে নাও। [সূরা বাকারা (২) :  ২৭৮-২৭৯]

হাদীস শরীফে এসেছে, জাবের রা. থেকে বর্ণিত-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤْكِلَهُ، وَكَاتِبَهُ، وَشَاهِدَيْهِ، وَقَالَ: هُمْ سَوَاءٌ.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রিবা তথা সুদ গ্রহীতা, সুদদাতা, সুদী চুক্তির লেখক এবং সুদী লেনদেনের সাক্ষী সবাইকে অভিসম্পাৎ করেছেন এবং বলেছেন, তারা সকলেই সমান। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৫৯৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْاَنْصَابُ وَالْاَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطٰنِ فَاجْتَنِبُوْهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ.

হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, পূজার বস্তু ও জুয়ার তীর এসবই অপবিত্র, শয়তানের কাজ। অতএব, এসব থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা সফলকাম হও। -সূরা মায়েদা (৫) : ৯০

সুতরাং মুসলমানদের ইন্সুরেন্স করা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে ইন্সুরেন্স করার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকে, তাহলে কোনো নির্ভরযোগ্য আলেম থেকে অথবা কোনো দারুল ইফতায় বিস্তারিত বিষয় জানিয়ে মাসআলা গ্রহণ করবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে।

-মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, জিদ্দা ২/২/৫৪৫; ফিকহুন নাওয়াযেল ৩/২৬৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/১৬১

Sharable Link

জুবাইর আহমাদ - সদরঘাট, ঢাকা

৬২১৭. Question

কুরবানীর উদ্দেশ্যে কেনা গরুটি একদিন চুরি হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাইনি। আমার প্রশ্ন হল, কুরবানীর উদ্দেশ্যে কেনা গরু চুরি হওয়ার কারণে আমার কুরবানী মাফ হয়ে যাবে, নাকি আমাকে আবার কুরবানী করতে হবে?

Answer

আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে আরেকটি পশু ব্যবস্থা করে কুরবানী করতে হবে। সেক্ষেত্রে কমপক্ষে একটি ছাগল অথবা গরুর এক-সপ্তমাংশ কুরবানী করতে হবে। উক্ত পশু চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে কুরবানী মাফ হবে না। আর যদি আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব না হয়; বরং নফল কুরবানীর নিয়তে পশু ক্রয় করে থাকেন, তাহলে এক্ষেত্রে পশুটি চুরি হয়ে যাওয়ার পর অন্য পশু ব্যবস্থা করে কুরবানী করতে হবে না। অবশ্য যদি উক্ত বছর ১২ যিলহজ্বের ভেতর হারানো পশুটি ফেরত পেয়ে যান তাহলে সেটি কুরবানী করে নেবেন।

-কিতাবুল আছল ৫/৪১০; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৬

Sharable Link

আব্দুল খালেক - নওগাঁ

৬২১৮. Question

কয়েক দিন আগে আমার ছোট ছেলে (বয়স ৭ দিন)-এর আকীকা করি। উক্ত আকীকা অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন ধরনের গিফট প্রদান করেন। যেমন, বাচ্চার কাপড়-চোপর, খেলনা ইত্যাদি। সেখানে অনেকেই সরাসরি আমাদের হাতে টাকা প্রদান করেন। এই অনুষ্ঠানে মোটা অংকের টাকা আমাদের হাতে আসে। তাই হুজুরের কাছে জানতে চাই, উক্ত অনুষ্ঠানে প্রাপ্ত টাকাগুলো কি ছেলের ভরণ-পোষণে খরচ করা জরুরি, নাকি আমরা আমাদের অন্যান্য প্রয়োজনেও খরচ করতে পারব? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

Answer

সাধারণত আকীকা, খতনা ইত্যাদি বাচ্চার অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজনরা যেসব টাকা-পয়সা প্রদান করে থাকে তা সামাজিক প্রচলন হিসেবে মা-বাবাকে দেওয়াই উদ্দেশ্য থাকে। তাই এই টাকার মালিক সন্তানের মা-বাবা। তাই তারা নিজেদের প্রয়োজনেও খরচ করতে পারবেন অথবা সন্তানের ভরণ-পোষণেও খরচ করতে পারেন। তবে কেউ সন্তানকেই হাদিয়া দিচ্ছে বলে প্রকাশ করলে অথবা বাচ্চার ব্যবহার্য আসবাবপত্র দিলে তার মালিক সন্তানই হবে। সুতরাং এজাতীয় টাকা ও জিনিসপত্র সন্তানের জন্যই ব্যয় করতে হবে

-আলফাতাওয়া মিন আকাবিলীল মাশায়েখ, পৃ. ৫১৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪০০; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৬৪; দুরারুল হুক্কাম শরহু মাজাল্লাতিল আহকাম ২/৪৮২; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৬৯৬

Sharable Link

হাসান আহমাদ - বনানী, ঢাকা

৬২১৯. Question

আমার বড় ভাই দুই সন্তান রেখে মারা যান। তারা এখন লেখা-পড়া করছে। তাদের কোনো উপার্জন নেই। আমার বাবা তাদের খরচ বহন করেন। একবার আমার বাবা নাতিদের সামনে বললেন, আমার অমুক প্লটটি আমি আমার দুই নাতির জন্য ওসিয়ত করলাম তার কয়েক মাস পর এক ব্যক্তি ঐ প্লটটি কিনতে চাইলে আমার বাবা প্লটটি তার কাছে ভালো দামে বিক্রি করে দেন। পরে নাতিরা তাকে মনে করিয়ে দেয়, প্লটটি তো আপনি আমাদের জন্য ওসিয়ত করেছিলেন। তখন আমার বাবা বলেন, চিন্তা করো না, ঐ প্লটের পরিবর্তে আমি তোমাদের জন্য আমার অমুক দোকানটি ওসিয়ত করলাম।

হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, আমার বাবার জন্য উক্ত ওসিয়তকৃত প্লটটি বিক্রি করা এবং ওসিয়ত রদবদল করা জায়েয হয়েছে কি?

Answer

ওসিয়ত কার্যকর হয় ওসিয়তকারীর মৃত্যুর পর। তাই ওসিয়তকারী চাইলে তার জীবদ্দশায় ওসিয়ত বাতিল করতে পারে বা ওসিয়ত রদবদল করতে পারে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবার জন্য ওসিয়তকৃত প্লটটি বিক্রি করা এবং এর পরিবর্তে দোকানের ওসিয়ত করা জায়েয হয়েছে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩১৪৪৯; আলমুহীতুর রাযাবী ৯/৩৮৬; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৪৯৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২০/৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/৯২; রদ্দুল মুহতার ৬/৬৫৮

Sharable Link

হেলাল মিয়া - ফরিদপুর

৬২২০. Question

আমরা আমাদের পুকুরে মাছ-চাষ করি। কখনো কখনো দেখা যায় যে, এক-দুটো মাছ মরে ভেসে ওঠে। মাছের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও দেখা যায় না। প্রশ্ন হল, এধরনের মরা মাছ খাওয়া যাবে কি না?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মাছ যদি স্বাভাবিকভাবেই মরে ভেসে ওঠে, তাহলে তা খাওয়া যাবে না। কেননা কোনো কারণ ছাড়া যে মাছ মরে যায় তা খাওয়া জায়েয নয়। তবে যদি কোনো কারণবশত মাছ মরে যায় যেমন, পুকুরে খাবার বা অন্য কোনো কিছু দেওয়ার কারণে বা কোনো প্রাণীর আঘাতের কারণে অথবা পানি অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা হওয়ার কারণে ইত্যাদি, তাহলে উক্ত মাছ খাওয়া যাবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৩৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/৩০১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৪৯১; দুরারুল হুক্কাম ১/২৮০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০৬ 

Sharable Link