ইমরান হুসাইন - সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম

৪১৩০. Question

নারীদেরকে সালাম দেওয়া যাবে কি না? তারা যদি সালাম দেয় তাহলে কি তার জওয়াব দেওয়া যাবে? বিশেষত মোবাইলে কথা বলার সময় অনেক নারীই সালাম দেয় তাদের সালামের জওয়াব দেওয়া যাবে কি না?

 

Answer

গায়রে মাহরাম নারীদের সাথে বিনা প্রয়োজনে সালাম আদান প্রদান করা যাবে না। যেমন, পথে চলাচল করা অবস্থায় তাদেরকে সালাম দেওয়া যাবে না। তেমনি তারা সালাম দিলে তার উত্তর শুনিয়ে দেওয়া যাবে না। হাঁ, কোনো প্রয়োজনে তাদের সাথে কথা বলতে হলে পর্দা রক্ষা করে কথা বলবে এবং এক্ষেত্রে সালামের মাধ্যমে কথা শুরু করাটাই উত্তম। এমনিভাবে মোবাইলে কথা বলার সময়ও সালাম আদান প্রদান করা যাবে। আর মাহরাম নারীদের সাথে সর্বাবস্থায় সালাম আদান প্রদান করা যাবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬৩০০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৯৪৪৯; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৪৬৮; আননাহরুল ফায়েক ১/২৭১; রদ্দুল মুহতার ১/৬১৬

Sharable Link

কুতুবুদ্দীন - সিলেট

৪১৩১ (ক). Question

আমাদের বাড়ির পাশে কিছু হিন্দু বসবাস করে। একদিন তাদের একজন আমাদের একটি উপকার করলে আমি বলি, আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘায়ু করেন। আমার এক ভগ্নিপতি এ কথা শুনতে পেয়ে বললেন, অমুসলিমের জন্য কি দুআ করা যায়? আমি তার জবাবে কিছু বলতে পারিনি। জানতে চাই, অমুসলিমের জন্য দুআ করার বিধান কী? কোন্ দুআ করা যাবে এবং কোন্ দুআ করা যাবে না। বিস্তারিত জানাবেন।

 

Answer

অমুসলিমের জন্য ক্ষেত্রবিশেষে দীর্ঘায়ু, সমৃদ্ধি, প্রাচুর্য ও সুস্থতা ইত্যাদি জাগতিক বিষয়ে দুআ করা জায়েয আছে। এ ব্যাপারে হাদীস-আসারে প্রমাণ আছে।

عَنْ إبْرَاهِيمَ، قَالَ: جَاءَ يَهُودِيٌ إلَى النَبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: ادْعُ اللَهَ لِي، فَقَالَ: كَثَرَ اللَهُ مَالَك وَوَلَدَك وَأَصَحَ جِسْمَك وَأَطَال عُمْرَك.

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, রাসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একজন ইহুদী এসে বলল, আমার জন্য দুআ করুন। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমার সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দিন। তোমাকে সুস্থতা দান করুন এবং তোমাকে দীর্ঘজীবী করুন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬৩৪২)

عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: كَانَ لَهُ مَجُوسٌ يَعْمَلُونَ لَهُ فِي أَرْضِهِ وَكَانَ يَقُولُ لَهُمْ: أَطَالَ اللَهُ أَعْمَارَكُمْ، وَأَكْثَرَ أَمْوَالَكُمْ، فَكَانُوا يَفْرَحُونَ بِذَلِكَ.

আবু বকর ইবনে আনাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁর (আনাস রা.-এর) জমিতে কিছু অগ্নিপূজক কাজ করত। তিনি তাদেরকে বলতেন, আল্লাহ তোমাদের দীর্ঘায়ু করুন, তোমাদের সম্পদ বাড়িয়ে দিন। এই দুআ পেয়ে তারা খুশি হত। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৩০৪৮০)

তাই আপনার প্রশ্নোক্ত দুআ সহীহ হয়েছে। তবে অমুসলিমের জন্য দীর্ঘায়ুর দুআ করার ক্ষেত্রে এ নিয়ত করবে যে, হায়াত পেলে হয়ত ঈমানের তাওফীক হতে পারে। আর অমুসলিমের জন্য হেদায়েতের দুআ করা সওয়াবের কাজ; বরং তা দায়িত্ব ও কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। তবে যে ব্যক্তি অমুসলিম অবস্থায় মারা গেছে তার জন্য মাগফিরাত ও জান্নাতের দুআ করা যাবে না। এটি সম্পূর্ণ নাজায়েয। আল্লাহ তাআলা বলেন,

مَا كَانَ لِلنَّبِیِّ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ یَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِیْنَ وَ لَوْ كَانُوْۤا اُولِیْ قُرْبٰی مِنْۢ بَعْدِ مَا تَبَیَّنَ لَهُمْ اَنَّهُمْ اَصْحٰبُ الْجَحِیْمِ.

নবী ও মুমিনদের জন্য সঙ্গত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যদিও তারা নিকটাত্মীয় হোক না কেন। একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে, তারা জাহান্নামবাসী। (সূরা তাওবা (৯) : ১১৩)

-আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস ১১১২, ১১১৩; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৬৩৮৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৮২৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৬৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০৪; আলইখতিয়ার ৪/১৪৫-১৪৬

Sharable Link