নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - উত্তরা, ঢাকা

১৩৩৬. Question

আমার বড় খালা অসুস্থ থাকার কারণে আমার মা আমার খালাতো বোনকে দুধ পান করিয়েছেন। এখন আমার ঐ দুধবোনের ছোট বা বড় কোনো বোনের সাথে আমার বিবাহ বন্ধন জায়েয হবে কি না? দলীল-প্রমাণসহ জানতে চাই।

Answer

দুধবোনের ছোট বা বড় বোন আপনার মাহরাম নয়। তাই তার সাথে আপনার বিবাহ জায়েয হবে।

-আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৭, আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭

Sharable Link

মুহাম্মদ শহিদুর রহমান - কানাইপুর, ফরিদপুর

১৩৩৭. Question

আমাদের এলাকায় বেশ কিছুদিন যাবত একটা ব্যবসা চালু হয়েছে। যেটাকে মাল্টি মিডিয়া সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা বলে। যার কর্ম পদ্ধতি হল, নির্দিষ্ট মূল্যের পণ্য ক্রয় করে সদস্য হতে হবে। এই সদস্য আরো দুজনকে সদস্য বানাবে। ঐ দুজন আরো চারজনকে। এভাবে যত সদস্য বাড়বে প্রথম সদস্য যার মাধ্যমে এরা এসেছে- তার বেতনও বাড়তে থাকবে। অবশ্য এক পর্যায়ে গিয়ে সদস্য বাড়লেও বেতন বাড়বে না।

আমাদের এলাকার অনেক দ্বীনদার ব্যবসায়ী ও অনেক আলেম এই ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। কোম্পানির ডাইরেক্টর বলেছে, আমাদের পদ্ধতি জায়েয। মদীনা থেকে ফতোয়া আনা হয়েছে। এবং বলেছেন, আমাদের সেমিনার দেখা ছাড়া সঠিক বলা সম্ভব না।

এখন প্রশ্ন হল, এই ধরনের ব্যবসার বিধান কী? জায়েয হলে দলীল কী? নাজায়েয হলে কোন কোন কারণে? জায়েয পদ্ধতি কী হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

প্রশ্নে বর্ণিত মাল্টি লেভেল বা নেটওয়ার্ক পদ্ধতির কারবার জায়েয নয়। কেননা এতে ইসলামী শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ বহু কারণ বিদ্যমান। এ বিষয়টির উপর দীর্ঘ পর্যালোচনা ও গবেষণা করে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া মুফতী বোর্ড ঢাকা একটি বিস্তারিত ফাতাওয়া পুস্তিকা  আকারে প্রকাশ করেছে।  বিস্তারিত জানার জন্য তা দেখা যেতে পারে।

Sharable Link

মুনীরুল আরেফীন - দেওটি, নোয়াখালী

১৩৩৮. Question

মুমতাজ মিয়া আজ থেকে ২৭ বছর পূর্বে ইন্তেকাল করেন। ইন্তেকালের সময় তিনি ২ ছেলে, ২ মেয়ে ও এক স্ত্রী রেখে যান। তিনি জীবদ্দশায় ২ মেয়েকে বিবাহ দিয়ে যান। মৃত্যুকালে বড় ছেলের বয়স ২২ বছর আর ছোট ছেলের বয়স ১০/১১ বছর ছিল।

মুমতাজ মিয়া ইন্তেকালের সময় অনেক জায়গা-জমি রেখে যান। সাথে দুইটি ট্রাকও রেখে যান। যার একটি বড় ছেলের নামে অপরটি নিজের নামে ছিল।

মুমতাজ মিয়ার মৃত্যুর পর বড় ছেলে গাড়ি এবং জমি-জমা দেখাশুনা করেন। আর ছোট ছেলে ১৯/২০ বছর বয়স পর্যন্ত লেখা-পড়া করেন।

ছোট ছেলে এরপর বাড়িতে এসে নিজের মা, বড় ভাইয়ের পরিবার, সন্তানদের দেখাশোনা এবং জমি-জমা দেখাশুনার সাথে সাথে গ্রামের একটি স্কুলেও মাস্টারি করতেন। আর বড় ভাই ঢাকায় গাড়ি দেখাশুনা করতেন। অর্থাৎ ছোট ভাই বাড়িতে জায়গা-জমি ইত্যাদি দেখতেন আর বড় ভাই ঢাকায় গাড়ি  দেখাশুনা করতেন। এর মধ্যে চারটি ট্রাক তাদের মালিকানায় আসে। দুটি পিতার ইন্তেকালের সময়ের আর দুটি ক্রয় করা হয়েছে আগের দুটির লাভ দিয়ে। মোট চারটি ট্রাকের মধ্যে এখন দুটি বড় ভাইয়ের নামে আর দুটি ছোট ভাইয়ের নামে।

আজ থেকে ছয় বছর পূর্বে ছোট ভাই স্কুলের চাকুরী ছেড়ে দেন। তখন বাড়িতে একটি বিল্ডিং করা হয়। যা ঐ ট্রাকের আয় দ্বারা নির্মিত।

ছোট ভাই চাকুরী ছাড়ার পর থেকে উভয় ভাই পালাক্রমে ঢাকায় ও গ্রামে গাড়ি, জায়গা-জমি দেখাশুনা করেন। এ পর্যন্ত উভয় পরিবার একসাথে ছিল এবং এ পর্যন্ত ট্রাকের আয় থেকে তাদের সংসার চলত।

বর্তমানে দুই ভাইয়ের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ এ নিয়ে যে, বড় ভাই বলেন- বাবা আমাকে ভালোবেসে গাড়ি দিয়ে গেছেন। তার লাভ থেকে আমি আরো দুটি ট্রাক ক্রয় করেছি এবং বিল্ডিং বানিয়েছি। সুতরাং এগুলোর মালিক আমি নিজে একাই। একথা বলে তিনি ছোট ভাই, বোন ও মাকে ঘর হতে বের হয়ে যেতে বলেন।

উল্লেখ্য যে, বাবা শেষ বয়সে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তখন তার সকল ব্যবসা বড় ছেলেই দেখাশুনা করত। বাবা যতদিন হিসাব নেওয়ার মত ছিলেন ততদিন তিনি ব্যবসার সকল হিসাব নিতেন। এমনকি তার নামে যে ট্রাক রয়েছে সেটারও হিসাব নিতেন। এর আয়-ব্যয় সব বাবারই গণ্য করা হত। এরপর বাবা আরো দুর্বল হয়ে পড়লে বাবার পক্ষ হতে সকল হিসাব নিতেন তার এক বন্ধু। এমনকি বাবার মৃত্যুর পরও ঐ বন্ধু সকল হিসাব-নিকাশ নিতেন।

এখন প্রশ্ন হল, উক্ত গাড়ি এবং বিল্ডিং এর হক্বদার কে কে হবেন।

বি.দ্র. এ পর্যন্ত জায়গা-জমি কিছুই ভাগ করা হয়নি।

Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী যে ট্রাকটি বড় ছেলের নামে রয়েছে তা যেহেতু বাবার জীবদ্দশায় তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি এমনকি বড় ছেলে ব্যবসা পরিচালনার সময়ও উভয় ট্রাকের আয়-ব্যয় হিসাবও বাবাই বুঝে নিতেন। তাই তার নামে রেজিষ্ট্রেশন থাকলেও ঐ ট্রাকেরও মালিক বাবা নিজেই। হয়ত আইনগত কোনো সুবিধা হাসিলের জন্যই তার পিতা একটি ট্রাকের রেজিষ্ট্রেশন ছেলের নামে করেছেন। সুতরাং বড় ছেলে বাবার ব্যবসা পরিচালনা করে যা যা উন্নয়ন করেছে তার সব কিছুর মালিক হবেন বাবা এবং তার মৃত্যুর পর তার সকল ওয়ারিশগণ। সুতরাং প্রশ্নোক্ত প্রথম দুই ট্রাক এবং এর আয় থেকে কেনা পরের ট্রাক দুটি ও বিল্ডিং এর মালিক বাবার সকল ওয়ারিশগণ। বড় ছেলে একা এর মালিক হবে না।

-শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩২০, ফাতাওয়া খায়রিয়া ২/২৫২, রদ্দুল মুহতার ৪/৩২৫

Sharable Link