মুহাম্মাদ নাযীফা তাসনীম - নোয়াখালি

২৮৪৯. Question

আমি একজন কলেজছাত্রী। আমি নিয়মিত নামায আদায় করার ও ইসলামি বই-পুস্তক পড়ার চেষ্টা করি। কয়েকদিন আগে একটি কিতাবে পড়েছি, নেলপলিশ লাগালে অযু হয় না। আর অযু না হলে নামাযও হয় না। অথচ আমি নেলপলিশ লাগানো অবস্থায় অযু করে অনেক নামায আদায় করেছি। জানতে চাই, উক্ত কথাটি কি সঠিক? সঠিক হলে আমার অতীতের নামাযের হুকুম কী?

 

Answer

নেলপলিশ লাগানো অবস্থায় অযু করলে অযু হয় না। কেননা নেলপলিশ লাগালে নখের উপর আবরণ পড়ে যায়। ফলে নখে পানি পৌঁছে না। আর অযু না হলে নামাযও হয় না। সুতরাং নেলপলিশ লাগানো অবস্থায় অযু করে যত ওয়াক্ত ফরয ও ওয়াজিব নামায পড়েছেন সেসব নামাযের কাযা করে নিতে হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৮৮; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৭০; আলবাহরুর রায়েক ১/৪৭; আলমাওসূআহ ৪৩/৩৪৪

Sharable Link

শারমিন আক্তার বিথী - ফেনী

২৮৫০. Question

প্রতিদিন সকালে আমি কিছুক্ষণ কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করি। কোনো দিন ঠিক সে সময় আমার এক বছরের ছেলেটি বুকের দুধের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে। অযু ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কায় সহসা বাচ্চাকে দুধ দিই না, অন্য কিছু দিয়ে ভোলানোর চেষ্টা করি। কিন্তু এতে সব সময় কাজ হয় না। তখন আমার স্বামীও খুব বিরক্ত হন। এমতাবস্থায় আমি কী করতে পারি। জানালে কৃতজ্ঞ হব।


Answer

শিশুকে বুকের দুধ পান করালে অযু নষ্ট হয় না। তাই কুরআন তিলাওয়াতের সময় বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন হলে খাওয়াতে পারবেন। অতপর পুনরায় অযু না করে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবেন।

-আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ২৬; শরহু মুখতাসারিত তহাবী ১/৩৭০; আলআউসাত ১/২৬৩

Sharable Link

যাইদা ইসলাম - ভালুকা, মোমেনশাহী

২৮৫১. Question

কখনো এমন হয় যে আমি যোহরের নামাযের নিয়তে জায়নামাযে দাঁড়াই। কিন্তু তাকবীরে তাহরিমার সময় মুখে চলে আসে, মাগরিব বা ইশা। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী? ঐ নিয়তেই নামায শেষ করব নাকি নতুন করে আবার নিয়ত করতে হবে?


Answer

নিয়ত মূলত অন্তরের সংকল্পের নাম। তাই যোহরের নামাযের সময় অন্তরে যদি যোহরের কথাই থাকে কিন্তু মুখে ভুলবশত অন্য ওয়াক্তের কথা চলে আসে তাতে অসুবিধা হবে না। এক্ষেত্রে যোহর নামাযই আদায় হবে। কিন্তু যদি মুখে ভুল উচ্চারিত হয় আর অন্তরে কিছুই স্থির না থাকে বা মুখে যা উচ্চারণ করছে সংকল্পেও তা থাকে তবে মুখেরটাই ধর্তব্য হবে। সেক্ষেত্রে ওয়াক্তের ফরয আদায় হবে না। তাই তা পুনরায় আদায় করতে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ১/৪১৫

Sharable Link

আবু নুমান - শর্শদি মাদরাসা, ফেনী

২৮৫২. Question

ঈদের প্রথম খুতবার শুরুতে লাগাতার ৯ বার এবং দ্বিতীয় খুতবার শুরুতে সাতবার এবং খুতবার শেষে ১৪ বার তাকবীর বলার হুকুম কী? হাদীস-আসারে এর কোনো প্রমাণ আছে কি? আর এক্ষেত্রে শুধু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলবে, না পূর্ণ তকবীরে তাশরীকই পড়বে? দলিল-প্রমাণসহ বিস্তারিত জানতে চাই।

 

Answer

ঈদের প্রথম খুতবা শুরু করার আগে শুরুতে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার এভাবে লাগাতার নয় বার তাকবীর বলা এবং দ্বিতীয় খুতবার শুরু করার আগে সাতবার তাকবীর বলা

মুস্তাহাব। উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবাহ রাহ. ও ইসমাঈল ইবনে উমাইয়া রাহ. থেকে এটি বর্ণিত আছে। (আলআওসাত ৪/৩২৮; কিতাবুল উম ১/২৭৩)

দ্বিতীয় খুতবার শেষে ১৪ বার তাকবীর বলার কথা হাদীস-আসারে পাওয়া যায়নি। (এলাউস সুনান ৮/১৬১)

-আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/২৭৭; মাজমূ ৫/২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫০; এলাউস সুনান ৮/১৬১

Sharable Link

হাসিবুল ইসলাম - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

২৮৫৩. Question

জনৈক হাফেয সাহেব তারাবীর নামাযে সিজদার আয়াত তিলাওয়াতের পর তখনই সিজদা আদায় করে। কিন্তু সিজদা থেকে উঠার পর ভুলে ঐ সিজদার আয়াত আবারও তিলাওয়াত করে। এখন এর জন্য কি পুনরায় সিজদা করা ওয়াজিব হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

না, এক্ষেত্রে পুনরায় সিজদায়ে তিলাওয়াত করতে হবে না। কেননা নামাযের কোন রাকাতে একটি সিজদার আয়াত পড়ে সিজদা করার পর পরবর্তীতে ঐ আয়াত পুনরায় পড়লেও নতুন করে সিজদা ওয়াজিব হয় না।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৩/৩৮৫; কিতাবুল আসল ১/৩১২; আলজামিউল কাবীর ১০; শরহুল মুনইয়া ৫০৩; রদ্দুল মুহতার ২/১১৭

Sharable Link

ওয়েব থেকে প্রাপ্ত -

২৮৫৪. Question

কেউ যদি ফরয নামাযের প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের পর ভুলে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পড়ে তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে কি?


Answer

না, শুধু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। কেননা এতে তিন তাসবীহ পরিমাণ বিলম্ব হয় না। তবে ইচ্ছাকৃত এমনটি করা ঠিক নয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫১০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১৪; মাজমাউল আনহুর ১/২২১; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৫১০

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইমামুদ্দিন - কুমিল্লা

২৮৫৫. Question

যোহর অথবা জুমআর পূর্বের সুন্নত এবং ফজর নামাযের পূর্বের সুন্নত যদি কখনো ছুটে যায় তাহলে তা পরবর্তীতে আদায় করতে হবে কি? আর আদায় করলে সুন্নত হবে না নফল হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

যোহর ও জুমআর আগের সুন্নত ছুটে গেলে ফরযের পরে ওয়াক্তের মধ্যেই তা আদায় করে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে ফরযের পরের সুন্নত প্রথমে আদায় করবে এরপর পূর্বের ছুটে যাওয়া সুন্নত আদায় করবে। আর ওয়াক্তের মধ্যে আদায় করলে তা সুন্নত হিসেবেই আদায় হবে। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যোহরের পূর্বের চার রাকাত আদায় করতে না পারলে যোহরের পরে তা আদায় করতেন। (সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ৪২৬)

আর ফজরের সুন্নত ফরযের আগে আদায় করতে না পারলে ঐদিন সূর্য উদয়ের পর থেকে সূর্য ঢলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে তা পড়ে নিবে। আর সূর্য ঢলে যাওয়ার পর তা আদায় করলে নফল হিসাবে গণ্য হবে।

-ফাতহুল কাদীর ১/৪১৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৭৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৫৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩০২; এলাউস সুনান ৭/১৩৬

Sharable Link

ওয়েব থেকে প্রাপ্ত -

২৮৫৬. Question

মৃত ব্যক্তিকে গোসল করিয়ে টাকা নেওয়া জায়েয হবে কি?


Answer

কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে এলাকাবাসীর কর্তব্য হল তার গোসল, কাফন, জানাযা ও দাফনের ব্যবস্থা করা। এগুলো শরীয়ত কর্তৃক জীবিতদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই দায়িত্ব আদায়ের সার্থে কেবলমাত্র সওয়াবের নিয়তেই তা করা উচিত। যে ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির এলাকায় গোসলদাতা ব্যতীত এ কাজের উপযুক্ত অন্য কেউ না থাকে সেক্ষেত্রে তার জন্য বিনিময় গ্রহণ করা জায়েয হবে না। অবশ্য মৃতের গোসল দেওয়ার মত অন্য লোক থাকলে সেক্ষেত্রে এর বিনিময় আদান-প্রদান নাজায়েয নয়।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৯; আলমওসূআতুল ফিকহিয়্যাহ ১৩/৬৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৩; রদ্দুল মুহতার ২/১৯৯

Sharable Link

মাওলানা আবদুল আজিজ খন্দকার - কুমিল্লা

২৮৫৭. Question

কিছুদিন পূর্বে আমাদের গ্রামের কয়েকজন মুসল্লি ফজরের পর মসজিদের পাশের কবরস্থানে গিয়ে যিয়ারত করেন। যিয়ারতের পর তারা কবরস্থানকে পিছনে রেখে হাত উঠিয়ে দুআ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন লোক বিতর্ক করে যে, কবর যিয়ারতের পর ভিন্ন করে হাত উঠিয়ে দুআ করা লাগবে কি না? আর হাত উঠিয়ে দুআ করলে কীভাবে করবে, কবরকে সামনে করে দাঁড়াবে না পেছন করে? প্রমাণসহ বিষয়টি জানতে চাই।


Answer

কবর যিয়ারত শেষে কিবলামুখী হয়ে হাত উঠিয়ে দুআ করা জায়েয আছে, জরুরী নয়। তাই এ সময় কেউ দুআ করতে চাইলে কবরকে পেছনে বা পাশে রেখে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় হাত উঠিয়ে দুআ করবে। হাদীস শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘‘বাকী’’কবরস্থান যিয়ারত শেষে তিনবার হাত উঠিয়ে ছিলেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৯৭৪); সহীহ মুসলিমের ভাষ্যগ্রন্থ আলমিনহাজে ইমাম নববী রাহ. বলেন, এই হাদীস দ্বারা হাত উঠিয়ে দুআ করা মুস্তাহাব প্রমাণিত হয়। (আলমিনহাজ, শরহু মুসলিম, নববী ৭/৪৩)

আরেকটি হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ যুলবিজাদাইন রা. এর দাফনের কাজ শেষ করার পর কিবলামুখী হন, এবং উভয় হাত উঠিয়ে তার জন্য দুআ করেন যে, ইয়া আল্লাহ, আমি তার উপর সন্তুষ্ট, আপনিও তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। (হিলয়াতুল আউলিয়া ১/১২২; ফাতহুল বারী ১১/১৪৮)

-আলবেনায়াহ ৩/৩০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫০; শরহুল মুনইয়া ৬০৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৫০০

Sharable Link

আবু আবদুল্লাহ - ঢাকা

২৮৫৮. Question

আমি নরওয়ের প্রবাসী। আমি যে অঞ্চলে থাকি সেখানের শীত ও গ্রীষ্মে টানা দু মাস রাত ও দু মাস দিন থাকে। তাই জানার বিষয় হল, রমযানে কীভাবে রোযা রাখব?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের নিকটতম পার্শ্ববর্তী যেদেশে চবিবশ ঘণ্টা হিসাবে স্বাভাবিক নিয়মে দিন রাত হয় সে দেশের সময়সূচি অনুযায়ী নামায রোযা আদায় করবেন।

-রদ্দুল মুহতার ১/৩৬৬; তুহফাতুল মুহতাজ ২/১৯; আলমাজমূ ৩/৪৩; হাশিয়াতুশ শারওয়ানী ২/১৯; মাজমুআতুল ফাতাওয়াশ শারঈয়াহ ১৪/১০৩; ফিকহুন নাওয়াযিল ২/১৫২

Sharable Link

আবদুল্লাহ - কুড়িগ্রাম

২৮৫৯. Question

নাবালেগ ছেলে মেয়ে যদি রমযানের রোযা রেখে তা ভেঙ্গে ফেলে তাহলে কাযা করতে হবে কি না? জানালে কৃতার্থ হব।


Answer

না, নাবালেগ ছেলে মেয়ের উপর যেহেতু রোযা ফরয নয় তাই তারা রমযানেও কোন রোযা রেখে ভেঙ্গে ফেললে তা কাযা করতে হবে না।

-জামেউ আহকামিস সীগার ১/৫৯; হেদায়া ১/২২৩; আলইনায়াহ ২/২৮৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ সালেহ মামনূন - কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

২৮৬০. Question

গত রমযানে একদিন আমি অসুস্থ ছিলাম। রোযা অবস্থায় হঠাৎ আমার বমি এসে যায়। তখন এক লোক বলল, আপনার রোযা ভেঙ্গে গেছে। তার কথা শুনে আমি সন্দিহান হয়ে পড়ি। আসলেই কি আমার ঐ রোযাটি ভেঙ্গে গেছে?

 

Answer

না, আপনার ঐ রোযা ভাঙ্গেনি। কেননা রোযা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোযা নষ্ট হয় না।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২১৫; কিতাবুল আসল ২/১৯২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ মানাযির আহসান - নোয়াখালি

২৮৬১. Question

গত রমযানের দশ তারিখ দুপুরে আমার ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। বাধ্য হয়ে বিকেলে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন গ্রহণ করি। জানতে চাই, এতে কি আমার রোযা ভেঙ্গে গেছে?


Answer

না, এ কারণে আপনার রোযা ভাঙ্গেনি।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫; মাজাল্লা মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা : ১০, ২/৯৪; ফাতহুল কাদীর ২/২৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩

Sharable Link

আবদুল্লাহ আনসারী - ফেনী

২৮৬২. Question

রমযানের প্রথম কয়দিন আমার খুবই পিপাসা লাগে। তখন আমি ঘন ঘন কুলি করি। ফলে কষ্ট কিছুটা কমে। আমার জন্য তা করা কি ঠিক?

 


Answer

রোযার কারণে পিপাসায় কষ্ট হলে সওয়াবও বেশি হবে। এ সময় বেশি অস্থিরতা প্রকাশ করা ঠিক নয়। তদ্রূপ রোযা অবস্থায় ঘন ঘন কুলি করা বা বারবার মুখে পানি দেওয়াও অনুচিত। অবশ্য এ কারণে গলাতে পানি না গেলে রোযা নষ্ট হবে না।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৩৮; সুনানে আবু দাউদ ৩/১৫৯; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৬/২৪১; সুনানে আবু দাউদ ৩/১৫২; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৫; আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া ৯৯

Sharable Link

নুমান আহমদ - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

২৮৬৪. Question

মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ সেবনের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারবে কি এবং এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি না?


Answer

রমযান মাসে কোন মহিলা ওষুধ সেবন করে স্রাব বন্ধ রাখলে তাকে রোযা রাখতে হবে এবং তার এ রোযাগুলো সহীহ গণ্য হবে।

উল্লেখ্য, ঋতুস্রাব মহিলাদের একটি স্বাভাবিক বিষয়। কোন ওষুধ ইত্যাদির মাধ্যমে তা বন্ধ করলে শারীরিক ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই রমযানেও স্রাববন্ধকারী ওষুধ ব্যবহার না করাই উচিত।

(দেখুন : জামিউ আহকামিন নিসা ১/১৯৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/১৩৬)

Sharable Link

মাহবুব - জামালপুর

২৮৬৫. Question

আমাদের মসজিদের মুয়াযযিন সাহেব প্রতি বছর ইতিকাফে বসেন। এবারও তার ইতিকাফে বসার ইচ্ছা আছে। আমাদের মসজিদের বাইরে মুয়াযযিন সাহেবের কামরা। সে কামরায় মসজিদের মাইক আছে। আযান দিলে সেখানে গিয়ে দিতে হবে। প্রশ্ন হল, ইতিকাফ অবস্থায় মুয়াযযিন সাহেব আযান দেওয়ার জন্য তার কামরায় যেতে পারবে কি?


Answer

হ্যাঁ, আযান দেওয়ার জন্য ইতিকাফকারী মুয়াযযিনের কামরায় যাওয়া জায়েয। এ কারণে ইতিকাফ নষ্ট হবে না।

(দেখুন : আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮০; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০৩)

Sharable Link

ইমরান হাসান - মুন্সিগঞ্জ

২৮৬৬. Question

রোযা অবস্থায় কেউ যদি টিকা বা ইঞ্জেকশন নেয় তাহলে এতে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।


Answer

টিকা বা ইঞ্জেকশন নেওয়ার কারণে রোযা ভাঙ্গে না। তবে অসুস্থতা ছাড়া গ্লুকোজ জাতীয় ইঞ্জেকশন (যা খাবারের কাজ দেয়) নেওয়া মাকরূহ তাহরীমী।

(দেখুন : আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫; মাজাল্লা মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা ১০, ২/৯৪)

Sharable Link

মুহাম্মাদ রকিবুল ইসলাম - যাত্রাবাড়ি, ঢাকা

২৮৬৭. Question

এক ব্যক্তি গত রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফে বসে। কয়েকদিন পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে ইতিকাফ ছেড়ে বাড়িতে চলে আসতে হয়েছে। যার কারণে পরবর্তী দিনগুলোতে ইতিকাফ করা সম্ভব হয়নি। জানার বিষয় হল, এখন তার কী করণীয়? ইতিকাফটি তাকে কাযা করতে হবে কি না? কাযা করতে হলে সামনের রমযানে বা অন্য কোন সময় কাযা করতে পারবে কি না?


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিকে একদিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে। আর তা সামনের রমযানেও কাযা করতে পারবে। এজন্য সে কোন একদিন সূর্যাস্তের পর থেকে পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফ করবে। অবশ্য রমযানের বাইরে ইতিকাফটি কাযা করতে চাইলে দিনের বেলা নফল রোযাও রাখতে হবে।

(দেখুন : রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৪-৪৪৫; আহকামে ইতিকাফ ৫০)

Sharable Link

আতাউল্লাহ - নেত্রকোণা

২৮৬৮. Question

রোযা অবস্থায় গোসল করতে গিয়ে আমার কানে পানি ঢুকে গেছে। এতে আমার রোযার কোন সমস্যা হয়েছে কি? দয়া করে জানাবেন।


Answer

রোযা অবস্থায় কানের ভেতর পানি, তেল ইত্যাদি গেলে রোযার ক্ষতি হয় না। তাই আপনার ঐ রোযা আদায় হয়ে গেছে। 

(দেখুন : আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৬; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৮-২৭৯); ফিকহুন নাওয়াযিল ২/২৯৭; যাবিতুল মুফাততিরাত, পৃ. ৫৮

Sharable Link

রফিকুল ইসলাম - দিনাজপুর

২৮৬৯. Question

এক ব্যক্তি অসুস্থতার কারণে চোখে ড্রপ ব্যবহার করে এ সময় ওষুধের তিক্ততা গলায় অনুভব করে। প্রশ্ন হল, রোযা অবস্থায় এ ধরনের ড্রপ ব্যবহার করলে রোযা ভেঙ্গে যাবে কি? দয়া করে জানাবেন।


Answer

রোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করার কারণে গলায় ওষুধের তিক্ততা অনুভূত হলেও রোযা নষ্ট হয় না। সুতরাং রোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করতে কোন অসুবিধা নেই।

(দেখুন : ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৭৯; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৪

Sharable Link

শফিকুল ইসলাম - গাজীপুর

২৮৭০. Question

আমি ধুমপানে অভ্যস্ত। গত রমযান মাসে রোযা অবস্থায়ও যখন ধুমপান না করার কারণে অস্থিরতা অনুভব হয়েছে তখন একদিন সামান্য ধুমপান করেছি। এতে কি আমার রোযা ভেঙ্গে গেছে?


Answer

হ্যাঁ, ঐ রোযা ভেঙ্গে গেছে। কেননা সামান্য পরিমাণ ধুমপান করলেও রোযা ভেঙ্গে যায়। আর স্বেচ্ছায় ধুমপান করার কারণে আপনার উপর ঐ রোযার কাযা এবং কাফফারা উভয়টি আদায় করা ওয়াজিব হয়েছে। 

(দেখুন : আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৫০; ইমদাদুল ফাত্তাহ ৬৮১

Sharable Link

আবদুল্লাহ আনসারী -

২৮৭১. Question

আমাদের এক গরীব প্রতিবেশী বিদ্যুতের সাইট লাইন ব্যবহারের দায়ে আটক হন। পরে তার এবং তার পরিবারের অনুরোধে আমার পিতা তাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এবং নিজের যাকাতের টাকা থেকে ঐ  ব্যক্তির অনুমতিক্রমে তার জরিমানাসহ বিদ্যুত অফিসের বিল পরিশোধ করেন। এমতাবস্থায় আমার পিতার যাকাত আদায় হয়েছে কি? জানালে উপকৃত হব।


Answer

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির অনুমতিক্রমে তার বিল পরিশোধ করে দেওয়ার দ্বারা আপনার পিতার যাকাত আদায় হয়ে গেছে।

-মুসনাদে আহমদ ৩৪/২০৬; তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৫৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২৭২; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪৩; কিতাবুল আসল ২/১১; ফাতহুল কাদীর ২/২০৮

Sharable Link

আবদুল্লাহ আনসারী - ফেনী

২৮৭২. Question

কিছুদিন হল আমার আম্মা ইন্তেকাল করেছেন। আর আমার শ্বশুর ইন্তেকাল করেছেন বছরখানেক আগে। আমার দাদা বাবাকে পুনরায় বিবাহ করাতে চাচ্ছেন এবং আমার বিধবা শ্বাশুড়িকেই বৌ হিসেবে নির্বাচন করেছেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে এই বিবাহে কোন সমস্যা আছে কি না জানালে উপকৃত হব।

Answer

ছেলের বিধবা শ্বাশুড়িকে বিবাহ করা জায়েয। উভয় পক্ষ সম্মত হলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

-রদ্দুল মুহতার ৩/৩১; ইলাউস সুনান ১১/২৯

Sharable Link

মুশফিকুর রহমান - মুহাম্মাদনগর মাদরাসা খুলনা

২৮৭৩. Question

জনৈক ব্যক্তি বিবাহ করে ১৯৭১ সালে। তার বিবাহের মোহর ধার্য করা হয় ১০০ রুপি। কিন্তু সে এখনো তার মোহর পরিশোধ করেনি। এখন তার জন্য করণীয় কী? সে কি ১০০ রুপিই মোহর দিবে না বেশি দিবে?

উল্লেখ্য, সে সময় ১০০ রুপির মূল্য ১০ দিরহামের বেশি ছিল।


Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি যে মুদ্রা দ্বারা মহর ধার্য করেছিল তা পরবর্তীতে যেহেতু অচল হয়ে গেছে এবং নতুন মূল্যমানের নতুন মুদ্রা চালু হয়েছে তাই এখন ঐ ব্যক্তি স্ত্রীর মহর রূপার মূল্য হিসেবে আদায় করবে। অর্থাৎ মহর ধার্য করার সময় ১০০ রুপি দিয়ে যতটুকু রূপা পাওয়া যেত ততটুকু রূপা বা তার বর্তমান বাজারমূল্য পরিশোধ করে দিবে। এছাড়া মার্কিন ডলারের হিসেবেও তা পরিশোধ করা যাবে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে ১০০ রুপিতে যে কয় ডলার পাওয়া যেত এখন তত ডলার বা তার সমমূল্যের টাকা প্রদান করেও মহর আদায় করতে পারবে।

উল্লেখ্য যে, মহর স্ত্রীর প্রাপ্য অধিকার। স্বামীর কর্তব্য হল যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি স্ত্রীর মহর আদায় করে দেওয়া। কিন্তু বর্তমান সমাজে এ বিষয়ে অনেক অবহেলা করা হয়। লোক দেখানোর জন্য মোটা অংকের মহর ধার্য করা হয়। তারপর তা আদায়ের ক্ষেত্রে গড়িমসি করা হয়। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তা আদায়ও করা হয় না। এসব কিছুই জুলুম এর অন্তর্ভুক্ত।

-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৩৫৪; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৫১০; ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৫৩৩; রদ্দুল মুহতার ৩/১০০

Sharable Link

দিলরুবা উম্মে ইমরান - ভালুকা, মোমেনশাহী

২৮৭৪. Question

আমাদের মসজিদের জন্য ওয়াকফ কৃত জমি প্রায় ২০ কাঠা। এদিকে আমাদের এলাকায় একটা হেফযখানা ও কওমী মাদরাসার খুব প্রয়োজন। এখন এলাকার লোকেরা মসজিদের জমিতে মাদরাসা করতে চাইছে। এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? মসজিদের জমিতে মাদরাসা করা যাবে?


Answer

আপনাদের এলাকায় হেফযখানা ও কওমী মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জরুরত হলে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকেই অগ্রসর হতে হবে। এজন্য যৌথ উদ্যোগে পৃথক জায়গা রেজিস্ট্রি করে তাতে মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত মসজিদের ঐ পুরো জমি যদি মসজিদের  কাজে না লাগে তাহলে সেখানে মসজিদের অধীনে কুরআনী তালীমের জন্য পৃথক ব্যবস্থা করা জায়েয হবে। জেনে রাখা দরকার যে, কুরআন-হাদীসের শিক্ষা, দ্বীনী শিক্ষার প্রচার-প্রসার মসজিদের উদ্দেশ্যাবলীর অন্তর্ভুক্ত। দ্বীনী তালীমের এ ধারা মসজিদে নববী থেকেই চলে আসছে। তাই মসজিদের খালি জায়গায় মসজিদের ব্যবস্থাপনায় কুরআন-হাদীস ও দ্বীনী মৌলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়া জায়েয হবে।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২৮৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২২৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪, ৩৬

Sharable Link

মাহদী বিল্লাহ ও মাওলানা আবু হিমা মুহাম্মাদ হেমায়েতুল্লাহ - অরুয়াইল, সরাইল, বি.বাড়িয়া

২৮৭৫. Question

আমাদের এলাকায় কয়েকটি লেনদেন খুবই প্রচলিত। কিন্তু বৈধ কিনা আমার সন্দেহ হচ্ছে। নিম্নে এগুলোর বিবরণ উল্লেখ করছি।

১ম পদ্ধতি : সমিতির কাছে ঋণের আবেদন করলে সমিতি কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে সরাসরি নগদ অর্থ না দিয়ে এক কৌশল অবলম্বন করে। প্রথমে সমিতির নির্ধারিত ফরম পূরণ করত: আবেদনকারীকে নিয়ে সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত দোকানে চলে যায়। দোকানের কোন নির্দিষ্ট মালের স্ত্তপের দিকে ইঙ্গিত করে বলে যে, মালগুলি আমি (উদাহরণত) ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকায় খরিদ করলাম। অতপর ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা ব্যবসায়ীর হাতে দিয়ে আবেদনকারীকে বলে এ মালগুলি সমিতি আপনার কাছে ছয়মাস মিয়াদে ১,৪০,০০০/- (এক লক্ষ চল্লিশ) হাজার টাকায় বাকিতে বিক্রি করছে। আপনি মালগুলি দোকানীর কাছে বিক্রি করে নগদ টাকা নিয়া যেতে পারেন অথবা দোকানী নিজেই ৯৯,৫০০/- (নিরানববই হাজার পাঁচশত) টাকা আবেদনকারীকে দিয়ে বলে এই মালগুলি আমি আপনার কাছ থেকে ক্রয় করলাম।

২য় পদ্ধতি : সমিতির অফিস দ্বিতীয় তলায় এবং অফিসে বিক্রয়যোগ্য কিছু মালামাল আছে। নিচ তলায় মার্কেট এবং মার্কেটে সমিতির নির্ধারিত দোকান আছে। দোকানের কাজ হল বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মাল ক্রয় করে সমিতির অফিসে পৌঁছিয়ে দেওয়া। এ সমিতির বিনিয়োগ পদ্ধতি হল সমিতির কাছে ঋণ চাইলে সমিতি তাকে নগদ অর্থ না দিয়ে তার কাছে অফিসের রক্ষিত মাল বাকির উপর অধিক মূল্যে বিক্রি করে। অতপর ঋণপ্রার্থী উক্ত মাল নিজ আয়ত্তে নিয়ে নিচ তলার মার্কেটে সমিতির নির্ধারিত দোকানে নগদ অর্থে কম মূল্যে বিক্রি করে। এতে করে সমিতির সম্পদ সমিতির কাছেই ফিরে যায়। এবং এই বাকি ও নগদ ক্রয়ের আড়ালে সমিতির মোটা অংকের মুনাফা অর্জন হয়। আবেদনকারীর প্রয়োজনও মিটে যায়।

৩য় পদ্ধতি : ঋণ প্রার্থী একজন ব্যবসায়ী। তার ঠান্ডা পানিয় এর ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক লোকের নিকট ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা ঋণ চাইলেন। কিন্তু তিনি বিনা লাভে ঋণ দিতে প্রস্ত্তত নন। তাই তিনি এই পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন যে ঋণপ্রার্থীর দোকানের একটি ফ্রিজ ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা মূল্যে ক্রয় করলেন এবং (মালিকানা বোঝানোর জন্য) ফ্রিজে হাত রেখে ঋণপ্রার্থীর নিকট ছয় মাসের জন্য প্রতি মাসে ১২০০ (এক হাজার দুইশত) টাকা দরে ভাড়া দিলেন।  এবং শর্ত করে যে, ছয় মাস পর ঋণপ্রার্থী ঐ ফ্রিজটি পুনরায় ২০,০০০/- টাকা মূল্যে ক্রয় করে নিবেন। এতে করে বিনিয়োগ দাতা ফ্রিজের ভাড়ার নামে ছয় মাসে মুনাফা পেল ৭২০০/- (সাত হাজার দুইশত) টাকা এবং ছয় মাস পর ফ্রিজের মূল্য ফেরত বাবদ পেল ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা।

৪র্থ পদ্ধতি : এই বিনিয়োগের তরিকা হল, এক ব্যক্তি ফাল্গুন-চৈত্র মাসে প্রতি হাজারে ৩/৪ মণ ধান দরে লগ্নী করেন যা আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে পরিশোধ যোগ্য। সমস্যা দেখা দেয় পরিশোধের সময় গরিব বেচারা এত ধান পাবে কোথায়। অথবা যারা ১/২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ গ্রহণ করেছেন তারা এত ধান পাবে কোথায়। সমাধান কল্পে ঐ ব্যক্তি ঋণ গ্রহীতাকে নিয়ে চলে যায় তার পূর্ব নির্ধারিত ধানের আরতে বা ধান বোঝাই নৌকায়। অতপর ঋণগ্রহীতা বাজার দর হিসাব করে ধানের যা মূল্য আসে (মনে করেন হাজারে ৩ মণ ধরে এক লক্ষ টাকার লগ্নী ধান তিন শত মণ ৫০০ (পাঁচ শত) টাকা দরে তিন শত মণ ধানের মূল্য ১,৫০,০০০/- (এক লক্ষ পঞ্চাশ) হাজার টাকা। উক্ত টাকা ঋণ গ্রহীতা নৌকা বা আড়তের ব্যাপারীকে দিয়ে বলেন যে, আমি আপনার নৌকা বা আড়ত থেকে তিনশত মণ ধান ক্রয় করিলাম। এবং তা (লগ্নীদাতাকে লগ্নী পরিশোধার্তে দিয়ে দিলাম। এবার লগ্নীদাতা যেহেতু তিন শত মণ ধানের মালিক হয়ে গেলে তাই উক্ত ধান পুনরায় নৌকা বা আড়তের ব্যাপারীর কাছে এক হাজার টাকা কমে অর্থাৎ এক লক্ষ উনপঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রি করে  নগদ টাকা নিয়ে আসে। এতে করে ঐ ব্যক্তি মুনাফা ও মূলধন মিলে এক লক্ষ উনপঞ্চাশ হাজার টাকা পাইলেন। নৌকা বা আড়তের ব্যাপারী উক্ত কর্মটি সম্পাদন করে দেওয়ায় এক হাজার টাকা পেলেন। উল্লেখ্য উক্ত ক্রয়বিক্রয়ে কোন মাপ বা ওজন কিছুই করা হয় না। এমনকি উক্ত নৌকা বা আড়তে তিন শত মণ ধান আছে কি না? এ ব্যাপারেও কোন খোঁজ খবর থাকে না।

দলিলসহ পদ্ধতিগুলোর সমাধান দিয়া চির কৃতজ্ঞ করিবেন।

 

 

Answer

প্রশ্নে বর্ণিত সবকটি লেনদেনই নাজায়েয। এসব পদ্ধতি সুদ গ্রহণের অপকৌশলমাত্র। আর সুদ যেমনিভাবে সরাসরি হারাম তেমনিভাবে তা গ্রহণের জন্য হীলা বাহানা অবলম্বন করাও হারাম।

জেনে রাখা দরকার যে, ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেন বাস্তবমুখী কারবার। যা মালিকানা পরিবর্তন ও পণ্য হস্তান্তরের বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ত।

কিন্তু প্রশ্নোক্ত সবকটি পদ্ধতিতেই দেখা যাচ্ছে, পণ্য প্রথমে যার কাছে ছিল তার কাছেই থেকে যাচ্ছে। মাঝে শুধু বিভিন্ন লেনদেনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন প্রথম পদ্ধতি এক মাধ্যম হয়ে

এ পণ্যই আবার দোকানীর কাছে বিক্রি করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

অথচ পণ্য পূর্বে থেকে দোকানীর কাছেই আছে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতেও গ্রাহক সমিতির এক প্রতিনিধি থেকে পণ্য নিয়ে সমিতিরই আরেক প্রতিনিধির নিকট বিক্রি করে দিচ্ছে। অর্থাৎ সমিতির মাল সমিতির কাছেই থেকে যাচ্ছে।

তেমনি তৃতীয় পদ্ধতিতেও ফ্রিজ যার কাছে ছিল তার কাছেই আছে। মাঝে শুধু ফ্রিজের ক্রয়-বিক্রয় ও ভাড়ার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। একইভাবে চতুর্থ পদ্ধতিতেও ধানের আড়তে বা ধানবোঝাই নৌকায় গিয়ে শুধু ধান ক্রয়-বিক্রয়ের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ধান

যার কাছে যেভাবে ছিল তার কাছেই থেকে যাচ্ছে।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত কোন পদ্ধতিতেই টাকাদাতা ও গ্রহীতা কোন পক্ষেরই বাস্তবিক অর্থে পণ্য লেনদেন করা উদ্দেশ্য নয়। বরং গ্রাহককে ঋণ দিয়ে মেয়াদান্তে তার থেকে অতিরিক্ত নেওয়ার ছুতা হিসেবে এ পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা হয়েছে।

জানা কথা যে, ঋণ দিয়ে অতিরিক্ত নেওয়া সুদ। যেমনিভাবে সুদ হারাম ও ঘৃণিত তেমনিভাবে তা গ্রহণের জন্য হীলা-বাহানা অবলম্বন করাও হারাম ও ঘৃণিত। মনে রাখা দরকার যে, কোন ছুঁতা বা হীলা-বাহানা অবলম্বন করলেই সুদী লেনদেন বৈধ হয়ে যায় না। কারণ শরীয়তে মুআমালাত তথা লেনদেনের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ও হাকীকতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই কোন সুদী কারবারের শুধু নাম বদলে দিলেই তা বৈধ হয়ে যায় না।

অতএব মুসলমানের কর্তব্য হল, এ ধরনের হীলা-বাহানার মাধ্যমে উপার্জন না করে শরীয়ত স্বীকৃত পন্থায় লেনদেন করা। এবং সামর্থ্য থাকলে করযে হাসানা প্রদান করা।

-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৫০০৭; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১০/৫২৫; রদ্দুল মুহতার ৫/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৬৮; ফাতহুল কাদীর ৬/৩২৩; আলবাহরুর রায়েক ৬/২৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০৮; শরহুল মাজাল্লা ২/৪৫৩; ইলাউস সুনান ১৪/১৭৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ - যশোর

২৮৭৬. Question

আমি একটি জামে মসজিদের ক্যাশিয়ার। মসজিদের যাবতীয় ফান্ডের টাকা আমার দায়িত্বেই থাকে। সম্প্রতি মসজিদ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণ করবে। সে লক্ষ্যে মসজিদের একটি নির্মাণ ফান্ড করা হয়েছে এবং ইসলামী ব্যাংকে একটি একাউণ্ট খুলে সেখানেই উক্ত ফান্ডের টাকাগুলো রাখা হয়েছে। এখন জানার বিষয় হল, ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত মুনাফার টাকা মসজিদ নির্মাণ কাজে ব্যয় করা শরীয়তসম্মত হবে কি না? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।


Answer

ইসলামী ব্যাংকগুলোর অনেক বিনিয়োগ পদ্ধতি এবং সেগুলোর প্রয়োগ এখনো পরিপূর্ণ শরীয়ত সম্মত হয় না, তাই তাদের থেকে প্রাপ্ত মুনাফা মসজিদে ব্যয় করা ঠিক হবে না।

Sharable Link