মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ কাফী - বারিধারা, বসুন্ধরা

২২২০. Question

রফিক তার দুই ছেলের মাথায় হাত রেখে বলেছে, আমি কসম করছি, জীবনে আর জুয়া খেলব না। পরবর্তীতে সে জুয়া খেলেছে। প্রশ্ন হল, এই কসম ভাঙ্গার কারণে কি তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে?

 

Answer

হ্যাঁ, উক্ত কসম ভাঙ্গার কারণে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে। কাফফারা হল, পূর্ণ আহার গ্রহণ করতে পারে এমন দশজন মিসকীনের প্রত্যেককে দু বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় প্রদান করা। আর যদি তার এ পরিমাণ আর্থিক সামর্থ্য না থাকে তাহলে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা রাখা।

প্রকাশ থাকে যে, কসম কেবলমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা জায়েয। আল্লাহ তাআলা ব্যতীত অন্য কিছুর নামে  কসম করা জায়েয নয়। তদ্রূপ সন্তান বা কোনো মানুষের নামে বা মাথা ছুঁয়ে কসম করাও গুনাহ। অবশ্য এ ধরনের কসম করা অন্যায় হলেও তা অনেক ক্ষেত্রে সংগঠিত হয়ে যায় এবং ভেঙ্গে ফেললে কাফফারাও দিতে হয়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৬/৬৫, ৬/৩৬৭; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৪; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ২৪২; হেদায়া-ফাতহুল কাদীর ৪/৩০৮; রদ্দুল মুহতার ৩/৭১২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল হাকীম - বনশ্রী, রামপুরা

২২২১. Question

জনৈক ব্যক্তি মসজিদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ইমাম সাহেবকে সিজদার আয়াত তেলাওয়াত করতে শুনেছে। এ কারণে পথচারীর উপর সিজদা ওয়াজিব হয়েছে কি? ঐ ব্যক্তি যদি নামাযে শরিক হতে চায় তখনই বা তার কী করণীয়?


Answer

ঐ ব্যক্তির উপর তিলাওয়াতে সিজদা ওয়াজিব হয়েছে। সুতরাং সে সিজদার আয়াত শোনার পর যদি জামাতে শরিক না হয় তাহলে তাকে সিজদাটি একাকী আদায় করে নিতে হবে। আর যদি জামাতে শরিক হয় এবং ইমামের সাথে তিলাওয়াতে সিজদাটি  পেয়ে যায় তবে তো আদায় হয়ে গেল। যদি তিলাওয়াতের সিজদাটি না পায়, কিন্তু ঐ রাকাতের রুকু ইমামের সাথে পেয়ে যায় তাহলে তাকে তিলাওয়াতের সিজদাটি আর আদায় করতে হবে না। রাকাত পাওয়ার কারণে সিজদাও আদায় হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে। অবশ্য যদি ইমামের সাথে ঐ রাকাতের রুকু না পায় তাহলে নামাযের পর পৃথকভাবে সিজদাটি আদায় করে নিতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৩; মাবসূত, সারাখসী ২/১১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৭৮৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৭৫; শরহুল মুনইয়া ৫০০; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া ৭২

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইবরাহীম - টংগিবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ

২২২৩. Question

মাগরিবের নামায আদায়কালে মোসাম্মত আয়েশা বেগমের কাছে তার ছেলে চাবি চাইলে নামাযের হালতে কিবলামুখী হয়েই মাথা নেড়ে ইশারা করে চাবির স্থান দেখিয়ে দিয়েছেন। প্রশ্ন হল, এতে কি তার নামায নষ্ট হয়ে গেছে?


Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী মাথা নেড়ে ইশারা করার দ্বারা তার নামায ফাসেদ হয়নি। তবে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া নামাযে ইশারা করা অনুচিত। আর বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নামাযীকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করাটা অন্যায়।

-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৬৯; শরহুল মুনইয়া ৪৪৫; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ১৯২

Sharable Link

মুহাম্মাদ তাহসীন লাবীব - টঙ্গিবাড়ি, মুন্সীগঞ্জ

২২২৪. Question

যদি ইমাম সাহেব রুকু থেকে উঠার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর বলতে ভুলে যান তাহলে কি তাকে সাহু সিজদা করতে হবে?


Answer

না, এ কারণে সাহু সিজদা করতে হবে না। ইমামের জন্য উচ্চস্বরে তাকবীর বলা সুন্নত। আর সুন্নাত ছুটে গেলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না।

-তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১০৬-১০৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৫১১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৩; আলবাহরুর রায়েক ১/৩০৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ হামীম শরীফ - তেজগাও, ঢাকা

২২২৫. Question

হামীম বিয়ের সময় মহর দেয়নি। এখনো মহর বকেয়া রয়েছে। ইতোমধ্যে স্ত্রীর সাথে তার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে গেছে। এখন স্ত্রীকে তার প্রাপ্য মোহর আদায় করে দিতে হবে। আর এদিকে তার যাকাত বর্ষ দুই দিন পর শেষ হবে। মোহর আদায় করে দিলে তার সম্পদ যাকাতের নেসাবের চেয়ে কম হয়ে যাবে। প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় তার উপর কি যাকাত ফরয হবে?


Answer

বাস্তবেই যদি মোহর আদায় করলে হামীমের নিকট বছর শেষে নেসাব পরিমাণ সম্পদ  না থাকে তবে তার উপর যাকাত ফরয নয়। কেননা, বিবাহ-বিচ্ছেদের কারণে হামীমের উপর নগদে মোহর আদায় করা অপরিহার্য হয়ে গেছে। এখন তার কর্তব্য হল অবিলম্বে দেন মোহর আদায় করে দেওয়া।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৮৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৮৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ৩৮৯

Sharable Link

মুহাম্মাদ মাজহারুল ইসলাম - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

২২২৬. Question

আমার মহল্লার এক মহিলার ইন্তেকালের পর স্বামী তাকে দেখতে আসলে লোকজন তাকে দেখতে দেয়নি এবং তারা বলে, স্বামীর জন্য তার মৃত স্ত্রীর চেহারা দেখা জায়েয নেই। জানতে চাই, স্ত্রীর ইন্তেকালের পর স্বামী স্ত্রীর চেহারা দেখতে পারে কি না? তেমনিভাবে স্বামীর ইন্তেকালের পর স্ত্রী তার চেহারা দেখতে পারবে কি?


Answer

মৃত স্ত্রীর চেহারা স্বামী দেখতে পারবে। তদ্রূপ মৃত স্বামীর চেহারাও স্ত্রী দেখতে পারবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটিকে তার মৃত স্ত্রীর চেহারা দেখতে না দেওয়া অন্যায় হয়েছে।

-মুয়াত্তা ইমাম মালেক ৭৭; ইলাউস সুনান ৫/২২৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৯৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৩৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/৪০৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

২২২৭. Question

আমাদের গ্রামে কোনো মানুষ মারা গেলে পার্শ্ববর্তী গ্রামসমূহে ঘুরে ঘুরে মাইকে তার মৃত্যুর সংবাদ শুনানো হয়। এবং তার জানাযা নামাযে শরিক হওয়ার জন্য আহবান করা হয়। জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে এ কাজটি কি বৈধ?


Answer

কেউ মারা গেলে তার মৃত্যু সংবাদ প্রচার করা এবং জানাযার এলান করা জায়েয আছে। প্রয়োজনে মাইক দিয়েও প্রচার করা যাবে। এক্ষেত্রে উদ্দেশ্য থাকবে জানাযায় শরিক হওয়ার জন্য মানুষকে আহবান করা। তবে এতে মৃতের গুণগান প্রচার করা যাবে না। কেননা, হাদীসে মৃতের গুণগাণ ও বড়ত্ব বর্ণনা করে এলান করতে নিষেধ করা হয়েছে।

-সহীহ বুখারী ১/১৬৭; ফাতহুল বারী ৩/১৪০; উমদাতুল কারী ৭/২০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫৭

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলী হাসান - সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা

২২২৮. Question

 

জনৈক ব্যক্তির দশ বিঘা জমি আছে। এগুলোর ফসল দ্বারা সে তার পরিবারের খরচ চালিয়ে থাকে। অল্প কিছু জমা থাকে। কিন্তু তা খুবই অল্প। হজ্বের খরচ নেই। আর তার কাছে নগদ টাকা বা অন্য কোনো সম্পদও নেই। এখন জানতে চাই ওই জমি বিক্রি করে তার জন্য হজ্ব করা কি জরুরি?


 

Answer

হজ্বের যাতায়াত ও আনুষঙ্গিক খরচের জন্য যতটুকু জমি বিক্রি করা প্রয়োজন ঐ পরিমাণ জমি বিক্রি করার পর অবশিষ্ট জমি দ্বারা যদি তার পরিবারের খরচ ভালোভাবে চলে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে তার উপর হজ্ব ফরয। আর যদি ওই পরিমাণ জমি বিক্রি করলে অবশিষ্ট জমি দ্বারা পরিবারের খরচ চালানো কষ্টকর হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির উপর জমি বিক্রি করে হজ্ব করা ফরয নয়।

-জামে তিরমিযী ১/১০০; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; গুনইয়াতুন নাসিক ২০

Sharable Link

মুহাম্মাদ জুনায়েদ আহমদ - ফেনী

২২২৯. Question

আমরা জানি, কাপড়ে পেশাব বা এ জাতীয় কোনো তরল নাপাকি লাগলে তিনবার ভালোভাবে নিংড়িয়ে ধুতে হয়। এখন প্রশ্ন হল প্রবাহিত পানি যেমন নদী, বড় পুকুর বা টেপের পানিতে ধুলেও কি তিনবার নিংড়িয়ে ধুতে হবে?


Answer

নাপাক কাপড় যদি প্রবহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। কিন্তু বালতি বা এ ধরনের ছোট পাত্রে ধোয়া হলে তিনবার ধুতে হবে এবং প্রতিবার ধোয়ার পর উত্তমরূপে নিংড়িয়ে নিতে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭; শরহুল মুনইয়া ১৮৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আলআমিন - চাদপুর

২২৩০. Question

আমার বোনের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে ১২০ কি.মি. দূরে। বিয়ের পর থেকে সে নিয়মিত তার স্বামীর বাড়িতে থাকে। মাঝে মাঝে ১০-১২ দিনের জন্য আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। জানার বিষয় হল, আমাদের বাড়িতে আসলে নামায কসর পড়বে? না পুরো নামায আদায় করবে?


Answer

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার বোন পিতার বাড়িতে মুসাফির হবে। সুতরাং সেখানে পনের দিনের কম সময় অবস্থানের নিয়ত করলে নামায কসর করবে। আর পনের দিন কিংবা তার চেয়ে বেশি সময় অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম হবে এবং পূর্ণ নামায পড়বে।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৯৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ জামিল হাসান - সায়েদাবাদ, ঢাকা

২২৩১. Question

আমার বাসার ড্রয়িংরুমে শো কেসে সৌন্দর্যের জন্য কাঁচের প্লেট, জগ ও গ্লাস ইত্যাদি কিছু সামান রাখা আছে। এগুলোর মূল্য নেসাব পরিমাণ এবং পুরো বছরে কোনো দিন ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। জানতে চাই, এগুলোর যাকাত দিতে হবে কি?


Answer

না, ঐগুলোর যাকাত দিতে হবে না। ব্যবহারিক আসবাব প্রয়োজন অতিরিক্ত হলেও তার উপর যাকাত আসে না। তবে কুরবানী এবং সাদাকাতুল ফিতরের নেসাবের ক্ষেত্রে এগুলোর মূল্য ধর্তব্য হবে।

-কিতাবুল আসল ২/৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯১-৯২

Sharable Link

মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন - নোয়াখালি

২২৩২. Question

 

জনৈক ইমাম সাহেব ইশার নামাযে প্রথম রাকাতে ভুলবশত সূরা ফাতিহায়

اهدنا الصراط المستقيم

পর্যন্ত আস্তে পড়েন। স্মরণ হওয়ার পর পুনরায় সূরা ফাতিহা শুরু থেকে জোরে পড়েন এবং শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর সাহু সিজদা করেন। জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় নামাযের কি হুকুম?


 

Answer

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় সাহু সিজদা দেওয়ার কারণে ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। তবে যেখানে স্মরণ হয়েছে সেখান থেকে স্বশব্দে পড়া উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে সূরা ফাতিহা শুরু থেকে পড়া অনুত্তম হয়েছে।

-রদ্দুল মুহতার ১/৫৩২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/১৬৭; হেদায়া ১/১৫৮; আলমাবসূত, সারাখসী ১/২২২; আততাজরীদ ২/৭০৭; শরহুল মুনইয়া ৪৫৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৭৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ বিন মুনীর - কমলনগর

২২৩৩. Question

জনৈক ব্যক্তি ফজর নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে ভুলবশত সূরা ফাতিহার এক আয়াত পড়েনি এবং সাহু সিজদাও করেনি। জানার বিষয় হল, ঐ ব্যক্তির নামায সহীহ হয়েছে কি?


Answer

নামাযে পূর্ণ সূরা ফাতিহা পড়া ওয়াজিব। সূরা ফাতিহার এক আয়াতও ভুলে ছুটে গেলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছে। সাহু সিজদা না দেওয়ার কারণে নামাযটি পুনরায় পড়ে নেওয়া আবশ্যক।

-আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৫৮; আসসিআয়াহ ২/১২৬; আননাহরুল ফায়েক ১/৩২৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলালমারাকী ১৩৫; মিনহাতুল খালেক আলা হামিশিল বাহর ২/৯৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম - মাগুরা

২২৩৪. Question

এক ব্যক্তির মুদীখানার দোকান আছে। তার এই ব্যবসার যাকাত এসেছে ১০ হাজার টাকা। সে এক গরীব লোকের নিকট ৫ হাজার টাকা পাবে। এখন যদি ঋণগ্রহিতাকে ঐ টাকাগুলো মাফ করে দেয় তাহলে ঐ ব্যক্তির যাকাত আদায় হবে কি?


Answer

না। এভাবে পাওনা টাকা মাফ করে দিলে যাকাত আদায় হবে না। এক্ষেত্রে করণীয় হল, ঋণী ব্যক্তি যদি যাকাত গ্রহণের যোগ্য হয় তাহলে তাকে প্রথমে যাকাতের টাকা দিয়ে দিবে। এরপর তার থেকে নিজের ঋণ উসূল করে নিবে। এ পন্থায় নিজের যাকাতও আদায় হয়ে যায় আবার ঋণও উসূল হয়ে যায়।

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২০৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৭০; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৩৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৬৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ - সিলেট

২২৩৫. Question

আমরা একটি সমিতি করেছি। সকল সদস্য নির্ধারিত তারিখেই সমিতির মাসিক চাঁদা আদায় করে দেয়। এর জন্য এ নিয়ম করেছি যে, নির্ধারিত তারিখের ভেতর চাঁদা আদায় না করলে বিলম্ব মাশুল বা জরিমানা দিতে হবে। এখন জানার বিষয় হল, আমাদের এ পদ্ধতিটি শরীয়তসম্মত কি না? এ টাকা সমিতির সকল সদস্যের কল্যাণে ব্যয় করা যাবে কি না? জানালে উপকৃত হব।


Answer

সমিতির মাসিক/বার্ষিক চাঁদা নির্ধারিত তারিখে আদায় না করার কারণে বিলম্ব মাশুল হিসেবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা বৈধ নয়। সমিতির কাজে ঐ টাকা ব্যয় করা যাবে না; বরং এভাবে কারো থেকে টাকা গ্রহন করে থাকলে তা ফিরিয়ে দেওয়া আবশ্যক। উল্লেখ্য, সকল সদস্য যথাসময়ে যেন সমিতির মাসিক চাঁদা আদায় করে দেয় এর জন্য এভাবে শর্ত করা যেতে পারে যে, প্রতি মাসে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চাঁদা আদায় না করলে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। (সেক্ষেত্রে ঐ সদস্যকে লাভসহ তার মূলধন ফেরত দিতে হবে।) অথবা এ নিয়ম করা যেতে পারে যে, কোনো চাঁদা বিলম্বে আদায় করলে বিলম্বকালীন সময়ের ঐ পরিমান টাকার লাভ থেকে তাকে বঞ্চিত করা হবে।

-শরহু মাআনিল আছার ২/৮২; নুখাবুল আফকার ৮/৫৭; ইলাউস সুনান ১১/৬৮৮; ফাতহুল কাদীর ৫/১১২; রদ্দুল মুহতার ৪/৬১

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ - হবিগঞ্জ

২২৩৬. Question

 

এক ব্যক্তির সম্পদ অনেক বেশি তাই সে অনুমান করে যাকাত আদায় করে। যে পরিমাণ যাকাত আসবে বলে মনে হয় সব সময় এর বেশি আদায় করে থাকে, কম আদয় করে না। কিন্তু সে কখনোই সম্পদের সঠিক হিসাব বের করে না। জানার বিষয় হল, এভাবে অনুমান করে যাকাত দিলে এবং কিছু বেশি দিয়ে দিলে তা আদায় হবে কি?


 

Answer

 

উত্তর : সকল সম্পদের যাকাত যেন নিশ্চিতভাবে আদায় হয় এজন্য যাকাত বর্ষ পূর্ণ হওয়ার পর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সকল সম্পদের হিসাব করা জরুরি। পুরো হিসাব না করে শুধু অনুমানের ভিত্তিতে যাকাত দেওয়া জায়েয নয়। কেননা অনুমান করে দিলে কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং ফরয আদায়ের বিষয়টি অনিশ্চিত থেকে যায়। তবে এভাবে আদায় করার দ্বারা বাস্তবেই যদি যাকাতযোগ্য সকল সম্পদের শতকরা আড়াইভাগ বা এর চেয়ে বেশি আদায় হয়ে যায় তবে তো যাকাত আদায় না করার গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে। কিন্তু যদি অনুমান করে দেওয়ার কারণে এক টাকাও যাকাত কম আদায় হয় তাহলে ঐ পরিমাণ সম্পদের যাকাত তার যিম্মায় থেকে যাবে এবং পরিপূর্ণ যাকাত আদায় না করার গুনাহ হবে। 

অতএব ঐ ব্যক্তির অনুমান করে যাকাত আদায় করা বৈধ হয়নি। সামনে থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব করেই যাকাত দিতে হবে। আর বিগত বছরগুলোর যাকাতের যথাযথ হিসাব বের করতে চেষ্টা করবে। অনিয়ম এবং ফরয আদায়ে শৈথিল্যের কারণে আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করবে।

 

-শরহু মাআনিল আছার ১/৩৪৯; নুখাবুল আফকার ৫/১৮৮; ফিকহী মাকালাত ৩/১৪৩-১৪৪

Sharable Link

মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল বারী - কুনিয়া, নেত্রকোণা

২২৩৭. Question

আমি মাদরাসার ছাত্র। লাইব্রেরী থেকে অনেক খন্ডের একটি কিতাব ক্রয় করেছি। ক্রয়ের সময় বিক্রেতা বলেছিলেন-ভালোভাবে দেখে নিন। কোন খন্ডে সমস্যা থাকলে অন্য সেট নিন। নিয়ে যাওয়ার পর কোনো সমস্যা বের করে নিয়ে আসলে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে না। সময়ের সল্পতার দরুন সবকটি খন্ড ভালোভাবে দেখতে পারিনি। নিয়ে আসার একদিন পর সবকটি খন্ড ভালোভাবে দেখলাম তাতে দুটি খন্ডের তিন-চারটি পৃষ্ঠা কিছু ছিড়া ও একটি খন্ডের এক পার্শের বাইন্ডিং ছোট পেলাম। প্রশ্ন হল, উক্ত খন্ডগুলোর ত্রুটির কারণে এ সেটটি ফেরত দিয়ে অন্য সেট আনতে পারব কি না?


Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী কিতাব বিক্রেতা যেহেতু বিক্রির সময় এ কথা বলেই বিক্রি করেছে যে, এখন ভালোভাবে দেখে নিন, ক্রয়ের পর কোনো ত্রুটি পেলে পরিবর্তন করে দেওয়া হবে না। আর আপনি সে কথা মেনে নিয়েই তা ক্রয় করেছেন তাই এখন কিতাবগুলোতে কোনো ত্রুটি থাকলেও তা ফেরত বা পরিবর্তনের অধিকার আপনার নেই। তবে বিক্রেতা যদি স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিবর্তন করে দেয় তাহলে তা গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয এবং তার জন্য এমনটি করা সহানুভূতি বলে বিবেচিত হবে।

-মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ ৩৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৫৪৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৭৯৪; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২; ইতরুল হেদায়া, পৃ. ১০৮

Sharable Link

মুহাম্মাদ - মালিবাগ, ঢাকা

২২৩৮. Question

 

আমাদের মসজিদটি প্রথমে ছোট্ট পরিসরে ছিল। এরপর বেশ কিছুদিন আগে তিন তলা করা হয়েছে। তিন তলায় ইমাম-মুয়াজ্জিন ও খাদেমের কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কামরাগুলো বানানোর ব্যাপারে মসজিদ ভবন নির্মাণের সময়ই সিদ্ধান্ত ছিল। উল্লেখ্য কামরা বরাবর কখনো মসজিদ ছিল না। পুকুর ছিল। প্রশ্ন হল, উল্লেখিত কামরায় ইমামের জন্য সপরিবারে থাকার ব্যবস্থা করা যাবে কি না?


 

Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী মসজিদ ভবন নির্মাণের সময়ই তৃতীয় তলার ঐ স্থানে যেহেতু ইমাম-মুয়াজ্জিনের কামরা বানানোর নিয়ত ছিল তাই ঐ অংশগুলো মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সুতরাং সেখানে ইমাম-মুয়াজ্জিনের একাকী বা সপরিবারে বসবাস করা বৈধ হবে। তবে সপরিবারে থাকলে পূর্ণ পর্দা-পুশিদার সাথে থাকা, মেয়েলি কণ্ঠ যেন মসজিদ থেকে শোনা না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা সর্বোপরি মসজিদের আদাবের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা জরুরি।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/৮৪৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ২/৫৩৭; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫৮; আলমুগনী ৮/২২৩; ফাতাওয়া উসমানী ২/৫২৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ জাহিদুল ইসলাম - রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম

২২৩৯. Question

আমি একদিন জামাতের সাথে নামায আদয় করছিলাম। তাতে ইমাম সাহেব কখন তাশাহহুদ শেষে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়েছেন বুঝতে পারিনি। হঠাৎ শুনলাম নামাযের বাহির থেকে এক লোক বলছে, ইমাম দাঁড়িয়ে গেছেন। তাকিয়ে দেখি, সত্যিই সামনের কাতারের মুসল্লিরা দাঁড়ানো। তখন আমিও কালবিলম্ব না করে দাঁড়িয়ে গেলাম এবং বাকি নামায ইমামের সাথে র্পূণ করলাম। জানার বিষয় হল, নামাযের বাহিরের লোকের কথায় সচেতন হওয়ার কারণে আমার নামাযের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি?


Answer

আপনার ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নামাযের বাইরের লোকের কথায় সচেতন হওয়ার কারণে নামাযের ক্ষতি হয়নি।

-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/২৬৪; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭১, ১/৬২২

Sharable Link

মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান - বিসিআইসি, প্রকৌশলী

২২৪০. Question

আমি প্রায় ১৫/২০ বছর পূর্বে ঢাকার চিটাগাং রোডে মাদানী নগর মাদরাসার কাছে তিন কাঠা জমি কিনেছিলাম। কিনার পূর্বে জমির উপর দিয়ে ওয়াপদার ৩৩,০০০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার ছিল এবং এখনও আছে। কিনার পরে আমি চিন্তা করে দেখলাম যে, এই রকম উচ্চ ভোল্টের তারের নিচে বাড়ি-ঘর করা বিপদজনক এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না। সর্বোচ্চ  দোতলা পর্যন্ত করা যেতে পারে। এরকম চিন্তা করে আমি কিনার বেশ কয়েক বছর পরে অন্য একজনের কাছে জমি বিক্রি করি। ক্রয়-বিক্রয় উভয়টা একই দালালের মাধ্যমে করি। দালাল আমাকে বলেছিল, জমিটা কেন বিক্রি করছি তা যেন ক্রেতাকে না বলি। তাই ক্রেতা জিজ্ঞাসা করলে বলেছিলাম এমনিই বিক্রি করছি। জমি আমি ১ লক্ষ টাকায় কিনেছিলাম এবং কয়েক বছর পর বিক্রির সময় তখনকার বাজার দর হিসেবে মোট ৩ লক্ষ টাকায় বিক্রি করি। এমতাবস্থায় আমি যে আশঙ্কা ও অসুবিধার কথা চিন্তা করে জমি বিক্রি করেছি ক্রেতাও তো তা ক্রয় করে একই আশঙ্কা ও অসুবিধায় পতিত হল।

উপরোক্ত অবস্থায় আমার প্রশ্ন হল, ক্রেতা আমার কাছ থেকে জমি কেনার কারণে উপরোক্ত যে সমস্যার সম্মুখিন হয়েছে সেজন্য তাকে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে কি না? যদি দিতে হয় তাহলে মোট কত টাকা দিতে হবে? এ সম্পর্কে কুরআন-হাদীসের আলোকে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।

উল্লেখ্য, পরবর্তীতে আমি দালালকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ক্রেতা জমি কেনার আগে জমির অবস্থানস্থলে গিয়ে জমি ও তার উপরের উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার দেখেছে এবং তারপর কিনেছে। দালাল বলেছে, জমিটা বিক্রি করার সময় তখনকার বাজার দর হিসেবে জমির দাম ছিল কাঠা প্রতি ১ লক্ষ টাকা। এবং পার্শ্ববর্তী তার ছাড়া জমির দাম ছিল প্রতি কাঠা সোয়া লক্ষ টাকা। বর্তমানে ঐ জমির দাম প্রতি কাঠা আট লক্ষ টাকা। আর পার্শ্ববর্তী তার ছাড়া জমির দাম কাঠা প্রতি দশ লক্ষ টাকা।


Answer

প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী ক্রেতা জমির উপর বিদ্যুতের লাইন নিজে দেখেই ক্রয় করেছে তাই আপনার ঐ বিক্রি ত্রুটিযুক্ত হয়নি।  আপনাকে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। অবশ্য আপনি তাকে বিষয়টি খোলাখুলি জানিয়ে দিলে ভালো হত।

-জামিউল ফুসূলাইন ১/৩৪৩; রদ্দুল মুহতার ৫/৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/৬৬

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - চান্দিনা, কুমিল্লা

২২৪১. Question

জনৈক মহিলা তার পুত্রের ঘরে খানা খেত। একদিন ঝগড়া লেগে তার পুত্রকে বলেছে যে, তোর ঘরে খাওয়া আমার জন্য হারাম। এর কিছুদিন পর দুজনের মধ্যে মিল-মিশ হয়ে যায় এবং ঐ মহিলা তার পুত্রের ঘরে পুনরায় খাবার-দাবার করতে থাকেন। জানার বিষয় হল, মহিলার এ কথা কি কসম হয়েছে? কসম হয়ে থাকলে এখন তাকে কী করতে হবে?


Answer

হ্যাঁ, তোর ঘরে খাওয়া আমার জন্য হারাম মহিলার এ কথা দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং এর পর সেখানে খাওয়ার কারণে কসমটি ভেঙ্গে গেছে। এজন্য তাকে একটি কসমের কাফফারা দিতে হবে।

-আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৯; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯২, ৪/২৯০; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৪৬৬, ২/৪৫৯; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৫৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আহসান হাবীব - সিলেট

২২৪২. Question

কিছুদিন আগে ছেলের এসএসসি পরীক্ষা ছিল। তার ভালো ফলাফলের জন্য মান্নত করেছিলাম যে, সে যদি জিপিএ ফাইভ পায় তাহলে আমি একটি মান্নাত আদায় করব। আলহামদুলিল্লাহ, সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। এখন আমি উক্ত মান্নতটি কীভাবে আদায় করব? উল্লেখ্য, মান্নত করার সময় কী দিয়ে মান্নত আদায় করব তা স্থির করিনি।


Answer

হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত উকবা বিন আমের রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মান্নত করল এবং কিছু নির্দিষ্ট করল না তাকে কসমের কাফফারা দিতে হবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৩১১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২১২৭

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে কসমের কাফফারা আদায় করতে হবে। অর্থাৎ পূর্ণ আহার গ্রহণ করতে পারে এমন দশজন মিসকীনকে তৃপ্তিসহ দু বেলা খানা খাওয়াতে হবে। অথবা এর মূল্য দান করে দিতে হবে কিংবা দশজনের প্রত্যেককে এক জোড়া করে কাপড় দিতে হবে। আর এ দুটির সামর্থ্য না থাকলে ধারাবাহিকভাবে তিনটি রোযা রাখতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৪৫; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭৪২

Sharable Link

মুহাম্মাদ জুয়েল আশরাফী - উত্তর মুগদা, ঢাকা

২২৪৩. Question

 

আছরের নামাযে ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতে না বসে ভুলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন। তৃতীয় রাকাতের কেরাত শুরু করার পূর্বে দ্বিতীয় রাকাতে না বসার কথা মনে পড়ে যায়, ফলে আবার বসে যান। দাঁড়ানো থেকে এভাবে বসে যাওয়ার কারণে নামায ফাসেদ হয়েছে কি? ফাসেদ না হলে সাহু সিজদা দিতে হবে কি?


 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বৈঠক না করে ভুলে দাঁড়িয়ে যাওয়ার কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছে। আর এক্ষেত্রে দাঁড়ানো থেকে বৈঠকে ফিরে আসার কারণে নামায ফাসেদ হয়নি। তবে  তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর প্রথম বৈঠকের জন্য ফিরে আসাটা ঠিক হয়নি। ইমাম সাহেব যদি সাহু সিজদার মাধ্যমে নামায শেষ করে থাকেন তবে নামায শুদ্ধ হয়েছে। অন্যথায় ঐ নামায পুনরায় পড়ে নেওয়া ওয়াজিব।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/৮৩-৮৪; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলালমারাকী ২৫৩; মাবসূত, সারাখসী ১/২২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৩০

Sharable Link

মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান - রাজশাহী

২২৪৪. Question

 

 

হাবীব রাজশাহী তার গ্রামের বাড়িতেই থাকে। গত কয়েক দিন আগে সে কোনো কাজে ঢাকা যায় এবং ঐ দিনই ফিরে আসে। কিন্তু সফর অবস্থায় যে চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দুই রাকাত পড়তে হয় তা সে ভুলে যায়, তাই  সে ঐ দিনের যোহর, আসর ও ইশা অন্য সময়ের মতো চার রাকাতই আদায় করে। পরে তার স্মরণ হলে জানতে চায়, তার ঐ নামাযগুলো কি হয়েছিল? না কাযা করতে হবে?

 

 

 

Answer

তার ঐ নামাযগুলো আদায় হয়ে গেছে। সেগুলোর কাযা করতে হবে না। কেননা সফর অবস্থায় কেউ যদি চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামায চার রাকাতই পড়ে এবং যথারীতি প্রথম বৈঠক করে থাকে তাহলে ফরয আদায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রথম দুই রাকাত ফরয এবং দ্বিতীয় দুই রাকাত নফল হবে। উল্লেখ্য, সফর অবস্থায় চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয দুই রাকাত পড়াই বিধান। তাই ইচ্ছাকৃত পূর্ণ নামায পড়া যাবে না।

-আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৩; শরহুল মুনইয়া ৫৩৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৮৩

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবদুল হালীম - লাকসাম, কুমিল্লা

২২৪৫. Question

আমরা জানতাম, চুলের খোপা বেঁধে নামায পড়া যায়। কিছু দিন পূর্বে আমাদের গ্রামের জনৈক মহিলা বলল, তার স্বামী কোনো হুজুরের কাছে শুনেছে যে, খোপা বেঁধে নামায পড়লে নামায হয় না। চুল ছেড়ে নামায পড়তে হয়। ঐ মহিলার স্বামীর কথা সঠিক কি না জানিয়ে বাধিত করবেন।


Answer

না, তার কথা ঠিক নয়। মহিলারা খোপা বেঁধেও নামায পড়তে পারবে। এতে দোষের কিছু নেই।

উল্লেখ্য যে, নামায অবস্থায় মহিলাদের চুল পরিপূর্ণরূপে ঢেকে রাখা জরুরি। সুতরাং তারা চুল এভাবে রাখবে, যেন রুকু-সিজদা বা অন্য কোনো অবস্থায় তা বেরিয়ে না পড়ে।

-নাইলুল আওতার ২/৩৮৬; তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৩২৬; মাআরিফুস সুনান ৩/৪৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫; আলইনায়া ১/১২৮

Sharable Link