সালেম আহমাদ - গাজীপুর

৪০৬৮. Question

কিছুদিন আগে আমি গ্রামের বাড়িতে যাই। সেখানে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। কয়েক লোকমা খেয়েছি মাত্র; ছোট ভাই জানাল, একটু আগে একটি মুরগি এ তরকারিতে মুখ দিয়ে কয়েকটি ছোট মাছ খেয়েছে। একটু খাওয়ার পরই সেটিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কথা শুনে আমি আর সে তরকারি খাইনি। এখন জানার বিষয় হল, সে তরকারি না খাওয়া ঠিক হয়েছে কি না? আর যে মুরগি সর্বত্র ঘুরাফেরা করে তা কোনো তরকারিতে মুখ দিলে তা খাওয়ার হুকুম কী?

Answer

যে মুরগি এমন জায়গায় ঘুরাফেরা করে যেখানে নাপাকিতে মুখ দেওয়ার সুযোগ নেই যেমন আবদ্ধ বাসা-বাড়িতেসেটি কোনো খাবারে মুখ দিলে ঐ খাবার খাওয়া যাবে। তবে যে মুরগি বাইরে ঘুরাফেরা করে এবং নাপাকিতে মুখ দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে তার ঠোঁটে বা মুখে বাহ্যত কোনো নাপাকি না থাকলেও সতর্কতামূলক বিধান হলতার মুখ দেওয়া খাবার খাওয়া মাকরূহ আর যদি ঠোঁটে নাপাকি লেগে থাকতে দেখা যায় তাহলে যাতে মুখ দিবে তা নাপাক হয়ে যাবে। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যে মুরগি মুখ দিয়েছে তা বাইরে ছাড়া মুরগি হলে ঐ তরকারি না খেয়ে আপনি ঠিকই করেছেন।

-মাবসূত, সারাখসী ১/৪৭-৪৮; শরহুল মুনইয়া ১৬৮; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ১৮-১৯

Sharable Link

হাবীবুর হরমান - নরসিংদী

৪০৬৯. Question

 ১. কয়েকদিন আগে এক মসজিদে জুমার নামায পড়ার সময় নামাযের আগে ইমাম সাহেব বললেন, কারো টাখনুর নিচে কাপড় থাকলে উঠিয়ে নিন। হুযুরের কাছে জানতে চাই, টাখনুর নিচে কাপড় থাকা অবস্থায় নামায পড়লে কি নামাযের কোনো সমস্যা হয়?

২. কুরআন শরীফের অল্প কয়েকটি সূরা আমার মুখস্ত আছে। তাহাজ্জুদ নামাযে যদি কেরাত লম্বা করার উদ্দেশ্যে একই সূরা এক রাকাতে বারবার পড়ি তাহলে কি কোনো সমস্যা আছে?

Answer

১. টাখনুর নিচে কাপড় পরা শরীয়তে নিষিদ্ধ। হাদীস শরীফে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ  .

টাখনুর নিচের যে অংশ লুঙ্গী (ইত্যাদি) দ্বারা ঢাকা থাকবে তা জাহান্নামে যাবে। (সহীহ বুখারীহাদীস ৫৭৮৭)

আর নামাযের মধ্যে টাখনুর নিচে কাপড় থাকলে নামায  মাকরূহ হবে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেন,

مَنْ أَسْبَلَ إِزَارَهُ فِي صَلَاتِهِ خُيَلَاءَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي حِلٍّ وَلَا حَرَامٍ.

যে ব্যক্তি নামাযে অহঙ্কারবশতঃ নিজ কাপড় (পায়ের গিরার নিচে) ঝুলিয়ে রাখেআল্লাহ তার জন্য জান্নাত হালাল করবেন না এবং জাহান্নামও হারাম করবেন না। (সুনানে আবু দাউদহাদীস ৬৩৭)

অতএব নামায ও নামাযের বাইরে সর্বাবস্থায় যেন পুরুষের কাপড় টাখনু গিরার উপরে থাকে সে ব্যাপারে যতœবান হওয়া অবশ্য-কর্তব্য। -ইমদাদুল আহকাম ৪/৩৩৬

 

 

উত্তর : ২. নফল নামাযে এক রাকাতে কয়েকটি সূরাও পড়া যায়। তাই আপনার যে কয়টি সূরা মুখস্থ আছে সেগুলো দু রাকাতে মিলিয়ে পড়ে নিতে পারেন। এছাড়া নফল নামাযে একই রাকাতে একই সূরা বারবার পড়ারও সুযোগ আছে। তবে ফরয নামাযে ইচ্ছাকৃত এমনটি করা অনুত্তম। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৭;হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ১৯৩

Sharable Link

খাইরুদ্দিন - গোলাপগঞ্জ, সিলেট

৪০৭০. Question

আমরা রমযান মাসে খতম তারাবীহ পড়ে থাকি। তখন আমরা সবাই মিলে টাকা উঠিয়ে রমযানের শেষে হাফেয সাহেবকে কিছু হাদিয়া দিয়ে থাকি। এটা কি জায়েয আছে? জানালে খুশি হব।

 

Answer

খতম তারাবীর জন্য হাফেয সাহেবদেরকে হাদিয়ার নামে বিনিময় দেওয়া ও তাদের জন্য তা গ্রহণ করা ঠিক নয়। কেননা এটি মূলত কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত ও খতমেরই বিনিময়যা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এসেছেআবদুর রহমান ইবনে শিবল রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনতোমরা কুরআন পড়। তবে এর বিনিময়ে কোনো কিছু ভোগ করো না। (মুসনাদে আহমাদহাদীস ১৫৫৩৫) আরেক বর্ণনায় আছেআবদুল্লাহ ইবনে মাকিল রা. থেকে বর্ণিততিনি এক রমযানে লোকদের নিয়ে তারাবীহ পড়লেন। এরপর ঈদের দিন উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ তাঁর কাছে এক জোড়া কাপড় এবং পাঁচশ দিরহাম পাঠালেন। তখন তিনি কাপড় জোড়া ও দিরহামগুলো এ বলে ফেরত পাঠালেন যেআমরা কুরআনের বিনিময় গ্রহণ করি না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবাহহাদীস ৭৭৩৯)

-আলমুহীতুল বুরহানী ১১/৩৪৪; মাজমুআতু রাসাইলি ইবনি আবিদীন ১/১৬৭; ফাতাওয়া খালীলিয়া পৃ. ১২২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩১৫-৩২২

Sharable Link

মীম হাসান - কলাবাগান, ঢাকা

৪০৭১. Question

গত দুই মাস আগে আমার এক আন্টি মারা যান। জানাযা হয় আন্টির বাসা থেকে ৫/৭ মিনিটের দূরত্বে এক মসজিদে। আন্টির বান্ধবীরাসহ অন্যান্য অনেক মহিলা আন্টির জানাযায় শরীক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তখন উপস্থিত এক মুরুব্বীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি প্রথমে জানতে চান ওখানে মহিলাদের নামাযের আলাদা ব্যবস্থা আছে কি না? মহিলাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে একথা তাঁকে জানানো হলে তিনি বলেন, তাহলে মহিলারা জানাযায় যেতে পারবে। তখন মহিলারা জানাযায় শরীক হয়। মহিলাদের অধিকাংশই ছিল বেপর্দা।

আমার তখন ঐ মুরুব্বীর কথায় একটু সন্দেহ হয় কিন্তু নিশ্চিত না হওয়ায় কিছু বলা থেকে বিরত থাকি। হুযুরের কাছে জানতে চাই মহিলাদের জন্য জানাযায় শরীক হওয়ার ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কী?

Answer

মহিলাদের জন্য জানাযার নামাযে বের হওয়া জায়েয নয়। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবা তাবেয়ীন থেকে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা আছে। তাবেয়ী যার ইবনে আব্দুল্লাহ রাহ. বলেন-

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَّبِعُ جِنَازَةً، فَإِذَا بَامْرَأَةٍ عَجُوزٍ تَتَّبِعُهَا، فَغَضِبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى عُرِفَ الْغَضَبُ فِي وَجْهِهِ، فَأَمَرَ بِهَا فَرُدَّتْ، ثُمَّ وُضِعَ السَّرِيرَ، فَلَمْ يُكَبِّرْ عَلَيْهَا حَتَّى قَالُوا: وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ لَقَدْ تَوَارَتْ بِأَخْصَاصِ الْمَدِينَةِ قَالَ: ثُمَّ كَبَّرَ عَلَيْهَا

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানাযার সাথে ছিলেন। হঠাৎ দেখলেন একজন বৃদ্ধ মহিলাও জানাযার সাথে সাথে আসছে। এটা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্রোধান্বিত হলেন এবং তার মুখম-লে ক্রোধের ছাপ ফুটে উঠল। তখন তার নির্দেশে ঐ বৃদ্ধাকে ফিরিয়ে দেয়া হল। এরপর খাটিয়া রাখা হল কিন্তু তিনি জানাযা শুরু করলেন না। যখন লোকেরা বলল,  ঐ সত্তার শপথ যিনি আপনাকে হক (সত্য)সহ প্রেরণ করেছেন ঐ মহিলা শহরের বাড়িঘরের আড়াল হয়ে গেছেতখন তিনি জানাযার তাকবীর বললেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৬২৯০)

উম্মে আতিয়্যা রা.-এর বর্ণনায় এসেছেতিনি বলেন-

وَنَهَانَا أَن نَخْرُجَ فِي جَنَازَةٍ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানাযায় বের হতে নিষেধ করেছেন। (আলমুজামুল কাবীর তবারানী ২৫/৪৫)

আমর ইবনে কায়স রাহ. বলেন,

كُنَّا فِي جِنَازَةٍ وَفِيهَا أَبُو أُمَامَةَ فَرَأَى نِسْوَةً فِي الْجِنَازَةِ فَطَرَدهُنَّ .

আমরা এক জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। আবু উমামাও সেখানে ছিলেন। তিনি দেখলেন জানাযায় কিছু মহিলাও এসেছে। তখন তিনি তাদের সরিয়ে দিলেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১১৪০৮)

মুহাম্মাদ ইবনুল মুনতাশির রাহ. বলেন,

كَانَ مَسْرُوقٌ لاَ يُصَلِّي عَلَى جِنَازَةٍ مَعَهَا امْرَأَةٌ.

মাসরূক রাহ. ঐ জানাযা পড়তেন নাযে জানাযায় কোনো মহিলা উপস্থিত আছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১১৪০৩)

শাবি রাহ.-কে জিজ্ঞাসা করা হলমহিলারা কি জানাযার নামায পড়বেউত্তরে তিনি বললেন,

لَا تُصَلِّي عَلَيْهَا طَوَاهِرَ وَلَا حَائِضًا

নামহিলা জানাযার নামায পড়বে নাচাই সে পবিত্র হোক কিংবা ঋতুমতি। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৬২৯৭)

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপরোল্লেখিত হাদীস এবং সাহাবা-তাবেয়ীনের আছারগুলো থেকে এক থা স্পষ্ট যেমহিলাদের জন্য জানাযার উদ্দেশ্যে বের হওয়া জায়েয নয়।

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য জানাযায় অংশগ্রহণ করা ঠিক হয়নি। অবশ্য মহিলারা ঘরে থেকেই মৃতের জন্য ঈসালে সাওয়াব ও মাগফিরাতের দুআ করতে পারে।

 

প্রকাশ থাকে যেদ্বীনী বিষয়ে না জেনে মন্তব্য করা ঠিক নয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে লোকটির না জেনে মাসআলা বলা অন্যায় হয়েছে।

-হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬০৭; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৩২

Sharable Link

সফিউল্লাহ - চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

৪০৭২. Question

কোনো মুসলমানকে দাফন করার জন্য কোন তরীকায় কীভাবে কতুটুকু কবর খনন করবে? কবর খননের সুন্নত তরীকা কী, জানালে উপকৃত হব।

Answer

যেসব জায়গার মাটি শক্ত ও মজবুত সেসব জায়গায় লাহদ (বোগলী) কবর খনন করা সুন্নত। সেটা হল-স্বাভাবিকভাবে চার কোণা করে মাটি খোড়ার পর নীচে পশ্চিম (কিবলার) দিক দিয়ে একটি গর্ত করবে এবং পশ্চিম দিকের ঐ গর্তের মধ্যে লাশ রাখবে।

আর যেসব জায়গার মাটি নরমলাহদ কবর করলে মাটি ভেঙ্গে পড়ার আশঙ্কা আছেসেসব জায়গায় সিন্দুক কবর করবে। অর্থাৎ স্বাভাবিকভাবে চার কোণা করে মাটি খোড়ার পর নীচের দিকে গিয়ে মাঝ বরাবর একটি গর্ত করবে এবং সেখানে লাশ রাখবে।

আর কবরের গভীরতা সর্বনিম্ন নাভি পর্যন্ত থেকে সর্বোচ্চ একজন মধ্যম গড়নের ব্যক্তি দুহাত উপরে তুলে দাঁড়ালে যতটুকু লম্বা হয় ততটুকুর মধ্যে রাখবে। তবে উপরের পরিমাণের মধ্যে যে এলাকায় যেটা প্রচলন সে এলাকায় সে পরিমাণই গভীর করা উচিত।

আর কবরের দের্ঘ্য হবে মৃতের দৈর্ঘ্য সমান এবং প্রস্থ হবে দৈর্ঘ্যরে অর্ধেক বা তারচেয়ে কিছুটা কম।

-সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯৬৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ১১৭৮৩, ১১৭৮৪, ১২১৭৭ হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬২২; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৪

Sharable Link

মো. আরমান - লাকসাম, কুমিল্লা

৪০৭৩. Question

আমার প্রস্র্রাব আটকে যাওয়ার সমস্যা আছে। এজন্য আগে মাঝেমধ্যে ক্যাথেটারও ব্যবহার করতে হয়েছে। সামনে রমযান আসছে। তাই আমি জানতে চাচ্ছি যে, রোযা অবস্থায় ক্যাথেটার ব্যবহার করলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়?

 

Answer

ক্যাথেটার ব্যবহার করলে রোযার ক্ষতি হয় না। তাই আপনি রোযা অবস্থায় প্রয়োজন হলে তা ব্যবহার করতে পারবেন।

-রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৯; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা : ১০, ২/৪৫৪; ফিকহুন নাওয়াযিল ২/২৯৭

Sharable Link

উমায়ের - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

৪০৭৪. Question

গত রমযানে একদিন দিনের বেলা আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। তখন আমি ভেবেছিলাম আমার রোযা ভেঙ্গে গেছে। তাই আমি তারপরে ইচ্ছাকৃত পানাহার করেছিলাম। এখন জানতে চাই, আমাকে কি ঐ রোযার কাযা এবং কাফ্ফারা উভয়টিই আদায় করতে হবে?

Answer

স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভাঙ্গে না। কিন্তু আপনি যেহেতু রোযা ভেঙ্গে গেছে ভেবে পানাহার করে ফেলেছেন তাই আপনাকে ঐ রোযার শুধু কাযা করলেই হবে। কাফ্ফারা দিতে হবে না।

প্রকাশ থাকে যেদ্বীনের যে কোনো বিষয়ে নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই অন্যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয় আলেম থেকে হলেও জিজ্ঞাসা করে আমল করা জরুরী। আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেছেন,

فَسْـَٔلُوْۤا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ

তোমরা যদি না জান তবে যারা জানে (আলেম) তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর।(সূরা আম্বিয়া (২১): ৭)

-আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৬

Sharable Link

আবদুল্লাহ ফাহীম - ঝিগাতলা, ঢাকা

৪০৭৫. Question

কেউ যদি শাওয়াল মাসে রমযানের কাযা রোযা রাখে এবং এর সাথে শাওয়ালের ছয় রোযার নিয়তও করে তাহলে ফরযের কাযা এবং শাওয়ালের ছয় রোযার সওয়াব পাওয়া যাবে কি?

 

Answer

রমযানের কাযা রোযার সঙ্গে শাওয়ালের ছয় রোযার নিয়ত করলে তা রমযানের কাযা হিসেবেই গণ্য হবে। এতে শাওয়ালের ছয় রোযা আদায় হবে না এবং তার সওয়াবও পাওয়া যাবে না। শাওয়ালের ছয় রোযার জন্যে পৃথকভাবে ছয়টি রোযা রাখতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৭

Sharable Link

আবু বকর - টঙ্গি, গাজিপুর

৪০৭৬ . Question

১. আমি লোকমুখে শুনেছি যে, রোযা অবস্থায় যদি শরীর থেকে রক্ত বের হয় তাহলে রোযা হালকা হয়ে যায়। একথা কি ঠিক? রোযা হালকা হয়ে যাওয়া বলতে কী বোঝায়?

সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত বের করলে রোযা ভেঙ্গে যায় কি না?

২. আমার দাঁতে সমস্যার কারণে মাঝে মাঝে দাঁত থেকে রক্ত বের হয়। প্রশ্ন হল, রোযা অবস্থায় যদি দাঁত থেকে রক্ত বের হয় তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে কি?

Answer

১. শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোযার কোনো ক্ষতি হয় না এবং সিরিঞ্জ দিয়ে রক্ত বের করলেও রোযা ভাঙ্গে না। তবে ইচ্ছা করে এ পরিমাণ রক্ত দেওয়া ঠিক নয়যার কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলার আশংকা হয় বা রোযা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

 

২. দাঁত থেকে রক্ত বের হওয়া রোযা ভঙ্গের কারণ নয়। তবে রোযা অবস্থায় রক্ত বের হলে তা যেন গলায় চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা গলায় রক্তের স্বাদ পাওয়া গেলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৪ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৯৮আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৬

Sharable Link

আবুল ফাযাল - বংশাল, ঢাকা

৪০৭৭. Question

রোযা অবস্থায় যদি কাউকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়, তাহলে এতে কি তার রোযা ভেঙ্গে যাবে? তেমনি রোযা অবস্থায় ইনসুলিন নিলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে? বিস্তারিত বুঝিয়ে দিলে আমরা অনেক উপকৃত হব।

 

Answer

ইঞ্জেকশন বা ইনসুলিন কোনোটার কারণেই রোযা ভাঙ্গবে না। তবে একান্ত ওজর ছাড়া গ্লুকোজ জাতীয় ইঞ্জেকশন (যা খাবারের কাজ দেয়) দেওয়া মাকরূহ তাহরীমী।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫; ইমদাদুল মুফতীন পৃ. ৪৮৯

Sharable Link

হাবিবুর রহমান - পঞ্চগড়

৪০৭৮. Question

রোযা অবস্থায় আমার মুখে মশা বা অন্য কোনো পোকা প্রবেশ করে গলা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আমি অনেক কাশাকাশি করেও তা বের করতে পারিনি। বর্তমানে আমি খুবই দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত। উক্ত ঘটনার কারণে আমার রোযার কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না জানিয়ে বাধিত করবেন।

Answer

রোযা অবস্থায় মশা-মাছি অনিচ্ছাকৃত গলার ভেতরে প্রবেশ করলে রোযা ভাঙে না। তাই আপনার ঐ দিনের রোযা সহীহ হয়েছে। মশা ভেতরে চলে যাওয়ার কারণে রোযার ক্ষতি হয়নি।

-কিতাবুল আছল ২/১৬৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫

Sharable Link

হাসান মাহমুদ - যাত্রাবাড়ি

৪০৭৯. Question

কুলি করার পর সাধারণত মুখে যে পানি লেগে থাকে তা রোযা অবস্থায় থুথুর সাথে গিলে ফেললে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি?

 

Answer

নাএতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩; মাজমাউল আনহুর ১/৩৬১; মারাকিল ফালাহ পৃ.৬৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৬২

Sharable Link

মুহাম্মাদ আবুল কালাম - টাঙ্গাইল

৪০৮০. Question

আমি প্রতি রমযানেই রোযাগুলো নিয়মিত রাখি। কিন্তু অধিকাংশ রোযাতেই মুখে রোযার নিয়ত উচ্চারণ করি না; বরং রোযা রাখার উদ্দেশ্যে সেহরীর জন্য উঠে সেহরী খেয়ে নিই এবং অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী ঠিকমতো করতে থাকি। এমন করার দ্বারা আমার রোযাগুলো সহীহ হয়েছে কি না? নাকি আবার কাযা করতে হবে?

Answer

রোযা রাখার উদ্দেশ্যে ঘুম থেকে ওঠা ও সাহরী খাওয়াটাই রোযার নিয়তের শামিল। নিয়ত মনের ইচ্ছার নামএক্ষেত্রে মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। তাই আপনার রোযাগুলো সহীহভাবে আদায় হয়েছে।

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৫৯; আলজাওহারাতুন নায়্যিরাহ ১/১৭৬; রদ্দুল মুহতার ২/৩৭৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৫

Sharable Link

আবদুস সামাদ - মনিরামপুর, যশোর

৪০৮১. Question

এক ব্যক্তি চোখের অসুস্থতার কারণে ড্রপ ব্যবহার করে এবং ঔষধের তিক্ততা গলায় অনুভব করে। প্রশ্ন হল, রোযা অবস্থায় এ ধরনের ড্রপ ব্যবহার করলে রোযা ভেঙ্গে যাবে কি? দয়া করে জানাবেন।

 

Answer

নারোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করার কারণে গলায় ঔষধের তিক্ততা অনুভূত হলেও রোযা নষ্ট হয় না। সুতরাং রোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করা যাবে। কোনো সমস্যা নেই।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৭৯; রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩

Sharable Link

মাহমুদুল্লাহ - খিলগাওঁ, ঢাকা

৪০৮২. Question

রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ অবস্থায় কেউ শরীয়তসম্মত কোনো প্রয়োজনে যদি বাইরে যায় তাহলে সে কাউকে সালাম ও এর জবাব দিতে পারবে কি না? আমাদের এখানে কেউ কেউ বলেন যে, তার জন্য সালাম দেওয়াও নাকি সহীহ নয়। আবার কেউ বলেন, সালাম দেওয়া যাবে। তাই এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা জানতে চাই।

 

Answer

ইতিকাফকারী কোনো প্রয়োজনে মসজিদের বাইরে গেলে সালাম বা সালামের জবাবের জন্য না থেমে রাস্তায় চলতে চলতে কিংবা প্রয়োজনীয় কাজটি সারতে সারতে সালাম ও সালামের জবাব দিতে পারবে। এতে তার ইতিকাফের কোনো ক্ষতি হবে না। হাদীস শরীফে আছেআম্মাজান আয়েশা রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ অবস্থায় (প্রয়োজনে বাইরে গেলে) যখন কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে অতিক্রম করতেন তখন হাঁটা অবস্থাতেই ঐ ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নিয়ে নিতেন। (সুনানে আবু দাউদহাদীস  ২৪৭২)

-মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/৫২৯; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫; ইমদাদুল আহকাম ২/১৪৯

Sharable Link

যায়েদ - বগুড়া

৪০৮৩. Question

মহিলারা যদি রমযান মাসে কোনো ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ঋতুস্রাব বন্ধ রাখে তাহলে ওই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারবে কি না এবং এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে কি না?

Answer

রমযান মাসে কোনো মহিলা ওষুধ খেয়ে স্রাব বন্ধ রাখলে ওই দিনগুলোতেও তাকে রোযা রাখতে হবে। তার এ রোযাগুলো ত্রুটিযুক্ত হবে নাবরং পূর্ণ সহীহ বলেই গণ্য হবে।

উল্লেখ্যঋতুস্রাব মহিলাদের স্বভাবজাত বিষয়। এ অবস্থায় রোযা না রাখার বিধান রয়েছে এবং এর পরিবর্তে অন্য সময় রোযা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সুতরাং রমযানে স্রাব বন্ধকারী ওষুধ ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কেননা রমযানে স্রাবের কারণে রোযা না রাখলেও শরীয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘন হয় না। উপরন্তু ঔষধ ব্যবহারে কোনো কোনো ক্ষেত্রে  শারীরিক ক্ষতির আশংকা থাকে। তাই এ থেকে বিরত থাকাই উচিত। 

-জামিউ আহ্কামিন নিসা ১/১৯৮; ফাতাওয়া রহীমিয়া ৮/১৩৬

Sharable Link

হামীদুল্লাহ - ঝিনাইদহ

৪০৮৪. Question

আমার কাছ থেকে একজন ১লাখ টাকা ধার নিয়েছে। আমার কাছে যে নগদ টাকা আর গয়না আছে, তার যাকাত তো আমি দিবই। কিন্তু ওই ধার নেওয়া টাকার যাকাতও কি আমাকে দিতে হবে?

 

Answer

হাঁওই এক লাখ টাকার যাকাতও আপনাকে দিতে হবে।

-রদ্দুল মুহতার ২/৩০৫

Sharable Link

ফয়জুল মাঈন - নারায়ণগঞ্জ

৪০৮৫. Question

যাকাত প্রদানকালে ব্যক্তিকে জানিয়ে দেওয়া জরুরি কি না? ঈদের দিন অনেক গরীব-মিসকিন বখশিশ চায়, তাদেরকে বখশিশ স্বরূপ যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে কি?

 

Answer

যাকাত প্রদানের সময় গ্রহীতাকে যাকাতের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া জরুরি নয়। এক্ষেত্রে দাতার নিয়তই যথেষ্ট। অতএবযাকাতের যোগ্য কেউ বখশিশ চাইলে তাকে না জানিয়ে যাকাতের টাকা প্রদান করলেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু নিজ গৃহের কর্মচারী বা অধীনস্ত কর্মচারিদেরকে যাকাতের টাকা ঈদবোনাস হিসাবে দেওয়া যাবে না। কারণ সেগুলো তাদের পারিশ্রমিকেরই অংশবিশেষ। অবশ্য কর্মচারীকে তার নির্ধারিত বেতন ও বোনাস দেওয়ার পর গরিব হওয়ার কারণে যাকাত থেকে কিছু দিতে চাইলে তা জায়েয হবে।

-আল বাহরুর রায়েক ২/২১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৮

Sharable Link

আবুল হাসান - উত্তরা, ঢাকা

৪০৮৬. Question

যাকাতের টাকা মসজিদ মাদরাসার নির্মাণকাজে ব্যয় করা যাবে কি?

 

Answer

নামসজিদ মাদরাসার নির্মাণ কাজে যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে নাবরং যাকাত আদায় হওয়ার জন্য শর্ত হলযাকাত গ্রহণের যোগ্য কাউকে যাকাতের টাকার পূর্ণ মালিক বানিয়ে দেওয়া। 

-মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক ৪/১১৩; হেদায়া ১/২০৫; ফাতহুল কাদীর ২/২০৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৭২; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৮২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৯১

Sharable Link

হুসাইন মাহমুদ - বিয়ানি বাজার, সিলেট

৪০৮৭. Question

আমরা ৩০ জন সদস্য মিলে একটি সমিতি করেছি। এতে প্রত্যেক সদস্যকে এককালীন ১০০০/- টাকা করে জমা দিতে হয়েছে। ফলে মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩০,০০০/- টাকা। বিগত দুবছর ব্যবসায় খাটিয়ে লাভ হয়েছে ১২০০/- টাকা। কিন্তু আমরা এ টাকার যাকাত পরিশোধ করিনি। এখন আমাদের জানার বিষয় হল, আমাদেরকে কি উক্ত টাকার যাকাত পরিশোধ করতে হবে?

 

Answer

সমিতির উপর যাকাত ফরয হয় না। যাকাত ফরয হয় ব্যক্তির উপর। তাই সমিতির সদস্যদের মধ্যে যার সমিতিতে জমাকৃত অর্থসহ অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদ মিলে নেসাব পরিমাণ হবে তার উপর যাকাত ফরয হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/১২৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮১; মাজমাউল আনহুর ১/২৯৯

Sharable Link

ইবরাহীম হাবীব - মহাখালি, ঢাক

৪০৮৮. Question

আমার ৩ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন আছে। সেটির ২য় তলায় আমি আমার পরিবারসহ থাকি। অন্য ২ তলা ভাড়া দেয়া আছে। সেগুলোর ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৩২,০০০/- টাকা পাই। এ আয় দিয়েই আমার সংসার চলে। মাস শেষে কখনো কিছু টাকা অবশিষ্ট থাকে। কখনো থাকে না। এ অবস্থায় আমার উপর কি হজ্ব ফরয হয়েছে?

Answer

প্রশ্নের বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যেএ বাড়ি থেকে অর্জিত ভাড়ার টাকা আপনার সংসার চালানোর জন্য অপরিহার্য। বিষয়টি যদি এমনই হয়ে থাকে তাহলে ঐ বাড়ির কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না। 

-রদ্দুল মুহতার ২/৪৬২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; আন্নাহরুল ফাইক ২/৫৬

Sharable Link

আতাউল্লাহ - মিতরা, মানিকগঞ্জ

৪০৮৯. Question

আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি দাড়ি রাখার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করতে গিয়ে এভাবে বলে, আমি যদি আর দাড়ি কাটি তাহলে আমি মুসলমান না। পরে সে দাড়ি কেটেছে। এখন তার বিধান কী? তার ঈমান ও বৈবাহিক সম্পর্কের কী হবে? কেউ কেউ বলেন, তার এ কথা কোনো হলফই হয়নি। কারণ দাড়ি যে একেবারে কাটা যায় না এমন তো নয়। এক মুষ্ঠির বেশি হলে তো কাটা যায়। উল্লেখ্য, তার উদ্দেশ্য ছিল দাড়ি যত বড়ই হোক মোটেই কাটবে না। এক মুষ্ঠির বেশি হলে কাটা যায়- এটা তার জানা ছিল না।

Answer

প্রশ্নোক্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করার দ্বারা ঐ ব্যক্তির ঈমান নষ্ট হয়নি এবং বিবাহও ভাঙ্গেনি। তবে এ কথা বলার দ্বারা দাড়ি না কাটার হলফ হয়েছে। অতএব হলফ ভাঙ্গার কারণে তার উপর কসমের কাফ্ফারা আদায় করা ওয়াজিব। যারা বলেছেএক মুষ্ঠির বেশি হলে দাড়ি কাটা যায় বিধায় হলফ হবে না তাদের কথা ঠিক নয়। কেননা বৈধ কাজ না করার উপরও হলফ হয়।

 

আর কোনো অঙ্গীকারের ক্ষেত্রেও আমি মুসলমান নই এমন কথা বলা মারাত্মক অন্যায় ও গুনাহ। অতএব ঐ কথা বলার কারণে তাকে তাওবা করতে হবে।

-বাদায়েউস সনায়ে ৩/১৬; ফাতহুল কাদীর ৪/৩২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭১৩, ৭১৭; এলাউস সুনান ১১/৩৫৮

Sharable Link

মুনীরুল ইসলাম - রংপুর

৪০৯০. Question

আমি আমার এক বন্ধুর কাছে পাঁচ হাজার টাকায় একটি মোবাইল বিক্রি করি। নগদ পাঁচ শ টাকা সে আদায় করে। বাকিটা দুমাসের মধ্যে আদায় করবে বলে। ঘটনাচক্রে যেদিন মোবাইলটি বিক্রি হয় সেদিনই তার হাত থেকে পড়ে মোবাইলটির স্ক্রীন ফেটে যায়। পরদিন এসে সে বলছে, আমি এ মোবাইল নেব না। তবে স্ক্রীন ফাটার কারণে আমার পাচ শ টাকা আমাকে না দিলেও চলবে। কিন্তু আমি এতে রাজি হইনি। দুদিন পর আমি বলেছি, মোবাইল ফেরত দিতে হলে আরো পাচ শ টাকা দিতে হবে। হুযুরের কাছে জানতে চাই, এক্ষেত্রে শরীয়ত কী বলে?

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু মোবাইলের বেচাকেনা সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং ক্রেতা তা হস্তগত করেছে এবং তার হাতেই মোবাইলটি ভেঙেছে তাই মোবাইলটি ফেরত দেওয়ার অধিকার তার নেই। তবে আপনি সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিলে সে মোবাইলটি ফেরত দিতে পারবে। সেক্ষেত্রে আপনি মোবাইল স্ক্রীনের যথাযথ মূল্য তার কাছ থেকে নিতে পারবেন।

-বাদায়েউস সনায়ে ৪/৫৪৬; আলবাহরুর রায়েক ৬/১০৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৬/১১৮; রদ্দুল মুহতার ৫/১২৬

Sharable Link

মো. রিয়াজ - সদর, নোয়াখালী

৪০৯১. Question

আমরা বিশজন মিলে একটা সংগঠন করেছি। উদ্দেশ্য হল, সবাই সমানভাবে টাকা জমা করে শিরকতের পদ্ধতিতে ব্যবসা করব এবং লাভ সমানভাবে বণ্টন হবে। ব্যবসা করার দায়িত্ব আমি বহন করেছি। এর জন্য আমি কোনো বেতন নেই না। গত বছর এক লোককে তিন মাস পর ১০ মন ধান দিবে এ চুক্তিতে চার হাজার টাকা অগ্রিম দিই। পরে ঐ লোক থেকে টাকা বা ধান কোনোটাই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এখন সংগঠনের বাকি সদস্যরা আমার কাছে এই টাকা দাবি করছে। জানার বিষয় হল, এই টাকার দায় কি শুধু আমার উপর আসবে?

 

Answer

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সংগঠনের বিনিয়োগ বিষয়ক নীতি ও শর্ত মেনেই যদি যথাসাধ্য যাচাইয়ের পর ঐ ব্যক্তির সাথে লেনদেন করে থাকেন তবে এর ক্ষতি সংগঠনের সকল সদস্যকেই মূলধন অনুপাতে বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরো ক্ষতি আপনার উপর চাপানো জায়েয হবে না।

-আলবাহরুর রায়েক ৫/১৮০; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা : ১৩৫০

Sharable Link

আশরাফ হুসাইন - মোমেনশাহী

৪০৯২. Question

আমি একজন মুদি ব্যবসায়ী। গত বছর আমি অন্য এক ব্যবসায়ীকে দশ মন ধান করয দিয়েছিলাম। এ বছর তা আদায় করার কথা। এখন আমি চাচ্ছি, তার কাছ থেকে ধান না নিয়ে টাকা নিতে। এটা কি জায়েয হবে? জায়েয হলে কখনকার মূল্য হিসেবে সে টাকা দিবে? গত বছরের, না বর্তমান বাজারের?

 

Answer

করয লেনদেনের ক্ষেত্রে নিয়ম হলযে জিনিস করয দেওয়া হয় বিনিময়ে সেটাই নিবে। তাই এ বছর সমপরিমাণ ঐ ধানই আপনার প্রাপ্য। তবে হাঁকরয দাতা-গ্রহিতা উভয়ের সম্মতিতে পাওনা বস্তুর বদলে তার মূল্যও লেনদেন করা যায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি চাইলে ধানের পরিবর্তে মূল্যও নিতে পারবেন। আর এক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধের সময়ের বাজার-মূল্য ধর্তব্য হবে। অর্থাৎ তখন বাজারে ঐ মানের দশ মন ধান যত টাকায় পাওয়া যেত তত টাকা নিতে পারবেন। এর বেশি নেওয়া যাবে না।

-আলমুহীতুল বুরহানী ১০/৩৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৯৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/১২৩

Sharable Link

আব্দুল করীম - ফরিদপুর

৪০৯৩. Question

আমি নয় লক্ষ টাকা দিয়ে একটি মুদি দোকান দিতে যাচ্ছি। যার মধ্যে চার লক্ষ নিয়েছি আমার এক বন্ধু থেকে। বন্ধুর শর্ত হল, মোট লভ্যাংশের অর্ধেক তাকে দিতে হবে। জানতে চাচ্ছি, এভাবে চুক্তি করলে সহীহ হবে কি না? ব্যবসার যাবতীয় কাজ কারবার দেখাশুনা আমার দায়িত্বে।

Answer

আপনার বন্ধুর মূলধন যেহেতু আপনার চেয়ে কম তাই সে যদি ব্যবসায় কোন শ্রম না দেয় তবে তার জন্য অর্ধেক লাভের চুক্তি করা বৈধ হবে না। সে তার মূলধন অনুপাতে সর্বোচ্চ শর্তকরা ৪৪.৪৪% লভ্যাংশ নিতে পারবে। এর বেশি লাভ নিতে পারবে না। তবে হ্যাসেও যদি ব্যবসায় কিছু শ্রম দেয় তাহলে পুঁজি কম থাকলেও অর্ধার্ধি লাভের শর্ত করা সহীহ।

উল্লেখ্য যেঅংশিদারী ও যৌথ মূলধনী কারবারে শরঈ অনেক বিষয় থাকেযেগুলো ব্যবসা শুরুর আগে কোনো বিজ্ঞ আলেম থেকে জেনে নেয়া উচিত।

-বাদায়েউস সনায়ে ৫/৮৩; আলমাবসূত, সারাখসী ১১/১৫৯; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪

Sharable Link

মো. রশীদ আহমদ - কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা

৪০৯৪. Question

আমাদের গ্রামে শাক সবজি ইত্যাদি চাষাবাদকারী কৃষকদেরকে ঢাকার বিভিন্ন আড়তদাররা উৎপাদনের প্রয়োজনে ঋণ দিয়ে থাকে। কৃষিপণ্য উৎপন্ন হওয়ার পর কৃষকরা সেই ঋণ পরিশোধ করে দেয়।

এতে আড়তদাররা কোনো প্রকার সুদ নেয় না। তবে আড়তদাররা কৃষকদেরকে বলে দেয় যে, শাক সবজি উৎপন্ন হওয়ার পর আমাদের আড়তেই আনতে হবে। অন্য কোথাও নিতে পারবেন না। কৃষকরাও তা মেনে নেয়। জানার বিষয় হল এ ধরনের শর্ত করে ঋণ দেওয়া বা নেওয়া জায়েয হবে কি না?

 

Answer

ঋণ প্রদান করে ঋণগ্রহিতা থেকে কোনো প্রকার উপকৃত হওয়া সুদের অন্তর্ভুক্ত। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঋণদাতার আড়তে শাক সবজি আনার শর্ত দ্বারা ঋণ দাতা লাভবান হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে আড়তদার কৃষককে মূল্যও কম দিয়ে থাকে। তাই এ ধরনের শর্ত দিয়ে ঋণের আদান-প্রদান করা নাজায়েয। তবে যদি ঋণদাতার পক্ষ থেকে তার আড়তেই দেওয়ার শর্ত করা না হয়বরং অন্যত্র বিক্রির ব্যাপারে তার পক্ষ থেকে ছাড় থাকেএরপর ঋণগ্রহিতা নিজ থেকেই কৃষিপণ্য ঋণদাতার আড়তে নিয়ে যায় তাহলে এতে অসুবিধা নেই।

-ংমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২১০৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/২০২

Sharable Link

শামসুদ্দিন - টঙ্গি, গাজিপুর

৪০৯৫. Question

জনাব, নি¤œলিখিত মাসআলার শরয়ী ফায়সালা দানকরে বাধিত করিবেন।

ক. আমার ব্যবসা থেকে খরচাদি বাদে উদ্বৃত্ত টাকা জমা করা হয় পরবর্তীতে বড় কোন একটি বিনিয়োগের জন্য। অর্থাৎ ব্যবসায়িক কাজে অথবা কোনো বাড়ি করার জন্য। বিনিয়োগের সুযোগ আসার আগ পর্যন্ত উক্ত টাকা আমি আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকে এফডিআর করে রাখি। যা ২/১ বছর পর ভাঙ্গিয়ে মূল টাকা বিনিয়োগ করি এবং ব্যাংক কর্তৃক প্রদেয় মুনাফার টাকা আলাদা একটি একাউন্টে রেখে দেই, যা গরীবদের মধ্যে প্রয়োজনমত বিতরণ করা হয়। এবং অতীতে এ ধরনের টাকা দিয়ে জনকল্যাণার্থে রাস্তা তৈরিতে এবং পাবলিক টয়লেট তৈরিতে খরচ করা হয়েছে।

খ. এ ছাড়া সরকারী আধা-সরকারী সংস্থার  সাথে ব্যবসা করতে হলে এবং কোনো লাইসেন্স নিতে হলে সেখানেও কিছু টাকা জামানত অত্যাবশ্যক হয়। উক্ত জামানতের নগদ অর্থ না দিয়ে এফডিআর আকারে জমা করা হয় এবং মেয়াদান্তে তাতেও কিছু টাকা মুনাফা আসে যা (ক) এর পদ্ধতিতে খরচ করি।

আমার এই পদ্ধতি ঠিক আছে কি না? যদি সহীহ না হয় তাহলে অন্য কোনো সহীহ পথ আছে কি না?

উল্লেখ থাকে যে, উক্ত (ক) এবং (খ) -এ বর্ণিত এফ ডি আর ভাঙ্গানোর আগ পর্যন্ত উক্ত টাকার নিয়মিত যাকাত দিয়ে থাকি।

প্রকাশ থাকে যে, আমি নিজে ব্যবসায়িক অথবা কোন বিনিয়োগের কাজে ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ গ্রহণ করি না।

Answer

(কখ) ব্যাংকে জমাকৃত টাকার মালিক আপনি নিজে। সুতরাং পুনরায় বিনিয়োগ করা বা নিজ প্রয়োজনে খরচ করা ঠিক আছে। আর ব্যাংক থেকে প্রদত্ত টাকা গরিব-মিসকিনের হক। তাদেরকে দিয়ে দেওয়াই কর্তব্য। সুতরাং এ টাকা গরিব-মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে কিংবা তাদের পেছনে ব্যয় করা বা এমন খাতেও দেওয়া যেতে পারে যার ভোক্তা বা ব্যবহারকারী শুধুই গরিবরা।

তবে কিছু ওলামায়ে কেরাম যেহেতু এ ধরনের টাকা জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে খরচ করারও অনুমতি দিয়ে থাকেনএ হিসেবে অতীতে এ টাকা দিয়ে রাস্তা তৈরি করা বা বাথরুম বানিয়ে দেয়ার দ্বারাও আপনি দায়িত্বমুক্ত হয়ে গেছেন।

 

অবশ্য এগুলোর ব্যবহারকারী যেহেতু শুধু গরিবরা নয় তাই সামনে থেকে এ টাকা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় না করে গরিবদেরকেই মালিক বানিয়ে দিতে হবে। এফডিআর করলেও জমার উপর বছরান্তে যাকাত দিতে হয়। -তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/১৭০ইমদাদুল আহকাম ৩/৪৭কেফায়াতুল মুফতী ১০/২৪৮

Sharable Link

আব্দুল্লাহ - নাটোর

৪০৯৬. Question

বিড়াল পালা কি জায়েয? অনেকের ঘরেই দেখা যায় বিড়াল থাকে। কেউ তা ইচ্ছা করেই পালে। এটা কি বৈধ? আর কুকুর পালার কী হুকুম? কোনো প্রয়োজনে বা প্রয়োজন ছাড়া এমনিতেই কুকুর পালা কি জায়েয? বিস্তারিত জানতে চাই।

Answer

বিড়াল পালা জায়েয। হাদীস শরীফে আছেআবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

عُذِّبَتِ امْرَأَةٌ فِي هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ، فَدَخَلَتْ فِيهَا النَّارَ، لاَ هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلاَ سَقَتْهَا، إِذْ حَبَسَتْهَا، وَلاَ هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ.

জনৈক মহিলাকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেওয়া হয়। সে বিড়ালটিকে বন্দি করে রাখেএ অবস্থায় সেটি মারা যায়। সে এটিকে বন্দি করে রেখে পানাহার করায়নি এবং তাকে ছেড়েও দেয়নিযাতে সে (নিজে) জমিনের পোকা-মাকড় খেতে পারে। -সহীহ বুখারীহাদীস ৩৪৮২

এ হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার রাহ. বলেনকুরতুবি রাহ. বলেছেনএ হাদীস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েয বলে প্রমাণিত হয়যদি তাকে খানা-পিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়। -ফাতহুল বারি ৬/৪১২

এ ছাড়া আরো কিছু হাদীস রয়েছে যা থেকে বিড়াল পালা জায়েয প্রমাণিত হয়।

আর শরীয়তসম্মত ওজর ছাড়া কুকুর পালা মারাত্মক গুনাহের কাজ। হাদীস শরীফে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

لاَ تَدْخُلُ المَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ تَصَاوِيرُ.

যে ঘরে কুকুর বা (প্রাণির) ছবি রয়েছে তাতে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। -সহীহ বুখারী,হাদীস ৫৯৪৯

আরেক হাদীসে আছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদি পশু বা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর পালে তার প্রতিদিন দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়। -সহীহ মুসলিমহাদীস ১৫৭৫

আর এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে কোনো কোনো ফকীহ বলেছেনঘর-বাড়ি পাহারার প্রয়োজনেও কুকুর রাখা জায়েয।

এ সব প্রয়োজন ছাড়া কুকুর পালা জায়েয নয়। বিশেষত বর্তমানে বিজাতীয় ফ্যাশনের অনুকরণে কুকুর পালার যে রেওয়াজ হয়েছে তা সম্পূর্ণ হারাম।

-আলইসতিযকার ১/২০৩; ফয়যুল কাদীর ৩/৫২২; উমদাতুল কারী ১৫/১৯৮; শরহে মুসলিম, নববী ৩/১৮৬; মিরকাতুল মাফাতীহ ২/৪৫৬; ফাতহুল কাদীর ৫/৩৪৬; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৭৩; রদ্দুল মুহতার ৫/২২৭

Sharable Link

হাফসা - গোপালগঞ্জ

৪০৯৭. Question

মহিলাদের জন্য নকল চুল ব্যবহারের হুকুম কী? শুনেছি তাদের জন্য নাকি কোনো ধরনের নকল চুল ব্যবহার করা জায়েয নয়। এ কথা কি ঠিক?

Answer

মহিলাদের জন্য কোনো মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لَعَنَ اللَّهُ الوَاصِلَةَ وَالمُسْتَوْصِلَةَ.

আল্লাহ তাআলা লানত করেন ঐ নারীর প্রতি যে (অন্য নারীকে) চুল লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী নিজে চুল লাগায়। (সহীহ বুখারীহাদীস ৫৯৩৩)

অবশ্য পরচুলা যদি কোনো মানুষের চুল না হয়ে শুকর ব্যতীত কোনো পশুর হয় অথবা কৃত্রিম চুল হয় তাহলে তা ব্যবহার করা অবৈধ নয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

لاَ بَأْسَ بِالْوِصَالِ إِذَا كَانَ صُوفًا.

পশম দিয়ে তৈরি পরচুলা ব্যবহার করতে সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২৫৭৪৩)

সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে সাঈদ ইবনে যুবায়ের রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেন- لَا بَأْسَ بِالْقَرَامِلِ

করমাল ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই। (হাদীস ৪১৬৮)

করমাল আরবী শব্দ। অর্থ হল রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ যা মহিলারা চুলের সাথে যুক্ত করে ব্যবহার করে।

সুতরাং কেনো ধরনের নকল চুল ব্যবহার করা জায়েয নেই- এ কথা ব্যাপকভাবে বলা ঠিক নয়।

প্রকাশ থাকে যেকৃত্রিম চুল লাগালে তখনই জায়েয হবে যখন তা শুধুই সৌন্দর্যচর্চা পর্যন্ত সীমিত থাকবে। কিন্তু এ ধরনের চুল ব্যবহার করার দ্বারা যদি প্রতারণা উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তা নাজায়েয হবে। 

-রাদ্দুল মুহতার ৬/৩৭২; বাযলুল মাজহুদ ১৭/৫৮

Sharable Link