আমরা জানি যে, মাসবুক অর্থাৎ ইমামের সাথে যে এক বা একাধিক রাকাত পায়নি, ইমামের উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হলে ইমামের সাথে তাকেও সাহু সিজদা দিতে হয়। জানতে চাই, এক্ষেত্রে সাহু সিজদার পূর্বে ইমামের সাথে মাসবুকও কি সালাম ফিরাবে? না শুধু সাহু সিজদা দিবে?
আমরা জানি যে, মাসবুক অর্থাৎ ইমামের সাথে যে এক বা একাধিক রাকাত পায়নি, ইমামের উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হলে ইমামের সাথে তাকেও সাহু সিজদা দিতে হয়। জানতে চাই, এক্ষেত্রে সাহু সিজদার পূর্বে ইমামের সাথে মাসবুকও কি সালাম ফিরাবে? না শুধু সাহু সিজদা দিবে?
মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সাথে সাহু সিজদার জন্য সালাম ফিরাবে না। বরং সে ঐ সময় সালাম না ফিরিয়ে আপন অবস্থায় বসে থাকবে এরপর ইমামের সাথে সাহু সিজদায় শরিক হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২২; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪২; রদ্দুল মুহতার ২/৮২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২Sharable Link
গত ঈদুল ফিতরের দিন এক ব্যক্তিকে মসজিদে নফল নামায পড়তে দেখলাম। নামায শেষে তাকে বললাম, ঈদের দিন ঈদের নামাযের আগে কোনো নফল নামায পড়া যায় না। তখন সে বলল, ঈদের দিনে ঈদগাহে নফল নামায পড়া নিষেধ। কিন্তু অন্য জায়গায় নফল নামায পড়া যায়। প্রশ্ন হল ঐ ব্যক্তির বক্তব্য কি সঠিক?
ঐ ব্যক্তির কথাটি ঠিক নয়। ঈদের নামাযের আগে ঈদগাহে এবং অন্যত্রও নফল নামায পড়া মাকরূহ। তবে ঈদের নামাযের পর ঈদগাহের বাইরে নফল নামায পড়া যাবে।
আবু সাইদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের নামাযের আগে কোনো নফল নামায পড়তেন না। ঈদের পর বাড়িতে ফিরে এসে দুই রাকাত নামায পড়তেন।
-সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১২৯৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬০; রদ্দুল মুহতার ২/১৬৯; শরহুল মুনইয়াহ ২৪৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩Sharable Link
শীতকালে আমাদের এলাকায় কানটুপি পাওয়া যায়। যা পরিধান করলে সাধারণত কপাল ঢেকে যায়। প্রশ্ন হল, কানটুপি পরে কপাল ঢাকা অবস্থায় সিজদা করলে সিজদা আদায় হবে কি?
টুপি ইত্যাদি দ্বারা কপাল আবৃত অবস্থায় সিজদা করা অনুত্তম। নাফে রহ. বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. পাগড়ীর পেঁচ (কপাল থেকে) না সরিয়ে তার উপর সিজদা করা অপছন্দ করতেন। (আলআওসাত ৩/৩৪৩) ইবরাহীম নাখায়ী রহ. বলেন, (সিজদার সময়) কপাল খুলে রাখা আমার কাছে বেশি পছন্দনীয় (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৭৭৬) তাই নামাযের আগে এ ধরনের টুপি কপাল থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত। অবশ্য এভাবে সিজদা করলেও তা সহীহ হবে এবং নামায আদায় হয়ে যাবে।
-আদ্দুররুল মুখতার ১/৫০০; শরহুল মুনইয়াহ ২৮৬-২৮৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৮৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৯Sharable Link
আমার ছেলের বয়স আড়াই বছর। সারাক্ষণ কোলে কোলেই থাকতে চায়। আমি নামাযে দাঁড়ালে সে কোলে ওঠার জন্য কাপড় ধরে টানাটানি করে। এতে কখনো আমার হাত কনুই পর্যন্ত এমনকি কখনো বাহুও অনাবৃত হয়ে যায়। হাতের কব্জি পর্যন্ত পুরো হাত যেহেতেু নামাযে ঢেকে রাখা জরুরি, তাই তা খুলে গেলে আমি নামায ছেড়ে দেই। এখন বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানো ছাড়া আমার নামাযে দাঁড়ানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় আমার করণীয় কী? জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে হাত অনাবৃত হওয়ার সাথে সাথে তা আবার ঢেকে নিবেন। তৎক্ষণাৎ ঢেকে নিলে নামায নষ্ট হবে না। তাই প্রশ্নোক্ত অবস্থায় নামায ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।
প্রকাশ থাকে যে, নামাযের মধ্যে শরীরের যেসব অঙ্গ ঢেকে রাখা জরুরি এগুলোর কোনো একটির এক চতুর্থাংশ বা তার চেয়ে বেশি খুলে গেলে এবং তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় তা খোলা থাকলে নামায নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু তিন তাসবীহর চেয়ে কম সময় খোলা থাকলে নামায নষ্ট হবে না।
-আদ্দুররুল মুখতার ১/৪০৮; ফাতহুল কাদীর ১/২২৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৮; আলবাহরুর রায়েক ১/২৭২Sharable Link
আমি শুনেছি, রোযা অবস্থায় আগর বাতির ধোঁয়া নাকে গেলে রোযা ভেঙ্গে যায়। এ কথা কি সঠিক?
না, ঐ কথা ঠিক নয়। রোযা অবস্থায় নাকে বা মুখে ধোঁয়া চলে গেলে রোযার কোনো ক্ষতি হয় না। তবে ইচ্ছাকৃত আগর বাতি কিংবা অন্য কিছুর ধোঁয়া কেউ নাক বা মুখ দিয়ে টেনে নিলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। অবশ্য আগর বাতি, কয়েল ইত্যাদির শুধু ঘ্রাণ নিলে কোনো অবস্থাতেই রোযা ভাঙবে না।
-আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫; মারাকিল ফালাহ ৩৬১; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৫০; মাজমাউল আনহুর ১/৩৬১Sharable Link
আমি জানি, রমযানের দিবসে ঋতু অবস্থায় মহিলারা পানাহার করতে পারে। কিন্তু গত রমযানে আমার খালা বলেছেন, ঋতু অবস্থায় রমযানের দিবসে মহিলারা পানাহার করতে পারবে না। রমযানের ইহতিরামের জন্য অনাহারে থাকতে হবে। খালার এ কথা কি সঠিক? দয়া করে জানাবেন।
না, আপনার খালার ঐ কথা ঠিক নয়। রমযানে দিনের বেলায় ঋতু অবস্থায় মহিলারা পানাহার করতে পারবে। তবে প্রকাশ্যে পানাহার না করা উত্তম। অবশ্য রমযানের দিনের বেলা যদি কোনো মহিলার ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ওই দিনের অবশিষ্ট সময় তার জন্য পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি। পরবর্তীতে ছুটে যাওয়া রোযার সাথে শেষের দিনের রোযারও কাযা করতে হবে।
-হেদায়া ১/২২৫; কিফায়া ৩/২৮৩; ফাতহুল বারী ২/২৮২Sharable Link
আমার স্বামী একজন ব্যবসায়ী। তিনি বছরের বিভিন্ন সময়ে এবং প্রতি ঈদে আমাকে দামী দামী অনেক কাপড় চোপড় কিনে দেন। তাছাড়া অনেকে থ্রীপীছ, শাড়ি ইত্যাদি গিফট করে থাকে। ফলে কাপড়ের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এখন তো দুই আলমারিতেও জায়গা হয় না। অথচ সেগুলোর মাঝে মাত্র কয়েক সেট নিয়মিত ব্যবহার হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এই কাপড়গুলোর উপর যাকাত আসবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
না, ঐ কপড়গুলোর যাকাত দিতে হবে না। কেননা তা ব্যবহারের কাপড়। ব্যবহারের কাপড়চোপড় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ও মূল্যবান হলেও তার উপর যাকাত আসে না। কিন্তু স্বর্ণ, রূপার অলংকার ব্যবহারের জন্য হলেও তার যাকাত দিতে হয়।
উল্লেখ থাকে যে, ঐ কাপড়গুলোর উপর যাকাত না আসলেও তা থেকে নফল সাদকা করা যায়। কেননা হাদীস শরীফে ব্যবহৃত কাপড় সদকা করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে এবং এ ধরনের কাপড় সদকা করার ফযীলতও অনেক। যেমন
উমর রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরিধান করে
الحمد لله الذي كساني ما أواري به عورتي وأتجمل به في حياتي
এ দুআটি পড়বে অতঃপর পুরাতন কাপড়টি সদকা করে দিবে সে আল্লাহ তাআলার হেফাযত ও নিরাপত্তায় থাকবে এবং জীবনে ও মরণে আল্লাহ তাআলার পথে থাকবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৬০)
কিতাবুল আছল ২/৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭২Sharable Link
আমাদের এলাকায় একজন গরীব মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্বামী ভালো চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন আমি আমার যাকাতের টাকা দিয়ে তার অবগতি ছাড়াই অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পরিশোধ করি। এর দ্বারা কি আমার যাকাত আদায় হয়েছে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি রোগী বা তার স্বামীর অনুমতি ছাড়াই ঐ বিল পরিশোধ করে থাকেন তবে এ টাকা দেওয়ার দ্বারা আপনার যাকাত আদায় হয়নি। কেননা যাকাত গ্রহণের যোগ্য ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তার পাওনা পরিশোধ করে দিলে যাকাত আদায় হয় না। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রোগীর কোনো গরীব আত্মীয়, যে যাকাত গ্রহণ করতে পারে তার অনুমতি নিয়ে যদি তার পক্ষ থেকে বিল পরিশোধ করে দিতেন তাহলেও যাকাত আদায় হয়ে যেত। এক্ষেত্রে যার অনুমতি নেওয়া হয়েছে তাকে যাকাত দেওয়া হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।
-আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৩; হেদায়া ২/২০৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/২১২Sharable Link
আমি আকীকার জন্য এক লোক থেকে ৪৮,০০০/- টাকায় বাকিতে একটি গরু ক্রয় করেছি। গরুটি জবাই করার কিছু দিন পর মূল্য পরিশোধ করার সময় বিক্রেতাকে বললাম, আপনার গরু ক্রয় করে আমার লস হয়েছে। এর কয়েক দিন পর গরুর বাজার খুব সস্তা ছিল। এমন গরু ২৫,০০০/- থেকে ৩০,০০০/- টাকা দিয়েই কেনা যেত। অতপর তিনি সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে গরুর পূর্ব নির্ধারিত মূল্য থেকে এক হাজার টাকা কম রাখেন। এ ছাড় গ্রহণ করা আমার জন্য বৈধ হবে কি? আমি কি তা নিজের প্রয়োজনে খরচ করতে পারব, না সদকা করে দিতে হবে?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী মূল্য আদায়ের সময় বিক্রেতা যেহেতু স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এক হাজার টাকা ছেড়ে দিয়েছে তাই তা গ্রহণ করা আপনার জন্য জায়েয। আর এই টাকা নিজ কাজেও খরচ করতে পারবেন; সদকা করা জরুরি নয়।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৯/৫১৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/৪৭Sharable Link
মেয়েদের বিয়ের প্রকৃত বয়স কী?
ছেলে- মেয়ে কারোরই বিয়ের বয়স শরীয়তে নির্ধারিত নেই। তবে ছেলে- মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরই তাদের বিবাহ দেওয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
হাদীস শরীফে এসেছে, কোনো ব্যক্তির সন্তান হলে পিতার দায়িত্ব হল তার সুন্দর নাম রাখা, সঠিক আদব-কায়দা শিক্ষা দেওয়া, অতঃপর সে যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হবে তাকে বিবাহ দেওয়া।-সুনানে বায়হাকী ৮৬৬৬
তাই পিতা-মাতার দায়িত্ব হল পূর্ব থেকেই নিজ সন্তানদেরকে বিশেষত কন্যাকে যথাযথ আদব-আখলাক ও দ্বীনী শিক্ষা প্রদান করা। পাশাপাশি বিবাহ পরবর্তী সাংসারিক জীবন এবং এর দায়-দায়িত্বের ব্যাপারে তাদেরকে সর্বদিক দিয়ে যোগ্য করে গড়ে তোলা। অতঃপর উপযুক্ত পাত্র পাওয়া গেলে বিবাহ দিয়ে দেওয়া। উপযুক্ত পাত্র পাওয়া গেলে বিলম্ব করা ঠিক নয়।
হাদীস শরীফে এসেছে, তোমাদের কাছে যখন এমন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে আসে যার দ্বীনদারী ও আখলাক সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট তবে নিজ কন্যাকে তার কাছে বিবাহ দাও। যদি তা না কর তবে সেটা যমীনের বুকে বড় ফিতনা ও ফাসাদের কারণ হবে।-জামে তিরমিযী, হাদীস : ১০৮৫
প্রকাশ থাকে যে, যেমনিভাবে মেয়েকে যোগ্য পাত্রের নিকট পাত্রস্থ করা পিতা-মাতা বা অভিভাবকের দায়িত্ব তেমনি মেয়েকে শরয়ী পর্দায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
Sharable Link
আমার নিকট একটি মাদরাসার জন্য ওয়াকফকৃত জায়গা আছে। এবং সেই স্থানে কিছু ফলদার গাছ আছে। জায়গা দানকারীর সেই ফলদার গাছের ফল খাওয়া জায়েয আছে কি না?
মাদরাসার জন্য ওয়াকফকৃত জায়গার গাছের মালিক মাদরাসা। ঐ গাছের ফলও মাদরাসার। ওয়াকফকারী বা অন্য কারো জন্য বিনা মূল্যে তা নেওয়া জায়েয হবে না। নিতে চাইলে ন্যায্য মূল্যে কিনে নিতে হবে এবং বিক্রিলব্ধ টাকা মাদরাসার ফান্ডে জমা করতে হবে। যা মাদরাসার প্রয়োজনে ব্যয় করা হবে।
-আলবাহরুর রায়েক ৫/২০৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩১০Sharable Link
আমাদের এলাকায় ফেরিওয়ালারা বাড়ি বাড়ি এসে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে। বিনিময় হিসাবে টাকার পাশাপাশি অনেকেই মহিলাদের ছেঁড়া ও জটপাকানো চুলও নেয়। যেগুলো মহিলারা মাথা আঁচড়ানোর পর চিরুনীর সাথে উঠে আসে। জানতে চাই, কিছু নিয়ে বিনিময় হিসাবে মহিলাদের মাথার চুল দেওয়া যাবে কি?
না, নারী-পুরুষের চুল বিনিময় হিসাবে দেওয়া-নেওয়া নাজায়েয। কেননা মানুষের চুল ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
বিনিময়যোগ্য নয়। তার বেচাকেনা নাজায়েয।
-আলজামিউস সগীর ৩২৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৫৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৮১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৩৩Sharable Link
কিছুদিন আগে আমার এক পরিচিত লোক নিজের ব্যবহারের জন্য দশ গজ কাপড় ক্রয় করে। হঠাৎ তার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সে আমাকে বলে, আমি কাপড়গুলো গজপ্রতি একশ টাকা করে ক্রয় করেছি। এখন এই মূল্যেই তা বিক্রি করে দিব। তুমি তা কিনে নাও। তখন আমি তার থেকে কাপড়গুলো ঐ মূল্যে কিনে নিই। কয়েকদিন পর দেখা গেল, বাজারে ঐ কাপড় বিক্রি হচ্ছে পঞ্চাশ টাকা গজে। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম। সে বলল, আমি পঞ্চাশ টাকা করেই ক্রয় করেছি। এখন প্রশ্ন হল, সে মিথ্যা বলে আমার থেকে যে পাঁচশত টাকা বেশি নিয়েছে আমি তা উসূল করতে পারব কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
প্রশ্নের বিবরণ সঠিক হলে আপনি বিক্রেতা থেকে ঐ পাঁচশ টাকা ফেরত নিতে পারবেন। সে যেহেতু ঐ টাকা মিথ্যা কথা বলে নিয়েছে তাই তার জন্য তা হালাল নয়।
-আলবাহরুর রায়েক ৬/১১০; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৩৭; রদ্দুল মুহতার ৫/১৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৬৭Sharable Link
আমাদের বাড়ি নদীর পাড়ে। নদী ভাঙ্গনের সময় বড় গাছের গুড়ি, ডালপালা ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে ভেসে আসে। এগুলির কোনো দাবিদার থাকে না। আমরা এগুলো তুলে নিয়ে ব্যবহার করি, লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করি। এটা কি শরীয়তসম্মত?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি, ডালপালা ইত্যাদি যদি বাস্তবেই এত কম মূল্যের হয় যে, মালিক তা খোঁজবে না, তাহলে যে পাবে সে তা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু তা যদি এমন মূল্যমানের হয়, যা সাধারণত ফেলে দেওয়া হয় না তাহলে এগুলোর মালিক জানা থাকলে তাকে ফেরত দিতে হবে। আর মালিক পাওয়া না গেলে মালিকের পক্ষ থেকে কোনো গরিবকে সদকা করে দিতে হবে। আর যে পেয়েছে সে গরিব হলে নিজেও ব্যবহার করতে পারবে।
-সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৪৩১; ফাতহুল বারী ৫/১০৩-১০৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৫৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৭/৪১৬; রদ্দুল মুহতার ৪/২৭৯Sharable Link
এ বছর ঈদের সময় আমি বাসের কাউন্টারে টিকিট আনতে গেলে কাউন্টার থেকে বলা হল টিকিট নেই। একটু দূরে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি আমাকে বলল, টিকিট লাগবে? আমি বললা, হ্যাঁ, লাগবে। লোকটি আমাকে ৪০০ টাকার টিকিট ৫৫০/- টাকায় দিতে সম্মত হলো। আমি নিরুপায় হয়ে তার কাছ থেকে টিকিটটা কিনে নিলাম। এ অবস্থায় আমার জন্য কি তা কেনা ঠিক হয়েছে?
আর বাস বা ট্রেনের টিকিট ক্রয় করে তা অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় করা জায়েয আছে কি?
বাস বা ট্রেনের টিকিট ক্রয় করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা নাজায়েয। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় এদের থেকে কেনাও ঠিক নয়। তবে প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার জন্য তা ক্রয় করা বৈধ হয়েছে।
এছাড়া অন্যের কাছে বেশি দামে বিক্রির নিয়তে কাউন্টার থেকে আগেভাগে টিকিট কিনে নেওয়া চরম অনৈতিকতা। জেনেশুনে এমন ব্যক্তিদের নিকট টিকিট বিক্রি করা কর্তৃপক্ষের জন্যও নাজায়েয।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৩৭৬০, ২৩৭৫৩; আলমাবসূত, সারাখসী ১৫/১৩০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৯১Sharable Link
আমরা ছয়জন মিলে চুক্তি করেছি, প্রতিমাসে আমাদের প্রত্যেকে পাঁচশ টাকা করে মোট তিন হাজার টাকা জমা করব। অতপর এই ছয়জনের নামে লটারি হবে। যার নাম উঠবে সে প্রথম মাসে এই তিন হাজার টাকা নিবে। যার নাম লটারিতে এসেছে তার নাম বাদ দিয়ে পরের মাসে বাকি পাঁচজনের নামে লটারি করা হবে। যার নাম উঠবে সে এ মাসে তিন হাজার টাকা নিবে। এভাবে তৃতীয় মাসে বাকি চারজনের নামে লটারি করা হবে। প্রত্যেক মাসে টাকা জমা হবে, লটারি হবে এবং একেকজন করে টাকা পাবে। এই পদ্ধতিতে টাকা জমা করে লটারির মাধ্যমে টাকা নেওয়া জায়েয কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে টাকা জমা করা ও ঋণ আদানপ্রদান করা জায়েয। কেননা এক্ষেত্রে কেউই জমাকৃত টাকার কম বা বেশি পায় না এবং ঋণ গ্রহীতাকেও অতিরিক্ত কিছু দিতে হয় না। বরং মেয়াদের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকে নিজের জমাকৃত পূর্ণ টাকা পেয়ে যায়। তবে লটারিতে যার নাম আসবে তাকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি সকলের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতিতে হতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যারা আগে আগে ঋণ পাবে তারা যেন শেষ পর্যন্ত কিস্তি দেওয়া অব্যাহত রাখে এটা নিশ্চিত করতে হবে। যেন ঋণদাতাদের জমা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এখানে আরো উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে লটারি দ্বারা যেহেতু শুধু কাকে আগে ঋণ দেওয়া হবে এটা চিহ্নিত করা উদ্দেশ্য- তাই এই লটারি জায়েয।
-ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩২৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৪৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৫৮Sharable Link
আমি নির্দিষ্ট একটি মোরগ গরিব-মিসকিনকে দিয়ে দেওয়ার মানত করেছি। কিন্তু মানত করার এক দিনের মধ্যেই সেই মোরগটা রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? জানালে কৃতজ্ঞ হব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মানতকৃত মোরগটি যেহেতু মরে গেছে তাই এর পরিবর্তে কিছুই দিতে হবে না।
-রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫; বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯Sharable Link
আমার ছোটভাই একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে আমার মা কুতুববাগ দরবার শরীফে গিয়ে মানত করেছিলেন যে, যদি আমার ছেলে সুস্থ হয় তাহলে পীর কেবলার নামে একটা ছাগল দিব। আমার ভাই এখন পূর্ণ সুস্থ। জানার বিষয় হল, এ মানত কি সহীহ হয়েছে এবং তা পূর্ণ করা কি জরুরি? জানালে উপকৃত হব।
মানত একটি ইবাদত। যা একমাত্র আল্লাহরই হক। কোনো মাজার বা পীরের নামে মানত করা হারাম ও শিরক। তাই আপনার মার প্রশ্নোক্ত মানত সম্পূর্ণ হারাম ও শিরকি কাজ হয়েছে। এ জন্য তাকে সকল প্রকার আকিদাগত ও আমলী শিরক পরিহার করে পূর্ণ তাওহীদের আকিদা ও আমল গ্রহণ করতে হবে এবং খালেছ দিলে তওবা ও ইস্তিগফার করতে হবে। আর ঐ মানত যেহেতু সহীহ হয়নি তাই ছেলে সুস্থ হলেও এখন ঐ মানতের কারণে তাকে কিছুই করতে হবে না। হ্যাঁ, আপনার মা যদি এ উপলক্ষে সদকা করতেই চান তবে গরীব-মিসকিনকে সদকা করবেন, মাজারে দিবেন না।
-তাফসীরে রূহুল মাআনী ১৭/২১২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩৯Sharable Link
আমার পিতা তিন মাস ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সে সময় তার ব্যবহারের মোটর সাইকেলটি তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ফয়সাল চাচার জন্য অসিয়ত করেছিলেন। ইতিমধ্যে ফয়সাল চাচা হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এর সপ্তাহ দুয়েক পর আমার পিতাও ইন্তিকাল করেন। এখন ফয়সাল চাচার ছেলেরা সেই মোটর সাইকেলটি দাবি করছে। কিন্তু আমার বড় ভাই বলছেন, আববা যেহেতু সেটা ফয়সাল চাচার জন্য অসিয়ত করেছিলেন, তার ছেলেদের জন্য নয়, আর ফয়সাল চাচা তো বাবার আগেই মারা গেছেন, তাই তার ছেলে তা পাবে না।
প্রশ্ন হল, এখন আমাদের করণীয় কী? দয়া করে জানাবেন।
আপনার বড় ভাই ঠিকই বলেছেন। ফয়সাল সাহেবের ছেলেরা মোটর সাইকেলটি পাবে না। কেননা যার জন্য অসিয়ত করা হয়েছে সে যদি অvাসয়তকারীর আগে মারা যায় তাহলে অসিয়ত বাতিল হয়ে যায়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পিতার পূর্বে ফয়সাল সাহেব মারা যাওয়ার কারণে আপনার পিতার ঐ অসিয়তটি বাতিল হয়ে গেছে। সুতরাং ফয়সাল সাহেবের ছেলেদের জন্য তা দাবি করা বৈধ নয়।
-আলবাহরুর রায়েক ৮/৪৫৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/৪১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৯৩; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৫; হেদায়া ৪/৬৮৪Sharable Link
বর্তমানে অনেক হোটেলে খাওয়ার পর হাত মোছার জন্য পেপারের টুকরা দেওয়া হয়। এর দ্বারা হাত মোছা যাবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
পেপারের টুকরো বা কাগজ সম্মানিত বস্ত্ত। ইলমের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। হাত মোছার কাজে তা ব্যবহার করা অনুচিত। অবশ্য টিস্যু পেপার যা মূলত এই ধরনের উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে তা দ্বারা হাত মোছা যাবে।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১২৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২২Sharable Link
আমার মোবাইল মেমোরিতে পুরো কুরআন মজীদ ডাউনলোড করা আছে। আমি বিভিন্ন সময় তা বের করে তিলাওয়াত শুনি। এই মোবাইল নিয়ে টয়লেটে যাওয়া যাবে কি?
কুরআন মজীদের আয়াত বা আল্লাহ তাআলার নাম দৃশ্যমান থাকলে তা নিয়ে টয়লেটে যাওয়া নিষিদ্ধ। তাই কুরআনের আয়াত বা কোনো যিকির মোবাইলের স্ক্রীনে দৃশ্যমান অবস্থায় থাকলে তা নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। অবশ্য যদি স্ক্রীনে না থাকে বরং শুধু মেমোরি কার্ডে বা মোবাইল মেমোরিতে থাকে তবে ঐ মোবাইল নিয়ে কেউ টয়লেটে গেলে অসুবিধা হবে না।
-শরহুল মুনইয়াহ ৬০; ফাতহুল কাদীর ১/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৮Sharable Link
আমি একজন কাঠমিস্ত্রি। মানুষের বাড়িতে বাড়িতে মিস্ত্রির কাজ করি। কখনো কখনো হিন্দু বাড়িতেও কাজ করতে হয়। আর কাজ দীর্ঘ হওয়ার কারণে অনেকদিন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে হয়। তখন হিন্দু বাড়িতেই খেতে হয়। এ অবস্থায় কি আমার জন্য হিন্দু বাড়িতে খাওয়া বৈধ হবে? দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
হিন্দু বা বিধর্মীদের তৈরি হালাল খাবার মুসলমানের জন্য খাওয়া জায়েয। আর প্রয়োজনে তাদের বাড়িতেও খানা খাওয়া জায়েয। তাই আপনি কাজ করতে গিয়ে প্রয়োজনে হিন্দু বাড়িতে খানা খেতে পারবেন। তবে তাদের যবাইকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া হারাম। তাই তাদের বাড়িতে মুরগী ইত্যাদির গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, বিধর্মীদের সাথে হৃদ্যতা, অন্তরঙ্গতা ও বন্ধুত্ব হারাম। এটি কুরআন মজীদের সুস্পষ্ট বিধান। তাই কাজের প্রয়োজনে তাদের বাড়িতে খাওয়ার অবকাশ আছে। কিন্তু বন্ধুত্ব ও হৃদ্যতাবশত তাদের বাড়িতে খানাপিনা করা ও তাদের দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে যাওয়া যাবে না।
-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৭৪Sharable Link
রাস্তা-ঘাটে অনেক সময় বেগানা মহিলারা পরপুরুষকে সালাম দেয়। এক্ষেত্রে তাদের সালামের জবাব দেওয়ার হুকুম কী?
এভাবে বিনা প্রয়োজনে পর পুরুষকে সালাম দেওয়া ঠিক নয়। তাই কোনো মহিলা এভাবে পরপুরুষকে সালাম দিলে তার সালামের জবাব দিবে না। তবে মনে মনে জবাব দিতে পারবে। প্রকাশ থাকে যে, পরপুরুষের সাথে কোনো বেগানা মহিলার কথা বলার প্রয়োজন হলে তখন কথার শুরুতে সালাম আদান-প্রদান করতে পারবে। এক্ষেত্রে পর্দার বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া পরপুরুষের সাথে কথা বলার যে আদব কুরআন মজীদে আছে তার প্রতি লক্ষ্য রাখবে। অর্থাৎ কোমলতা পরিহার করে স্বাভাবিকভাবে শুধু প্রয়োজনীয় কথা বলবে।
-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/২৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৬; ফাতাওয়া সিরাজিয়া ৭২Sharable Link
আমার একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। তাকে দেখার জন্য অনেকেই আসে এবং অনেকেই তাকে টাকা-পয়সা হাদিয়া দিয়ে থাকে। মুফতী সাহেবের নিকট আমার জানার বিষয় হল, আমি কি ঐ টাকা আমার পুত্রের জন্য খরচ করতে পারব? বিস্তারিত দলিলসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।
যে সন্তানকে ঐ টাকা দেওয়া হয়েছে তার প্রয়োজনে খরচ করতে পারবেন। কিন্তু তাকে দেওয়া টাকা সংসারের অন্য কারো জন্য খরচ করা যাবে না।
-আলবাহরুর রায়েক ৭/২৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৩৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৬১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৪১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৬০Sharable Link
আমার নানা বা দাদার আপন ভাই তথা চাচাত নানা-দাদার সাথে আমার স্ত্রী দেখা দিতে পারবে কি না?
আপনার দাদা বা নানার ভাই আপনার স্ত্রীর মাহরাম নয়। সুতরাং তাদের সাথে আপনার স্ত্রীর পর্দা করা জরুরি, দেখা-সাক্ষাৎ জায়েয নয়।
-আলবাহরুর রায়েক ৩/৯৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১; তুহফাতুল ফুকাহা ২/১২৩; ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/৩৩৩Sharable Link
পুরুষের কণ্ঠে গাওয়া কোনো হামদ, নাত, কেরাত, ওয়াজ মহিলাদের জন্য শোনার শরয়ী বিধান কী?
জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
পর্দার আড়ালে থেকে শুনতে পারবে।
Sharable Link
(১) বর্তমানে আমরা বিভিন্ন বাদ্য সম্বলিত ইসলামী সংগীত শুনতে পাই। যথা
طلع البدر علينا
সংগীতটি বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন ধরনের পাওয়া যায়। জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে এগুলো শুনার হুকুম কী? এগুলো কি হারাম বাদ্যের অন্তর্ভূক্ত?
(২) আজকাল মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের রিংটোন থাকে। তন্মধ্যে কিছুতো হয় সম্পূর্ণ গান-বাদ্য সম্বলিত। আবার কিছু আছে যাতে গান নেই তবে গানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, আর কিছু আছে সাধারণ রিংটোন যাতে গানও নেই গানের সাদৃশ্যতাও নেই। আমি কোনটি ব্যবহার করতে পারি।
এখন জানার বিষয় হল : উপরোল্লিখিত রিংটোনের মধ্যে কোনটি জায়েয আর কোনটি নাজায়েয-হারাম?
(১) হামদ, নাতও বাদ্যসহ শোনা যাবে না। বাদ্য তো এমনিতেই নাজায়েয আর হামদ নাতের সাথে এটা যুক্ত করা বেয়াদবিও বটে।
(২) একেবারে সাধারণ রিংটোন যাতে কোনো প্রকারের বাদ্য নেই সেটিই ব্যবহার করবে। বাদ্যসহ রিংটোনের ব্যবহার শরীয়তসম্মত নয়।-সহীহ মুসলিম ২/২০২; মুসতারাকে হাকেম : ৬৯০৮; ইসলাম আওর মূসিকী, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ.Sharable Link